
'চাচা আপন প্রাণ বাঁচা,' বিজেপি প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের হুমকি দিতে এসে, পাল্টা তাড়া খেয়ে পালালেন তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। সূত্রের খবর, গঙ্গারামপুর ব্লকের শুকদেবপুর অঞ্চলে বিজেপি প্রার্থী সোনালী রায়কে হুমকি দিতে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের তাড়া খেলেন দুষ্কৃতীরা। তাড়া খেয়ে প্রাণপনে উদ্দম ছুট লাগালেন তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা।
সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখনও অবধি হওয়া হিংসা প্রবণ এলাকা পরিদর্শনে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেজন্যই এদিন তিনি উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান। চোপড়া সহ গঙ্গারামপুর ব্লকে যখন তিনি গিয়ে পৌঁছন, তখন তিনি খবর পান শুকদেবপুর অঞ্চলের বিজেপি প্রার্থী সোনালী রায়কে, তাঁর বাড়ি গিয়ে মনোনয়ন তুলতে বলে হুমকি দেন তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। সেই সময় ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দুষ্কৃতীদের দেখে রীতিমতো তাড়া করেন সুকান্ত মজুমদার। তারপরেই ওখান থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এরপর তিনি ওই বিজেপি প্রার্থী সোনালী রায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁকে আশ্বস্ত করেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা হতেই একাধিক দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে বিজেপি (BJP)। বৃহস্পতিবার রাজীব সিনহার (Rajib Sinha) সাংবাদিক বৈঠকের পরই জেলা এবং বিভাগীয় স্তরের নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। ওই বৈঠকেই আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। বিজেপির অভিযোগ, মনোনয়নের জন্য মাত্র ৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন বাড়াতে হবে। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে হবে। এমনই একাধিক দাবি জানিয়ে শীঘ্রই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
বিজেপি সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটের বিষয়ে সমস্ত সিদ্ধান্ত রাজ্য নেতৃত্বের উপরই ছেড়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তারপরেই আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'আমরা চাই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিয়ে ভোট হোক। শান্তিপূর্ণ ভোট, রক্তপাতহীন ভোট চাই। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য আরও বেশি সময় দেওয়া দরকার। এটা ঠিক হয়নি। তাই আমরা আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
কিছুদিনের ফারাকেই ফের রাজ্যে আসতে চলেছে এনসিপিসিআরের (NCPCR)। আজ অর্থাৎ শুক্রবার রাজ্যে আসতে পারে এনসিপিসিআরের একটি দল। সূত্রের খবর, সম্প্রতি মালদহ এবং তিলজলার শিশু নিগ্রহের (Minor) ঘটনায় রাজ্য এসেছিলেন এনসিপিসিআর সদস্যরা এবং এনসিপিসিআর সভাপতি প্রিয়াঙ্ক কানুনগো (Priyank Knungo)। যার পরে রাজ্য-কেন্দ্র দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। প্রিয়াঙ্ক কানুনগো অবশ্য রাজ্য পুলিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে, আদালতকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন।
আজ অর্থাৎ শনিবার কালিয়াগঞ্জের কিশোরী নিগ্রহের ঘটনায় ফের রাজ্যে আসতে চলেছেন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। শনিবার তিনি বলেন, 'রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নিত, পশ্চিমবঙ্গে শিশু নিগ্রহের ঘটনা দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে।'
পাশাপাশি, মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এসে, তিনি উত্তর দিনাজপুর পুলিশ সুপারের অফিসের ধরণায় বসেন। শনিবার দুপুর থেকেই কালিয়াগঞ্জের ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কালিয়াগঞ্জ পৌঁছে তিনি মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। এরপর তিনি মৃতার পরিবারকে আশ্বস্ত করেন ও সঠিক বিচার পাইয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি সুকান্ত মজুমদার এদিন রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বলেন, 'রাজ্যে এরকম সন্ত্রাস বেড়ে চলেছে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে।' এছাড়া তিনি অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
জীবনকৃষ্ণের পুকুর-শুদ্ধি কর্মসূচি গ্রহণ করতে গিয়ে বিপাকে বিজেপি (BJP)। মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) উপস্থিতিতে সিবিআইয়ের (CBI) হাতে ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার পুকুর-অভিযানে বিশৃঙ্খলা ও আইনভঙ্গের জেরে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল পুলিস। বৃহস্পতিবার বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের পুকুরে যাওয়ার চেষ্টা করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ জেলা বিজেপির নেতারা। পথে তাদের বাধা দেয় পুলিস। দফায় দফায় পুলিসের সাথে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি নেতারা। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় দায়ের হয়েছে এফআইআর।
বড়ঞা থানায় দায়ের হওয়া এফআইআরে নাম রয়েছে বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার-সহ স্থানীয় বিজেপি নেতাদের। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় দায়ের হয়েছে মামলা। সরকারি কর্মচারীকে কাজে বাধা দেওয়া, নারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে আক্রমণেরও অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যেই এফআইআর ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। পুকুর অভিযানে ব্যর্থ হয়ে বৃহস্পতিবার বড়ঞা থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
মুর্শিদাবাদ পুলিস জেলার পুলিস সুপার সুরিন্দর সিংহ জানিয়েছেন, যেখানে সভা করা হবে বলে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল, সেখানে সভা হয়নি। অন্য একটি জায়গায় সভা করার পরিকল্পনা চলছিল। রাস্তায় ব্যারিকেড করে তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করা হয়। তখন ওই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতা, কর্মীরা পুলিসের উপর আক্রমণ চালান। মহিলা পুলিসের উপরেও হামলা হয়। এতে বেশ কয়েক জন পুলিসকর্মী আহত হন। কর্মসূচিতে উপস্থিত এক নেতা আলাদা নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। তাই আগাম অনুমতি ছাড়া, বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে সভার অনুমতি দেওয়া যায় না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিস সুপার।
মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) বড়ঞায় সভা করতে যাওয়ার পথে বিজেপি (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumdar) বাধা পুলিসের। ঘটনাস্থলে পুলিসের সঙ্গে একপশলা খণ্ডযুদ্ধ বিজেপি কর্মীদের। পুলিস সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আন্দি কালীবাড়ি থেকে জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ি অবধি একটি মিছিল করতে যাচ্ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি সূত্রে খবর, জীবনকৃষ্ণ সাহার পুকুর শুদ্ধিকরণ অভিযানে যাচ্ছিলেন বিজেপি কর্মীরা।
অভিযোগ ওই মিছিল শুরু হওয়ার আগেই তাঁদেরকে আটকানোর চেষ্টা করে পুলিস, ধাক্কাধাক্কি করা হয় সুকান্ত অনুগামীদেরও। ওই মিছিল শুরুতে পুলিস তাঁকে বাধা দিলে পুলিসের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের খন্ডযুদ্ধ বাঁধে। তাদের আরও অভিযোগ শান্তিপূর্ণভাবে ওই মিছিল শুরু করছিলেন বিজেপি কর্মীরা। হঠাৎ বিশাল পুলিস বাহিনী এসে বাধা দেয় এবং তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে বিজেপি কর্মীদের।
১০০ দিনের টাকা-সহ বিভিন্ন বকেয়ার দাবি নিয়ে ধর্নায় (Protest) বসেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী (CM), সরব হয়েছিলেন দলের অধিকাংশ। এবার আলিপুরদুয়ারে দলীয় সভায় গিয়ে ১০০ দিনের টাকা না দিলে দিল্লি স্তব্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিলেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। পাল্টা পুরোনো টাকার হিসাব চাইলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
শনিবার আলিপুরদুয়ারের সভায় পঞ্চায়েত ভোট, চা শ্রমিকদের নিয়ে বললেও, ১০০ দিনের কাজ প্রসঙ্গ টেনে মূলত টার্গেট করেন বিজেপিকে। শনিবারের সভা থেকেই অভিষেক বলেন, '২৫ জন সাংসদকে নিয়ে টাকা চাইতে দিল্লি গিয়েছিলাম, দিল্লিতে থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিট মন্ত্রী দেখা করেননি।' তিনি বিজেপির উদ্দেশ্যে আরও বলেন, 'পারলে রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করুন, বাংলার মানুষকে আমি ভাতে মারতে দেব না।' শনিবার এই সভা থেকেই তিনি হুঙ্কার দিলেন, 'আপনারা সই করুন। ৪ লক্ষ সই দিন আলিপুরদুয়ার থেকে, আমি ১ কোটি চিঠি দেব বাংলা থেকে, দেখি কতদিন কান বুজে থাকে কেন্দ্র।' তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন শনিবার, 'আপনারা সঙ্গে থাকুন, টাকা আমি ছিনিয়ে আনবই।'
ওদিকে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীও ধর্না করেছেন ৩০ ঘন্টা। অভিষেকের দাবিও ঠিক একই। কিন্তু বিভ্রান্তিটা অন্য জায়গায়। চলতি সপ্তাহেই, শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি একটি লিস্ট দেখিয়ে দাবি করেন, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে, ইউপিএ আমলে ২০০৬-২০০৭ থেকে ২০১৩-২০১৪ অর্থবর্ষ অবধি ১৪ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা পেয়েছে বাংলা। এনডিএ অর্থাৎ বিজেপির আমলে ২০১৪-২০১৫ থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষ অবধি, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে ৫৪ হাজার ১৫০ কোটি টাকা পেয়েছে বাংলা। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার শুক্রবার বলেন, 'কংগ্রেসের থেকে বিজেপি আমলে বেশি টাকা পেয়েছে বাংলা। এই টাকার হিসেব কেন প্রকাশে আনছেন না সরকার?' সুকান্ত আরও অভিযোগ করেন, 'তৃণমূল ওই টাকা লুটে খেয়েছে।'
এখন প্রশ্ন হচ্ছে বঞ্চনার অভিযোগে হুঙ্কার দেওয়া যায়, ধরণায় বসা যায়। কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলন করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের হিসাব দেওয়া যায় না! যদিও সাধারণ মানুষের কি এই হিসাব দেখার নিয়ম আছে? সব থেকে বড় কথা হলো কজনেরই বা এই হিসাব দেখার প্রয়োজন আছে! কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিয়ে রাজ্য রাজনীতির এই টাল-বাহানার মধ্যে প্রশ্ন অনেক, সন্দিহানও অনেক, কিন্তু উত্তর কই!
এক বেসরকারি সংস্থার অনুষ্ঠানে দেশের সেরা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। সাংসদ রত্ন সম্মানে (Award) ভূষিত হলেন দুই বঙ্গ সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) এবং সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। এক বেসরকারি সংগঠন আয়োজিত অনুষ্ঠানে, কংগ্রেস ও বিজেপি দুই দলের বাংলার রাজ্য সভাপতিরা সম্মানিত হলেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ জানুয়ারি সাংসদ রত্ন পুরষ্কার কমিটি ঘোষণা করে। ১৩ জন সাংসদ এবং ১ জন বর্ষিয়ান সাংসদকে তাঁদের জনহিতকর প্রশ্ন ও সরকারকে দিশা দেখানো কর্মকুশলতার জন্য, সাংসদ রত্ন সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে।
অধীর ও সুকান্ত ছাড়াও সংসদ রত্ন সম্মান পেলেন বিজেপির বিদ্যুৎ বরণ মাহাতো, হীনা বিজয়কুমার গাভিট, গোপাল চিনায়া শেঠি ও সুধীর গুপ্ত। কংগ্রেসের কুলদীপ রাই শর্মা ও ছায়া বর্মা। এনসিপির ডা.আমোল রামসিং কোলহে ও এফ টি এ খান। সিপিআইএমর ডা. জন ব্রিটাস, আরজেডির মনোজ কুমার ঝা ও সমাজবাদী পার্টির সাংসদ ভি পি নিশাদ।
রবিবার সকাল থেকে ঘটনাবহুল থাকল কাঁথি-তমলুক এলাকা। নেপথ্যে শুভেন্দু অধিকারীর 'হাওড়া চলো' অভিযান। এদিন সকালেই বিরোধী দলনেতার কাছে পুলিসের বার্তা এসে পৌঁছয়। সেই বার্তায় শুভেন্দুকে হাওড়া না যেতে পরামর্শ দেয় পুলিস। এরপরেই হাওড়ার পথে তাঁর কনভয়কে তমলুকের রাধামণি মোড়ের কাছে আটকায় পুলিস।
প্রাথমিকভাবে বিরোধী দলনেতার তরফে সহযোগিতার ইঙ্গিত মিললেও, শুভেন্দু জানতে চান, কেন তাঁকে আটকানো হয়েছে? পুলিসের তরফে বিরোধী দলনেতাকে বলা হয়, তাঁরা জানতে পেরেছেন যে তিনি হাওড়ায় যাচ্ছেন। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে খেয়াল রেখে তাঁকে সেখানে যেতে দেওয়া যাবে না।
এটা শুনেই মেজাজ হারান শুভেন্দু। তিনি পুলিসকে বলেন, কোলাঘাট গেস্ট হাউসে যাচ্ছেন তিনি। আর এটা হাওড়া নয় রাধামণি, এখানে তাঁকে কেন আটকানো হয়েছে। এখানে ১৪৪ ধারা জারি হয়নি। তাহলে এখানে কেন?
তারপরেও নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের কনভয় আটকে রাখে পুলিস। শুভেন্দুর কটাক্ষ, 'রাজ্য পুলিশ বলে কিছু নেই, সবই মমতা পুলিশ হয়ে গিয়েছে। তিনি কাঁথি, হলদিয়া না কলকাতার বাড়িতে থাকবেন, তা ঠিক করার এক্তিয়ার পুলিশের নেই। কিন্তু পুলিস এসব করছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। এক পুলিসকর্তার উদ্দেশে শুভেন্দুর কটাক্ষ, 'আপনি বিপদে পড়লে পিসি-ভাইপো বাঁচাতে আসবে না।'
এমনকি, উত্তপ্ত হাওড়ার ক্ষতিগ্রস্ত পার্টি অফিস দেখতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন তিনি। আইন আদালতে তাঁর বিশ্বাস আছে। তিনি আশা করেন হাইকোর্ট তাঁকে ন্যায় পাইয়ে দেবে।
ইতিমধ্যে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে অভিযোগ জানাতে চিঠিও লেখেন তিনি। গাড়িতে বসেই তিনি ভিডিও কলে কথা বলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে। ক্ষোভ উগড়ে দেন পুলিসের বিরুদ্ধে। এদিকে, রাজ্য সভাপতি আবার হাওড়া-কাণ্ডের প্রতিবাদে মেয়ো রোডে অবস্থান বিক্ষোভে রয়েছেন। এভাবে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক শুভেন্দুর সঙ্গে পুলিসের বাদানুবাদ চলে।
বেলা তিনটের কিছু পর ছাড়া হয় শুভেন্দুর কনভয়। তারপর কোলাঘাট, উলুবেড়িয়া, হাওড়া হয়ে সেই কনভয় পৌঁছয় মেয়ো রোডে। সেখানে সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে অবস্থান বিক্ষোভে অংশ নেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
পয়গম্বর ইস্যুতে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। গতকাল থেকেই ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ চলেছে বিভিন্ন এলাকায়। এর জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে মানুষের মধ্যে। জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত। এর মধ্যেই তাণ্ডবকারীরা উলুবেড়িয়ায় বিজেপির পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ।
সেই পার্টি অফিসের পরিস্থিতি দেখতে যাওয়ার কথা ছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। তার আগেই সুকান্তর নিউটাউনের বাড়ির সামনে পৌঁছে যায় পুলিস। বসানো হয় গার্ডরেল। মৌখিকভাবে সুকান্ত মজুমদারকে বাড়ি থেকে বের না হতে অনুরোধ করা হয় পুলিসের তরফে। সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, কোনও লিখিত আদেশ আসেনি পুলিসের তরফে। মৌখিকভাবে বলে এভাবে তাঁকে আটকানো হচ্ছে কেন, অভিযোগ তুলেছেন সুকান্ত মজুমদার।
সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, তাঁর কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে পুলিসের তরফে। কোনও আদেশ দেওয়া হয়নি। বরং পুলিস তাঁকে মুচলেকা দিয়ে উলুবেড়িয়া যেতে বলছে। বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি পুলিসের এই ভূমিকার বিরোধিতা করে হাইকোর্টে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
পুরসভা নির্বাচনে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আজ বনধের ডাক দেয় বিজেপি। সকাল ৬ টা থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়তেই রাজ্য়ের একাধিক জায়গায় বাড়ে উত্তেজনা। একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে এদিন পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।
সেইমত, কোচবিহারে সকাল থেকে ছবি না ধরা পড়লেও শেষমেষ বিজেপি নেতৃত্বকে দেখা গেল মাঠে নামতে। সোমবার কোচবিহার শহরের পাওয়ার হাউস এলাকায় সরকারি বাস আটকে দেয় বিজেপি নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে সহ একাধিক কর্মী-সমর্থকেরা।
অন্য়দিকে পুর ভোটে দিকে দিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অশান্তির অভিযোগ তুলে ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধকে সফল করতে সোমবার সকাল ৭ টা ১০ নাগাদ হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনের হুগলি স্টেশন অবরোধ করে বিজেপি নেতৃত্বরা। হুগলি স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্মে হাওড়াগামী একটি লোকাল ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে শুরু হয় অবরোধ। ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে পুরসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিজেপি কর্মীরা স্লোগান দেয়। তবে এরপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে। সকাল ৭.৩৫-এ তাঁদের অবরোধ উঠে যায়।
তবে অন্য়দিকে বিজেপির রেল অবরোধ নদিয়ার পায়রাডাঙ্গায়। নির্বাচন হয়নি গণতন্ত্র লুট হয়েছে, ছাপ্পা ভোট হয়েছে এই অভিযোগ তুলে রাজ্যজুড়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ অবরোধ। আজ সকালে বিজেপির পক্ষ থেকে পায়রাডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের সামনে অবরোধে বসে বিজেপি নেতা-কর্মীরা। এর ফলে রানাঘাট শিয়ালদহ শাখায় বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। হয়রানির শিকার নিত্য়যাত্রীরা।
বাদ পড়েনি দক্ষিণ ২৪ পরগনাও। এদিন বালুরঘাট স্টেট বাস স্ট্যান্ডে বন্ধ করে বিজেপি সমর্থকেরা। পুলিস জোর করে বাস চালানোর ব্যবস্থা করলে বাসের সামনে বসে পড়েন বিধায়ক বুধরাই টুডু। বালুরঘাট থানার পুলিস বিধায়ককে চ্য়াংদোলা করে তুলে সরিয়ে দেয়। তবে এরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিজেপি রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর নেতৃত্বে কর্মী সমর্থকেরা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।