নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (recruitment scam) এবার গ্রেফতার স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশবাবুকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই (CBI)। এই নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মোট ছ'জনকে গ্রেফতার করলো এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইতিমধ্যে শান্তিপ্রসাদ সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রসন্ন সাহা-সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডির হাত ঘুরে সম্প্রতি সিবিআই হেফাজতে এসেছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Parth Chatterjee)।
এবার গ্রেফতার হলেন আরও এক শিক্ষাকর্তা তথা এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এই প্রথম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে গ্রেফতার করল সিবিআই। সূত্রের খবর, তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না তিনি। তথ্য গোপন করছিলেন এবং ভুল তথ্য দিয়ে তদন্তকে অন্যদিকে পরিচালনার চেষ্টা করেছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যে গত মাসে তাঁর বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাট সিল করে দিয়ে যায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। সস্ত্রীক উত্তরবঙ্গ থেকে এসে ফ্ল্যাটের ছাদে কাটাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেখান থেকেই সাংবাদিক বৈঠক করেন এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান।
এদিকে, নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম উঠে আসতেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়-সহ তাঁর একাধিক জায়গায় দফায় দফায় চলে সিবিআই তল্লাশি। যদিও কলকাতায় সংবাদ মাধ্যমকে সুবীরেশবাবু জানিয়েছিলেন তাঁর আমলে নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হয়নি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Calcutta University) উপাচার্য হিসেবে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় দফার নিয়োগ অবৈধ। মঙ্গলবার এই রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta high Court)। ফলে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (Vice Chancellor) পদ থেকে সরানোর নির্দেশ আদালতের।
২০২১ সালের ২৭ অগাস্ট তাকে পুনরায় উপাচার্য পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিক্ষা দফতর। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সিদ্ধান্ত খারিজ করলো হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে। দ্বিতীয় দফায় উপাচার্য হিসেবে সোনালীদেবীর পুণরায় নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। তাঁর অভিযোগ, 'নিয়োগ প্রক্রিয়া মেনে দ্বিতীয় দফায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনরায় বহাল করা হয়নি। এই নিয়োগ নিয়ে অজ্ঞাত রাজ্যপালও।'
যদিও বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষের আইনজীবী তাঁদের মতো করে যুক্তি সাজানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু মামলাকারীদের যুক্তি এবং তথ্য-প্রমাণকে মান্যতা দিয়ে পুনরায় নিয়োগ খারিজ করে মহামান্য আদালত।
ফের সুবীরেশ ভট্টাচার্যর ফ্ল্যাটে সিবিআই(CBI) । সিবিআইয়ের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল পৌঁছয় বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাটে(flat)। তবে ফ্ল্যাট সিল থাকায় ছাদে বসে থাকেন সস্ত্রীক সুবীরেশ ভট্টাচার্য। পরবর্তীতে সিবিআই পৌঁছলে কিছু কথাবার্তা হয় তাঁর সঙ্গে। এরপরে বাঁশদ্রোণী ফ্ল্যাটের সিল খুলে দেয় তদন্তকারী অফিসাররা।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা ৫৫ র উড়ানে দমদম বিমান বন্দরে(airport) এসে পৌঁছন এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান(SSC ex Chairman)) তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য(chancellor) সুবীরেশ ভট্টাচার্য। কলকাতা বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মেজাজ হারান তিনি। তিনি বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। এরপর তাঁর গাড়ি নিজাম প্যালেসের পথ না ধরে সোজা বালিগঞ্জ প্লেসের রাস্তায় যায়। সূত্রের খবর, বালিগঞ্জ প্লেসে এক আত্মীয়ের বাড়ি খাওয়া দাওয়ার পর সুবীরেশ বাবুর গন্তব্য বাঁশদ্রোণীতে তাঁর সিল বন্ধ ফ্ল্যাট।
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বারবারই তিনি বলেন, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন। তবে নিয়োগ ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ভুল থাকতে পারে। সিবিআই ঠিক পথেই এগোচ্ছে। তবে পরবর্তী কালে তাঁর অজান্তে স্ক্যান সিগনেচার ব্যবহার করা হতে পারে বলে জানান তিনি। তবে যা বলার সিবিআই বলবে, কোর্ট বলবে বলে জানান তিনি। সিবিআইয়ের উপর ১০০ শতাংশ বিশ্বাস রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।