Breaking News
Abhishek Banerjee: বিজেপি নেত্রীকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের অভিযোগ, প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জাতীয় মহিলা কমিশনের      Convocation: যাদবপুরের পর এবার রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সমাবর্তনে স্থগিতাদেশ রাজভবনের      Sandeshkhali: স্ত্রীকে কাঁদতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন 'সন্দেশখালির বাঘ'...      High Court: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল, সুদ সহ বেতন ফেরতের নির্দেশ হাইকোর্টের      Sandeshkhali: সন্দেশখালিতে জমি দখল তদন্তে সক্রিয় সিবিআই, বয়ান রেকর্ড অভিযোগকারীদের      CBI: শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ! তদন্তে সিবিআই      Vote: জীবিত অথচ ভোটার তালিকায় মৃত! ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ধূপগুড়ির ১২ জন ভোটার      ED: মিলে গেল কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর, শ্রীঘই হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ ইডির      Ram Navami: রামনবমীর আনন্দে মেতেছে অযোধ্যা, রামলালার কপালে প্রথম সূর্যতিলক      Train: দমদমে ২১ দিনের ট্রাফিক ব্লক, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন, প্রভাবিত কোন কোন রুট?     

Story

Special: হে বঙ্গের যুবসমাজ, মানুষের পাশে দাঁড়াও

সৌমেন সুর: এখনো দেশের বহু মানুষ জীবনধারণের জন্য নূন্যতম উপকরণগুলো থেকে বঞ্চিত। এই বঞ্চিতের কারণে তরুণ সমাজকে দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা ও কর্তব্য পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। যে কোনও কর্মে যুব সমাজের অগ্রাধিকার থাকে। তারা সাহসী, কর্মঠ, সবুজের ন্যায় তারুণ্যে, প্রাণপ্রিয়, সূর্যের মতো উজ্জ্বল। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো মৌলিক অধিকার। এই মৌলিক অধিকার রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। ভারতের সংবিধান রচনার আগে দেশের মানুষের কোন মৌলিক অধিকার ছিল না। গণপরিষদ মৌলিক অধিকার বিধিবদ্ধ করার ব্যাপারে একটি পরামর্শদাতা কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয়। এর ফলে ডঃ বি. আর. আম্বেদকরের নেতৃত্বে ভারতের সংবিধান রচনা হয়।

দেশের নাগরিক হিসেবে দেশ সেবার ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। তবে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও সমস্ত মানুষ অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের পূর্ণ অধিকার হয়তো পাইনি। তাই মানুষের অধিকার কর্তব্য পালনে যুব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের জন্য আমরা দেশ না থাকলে আমাদের অস্তিত্ব যে বিপর্যস্ত এ কথা উপলব্ধি করলে দেশ গঠনের উপযোগিতা ধরা পড়বে। অন্যদিকে নাগরিকগণ রাষ্ট্রের কাছ থেকে যে অধিকার গুলো ভোগ করে সেগুলোর বিনিময়ে রাষ্ট্রকে কর দিতে হয়, সেই কর দেওয়া নাগরিকের কর্তব্য। এজন্য যুব সমাজের এই কর্তব্য পালন করা উচিত। যুব সমাজের কর্তব্য প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। মানুষের অধিকার সুরক্ষা করার জন্য যুব সম্প্রদায়কে সমাজসেবামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। নাগরিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। দেশের যুবসমাজ যে কোন সংগ্রামে আপোসহীন লড়াই করে। এরাই সমস্ত শক্তির উৎস। দেশের মানুষ যুব সম্প্রদায়ের প্রতি অনেক আশা করে। যুব সমাজ যদি দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ায় তাহলে সাধারণ মানুষ মনে বলা প্রায়। তাই তাত্ত্বিক ও তুর্কি তরুণেরা যদি মানুষের পাশে দাঁড়ায় তাহলে একদিন না একদিন শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে উঠবেই।

10 months ago
Special story: আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রতিবাদী হোন বঙ্কুবাবুর মতো

সৌমেন সুর: প্রথমে আমি পাঠক সমাজকে অনুরোধ করছি- আপনারা প্লিজ সত্যজিৎ রায়ের 'বঙ্কুবাবুর বন্ধু' গল্পটি পড়ুন। গল্পটি এইজন্যে পড়তে বলছি- ফেলুদা সিরিজের এই গল্পটি আপনার মনে একটু অদ্ভুত একটা Sense Create করবে, যার স্বাদ অনেকদিন পর্যন্ত আপনার মনে গেঁথে থাকবে। যদি আপনার সমাজের ব্যাপারে কোনো Possitive Mode থাকে তাহলেই এই গল্পটার সার্থকতা।

বর্তমান সমাজ এক অস্থির পদচারনে ধূলায় লুটাচ্ছে। সমাজটার কোনায় কোনায় নেগেটিভ ভাইরাস বাস করে আছে। এ ওকে মানছে না, সে তাকে মানছে না। আমিই সবার থেকে বড়। আমার অস্তিত্বই আগামীর ভবিষ্যৎ। দাও সব বাড়িয়ে। দুদিন আন্দোলন হবে, তিন দিনের দিন সব ধামাচাপা। এ যেন কবির ভাষায়, 'অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ...।' এমন সুস্বাদু খাওয়ার আচার বিলানো হচ্ছে যার স্বাদে কিছু মানুষ ঠান্ডায় আরাম খাচ্ছে, আর কিছু মানুষ কপাল চাপড়াচ্ছে। দেশের এ কী হাল হলো! যাই হোক গল্পটা পড়ে আমি এত আনন্দিত হয়েছি যার জন্য আপনাদের কাছে শেয়ার না করে পারলাম না। দেখুন, যদি কোনো মানুষকে অযথা অসামাজিক ভাবে আচরণ বা বিদ্রুপ করা হয় তাহলে সে মানুষটার পজিসন কেমন হয়, সেটা একবার Feel করুন। যদি আপনার ক্ষেত্রে হয় ভাবুনতো।

অর্থবান উকিল শ্রীপতি বাবুর বাড়িতে, শ্রীপতিবাবু তার বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডা দেন। এই আড্ডার মাঝে সহজ সরল বঙ্গ বাবুকে নিয়ে আলোচিত উপহাস, মস্করা করা হয়, যা অত্যন্ত বিষাক্তজনক। বঙ্কুবাবু সব সহ্য করেন নীরবে। প্রতিবাদ করেন না। মনে মনে ভাবেন, আপনারা যা করছেন করুন। একদিন না একদিন একটা ফল, আপনাদের শিক্ষা দেবে। দেখতে দেখতে বঙ্কুবাবুর জীবনে হঠাৎ একদিন ভাল সময় চলে আসে। যেন এক আকোস্মিক পরিবর্তন ঘটে ওর জীবনে।

পথে যেতে যেতে বাঁশবাগানে উপুড় করা একটা কাঁচের বাক্স থেকে যন্ত্রের মতো বেরিয়ে আসে অদ্ভুত এক জীব। সে নাকি ক্লোনিয়াস গ্রহের অ্যাং। অ্যাং-এর জন্য বঙ্কুবাবুর জীবনে ঘটে যায় পরিবর্তন। শ্রীপতি বাবুর বাড়িতে বঙ্কুবাবু স্পষ্ট ভাষায় প্রতিবাদ কোরে, সমালোচনা কোরে বীরদর্পে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। লেখক আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন প্রকৃত বন্ধু কে? আসলে প্রকৃত বন্ধু হল অ্যাং। যারা জীবনে মাথা উঁচু করে পথ চলতে প্রেরণা দেন।

গল্পটা, বহুগুনের অধিকারী হয়েও আত্মবিশ্বাসের অভাবে অনেক মানুষ নিগ্রহের শিকার হন, বঙ্কুবাবুর মতো। সেই আত্মবিশ্বাস জীবনে পথ চলার চালিকা শক্তি। বাস্তব জীবন অত্যন্ত কঠিন। প্রতি পদে লড়াই। গল্পটি শিখিয়েছে- লড়াইটা কিভাবে করতে হয়। এখন আমাদের দেশের সমস্ত শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ ও সাধারণ মানুষকে অনুরোধ, লড়াইটা সঠিকভাবে করুন বেনোজল বাদ দিয়ে। সমাজে বঙ্গবাবুর বন্ধুর মতো সবাই বন্ধু যদি হতো, তাহলে সমাজটা সত্যি পাল্টে যেত।

10 months ago
Special story: মানপত্র চাই না, পেট ভরে দুটো ভাত খেতে চাই

সৌমেন সুর: একটা টিলার ওপর বাদক ঢ্য়ারা পিটিয়ে বলে, 'শুনুন...শুনুন..শুনুন। নিশ্চিন্তপুরের প্রজারা মন দিয়ে শুনুন, আমাদের রাজ্য়ে কৃষিফলনে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্থান যাতে করতে পারে তার জন্য় দলভিত্তিক কৃষকরা তার জমিতে চাষ করবে। এক একটা দলে ৪ জন করে থাকবে। যে বেশী ফলন দেখাতে পারবে- সে রাজার তরফ থেকে পুরস্কার পাবে। ...ঘোষণা করতে করতে বাদক চলে যায়। এদিকে প্রচুর কৃষক এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। যথারীতি শুরু হয় চাষ। মন্ত্রীরা রাজাকে বলে, সারা রাজ্য়ে কৃষি ফলন দেখবার মতো। সারা মাঠ ধনধান্য়ে পুষ্পে ভরা। অনেক চাষী তাঁদের সর্বস্ব দিয়ে এই ফলন করেছে। তবে সব থেকে বেশী উলন ফলিয়েছে হোসেন মিঞা। সবাই হোসেনকে প্রশংসা করতে থাকে। মন্ত্রীরা রাজার কাছে গুনাগুন গায়। বলে, হোসেন মিঞা আমাদের রাজ্য়ে সেরা কৃষক। ওর হাতে জাদু আছে। ও আমাদের দেশের গর্ব। রাজামশায় আপনি একবার নিজের চোখে দেখে আসুন। 

রাজা একদিন রাজ্য়বিহারে বের হন। নিজের চোখে হোসেনের কৃতকর্ম দেখে মুগ্ধ হন। তিনি নির্দেশ দেন, হোসেন মিঞাকে পাঁচটা মোহর আর মানপত্র দিয়ে পুরস্কৃত করো। রাতারাতি হোসেন মিঞার মানে লেখা হলো মানপত্র। এবার পাঁচটা মোহর থেকে একটা মোহর সরিয়ে রেখে প্রথম মন্ত্রী দায়িত্ব দিলো দ্বিতীয় মন্ত্রীকে। দ্বিতীয় মন্ত্রী একটা মোহর সরিয়ে তৃতীয় মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিলো। তৃতীয় ও চতুর্থ মন্ত্রী মোহর সরিয়ে রাখলো। পঞ্চম মন্ত্রী শেষ মোহরটা নিজে সরিয়ে রেখে, শুধু মানপত্রটা নিয়ে হোসেনের বাড়ির পথে রওনা হয়। 

এদিকে রাজা সিংহাসনে বসে ভাবতে লাগলেন, রাজ্য়ে যা কৃষিফলন হয়েছে তা, কয়েক হাজার কোটি টাকার মতো। আমি সব ফলন বিক্রি করে দেবো। রপ্তানি করবো বিদেশে। যে অর্থ পাওয়া যাবে তার ফিফটি পারসেন্ট আমি আমার পরিচিত জনের নাম দিয়ে বিদেশের ব্য়াংকে টাকাটা গচ্ছিত রাখবো। 

ওদিকে হোসেন মিঞার বাড়িতে ৫ম মন্ত্রী ও পেয়াদা এসে হাজির। মন্ত্রী হোসেন মিঞাকে রাজার কথা বলে, রাজা তার কাজে ভীষণ খুশি হযেছেন। তাই রাজা এই মানপত্র দিয়ে তোমায় সম্মান জানিয়েছেন। হোসেন মিঞা মানপত্রটা এদিক ওদিক দ্য়াখে। এটার মর্ম উদ্ধার হয় না তার মাথায়। শুকনো মুখে মন্ত্রীকে হোসেন মিঞা বলে, রাজামশাইকে বলবেন-  মানপত্রের দরকার নেই। আমরা পেটভরে দুমুঠো ভাত খেতে চাই। মন্ত্রী কথাটা শুনে চমকে ওঠেন। আজ অস্তাচলের সূর্যের রং বড় ফ্য়াকাশে। ম্রিয়মান। (সমাপ্ত) 

10 months ago


Special story: মানপত্র চাই না, পেটভরে দুটো ভাত খেতে চাই

সৌমেন সুর: রাজ্যের নাম নিশ্চিন্তপুর। নিশ্চিন্তপুরের সমস্ত প্রজারা বেশ সুখেই আছে। এই খবরটা রাজ্যের মন্ত্রীরা রাজাকে রিপোর্ট করেছে। কী কৃষিতে, কী শিল্পে, কী সাহিত্যে, কী সংস্কৃতিতে আমাদের রাজ্য একমেবাদ্বিতীয়ম্। রাজা শুনে পরম আহ্লাদিত। ভাবলেন-আমাদের রাজ্য তাহলে কোথায় পৌছে গেছে। মন্ত্রীদের চোখে ঘুম নেই, প্রজারা যাতে ভালো থাকতে পারে, তারজন্য কত পরিশ্রম করছে।

রাজা রাতে বিছানায় শুয়ে আপনমনে বলতে থাকেন- আমি তো মূর্খ, অশিক্ষিত। গায়ের জোরে রাজা হয়েছি। রাজা হওয়ার মতো কোনো ক্যালি আমার নেই। তবু রাজা হয়েছি বুদ্ধির জোরে। কিন্তু একদিন তো আমার গদির আয়ু শেষ হয়ে যাবে- তখন আমার দশা তো ছাতু মাখার মতো হয়ে যাবে, তাহলে? এক কাজ করি, এখন থেকে প্রজাদের ভয় দেখাতে থাকি, আইনি প্যাচে ব্যাতিব্যাস্ত করে তুলি- তাতে ওরা সবাই আতঙ্কে দিন কাটাতে থাকবে, আর আমার অস্তিত্ব টিকে থাকবে বছরের পর বছর। আমার মন্ত্রীগুলোও হয়েছে একেবারে চুপ শয়তান। কোনোটা ভালো নয। ওপর ওপর দেখায় ভালো, ভেতরে চরম শয়তানী। তার চেয়ে আমি এক কাজ করি, আমি আমার আখের গুছিয়ে নিই। যখন ক্ষমতা থাকবে না তখন ঠ্যাংয়ের ওপর ঠ্যাং তুলে আরাম করে দিন কাটাবো। এবার থেকে যা ভেবেছি তাই করবো। তার আগে আমাকে কয়েকটা চমক দিতে হবে। এমন কিছু প্রচার করবো যাতে প্রজারা নিঃশর্তে সেটা মেনে নেয়। তবে যে প্রতিবাদ করবে তার আর রক্ষে নেই। প্রতিবাদ করলেই ফাঁসি নয়ত কারাগারে সারাজীবন বন্দী। জীবন একেবারে বরবাদ করে ছাড়বো। স্টেস্টাস, সম্মান একেবারে ধূলোয় মিশিয়ে দেবো। মুর্খ প্রজাদের থেকে শুষে শুষে সব খেয়ে নেবো। ওদেরকে ফকির বানিয়ে ছাড়বো, আর আমরা আমির হয়ে থাকবো। কিন্তু একটা ছুঁতো বার করতে হবে- এমন কিছু জিনিস, যা দেখে বা শুনে প্রজারা মোহিত হয়ে যাবে। কাল থেকেই প্রচার কার্য শুরু হয়ে যাক। (চলবে)

10 months ago
Special story: দুই মহাকাব্যের তলানিতে দেশের শয়তানী

সৌমেন সুর: ভারতের প্রাণস্পন্দনকে ধরে আছে দুই মহাকাব্য। রামায়ণ ও মহাভারত। ভারতের রাজনীতি, জাতীয় জীবনের ইতিহাস, ধর্মীয় চেতনা, সামাজিক ঐতিহ্য, নীতিবোধ, আধ্যাত্মিকতা-সবকিছুর ধারক ও বাহক এই দুই মহাকাব্য। 

কেন্দ্র ও রাজ্য- দুজনেই উল্লেখিত বিষয়গুলির ধারক ও বাহক। যদি তাই হয় তাহলে এত হানাহানি, মারামারি কেন? একটু চিন্তা করলে দৃশ্যত ধরা পড়ে-কোনো জিনিসই Moveable নয়। দেহ যখন থাকবে না তখন কোনোকিছুই সাথে যাবে না-তাহলে? তাহলে পড়ে থাকবে শুধু সুকর্ম আর ব্যবহার। এখন যদি কেন্দ্র ও রাজ্য সখ্যতায় বাসা বাঁধে, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো মলিনতা থাকে না। তবে বাধা কিসের! কিসের এত ইগো!

রামের প্রজাবাত্সল্য, লক্ষণের স্বেচ্ছায় দুঃখবরণ, ভারতের অমায়িক ভাতৃপ্রেম, সীতার পরিভক্তি ও চারিত্রিক দৃঢ়তা-এসবই প্রাচীনকাল থেকে ভারতবাসীর কাছে পরম আদর্শ বলে বিবেচিত হয়েছে। রামায়ণের প্রভাব ভারতীয় সমাজকে বিশ্বের যে কোনো জনসমাজ থেকে পৃথক এক স্বাতন্ত্র্য দান করেছে। তাহলে দেশে এখনো কেন জাতপাত নিয়ে নৃশংস ধাষ্টামী, কেন এত দাঙ্গা, কেন এত লোভ! যখন রামায়ণের সার জিনিসটা আমরা বুঝতে পারি, তাহলে এত বৈষম্য কেন? চারিদিকে এত শোকের ছায়া কেন! তাহলে সবটাই কি গিমিক?

এবার আসি মহাভারতে। মহাভারতে পরিবেশিত রাজনীতি, ধর্মনীতি, সমাজনীতি, ভারতীয় সমাজের আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রতীক। মহাভারতের মূলকথা ধর্মের জয়, অধর্মের পরাজয়। ভোগ যে মানব জীবনের কাম্য নয়, বৈরাগ্যেই মুক্তি- এই মর্মকথা মহাবারতের কাহিনীতে ফুটে উঠেছে। তাহলে বাজারে এত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি কেন? কাদের স্বার্থে? চাহিদার তো শেষ নেই। থামবে কখন? একটা মানুষের কত দরকার একসময় না থাকলে, পরিস্থিতির চেহারা তো রণভূমিতে পরিণত হবে। তাহলে আমাদের মূল্যবান এই দুই মহাকাব্যের দাম কোথায় রইল! সবটাই কি ক্তঁ গঙ্গায় নমঃ। দুটো মহাকাব্য শুধু আমাদের জাতীয় জীবনের গৌরবই নয়, ভারতের সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনের মূর্ত প্রতীক। পথপ্রদর্শক। দুটি মহাকাব্যের সারবস্তু বুঝে শয়তানী না করে, যদি সত্ভাবে সবাইকে নিয়ে চলতে পারা যায়, তাহলে একদিন ভারতবর্ষ হবে সূর্যের আর এক নাম।

10 months ago


Story: আপনাকে যদি সারা জীবনের মতো পেতে চাই, আপনি রাজি?

সৌমেন সুর: সুপ্রিয় নির্মল দৃষ্টিতে তাকায় হিয়ার দিকে। তারপর মুখ ঘুরিয়ে বলে, 'আমার জীবন হলো, 'কিছুতেই যায় না মনের ভার, দিনের আকাশ মেঘে অন্ধকার।' হিয়া অবাক হয়ে তাকায়। কথাটা বলে সুপ্রিয় সিট থেকে উঠে আস্তে আস্তে হেঁটে জানালার কাছে এসে দাঁড়ায়। বলা শুরু করে।

--অনেক আশা নিয়ে বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এসেছিলাম কলকাতায়। দাদা-বৌদির সংসারে। ওখানে থেকে চাকরির চেষ্টা করছিলাম। দেখতে দেখতে একটা বছর ভালমন্দ নিয়ে বেশ কাটছিলো। হঠাৎ একদিন দুপুর বেলায়, বৌদি ভাতের থালাটা দড়াম কোরে টেবিলের ওপর রেখে বলে, 'আর কতদিন যে সহ্য করতে হবে এই জ্বালা।' কথাটা বলে বৌদি গজগজ করতে করতে ঘরের ভেতর চলে যায়। আমার তখন সারা শরীর অপমানে কাঁপতে থাকে। মনে হচ্ছিল খাবার ছেড়ে উঠে পড়ি। কিন্তু পরক্ষণে ভাবি, না খেলে তো সারাদিন উপোস থাকতে হবে। তারপর আমি যাবো কোথায়। সাতপাঁচ ভেবে কোনোমতে ভাতটা খেয়ে, ঘরে বসে চিন্তা করি। একটা আশ্রয়, কোথায় পাই! এখানে কে আছে আমার! এইসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মনে পড়ে যায় পিসিমার কথা। হালিশহরে থাকে। ব্যস, ওইদিনই দাদার টেবিলে চিঠি লিখে রাতের অন্ধকারে বেরিয়ে পড়ি।

ভেজানো দরজা ঠেলে স্টেশন মাস্টার অশোক সামন্ত ঘরে ঢোকেন। দু'জনকে দেখে বলেন, 'তোমরা ঘুমোওনি! অবশ্য ঘুমোবেই বা কোথায়! যাক সুপ্রিয়, আমার রিলিভার এসে গেছে আমার ডিউটি শেষ। আমার কলিগকে বলে দিয়েছি তোমাদের কথা। ফার্স্ট ট্রেনটা এলে ঘর ফাঁকা করে দিও। আর একটা কথা সুপ্রিয়, তোমার পিসিমাকে বোলো, আমি সামনের রবিবার দুপুরে বাড়ি যাচ্ছি। চিংড়ি মাছের মালাইকারি খাবো। আমার ধর্মদিদির হাতের মালাইকারি এখনো আমি ভুলতে পারিনি।' অশোকবাবু হাসতে হাসতে চলে যান। সুপ্রিয় কথা বলতে বলতে বেঞ্চে এসে বসে।

--'আমি কলকাতা থেকে হালিশহরে চলে আসি। পিসিমাকে সব ঘটনা খুলে বলি। পিসিমা শুনে বলেন, এখানে তোর যতদিন মন চায় থাক। আর এখান থেকেই তুই চাকরির চেষ্টা কর। তারপর একদিন ঈশ্বরের কৃপায় সত্যিই চাকরি পেলাম। মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভের। আজ দুবছর হয়ে গেল আমার চাকরির। যাক, আমার কথা বাদ দাও- আপনি কোথায় যাবেন এখন? প্রথম ট্রেনতো আসতে আর আধঘণ্টার মতো বাকি।'

হিয়ার মুখে ভাবান্তর। কি বলবে কিছু ঠিক করতে পারে না। সুপ্রিয় বলে ওঠে, 'কি হলো, চুপ করে আছেন কেন? যাক, একটা কথা বলি, এখন ব্রহ্ম মুহূর্ত। চলুন প্ল্যাটফর্ম থেকে দৃশ্যটা উপভোগ করি। ভাললাগবে আপনার।'

ওরা দুজন প্ল্যাটফর্মে চলে আসে। দু'একজন করে মানুষ আসতে শুরু করেছে ট্রেন ধরার জন্য। সুপ্রিয় বলে, 'জানেন, মা বলতেন- ব্রহ্ম মুহুর্তে কেউ যদি একমনে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে তার সেই প্রার্থনা সফল হয়। নিন, আমরা প্রার্থনা করি।'

দুজনে আকাশের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে। এখন অন্ধকারও কাটেনি, আলোও প্রকাশ পাইনি। এমন একটা সন্ধিক্ষণ।

প্রার্থনা শেষে সুপ্রিয় বলে, 'একটা কথা বলবো, যদি কিছু মনে না করেন।' হিয়া বলে, 'বলুন।' 'আপনার চুপ থাকাতে আমি বুঝে গেছি- আপনার তেমন কোনো জায়গা নেই।' কথাটা বলে সুপ্রিয় হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে, 'আপনাকে যদি সারা জীবনের মতো পেতে চাই, আপনি রাজি?'

হিয়া হাসিমুখে সুপ্রিয়র হতে হাত মেলায়। ওরা চলতে শুরু করে।

10 months ago
Story: আমার গল্পের এখানেই ইতি...

সুনীতা দেবী হিয়াকে দেখে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে বলে ওঠেন, 'কিরে, তোর ইন্টারভিউ কেমন হলো?' 'ভাল মামী খুব ভালো। ওনারা ভীষণ সন্তুষ্ট। বলেছে সামনের সপ্তাহে দেখা করতে।' 'কেন রে কোনোকিছু গণ্ডগোল?' 'না না, গণ্ডগোল নয়। সামনের সপ্তাহে অফিস আমাকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেবে।' 'তাই। জয়গুরু। শোন, তোর মামাকে এই সুসংবাদটা জানিয়ে দিই। উনি শুনলে ভীষণ খুশী হবেন। যাক, আজ রান্না বন্ধ। আনন্দের দিন, খাবার অর্ডার দেবো। রিনি, আয় অর্ডারটা করে দিবি।' কথাটা বলে সুনীতা দেবী চলে যান।

রিনির মুখটা রাগে ভরে আছ। তীক্ষ্ণভাবে হিয়াকে বলে, 'এই যে, মহারাণী চাকরীটা হলো আমার শাড়ি পরে। লজ্জা করে না আমার শাড়ি পরতে। বাপ-মা তো তোমাকে আমাদের কাছে গছিয়ে দিয়ে ওপরে পালিয়ে গেছে। ভিখারীর মেয়ে কোথাকার। আমার বাবার কত অন্ন ধ্বংস করেছ সেটা জানো? লজ্জা যদি ছিটেফোঁটা থাকে, কালই এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবে। এখন তো হাতির পাঁচ পা। নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছ। ভদ্র ঘরের মেয়ে যদি হও, তাহলে বুঝবো তুমি যাচ্ছ, আর যদি ছোটলোক, নোংরা, অনাথ প্রকৃতির মেয়ে হও তাহলে থাকবে। কোনটা ঠিক করবে সেটা নিজে বুঝে নাও।' রিনি গড়গড় করে কথাটা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।

হিয়া ঘামতে থাকে। পা থেকে মাথা থরথর করে কাঁপতে থাকে। ছোট্ট একটা সিকোয়েন্স মুখের সামনে ফুটে ওঠে।

রিনি রেগে মাকে বলছে, 'এই নিয়ে পাঁচ পাঁচটা সম্বন্ধ ওর জন্য নষ্ট হলো।য তবার ছেলে দেখতে আসে ততবারই আমাকে নয়, ওকে পছন্দ করে। ও আমার শত্রু। আমার যম। যতদিন না পর্যন্ত ও এই বাড়ি থেকে বিদায় না হচ্ছে, ততদিন কোনো সম্বন্ধ এলে আমি হাজির হবো না, এই আমি শেষবারের মতো বলে দিলাম।'

হিয়া আড়ি পেতে সব শোনে। কথাগুলো শুনে ওর পা থেকে মাটি সরে যায়। এক অজানা তীব্র যন্ত্রণায় বিষিয়ে ওঠে হিয়া। চোখে মুখে অদ্ভুদ একটা অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে। কোনমতে চেয়ারে বসে পড়ে।

রাত একটু গভীর হলে হিয়া পা টিপে টিপে মেন দরজার কাছে চলে আসে। ঘুমে আচ্ছন্ন এ বাড়ির দুই সদস্য। দূরে কোথাও কুকুর ডেকে ওঠে। হিয়া আস্তে করে ছিটকিনি খুলে বাইরে বেরিয়ে পড়ে।

স্টেশন মাস্টারের পাশের ঘর। হিয়া সুপ্রিয়র দিকে তাকিয়ে বলে, 'আমার গল্পের এখানেই ইতি। এরপর তো আপনার প্রবেশ।'

খানিক্ষণ চুপচাপ। হিয়া সুপ্রিয়কে বলে, 'আপনার গল্প বলুন। আমি শুনবো।'

10 months ago
Story: বলুন তো কেন পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন!

সৌমেন সুরঃ সুপ্রিয় হিয়াকে বসতে বলে। হিয়া চেয়ারে বসে। 'আপনি একটু বসুন, আমি খাবার নিয়ে আসছি।' কথাটা বলে সুপ্রিয় বেরিয়ে যায়।

হিয়ার চোখে মুখে শূন্যতা। এক গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে যায়। চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা দৃশ্য। সুনিতা একটা রেকাবিতে কিছু ফুল আর একটা ছোট্ট দইয়ের ভার হাতে নিয়ে ডাকেন, হিয়া...হিয়া..। 

হিয়া কাঁধ ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।

সুনিতা মন্দির থেকে পুজোর সামগ্রী নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, হিয়া ঘরে ঢুকে বলে, 'আমাকে ডেকেছো মামী?' 'হ্যাঁ.. দেখি' বলে কপালে দইয়ের একটা ফোঁটা দিয়ে দেন। তারপর একটা জবা ফুল নিয়ে বলেন, 'এই ফুলটা কাছে রেখে দে, মায়ের আশীর্বাদী ফুল।' হিয়া ফুলটা হাতে নিয়ে ওর ব্যাগে রাখে। তারপর প্রণাম করে মামীকে। মামী হিয়ার চিবুক ছুঁয়ে বলেন, 'তোর পরীক্ষা ভালো হোক, এই আশীর্বাদ করছি।'

হঠাৎ ধুমকেতুর মতো প্রবেশ করে রিনি। রিনি সুনিতার একমাত্র মেয়ে। বলে ওঠে, ' আচ্ছা ওর বেলায় দইয়ের ফোঁটা, আশীর্বাদী ফুল। আর আমার বেলায় কিছুই না।' আঃ রিনি। ওভাবে বলছিস কেন, ও তোর দিদি। 'নিজের দিদি তো নয়, দূর সম্পর্কের দিদি।' সুনিতা ধমকে ওঠেন, 'রিনি..' 'হিয়া তুই যা তো। সাবধানে পৌঁছাস, যা।' হিয়া মুখ হাঁড়ি করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।

একটা মালবাহী ট্রেন হুইসেল বাজিয়ে গর্জন করতে করতে পাস করে।

হিয়া গুম হয়ে বসে আছে চেয়ারে। সুপ্রিয় ক্যারিব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করে। 'এত রাতে খাবার পাওয়া যায়!' অনেক কষ্টে পেলাম ডিম টোস্ট। নিন ধরুন। হিয়া খাবারটা হাতে নেয়।  সুপ্রিয় পাশের বেঞ্চে বসে খেতে শুরু করে। হিয়াও খেতে থাকে।

সুপ্রিয় বলে ওঠে, 'খেতে খেতে বলুন তো কেন পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন?'  হিয়া তাকায় সুপ্রিয়র দিকে। তারপর মুখ ঘুরিয়ে স্থির হয়ে বলে, 'মানুষ অনেক কষ্ট পেলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। জানেন, দিনগুলো ভালো কাটছিল। মা,বাপ মরা মেয়ে মামার বাড়িতে মানুষ হচ্ছিলাম। মামা আমি দু'জনেই ভালো মানুষ। কিন্তু মামাতো বোন রিনি ছিল আমার বিরুদ্ধে, আমাকে কিছুতেই সহ্য করতে পারে না। কেন যে ওসব করতো তার কারণ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। একদিন'....

রিনি রাগের মাথায় ঘরের জিনিসপত্র হাতের সামনে যা পাচ্ছে তাই ফ্লোরে ছুঁড়ে ফেলছে, শব্দ শুনে সুনিতা দেবী দ্রুত ঘরে আসেন। রিনির কাণ্ড থেকে চিৎকার করে ওঠেন, 'কি হচ্ছে কি?' রিনি... রিনি আরও উচ্চ গলায় বলে ওঠে, কেন আমার শাড়ি হিয়াকে পড়তে দিয়েছ? কেন..?' একটু পরেছে তাতে দোষের কি হয়েছে!' 'দোষের হয়েছে তোমার শাড়ি তো ছিল, তাই দিলে না কেন...? আচ্ছা আমার শাড়ি পরে ইন্টারভিউ যাওয়া যায়! তাইতো তোর শাড়ি... এমন সময় হিয়া ঘরে ঢোকে।

10 months ago


Bihar: প্রেমিকের সঙ্গে নিজের স্ত্রীকে বিয়ে দিলেন স্বামী! তারপর যা হল...

বলিউডের জনপ্রিয় ছবি 'হম দিল দে চুকে সনম' ছবিটির কথা সবার মনে আছে তো? কারণ এই সিনেমার মতই এক ঘটনা ঘটেছে বিহারেও (Bihar)। সেখানে এক স্বামী তাঁর স্ত্রীকে বিয়ে দিলেন প্রেমিকের সঙ্গে। জানা গিয়েছে, বিহারের নওয়াদা জেলার এক মহিলার বিয়ে হয়েছে অনেক দিন আগেই কিন্তু ভুলতে পারেননি তাঁর পুরনো প্রেমিককে। ফলে বিয়ের পরও সেই প্রেমিকের সঙ্গে রীতিমতো যোগাযোগ রাখতেন তিনি। এরপর তা জানাজানি হতেই সেই মহিলার বর কোনও ঝামেলা না করেই সেই প্রেমিকের সঙ্গে নিজের স্ত্রীকে বিয়ে দিলেন। আর সেই দৃশ্য সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, সেই মহিলার স্বামী কাজের সূত্রে বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন। আর সেই সুযোগেই রাতের অন্ধকারে সেই মহিলা তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যান। এরপর তাঁদের হাতে-নাতে ধরে ফেলে গ্রামবাসীরা। সেই প্রেমিককে বেধড়ক মারধরও করেন তাঁরা। তারপর তাঁর স্বামী আসতেই পুরো ব্যাপারটা জানতে পেরেই তাঁর স্ত্রীকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দেখা যায়, এক শিবমন্দিরে নিয়ে গিয়ে প্রেমিক সেই মহিলাকে সিঁদুর পরিয়ে দিচ্ছেন। আর এই ভিডিওই এখন সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। উল্লেখ্য, সেই প্রেমিকেরও আগেই বিয়ে হয়েছিল ও তাঁর তিন সন্তানও রয়েছে। ফলে এই ঘটনা কোনও সিনেমার থেকে কম কিছু নয়।

10 months ago
Story: কিছু না বললে বুঝবো কেমন করে!

সৌমেন সুর: একটা চায়ের দোকান। বলা যায় রাতের চায়ের দোকান। দুজনে একটা বেঞ্চে বসে। সুপ্রিয় বলে ওঠে, 'ভজনদা, দুটো কেক দাও।' মেয়েটি সুপ্রিয়র দিকে জিজ্ঞাসুনেত্রে তাকায়।

--'আমার চেনা দোকান। হালিশহরে আমি বছর দুয়েক আছি। এই চায়ের দোকানটা সারা রাত খোলা থাকে। কারন, রাত দুটোর পর সবজীওয়ালারা আসতে থাকবে। তারা প্রথম ট্রেন ধরে কলকাতায় যায়।'

কেক, চা চলে আসে। বেঞ্চের ওপর চায়ের ভাঁড় দুটো রাখে সুপ্রিয়।

--'দাঁড়ান, চা খাবার আগে একটু জল খান। বাচ্চা...বড় কাগজের কাপে জল দেতো।' একটু হাঁক দেয় সুপ্রিয়।

মেয়েটি জড়সড় হয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে ভাবনাগ্রস্ত হয়ে বসে আছে।

--নিন, জলটা খান।

মেয়েটির সম্বিত্ ফেরে। সুপ্রিয়র দিকে তাকায়। সুপ্রিয় ইশারায় জলটা খেতে বলে। মেয়েটি জলটা খায়। সুপ্রিয় চায়ের ভাঁড়টা এগিয়ে দিয়ে বলে,'চা'টা খান। একটু কেকের কামড়, আর এক সিপ চুমুক, ভালোলাগবে। নিন।

মেয়েটি হাতে নেয় কেকটা। এইসময় সুপ্রিয় বলে, 'আমি সুপ্রিয়। সুপ্রিয় রায়। আপনি?' মেয়েটি ওর দিকে তাকিয়ে বলে, 'আমি হিয়া মিত্র।' খেতে খেতে সুপ্রিয় বলে, 'আজ আপনি এই অঘটন ঘটাচ্ছিলেন কেন?' হিয়া কোনো কথা বলে না। রেল লাইনের দিকে শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।

---কিছু না বললে বুঝবো কেমন করে!

হিয়া তাকায় সুপ্রিয়র দিকে। সু্প্রিয় আশ্বাস দেয়, 'ঠিক আছে এখানে বলতে হবে না, অন্য জায়গায় বলবেন।' তার আগে চা'টা খেয়ে নিন, ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।

হিয়া চায়ে চুমুক দেয়। 'কেকটা খান। লজ্জা না করে খান। মুখ দেখে তো মনে হচ্ছে পেটে কিছু পড়েনি। ঠিক আছে এটা খান, আমি খাবার আনছি। আমারও খিদে পেয়েছে।' সুপ্রিয় ক্যাজুয়ালী কথাটা বলে।

হিয়া কেক-এ কামড় দেয়।

দুজন RPF প্ল্যাটফর্মে হেটে টহল দিচ্ছে। প্ল্যাটফর্মের ঘড়িতে রাত একটা দশ।

স্টেশন মাষ্টারের ঘর। হিয়া ও সুপ্রিয় ঘরে প্রবেশ করে। স্টেশন মাষ্টার দুজনকে দেখে অবাক হয়ে বলে, 'কি ব্যাপার, শেষ ট্রেনটা তো অনেক আগে বেরিয়ে গেছে।' সুপ্রিয় কথায় যোগ দেয়, 'সেইজন্যই তো বিপদে পড়েছি অশোকদা।' 'তোমার আবার বিপদ কিসের, তুমি তো এই এলাকার।' 'না আমি নয়, মানে আমার বান্ধবী। লাষ্ট ট্রেনটা মিস করেছে বলেই তো যত হ্যাপা।' 'তা কি করবে এখন।' 'বলছিলাম, আপনার পাশের ঘরটা তো ফাঁকাই থাকে, ওখানে না হয় রাতটা কোনোমতে--' 'ঘুমোতে পারবে কি! বসে বসে ঘুমোতে হবে।' 'ওতেই হবে অশোকদা, রাতটা কোনমতে কাটাতে পারলেই চলবে।' 'তাহলে যাও, দেখো বসে বসে যদি ঘুমোতে পারো।' দুজনে পাশের ঘরটায় চলে যায়।

10 months ago


Special story: "এটা খেয়ে নানা রোগে মানুষ জর্জরিত, কোনো হেলদোল নেই"

সৌমেন সুরঃ মানুষের কল্যাণে সমাজ। সমাজের কল্যাণেই মানুষ। সমাজের ভালখারাপ মানুষের ইচ্ছের ওপর নির্ভর করে। আমরা মোদ্দা কথাটা জানি, মনুষ্যত্ব নিয়েই মানুষ। মনুষ্যত্ব বিহীন মানুষ-অমানুষ। যে জীবন নিজের সুখে মগ্ন, সে জীবন স্বার্থপর। সে জীবন অমানবিকতায় পঙ্কু। তাই চোরাপথে জীবনের যে সাফল্য, তা বেশিদিন টেকে না। আসলে নীতিবোধ মানুষের জীবনে বড় আশ্রয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সমাজ জীবনের সম্পর্ক নিবিড়। আজকের ব্যবসায়, স্বার্থটা-বড়। অভাব হলো নীতিবোধের। সর্বত্র ভেজালের মহিমা। ওষুধে ভেজাল, চাল, ডাল তেল, আটা এমনকি রান্নার মশলাপাতিতে পর্যন্ত ভেজাল। পোস্তয় ভেজাল। শাকসবজি, বেগুন, পটলে তীব্র পরিমাণে বিষ তেলের প্রয়োগ। শরীরের পক্ষে কত অস্বাস্থ্যকর। পৃথিবীতে ভারতের মতো আর কোনো দেশে খাদ্যে এত ভেজাল মেশানো হয় না। এক্ষেত্রে আমাদের দেশ বোধহয় শীর্ষে। বাড়ি তৈরী করবেন? গালে হাত দিয়ে ভাবতে হবে আপনাকে, কারণ সিমেন্টে ভেজাল। এমনকি যে শাকসবজি খেয়ে একটু স্বস্তি পাবেন, তাতেও ভেজাল, কারণ তাতে রং করানো হয়। এভাবেই বেড়ে চলে অসাধু ব্যবসায়ীদের মুনাফার অঙ্ক। 

ভেজাল ব্যবসায়ীদের রোধ করা যাচ্ছে না কেন? ভেজাল খাবার খেয়ে কত মানুষ অসুস্থ হয়ে যায়। কেউ কেউ মৃত্যুর কোলেও ঢলে পড়ে। এসব দেখেও অসাধু ব্যবসায়ীদের কোনো চেতনা নেই। তারা মুনাফা লুটতেই ব্যস্ত। ঘৃণ্য ব্যবসায়ীদের এখানে কঠোর শাস্তি হয় না। তবে দুর্নীতি দমনের জন্য একসময় গঠিত হয়েছিল 'সদাচার সমিতি'। কিন্তু কোনো কার্যকর হলো না। সদাচার সমিতি ভরে উঠলো বাস্তু ঘুঘুদের নিয়ে। অবশেষে তৈরি হলো ভেজালরোধে 'খাদ্য ভেজাল নিবারনী বিধি।'সে আইনেও অসাধু ব্যবসায়ীদের ঘায়েল করা গেল না। আসলে আইন দিয়ে কখনও মানুষের হৃদয় পরিবর্তন করা যায় না। দরকার মানবিক বোধ। এই চেতনা যতদিন ব্যবসায়ীদের না হচ্ছে ততদিন সমাজে ভেজাল অটুট থাকবে। ভেজালের সর্বনাশা বিভীষিকা থেকে মানুষের কি কোনো মুক্তি নেই? ভেজাল সমাজের একটা রীতিমত ভয়ানক অপরাধ। এক্ষেত্রে সরকারের দিকে তীব্র দৃষ্টি আকর্ষন করছি। 

10 months ago
Story: কি ব্যাপার আপনি মরতে যাচ্ছিলেন কেন?

সৌমেন সুর: শুনশান স্টেশন। রাত প্রায় সাড়ে বারোটা, স্টেশনে লোকজন নেই বললেই চলে। শুধু রেলের লাল সিগন্যাল জ্বলে আছে প্রহরীর মত। দু-একটা ভিখারী ঘুমিয়ে আছে এদিক-ওদিক। প্লাটফর্মের প্রায় সব দোকানগুলো বন্ধ। একটা স্নাক্স-এর দোকান বন্ধ করতে ব্যস্ত।

সুপ্রিয় হেঁটে চলেছে ধীরে সুস্থে। কোনও হেলদোল নেই। সুপ্রিয় স্ন্যাকসের দোকানের কাছে এসে দাঁড়ায়। 

একটা ভুজিয়া দিন তো।

দোকানদার প্যাকেটটা হাতে দেয়। সুপ্রিয় দাম দিয়ে প্যাকেটটা ছিড়ে খেতে খেতে আনমনা হয়ে এগোতে থাকে। প্লাটফর্ম থেকে কিছুটা দূরে হঠাৎ সবুজ সিগন্যাল জ্বলে ওঠে। সুপ্রিয় সিগন্যাল দেখে আপন মনে বলে ওঠে। 'এখন পাস করবে চক্রধরপুর এক্সপ্রেস। হাওড়া থেকে ছেড়েছে রাত বারোটা পাঁচে।'


সুপ্রিয় ঘাড় ঘুরে তাকায়। অনেক দূরে ট্রেনটা হুইসেল দিয়ে এগিয়ে আসছে। সুপ্রিয় আবার খেতে খেতে এগোতে থাকে। হঠাৎ ও থমকে দাঁড়ায়। মুহূর্তে ঘাড় ঘুরে তাকায়। ট্রেনটা অনেকটা এগিয়ে এসেছে।

একটি যুবতী মেয়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে বেশ কিছুটা দূরে, লাইনের উপর দাঁড়িয়ে আছে।

সুপ্রিয় প্যাকেটটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে দ্রুত মেয়েটির দিকে দৌড়াতে শুরু করে, ট্রেনটা কাছাকাছি চলে এসেছে। সুপ্রিয় মেয়েটির কাছে এসেই এক ঝটকায় লাইন থেকে সরিয়ে নেয় মেয়েটিকে।

চক্রধরপুর এক্সপ্রেস সিংহের মতো গর্জন করতে করতে নিমেষে দৃষ্টির বাইরে চলে যায়।

সুপ্রিয় অবাক হয়ে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকে।

মেয়েটি পাথরের মতো 

স্তব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। দশ সেকেন্ড কারুর মুখে কোন কথা নেই। সুপ্রিয় স্তব্ধতা ভাঙে।

কি ব্যাপার আপনি মরতে যাচ্ছিলেন কেন?


মেয়েটি কোন কথা বলে না। মরা মাছের মত তাকায় সুপ্রিয় দিকে।

উত্তর দিন!

আপনি আমাকে বাঁচালেন কেন?

সুপ্রিয় থমকে যায় কি বলবে মুহূর্তে ঠাওর করতে পারে না একটা অদ্ভুত এক্সপ্রেশন ফুটে ওঠে মুখে। পরক্ষণে স্বাভাবিক হয়ে বলে, 'এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলাটা ঠিক নয়। আসুন ওদিক টা যাই

10 months ago
Special story: প্রকৃত পরিচয়ে ধোঁয়াশা তবু দেশ চলছে মাথা উঁচু করে

সৌমেন সুর: মানুষের প্রকৃত পরিচয় মনুষ্যত্ব। সুখ-দুঃখ, পাপ-পূণ্য, উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়েই মানুষ সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠে। এটা আমরা জেনে এসেছি, বুঝে এসেছি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মানুষের মধ্যে সেই মনুষ্যত্ব কোথায়! যদি থাকতো তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়া একটি ছবি-একজন নীচু জাতের মেয়ে নদীতে স্নান করেছে বলে, সেই নদীর জল অপবিত্র হয়ে গেছে, এই নিরিখে তাকে উচ্চবর্ণের দু'জন যুবক বাঁশপেটা করছে আর মেয়েটি রক্ষা পাবার জন্য পরিত্রাহি চিৎকার করে চলেছে অথচ তাকে বাঁচাবার জন্য আশেপাশে কেউ নেই। এটা কি সভ্য দেশের চিত্র? এর নাম মনুষ্যত্ব? মানুষের ভাবনাটা কোথায় ঠেকেছে দেখুন। যাই হোক সোশ্যাল মিডিয়ার এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা হয়নি। কথা হলো এই নৃশংস ছবির পাশে, ঠাণ্ডা ঘরে কিছু উচ্চপদস্থ মানুষের হাততালি। কারণ, ভারত এক নতুন মিসাইল তৈরী করেছে, যা অনায়াসে শত্রুকে ঘায়েল করতে বদ্ধ পরিকর। ভারত যুদ্ধের প্লেন বানিয়েছে, যে প্লেনের গতি র‍্যাডার চোখকে ধুলো দেবার মতো। আমরা চিত্কার করে উল্লাসে ফেটে পড়েছি। বলছি- 'হও ধরমেতে ধীর, হও করমেতে বীর, হও উন্নত শির নাহি ভয়।' আমরা কবির এই কবিতার মর্মাথে ভেসে বেড়াতে পারছি? তর্কের খাতিরে বলছি- হ্যা পারছি। তাহলে সারা দেশ জুড়ে দাঙ্গা, খুন, মারামারি, ধর্ষণ, এসব করতে হয় কেন?

পৃথিবীর ফুল, ফল, জল, বায়ু, সম্পদে সমাজের সকলেরই সমান অধিকার। কিন্তু একদল স্বার্থপর মানুষ ঈশ্বরের সাম্যকে নষ্ট করে নিজের প্রভুত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। বারবার তারা ধর্মকে ভূলুন্ঠিত করছে। একপেশে নীতি, একপেশে ভাবনা, পাওয়ার নিয়ে লুডোখেলা, মানুষের অধিকারকে গলা টিপে হত্যা করা, সম্পদ লুট করে নেওয়া-অর্থাত্ দেশ জুড়ে চলছে, জোর যার মুল্লুক তার। মানুষকে বোঝানো, আমরাই প্রকৃত মানুষ অথচ মনুষ্যত্ব উধাও।     

10 months ago


Renaissance: এ অন্ধকার দশা কাটতে 'নবজাগরণ' প্রয়োজন!

সৌমেন সুর: বর্তমানে বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী (Students) দেখা যায়, মাস্টার্স (MA) ডিগ্রী অর্জন করে বসে আছে, তারা চাকরির চেষ্টা হন্যে হয়ে ঘুরছে। কিন্তু চাকরির (JOB) যা বাজার! কার কখন চাকরি হবে এ ব্যাপারটা একমাত্র ভগবানই বলতে পারেন। পড়াশোনা জীবনের একটা অঙ্গ। যে যত পড়বে তার তত অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক জ্ঞান বাড়বে। কিন্তু বর্তমানে পড়াশোনাওয়ালা ছেলেমেয়েদের সমাজে কোন দাম নেই। বিশেষ করে গরীব ঘরের হলে তো কথাই নেই। মেরিটোরিয়াস বা স্টুডিয়াস কোনও ছেলে বা মেয়ের পাশের বাড়িটা যদি বিশাল অট্টালিকা হয়, সমাজে তার বেশি কদর। কারণ তার অর্থ আছে। বর্তমান সমাজে অর্থ আছে যার, সম্মান আছে তার। কোন স্টার পাওয়া, লেটার পাওয়া মানুষের কোনও দাম নেই।

ছেলেবেলায় পড়েছি বা শুনেছি সমাজে সুস্থ সুন্দর জীবনযাপন সম্মানের সঙ্গে করতে গেলে, তাকে অবশ্যই পড়াশোনায় দারুন হতে হবে। বর্তমানে এসব কথার কোনও মূল্য নেই। কারণ একগাদা ডিগ্রী নিয়ে বছরের পর বছর তারা বেকার। এক নিঃসীম অন্ধকার যেন গ্রাস করে আছে তাদের মুখশ্রীকে। শুধু আমাদের রাজ্য বলে নয়, সব রাজ্যেরই এক কথা। শিক্ষা নেই যার পোড়া কপাল তার। কিন্তু এখন হয়ে গেছে উল্টো, অশিক্ষায় আছেন যিনি, কৃপাহি কেবলম্ পাচ্ছেন তিনি। দেশটা কি ছিল আর কোথায় তলিয়ে যাচ্ছে, এখনই যদি আমূল সংস্কার না করা হয় তাহলে দেশের ভাগ্যে অন্ধকারের মুড়ো ঝাঁটা।

10 months ago
Special story: হঠাৎ কি হলো!

সৌমেন সুর: হঠাৎ কি হলো! নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এমন ঊর্ধ্বে চলে যাচ্ছে, যেখানে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস শুরু হয়ে গিয়েছে। কিছুদিন আগে ৫০-৬০ টাকার মধ্যে সবজী বাজার নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফেরা যেতো। এখন সবজী বাজার সারতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা চলে যাচ্ছে। এখন কথা হলো জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে অথচ বেসরকারি অফিসে বেতন বাড়ছে না। গোনাগুনতি টাকা, গোনাগুনতি হিসেব। একটু উনিশ-বিশ হলেই চিন্তায় প্রেশার ফল, বুকে ব্যাথা। ছোটো ডাক্তারের কাছে। গেলো অর্থদন্ড। তার ওপর ওষুধ তো আছেই। কোথায় যাবে মধ্যবিত্ত! মানুষের ক্রয়শক্তি দিন কে দিন কমতে শুরু করেছে। খাওয়া-দাওয়ার উপর লাগাম টানতে শুরু করেছে মানুষ। প্রয়োজনীয় পন্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধিতে দিনকে দিন মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মধ্যবিত্ত শ্রেনী অসহায়। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ অসহায়। কৃষক অসহায়, শ্রমিক অসহায়, সর্বত্র অসহায়ের করুণ ছবি। 

বর্তমানে সততার কোনো দাম নেই। ছড়িয়ে পড়েছে অসতের উল্লাস ধ্বনি। এমন জাল বিস্তার হয়েছে, যে একবার সেই জালে জড়িয়ে পড়েছে-তার আর নিস্তার নেই। হঠাত্ কেন এমন হলো! চাল, ডাল, তেল, নুন, রান্নার বস্তু, পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাস সবেতেই আগুন জ্বলছে। দাম বাড়ছে তো বাড়ছেই। খুঁজতে হবে, যারা পণ্যদ্রব্যের ওপর টাগ অব ওয়ার চালাচ্ছে- তাদের বিচ বাজারে হাজার মানুষের সামনে কঠোরভাবে শান্তি দেওয়া। পরিস্কার বোঝা যায়, অসাধু ব্যাবসায়ীদের জন্য সৃষ্টি হয় পণ্যের কৃত্রিম অভাব। সৃষ্টি হয় কালোবাজার। চলে শোষনের নেশা। পন্যমূল্য বৃদ্ধির দুঃসহ আঘাতে মানুষ মরিয়া হয়। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় মানুষের স্বার্থে আন্দোলনের। নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের মূল্যবৃদ্ধি সমাজের এক গভীর ক্ষত। অর্থনীতির বিজ্ঞানভিত্তিক পূর্নবিন্যাস এই ক্ষতের উপশম। আমারা রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার উভয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এখনই রাশ টেনে না ধরলে, ভবিষ্যতে এক ঘোর অমানিশার প্রভাব দেখা দেবে, এ কথা বলাই বাহুল্য।    

10 months ago