বিশ্বকাপ টি-২০ জমে উঠেছে। আচমকাই রবিবারের মস্ত ধাক্কা টুর্নামেন্টের রং পাল্টিয়ে দিল। ছুটির দিনে অনেকেই দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। রবিবারের একমাত্র খেলায় ধরে নিয়েছিল ভারতীয় দর্শকরা যে ভারত কোনও ভাবে জিম্বাবোয়েকে হারাক, শান্তিতে ভারত এক নম্বর হয়ে সেমিফাইনালে যাক। লোকের ধারণা আর কি বা রয়েছে রবিবাসরীয়তে? কারণ আজকের একটি খেলা দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম নেদারল্যান্ড, যেখানে টুসকি দিয়ে জিতে যাবে আফ্রিকানরা। আর খেলে বলতে পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ যেখানে ফল নিয়ে কি লাভ, কারণ এরা তো কেউই তো আর সেমিফাইনালে যাবে না। কিন্তু ক্রিকেট এক বলের খেলা, কখন কি হয়ে যাবে কেউই কি বলতে পারে?
কার্যত রবিবারের রবির রং পাল্টিয়ে ফেললো সমস্ত জল্পনা। ভারতীয় সময় আলো না ফোটা সকালে শুরু হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম নেদারল্যান্ডের খেলা। চিরকালের চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকা সদ্য বিশ্ব ক্রিকেটে আসা ফুটবলের চোকার্স দেশ নেদারল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো। জমে গেলো ক্রিকেট। সকলের কাছে মৃত্যু থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কাছে সুযোগ এসে গেল। যে জিতবে সেই যাবে সেমিফাইনালে। এবং এবার আর সুযোগ নষ্ট করলো না পাকিস্তান। বাংলাদেশকে অনায়াসেই হারিয়ে এবারে সেমিতে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি। অন্যদিকে ভারত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইংল্যান্ডের সঙে লড়াইতে।
ইতিহাস কি ফিরে আসে? ১৯৯২-এর বিশ্বকাপ ক্রিকেটে পাকিস্তান খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সেমিফানালে পৌঁছেছিল। তারপর জিতে ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইমরান খান বিশ্বকাপের দখল নিয়েছিল। দেখার বিষয় ভারত কি হারাতে পারবে ইংল্যান্ডকে? যদি পারে তবে অন্য খেলা, কিন্তু যদি ইংল্যান্ড ফাইনালে ওঠে? সেবারেও কিন্তু টুর্নামেন্টটি অস্ট্রেলিয়াতেই হয়েছিল ঠিক ৩০ বছর আগে।
প্রসূন গুপ্ত: ভারতীয় ক্রিকেটের সুপার স্টারের সংখ্যা খুব বেশি নয়। প্রচুর রান করলেই সুপারস্টার হওয়া যায় না। দেখতে হয়ে যে জনতার মনে সেই খেলোয়াড় কতটা দাগ কেটেছেন। ভারতীয় ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার সুনীল গাভাস্কার, দ্বিতীয় কপিলদেব, তৃতীয় সচিন তেন্ডুলকার এবং শেষ যিনি, তিনি আজকের নায়ক বিরাট কোহলি। ক্রিকেটে বিশ্বনাথ ভেঙ্গসরকার, বেদি, অনিল কুম্বলে, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলি থেকে মহেন্দ্র সিং ধোনি; এঁদের অবদান বিশাল। এছাড়াও অনেকেই তাঁদের ক্রিকেট জীবনে ভারতের হয়ে সেরা সব ম্যাচ খেললেও এঁদের নিয়ে ক্রিকেট বিশ্ব মাতামাতি করেনি। যদিও ভারতীয় ক্রিকেটে এঁদের অস্বীকার করা অন্যায়। তবুও আলোচিত সেরা চারে, উপরের নামগুলো নিজেদের সময় বিশ্ব সেরা ছিলেন।
বিরাট ক্রিকেটে এসেছেন সচিনের খেলা ছাড়ার আগে পরে। সচিন খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর হা হুতাশ উঠেছিল যে বিশ্বসেরা খেতাব আর বোধহয় আর ভারতে রইল না। কিন্তু দ্রুত কোহলি সচিনের জায়গাটা নিয়ে নিল, যদিও এখনও অনেক পথ বাকি। অবশ্য বিরাটের বয়স আজ ৩৪ পূর্ণ হল। বিরাটের খেলার মধ্যে, বিশেষ করে স্ট্রোক নেওয়ার ক্ষেত্রে কপিবুক গাভাস্করকে যেমন পাওয়া যায় তেমনই ফ্রন্টফুটে বা ব্যাকে গিয়ে অফ সাইড স্ট্রোক দেখলে সচিনকে মনে পরে। এযাবৎ বিরাট ১০২ টেস্টে ৮০৭৪ রান করেছেন, ৫০ ওভারের খেলায় ১২,৩৪৪ রান এবং টি-২০ তে ১১৩ ম্যাচে করেছেন ৩৯৩২। সচিনের মতো ১০০ সেঞ্চুরি না থাকলেও আরও দৃঢ়তার সঙ্গে খেললে তাঁর রেকর্ড ভেঙে দেবে বিরাটই, বলেছেন স্বয়ং সচিন তেন্ডুলকার।
গত তিন বছর ধরে রানের খরা চলছিল কোহলির। এত দীর্ঘ সময় এর আগে কারুর ব্যাড প্যাচ থাকে না। নেতৃত্ব হারালেন তবুও ফর্মে ফিরতে পারছিলেন না। সানি গাভাস্কর বারবার সতর্ক করেছিলেন। ইতিমধ্যে বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মাকে, সন্তানও হয়েছে। হয়তো এদর সাথে অনেকটাই জড়িয়ে পড়েছিলেন বিরাট। কিন্তু সুসময় এলো অবশেষে, এশিয়া কাপ যদি ট্রেলার হয়, তাহলে টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ পুরো সিনেমা। হারা ম্যাচ যেভাবে জিতিয়েছেন বিরাট, তার তুলনা কোনও কিছুতেই হয় না। একার খেলাতেই কামাল করছে ভারত। সবার আশা ফাইনাল অবধি এই ফর্মেই যেন থাকে ভিকে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে কঠিন হয়ে গেল সাউথ আফ্রিকার (South Africa) শেষ চারে যাওয়ার নিশ্চয়তা। বরুণ দেবের অভিশাপ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না দক্ষিণ আফ্রিকার। ৩০ বছর আগে সিডনির (Sydney) মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ডোনাল্ডদের মুখের হাসি মিলিয়ে দিয়েছিল বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার বাভুমা-কুইন্টন ডি ককদের একই পরিণতি হল। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতলে দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি সেমিফাইনালে যাওয়ার রাস্তা পাকা হয়ে যেত। পাকিস্তানের (Pakistan) ১৮৫ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর যখন ৯ ওভারে ৬৯, তখনই বৃষ্টি নামে।
ম্যাচ বন্ধ করতে বাধ্য হন আম্পায়াররা। সেই সময় ১১ ওভারে ১১৬ রান প্রয়োজন ছিল প্রোটিয়াদের। ওভার প্রতি প্রয়োজন ছিল প্রায় সাড়ে ১০ রান। স্থানীয় সময় পেরিয়ে যাওয়ায় ওভার যে কমবে, তা নিশ্চিত হয়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্যমাত্রা আরও কঠিন হতে পারে বলেই আশঙ্কা ছিল। ম্যাচ শুরু না হলে দক্ষিণ আফ্রিকা হারতই। ম্যাচ শুরুর পর দক্ষিণ আফ্রিকা বেশি উইকেট হারানোর কারণে তাদের লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে যায়। ম্যাচ কমে দাঁড়ায় ১৪ ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য হয় ১৪২ রান। অর্থাৎ পাঁচ ওভারে তুলতে হত ৭৩ রান। ওভার প্রতি তখন প্রয়োজন ১৪.৬ রান।
টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের বৃষ্টিবিঘ্নিত রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫ রানে হারাল ভারত (India beats Bangladesh)। এই জয়ের সঙ্গে শেষ চারের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল টিম ইন্ডিয়া (India)। বুধবার বাংলাদেশ টস জিতলেও প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৮৪ রান তোলে ভারত। সেখানে শেষ বল পর্যন্ত লড়ে জয়ের জন্য নির্ধারিত রানের ৫ রান আগে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। এদিন বিরাট কোহলির পাশাপাশি ব্যাটে রান পান কেএল রাহুল এবং সূর্যকুমার যাদব। ভারতের রান তাড়া করতে নেমে সাত ওভারে কোনও উইকেট না খুইয়ে বাংলাদেশের যখন ৬৬, তখনই বৃষ্টি নামে।
প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট বন্ধ ছিল খেলা। বৃষ্টির কারণে যদি খেলা বাতিল হতো, তাহলে ডার্ক-ওয়ার্থ লুইস (D/L) পদ্ধতিতে জিতে যেত বাংলাদেশ। কারণ ডি অ্যান্ড এল পদ্ধতিতে ৭ ওভার শেষে ১৭ রানে এগিয়ে ছিলেন শাকিবরা। দরকার ছিল ৪৯, আর খেলা স্থগিতের সময় বাংলাদেশের ৬৬। কিন্তু বৃষ্টি থেমে ডার্ক-ওয়ার্থ লুইস মেনে ফের খেলা শুরু হলে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। এদিনের ম্যাচে কাজে লাগলো না লিটন দাসের ঝড়ো অর্ধশতরান। দারুণ থ্রোয়ে অষ্টম ওভারে তাঁকে রান আউট করে কেএল রাহুল।
লিটনের রান আউট প্রাথমিকভাবে খেলায় ফেরায় ভারতকে। প্রথম থেকে ভারতীয় পেসারদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল লিটন। একটা সময় তাঁর স্ট্রাইক রেট ২০০-র উপরেও ছিল। এরপর শাকিব আল হাসান ম্যাচের রাশ খানিকটা ধরলেও ক্রমেই রান রেটের চাপ বাড়তে থাকায় একের পর এক উইকেট খোয়াতে শুরু করে বাংলাদেশ।
ডার্ক-ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সামনে ১৬ ওভারে ১৫১ রানের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মত, রান তাড়া করার অভিজ্ঞতা না থাকায় ২০ ওভারে পাঁচ রান আগেই থামে বাংলাদেশ।
একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল বিশ্বকাপ (T20 World Cup) থেকেই হয়তো ছিটকে যেতে পারে ইংল্যান্ড (England)। নেপথ্যে বৃষ্টি অসুর এবং রান রেট। কিন্তু নিউজিল্যান্ডকে (New Zealand) মঙ্গলবার হারিয়ে শেষ চারের আশা জিইয়ে রাখলেন ব্রিটিশরা (England)। যদিও এদিন খেলা শেষের পাঁচ ওভার আগে পর্যন্ত বোঝা যায়নি কে জিতবে। মঙ্গলবার প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৭৯ রান করেন বাটলাররা। অর্ধশতরান দুই ওপেনার জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের। নিউজ়িল্যান্ডের হয়ে গ্লেন ফিলিপ্স অনেক চেষ্টা করেও দলকে জেতাতে পারেননি।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইংল্যান্ড। বাটলারের সঙ্গে হেলস মিলে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। বেশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন হেলস। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অর্ধশতরান করেন তিনি। তিনি থামেন ব্যক্তিগত ৫২ রানে।
এদিকে, প্রথম দুই নিশ্চিত দল হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল আফগানিস্তান এবং নেদারল্যান্ড। নেদারল্যান্ড এখনও পর্যন্ত একটা ম্যাচ জেতেনি। পাশাপাশি আফগানিস্তানের দুটি ম্যাচ বৃষ্টি বিঘ্নিত হওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়েছে। একটি ম্যাচ শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে তারা। তাই মাত্র ২ পয়েন্ট এবং রান রেটে অনেক নিচে আফগানরা। যার ভিত্তিতে বিশ্বকাপে বিদায় নিশ্চিত আফগানদের।
বিরাট সমস্যায় বিরাট(Virat kohli)। আমজনতার দুয়ারে কিং বিরাটের অন্দরমহল। সৌজন্যে অত্যুৎসাহী ভক্ত আর সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media)। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (T20 World Cup 2022) খেলতে অস্ট্রেলিয়াতে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। রোহিত, হার্দিকরা শেষ ম্যাচ খেলেছেন পার্থে। ওখানেই ক্রাউন টাওয়ার হোটেলে ছিল টিম ইন্ডিয়া।
অভিযোগ, মাঠে ছিলেন বিরাট। ওই সময় হোটেলের ফাঁকা ঘরে ঢুকে কেউ বানিয়ে ফেলেন ভিডিও। ব্যাট, বুট, জুতো, জামা-কাপড়, চশমা ,টুপি, ডায়রি এমনকি ওয়ার্ডরোবের দৃশ্য রয়েছে ভিডিওতে। ব্যস, আর যায় কোথায়। মুহূর্তে ভাইরাল ওই ভিডিও। বিরাটের নজরে আসতে দেরি হয়নি। প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন তিনি। প্রোটিয়া ম্যাচের পর হোটেলে ফিরে সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করেন তিনি। এই ধরণের ভিডিও তাঁর গোপনীয়তা ক্ষুন্ন করেছে। হোটেলের রুমে এমনটা হলো কি করে? প্রশ্ন তুলেছেন তারকা ক্রিকেটার।
বিরাটের স্ত্রী তথা সিলভার স্ক্রিনের তারকা অনুষ্কা শর্মাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি নিন্দা করে কড়া পোস্ট করেছেন। সব মিলিয়ে হাওয়া গরম। হোটেল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সেটা খুঁজে বার করার। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, যারা ভিডিওটি বানিয়েছিলেন, তাঁরা কোট-প্যান্ট পরে রয়েছেন। পোশাক দেখে মনে হচ্ছে, তাঁরা হোটেলেরই কর্মী। যদিও এব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি।
এই ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিরাট।পাশাপাশি তিনি আতঙ্ক প্রকাশও করেছেন। সেই ভিডিও শেয়ার করে কোহলি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘‘আমি জানি, অনুগামীরা সবসময় তাঁদের প্রিয় খেলোয়াড়কে দেখে আনন্দ পান, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান। আমি তাঁদের সমর্থন করি। কিন্তু এই ভিডিও দেখে আমি আতঙ্কিত। যদি আমার হোটেলের ঘরেই আমার গোপনীয়তা রক্ষা না হয়, তা হলে কোথায় আমার ব্যক্তিগত বিষয় রক্ষা হবে?’’
এই ঘটনায় যে তিনি চরম বিরক্ত, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন কোহলি। লিখেছেন, ‘‘এই ধরনের ভালবাসা আমি চাই না। এভাবে কারও ব্যক্তিগত পরিসরে ঢোকা উচিত নয়। দয়া করে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন। তাঁদের বিনোদনের পণ্য করে তুলবেন না।’’
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ঠান্ডা খাবার নিয়ে সমস্যায় পড়েছিল ভারতীয় দল। অনুশীলনের পর ঠান্ডা, শক্ত স্যান্ডউইচ দেওয়া হয়েছিল দলকে। ক্ষুব্ধ ভারতীয় দল খাবার প্রত্যাখ্যান করে। অভিযোগ করা হয় আইসিসির কাছে। সেই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই ফের বিড়ম্বনা। সমস্যা কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। তারকা হবার জ্বালা কি কম?
নিজেদের মাঠে হওয়া আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) ছিটকে যেতে পারে অস্ট্রেলিয়া (Australia)। সময় যত এগোচ্ছে, ততই জটিল হচ্ছে বিশ্বকাপে গ্রুপ ১-এর অঙ্ক। শুক্রবার দুটি ম্যাচই বৃষ্টির জন্য ভেস্তে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে হওয়ার কথা ছিল একটি ম্যাচ। ডু অর ডাই এই ম্যাচে দু’দলকেই জিততে হত। এই মুহূর্তে দু’দলের ঝুলিতে এক পয়েন্ট ঢুকেছে।
এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, গ্রুপের প্রথম চার দলের রয়েছে তিন পয়েন্ট। নিউজ়িল্যান্ড বাদে বাকি সব দল তিনটি করে ম্যাচ খেলেছে। কিউইদের রান রেট সবচেয়ে ভাল (৪.৪৫০)। এরপরেই রয়েছে ইংল্যান্ড (০.২৩৯)। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে তারা হেরে গেলেও রান রেটের বিচারে দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছে। তৃতীয় স্থানে আয়ারল্যান্ড, যাদের রান রেট (-১.১৬৯)। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আচমকা জয় হঠাৎই সেমিফাইনালের দরজা খুলে দিয়েছে আইরিশদের সামনে। চতুর্থ স্থানে -১.১৫৫-সহ রয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, পরিস্থিতি যা, তাতে রান রেটই এই গ্রুপে পার্থক্য গড়ে দেবে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এখনও ইংল্যান্ডের খেলা বাকি। সেই ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ, হতে পারে তিন দলই সাত পয়েন্টে শেষ করল। সে ক্ষেত্রে, রান রেটই কাজে লাগবে। এদিকে ক্রিকেট লিখিয়েদের একটি অংশের বক্তব্য, বৃষ্টিবিঘ্নিত অস্ট্রেলিয়াকে কেন টি২০ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে বাছলো আইসিসি। এই সময় ক্যাঙ্গারুর দেশে বরশার মরশুম, সেটা কি জানত না বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা?
অস্ট্রেলিয়া (Australia) যাওয়া ইস্তক খুব একটা ভালো আপ্যায়ন পাচ্ছে না ভারতীয় ক্রিকেট দল (India Cricket Team)। শুধু সিডনিতে মধ্যাহ্নভোজ নয়, অস্ট্রেলিয়ায় (Australia) নামার পর থেকেই নানাভাবে অপদস্থ টিম ইন্ডিয়া। এর আগে ব্রিসবেনে অব্যবস্থার শিকার হয়েছিলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, মহম্মদ শামিরা। সেখানে ভারতীয় দলকে থাকতে হয়েছে নিম্নমানের হোটেলে।
বিশ্বকাপের দিন কয়েক আগে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে ব্রিসবেনে যায় ভারত। সেখানেও আয়োজকদের ব্যবস্থায় খুশি হয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। আইসিসির প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দলকে যে মানের হোটেলে রাখার কথা, ব্রিসবেনে ভারতীয় দলের হোটেল সেই মানের ছিল না। আয়োজক অস্ট্রেলিয়াকে প্রত্যাশিত মানের হোটেলে রাখা হলেও, ভারতীয় দলকে থাকতে হয়েছে তুলনায় নিম্ন মানের হোটেলে। অথচ অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নারদের পড়শি করা হয়েছিল পাকিস্তান দলকে। অর্থাৎ, শুধু সিডনির খারাপ মধ্যহ্নভোজ নয়, ব্রিসবেনে খারাপ হোটেলে থাকতে বাধ্য করা হয় ভারতীয় দলকে। এমনটাই অভিযোগ করছে বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র।
জানা গিয়েছে, ব্রিসবেনে বিরাট কোহলিরা হোটেলে ছিলেন, ঘরগুলি ছোট। হোটেলে জিম, সুইমিং পুল থাকলেও বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়া একটি দলের উপযোগী নয়। আসবাব পত্র, খাবারের মানও যথাযথ নয়। এমনকি রুম সার্ভিস থেকে হাউস কিপিং জাতীয় পরিষেবাও প্রত্যাশিত মানের নয়। হোটেলটি ব্রিসবেনের যে জায়গায়, সেই অবস্থান পছন্দ হয়নি রোহিত, কোহলি, পান্ড্যদের। ব্রিসবেনের হোটেল নিয়ে অপছন্দের কথা ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে আইসিসিকে জানানো হয়েছিল। তাও হোটেল পরিবর্তন করে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
কুড়ি কুড়ি বিশ্বকাপ (T20 World Cup)। দ্বিতীয় পর্বে প্রথম জয় তুলে নিল বাংলাদেশ (Bangladesh)। নেদারল্যান্ডসকে (Netherlands) ৯ রানে হারালেন তাসকিন, মোসাদ্দেকরা। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৪৪ রান তোলে বাংলাদেশ। ২৭ বলে ৩৮ আফিফ হোসেনের। শেষ দিকে অসাধারণ খেলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক হোসেন। ডাচদের শুরুতেই ধাক্কা দেন তাসকিন। ফিরিয়ে দেন বিক্রমজিত সিং-কে। ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে একা লড়াই করে গেলেন কলিন একারমান। ৪৮ বলে ৬২ করলেন কলিন। ৯ রান দূরে থেমে গেল নেদারল্যান্ড। চার উইকেট নিলেন তাসকিন। ম্যাচে দুই দফা বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হলেও কোনো ওভার কাটা যায়নি।
ম্যাচ জিতে শাকিব বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্নপূরণের কথা বলেন। শাকিব ইন্টারভিউতে বলেন, 'তিনি ২০০৭ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলছেন। কিন্তু কোনওবার জিততে পারেননি। এবার আশা করছেন বিশ্বকাপ জেতার স্বপন পূরণ হবে।' নেদারল্যান্ডসকে হারানোর কৃতিত্ব অবশ্য তিনি দল বোলারদের দিলেন।
শাকিব আরও বলেছেন, ‘‘আমরা জানি অস্ট্রেলিয়ায় জোরে বোলাররা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দলে কয়েক জন তরুণ জোরে বোলার রয়েছে। ওরা নজর কাড়ছে।’’ এবারে বিশ্বকাপে শাকিবের অন্যতম লক্ষ্য, ফিল্ডিং। ফিল্ডিংয়ে বিশ্বের সেরা দল হয়ে উঠতে চান তিনি। আর তার জন্য প্রস্তুতিও শুরু করেছেন। শাকিব বলেছেন, ‘‘আমরা ফিল্ডিংয়ে বিশ্বের সেরা হতে চাই। আমাদের দলে বেশ কয়েক জন তরুণ ক্রিকেটার রয়েছে। ফিল্ডিংয়ে যদি প্রতি ম্যাচে ১০ রান বাঁচাতে পারি তা হলে সেটা আমাদেরই কাজে লাগবে।’’
মেলবোর্নে বিরাট জয়। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T-20 World Cup 2022) শেষ বলের থ্রিলার। পাকিস্তানকে চার উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল ভারত (India VS Pakistan) । জয় এল ভারতের ঝুলিতে।দীপাবলির আগেই বড়ো উপহার দিল কিং কোহলির (Virat Kohli) ব্যাট। একা কুম্ভের মতো দুর্গ রক্ষা করলেন। কোহলির চওড়া ব্যাট যেন খাপ খোলা তরবারি। ৫৩ বলে অপরাজিত ৮২। ছ'টা চার। চারটে ছয়। শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হ্যারিস রৌফদের জারিজুরি শেষ কোহলির ব্যাটের সামনে। আর বিরাটকে সঙ্গ দেন হার্দিক। ৪০ রান করে দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন। আর ফ্রি হিট, ওয়াইড, আউট, ওভার বাউন্ডারির মতো ঘটনাবহুল রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভারে আসে তৃপ্তির জয়।
মেলবোর্নে শুরুটা ছিল ভারতের। শেষেও মেন ইন ব্লু-এর দাপট বজায় ছিল।টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ান রান পাননি। তবে লড়াই করার মতো রান করেছিল পাকিস্তান। ৮ উইকেটে ১৫৯। তিন উইকেট পেলেন পান্ডিয়া। অর্শদীপ আরও তিন। আর ভারত করেছে ৬ উইকেটে ১৬০ রান।
প্রথমে নড়বড়ে শুরু করেছিল ভারত। রাহুল, রোহিত, সূর্যকুমার কেউ রান পাননি। কিন্তু কোহলি ছিলেন। ওয়াঘার সীমান্তের ওপারে পৌঁছে যাওয়া ম্যাচ এপারে নিয়ে এলেন। মেলবোর্ন থেকে ভারত। শুধু জয় হো।
ডেথ ওভারে মহম্মদ শামির বোলিংয়ে বিশ্বকাপ (T-20 World Cup) প্রস্তুতি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে (India beats Australia) ৬ রানে হারাল ভারত। ২০ ওভারে পড়েছে চার উইকেট, তার মধ্যে একটি রান আউট বাদে বাকি তিন উইকেট শামির (Mohammad Shami) ঝুলিতে। এদিন ফিল্ডিংয়ে অসামান্য ছিলেন বিরাট কোহলি (virat kohli)। ডিরেক্ট থ্রো-তে একটি রান আউট করেন কিং কোহলি। পাশাপাশি শেষ ওভারে বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁর দুর্দান্ত ক্যাচ ম্যাচ ঘুরিয়েছে ভারতের দিকে।
টি-২০ বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপ এবং তারপর সাউথ আফ্রিকা সিরিজ, ডেথ অভার ভুগিয়েছে ভারতকে। ১৯ ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারের স্পেলে বিপক্ষ ম্যাচ জিতে বেড়িয়ে গিয়েছে। মহম্মদ শামির এদিনের আগুনে বোলিং সেই শূন্যস্থান পূরণ করে দিল। এমনটাই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
টি-২০ বিশ্বকাপে নামার আগে প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৮৬ রান তোলে ভারত। অর্ধশতরান করেন কেএল রাহুল ও সূর্যকুমার যাদব। সেই রান তাড়া করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ডেথ ওভারে ভাল বল করলেন ভারতীয় বোলাররা। দীর্ঘদিন পর ভারতীয় দলের প্রথম একাদশে ফিরে সেই আগুনে স্পেল মহম্মদ শামির। যা কিছুটা হলেও উদ্বেগ কমিয়েছে রোহিত শর্মা, রাহুল দ্রাবিড়দের।
বোর্ড (BCCI) সভাপতি বিতর্কের মধ্যেই আরও বড় দুসংবাদ বিসিসিআই কোষাগারে। বিপুল আর্থিক ক্ষতির সামনে দাঁড়িয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ভারত সরকার যদি পরের বছর বিশ্বকাপ (World Cup 2023) আয়োজনের সময় কর ছাড় না দেয়, তা হলে কমবেশি হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম ধনী এই সংস্থার। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। ক্ষতির অঙ্ক জানিয়ে সব রাজ্য সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়েছে বোর্ডের তরফে।
আইসিসির নিয়ম, কোনও দেশ বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চাইলে সরকারের তরফে কর ছাড়ের অনুমতি আদায় করতে হয়। যদি কর ছাড় না পাওয়া গেলে, সেই অর্থ আয়োজক দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে দিতে হয়। সেক্ষেত্রে, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে যত টাকা কর দিতে হবে আইসিসিকে, সে টাকা বাদ যাবে আইসিসি থেকে পাওয়া বোর্ডের লভ্যাংশ থেকে।
ভারতের করের নিয়মে এ ধরনের ছাড়ের কোনও নিয়ম নেই। সে কারণে ২০১৬-তে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে বিসিসিআইয়ের কোষাগার থেকে বেরিয়েছিল ১৯৩ কোটি টাকা। সেই নিয়ে এখনও আইসিসির আদালতে মামলা চলছে। ক্ষতির পরিমাণ অনেক বাড়তে পারে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গেলে।
প্রসূন গুপ্ত: মহেন্দ্র সিং ধোনি চলে যাওয়ার পরে ভারতীয় ক্রিকেট দল কেমন একটা ছন্নছারা ভাবে চলছে। রবি শাস্ত্রীর আমলে আইসিসির কোনও বড় ট্রফি নেই। বিরাট কোহলি অধিনায়ক হওয়ার পরে তাঁর মধ্যে সৌরভ গাঙ্গুলির আগ্রাসন দেখা গেলেও নিজের ফর্ম হারিয়ে গত দু-আড়াই বছর বড় রানের বাইরে। নেতৃত্ব ছেড়েও ফর্মে ফিরতে পারছিলেন না বিরাট। তবে এশিয়া কাপ এবং সাম্প্রতিক অস্ট্রেলিয়া সিরিজে বড় রান তাঁকে হয়তো কিছুটা অক্সিজেন দিয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় দলে প্রতিদিনই কেউ না কেউ ভালো খেলে দিলেও ধারাবাহিকতার অভাব। বিশেষ করে ডেথ ওভার বোলিংয়ে শামি, বুমরাহর অভাব দেখা যাচ্ছে। ব্যাটিংয়ে কেএল রাহুল অফ ফর্ম, কোনওদিন রান পাচ্ছেন রোহিত, কোনওদিন ফ্লপ।
এভাবেই ব্যাটিং চলছে, তবে এর মধ্যে ধারাবাহিক ভালো খেলছেন সূর্যকুমার যাদব| বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুর্দান্ত খেলে রেকর্ড করলেন সূর্য। টি-২০ বিশ্বকাপের একটু স্বস্তিতে টিম ইন্ডিয়া। অন্যদিকে বোলিংয়ের অবস্থা তথৈবচ। ভুবনেশ্বর কুমারের মতো প্রতিভাবান বোলারের অফ ফর্ম ভাবাচ্ছে দ্রাবিড়দের। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচে আর্ষদীপের বোলিং কিছুটা কমিয়েছে দুশ্চিন্তা। ঠিক কোন রহস্যে ফাস্ট বোলার মহম্মদ শামিকে দলের বাইরে রাখা হয়েছে কেউ জানে না। আসলে ভারতীয় ক্রিকেট দল নিয়ে বড্ড বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। মিডল অর্ডার থেকে টেল এন্ড, বিশেষ করে উইকেট কিপিং, সব জায়গাতেই চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ধারাবাহিক অফ ফর্মে থাকা ঋষভ পন্থ যেমন জায়গা পাচ্ছে। তেমনই জায়গা পাচ্ছেন দীনেশ কার্তিক।
গত তিন মাসে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভারতের ফল আশানুরূপ হলেও, আইসিসি টুর্নামেন্টে তীরে এসে তরী ডোবার ইতিহাস ভারতের সেই ২০১৪ থেকে। এদিকে, আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়াতে। সেখানে ভারত প্রতিকূল পিচে খেলবে। সেখানে গ্রিনটপ বা দ্রুতগামী বোলারদের উপযুক্ত উইকেটই অপেক্ষা করবে। এই মুহূর্তে আর্ষদীপের বল সুইং করেছে। চোটের কবলে জসপ্রীত বুমরা। এই মুহূর্তে দরকার উইকেট টেকার মহম্মদ শামিকে। প্রশ্ন উঠেছে মহম্মদ সিরাজকে নিয়েও। তিনি এত আশা জাগানোর পর কোথায়? প্রশ্ন উইকেটের পিছনে কে থাকবে পন্থ নাকি কার্তিক? এসব নিয়ে ভারতের এখনই ভাবা দরকার।
প্রসূন গুপ্ত: প্রিয়রঞ্জনের পর ফের এক বাঙালি এআইএফএফের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে। আট দশকের বেশি সময় পরে ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ পদে একজন প্রাক্তন ফুটবলার। একটা সময়ে দেশীয় ফুটবল বলতে প্রথমে বাংলা, পরে কেরালা পঞ্জাব এবং গোয়া। আজকের ফুটবলে সারা দেশের বিভিন্ন শহর একেবারে পেশাদারি মোড়কে দল করে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে যোগ দিচ্ছে।
প্রফুল্ল প্যাটেলের আমলে এই পরিবর্তন এসেছিল, কিন্তু ভারতীয় ফুটবলকে কর্পোরেট মোড়কে বাঁধতে কেরামতি দেখিয়েছিলেন নীতা আম্বানি। আইপিএল যেমন ললিত মোদীর মস্তিষ্কপ্রসূত, আইএসএল-কে বিশ্বজনীন করার পিছনে খানিকটা কৃতিত্ব প্রাপ্য মুকেশ আম্বানি-পত্নীর। আইএসএল আসার পর দল গঠনে বহু বিদেশি ভারতে এসেছে এবং নিঃসন্দেহে খেলার প্রভূত উন্নতি হয়েছে। আজকের ভারতীয় ফুটবলাররা অনেক দ্রুত দৌড়চ্ছে মাঠে। এই সময়েই এআইএফএফ-কে ধাক্কা দেয় ফিফা।যেহেতু ভারতীয় ফুটবল সংস্থায় কোনও নির্বাচিত কমিটি নেই, কাজেই তারা ভারতীয় ফুটবলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। সুপ্রিম কোর্টের মধ্যস্থতায় দ্রুত নির্বাচন ডেকে সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে।
ফুটবল বা ক্রিকেটের যাঁরা সভাপতির আসন অলংকৃত করেন সংশ্লিষ্ট খেলার উন্নতিতে তাঁদের ক্ষমতা অনেক বেশি। যেমনটা করে দেখিয়েছিলেন জগমোহন ডালমিয়া। এআইএফএফ বা বিসিসিআই, দু'টি সংস্থাই স্বসাশিত এবং রাজনীতি বহির্ভূত। সাম্প্রতিক এআইএফএফ নির্বাচনে ৩৩-১ ভোটে ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি বাইচুং ভুটিয়াকে হারিয়ে সভাপতি হয়েছেন কল্যাণ চৌবে।
কল্যাণ ভালো খেলোয়াড় ছিলেন কিন্তু তিনি বাইচুং নয়, তবে জয় এলো কী করে? বাইচুংয়ের অভিযোগ, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে জয় পেয়েছেন কল্যাণ। কল্যাণ জিতলেও বাইচুংকে উপদেষ্টা কমিটিতে রাখেন তিনি। কিন্তু 'অসম্মানিত' বাইচুং সেই কমিটিতে থাকতে নারাজ। অবশ্য এত ঘটনার পরে সোজাসাপ্টা কল্যাণ মিডিয়াকে জানান যে, তাঁর অনেক দায়িত্ব কিন্তু তিনি কোনও স্বপ্ন দেখতে নারাজ। ৮ বছর পরে ভারত বিশ্বকাপে খেলবে এমন গ্যারান্টি তিনি দেবেন না। কারণ এই কাজ মোটেও সহজ নয়। বরং ভারতীয় ফুটবলের সার্বিক উন্নতি তিনি চান। দেখার ব্যাপার যে মোহনবাগানের প্রয়াত সম্পাদক অঞ্জন মিত্রর জামাই কল্যাণ কী ভাবে উন্নতির পথে এগোন।
সুপ্রিম কোর্ট নিয়োজিত প্রশাসক কমিটি (COA) সরতেই ভারতীয় ফুটবলের (AIFF) উপর থেকে নির্বাসন তুলে নিল ফিফা (FIFA)। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের এই নিয়ামক সংস্থা। অর্থাৎ ভারতে আয়োজিত হতে চলা অনূর্ধ্ব-১৭ (U-17 Womens World Cup) মহিলা বিশ্বকাপের আর কোনও বাধা রইল না। প্রায় ১১ দিন পর উঠল ফিফার এই নির্বাসন। এই খবরে স্পষ্টতই স্বস্তিতে ফুটবলপ্রেমী বাঙালিরা।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ১৫ অগস্ট ভারতীয় সময় মধ্য রাতে এআইএফএফ-কে নির্বাসিত করেছিল ফিফা। ভারতীয় ফুটবল সংস্থা বা AIFF-র কাজে ‘তৃতীয় পক্ষের অনুপ্রবেশের’ অভিযোগ তুলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এআইএফএফ-কে পাঠানো চিঠিতে ফিফা জানিয়ে দিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট নিয়োজিত প্রশাসক কমিটিকে (সিওএ) অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। দ্রুত নির্বাচন করতে হবে। এরপরেই শুরু হয়েছিল কূটনৈতিক পর্যায়ের দৌত্য।
তড়িঘড়ি শীর্ষ আদালতে আবেদন করে দেশের সলিসিটির জেনারেল। কোর্ট নিয়োজিত প্রশাসক কমিটি তুলতে আবেদন করে মোদী সরকার। সেই আবেদনের শুনানিতে সোমবার সিওএ-কে সরিয়ে দেয়। পাশাপাশি তীব্র কটাক্ষ করে AIFF-র প্রাক্তন সভাপতি প্রফুল্ল প্যাটেলকে।
এরপরেই এআইএফএফ-র ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয় ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল সুনন্দ ধরের হাতে। পাশাপাশি, ফিফা এবং এএফসির নির্দেশ মেনে চলার কথা বলা হয়। গোটা ঘটনার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে লিখিত আকারে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ জানিয়ে দেওয়া হয় ফিফাকে।