অসমের (Assam) বন্যা (Flood) পরিস্থিতি নিয়ে এবার সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী (CM) হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে ফোন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। পাশাপাশি একটি টুইটও করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, অসমের এই কঠিন পরিস্থিতিতে সব রকমভাবে সহায়তা করবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
অন্যদিকে অসমের বন্যা পরিস্থিতির সেভাবে কোনও উন্নতিই হয়নি এখনও। কয়েকটি জায়গায় জল নামলেও বেশিরভাগ গ্রাম এখনও জলের তলায়। জানা গিয়েছে, বন্যায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা।
বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, অসমে বন্যার কারণে প্রায় চার লক্ষের বেশি মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বারপেটা, কামরূপ, লখিমপুর, নলবাড়ি, ধুবড়ি সহ একাধিক এলাকা। সরকারের তরফে প্রায় ১০১টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তরফেও বন্যা ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হচ্ছে।
লোকসভা (Loksava) ভোটের আগে প্রতিমাসে রাজ্যে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী (Home Minister) তথা বিজেপির (BJP) দক্ষ সংগঠক অমিত শাহ। শাহের এই সিদ্ধান্তে বেশ কয়েকরকমের মত থাকছেই। একদিকে যখন লোকসভা ভোটের গড় আকড়ে ধরার জন্য প্রতিমাসে রাজ্য আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অমিত শাহ। তখন একদল মনে করছেন অমিত শাহ রাজ্যে এলে কর্মীরা সজাগ হবেন, এছাড়া কর্মীদের সক্রিয় করতে পারদর্শী অমিত শাহ। অন্যদিকে তখন একদল মনে করছেন, অমিত শাহের ক্রমাগত রাজ্যে আসা, ২০২১ অর্থাৎ গত বিধানসভা ভোটের পুনরাবৃত্তি হবে, ফলে বহিরাগত তত্ত্ব তৃণমূলের হাতে বাড়তি অস্ত্র তুলে দেবে।
হতে পারে বিজেপির অন্যতম দক্ষ সংগঠকের মস্তিষ্কে তখন অন্য কিছু চলছে। আসন্ন পঞ্চায়েতের লড়াইয়ে যে বিজেপির সাংগঠনিক হাল বেহাল সেটা বিজেপির সংগঠক অমিত শাহ বুঝেছেন। বিরোধীদের মত অবশ্য কিছুটা এরকম যে আর কিছুদিন পর লোকসভা ভোট। তার আগে পঞ্চায়েত ভোট। বিজেপির সংগঠনের হাল যদি এমন হয় তবে লোকসভাতে ভালো ভাবেই তৃণমূলের কাছে ঠোকর খেতে হতে পারে সে কথা কিন্তু অমিত শাহ জানেন, সে জন্যই হয়ত সংগঠন সামলাতে প্রতিমাসে রাজ্যে আসবেন।
এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তৃণমূল আগামী নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালনের লক্ষ্য নিয়ে লড়াই করবে। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাই ৪০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন দলকে। শাহের গত মঙ্গলবারের সফরটি ছিল বিগত ছয় মাসের মধ্যে তৃতীয়। এবার তিনি প্রতিমাসে আসতে চান বলে মঙ্গলবার সফরের শেষ লগ্নে নৈশভোজের আসরে নিজেই বলেন।
মঙ্গলবার রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Home Minister) অমিত শাহ (Amit Shah)। বিশেষ কোনো রাজনৈতিক (Politicial) সভা করবেন না বলে জানা গিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে। সূত্রের খবর আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার তিনি গোটা দিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। বিজেপি-র বকলমে চলা সাংস্কৃতিক সংগঠন 'খেলো হাওয়া'-র অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসছেন শাহ। সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করতে বাংলার সংস্কৃতি জগতের ব্যক্তিদের নিয়ে বিজেপির সমর্থনে হবে এই শাহি অনুষ্ঠান।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে জোড়াসাঁকো রবিঠাকুরের বাড়িতে আসবেন তিনি। ওখান থেকে বেরিয়ে তিনি সায়েন্স সিটির অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সূত্রের খবর, ওই অনুষ্ঠান শেষ করে তিনি বিকেলে পেট্রাপোল সীমান্তে একটি সরকারি অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করবেন। এছাড়া এই সফরে কোনো রাজনৈতিক সভা করবেন না বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া আরও জানা গিয়েছে, যে রাজ্যে বহরমপুরে একটি সভা করার কথা ছিল তা তিনি বাতিল করেছেন।
বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায়কে নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুকুল রায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই, এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুকুল তো বিজেপিরই বিধায়ক। এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'ওকে হয়ত থ্রেট করেছে কেউ, তাছাড়া ও তো বিজেপিরই বিধায়ক।' এরপরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি এর বেশি কিছু বলতে চাই না, এটা ওর ব্যক্তিগত ব্যাপার, এ সংক্রান্ত বিষয় ওনার ছেলেকে জিজ্ঞেস করুন।'
পাপাশি সোমবার বিরোধী দলনেতার করা মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দোপাধ্যায়, সেসঙ্গে কড়া ভাষায় আক্রমন করলেন স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ বিজেপিকে। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সূত্রের খবর, তৃণমূলের সর্বভারতীয় স্বীকৃতি খোয়া যাওয়ার পর নাকি মমতা বন্দোপাধ্যায় অমিত শাহকে ৪ বার ফোন করেছেন। এমন মন্ত্যবের পর নবান্ন থেকে তার জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া এদিন মুকুল রায়ের প্রসঙ্গ এলে তিনি বলেন ও তো বিজেপিরই বিধায়ক।
বুধবার সংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমার নামে ভুল বার্তা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, বিজেপি আমাকে বদনাম করার চেষ্টা চালাচ্ছে।' পাশাপাশি মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, 'ফোনের কথা প্রমাণ করতে পারলে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দেব এবং প্রমান করতে না পারলে নাকখত দিতে হবে।' বুধবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি আক্রমন করতে ছাড়েননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও, মমতা বন্দোপাধ্যায় ওই সাংবদিক বৈঠকেই বলেন, ' অমিত শাহের আচরণ ঠিক নয়, গায়ের জোরে সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।'
এছাড়া বুধবার মুখ্যমন্ত্রী তার দলের সর্বভারতীয় পদ নষ্ট হওয়া নিয়েও মন্তব্য করেন, এবং বলেন, 'নির্বাচন কমিশনকেও ওরা কন্ট্রোল করছে, আমার দলের নাম সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস, আমি এই নাম বদলাব না।'
সোমবার বলতে সিবিআইয়ের হাতে তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA Arrest) জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব। রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় করে তৃণমূলের এই জোড়া ধাক্কার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Home Minister Amit Shah) পদত্যাগ দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বঙ্গ সফরকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। তিনি জানান, '১৪ এপ্রিল দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় বিজেপির বৈঠক করতে এসেছিলেন। বৈঠক তিনি করতেই পারেন, কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সংবিধানের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বলতে পারেন না, চব্বিশের ভোটে বাংলায় ৩৫টি আসন পাবে বিজেপি আর অপেক্ষা করতে হবে না বাংলার এই সরকার চলে যাবে। একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চক্রান্ত করছেন। কোন আইনে তিনি গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকার ফেলে দেবেন? এই কথা বলার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি আমরা।' যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে পাল্টা খোঁচা দেন বিজেপি সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
তাঁর ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য, '৩৫টি আসন পাবে লোকসভায়। আগে ৫টি সাংসদ পেয়ে দেখাক বিজেপি।' দুর্নীতি দমন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, 'আমরা অনেক সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এলে পদক্ষেপ করেছি। দলের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে পদক্ষেপ করেছি। বাংলায় যার ইশারায় অমিত শাহ চলছেন তিনি বড় ডাকাত। কিছু একটা ঘটলেই কেন্দ্রীয় দল, কমিশন দিল্লি থেকে চলে আসছে। আমাদের উন্নয়নমূলক কাজও ওরা বন্ধ করে রেখেছে।'
এদিকে, সুকান্ত মজুমদার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি জানান, 'বিজেপি যদি ৫-এর বেশি সাংসদ পায় মুখ্যমন্ত্রী কি পদত্যাগ করবেন? এটুকু চ্যালেঞ্জ নিক, এত বড় উনি দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেত্রী।' পাশাপাশি দুর্নীতি দমন প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সংস্থার তৎপরতা প্রশ্নে সুকান্ত মজুমদার জানান, 'এত চোর আগে কোথাও ধরা পড়েনি। জীবনকৃষ্ণ সাহা আজ ভিতরে গিয়েছেন, পিছনে আরও আসছেন। এত চোরকে ধরতে গেলে তো সিবিআই অফিসারদের রাজ্যে আসতেই হবে। তিন জন বিধায়ক, একজন জেলা সভাপতি গারদের ভিতরে ঢুকেছেন।'
প্রসূন গুপ্ত: অমিত শাহ দুদিনের সফরে এসে একটাই জনসভা করেছেন, সেটা অনুব্রত-হীন বীরভূমে। শাহী ভাষণ শুনে কংগ্রেস-সিপিএম নিজেদের সামাজিক মাধ্যমে দাবি করছেন, কী এমন ভাষণ দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যা যা বললেন তাতে নাকি আখেরে সুবিধা হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা শাসক দল তৃণমূলের। অথচ শোনা গিয়েছে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক এবং চাঁচাছোলা বক্তব্য রেখেছেন অমিত শাহ। একাধিক ইস্যুতে তুলোধোনা করেছেন তৃণমূলকে। রাজ্যজুড়ে প্রসাশনিক অব্যবস্থার জন্য দায়ী করেছেন 'দিদি'-কে। তিনি বলেছেন, 'আগামীতে মমতার পর তাঁর ভাতিজা মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না, কারণ ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।' বারবার ভাষণে আক্রমণ করেছেন 'পিসি-ভাইপোকে।' তবে কেন নেতিবাচক ভাবছে বাম-কংগ্রেস জোট?
জোট প্রতিনিধিরা বলছেন, লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে এমন ভাষণ তিনি হিসাব করে দিয়েছেন যাতে লাভ হবে মমতার। সম্প্রতি সাগরদিঘির নির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে আসন দখল করেছে বাম-কংগ্রেস জোট। মুর্শিদাবাদের এই বিধানসভা মুসলিম প্রধান। কাজেই এ রাজ্যের ৩২% মুসলিম ভোট ভাগাভাগি হলে আখেরে লাভ বিজেপির। কিন্তু বিজেপি তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে। হিন্দু ও মুসলিম ভোটের বেশিটাই গিয়েছে কংগ্রেসে, ধারণা জোটের। এটা যদি সারা রাজ্যের চিত্র হয়, তবে নাকি বিজেপি-তৃণমূল আগামীতে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে যাবে।
জোটের লোকেরা বলছে, মুসলিম ভোটে ফের যাতে তৃণমূলের বাক্সে আসে তার কারণে অমিতের বক্তব্যের কিছু অংশকে তারা তুলে ধরছে।
১) যেমন অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াতে হবে
২) রাম নবমীর মিছিলে যারা হামলা করেছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে
এই তিনটি লাইন কাদের উদ্দেশে বলার অপেক্ষা থাকছে কি? দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যে কারা ভয় পাবে? শঙ্কিত হয়ে ঠিক কাকে ভরসা করে ভোট দেবে সেই অংশ? এই প্রশ্নের উত্তরগুলো সহজ ভাষায় দিয়েছে বাম-কংগ্রেস জোটের কারবারীরা।
বাংলার বকেয়া টাকা দিয়ে দিলে রাজনীতি (Politics) ছেড়ে দিতে রাজি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। শুক্রবার বীরভূমে সিউড়ির সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তারই জবাবে শুক্রবার সন্ধ্যায় টুইট করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, 'বাংলার বকেয়া ১ লক্ষ ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে দিন, তবে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া তো দূর, আমি রাজনীতিও ছেড়ে দিতে রাজি।' শুক্রবার দু'দিনের সফরে রাজ্যে পা রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
শুক্রবার রাজ্যে পা রেখে অনুব্রত মণ্ডলের গড় বীরভূমে, তিনি একটি সভা করেন। সেখানেই রাজ্যের দুর্নীতি, অশান্তি-হিংসা-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টার্গেট করেন। ওই সভা থেকেই স্পষ্টতই বলেন, 'ভাইপো যতই চাক না কেন, ভাইপো মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবে না।' এরপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন টুইটে হৈ-চৈ ছড়িয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে।
ইতিমধ্যেই ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা ইত্যাদি নিয়ে বাংলার বকেয়ার দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় সরব হয়েছেন মমতা এবং অভিষেক। সম্প্রতি রেড রোডে বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধারনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বিভিন্ন সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই বিষয়ে সুর চড়িয়েছেন। হুংকার দিয়েছেন দিল্লি অচল করে দেওয়ার। সামনেই পঞ্চায়েত, বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। যদিও শুক্রবার ৩৫টি আসন নিয়ে ২৪ সালে, মোদিকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর দাবী জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এ অবস্থায় বাংলাকে বঞ্চনা করার দাবিতে বকেয়া অর্থ চেয়ে অভিষেকের টুইট, সেটা যে কেন্দ্রকে তোপ সেটা স্পষ্ট করলেন ওই টুইটেই।
বীরভূমের সভায় (Birbhum Meet) রাজ্য সরকার-সহ শাসক দলকে একাধিক ইস্যু তুলে আক্রমণ করেছেন অমিত শাহ। এবার তাঁকে পাল্টা দিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। শুক্রবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে শাসক দলের মুখপাত্র জানান, '২৫ সালে রাজ্যে সরকার পড়ে যাবে বলছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Amit Shah)। এটা অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক, স্বৈরাচারী মনোভাব। ঝুলি থেকে বিড়াল বেড়িয়ে পড়েছে। একুশের ভোটে ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করে হেরেছেন লজ্জা করে না। লোকসভার সঙ্গে বিধানসভার সম্পর্ক কী? মানুষের রায়ে রাজ্যে নির্বাচিত সরকার। সেই সরকার ফেলে দেওয়ার কথা কে বলছেন, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অর্থাৎ একটা চক্রান্ত চলছে, আর সেটা হচ্ছে দিল্লি থেকে।'
এদিন কুণাল বলেন, 'উনি (পড়ুন অমিত শাহ) বলেছেন লোকসভায় ৩৫টি আসন, আমরা বলছি শূন্য থেকে গোনা শুরু করুন। এক পর্যন্ত পৌঁছতে ঘাম বেড়িয়ে যাবে। বিজেপি লোকসভায় শূন্যে দাঁড়িয়ে থাকবে। বিধানসভা ভোটের আগে বলেছিলেন আব কি বার ২০০ পার। অমিত শাহজি ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করেছিলেন।' এদিন কুণাল ঘোষ দাবি করেন, আগামি লোকসভা এবং বিধানসভায় বিজেপির পরাজয়ের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করলেন অমিত শাহজি।
লোকসভা (Loksava) ভোটে ৩৫টি আসনের টার্গেট সেট করে, মোদিকে (Narendra Modi) তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী করার দাবি অমিত শাহের (Amit Shah)। শুক্রবার দুপুরে অনুব্রতর গড়ে সভা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার দুপুরে বীরভূমের সিউড়ির সভা থেকে বাংলায় দুর্নীতি, বগটুই কাণ্ডের সঙ্গে নিজেদের কাজের তুলনা করে মমতাকে কটাক্ষ অমিত শাহের।
শুক্রবার সভার শুরুতে বগটুই কাণ্ডে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি আদিবাসী সংস্কৃতি, অর্থাৎ বাউল সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা জানান। তিনি এই সভা থেকে বলেন, 'মোদী জামানায় প্রথম কোনো আদিবাসী মহিলা দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি হয়েছেন।' এই সভা থেকেই তিনি সরাসরি তৃণমূলের দিদি-ভাইপোকে আক্রমন করেন। তৃণমূলকে আক্রমণের সুরে তিনি বলেন, '৩৫ টি আসন দিন লোকসভায়, ২৫ সালের আগে বাংলায় তৃণমূল সরকার পড়ে যাবে।'
শুক্রবার তিনি বলেন, 'সন্ত্রাস ও অনুপ্রবেশ রুখতে ভারতে মোদী সরকারই পারে।' ওই প্রসঙ্গে বাংলায় সন্ত্রাসের চিত্র টেনে আনেন তিনি। শাহের মুখে শোনা গেল বীরভূমের সন্ত্রাসের চিত্রও। তিনি এদিন বলেন, 'এনআইএ সম্প্রতি ৩৮ হাজার ডেটোনেটর উদ্ধার করেছে বীরভূম থেকে, গ্রেফতার হয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠনের জঙ্গিও।' পাশাপাশি তিনি শুক্রবার রামনবমীতে বাংলায় হওয়া হিংসা-অশান্তি নিয়েও সরব হন। কার্যত লোকসভার প্রচারের সুরেই অমিত শাহ শুক্রবার তৃণমূলকে নিশানা করে বলেন, 'দিদির দলের অধিকাংশ নেতা একের পর এক জেলে রয়েছেন, গারদের পিছনে রয়েছেন মন্ত্রীও।' পাশাপাশি বাংলায় দিদি চাকরির নামে প্রতারণা করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এবার সরাসরি টেনে আনেন নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গ, শুক্রবার তিনি বলেন, 'দিদি ৩ লক্ষ চাকরি দেবেন বলেছিলেন, কিন্তু বাংলায় বেকার বেড়েছে। এবং দিদি ওই চাকরি নিয়ে দুর্নীতি করেছেন। তাই জেলে তো থাকতেই হবে।'
মোটের উপর শুক্রবার রাজনৈতিক সভায় তৃণমূল, দিদি-ভাইপোকে নিশানা করে, গোটা সভার মাধ্যমে অনুব্রতর গড় বীরভূম ও গোটা বাংলায় তিনি যে বিজেপির মনোবল বৃদ্ধি করলেন সেটা স্পষ্ট।
মণি ভট্টাচার্য: এমনিতেই বৈশাখের প্রাক্কালে তীব্র তাপপ্রবাহে জ্বলছে বাংলা (West Bengal), আজ অর্থাৎ শুক্রবার চড়তে পারে রাজনীতিরও (Politics) পারদ। কথামতই বঙ্গে পা রাখছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অমিত শাহ যখন বাংলার মাটিতে পা রাখবেন তখন রীতিমত তপ্ত থাকবে বাংলা। সূর্য থাকবে মাথার উপর। এই অবস্থায় দুপুরে বীরভূমের সার্কিট হাউসে খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রামের পর বীরভূমে সভা করবেন তিনি।
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট, বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে শাহি সফর ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের ২ দিনের সফরে বীরভূমকে কেন শাহী সভাস্থল হিসেবে বেছে নেওয়া হলো! তার রাজনৈতিক তাৎপর্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। গত পঞ্চায়েত ভোট বিরোধী শুন্য ছিল বীরভূম! বীরভূমের দোর্দন্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা কেষ্ট মণ্ডল এখন গরু পাচার-কাণ্ডে তিহার জেলে। এসময়ে বীরভূমের গোষ্ঠীকোন্দল, হিংসা আটকাতে হিমশিম খাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বীরভূমকে সামলাতে আলাদা করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক ও নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। বীরভূম নিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতিতে রাজ্যে অমিত শাহের উপস্থিতি যে তৃণমূলের কাছে ভীষণ চাপের সেটাও স্পষ্ট।
বীরভূম শিল্পে পিছিয়ে, পিছিয়ে প্রকৃত উন্নয়নেও, ভুরিভুরি অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত ভোটে ওই জেলার ভোটের সমসাময়িক চিত্র, গোটা রাজ্যের ভোটে প্রভাব পড়েছে বরাবর। যেমন, 'রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে থাকবে।' কেষ্টর এই প্রবাদের প্রভাবে ২০১৮-তে পঞ্চায়েত ভোট কতটা রক্তক্ষয়ী হয়েছিল সেটা সবারই জানা। এই পরিস্থিতে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি তৃণমূলের রয়েছেই। একের পর এক ইস্যু যেমন বগটুই, নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা, গরু পাচার-কাণ্ড, বাংলার হিংসা, সব নিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে থাকা তৃণমূল শাসিত বাংলায়, পঞ্চায়েতের আগে অমিত শাহ যে অপ্রতিরোধ্য এবং আক্রমণাত্মক হবেন সেটা পরিষ্কার।
পঞ্চায়েতে ভোটে ভাঙন ধরলে, লোকসভা সামলানো যে মুশকিল সেটা গোটা রাজনৈতিক মহল জানে। একদিকে যখন মমতার ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী পার্থ নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন, অন্যদিকে তখন গরু পাচার-কাণ্ডে তিহার জেলে কাটাচ্ছেন, মমতার গ্রাম বাংলার অন্যতম সৈনিক অনুব্রত মণ্ডল। পাশাপাশি রামনবমীতে হওয়া অশান্তিকে কেন্দ্র করে জল গড়িয়েছে অনেক দূর। পঞ্চায়েত ভোটার দামামা বেজে গিয়েছে, বাংলাকে পাখির চোখে দেখলে, বিরোধীদের এর থেকে ভালো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আর নেই। পাশাপাশি বছর গড়ালে লোকসভা ভোট, সমস্ত পরিস্থিতি নজরে রেখে শাহী সফর কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চরমে।
এমনিতেই বাংলা তপ্ত হয়ে রয়েছে, এর উপরে চড়তে পারে রাজনৈতিক পারদ। সরকার থেকে সতর্কতা স্বরূপ বলা হয়েছে, বিনা প্রয়োজনে বাইরে বেরোবেন না এবং প্রয়োজনীয় ঠান্ডা পান করুন। এই পরিস্থিতিতে নবান্নের ১৪ তলা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো কি ঠান্ডা জল খেয়ে এই রাজনৈতিক উত্তাপ সামলাতে পারবেন কিনা সেটাই দেখার।
ইতিমধ্যে দিল্লি (Delhi) থেকে রওনা দিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Home Minister) অমিত শাহ (Amit Shah)। আজ অর্থাৎ শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিট নাগাদ দুর্গাপুর বিমানবন্দরে পৌঁছবে শাহের বিমান। এর পর সেখান থেকে দুপুর ১২টা ২৪ মিনিট নাগাদ ভারতীয় বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে করে রওনা দেবেন তিনি। দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ পৌঁছবেন বীরভূমের সিউড়ি হেলিপ্যাডে। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট নাগাদ সিউড়ি হেলিপ্যাড থেকে সড়কপথে রওনা দেবেন বীরভূমের সার্কিট হাউসের উদ্দেশ্যে। সেখানে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন তিনি। দু'দিনের সফরে তিনি বীরভূমে সভা করবেন।
এরপর দুপুর ২টো ৫ মিনিটে বীরভূমে বেণীমাধব স্কুল মাঠে সভা শাহের। সেখানে দলের জেলা কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন শাহ। পাশাপাশি একটি বৈঠকও করার কথা তাঁর। বিকেল ৪টে ৫ মিনিট নাগাদ বেণীমাধব স্কুল মাঠ থেকে সড়কপথে রওনা দেবেন সিউড়ি হেলিপ্যাডের উদ্দেশ্যে। এরপর কপ্টারে করে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে পৌঁছবেন কলকাতা বিমানবন্দরে। সেখান থেকে যাবেন হোটেলে। সন্ধ্যা ৬টায় হোটেলে বৈঠক করার কথা শাহের।
বাংলা নববর্ষের দিনও কর্মসূচি রয়েছে শাহের। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখান থেকে রওনা দেবেন কলকাতা বিমানবন্দরে। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বিমানবন্দর থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন শাহ।
চিনের (China) হুশিয়ারির পাল্টা জবাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Home Minister) অমিত শাহের (Amit Shah)। অমিত শাহের অরুণাচল প্রদেশ সফর নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে হুঁশিয়ারি দেয় বেজিং। চিনের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে অরুণাচল সফরে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) লাগোয়া কিবিথুতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ভাইব্র্যান্ট ভিলেজ প্রোগ্রাম’ উদ্বোধন করতে গিয়ে কড়া ভাষায় বেজিংকে জবাব দিলেন তিনি।
শাহ সোমবার বলেন, ‘আগে যে কেউ ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ এবং জবরদখল করতে পারত। এখন ভারতীয় সূচ্যগ্র ভূখণ্ডও কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।’ এবং পাশাপাশি, ১৯৬২ সালে চিনা ফৌজের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অরুণাচলবাসীর অনমনীয় মনোভাবের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘এই মনোভাবই সেদিন হামলাকারীদের পিছু হটতে বাধ্য করেছিল।’ ১৯৬২ সালের যুদ্ধে কিবিথুতে চিনা হামলায় নিহত ভারতীয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনও করেন শাহ।
সোমবার সকালে শাহের দু’দিনের অরুণাচল সফরের আগেই প্রতিবাদ জানিয়েছিল চিনা বিদেশ মন্ত্রক। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘এই পদক্ষেপ (শাহের সফর) দ্বিপাক্ষিক শান্তি প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। আমাদের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না।’ বেজিংয়ের তরফে নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, টানাপড়েনের মধ্যে ভারত যেন সীমান্ত পরিস্থিতিকে অযথা জটিল না করে তোলে।
কিন্তু চিনা হুমকি উপেক্ষা করেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে ভাবনায় বদল এসেছে। কেন্দ্র এখন সীমান্তবর্তী অঞ্চলের উন্নয়নকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চায়। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি আর এখন ‘শেষ গ্রাম’ নয়, ‘প্রথম গ্রাম। এটাই ভাবনার বদল।’
হনুমান জয়ন্তীতে (Hanuman Jayanti) আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সতর্কবার্তা জারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর। রামনবমীর (Ram Navami) মিছিলকে কেন্দ্র করে ঝামেলা-অশান্তি সৃষ্টির কারণে এবার হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার, হনুমান জয়ন্তীতে যাতে সব রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকে, সেই জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি সেরে নিতে বুধবার রাজ্যগুলিকে সতর্কবার্তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। রবিবার থেকে রামনবমীর মিছিল ঘিরে বিক্ষিপ্ত ঘটনায় অশান্ত হয়েছে হাওড়া-হুগলি। অগ্নিকাণ্ড, ভাঙচুর, বোমাবাজির কারণে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সেই কারণেই বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তীর মিছিল ঘিরে যাতে নতুন করে আর কোনও অশান্তি তৈরি না হয়, তাই ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি ট্যুইট শেয়ার করে পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘হনুমান জয়ন্তীতে প্রস্তুতি নিয়ে সমস্ত রাজ্যকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরামর্শ, যেন আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব পালন করার দিকে লক্ষ্য রাখা হয়। সেই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে এমন বিষয়গুলির উপর কড়া নজরদারি রাখা হয়।’
বিহারে (Bihar) দলীয় সভা থেকে দাঙ্গাবাজদের (Rioter) উল্টো করে ঝোলানোর হুঙ্কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah)। বিহারে রামনবমী ঘিরে অশান্তির ঘটনায় নীতিশ কুমারের সরকারের দিকে একের পর এক আক্রমণ শাহের। রবিবার বিজেপির দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। রবিবার নওয়াদায় সভা থেকে নীতিশকে টার্গেট করে দাঙ্গাবাজদের নিয়ে হুঙ্কার করেন তিনি। সেখানে তাঁর দাবি, ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিহারে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।
বিহারের সভা থেকে দুই নেতাকেই আক্রমণ করেন তিনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নীতিশ এবং লালু, দু’জনের দিকেই আঙুল তুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শাহ বলেন, ‘ভেবেছিলাম সাসারামে যাব। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ওখানকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় এবার যাচ্ছি না। ওখানে মানুষ মরছে। এক দিকে চলছে গোলাগুলি। অন্য দিকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটছে। তবে পরের বার বিহার এলে ওখানে অবশ্যই যাব।’ একই সঙ্গে তাঁর হুঙ্কার, ‘ক্ষমতায় এলে উল্টো করে ঝোলানো হবে দাঙ্গাবাজদের।’ অমিত জানান, বিহারের রাজ্যপালকে ফোন করে তিনি পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছেন।
রামনবমী ঘিরে দেশের ছ’টি রাজ্যে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ এবং কর্নাটক বিজেপি বা বিজেপি জোট শাসিত। অ-বিজেপি রাজ্যগুলি হল বিহার এবং বাংলা। এ রাজ্যের হাওড়া জেলার কিছু জায়গায় অশান্তি হয়েছে। বাংলার পরিস্থিতি নিয়েও গত শুক্রবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন শাহ।
যোগী সরকারের আমলে উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) একাধিক জায়গার নাম বদল হয়েছে। এলাহাবাদ হয়েছে প্রয়াগরাজ, মোঘলসরাই জংশন হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশন। এবার লখনউয়ের (Lucknow) নাম পরিবর্তনের দাবিতে সরব বিজেপি সাংসদ সঙ্গমলাল গুপ্ত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) এই মর্মে চিঠি দেন বিজেপি সাংসদ। এবার এই নামবদলের বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনার কথা জানান উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠকও।
বুধবার একটি প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে যোগ দিতে ভদোহিতে যান ব্রজেশ। সেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর একটি মূর্তিও উন্মোচন করেন তিনি। উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'সকলেই জানেন, লখনউ লক্ষ্মণের শহর ছিল। নাম বদলের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।' ঘটনাচক্রে, দীর্ঘদিন ধরেই লখনউয়ের নাম বদলে ‘লক্ষ্মণনগরী’ করার দাবি উঠছে উত্তরপ্রদেশে।
গত মঙ্গলবারই এ বিষয়ে নিয়ে শাহকে চিঠি দেন প্রতাপগড়়ের সাংসদ সঙ্গমলাল। নাম বদলের পক্ষে তাঁর যুক্তি, ত্রেতা যুগে শহরের নাম লক্ষ্মণপুরই ছিল। ভগবান রাম এই শহরটি ভাই লক্ষ্মণকে উপহার দেন। পরবর্তীকালে নবাব আসাফ-উদ-দৌলা সেই নাম বদলে লখনউ রাখেন।