গরু পাচার-কাণ্ডে (Cow Smuggling Case) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে গ্রেফতার করে ইডি। ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। জানা গিয়েছে, মঙ্গবার মণীশ কোঠারিকে অনুব্রতর মুখোমুখি বসিয়ে চলেছে জিজ্ঞাসাবাদ। জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তিনি। তাই গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা।
কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে কেষ্ট কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে ১৬ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের হদিশ পায় ইডি আধিকারিকরা। একজন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকার নামে এত কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট কীভাবে? এই ফিক্সড ডিপোজিটের উৎস কি? প্রশ্ন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার।
ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলেন অনুব্রতর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি। ইডি সূত্রে খবর, গরু পাচারের কালো টাকাতেই সুকন্যার নামে ফিক্স ডিপোজিট করা হয়েছে। ১৬ কোটি টাকার ফিক্সট ডিপোজিট সুকন্যার, জেরায় জানান মণীশ।
ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি। মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে গরু পাচার-কাণ্ডে (Cow Smuggling Case) তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ইডি (ED)। সেই জিজ্ঞসাবাদ পর্বের মধ্যেই সন্ধ্যার দিকে গ্রেফতার করা হয় মণীশকে (Manish Kothari)। এদিন জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তিনি। মণীশ কোঠারিকে বসানো হয় অনুব্রতর মুখোমুখি। কিন্তু তাও সঠিক তথ্য তাঁর থেকে না পাওয়ায় গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইতিমধ্যে গরু পাচার-কাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বুধবার দিল্লির ইডি অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে। তাঁকেও বীরভূম তৃণমূল সভাপতির সামনে বসাতে পারে ইডি। গত সপ্তাহেই আইনি জট কাটিয়ে আসানসোল থেকে দিল্লিতে আনা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে। প্রথম দফায় ৩ দিন এবং দ্বিতীয় দফায় ১১ দিন ইডি হেফাজতে অনুব্রত। এই হেফাজতে থাকা অবস্থায় গরু পাচার-কাণ্ডে অনুব্রতর ভূমিকা যাচাই করে নিতে চায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। এই মামলায় এযাবৎকাল একাধিক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছে। এঁদের প্রশ্ন করে বিশেষ করে মূল পাণ্ডা এনামূল হকের মুখে উঠে আসে অনুব্রতর নাম।
আগামি সপ্তাহেই দিল্লিতে তলব করা হতে পারে সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal) এবং মণীশ কোঠারিকে। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে এই দু'জনের কাছে ফোন গিয়েছে। আগামি সপ্তাহেই তাঁদের হাজির হতে হবে দিল্লির ইডি দফতরে। এই মর্মে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। যদিও হাজিরার তারিখ ও সময় একদিন আগে জানিয়ে দেবে ইডি বলে জানা গিয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে ইডির (ED) নির্দেশ, 'আগে যেসব নথি জমা দিয়েছেন, সেই নথি নিয়ে হাজির হতে হবে দিল্লি।'
জানা গিয়েছে, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ ১২ জনকে তৃণমূল নেতার মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে তালিকা তৈরি করেছে ইডি। সেই তালিকায় রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডল-সহ মণীশ কোঠারি, তৃণমূল নেতা রাজীব ভট্টাচার্য, ব্যাবসায়ী মলয় পিট, সুকন্যার গাড়ির চালক তুফান মিদ্দা রয়েছেন। এছাড়াও তালিকাভুক্ত অনুব্রতর বাড়ির পরিচারক বিজয় রজক, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা কৃপাময় ঘোষ এবং তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন।
সম্ভবত আগামী সপ্তাহের শুরুতে এদের তলব করা হবে। প্রত্যেকের সঙ্গে অনুব্রতকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করবে ইডি। এমনটাই কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, সায়গল হোসেনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে ইডি। যেখানে অনুব্রত মণ্ডলের গরু পাচারকারীদের সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। শনিবার জেরায় সেই সূত্র ধরে অনুব্রতকে জেরা করছে ইডি বলে খবর।
গরু পাচার-কাণ্ডে (Cow Smuggling case) ইডির হাতে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলকে শুক্রবার আদালতে তোলা হয়। তিন দিনের ইডি হেফাজত (ED Custody) শেষে এদিন রউস অ্যাভেনিউ আদালতে তোলা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে। আরও ১১ দিন ইডি হেফাজত মঞ্জুর আদালতের। এদিন শুনানি শেষে রায়দান কিছুক্ষণ স্থগিত রাখে আদালত। সেই সময় অনুব্রতর (Anubrata Mondal) আইনজীবী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, 'কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে ১১ দিনের হেফাজতের আবেদন জানানো হলে, আমরা বিরোধিতা করি। এই গ্রেফতারি বেআইনি বলে সওয়াল করি। শেষ ৩ দিনে তদন্ত সেভাবে এগোয়নি, তাহলে আরও ১১ দিনের হেফাজতের কী দরকার? ৬০ দিনের বেশি গ্রেফতারি হয়ে গিয়েছে।'
জানা গিয়েছে অনুব্রতর তরফে আইনজীবী অভিযোগ করেন, 'আমরা যখন মক্কেলের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি, তখন সিসিটিভিতে নজরদারি চলছে। ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলা যাবে না? তিন দিনে জেরায় কিছু পাওয়া যায়নি। তিন দিনে ২ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে।'
এই সওয়ালের পর বিচারকের নির্দেশ,'যখন আইনজীবীরা দেখা করতে যাবেন, তখন সিসিটিভি রাখা যাবে না।' পাশাপাশি অনুব্রতর সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন বিচারক। তিনি জানতে চান আপনি কিছু বলবেন? অনুব্রত বলেন, 'না।' বিচারক জানতে চান আপনি হিন্দি ও ইংলিশ জানেন? হিন্দিতে বিচারকের কথা বুঝতে না পারায় ইডি বাঙালি অফিসারের সাহায্য নেয়। তখন অনুব্রত বলেন, 'আমি হিন্দি-ইংলিশ জানি না।' বিচারক বলেন, 'বাংলা জানেন?' অনুব্রত বলেন, 'হ্যাঁ জানি'।
গরু পাচার-কাণ্ডে (Cow Smuggling Case) ইডির হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইডি (ED) সূত্রে জানা গিয়েছে, গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বিরুদ্ধে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। কোথায় এবং কীভাবে গরু পাচারের টাকা পৌঁছেছিল, তার বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করছেন ইডি গোয়েন্দারা।
গরু পাচারের মূল পাণ্ডা এনামুল হক, অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেন, হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি এবং অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ চাল ব্যবসায়ী রাজীব ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। গোয়েন্দাদের হাতে পাওয়া সমস্ত নথির ভিত্তিতে অনুব্রতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সূত্রের খবর, অনুব্রত গরু পাচারকারীদের রক্ষার বিনিময়ে টাকা (প্রোটেকশন মানি) নিতেন, তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে। তবে সেই টাকা কোথায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি বীরভূম তৃণমূলের সভাপতি।
এদিকে, অনুব্রত মণ্ডলকে জেরার সময় যে যে প্রশ্ন করছে ইডি, তার একটা সম্ভাব্য তালিকা তুলে দেওয়া হল:
১) মেয়ের নামে থাকা দুটো কোম্পানির কাজ কী ছিল?
২) দুটো কোম্পানিতে এত টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে কোথা থেকে?
৩) মেয়ের নামে থাকা দুটো সংস্থায় গরু পাচারের টাকা ঢুকেছে। আপনি ছাড়া কীভাবে সেটা সম্ভব?
৪) মেয়ে একজন প্রাথমিকের শিক্ষিকা, তাহলে তাঁর নামে ৫৭ কোটি টাকার ২৬টি সম্পত্তি হলো কি করে? আপনার মেয়ে বলেছে এই বিষয়ে আপনি জানেন।
৫) শুধু প্রোটেকশন মানি নয়, পাচারের জন্য আপনি কমিশন নিতেন পাচারকারীদের থেকে। সেই টাকা কোথায় গেলো?
৬) যে পরিমাণ সম্পত্তি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত টাকার হদিশ পাওয়া গিয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি আপনি পাচারকারীদের থেকে প্রোটেকশন মানি ও কমিশন নিয়েছেন। তাহলে বাকি টাকা কোথায়?
৭) কোন কোন প্রভাবশালীর কাছে সেই টাকা যেত? প্রভাবশালীদের ইন্ধন ছাড়া কি আপনি এই কাজ করতে পারতেন?
৮) একজন প্রাক্তন ব্যাংক কর্মীকে ৬ কোটি টাকা কেন দিয়েছিলেন?
৯) মলয় পিটের এনজিওতে আপনি কেন বিনিয়োগ করেছেন?
দিল্লিতে ইডি হেফাজতের দ্বিতীয় দিনে সাড়ে ১২টা থেকে জেরা শুরু অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata at Delhi)। সূত্রের খবর, যেকোনও জিজ্ঞাসাবাদ বা জেরায় বয়ান লিখিতভাবে নথিবদ্ধ করতে হয়। সেক্ষেত্রে কিছু প্রশ্নের উত্তর ইডির তরফে গরু পাচার-কাণ্ডে অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে লিখতে দেওয়া হয়েছিল। উত্তর খাতায় লিখতে বলা হলে নাকি অনুব্রত ইডি (ED) কর্তাদের বলেন, 'আমি লিখতে পারি না। ইংরেজি, হিন্দি তো পারি না। বাঙলাতেও ঠিকমতো লিখতে পারবেন না।' এরপরেই কেন্দ্রীয় সংস্থা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বয়ানের অডিও রেকর্ড করার। সেইমতো বক্তব্যর অডিও রেকর্ড করছে ইডি। এদিকে, গরু পাচার-কাণ্ডের (Cow Smuggling case) তদন্তে এযাবৎকাল অনুব্রত মণ্ডলের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে ইডি।
জানা গিয়েছে, মোট ১২১টি সম্পত্তির হদিশ নথিবদ্ধ করেছে ইডি। তৃণমূল নেতার প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডল ও কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে সম্পত্তি। বোন শিবানী ঘোষ ও জামাই কমলকান্তি ঘোষের নামে সম্পত্তি। ভাগ্নে রাজা ঘোষ ও ভাগ্নে বৌ প্রতিমা ঘোষের নামেও সম্পত্তি রয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার। এমনকি সম্পত্তি রয়েছে বিদ্যুত বরণ গায়েন ও তাঁর স্ত্রীর নামেও। এছাড়া বিদ্যুত বরণের মেয়ে অনুশ্রী গায়েনের নামেও সম্পত্তির হদিশ মিলেছে।
সূত্রের দাবি, শুধু বীরভূমে নয়, অনুব্রতর জমি রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। গোসাবার বিজয়নগর মৌজায় ১৫ ডেসিমেল জমি অনুব্রতর নামে। তৃণমূল কংগ্রেসে পার্টি অফিসের জমিও অনুব্রতর নামে। নানুরের চণ্ডীদাস মৌজায় তৃণমূলের জমি অনুব্রতর নামে বলে দাবি ইডি কর্তাদের।
এদিকে, অনুব্রতর নামে কোটি টাকার সম্পত্তির মধ্যে শতাধিক জমি, ধানক্ষেত, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি সম্পত্তি কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। যার পরিমাণ প্রায় ৫৭ কোটি টাকা! ব্যাংকে সুকন্যার ফিক্সড ডিপোজিট ৬ কোটি টাকা, সাত বছরে ১২ কোটি টাকার জমি কেনার তথ্য পেয়েছে তদন্তকারীরা।
ইতিমধ্যে সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লিতে ডাকা হয়েছিল। ইডি সূত্রের দাবি, কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। বাবা জানতেন বলে সব প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছে মেয়ে। এবার মেয়েকে করা সেই প্রশ্নের উত্তর বাবা অনুব্রত মণ্ডলের থেকে চাইছে ইডি।
রাতারাতি খবরের শিরোনামে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের ল্যাংচা কুঠি। শক্তিগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে রয়েছে এই ল্যাংচা কুঠি। মঙ্গলবার বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে এই হোটেলে প্রাতঃরাশ সারেন পুলিসকর্মীরা। খেতে দেখা গিয়েছে বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতিকেও।
জানা গিয়েছে, প্রথমে অনুব্রত মন্ডল হোটেলের দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকেছিলেন। হোটেলের ভিতরে প্রবেশের পরই অনুব্রত শৌচালয়ে যেতে চান। শৌচালয় থেকে ফিরে এসে হোটেলের একেবারে শেষের টেবিলে বসেন তিনি।
অনুব্রত হোটেলে ঢুকলে দোকানের পাশের মূল কাঁচের দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয় সুরক্ষার জন্য। এমনকি অনুব্রতর পাশাপাশি হোটেলের ভিতরে ছিলেন ইডি ও পুলিস কর্তারাও। তারপরেও অনুব্রতর টেবিলে দেখা গিয়েছে তাঁর তিন ছায়াসঙ্গীকে। যাঁদের উপস্থিতি ঘিরে দিনভর চলেছে চাপানউতোর। সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে অনুব্রত এবং তাঁর তিন ছায়াসঙ্গী কৃপাময় ঘোষ, সুকন্যার গাড়ির চালক তুফান মিদ্দা এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতাকে একসঙ্গে খাওয়ার খেতে। এমনকি শক্তিগড়ের সেই হোটেল মালিকের মামা স্বীকার করেন, অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে ওই তিনজন আগেও এই হোটেলে এসেছেন। এমনকি মঙ্গলবার অনুব্রতর খাওয়ার বিলের প্রায় হাজার টাকা (৯৯৫ টাকা) দিয়েছেন তাঁর সঙ্গীরা।
তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহু প্রশ্ন উঠছে জনমানসে। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কীভাবে অনুব্রতর ছায়াসঙ্গীরা ঢুকে পড়লেন এই হোটেলে? এমনকি যখন নিরাপত্তার প্রশ্নে হোটেলের দরজা পর্যন্ত লাগিয়ে দেওয়া হলো, তখন কীভাবে কেষ্টর ছায়াসঙ্গীরা তাঁর সঙ্গে একই টেবিলে বসে খেলেন এবং বৈঠক করলেন? এমনকি অনুব্রতদের খাবার বাবদ বিল ৯৯৫ টাকা দোকানে দিয়ে পুলিসের সামনে দিয়েই চলেও গেলেন ওরা তিনজন!
দোকানের মালিক জাভেদ ইসলামের মামা জানান, 'মঙ্গলবার অনুব্রত হোটেলে ঢুকেই শৌচালয়ে যান। অনুব্রত হোটেলে ঢোকার পর পুলিসকর্তারা সামনের দরজা বন্ধ করে দেন। তবে শৌচালয়ে যাওয়ার রাস্তাটি বন্ধ করা হয়নি। অনুব্রত শৌচালয় থেকে ভিতরে এলে তাঁর সঙ্গে ওই দরজা দিয়ে আরও তিনজন ঢুকে পড়েন। তবে কীভাবে ওই তিনজন হোটেলের শৌচালয়ের দরজা দিয়ে ভিতরে এসেছে তা জানেন না তিনি।' তিনি জানান, 'প্রায় ২৫ মিনিট ধরে তাঁরা একইসঙ্গে খাবারের টেবিলে খাচ্ছিলেন। পরে অনুব্রত একজন সবুজ পাঞ্জাবি পরা ব্যক্তিকে বিল মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলতে ওই ব্যক্তি বিল বিল মিটিয়ে দেন। এমনকি সেই সময় হোটেলের ভিতরে পুলিস-ইডির উপস্থিতির কথাও জানান তিনি।'
মধ্যরাতের টানাপোড়েনে শেষে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) তিন দিনের ইডি হেফাজত মিলেছে। ১০ মার্চ পর্যন্ত দিল্লিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে থাকবেন বঙ্গ রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডল। বুধবার দুপুর থেকেই তাঁকে একপ্রস্থ জেরা শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশ মেনে করা হয় মেডিক্যাল পরীক্ষা। তাঁকে জেরার সময় উপস্থিত থাকতে পারবেন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী। আধ ঘণ্টা করে মক্কেলের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন আইনজীবী। জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে অনুব্রতর এত সম্পত্তির উৎস কী? জানতে চাওয়া হতে পারে তৃণমূল নেতার (TMC Leader) থেকে। পাশাপাশি আরও একাধিক প্রশ্নবাণে অনুব্রতকে বিদ্ধ করবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (ED)।
১) গরু পাচারকারীদের সঙ্গে কোন চুক্তির উপর ভিত্তি করে টাকা নিয়েছেন?
২) তদন্তে দেখা গিয়েছে কালো টাকার পরিমাণ কয়েকশো কোটি টাকা। যা আপনার কাছে এসেছে, পাচারকারীদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য। সেই টাকাগুলো গেলো কোথায়?
৩) আপনার মেয়ের নামে যে বিপুল সম্পত্তি রয়েছে, সেই সম্পত্তি কেনার টাকার উৎস সম্পর্ক আপনিই নাকি জানেন। আপনার মেয়ের বক্তব্য তাই। আপনি জানান, মেয়ের সম্পত্তির পিছনে টাকার উৎস কি? সেগুলো কি গরু পাচারের কালো টাকা?
৪) আপনার হিসাবরক্ষক মণীশ কুঠুরি জানিয়েছেন, আপনি যা বলতেন উনি তাই করতেন। কালো টাকা সাদা করতে বেআইনি পথ অবলম্বন করেছেন?
৫) আপনি একজন রাজনৈতিক নেতা, আপনার এত সম্পত্তি হলো কি করে? সেই সম্পত্তির পিছনে গরু পাচারের কালো টাকা রয়েছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। আপনার বক্তব্য কি?
এদিকে, বুধবারও অনুব্রত মণ্ডলকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে। ইডি দফতর থেকে অনুব্রতকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। অপরদিকে, মঙ্গলবার রাতে তৃণমূল নেতাকে দিল্লি এনে ইডির সদর দফতরে তোলা হয়েছিল। ভার্চুয়ালি তাঁকে হাজির করা হলেও বিচারক ইডি কর্তাদের নির্দেশ দেন সশরীরে অনুব্রতকে হাজির করতে হবে। সেই মোতাবেক মধ্যরাতে তৃণমূল নেতাকে নিয়ে বিচারকের বাড়ি ছোটেন কেন্দ্রীয় সংস্থার কর্তারা। ১৪ দিনের পূর্ণ মেয়াদের পুলিস হেফাজত দাবি করলেও, ১০ মার্চ পর্যন্ত অনুব্রতর পুলিস হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষ। অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) নিয়ে দিল্লির (Delhi) উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন ইডি আধিকারিকরা (ED)। কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছতেই 'নাটক' শুরু অনুব্রতর বলে দাবি অনেকের। কারণ তিনি অসুস্থতা বোধ করছেন বলে আধিকারিকদের জানান। শ্বাস নিতে অসুবিধে হচ্ছে। অনুব্রতকে ইনহেলার নিতেও দেখা যায়। শ্বাসকষ্ট হওয়ায় নিকটবর্তী হাসপাতালে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত।
জানা গিয়েছে, রিহ্যাব লাউঞ্জে ছিলেন। ৬.৪৫ মিনিটের ফ্লাইটে দিল্লি যাওয়ার কথা অনুব্রতর। সেই মতো তিহারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এর আগে অনুব্রতর শ্বাসকষ্ট শরীর খারাপের 'নাটক' শুরু বলে কটাক্ষ করেন বিরোধীরা। যদিও সকাল ১১.০৮ মিনিটে কলকাতার জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া সম্ভবপর কিনা। সূত্রের খবর, রক্তের বিভিন্ন প্যারামিটার পরীক্ষা করা হয়। এক্স-রে এবং এসিজিও করানোর হয় অনুব্রতর। সব রিপোর্ট ঠিকঠাক আসে। এরপরই জেল কর্তৃপক্ষ ইডির হাতে তুলে দেন তাঁকে। পৌঁছতে রাত হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে। তাই আজ ইডির সদর দফতরেই রাতে থাকবেন। দিল্লি যাওয়ার পর আরেকবার তাঁর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হবে।
ইএসআই হাসপাতাল থেকে বার হওয়ার সময়ই বীরভূমের দাপুটে তৃণমূলকে লক্ষ্য করে উঠল 'গরু চোর' স্লোগান। হাসপাতালের সামনে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ জমায়েত করেছিলেন। তাঁরাই অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলে।
উল্লেখ্য, শক্তিগড়ে প্রাতঃরাশের সময় অনুব্রত মণ্ডলের টেবিলে ৩ জন অজ্ঞাতপরিচয়ের ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছিল। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেন তৃণমূল নেতা। অবশেষে ওই ৩ জনের মধ্যে ২ জনের পরিচয় জানা গিয়েছে। একজন, কৃপাময় ঘোষ। যিনি খাবারের বিল মিটিয়েছিলেন। আরও জানা গিয়েছে, আরেকজন, অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের গাড়িচালক তুফান মির্ধা। তবে পুলিসি নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কী করে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক সারতে পারেন? কীভাবেই বা তাঁরা খবর পেল কোথায় গাড়ি থামানো হবে? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
দোলের দিনই দিল্লিযাত্রা (Delhi) অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal)। মঙ্গলবার সকাল ৬.৪৫ নাগাদ আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগার থেকে বের করা হয় বীরভূমের (Birbhum) তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। এরপর জেল কর্তৃপক্ষের গাড়িতে করে কলকাতার (Kolkata) উদ্দেশ্যে রওনা দেন গরু পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুব্রত।
মাঝপথে বর্ধমানের শক্তিগড়ে নেমে প্রাতঃরাশ সারেন বীরভূমের দাপুটে নেতা। প্রাতঃরাশের মধ্যে ছিল ৪টে ডালপুরি, ১টা ২০টাকা দামের রসগোল্লা ও ১টি ১৫ টাকা দামের ল্যাংচা। জলখাবারের সময় নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কারণ অনুব্রত যে টেবিলে খেতে বসেছিলেন, সেখানে ৩ অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথাও বলছিলেন অনুব্রত। সকাল ১১.০৮ মিনিটে কলকাতার জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য পৌঁছয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া সম্ভবপর কিনা। চিকিৎসকরা ফিট সার্টিকিকেট দিলে তাঁকে জেল কর্তৃপক্ষ ইডির হাতে তুলে দেয়। এরপর বিমানে করে অনুব্রতকে নিয়ে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন ইডি আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, অনুব্রতকে রাতে আদালতে তোলা হবে। আর আদালত সময় না দিলে রাতে অনুব্রতকে রাখা হবে ইডির সদর দফতরে।
বঙ্গ রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলের (Anubrata Mondal) অপেক্ষায় তিহার! হাইকোর্ট অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি যাত্রা নিয়ে কার্যত সবুজ সংকেত দিয়েছে। ইডিও (ED) গরু পাচার (Cow Smuggling) মামলায় অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করতে চাইছে। এ কোর্ট, ও কোর্ট করে এবার মোটামুটি দিল্লি যাত্রা নিশ্চিত হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। এবার কী আছে তিহার জেলে? এত আতঙ্ক কেন তিহার যাত্রা ঘিরে?
তথ্য বলছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম জেল তিহারে রয়েছে একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা, জঙ্গি, গ্যাংস্টাররা। ৪০০ একর এলাকা নিয়ে এই জেলে আছে মোট ১৭ হাজার ৫৩৪ জন বন্দি। এখানে আছে কুখ্যাত এক্স-রে ওয়ার্ড। বন্দিদের জন্য মোবাইল ডিটেকটর, জ্যামার, কিউআরটি, পিএম সিস্টেম। তবে ভিআইপি বন্দিদের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। এছাড়াও বিশেষ ভাবে রয়েছে ফাঁসিকাঠ।
এদিকে, হাইকোর্টের অর্ডার মেনে অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জটিলতা কিছুটা কেটেছে। আসানসোল সিবিআই আদালতের নির্দেশে তৃণমূল নেতাকে কলকাতা পর্যন্ত নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাবে রাজ্য পুলিস। কেন্দ্রীয় কোনও হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট করিয়ে ইডির হাতে তৃণমূল নেতাকে তুলে দেবে পুলিস। সেখান থেকে ইডি দিল্লি নিয়ে যাবে রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলকে। আদালতের সেই রায়ের কপি ইডিকে পাঠালো আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষ।
রায়ের কপির সঙ্গে চিঠি দিয়ে ইডির কাছে জানতে চাইলো, কবে অনুব্রতকে তারা নিয়ে যেতে চায়।
হাইকোর্টের অর্ডার মেনে অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জটিলতা কিছুটা কেটেছে। আসানসোল সিবিআই (CBI Court) আদালতের নির্দেশে তৃণমূল নেতাকে কলকাতা পর্যন্ত নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাবে রাজ্য পুলিস। কেন্দ্রীয় কোনও হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট করিয়ে ইডির হাতে তৃণমূল নেতাকে তুলে দেবে পুলিস। সেখান থেকে ইডি দিল্লি নিয়ে যাবে রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলকে। আদালতের সেই রায়ের কপি ইডিকে পাঠালো আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষ। রায়ের কপির সঙ্গে চিঠি দিয়ে ইডির (ED) কাছে জানতে চাইলো, কবে অনুব্রতকে তারা নিয়ে যেতে চায়।
জানা গিয়েছে, অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হলো না। যেহেতু হাইকোর্ট কোনও টাইম বেঁধে দেয়নি, তবে যত দ্রুত সম্ভব নিয়ে যেতে হবে তৃণমূল নেতাকে। কবে কখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেটা আগে থেকে ইডি অফিসার পঙ্কজ কুমারকে জানাতে হবে। আদালতের নির্দেশ, বীরভূম তৃণমূল সভাপতিকে ইডির হাতে তুলে দেওয়ার আগে
কলকাতা নিয়ে গিয়ে অনুব্রতকে কেন্দ্রীয় কোনও সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট করাতে হবে। আসানসোল থেকে কলকাতার হাসপাতালে নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাবে রাজ্য পুলিস। পুরো এই প্রক্রিয়া চালানোর জন্য ইডি অফিসার পঙ্কজ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে রাজ্য পুলিস।
কোর্ট অর্ডার হাতে পেলেও অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) দিল্লি যাত্রা নিয়ে অব্যাহত টানাপোড়েন। এবার তৃণমূল নেতাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিতে নারাজ ইডি। অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে আসার দায়িত্ব আমাদের নয়, যেভাবে সায়গলকে দিল্লি নিয়ে আসা হয়েছিল, সেভাবেই তৃণমূল নেতাকেও (TMC Leader) আনতে হবে দিল্লি। আসানসোল জেল (Asansol Jail) কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিল ইডি। এই চিঠি পেয়ে বেকায়দায় আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষ। পুরো বিষয়টি জানিয়ে আইজি কারা দফতরকে চিঠি দিল আসানসোল জেল।
মঙ্গলবার পুরো বিষয় জানিয়ে আসানসোল সিবিআই আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে জেল কর্তৃপক্ষ। এদিকে, কলকাতা হাইকোর্টের অর্ডার কপি ইতিমধ্যে পৌঁছে গিয়েছে আসানসোল জেলে। জেল কর্তৃপক্ষকে প্রোডাকশন স্ট্যাটাস জানতে চেয়ে মেইল পাঠিয়েছে ইডি। সূত্রের খবর এখনও পর্যন্ত জেল তরফে কোনও তৎপরতা নেই।
নিয়ম অনুযায়ী জেল কর্তৃপক্ষকে রউস অ্যাভেনিউ কোর্টে অনুব্রতকে পেশের যাবতীয় দায়িত্ব নিতে হবে। সূত্রের খবর, গোটা বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে জেলের দিন দুয়েক সময় লাগবে। এই দু'দিনে অনুব্রত হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কিনা, সেটাই দেখার।
এদিকে, অনুব্রতকে নিরাপত্তা প্রদানে অপারগ আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট। তাঁকে নিরাপত্তা দিয়ে দিল্লি নিয়ে যেতে পারবে না কমিশনারেট, আসানসোল জেলকে জানিয়ে দিল পুলিস। এমনকি, পুলিস নিরাপত্তা না দেওয়ার কথা ইডিকে মেল করে জানিয়েছে কমিশনারেট।
কলকাতা হাইকোর্টের বড় ধাক্কা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal)। তাঁর দিল্লি যাত্রায় আর কোনও বাধা থাকলো না। তৃণমূল নেতার (TMC Leader) দিল্লি যাত্রা স্থগিত সংক্রান্ত আবেদন খারিজ হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। পাশাপাশি একই আবেদন দেশের দুই হাইকোর্টে করার অপরাধে তৃণমূল নেতাকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এদিন মামলার শুনানিতে ইডির (ED) আইনজীবী জানান, 'প্রয়োজনে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি এইমসে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হবে। কারণ তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে আমরাও চিন্তিত। কোনও অপরাধীকেই ইডি ছাড়বে না। তদন্তের স্বার্থে প্রত্যেকেই প্রয়োজনে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।'
এদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাওয়া রুখতে আসানসোল সিবিআই বিশেষ আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। শনিবার হাইকোর্ট ছুটি থাকলেও বিশেষ এজলাস গঠন করে শুনানি হয় অনুব্রত মণ্ডলের আবেদনের। যদিও সেই আবেদন খারিজ করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী।
অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য শনিবার নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে (Asansol Hospital)। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর জানা গিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলের কোনও আপদকালীন সমস্যা নেই। ভর্তি করার প্রয়োজন নেই। তাঁর ফিসচুলার সমস্যা গুরুতর নয়। ফিসচুলার (Fistula Problem) অংশ থেকে রক্তপাত দেখা যায়নি। পাশাপাশি তৃণমূল নেতার ব্লাড প্রেসার, সুগার, হার্টবিট নর্মাল।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ১৫ দিনে ৪ কেজি ওজন বেড়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। ২০ ফেব্রুয়ারি বীরভূম তৃণমূল সভাপতির ওজন ছিল ৯১ কেজি। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫। যদিও জেলে ঢোকার পর থেকেই ক্রমেই কমছিল অনুব্রতর ওজন। কিন্তু গত ১৫ দিনে একধাক্কায় ওজন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫।
জানা গিয়েছে, এদিন কলকাতা হাইকোর্টে অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাত্রার উপর স্থগিতাদেশ সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে। সেই শুনানিতে এই মেডিক্যাল রিপোর্ট পেশ করা হবে বলে সূত্রের খবর।