কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayet Election) করানোর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। সূত্রের খবর, কংগ্রেস ও বিজেপির করা একটি মামলায় গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশ ছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে কেন্দ্রের কাছে বাহিনী চেয়ে পাঠাতে হবে। এবং শীঘ্রই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে স্পর্শকাতর এলাকা গুলিতে। ফলত স্পষ্ট হয়েছিল কেবলমাত্র স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে নয়, গোটা রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হবে।
এবার হাইকোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানিয়েছিল, আদালতের নির্দেশ মেনে নেব কিন্তু আজ অর্থাৎ শুক্রবার পাল্টি খেলেন রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। সূত্রের খবর, শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ করে কমিশনের এই মামলার শুনানি আগামী শনিবার হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) মনোনয়ন (Nomination) জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ভাঙড় (Bhangar)। ইতিমধ্যেই ৩ জন মারা গিয়েছেন। শুক্রবার সকাল থেকে রীতিমতো থমথমে ছিল ভাঙড়। পরিস্থিতি দেখতে ছুটে গিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার সকালে তাজা বোমা ভর্তি ৭টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বোমাবাজির সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীরাই বোমা এনে একটি ভাঙা বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিল। শুক্রবার সকালে বোমার ব্যাগগুলি নজরে পড়ে স্থানীয়দের। ঘটনাস্থলে আসে সিআইডির বম্ব স্কোয়াড। উদ্ধার করা হয় ব্যাগগুলি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিনে অশান্ত হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, ক্যানিং-সহ একাধিক এলাকা। বোমাবাজি, ইটবৃষ্টি, পুলিশের উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এবার উদ্ধার বোমা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayet Election) মনোনয়ন (Nomination) পর্বের শেষদিন পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) তরফে এই খবর জানানো হয়েছে। তাদের দাবি, রাজ্য পুলিস মৃত্যুর বিষয়ে কোনও রিপোর্ট জমা করেনি।
মনোনয়ন পর্বের প্রথম দিন থেকেই অশান্তির খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে সোমবার থেকে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয় ভাঙড়ে। তৃণমূল ও আইএসএফের সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ চেহারা নেয় ভাঙড়ের বিডিও অফিস এলাকা। তারপর বৃহস্পতিবার ফের সংঘর্ষ বাঁধে। গুলি ও বোমাবাজির খবর পাওয়া যায়। মৃত্যু হয় দু'জনের। অন্যদিকে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় গুলি চালানোর ঘটনায় মৃত্যু হয় ২ জোট কর্মীর।
মনোনয়নের শেষ দিনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই ঘটনায় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাদের তথ্য কমিশনের রিপোর্টে কেন উল্লেখ নেই। যদিও কমিশন সূত্রে খবর, পুলিশ যে রিপোর্ট কমিশনকে পাঠায় সেই তথ্য সবসময় আপডেট থাকে না। তাই ভাঙড়ের ঘটনার আগে ওই রিপোর্ট এসেছে কিনা জানা যায়নি। তবে কমিশন জানিয়েছে মনোনয়ন পর্বে আহতের সংখ্যা ৯০। এবং গোটা রাজ্যে ১ হাজার ৮০০ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছ।
মণি ভট্টাচার্য: গোটা রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েতের (Panchayet Election) মনোনয়ন (Nomination) পর্ব শেষ হলেও প্রার্থী নিয়ে জটিলতা রয়ে গিয়েছে। একদিকে যখন ভাঙড় সহ রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় মনোনয়ন পর্বেই গুলি, বোমাবাজি, হিংসার অভিযোগ উঠেছে, অন্যদিকে তখন তৃণমূলের জোড়াফুল চিনহ নিয়ে একই জায়গায় দুইজন ব্যক্তির মনোনয়ন জমা দেওয়ার অভিযোগ দত্তপুকুরে (Duttapukur)। সূত্রের খবর, দত্তপুকুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ২২৫ নম্বর সংসদে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছে দুই প্রার্থী। একজনের নাম সুজিত দাস, অন্যজন গতবারের জয়ী প্রার্থী মাধবী রায়।
প্রশ্ন উঠছে, ওই সংসদে তৃণমূলের দুই প্রার্থী মনোনয়ন দিলে দল কাকে নির্বাচিত করেছে? সূত্রের খবর, প্রথমিক ভাবে দল গতবারের জয়ী প্রার্থী মাধবী রায়কেই মনোনীত করেছে ওই সংসদের জন্য। এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা করা প্রার্থী মাধবী রায়। সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় তৃণমূলের হয়ে ২২৫ নম্বর সংসদের জন্য মনোনয়ন জমা করেছে সুজিত দাস। কিন্তু তা সম্ভব কিভাবে? এ বিষয়ে আমডাঙ্গা বিধানসভার বিধায়ক রফিকুর রহমান সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'প্রার্থী হবেন সুজিত দাস, জানিনা কেন মাধবী রায় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন! তবে মাধবী দেবীকে অনুরোধ করব মনোনয়ন তুলে নেওয়ার জন্য।' ওদিকে দত্তপুকুর এলাকার অন্যতম তৃণমূল নেতৃত্ব ও দত্তপুকুর ১ পঞ্চায়েতের কর্মাধক্ষ অরিন্দম মুখার্জি বলেন, 'উচ্চ নেতৃত্বই বলতে পারবে কাকে দল টিকিট দেবে, এই দুইজনের কে টিকিট পাবে সেটা বিধায়কই ঠিক করে দেবেন।'
তবে প্রশ্ন উঠছে, একই সংসদে, তৃণমূলের দুজন প্রার্থী কেন? এই বিষয়ে অবশ্য তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব কোনও ব্যাখ্যা করতে পারেন নি, ওদিকে এই প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বও।
মনোনয়নের (Nomination) শেষ দিনেও উত্তপ্ত গোটা রাজ্য (Panchayet Election)। গোটা বৃহস্পতিবার উত্তপ্ত ছিল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, সেসঙ্গে ভাঙড়-ও। নমিনেশন অর্থাৎ মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকে শেষ অবধি ভাঙ্গরের অশান্তি মিটলো না। ক্রমেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হল। ভাঙ্গড়ের তৃণমূল ও আইএসএফের সংঘর্ষে পূর্বে আহত হয়েছিল আইএসএফ ও তৃণমূল কর্মীরা। বৃহস্পতিবার তৃণমূল এবং ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর মধ্যে বোমা এবং গুলির লড়াইয়ে আবার অশান্ত হয়ে উঠল ভাঙড়। তার জেরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক আইএসএফ কর্মীর। সংঘর্ষের জেরে জখম হয়েছেন দুই তৃণমূল কর্মীও। এমনটাই দাবি যুযুধান দুই পক্ষের। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী। ভাঙড়ে অশান্তি নিয়ে আইএসএফকেই দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে বুধবার যে অশান্তির ছবি দেখা গিয়েছিল ভাঙড়ে তা ফিরে এল বৃহস্পতিবারেও। আবার রণক্ষেত্র হয়ে উঠল ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজার। সেখানকার কাঁঠালিয়া মোড়ে তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। মুড়িমুড়কির মতো বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে গুলি চালানোরও। তার জেরে মৃত্যু হয়েছে মহম্মদ মহিদ্দিন মোল্লা নামে এক আইএসএফ কর্মীর। এমনটাই দাবি আইএসএফ নেতৃত্বের। ওই সংঘর্ষের পর বিজয়গঞ্জ বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। চলছে পুলিশি টহলদারিও। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে প্রথম থেকেই থমথমে পরিস্থিতি ছিল ভাঙড়ে। ভাঙড়ের দু’টি বিডিও অফিস চত্বরেই জড়ো হন তৃণমূল এবং আইএসএফ-এর কর্মীরা। এর পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
নিয়ম মতো সকাল ১১টা থেকে শুরু হয় মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া। প্রস্তুত ছিল প্রশাসনও। ভাঙড়-১ এবং ভাঙড়-২ এই দুই বিডিও অফিসের বাইরে এক কিলোমিটার পর্যন্ত মুড়ে ফেলা হয় নিরাপত্তার চাদরে। তবে গত দু’দিন ধরে তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে বৃহস্পতিবারও থমথমে এলাকার পরিস্থিতি। আবার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এই আবহে দুই পক্ষের কর্মীদেরই দেখা গিয়েছে বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হয়ে থাকতে। তাঁদের হাতে দেখা গিয়েছে লাঠিসোঁটাও। আর তা নিয়েই চড়তে শুরু করে উত্তেজনার পারদ। ভাঙড়-১ বিডিওতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের বাধা দিয়েছে তৃণমূল। যদিও সিপিএমের তোলা সমস্ত অভিযোগ ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়েছে শাসকদল। আবার ভাঙড়-২ ব্লকে সিপিএম অভিযোগ করেছে, মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার পথে তাঁদের প্রার্থী গিয়াসুদ্দিন মোল্লার কাগজপত্র ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। বামেদের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শাসকদল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayet Election) মনোনয়ন (Nomination) জমা দেওয়ার পর্ব। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমার শেষ দিন খবর এখনও অবধি তাই। তবে মনোনয়ন জমার দিনক্ষণ কি বাড়ানো হবে তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা চলছে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, 'এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।'
উল্লেখ্য, মনোনয়ন জমার জন্য কমিশনের দেওয়া সময়সীমা বাড়ানোর জন্য হাইকোর্টে মামলা করেছে বিজেপি এবং কংগ্রেস। সোমবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানে কমিশন জানিয়েছিল, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা ১ দিন বাড়ানো যেতে পারে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election) নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনই। জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (High Court)। সেক্ষেত্রে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়বে নাকি একই থাকবে, তা নির্ভর করছে কমিশনের উপরই। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের উপর হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাইকোর্ট। তবে অবিলম্বে ৭ জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ানো-সহ আরও কয়েকটি আর্জি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধীরা। সেই মামলারই শুনানি ছিল এদিন। আদালত জানিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনই সব সিদ্ধান্ত নেবে। তবে, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে ৭ জেলায়। বিশেষ করে স্পর্শকাতর এলাকা ও যেসব জায়গায় পুলিশ কম, সেসব এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে শান্তিপূর্ণ ভোট পরিচালনা করতে হবে কমিশনকে।
আদালতের তরফে আরও নির্দেশ, সমস্ত বুথে সিসিটিভি লাগাতে হবে। সিসিটিভি লাগানো না গেলে, ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। রাজ্যের সার্কুলারের বাইরে কোনও কাজে সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের নিয়োগ করা যাবে না। তিন স্তরের গনণা একসঙ্গে হবে করতে হবে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়সীমা বাড়ানো হোক, দাবি করেছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু বিরোধীদের সেই দাবি ধোপে টিকল না। আগে হাইকোর্ট জানিয়েছিল, রাজ্যের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রায় ৭৫ হাজার মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য যে ৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে, তা যথেষ্ঠ নয়। এই সময়সীমা আরও বাড়ানো উচিত বলে মনে করেছিল হাইকোর্ট। তবে, এদিনের শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই বহাল রাখা হল।
মঙ্গলবারের সকালে পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayet Election 2023) জন্য বিডিও অফিসে মনোনয়ন (Nomination) জমা দিতে যাচ্ছিলেন ভাঙড়ের আইএসএফ (ISF) কর্মীরা। অফিসের সামনে পৌঁছতেই তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে বেঁধে যায় সংঘর্ষ। অভিযোগ, এরই মাঝে হঠাৎই চলে গুলি। সেই সঙ্গে একের পর এক বোমার শব্দ। মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ঝড়ল রক্ত। রাস্তায় বসে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন গুলিবিদ্ধ এক আইএসএফ কর্মী। হাতে-পায়ে ঝড়ছে রক্ত। সেই অবস্থাতেই তিনি বারবার বলে গেলেন, 'তৃণমূল করেছে। আমি আইএসএফ প্রার্থী।'
আইএসএফ প্রার্থীদের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন তাঁদের কর্মীদের বেধড়ক মারধর করেছে। তাঁদের বহু কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে কাশীরানি মোল্লা নামে এক কর্মী বলছেন, 'কী হারে ওরা মানুষগুলোকে মারছে। আমাদের বাধা দেবে বলে ওরা অত্যাচার করছে। কত যে মানুষ আহত হয়েছে, তার ঠিকানা নেই।' আরেক আইএসএফ কর্মী নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার কথা বলেছেন। তাঁদের দাবি, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তাঁদের সুরক্ষা দিতে হবে। এই আবেদনই তাঁরা জানাবেন নির্বাচন কমিশনারকে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে মনোনয়নপত্র জমা দিতে ভাঙড়ের বিডিও অফিসে যাচ্ছিলেন আইএসফ কর্মীরা। অভিযোগ, সেসময় তাদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। পালটা অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। তারা জানিয়েছে, আইএসএফ কর্মীরা তাঁদের উপর হামলা চালিয়েছে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষের জেরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ভাঙড় মেলার মাঠ।
কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election) করানোর প্রস্তাব দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata Highcourt)। সোমবার নির্বাচন সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম মন্তব্য করেন, স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যেতে পারে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন পরিচালনার দাবি করে আসছে বিজেপি সহ প্রত্যেকটি বিরোধী রাজনৈতিক দল। তাদের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশ দিয়ে নির্বাচন করলে তা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করা সম্ভব নয়। তাই অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করা হয়েছে। সোমবার মামলার শুনানিতে সেই প্রস্তাবই রাখলেন প্রধান বিচারপতি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা সহ মোট পাঁচ দফা আবেদন নিয়ে মামলা করেছে হাইকোর্টে। শুক্রবার দায়ের করা ওই মামলার শুনানি হয় সোমবার। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি ভোটের দিন পিছোনোরও প্রস্তাব দিয়েছে আদালত। এবিষয়ে আদালত জানিয়েছে, ১৪ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে পারে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayet Election) মনোনয়ন (Nomination) জমা ঘিরে অশান্ত রাজ্যের একাধিক জেলা। এই আবহেই রাজ্যে আসছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (National Human Rights) ডিজি। মনোনয়ন পর্বে গোলমালের ঘটনায় এবার স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের। নির্বাচনে বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করবেন কমিশনের ডিজি (তদন্ত)।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে মানবাধিকার কমিশন। নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়া চলাকালীন রাজ্য়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুনিশ্চিত করতে মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নোটিসও দিয়েছে কমিশন। সোমবার থেকে ফের শুরু হতে চলেছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ।
আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে এক দফায় পঞ্চায়েত ভোট। শুক্রবার মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, একাধিক জেলায় অশান্তির খবর এসেছে।
বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayet Election) দামামা বেজে গিয়েছে। শুক্রবার থেকেই মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু করেছেন প্রার্থীরা (Candidate)। তা নিয়ে অশান্তি জেলায় জেলায়। সোমবার থেকে অশান্তি রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commision)। মনোনয়ন জমা দেওয়ার কেন্দ্রের এক কিলোমিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করতে চলেছে কমিশন। সূত্রের খবর, সোমবার থেকেই এই নির্দেশিকা চালু করছে কমিশন। রবিবার রাতেই জেলাশাসকদের এই নির্দেশেকা পাঠানো হবে বলে কমিশন সূত্রে খবর। একসঙ্গে ২ জনের বেশি মনোনয়ন কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, আগামী ৮ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। ১৫ জুলাই পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। আচমকা নির্বাচন ঘোষণা ও মনোনয়ন জমা নিয়ে আপত্তি তোলে বিরোধীরা। নির্বাচন ঘোষণার আগে সর্বদলীয় বৈঠকও ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছে বিজেপি ও কংগ্রেসও।
নির্বাচন ঘোষণার পরই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার খবর আসে। মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে কংগ্রেস কর্মী খুনের ঘটনাও সামনে এসেছেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayet Election) প্রাক্কালে দার্জিলিং (Darjeeling) পাহাড়ে বিজেপির উদ্যোগে গড়ে উঠল তৃণমূল বিরোধী মহাজোট (Alliance)। হাতে হাতে মিলিয়ে লড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন একদা যুযুধান রাজনৈতিক নেতারা৷ মহাজোটে রয়েছে বিজেপি, বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি, জিএনএলএফ, সিপিআরএম এবং অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগ।
এই মহাজোটের নাম দেওয়া হল ইউনাইটেড (সংযুক্ত) গোর্খা মঞ্চ'। রবিবার দার্জিলিঙের জিমখানা ক্লাবে বৈঠকের পর জোটের কথা ঘোষণা করেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত৷ তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই মহাজোট গড়ে তোলা হয়েছে। দীর্ঘ ২ দশক পর পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে। মহাজোটের সবকটি দলই বিজেপির পদ্ম প্রতীকে লড়বে।
এই জোটকে কটাক্ষ করেছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। তাদের দাবি, জিএনএলএফ পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ভেঙে ফেলেছিল। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ক্ষমতায় থাকার সময় এই নির্বাচন করাতে চায়নি। এখন তারাই পঞ্চায়েত নির্বাচনপ জোট করছে। দার্জিলিংয়ের তৃণমূলের সভানেত্রী শান্তা ছেত্রীও এই জোটকে গুরুত্ব দিতে চাননি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayet Election) আগে শাসক দলে ভাঙন অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) জেলায়। ময়ূরেশ্বর বিধানসভার ঝিকোড্ডা গ্রামে প্রায় ৬০০ তৃণমূল (TMC) কংগ্রেস কর্মী কংগ্রেসে যোগ দেন। অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর বিধানসভাতেও একই ছবি দেখা গেল। সেখানে তৃণমূল যুব সভাপতি সহ শাসক দলের প্রচুর কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলবদলের ঘটনায় বেশ কিছুটা অস্বস্তিতে দুই জেলারই তৃণমূল নেতৃত্ব।
রবিবার বিকালে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন মল্লারপুর কোর্ট গ্রামের তৃণমূল বুথ সভাপতি সানোয়ার মোল্লা। তাঁর সঙ্গে কয়েকশো তৃণমূল কর্মীও কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সহকারী সভাপতি সৈয়দ কাসাফদ্দোজ্জা শেখ।
এদিকে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সানোয়ার মোল্লা। এই ঘটনার পর গ্রামের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়টিও দখল করে নেয় কংগ্রেস।
মণি ভট্টাচার্য: একেই গ্রীষ্মে (Summer) রক্তের আকাল থাকে গোটা রাজ্য জুড়ে। এবার শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayet Election)। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হবার পরই গোটা রাজ্য জুড়ে পুলিস ও রাজনৈতিক নেতাদের রক্তদান শিবিরের (Blood Donation) সময় পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে, এবং তাও ভোটের পরে। যার ফলে গোটা রাজ্যের বহু মেডিকেল কলেজ সহ হাসপাতাল গুলিতে রক্তের আকাল দেখা গিয়েছে। সূত্রের খবর, গোটা রাজ্যের বহু হাসপাতাল, বিশেষত জেলার ও শহরতলীর মেডিকেল কলেজ-হাসপাতালগুলি রক্তশূন্যতায় ভুগছে। যার ফলে থ্যালাসেমেলিয়া, ডায়ালিসিস রোগীরা বিপদে পড়তে পারেন বলে সূত্রের খবর।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের খবর অনুযায়ী, গোটা রাজ্যের জেলাভিত্তিক মেডিকেল কলেজ গুলি প্রায় রক্ত শূন্য। এছাড়া দু'একটি মেডিকেল কলেজে বর্তমানে কোনও রক্তই নেই, এমনকি জরুরি পরিষেবা সামাল দেওয়ার মত রক্ত বহু হাসপাতালে নেই। হাসপাতাল সূত্রেই খবর, মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক একেবারে রক্তশূন্য। ওই হাসপাতালের এক আধিকারিক জানান পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়ায় পুলিস ও রাজনৈতিক রক্তদান শিবির গুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে, যার ফলে হাসপাতাল রক্তশূন্য। জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ডোনার নিয়ে এসে রক্তের ব্যবস্থা করছে পরিবারের লোক। পাশাপাশি একপ্রকার রক্তের অভাবে ভুগছে বারাসত মেডিকেল কলেজ। ওই হাসপাতাল কতৃপক্ষ সূত্রে খবর, আজ অর্থাৎ রবিবার একটি ক্যাম্প আছে সেখান থেকে রক্ত এলে হাসপাতালে দুই-একদিন রক্তের চাহিদা সামাল দেওয়া যাবে। ওদিকে রক্তের আকাল পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার হাসপাতালগুলিতেও।
এমনিই গ্রীষ্মে রক্তের চাহিদা থাকলেও রক্তের আকাল থাকত হাসপাতাল গুলিতে। তখন গোটা রাজ্যের হাসপাতাল গুলিতে বিভিন্ন রক্তদান শিবিরের মাধ্যমেই রক্তের যোগান দেওয়া হত। কিন্তু রাজ্যে হঠাৎ পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হওয়ায়, নিয়ম অনুযায়ী জেলাগুলিতে লাগু হয়েছে নির্বাচন বিধি। ফলে যেমন রাজনৈতিক নেতাদের রক্তদান শিবিরের সময় পরিবর্তন হয়েছে, তেমনিই বদল হয়েছে রাজ্য পুলিসের রক্তদান শিবিরের সময়সূচি। ফলে কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ও মেডিকেল কলেজ গুলিতে রক্তের যোগান প্রায় শুন্য বললেই চলে। ফলে বিপদে পড়তে পারেন রোগী ও রোগীর পরিবার এমনটাই মনে করছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
পাশাপাশি রক্তশূন্যতার খবর পেয়ে থ্যালাসেমিয়া ও ডায়ালিসিস রোগীদের জন্য এগিয়ে আসছেন কিছু এনজিও সংস্থা, সেরকমই মুর্শিদাবাদের একটি এনজিও সংস্থা 'হেল্প ফর ব্রিথ' রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছে। এ সংস্থার পক্ষে চয়ন মজুমদার বলেন, 'মেডিকেল কলেজের রক্তশূন্যতার খবর পেয়ে এই রক্তদান শিবির আয়োজন করেছি, যাতে আংশিক ভাবে মুমুর্ষ রোগী ও থ্যালাসেমিয়া রোগিরা রক্তের সমস্যায় না পড়ে।'
পঞ্চায়েত (Panchayet) নির্বাচনে (Election) কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) মোতায়েন না করা হলে ভোটের কাজে যাবেন না শিক্ষক ও সরকারি কর্মীরা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে এই দাবি জানালেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা।
এবিষয়ে মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ অতীতের ভোট সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, ভোটকর্মী এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এবং তারজন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা জরুরি।
বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এরপরেই শুক্রবার পাঁচ দফা আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে বিজেপি এবং কংগ্রেস। মূলত মনোনয়নের দিন বাড়ানো এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে তারা।