নতুন বছরে প্রথম তুষারপাত দার্জিলিংয়ে। হাড় কাঁপুনি ঠাণ্ডা, তার উপর তুষারপাত। যদিও এই সময়ে ঘুরতে গিয়ে বেশ আনন্দ উপভোগ করছে পর্যটকেরা। মঙ্গলবার বেলা গড়াতেই তুষারপাতে ছেয়ে গিয়েছে দার্জিলিংয়ের একাধিক এলাকায়। উত্তর সহ দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার পরিবর্তনের কথা আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। এবার সেই মতই উত্তরবঙ্গের কুইন অফ হিলসের একাধিক এলাকা ঢাকল বরফে।
জানা গিয়েছে, দার্জিলিংয়ের সিঙ্গলিলা ন্যাশনাল পার্কের অন্তর্গত টুমলিং, টংলু, মেঘমা সহ বিভিন্ন এলাকায় তুষারপাত। যার ফলে ওই এলাকার রাস্তায় জমেছে পুরু বরফের স্তর। উত্তরবঙ্গের কনকনে ঠাণ্ডা থাকলেও দার্জিলিংয়ের ক্ষেত্রে রয়েছে হাড় কাঁপানি শীত। এ ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছসিত পর্যটকরা। এর আগে দার্জিলিংয়ে গত বছর ডিসেম্বরেই বরফ পড়েছিল সান্দাকফু-ফালুট এলাকায়।
আবাহওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবারের মতো বুধবারেও দার্জিলিংয়ে ও উঁচু পার্বত্য় এলাকায় তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এবং পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে বৃষ্টিরও হতে পারে। হিমাঙ্কের নিচে নামতে পারে দার্জিলিংয়ের তাপমাত্রার পারদ। শুধু দার্জিলিং নয় সিকিম শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারেও বিরাজ করবে হাড়হিম করা ঠাণ্ডা।
সিকিমে প্রবল তুষারপাতে আটকে পড়েছিলেন হাজারের বেশি পর্যটক। পুরু বরফের স্তরে ঢেকে গিয়েছে পূর্ব সিকিমের রাস্তাঘাট। বুধবার দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েন কয়েক হাজার পর্যটক। দীর্ঘক্ষণের প্রচেষ্টায় ভারতীয় সেনারা বুধবার রাতে ১২০০ জন পর্যটককে উদ্ধার করেছে। এরপর তাঁদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যান সেনারা।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু মিলিয়ে রাতে প্রায় ১২০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের রাতে সেনা ক্যাম্পগুলিতে রাখা হয়। গরম পোশাক, চিকিৎসা সহায়তা এবং গরম খাবার দেওয়া হয় পর্যটকদের। ইতিমধ্যেই তাদের সমতলে নামানো হবে বলে জানা গিয়েছে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে। ঘটনার খবর পেয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কর্পস অক্লান্তভাবে উদ্ধার অভিযান চালায়।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছরই তুষারপাতের কারণে সিকিমে আটকে পড়েন বহু পর্যটক। সেক্ষেত্রে তাঁদের উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসে সেনাবাহিনী। চলতি বছরে এই নিয়ে নয়টি উদ্ধার অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজারেরও বেশি পর্যটককে উদ্ধার করেছে ভারতীয় সেনা। বুধবার সকাল থেকে সিকিম সহ কালিম্পং এবং দার্জিলিঙের একাধিক জায়গায় শুরু হয় প্রবল তুষারপাত।
অক্টোবর মাসে বিপর্যয়ের পর থেকে বন্ধই ছিল উত্তর সিকিম। এবার পর্যটকদের জন্য সুখবর। প্রায় দেড়মাস পর ফের খুলে যাচ্ছে উত্তর সিকিমের একাংশ। বুধবার সিকিম পর্যটন দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ১ ডিসেম্বর থেকে লাচুং-এ যেতে পারবেন পর্যটকরা। তবে, লাচেন ও গুরুদংমার এখনও বেশ কয়েকদিন বন্ধ রাখা হবে। বহু রাস্তা এখনও সারানো হয়নি বলে খবর।
তবে, উত্তর সিকিমে ভ্রমণে থাকছে বেশ কিছু কড়াকড়ি। যেমন, উত্তর সিকিমে যেতে হলে সংকলন-টং-চুংথাং সড়ক ধরেই যেতে হবে পর্যটকদের। গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বিকেল ৪টের পর থেকে। জানা গিয়েছে, অধিকাংশ রাস্তা এখনও সারানো হয়নি। দিনরাত এক করে পরিশ্রম করছেন সেনারা। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিকের চেষ্টায় রয়েছেন তাঁরা।
তবে, পর্যটন দফতরের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে যে, পর্যটকরা যেন একটু হাতে সময় নিয়ে উত্তর সিকিমে আসেন। এখনও হড়পা বানের ক্ষত থেকে সেরে উঠতে পারেনি উত্তর সিকিম।
উত্তর সিকিমে আবহাওয়ার উন্নতি হচ্ছে। জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। সেতু ভেঙে পড়ায় অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো তৈরি করেই চলছে উদ্ধারকাজ। এদিকে, পাহাড় থেকে সমতলের দিকে একের পর এক দেহ ভেসে আসছে। সম্প্রতি, জলপাইগুড়ির তিস্তায় ভেসে এল ১১ জনের দেহ। শুঝু দেহ নয়, দেহাংশও ভেসে আসছে। তিস্তাপাড়ে যেন মৃতদেহের পলি জমতে শুরু করেছে। আর সেগুলি ছিঁড়ে খাচ্ছে শিয়াল কুকুরে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার পর্যন্ত ৪০ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তার মধ্যে ১০ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। বাকিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের মর্গে উদ্ধার হওয়া দেহের ময়নাতদন্ত চলছে। জলপাইগুড়ির তিস্তাপাড়ে আরও দেহ ভেসে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিস্তায় নৌকা নামিয়ে দেহের খোঁজ চলছে।
এদিকে, গত কয়েকদিন ধরে খারাপ আবহাওয়ার জন্য উত্তর সিকিমে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছে। তবে, রবিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় ফের জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। যেখানে সেতু ভেঙে গিয়েছে, সেখানে বাঁশের অস্থায়ী সাঁকো তৈরি হয়েছে । সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর সিকিমের ডংজু , চুংথাং এবং পেগং থেকে বেশ কয়েক জনকে সড়কপথেই নীচে নামিয়ে আনা হয়েছে।
বহু পর্যটক উত্তর সিকিমের লাচুং ও লাচেনে আটকে রয়েছেন। তবে, সিকিম প্রশাসন জানিয়েছেন, পর্যটকরা সুরক্ষিত রয়েছে। তাঁদের নিখরচায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে, খারাপ রাস্তার কারণে এখনও সেখানে সেভাবে উদ্ধারকাজ শুরু করা যায়নি।
মেঘভাঙা বৃষ্টি-হড়পা বানে বিপর্যস্ত সিকিম (Sikkim)। হড়পা বানে (Flash Floods) মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫৬-এ। সিকিম সরকারের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে সিকিমে ২৬জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তিস্তা নদীর অববাহিকা থেকে ৩০জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। তাই সিকিমে বন্যায় এখন মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬।
সিকিমে বিপর্যয়ের প্রায় চারদিন পার, কিন্তু এখনও এর প্রভাব কাটেনি। প্রসঙ্গত, কয়েক মিনিটের বিপর্যয়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে সিকিম। হড়পা বানে বিধ্বস্ত সিকিমের চুংথাং, রংপো, মানগান সহ একাধিক অঞ্চল। তিস্তার জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে বিপর্যয়ের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে এখনও বেশ খানিকটা সময় লাগবে। তিস্তার জলে এখনও ভেসে আসছে মৃতদেহ। কার্যত মৃত্যপুরীতে পরিণত হয়েছে তিস্তা।
সূত্রের খবর, সিকিম সরকারের মতে, মাঙ্গান থেকে ৪ জনের মৃতদেহ এবং গ্যাংটক থেকে ৫ জনের মৃতদেহ এবং পাকিয়ং জেলা থেকে ১৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা নদীর অববাহিকা শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলা থেকে ৩০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ জওয়ান সহ ১৪২ জন। সিকিমে আটকে বহু পর্যটক।
প্রকৃতির রোষে তছনছ সিকিম (Sikkim)। মেঘভাঙা বৃষ্টি, চুংথাম ড্যাম ভেঙে দক্ষিণ লোনাক লেক উপচে বিপুল জলের স্রোতে বিপর্যস্ত সিকিম। পাহাড়ে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তিস্তা। এই পরিস্থিতিতে সেখানে আটকে বহু। বিপর্যয় বিধস্ত সিকিমে নিখোঁজ রাজ্যেরও বহু মানুষ। সূত্রের খবর, সিকিমে কাজ করতে গিয়েছিলেন বাঁকুড়ার হেতাগড়া গ্রামের ২ যুবক, ভোলানাথ শিকারি ও কর্ন অধিকারী। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর থেকেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। দুশ্চিন্তায় হেতাগড়া গ্রামের দুই পরিবার।
অন্যদিকে দুর্যোগের পর খোঁজ নেই বাঁকুড়ার দ্বারিকা গ্রামের বাসিন্দা শেখ সুমনের। বাবা,মা দুজনেই অল্পদিনের ব্যবধানে মারা যান। তারপর থেকে জেঠ্যুর কাছে মানুষ। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সুমন, মাত্র পাঁচ মাস আগে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছে, ৪ অক্টোবর শেষবার কথা হয়েছিল। তারপর থেকেই ফোন বন্ধ, কোনও খোঁজ খবর মেলেনি সুমনের।
শিল্প নেই ,কর্মসংস্থান নেই। বাড়ি-পরিবার, রাজ্যে ছেড়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়ে বিপদের মুখে। ফোনের ওপার থেকে সেই চেনা গলাটা একবার শোনার অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন বাঁকুড়ার ৩ পরিবার।
ফেঁপে ওঠা তিস্তার জলের তোড়ে ভেসে এল মর্টার শেল। ভেসে আসা ওই সেলের বিস্ফোরণেই মৃত্যু হল একজনের। আহত ছয় জন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সকলকেই জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার চাঁপাডাঙ্গায়। ঘটনার তদন্তে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জলের তোড়ে একাধিক জিনিস ভেসে এসেছে সমতলের দিকে। সেরকমই হড়পা বানে সেনা ছাউনির মর্টার শেল ভেসে আসে। জানা গিয়েছে, স্থানীয় এক যুবক মাছ ধরতে গিয়েছিলেন নদীতে। সেই সময় মর্টার শেলটি কুড়িয়ে পান তিনি। বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন। পরিষ্কার করে খেলা করার সময় আচমকাই বিস্ফোরণ হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তবিবর রহমান নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় মৃত্যু হয় একজনের। এই ঘটনায় আইনুর আলম, লাকু আলম, তসমিরা বেগম, রমজান আলি, লতিফা খাতুন, গোমের আলি এই ছয় জন গুরুতর জখম হয়েছেন।
প্রকৃতির ভয়ঙ্কর রূপ বোধহয় একেই বলে। সিকিমের যেদিকেই চোখ যাচ্ছে, সেদিকেই শুধু ধ্বংসের ছবি। একের পর এক মৃতদেহ ভেসে আসছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে উদ্ধার হচ্ছে চাপা পড়ে যাওয়া গাড়ি, বাড়ি। ফের নতুন করে ধস নামছে। ইতিমধ্যেই সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯। তার মধ্যে ৬ জনই সেনা জওয়ান। নিখোঁজ প্রায় ১০৩ জন। উদ্ধারকাজ জারি রয়েছে। এরই মধ্যে সিকিমের মানগান জেলায় সাঁকো চো হ্রদ ফেটে বিপর্যয় আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এলাকাবাসীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ৩ হাজারের বেশি পর্যটক সিকিমে আটকে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ২৫০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ৬০০০ জনকে ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সিকিমের মুখ্য সচিব বিজয়ভূষণ পাঠক জানিয়েছেন, লাচেন ও লাচুং-এ প্রায় ৩,০০০ মানুষ আটকে পড়েছেন। ৭০০ থেকে ৮০০ জন ড্রাইভার সেখানে আটকে পড়েছেন। আমরা সেনা ও এয়ার ফোর্সের হেলিকপ্টার দিয়ে সবাইকে সরিয়ে নেব। যারা লাচেন ও লাচুং-এ আটকে পড়েছেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ইন্টারনেটে ভয়েসের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
এদিকে, সাকো চে লেক যে কোনওসময় ফেটে যেতে পারে। প্রায় ১.৩ কিলোমিটার লম্বা এই হ্রদ। আশেপাশে বেশ কয়েকটি এলাকায় বসতি রয়েছে। ফলে লেক ফেটে যাওয়ার আশঙ্কায় সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছে সিকিম প্রশাসন।
মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান (Flash Floods), ধসে একেবারে তছনছ হয়ে গিয়েছে সিকিম (Sikkim)। বুধবার তিস্তায় হড়পা বানের ভেঙে-চুরে যায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ। আবার এসবের মধ্যেই ফের ধস নামল সিকিমে। জানা গিয়েছে, ২৯ মাইল এলাকার কাছে বড়সড় ধস নামে। ধসের ফলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক এখন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিস্তা ব্রিজ থেকে সিকিম যাওয়ার পথে বেশ কিছু জায়গায় ধস নামে। এর কারণে জাতীয় সড়ক নিচের দিকে বসে গিয়েছে। বুধবার দুপুর নাগাদ ২৮ মাইল এলাকায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের রাস্তায় ধস নামে। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাংকে ফোন করে সিকিমের পরিস্থিতি নিয়ে সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
সূত্রের খবর, বুধবারের মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়েছে। চুংথাম বাঁধ ভেঙে বিপুল পরিমাণ জল চলে আসে তিস্তা নদীতে। ওই জলের তোরেই ভেসে গিয়েছে একটি সেনা ছাউনি। এই ঘটনায়, ২৩ জন জওয়ান নিখোঁজ এখনও। পরে একজনের খোঁজ পাওয়া যায়। যদিও সিকিমের প্রশাসন সূত্রে খবর, ছোট ও বড় কংক্রিট ও লোহার মোট ১৪টি বাঁধ ভেঙেছে। অসমর্থিত সূত্রের খবর, এখন পর্যন্ত হড়পা বানে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের, নিখোঁজ প্রায় ১০০ জনের বেশি। এছাড়াও প্রায় ৩ হাজারের মতো পর্যটক সিকিমে আটকে রয়েছে। সিকিম সেনা সূত্রে খবর, বিপর্যস্ত জায়গাগুলিতে আটকে থাকা পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে সেনা ছাউনিতে রাখা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও সিকিমের পরিস্থিতি আগের মতই রয়েছে। বৃষ্টি এখনও কমেনি। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বৃষ্টি না থামলে তিস্তার ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। মৃত এবং নিখোঁজের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিকিমের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং-এর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নদী আপন বেগে পাগল পারা গানের মতোই তিস্তার এই মুহূর্তে রুদ্ররূপে ছিন্নবিছিন্ন উত্তর সিকিম। পাহাড়-সমতলের দু'কুল ছাপিয়ে তিস্তার প্লাবন। জানা গিয়েছে, বুধবার ভোররাতে হঠাত্ মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আছড়ে পড়ে উত্তর সিকিমের লাচেনের লোনক হ্রদে। সেই জল ধরে রাখতে না পারায় হ্রদ উপচে ভাঙে চুংথাম বাঁধ, আর সেই বাঁধভাঙা জল নেমে আসে তিস্তাতে। হরপা বানের জল নিয়েই এগোতে থাকে তিস্তা, আশপাশে পাহাড়ি সিকিম-সহ সমতলের সব কূল ছাপিয়ে ধ্বংসলীলা চালায়। বিচ্ছিন্ন চুংথাম, লাচেন উপত্যকা। ১৫-২০ মিটার উঁচু জল ধ্বংসলীলা চালায় সিংতামের বারদং সেনা ছাউনিতে। উত্তর সিকিমের তিস্তাপারের বহু বাড়ি, বহু ঘর কাদা জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছে। তিস্তার এই রূদ্ররূপে নিখোঁজ অন্তত ২৩ জন সেনা, তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ড ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। উদ্ধারকাজ এবং বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গ্রাউন্ড জিরো পরিদর্শনে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং।
প্রাক উত্সব মরশুমে তিস্তার রুদ্ররূপে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পর্যটকরা। এই মুহূর্তে উত্তর সিকিমের যা অবস্থা, ফেরার উপায় নেই। কারণ শিলিগুড়ি হয়ে সিকিম যাওয়ার ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ। প্রতিকূল হয়ে দাঁড়িয়ে ডুয়ার্স, গরুবাথান, কালিম্পং, লাভা হয়ে সিকিমে ঢোকার বিকল্প রাজ্য সড়ক। এই অবস্থায় কতদিন ঘরবন্দি, হোমস্টে বন্দি বা হোটেল বন্দি থাকবেন পর্যটকরা, জানেনা কেউ। ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত গ্যাংটক, নামচির মতো পর্যটনস্থল। ধংস্তস্তূপ সরলে কী দাঁড়াবে অবস্থা, তাও জানে না প্রশাসন। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ৮ অক্টোবর পর্যন্ত প্যাকিয়ং, নামচি, গ্যাংটক, মঙ্গনের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় এবং পর্যটকদের সুবিধার্থে চালু ০৩৫৯২-২০২৪৬১/২০১১৪৫ এমার্জেন্সি হেল্পলাইন নাম্বার। পর্যটকদের জন্য নোডাল অফিসার হেল্পলাইন নাম্বার ৭০০১৯১১৩৯৩। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত সাত জনকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। প্রাণহানির সঠিক খবর নিয়ে মুখ খোলেনি কেউই। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি তিনটি দেহ উদ্ধার হয়েছে।
এদিকে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সিকিমের পর্যটন। প্রাক উত্সবের মরশুমে রাজ্যের একটি অংশে যেভাবে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তিস্তা, সেই ক্ষত শুকোতে কমবেশি এক থেকে দেড় মাস। ফলে মাথায় হাত হোটেল ব্যবসায়ীদের। সিকিমের এই বিপর্যয় এবং সেনা নিখোঁজের ঘটনায় এক্স অ্যাকাউন্টে সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে জরুরি বৈঠকে অডিও বার্তা পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেহেতু রাজ্যের গা ঘেষা সিকিম, তাই উত্তর সিকিমের বিপর্যয়ের প্রভাব পড়ছে দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে, বার্তায় জানান মুখ্যমন্ত্রী। দুর্যোগ কমলে তিস্তা বাঁধ মেরমাতি করবে বলেও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অডিও বার্তায় তাঁর আবেদন, 'বাড়ি থেকেই সাতদিন ২৪ ঘণ্টা আমি নজরদারি করছি। চিন্তা করবেন না, ভয় করবেন না। প্রকৃতির সঙ্গে কারও লড়াইয়ের ক্ষমতা নেই। বিপর্যয় মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খুলছে নবান্ন।'
দোলা সেন (সাংসদ, রাজ্যসভা): মঙ্গলবার রাতেই অতি তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলাম দিল্লি থেকে। ১০০ দিনের কাজের ও রাজ্যের টাকার দাবি নিয়ে আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমাদের দিল্লি সফর ছিল এবং বারবার বাধার সম্মুখীন হয়েও কয়েক হাজার শ্রমজীবীদের নিয়ে আমরা দিল্লি গিয়েছিলাম। দুটি দিন ছিল আমাদের প্রতিবাদের। রাজঘাটে গান্ধী জয়ন্তীতে যেমন বাঁধা পেলাম তেমনই মঙ্গলবার মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের দফতরেও পেলাম বাঁধা। দেখাই করলেন না মন্ত্রী। উপমন্ত্রী আবার জানালেন যে মাত্র ৫ জনের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। বাধ্য হয়েই আমরা অবস্থান শুরু করি কিন্তু সময় যেতে না যেতেই আমাদের টেনে হিচঁড়ে পুলিসের গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক সরকারি কর্মকান্ডের শিকার হতে হলো। কাজেই আমরা ঠিক করেছি ৫ অক্টোবর রাজভবন অভিযান করবো লক্ষাধিক অবহেলিত শ্রমিক এবং কর্মীদের নিয়ে কিন্তু এরই মাঝে উত্তবঙ্গ থেকে বুধবার সকালে এলো আর এক ভয়ঙ্কর খবর।
উত্তর সিকিমের লনক হ্রদে মেঘভাঙা বৃষ্টির তোড়ে শান্ত তিস্তা নদী ভয়ঙ্করী হয়ে দুকূল ঝেঁপে ছুটেছে জলপাইগুড়ির দিকে অর্থাৎ ডুয়ার্স তরাইএর দিকে। শুনলাম নদীর দু'কূলে যত জায়গা আছে সবই ভেসে যাচ্ছে জলের স্রোতে। তিস্তা স্রোতে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিশাল অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। জানতে পারছি সিকিমের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ভারত। জল বাড়ছে ১৫ থেকে ২০ ফুট। জলপাইগুড়িতে জল এতটাই বেড়েছে যে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে বন্যার পরিস্থিতে দাঁড়িয়েছে। সব থেকে চিন্তার বিষয় কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে জলপাইগুড়ির গজলডোবার ব্যারেজ থেকে প্রায় ৭০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, যা কিনা এ বছরের সর্বোচ্চ কাজেই সমস্ত চাপ এসে পড়ছে জলপাইগুড়িতে। খবর পেলাম সিকিম অঞ্চলে সেনা ছাউনির ৪১টি গাড়ি ভেসে গিয়েছে এবং খোঁজ নেই ২১ জওয়ানের।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশংকার বার্তা দিয়ে অবিলম্বে সচিব মহলের সঙ্গে কথা বলে মন্ত্রী সহ অফিসারদের উত্তরবঙ্গের দিকে পাঠাচ্ছেন। জানি না উত্তরবঙ্গের মানুষগুলির কি অবস্থা। যারা সিকিমে বেড়াতে গেছেন, তাদেরও কি অবস্থা! দার্জিলিং-এর নিচু জমি থেকে মানুষদের উঠিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। এমত অবস্থায় আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা দায়িত্ব এড়িয়ে যাই না কোনও দিনও। (অনুলিখন-প্রসূন গুপ্ত)
মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানে বিপর্যস্ত উত্তর সিকিম (Sikkim)। বুধবার সকালের মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদ ফুলে ফেঁপে উঠেছে ও সেই জল নেমে আসে তিস্তায়। ইতিমধ্যেই জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ২৩ জন জওয়ান। এবারে তিস্তার প্রবল জলোচ্ছাসের ফলে ভেঙে ডুবে গেল ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ। ফলে সড়কপথে গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সিকিম।
Prayers for the safety of 23 missing army jawans, during a flash flood in Sikkim. pic.twitter.com/IxQYMLApX4
— Go Northeast (@GoNorthEastIN) October 4, 2023
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই উত্তর সিকিমে অনবরত বৃষ্টি হয়েই চলেছে। এরপর বুধবার হঠাৎ মেঘভাঙা বৃষ্টি নামে উত্তর সিকিমে। এর ফলে সেখানকার লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়ে ও তিস্তায় জল আসতে শুরু করলে হঠাৎ হড়পা বান দেখা যায়। তিস্তার এমন রুদ্র রূপ ধারণ করার পরই ভেসে গিয়েছে নদীর দু'পাশের সমস্ত কিছু। মেঘভাঙা বৃষ্টির জল ধরে রাখতে পারেনি লোনক হ্রদ। ফলে বাঁধ ভেঙে তিস্তায় জল প্রবল গতিতে নেমে আসে ও ধ্বংসলীলা চালায় তিস্তা। তিস্তার জল নিমেষের মধ্যে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সিকিমের সঙ্গে অবশিষ্ট ভারতের মূল সংযোগরক্ষাকারী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ ভেঙে যাওয়ায় সড়কপথে দেশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সিকিম। তিস্তার জলস্তর আরও বৃদ্ধি পেলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণভাবে জলের তলায় চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ভারতের সঙ্গেও সিকিমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
ভয়ঙ্কর বিপর্যের মুখে উত্তর সিকিম (Sikkim)। মেঘভাঙা (Cloud Burst) বৃষ্টি শুরু হয়েছে সিকিমে। বুধবার ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদ ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে ও এর পরই সেই জল নেমে আসে তিস্তায়। আচমকাই হড়পা বান আসায় তিস্তার জলস্তর বেড়ে যায়। আর তাতেই ভেসে নিখোঁজ হয়ে যান সেনার ২৩ জওয়ান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে ওই ২৩ জন সেনা কর্মীর কোনও খোঁজ মিলছে না। ফলে ২৩ সেনা কর্মীর খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। সেই সঙ্গে সিকিম জুড়ে গোটা এলাকায় বহু বাড়ি জলের নীচে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, গতরাত থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে সিকিমে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে গতরাতেই ৬টি সেতু ধুয়ে যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, সিংথামে তিস্তার উপর একটি ফুটব্রিজ ছিল। নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ার জেরে সেই সেতুটি ভেঙে পড়েছে। আর আজ তিস্তা নদীর জলে তলিয়ে গেল সেনাবাহিনীর ৪১টি গাড়ি। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়েছে। চুংথাম বাঁধ ভেঙে বিপুল পরিমাণ জল চলে আসে তিস্তা নদীতে। এর ফলে মুহূর্তে তিস্তার জলস্তর প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়ে যায়। আর তিস্তার এই প্রবল জলোচ্ছাসেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেনা ছাউনি। তিস্তা নদীর জলের তোড়ে ভেসে যান ২৩ জন জওয়ান।
ইতিমধ্যেই নিখোঁজ জওয়ানদের খোঁজে শুরু হল উদ্ধারকাজ। বৃষ্টি কমলে আরও জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালানো হবে বলেই জানানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। তিস্তা, নামচিতে জারি করা হল লাল সতর্কতা। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এখই কাটছে না দুর্যোগ।
একবছরের মাতৃত্বকালীন ছুটি (Maternity Leave) পাবেন সরকারি মহিলা কর্মীরা, এমনটাই জানালেন সিকিমের (Sikkim) মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং। বুধবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তবে শুধুমাত্র মহিলারাই নন, তাঁদের পাশাপাশি ছুটি পাবেন পুরুষ কর্মীরাও। কিন্তু পিতৃত্বকালীন ছুটির সময় থাকছে মাত্র এক মাস।
বুধবার সিকিম স্টেট সিভিল সার্ভিস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসএসসিএসওএ) বার্ষিক সাধারণ সভায় ভাষণ দিয়ে গিতে মুখ্য়মন্ত্রী প্রেম সিং এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন। সরকারি মহিলা কর্মীদের সুবিধা দেওয়ার জন্যই পরিষেবার নিয়মগুলিতে পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, সন্তান ও পরিবারের ভালোমত যত্ন ও পরিচর্যা করার জন্য়ই এমন ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিকিম সরকার।
প্রসঙ্গত, সিকিমের পুরনো আইন ম্যাটারনিটি বেনিফিট অ্যাক্ট ১৯৬১-এর অধীনে সিকিমে সরকারি মহিলা কর্মীরা ২৬ সপ্তাহের বেতন সহ ৬ মাসের ছুটি পেতেন। এবারে সেই ছুটির মেয়াদই বাড়ানো হল। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'অফিসাররা রাজ্য প্রশাসনের মেরুদণ্ড, তাঁরা সিকিম এবং এর জনগণের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন।' ফলে তাঁদের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত।
ভারী বৃষ্টিতে অসম (Assam) এবং সিকিমের (Sikkim) পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। ক্রমাগত বৃষ্টিতে লাগাতার ভূমিধসে ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে ১০০টি বাড়ি। একেই বন্যা পরিস্থিতি, তার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে ধস। বন্যা পরিস্থিতি কলেজ খোলা উপত্যকা বন্যায় ডুবে গিয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিম্ফক। সেখানে একটি ব্রীজ একেবারে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। প্রায় ৩০০ জন ট্যুরিস্ট আটকে পড়েছিলেন এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে। ভারতীয় সেনা তাঁদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছে।
ভয়ঙ্কর ভূমিধসে পশ্চিম সিকিমের প্রায় ১০০টি বাড়ি এবং ব্রিজ ভেসে গিয়েছে। গ্যালসিং জেলার ডেন্টাম সহ শাখাও এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সরকারি তরফে। চাষের জমি, এবং সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া এবং ট্রেন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলির বিকল্প রাস্তা চালু করা হয়েছে।
রবিবারেও অসমের বন্যা পরিস্থিতি আগের থেকে ভালো হয়নি। ১২টি জেলার প্রায় ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৬টি ত্রাণ সেন্টার খোলা হয়েছে। ব্রক্ষ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীগুলির জলস্তর বিপদসীমা পার করেছে। লাগাতার বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।