
আদালতে জাস্টিস সিনহার কাছে ভর্ৎসনা, শুধু তাই নয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বহুবার। এছাড়া শ্লথ গতি ও তথ্য গোপন করার মত মারাত্মক অভিযোগও উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে। রাতারাতি কিছুটা বদল এনে এরপর মঙ্গলবার প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তেড়েফুঁড়ে সিবিআই। কলকাতার সল্টলেক, হাওড়ার দাসনগর-সহ একাধিক জায়গায় চলছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তল্লাশি।
সূত্রের খবর, ওএমআর শিট কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছিল ‘এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি’ নামক একটি সংস্থার। পূর্বে সেই কোম্পানির মালিক কৌশিক মাজিকেও নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে এই সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল ওএমআর নষ্টের। এ দিন, ওই সংস্থার অফিস-গোডাউনে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। শুধু তাই নয়, কৌশিক মাজির বাড়িতেও চলছে অভিযান।
সিবিআই আধিকারিকরা মূলত জানতে চাইছেন এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির কর্তা কী করে ওমএমআর শিট নষ্টের দায়িত্ব পেল? কে সুপারিশ করেছিল? কেন করা হয়েছিল তার উত্তর খুঁজছে সিবিআই। বস্তুত, এই মামলায় তদন্তকারী হিসাবে সিবিআইয়ের রিপোর্ট দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। গোয়েন্দা আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আতাঁতের অভিযোগ তোলেন তিনি। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর দফতরে নালিশ জানানোর কথাও বলেন। শুধু তাই নয়, বিচাপতি বলেন, “রিপোর্ট দেখে মনে হচ্ছে সিবিআই নিজেই কালপ্রিটদের ঢাকার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠাব। বলব কিছুই করছে না সিবিআই।”
লিপস এন্ড বাউন্ডস মামলায় খাম বন্ধ কাগজে ইডি অভিষেক সহ অন্যান্য কর্মীদের সম্পত্তির বিবরণ জমা দেয়। সেই হলফনামা বা বিবরণের ভিত্তিতে ইডির যোগ্যতা এবং পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন জাস্টিস সিনহা। সোমবার বিচারপতি জিজ্ঞেস করেন, সাংসদের মাত্র তিনটি বিমা! ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস নেই কেন? এই নিয়ে ইডিকে তীব্র ভর্ৎসনা হাই কোর্টের। বিচারপতি এও জানিয়েছেন, লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস নিয়ে গত আট মাস ধরে ইডি যে তদন্ত করেছে, তার নিট ফল শূন্য। এই নিয়ে বিশদ তথ্য ইডিকে জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৯ সেপ্টেম্বর।
সোমবার তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘অভিষেক লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার যে সিইও, তাঁর সম্পত্তির কোনও বিস্তারিত তথ্য নেই? কেন? কোথায় জমি? ইডি একবারও সমস্ত তথ্য যাচাই করে। দেখার প্রয়োজন করল না?'
হাইকোর্টের নির্দেশে লিফট সান বাউন্স মামলা অভিষেকসহ সমস্ত কর্মচারীদের নথি ও সম্পত্তির বিবরণ জমা দিলেও সোমবার শোনেন সময় তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন জাস্টিস সিনহা। বিবরণে অভিষেকের কোনও ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট জানায়নি ইডি। বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘এটা কি হতে পারে? সাংসদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই? তা হলে তিনি বেতন পান কী ভাবে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অভিষেকের বাড়ির ঠিকানা জানে না ইডি? ১৮৮এ হরিশ মুখার্জি রোডে কার নামে বাড়ি রয়েছে?’’
ইডির তদন্তে জানা গিয়েছে, লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার একটি কারখানা ছিল। বিচারপতি অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সেই কারখানার বিষয়েও বিশদে কিছু জানায়নি ইডি। তাঁর কথায়, ‘‘আপনারা বলছেন, সংস্থার কারখানা ছিল? তা কবে, কোথায় তৈরি হয়েছে, জানাননি। সংস্থার সম্পত্তির বিবরণ দেননি। আপনারা জানিয়েছেন, সংস্থার এসি রয়েছে, গাড়ি রয়েছে, লরি রয়েছে। কিন্তু কার নামে সেই গাড়ি, লরি, কিছুই জানাননি।’’ এর পরেই বিচারপতি কড়া সুরে বলেন, ‘‘আপনারা কি সঠিক ভাবে তদন্ত করবেন না? সংস্থার ৬ জন ডিরেক্টর রয়েছেন। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ছাড়া কারও বিরুদ্ধে কি কোনও তদন্ত করেছেন? সুজয়ের গলার নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তা কি তদন্ত করে দেখেছেন?’’
সিইও অভিষেক-সহ লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার ডিরেক্টরদের সম্পত্তির বিবরণ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সিংহ। এই সংক্রান্ত বিষয়গুলি স্পষ্ট করার জন্য সোমবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআইয়ের আধিকারিকদের তিনি আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিচারপতি সিংহের নির্দেশে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার সিইও এবং অন্য ডিরেক্টরদের সম্পত্তির বিস্তারিত তথ্য আদালতে জমা দিয়েছিল ইডি। সেই সঙ্গে নিয়োগ মামলায় জড়িত এক অভিনেতার নাম এবং সম্পত্তির বিবরণও আদালতে জমা পড়েছিল। অভিষেকের সংস্থার পাশাপাশি, এক টলিউড অভিনেতার সম্পত্তি নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি সিংহ। তাঁর মন্তব্য, সম্পত্তির যে বিবরণ জমা পড়েছে, তা নিয়ে কিছু সন্দেহ রয়েছে। কিছু বিষয় স্পষ্ট করা প্রয়োজন। দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদেরই আদালতে হাজির থাকতে বলেছিলেন তিনি। তাঁদের উপস্থিতিতে সোমবার বিকেলে ইডিকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি।
পুরনিয়োগ দুর্নীতির জট খুলতে তেঁড়ে ফুঁড়ে ময়দানে নেমেছে সিবিআই। আদালতের নির্দেশের পরেই কোন কোন পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে তা জানতে একযোগে ১৪ টি পুরসভায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। কোন কোন পুরসভায় নিয়োগের জন্য বরাত পেয়েছিল অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজোন, সেই ক্ষেত্রে কতটা দুর্নীতি হয়েছে সব খতিয়ে দেখতে ১৪ টি পুরসভা থেকে সংগ্রহ করেছিল নিয়োগ সংক্রান্ত বেশকিছু নথিপত্র। এবার সেই নথিপত্র খতিয়ে দেখেই তদন্তকারী সংস্থার হাতে উঠে আসলো চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুরনিয়োগেও যে দুর্নীতি হয়েছে তা জানা গিয়েছিল প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামালায় অন্যতম ধৃত অয়ন শীলের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে। জানা গিয়েছিল অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজেনকে বরাত দেওয়া হয়েছিল একাধিক পুরসভার নিয়োগের ক্ষেত্রে। সেখানেই হয়েছে দুর্নীতি। এর আগেই নাম উঠে এসেছিল দক্ষিণ দমদম পুরসভার। এবার উঠে আসল বরাহনগর পুরসভার নাম।
সিবিআই সূত্রে খবর বরাহনগর পুরসভায় নিয়োগ হয়েছে দু দফায়, ২০১৭ ও ২০১৯ সালে। এক্ষেত্রে নিয়োগের বরাত দেওয়া হয়েছিল অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজনকে। সিবিআই এর হাতে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চ্যলকর তথ্য দু দফায় নিয়োগ করা হয়েছিল ২৮০ জনকে। এই ২৮০ জনের মধ্যে বেশিরভাগ ছিল মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার। শুধু তাই নয় এদের মধ্যে একজন অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার ছেলেও রয়েছে। এই সমস্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই বরাহনগর পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের ৩২ জন কর্মীকে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ। ২০-২৯ সেপ্টেম্বর তারিখের মধ্যে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ। এবিএস ইনফোজনের মাধ্যমে কতজনকে নিয়োগ করা হয়েছে? কোন কোন পদে নিয়োগ করা হয়েছে ? টাকা নিয়ে নিয়োগ করা হয়েছে কিনা? নিয়োগের ক্ষেত্রে অয়ন শীলের ভূমিকা কতটা, নাকি রয়েছে অন্য কোনও বড়ো মাথা, সব জানতেই এবার ময়দানে সিবিআই।
২০২০ সাল থেকেই তাঁর সব সম্পত্তির হিসেব ইডির কাছে আছে। নতুন করে হিসেব দেওয়ার কিছু নেই। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর সম্পত্তির খতিয়ান জমা পড়ার প্রসঙ্গে এমনটাই জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সিইও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির পরিমাণ কত, তা হলফনামা আকারে কলকাতা হাইকোর্টে জমা দিয়েছে ইডি। এবার সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক জানান, তাঁর সব সম্পত্তির হিসাব ইডি আগে থেকেই জানে। ইডির কাছে ২০২০ সালে তিনি প্রথম হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। প্রথম দিনই তাঁর যাবতীয় সম্পত্তির হিসাব এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে জমা দিয়ে এসেছিলেন। তাই আর নতুন করে কোনও হিসেব বা তথ্য ইডির দেওয়ার নেই বলে জানিয়েছেন অভিষেক। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য ইডি ও সিবিআইকে তিনি আর এখন গুরুত্ব দেন না।
উল্লেখ্য, এদিন হাইকোর্টে সম্পত্তির হিসেব জমা দেওয়ার পাশাপাশি লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস-এর অফিসে তল্লাশি চালানোর সময় ১৬টি ফাইল ডাউনলোডের ঘটনায় পুলিশের অতিসক্রিয়তা নিয়ে এদিন প্রশ্ন ওঠে আদালতে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, ইডি অফিসারদের নামে জিডি করা হচ্ছে। বারবার তাঁদের নানারকম প্রশ্ন করে বিব্রত করা হচ্ছে। ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে জানান বিচারপতি সিনহা।
আদালতে কিছুটা স্বস্তি রাজ্যের। আলিপুরদুয়ার মহিলা ঋণদান সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত সিবিআই-এর হাতেই রাখল কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে রাজ্য সিআইডি-কে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ খারিজ করে দিল ডিভিশন বেঞ্চ।
উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট আলিপুরদুয়ার মহিলা ঋণদান সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে অন্তত ৫০ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে একযোগে সিবিআই এবং ইডিকে তদন্তে নামার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরেও রাজ্য সিআইডি নথি হস্তান্তর করেনি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। রাজ্যকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। যদিও নির্দেশনামায় সেই অর্থ ৫ লক্ষ করা হয়।
এরপর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। তাতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। তবে তদন্ত প্রক্রিয়ায় কোনওরকম স্থগিতাদেশ দেয়নি বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।
অন্যদিকে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মূল মামলার শুনানিতে এদিন বিচারপতির নির্দেশ, ৫০ কোটির আর্থিক দুর্নীতি মামলায় আগামী ১৮ অক্টোবর তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট আদালতে দিতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। আদালতের আশা, এই দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই ও ইডি গুরত্ব দিয়ে তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করবে। কালপ্রিট যে কাউকেই কিনতে পারে।
পুরনিয়োগ দুর্নীতির জট খুলতে ফের তৎপর সিবিআই। বরাহনগর পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের কর্মী ও আধিকারিকদের তলব করল সিবিআই। গত ১৬ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ শনিবার থেকে ডেকে পাঠানো কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই পুরসভার ৩২ কর্মীকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওদিকে সিবিআই সূত্রের খবর, পুর-নিয়োগ দুর্নীনিতে বরাহনগর-সহ কামারহাটি, পানিহাটি এই পুরসভাগুলিও রয়েছে সিবিআই স্ক্যানারে।
উল্লেখ্য শহর থেকে জেলা, রাজ্যজুড়ে ১৪টি পুরসভাতে একযোগে চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। সল্টলেকের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে শুরু করে, দমদম, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম, চুঁচুড়া, হালিশহর, বরাহনগর-সহ একাধিক পুরসভায় দুর্নীতির শিকড়ে পৌঁছতেই একযোগে হানা দেয় সিবিআই। পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখতেই মূলত এই তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল।
প্রসঙ্গত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অয়ন শীল গ্রেফতার হওয়ার পরেই সামনে এসেছে পুরনিয়োগ দুর্নীতির প্রমাণ। আর এরপরই কোমর বেঁধে নামে সিবিআই। কীভাবে হয়েছে পুুর নিয়োগে দুর্নীতি? অয়ন শীল ছাড়া আর কে কে যুক্ত আছে এই দুর্নীতিতে ? কোন কোন পুরসভাতে কবে থেকে এই নিয়োগ দুর্নীতি শুরু হয়েছে? তা খতিয়ে দেখতে আবারও ম্যারাথন গতিতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে সিবিআই।
প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতিতে ওএমআর শিট বিতর্ক মামলায় ফের আদালতে ভর্ৎসিত সিবিআই। বুধবার এই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কলকাতা হাইকোর্টে কেস ডায়েরি জমা দিলেও সেই কেস ডায়েরি দেখে সন্তুষ্ট নন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার সরাসরি সিবিআই-এর ডিরেক্টরকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। 'আপনারা মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন? সিবিআই-এর কাজ কি মানুষকে বোকা বানানো?' ক্ষোভপ্রকাশ বিচারপতির।
এই নিয়ে টানা ৩ দিন বিচারপতির ক্ষোভের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তীব্র সমালোচনা বিভিন্ন মহলে। সিবিআই যদি এতদিন ঠিকভাবে কাজ করত, রাঘব বোয়ালরা ধরা পড়ত। বিশ্বাসযোগ্যতা ও দক্ষতা এবার সিবিআই-কেই প্রমাণ করতে হবে। জানালেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই কি তদন্ত করতে জানে না? নাকি তাকে তদন্ত করতে বাধা দিচ্ছে তার মনিবরা? প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। এদিকে নারদা প্রসঙ্গ তুলে সিবিআই-কে খোঁচা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার।
যদিও বিচারপতির কোনও মন্তব্য, কোনও পর্যবেক্ষণ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয় বলেই মনে করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আদালতে বারবার মুখ পুড়ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। তবে কি সত্য উদঘাটন করতে সত্যিই ব্যর্থ হচ্ছে সিবিআই? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
মানিক ভট্টাচার্যকে নিয়ে এবার আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল সিবিআইকে। শুনানিপর্ব চলাকালীন মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সিবিআইয়ের বোঝাপড়া নিয়েও সরাসরি প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি।
সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দুপুর দুটোর মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে আদালতের কাছে সিবিআই জানায়, এর সঙ্গে অনেক প্রভাবশালীর নাম জড়িত রয়েছে। এরপরেই মানিক ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। সিবিআইয়ের রিপোর্টে কেন তাৎপর্যপূর্ণ কিছু থাকছে না সেবিষয়েও জানতে চেয়েছেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন লোকসভা ভোট ঘোষণা হওয়ার পরেই কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে?
পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেপ্রসঙ্গে এবার আদালত কক্ষে বুর্জ খালিফার প্রসঙ্গ টানলেন সিবিআই-এর আইনজীবী। এর আগেই অবশ্য প্রাথমিক টেট দুর্নীতি প্রসঙ্গে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের তুলনা করেছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীন পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গও তোলেন বিচারপতি। তার পরিপ্রেক্ষিতে পুর নিয়োগ দুর্নীতিকে বুর্জ খালিফার সঙ্গে তুলনা করেন সিবিআই-এর আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই। সেসময় সিবিআই-এর আইনজীবী বলেন, নিয়োগ দুর্নীতির বিস্তৃতি যেন আমেরিকার টুইন টাওয়ারের মতো। একটি স্তম্ভ স্কুল সার্ভিস কমিশনের এবং অন্যটি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের।
বৃহস্পতিবার মূলত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে শুনানি ছিল। গত সপ্তাহেই সেবিষয়ে একটি রিপোর্ট তলব করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেসময়ই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের তুলনা করেন সিবিআই এর আইনজীবী।
এবারে এক রেল আধিকারিকের (Railway Official) বাড়ি ও অফিস থেকে উদ্ধার করা হল কোটি কোটি টাকা। সূত্রের খবর, দুর্নীতির অভিযোগে রেলওয়ে-তে কর্মরত এক আধিকারিককে গ্রেফতার করেছে সিবিআই (CBI)। অভিযোগ, একাধিক সময়ে সেই টাকা 'ঘুষ' হিসাবে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) গোরক্ষপুরের।
সূত্রের খবর, ধৃতের নাম কেসি জোশী। তিনি উত্তর-পূর্ব রেলের প্রিন্সিপাল চিফ মেটিরিয়াল ম্যানেজার ও উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে কর্মরত। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, তাঁকে ৩ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনকি তার গোরক্ষপুরের অফিস ও নয়ডার বাড়ি তদন্ত করে উদ্ধার করা হয় নগদ প্রায় ২.৬১ কোটি টাকা।
সিবিআই সূত্রে খবর, রেলের জন্য ট্রাকের জোগান দেন, এমন এক ব্যক্তির থেকে সাত লক্ষ টাকা ঘুষ হিসাবে চেয়েছিলেন কেসি জোশী। টাকা না দিলে লাইসেন্স বাতিল করার হুমকিও তিনি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নামে সিবিআই। পরে তাকে হাতে-নাতে ধরার জন্য ফাঁদ পাতে সিবিআই আধিকারিকরা। এর পর তার বাড়ি ও অফিসে তদন্ত চালাতেই উদ্ধার হয় 'ঘুষের পাহাড়'। এর পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ও ধৃতের বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করা হয়েছে।
নারদ কেলেঙ্কারিতে আবার সক্রিয় হল সিবিআই। নারদকর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলকে তলব করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সোমবার ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় কলকাতার নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, ম্যাথু স্যামুয়েলের ফোন ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই ফরেনসিক পরীক্ষায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জবাব জানতে চান সিবিআই আধিকারিকরা। সেজন্যই ফের তাঁকে তলব করেছে সিবিআই।
প্রসঙ্গত, সারদা চিটফাণ্ড দুর্নীতির পর ২০১৬ সালে রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমত আলোড়ন ফেলে দেয় নারদ স্টিং অপারেশন। ২০১৪ সালে সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল ছদ্মবেশে রাজ্যে এসে এই স্টিং অপারেশন করেন। পরে রাজ্য বিজেপি দফতরে রীতিমত পর্দা টানিয়ে স্টিং অপারেশনের ভিডিও ফাঁস করেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি মন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিং। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে মার্চ মাসে। ওই ফুটেজে তাতে তৃণমূলের একাধিক নেতা মন্ত্রী ও রাজ্যের ১ আইপিএস আধিকারিককে ম্যাথু স্যামুয়েলের থেকে টাকা নিতে দেখা যায়। ফুটেজে দেখা যায় প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, প্রয়াত সাংসদ সুলতান আহমেদ, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র, মন্ত্রী তথা বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম, প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা বর্তমান বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়, বিধায়ক ইকবাল আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক এসএমএইচ আহমেদ মির্জা এবং প্রাক্তন তৃণমূল নেতা বর্তমানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে
এই দুর্নীতির সিবিআই তদন্তের দাবিতে আদালতে দায়ের হয় মামলা। সেই মামলায় ২০১৭ সালের মার্চ মাসে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তার পর থেকে নারদ দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। সিবিআইয়ের তৎপরতায় তৃণমূলের তরফে প্রতিক্রিয়ায় জানানো হয়েছে, লোকসভা ভোট আসছে। এখন অনেক তদন্তই গতি পাবে। তবে জিজ্ঞাসাবাদ যেন শুভেন্দু অধিকারীকে দিয়ে শুরু করা হয়। পালটা বিজেপির দাবি, তদন্ত হচ্ছে আদালতের নির্দেশে। এখানে কারও কিছু করার নেই। দোষ করে থাকলে কেউ পার পাবে না।
প্রসূন গুপ্ত: আজকাল যে কোনও খবর বাজারে আসে এমন সমস্ত পোশাকে আবৃত হয়ে যে মানুষ মনে করে কি না জানি হতে চলেছে। ইদানিং তার প্রাবল্য বেড়েছে। বাজারে বড় খবর দুটি ছিল, একটি সিবিআই বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির এজলাসে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার সম দুর্নীতি প্রকাশ করতে চলেছে ১১ সেপ্টেম্বর। অপরটি বিচারপতি অমৃতা সিনহার ভর্ৎসনাতে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর ইডি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছে। ভর্ৎসনা এই কারণে বলা হচ্ছে কারণ সম্প্রতি ইডির কৌসুলিকে বিচারপতি সিনহা প্রশ্ন করেছিলেন যে, অভিষেককে কেন ডাকা হচ্ছে না। দুটি ঘটনাতেই কি হয় এমন ভাবনা ছিল রাজ্যের আম জনতার।
ইডি অভিষেককে দেখা করতে বলেছে ১৩ সেপ্টেম্বর, যে দিনটিতে নব্য জোট "ইন্ডিয়া'র প্রথম সমন্বয় কমিটির বৈঠক, যেখানে অভিষেক অন্যতম সদস্য। রবিবার এই খবর অভিষেক নিজেই প্রকাশ করেন নিজের টুইট হ্যান্ডেলে| তিনি দাবি করেছেন যে, জোটের সমন্বয় কমিটির বৈঠক যে ১৩ সেপ্টেম্বর তা ইতিমধ্যেই প্রকাশিত। অথচ ওই দিনেই ইচ্ছাকৃত ভাবেই কেন্দ্রীয় এজেন্সী ডেকে পাঠিয়েছে। এবারে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে যে, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ফের বিচারপতি সিনহার এজলাসে আসছে ইডির কৌঁসুলি, কাজেই তার আগের দিনেই অভিষেককে ডাকা হচ্ছে। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই বলেই দাবি। এবারে অভিষেক ইডির সাথে কথা বলবেন নাকি জোটের বৈঠকে যাবেন তা নিয়ে উঠেছে জল্পনা। তবে তিনি যে বেশ মেজাজেই আছেন তা দেখা যাচ্ছে।
অন্যদিকে সিবিআই, বিচারপতি গাঙ্গুলির এজলাসে আগের দিন জানিয়েছিল যে শিক্ষা দুর্নীতিতে এমন কিছু তথ্য প্রকাশ করবে যা নাকি ওয়ার্ল্ড ট্রেডের সেন্টারের মতো সুউচ্চ। সোমবার সেই মোতাবেক সিবিআইয়ের কৌঁসুলি হাইকোর্টে এসেছিলেন। কিন্তু কোনও এক আইনজীবীর মৃত্যুতে কোর্ট বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্যে সিবিআই কৌঁসুলি জানিয়েছেন যে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যর সরাসরি যোগাযোগ আছে তার তথ্য তাদের হাতে রয়েছে। এতে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মতো বিশাল ঘটনার কি আছে ? এমন কি বড় চমকদার খবর? জানা যায় নি। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে মানুষ। অর্থাৎ ১১ সেপ্টেম্বর যে বিশাল কিছু হতে চলেছে এমন দাবি ছিল চারিদিকে তার আপাতত কোনও লক্ষণ নেই।
ইডি-র তলবে হাজিরা দিতে মঙ্গলবার সিজিও কমপ্লেক্সে যাওয়ার কথা তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ নুসরত জাহানের (Nusrat Jahan)। ফ্ল্যাট প্রতারণা মামলায় তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যদিও এদিন সিজিও কমপ্লেক্সে (CGO Complex) আসবেন কিনা তা নিয়ে সোমবার রাত পর্যন্ত কিছু জানাননি ওই টলি অভিনেত্রী।
অন্যদিকে সোমবার এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল আলিপুর আদালতে। সেখানে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে নুসরতের। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে হবে না তাঁকে।
সম্প্রতি বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট প্রতারণা অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পান্ডা। তাঁর অভিযোগ নিউটাউনে ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মীদের থেকে টাকা তুলেছেন নুসরত ও তাঁর কোম্পানি। টাকা তোলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। পাল্টা দাবি করেছিলেন, অফিস থেকে যে টাকা লোন হিসাবে নিয়েছিলেন, তা সুদ সহ ফেরত দিয়েছেন।
যদিও ৫ সেপ্টেম্বর হিঙ্গলগঙ্গের একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন নুসরত। বৈঠক শেষে ইডি-র নোটিশ দেওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। সেপ্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, ইডি-র নোটিশ এসেছে কিনা তিনি জানেন না। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ডাকলে অবশ্যই হাজিরা দেবেন।
কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় বিশেষ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে জাস্টিস সিনহার বেঞ্চে সিবিআই। সম্প্রতি এই মামলার একটি শুনানিতে বিশেষ সিবিআই আদালতের নির্দেশ ছিল, কলকাতা পুলিশ ও সিবিআইকে যুগ্ম তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সিবিআই-এর বক্তব্য, হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। তাহলে কেন সিবিআই বিশেষ আদালত কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যুগ্ম তদন্তের রিপোর্ট তলব করল? সূত্রের খবর, আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হুগলির বলাগড়ের বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের লেখা একটি চিঠি সমান্তরালভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তাঁর নাম নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃতদের মুখ থেকে বলানোর চেষ্টা করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। ঠিক তার পরদিনই কুন্তল ঘোষ দাবি করেন, তাঁর মুখ থেকে অভিষেকের নাম বলানোর জন্য দিচ্ছেন তদন্তকারীরা। এই মর্মে তিনি একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠি সংক্রান্ত একটি মামলায় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও সিবিআইকে যৌথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালত। সেই শুনানি সিবিআই আদালতে ভর্ৎসিতও হয়। উল্লেখ্য, এর মধ্যে কুন্তলকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেনি সিবিআই।
আলিপুর বিশেষ আদালতের নির্দেশ ছিল, কলকাতা পুলিশ ও সিবিআই যুগ্মভাবে তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করবে। সিবিআই এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।
২০০১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। বিশ্বকে কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো জঙ্গি হামলা। আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সেই জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ সোমবার উঠে এল কলকাতা হাইকোর্টে। নেপথ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। কিন্তু সোমবার হল না। তবে মঙ্গলেই দুর্নীতির 'অমঙ্গল' ঘটাবে সিবিআই! হাইকোর্টে তেমনই ইঙ্গিত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মতো দুর্নীতি ফাঁস হবে মঙ্গলবার। সোমবার আদালতে জানাল সিবিআই।
উল্লেখ্য, সোমবারই কলকাতা হাইকোর্টে সিবিআই-এর আইনজীবীর ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটে 'ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মতো' সুবিশাল নিয়োগ দুর্নীতির পর্দাফাঁসের কথা ছিল। আবার কি নতুন কারোর নাম প্রকাশ্যে আনতে চলেছে সিবিআই? তা নিয়েই জল্পনা তৈরি হয়েছিল। এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। তবে সন্দীপ কুমার ভট্টাচার্য নামে এক আইনজীবীর মৃত্যুর কারণে এদিন মামলা শুনলেন না বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
তবে কোন তথ্য ফাঁস করতে চলেছে সিবিআই, তার কিছুটা ইঙ্গিত এদিন দিয়ে রেখেছেন সিবিআই-এর আইনজীবী। তিনি জানিয়েছেন, ৯/১১ বা ১১ সেপ্টেম্বর এমন একটা দিন, যে দিন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভেঙে পড়েছিল। আবার ওই একই দিনে স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোতে ভাষণ দিয়েছিলেন। মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিতেই আগামীকাল সিবিআই ফাঁস করবে নতুন ও জোরালো তথ্য। জানাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্যের মধ্যে সম্পর্কের নতুন ইতিকথা। মন্ত্রী, সচিব কীভাবে তথ্য ডিলিট করেছেন? গোপন তথ্য কোথায় রাখতেন তাঁরা? মন্ত্রীর অফিসে নিয়মিত যাতায়াত ছিল মানিক ভট্টাচার্যের। নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থর বৃহত্তর যোগের হদিস দেবে সিবিআই। দুর্নীতির গোপন তথ্য ফাঁস করবই। দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সিবিআই।