বিবাহিত হয়েও পরকীয়া জানাজানি হওয়ায় প্রেমিকার হাতে জুতোপেটা খেলেন এক যুবক। রীতিমতো সালিশি সভা বসিয়ে আসানসোল পুরনিগমের কুলটির রানীতলায় এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। যার সত্যতা যাচাই করেনি ক্যালকাটা নিউজ বা সিএন ডিজিটাল। তবে অভিযোগ, প্রাক্তন নির্দল কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে ডাকা হয়েছিল এই সালিশি সভা। এই ঘটনার সময় নাকি তিনিও উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে অভিযুক্ত যুবককে তাঁর প্রেমিকার হাতে জুতোপেটা খাওয়ানোর পাশাপাশি থুথুও চাটানো হয়েছে। আর এই গোটা ঘটনাই ধরা পড়েছে ভাইরাল ভিডিওয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌছয় সালিশি সভায় উপস্থিত ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে শান্ত করা হয় ওই তরুণীকে। ভাইরাল এই ভিডিও ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি নেতা অমিত গড়াই।
দেখুন সেই ভাইরাল ভিডিও, যার সত্যতা যাচাই করেনি ক্যালকাটা নিউজ বা ক্যালকাটা নিউজ ডিজিটাল
পেশায় ডাক্তার (doctor), কন্ট্রাক্টর, কেউ বা মৃত (dead)। তবুও রয়েছে তাঁদের জব কার্ড (job card)। ১১৯ জনের অ্যাকাউন্টে ভূতুড়েভাবে ঢুকে যাচ্ছে টাকা (money)। টাকা তছরুপের অভিযোগ, অভিযোগ পঞ্চায়েত সদস্যেরই বিরুদ্ধে। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরে মহিষাদলের নাটশাল ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের। টাকা তছরুপের অভিযোগ পঞ্চায়েত সদস্য এবং প্রধানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজের জব কার্ড রয়েছে মৃত মানুষের নামে। তাতে টাকাও ঢুকছে। আবার স্থানীয় ডাক্তার, কন্ট্রাক্টর, যাদের রয়েছে প্রাসাদসম বাড়ি, তাঁরাও জব কার্ডের অন্তর্ভুক্ত, টাকাও পাচ্ছেন তাঁরা। এ বিষয়ে কন্ট্রাক্টরের বাড়ির লোককে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা বলেন, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তাঁরা। তবে ডাক্তারবাবুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, তিনি কাজ করেন, ১০০ দিনের। এ পর্যন্ত ৬-৭ দিনের কাজ তিনি করেছেন।
অপরদিকে আরও অভিযোগ, আবাস যোজনার বাড়ি নিয়েও। যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে তাঁরা পাচ্ছেন আবাস যোজনার বাড়ি। যাদের নেই তাঁরা বিজেপি সমর্থিত, তাই তাঁরা পাচ্ছেন না। জানা যায়, আবাস যোজনার ২০ হাজার টাকার আসলে পঞ্চায়েত সদস্যকে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। একইভাবে ১০ টি শ্রম দিবস করলে ২০ টি লেখা হয়, যে টাকা সুপারভাইজার এবং পঞ্চায়েত সদস্য আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুপারভাইজার এবং পঞ্চায়েত সদস্য। সুপারভাইজার বলেছেন, এরকম কিছুই তিনি করেননি। অন্যদিকে পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছেন, এভাবে তাঁদের কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে।
দোকান পাবার জন্য পাঁচ হাজার টাকার লটারি (lottery)! যা আবার অফেরৎযোগ্যও। যা নিয়ে বিতর্ক বানারহাটের (Bannerhat) গয়েরকাটায়। এবার দেখা যাক, আসল ঘটনা কী?
লটারির আয়োজন করেছে সাঁকোয়াঝোরা (Sankwajhora) ১ গ্রাম পঞ্চায়েত। টিকিটমূল্য পাঁচ হাজার টাকা। ১১ জন ভাগ্যবান পেতে পারেন এই দোকান (shop)। তবে এক্ষেত্রে রয়েছে বেশ কিছু শর্ত (condition)। যাঁরা লটারিতে দোকান পাবেন, তাঁদের ফের অফেরৎযোগ্য ১ লক্ষ টাকা জমা করতে হবে। পাশাপাশি দিতে হবে দোকানঘর ভাড়া বাবদ মাসে ২ হাজার টাকা। বৈদ্যুতিক বিল দিতে হবে নিজের পকেট থেকে। এরকমই লাভজনক লটারি বিক্রির নোটিশ জারি করা হয়েছে পঞ্চায়েতের তরফে। যা ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই গয়েরকাটায় তুমুল বিতর্ক ও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমন অদ্ভুত প্রক্রিয়ায় দোকানঘর বন্টন নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের নোটিশের বিরোধিতা বিরোধীদের, সঙ্গে প্রত্যাহারেরও দাবি।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নোয়ন দফতরের অন্তর্গত আইএসজিপি প্রকল্পের অর্থানুকুল্যে বানারহাট ব্লকের সাঁকোয়াঝোরা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গয়েরকাটা ফুটবল ময়দানে নির্মাণ করা হয় একটি গ্যালারির। যার ওপরে রয়েছে বসে খেলা উপভোগ করার জায়গা ও পিছন দিকে নিচে একইসঙ্গে নির্মাণ করা হয় ১১ টি দোকানঘর। গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব উদ্যোগে তৈরি এই প্রকল্প জেলায় সর্বপ্রথম হওয়ায়, প্রশংসাও কুড়িয়েছে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজ্যস্তরের।
তবে এখানে দোকানঘর বন্টনের বিষয়টির বিরোধিতা করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিরোধীদের দাবি, লটারিতে যাঁরা দোকানঘর পাবেন না, অন্তত তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি যাঁরা দোকানঘর পাবেন, তাঁদের কাছ থেকে কম টাকা নেওয়া হোক।
যদিও গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের তরফে সাফাই দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, টাকা দোকানঘর আবেদনপত্রের জন্য নেওয়া হচ্ছে। তা দিয়ে এলাকার জন্যই উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে।
অন্যদিকে বিজেপির ধূপগুড়ি উত্তর পূর্ব মণ্ডলের সভাপতি কৌশিক নন্দী বলেন, "আমরা প্রথমে শুনেছিলাম যে গরীব মানুষদের সহযোগিতার মাধ্যমে এলাকার জীর্ণ অর্থনীতির হাল ফেরাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমনিতেই করোনার কারণে প্রত্যেকেই অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগছেন। তারমধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত যদি দোকান বন্টনের জন্য ৫ হাজার টাকা করে প্রত্যেকের কাছ থেকে সংগ্রহ করে, তাহলে তা অনৈতিক কাজ হবে। আমরা দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি বিধায়ক, সাংসদ ও অন্যান্য মহলে জানাবো। কর্তৃপক্ষের উচিৎ এই নোটিশ প্রত্যাহার করে মানুষের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া।"
গ্রাম পঞ্চায়েতে (Panchayet) সংখ্যাগরিষ্ঠ (Majority) হয়ে বোর্ড গঠন করল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। অথচ প্রধান হলেন বিজেপির (BJP)। উপপ্রধান ঘাসফুলের! সংরক্ষণের (Reservation) গেড়োয় এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে উত্তরবঙ্গে।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ইতিহাসে এমনই রোমাঞ্চকর ঘটনার সাক্ষী থাকল খড়িবাড়ির বিন্নাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত। ১৩ আসন বিশিষ্ট বিন্নাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ৯টি এবং বিজেপি ৪টি আসন পায়। তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও প্রধান পদটি তফশিলি উপজাতির জন্য সংরক্ষিত থাকায় বেকায়দায় পড়ে শাসকদল। কারণ, তাদের এমন কোনও সদস্যই নেই। গত ২৫ জুলাই বোর্ড গঠনের প্রথম সভায় বিজেপি এলেও সেদিন তৃণমূল সদস্যরা উপস্থিত না থাকায় সভা বাতিল হয়। নতুন করে আজ (বুধবার) বোর্ড গঠনের সভা ডাকা হয়।
নির্বাচনে বিজেপির দুই তফশিলি উপজাতি প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। অবশেষে সংরক্ষণের গেরোয় প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপির আলাকসু লাকড়া। সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল কংগ্রেসের উপপ্রধান হন প্রমোদ প্রসাদ। গ্রাম পঞ্চায়েতে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পুলিস। পাশাপাশি ১৪৪ ধারা জারি করা হয় পঞ্চায়েত অফিস এলাকায়।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ইতিহাসে প্রথমবার বিজেপির প্রধান হওয়ায় এদিন উল্লাস দেখা যায় বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। জেলা সভাপতি আনন্দময় বর্মণ বলেন, আমাদের দুই তপশিলি উপজাতির জয়ী সদস্যদের ভয় দেখিয়ে লোভ দেখিয়ে তৃণমূল দলে টানতে চেয়েছিল, তা আমরা হতে দিইনি। নবনির্বাচিত প্রধান আলাকসু বলেন, মানুষের জন্য কাজ করব।
শুক্রবার রাতে তুফানগঞ্জ বিধানসভার অন্তর্গত শালবাড়ি দু'নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিস (Panchayet Office) খোলা ছিল রাতেও। রাতে পঞ্চায়েত অফিস খোলা কেন? তা নিয়ে যথারীতি রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো বিরোধীরা তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ (Agitation) দেখালেন।
অন্যদিকে, এই ঘটনায় গতকাল গভীর রাতে শালবাড়ি থেকে তিনজন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে আনে বক্সিরহাট থানার পুলিস। এর বিরুদ্ধে বক্সিরহাট থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। উপস্থিত ছিলেন কোচবিহারের বিজেপির সমস্ত বিধায়ক (BJP MLA)।বিধায়কদের দাবি, গতকাল যে সমস্ত বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা কোনও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেনি। মিথ্যা অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বক্সিরহাট থানার ওসি তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়ে তৃণমূলেরই অঙ্গুলি হেলনে এই সমস্ত কাজ করছেন।
অন্যদিকে, তৃণমূলের অভিযোগ, সরকারি কর্মীদের কাজ করা নিয়ে বিজেপির চার বিধায়ক যা করলেন, তাতে তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সরকারের জনহিতকর প্রকল্পের সংখ্যা বেড়েছে। তাই সরকারি অফিসে কাজও বেড়েছে। সেইসব কাজ অনেক সময় ৮ ঘণ্টা ডিউটি আওয়ার্স-এর মধ্যে করা সম্ভব নয়। তাই কর্মীরা বেশি সময় কাজ করছেন। কিন্তু বিজেপি অযথা বিক্ষোভ দেখিয়ে সব পণ্ড করে দিচ্ছে।
বার দশেক তলব করার পরেও বীরভূমের 'মুকুটহীন শাহেনশা' অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই দপ্তরে যাননি। কেন যাননি, সে প্রশ্ন নিয়ে দ্বিমত আছে। কেউ বলছে চিরকাল রাজ্য পুলিসের উপর দাপট দেখানো অনুব্রত হয়তো ভেবেছিলেন সিবিআইও বোধহয় একই গোত্রের। ভাবেননি যে তাঁকে বাড়ির থেকে তুলে আনা হতে পারে। কিন্তু তাঁর বোঝা উচিত ছিল গত বিধানসভা ভোটের পর ববি হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়-সহ নেতাদের এই সিবিআই কিন্তু ভোরবেলায় বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল। অতএব তার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে এমন ধারণাটাই ভুল ছিল। অন্য মত বলছে অনুব্রত হয়তো হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হওয়ার আশংকায় সিবিআই দফতরে যাননি। কিন্তু সকলেরই প্রশ্ন অনুব্রতর মতো প্রভাবশালী ক্ষমতাবান নেতার গ্রেফতারে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হল তৃণমূল?
এই বিষয়ে নিয়েও দ্বিমত আছে। একদল বলছেন, যথেষ্ট ক্ষতি হল, কারণ হিসাবে তারা বলছে, এই অনুব্রতর দাপটে সিপিএম বিজেপি বীরভূমে একঘাটে জল খেত। ২০১১ থেকে ২০২১ এর মধ্যে যত নির্বাচন হয়েছে অনুব্রত প্রমাণ করেছেন তিনি অপরাজেয়। সেন্ট্রাল ফোর্স দিয়েও তাঁকে আটকানো যায়নি। ঘরে বসে ভোটযুদ্ধের অপারেশন চালিয়েছিলেন। দুঃসময়ে অর্থাৎ ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে পর্যন্ত বিজেপি এখানে দাঁত ফোটাতে পারেনি। দুটি আসনেই বড় জয় এসেছিল তৃণমূলের। এছাড়া বিধানসভা বা পঞ্চায়েত তো ছিলই। কাজেই তাঁর গ্রেফতারে বীরভূমে শক্তি হারালো তৃণমূল। তারা বলছে পূর্ব মেদিনীপুরের লক্ষণ শেঠ বা উত্তর ২৪ পরগনার মজিদ মাস্টারের দানা ছাঁটার পর দুই জেলাতেই সংগঠনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সিপিএম-র। এঁরা কেউই ঈশ্বর প্রেরিত দূত ছিলেন না।
অন্য একটি তৃণমূল গোষ্ঠীর মতে কেউ আইনের জালে পড়তেই পারে কিন্তু দলটি চলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। অতএব চিন্তার কিছু নেই। সত্যিই কি তার উত্তর দিতে পারবে আসন্ন মানিকতলা উপনির্বাচন এবং তারপরে পঞ্চায়েত নির্বাচন?
কয়েকদিন আগে মাথাভাঙায় খাদ্য দফতরের অফিসে রাতে কাজ হওয়ায় গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয় মানুষজন। অভিযোগ, দুর্নীতির নথিপত্র সরাতেই রাত জেগে কাজ হচ্ছিল অফিসে।
এবার একই ঘটনা ঘটল পঞ্চায়েত অফিসে (Panchayet Office)। এবার ঘটনাস্থল কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের আমবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত পরিদর্শন করছে কেন্দ্রীয় বিশেষ প্রতিনিধিদল (Central Team)। এরই মাঝে বুধবার অনেক রাত পর্যন্ত ওই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে চলছিল কাজকর্ম। এই নিয়ে গ্রামবাসীদের সন্দেহ হওয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে কর্মীদের রেখে বাইরে থেকে তালা মেরে বিক্ষোভে (Agitation) শামিল হন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রাম পঞ্চায়েতে যেভাবে দুর্নীতি (Corruption) হয়েছে, তাই বিভিন্ন নথিপত্র ও কাগজপত্র রাতে কাজ করে এদিক ওদিক করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সারাদিন থাকতে কেন এত রাতে পঞ্চায়েত অফিসে কাজ হবে? প্রশ্ন তুলে এলাকার মানুষ এদিন অফিসে কর্মীদের তালা মেরে বিক্ষোভ দেখান। এই বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত আধিকারিক কোনও সঠিক উত্তর না দেওয়ার কারণে বিক্ষোভ চলতে থাকে। খবর পেয়ে ছুটে আসে পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিস। স্থানীয়দের বুঝিয়ে পরে পুলিস কোনওভাবে অফিসের তালা খুলে পঞ্চায়েত অফিসের কর্মীদের সেখান থেকে বের করে বাড়ির উদেশে পাঠিয়ে দেয়। পরে পুলিস পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
তবে এই বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের নির্মাণ সহায়িকা মল্লিকা বসু বলেন, রাজ্য জুড়ে ২০১১ ও ১২ সালের কাজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমার এক বছরের বেশি হয়েছে এখানে আসা। তাই সব কাগজ গুছিয়ে রাখতে হচ্ছে।
'আমাদের বিধায়ক তো মাতাল, তার কথা ছেড়ে দেওয়াই ভালো'। নিজের দলের বিধায়ক সম্পর্কে এমনই মন্তব্য তৃণমুল পঞ্চায়েত প্রধানের। যা নিয়ে হাসিঠাট্টা যেমন শুরু হয়েছে, তেমনি অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে ঘাসফুল শিবিরে। মঙ্গলবার বিশ্ব আদিবাসী দিবস (World Tribal Day) উপলক্ষে স্থানীয় আদিবাসী সমাজের মানুষদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের ফুটবল ময়দানে। অনুষ্ঠানে জমায়েত হয়েছিল ভালোই। আদিবাসী সমাজের সংস্কৃতি, কৃষ্টি তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন তৃণমুল নেতা এবং জনপ্রতিনিধি। তার মধ্যে একজন প্রধান হেমব্রম। তিনি জলপাইগুড়ির পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং পাশাপাশি রায়পুর চা বাগানের শ্রমিক নেতাও। রায়পুর চা বাগান দীর্ঘদিন ধরে অচল। অনুষ্ঠান মঞ্চে সেই অচল বাগান নিয়ে কথা বলতে গিয়েই এলাকার বিধায়কের (MLA) সম্পর্কে ক্ষোভ উগরে দেন প্রধান (Panchayet Pradhan) হেমব্রম। তাঁর বক্তব্য, "আমাদের বিধায়ক তো মাতাল, তার কথা ছেড়ে দেওয়াই ভালো" তিনি নিজের ঘরই সামলাতে পারেন না, বাইরে কী সামলাবেন? তাঁর কাছ থেকে কিছু আশা করি না"।
নাম না করলেও স্পষ্ট যে, প্রধান হেমব্রমের তীর রাজগঞ্জ ব্লকের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের দিকে। তাঁর এই বক্তব্যের পর মঞ্চে উপস্থিত দলীয় নেতারা অস্বস্তিতে পড়ে যান। আবার অনেককে চুপিসারে হাসাহাসি করতেও দেখা যায়।
এদিকে দলীয় পঞ্চায়েত প্রধানের এহেন মন্তব্যে অস্বস্তি পড়েছে জেলা তৃণমুল। খগেশ্বর রায় চারবারের বিধায়ক। পাশাপাশি, তিনি জেলা তৃণমুলের চেয়ারম্যান। জেলার শীর্ষনেতার বিরুদ্ধে এই ধরনের মন্তব্য অস্বস্তি বাড়িয়েছে দলের। এই বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিধায়ক জানিয়েছেন, এই বিষয়ে উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, তাঁরাই ব্যবস্থা নেবেন। জলপাইগুড়ির তৃণমূল জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই, কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
এদিকে, ঘাসফুল শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে তীব্র কটাক্ষ শানিয়েছেন বিজেপি নেতা শ্যাম প্রসাদ।
প্রসঙ্গত, বিধায়ক খগেশ্বর রায় মাঝেমধ্যেই শিরোনামে উঠে আসেন। কখনও বিতর্কিত মন্তব্য বা আচরণ করে, আবার কখনও পারিবারিক কারণে। যদিও বিধায়ক সবসময়ই দাবি করে এসেছেন, এসব তাঁকে বদনাম করার চক্রান্ত।
পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজই হয়নি। অথচ রাতারাতি কাজের ফলক বসিয়ে দিয়েছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। এমনই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রায়গঞ্জ ব্লকের রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভট্টদিঘি গ্রামে। অভিযোগ উঠেছে টাকা আত্মসাতের।
রায়গঞ্জ ব্লকের ৬ নম্বর রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভট্টদিঘি সহ বিভিন্ন গ্রামের উন্নয়নের জন্য ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করার কথা ছিল পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের। মাটি খনন, রাস্তা এবং শ্মশান সংস্কারের জন্য কয়েক লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মাটি খনন করা হয়নি, হয়নি শ্মশান সংস্কার কিংবা রাস্তা নির্মাণের কাজ। অথচ মঙ্গলবার রাতে আচমকা কাজ না হওয়া প্রকল্পগুলির জন্য সমাপ্তির ফলক লাগিয়ে দিয়েছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, একটি টোটোতে দুজন লোক এসে তিনটি কাজের ফলক লাগিয়ে দিয়ে ক্যামেরায় তার ছবিও তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু গ্রামে গিয়ে বাস্তব চিত্রটা দেখা গেল অন্যরকম। শ্মশান সংস্কার কিংবা রাস্তা নির্মান বা মাটি খনন কোনও কাজই হয়নি। অথচ কাজ সমাপ্তির ফলক বসানো হয়ে গিয়েছে। কাজ না হলেও কাজের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগেই ৬ নম্বর রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির হাত থেকে দখল নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। দাবি উঠেছে আগে কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে, তারপরে কাজের ফলক লাগানো হোক। কাজ সম্পূর্ণ না হলে আগামী পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের হুমকি দিয়েছেন ক্ষুদ্ধ বাসিন্দারা।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার জানিয়েছেন, রাজ্যে তৃণমুল পরিচালিত জেলার প্রতিটা পঞ্চায়েতে এমন দুর্নীতি হয়ে আসছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখার জন্য আসার কারণেই দুর্নীতি ঢাকতে এমনভাবে রাতারাতি ফলক বসানোর কার করছে পঞ্চায়েতগুলি। এধরনের দুর্নীতি কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছে না সাধারণ মানুষ। যার কারণে বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে এলাকাবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
যদিও রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গৌতম সরকার জানিয়েছেন, এই পঞ্চায়েত দীর্ঘদিন বিজেপির দখলে ছিল। সেসময় কোনও কাজই হয়নি। তৃণমূল পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় আসার পর অনেক কাজ হয়েছে। কাজ হয়েছে বলেই কিছু ফলক লাগানো হয়েছে। গ্রামবাসীদের এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন তিনি৷
মন্ত্রী হয়ে কোচবিহারে (Cooch Behar) ফিরে আলাদা রাজ্য নিয়ে বিজেপিকে (BJP) আক্রমণ করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। মঙ্গলবার মন্ত্রী হয়ে পদাতিক এক্সপ্রেসে চেপে নিউ কোচবিহার স্টেশনে নামেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক (TMC Leader)।
এদিন নিউ কোচবিহার স্টেশনে তাঁকে সম্বর্ধনা জানাতে প্রচুর তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-নেতাদের ভিড় হয়। সেই সম্বর্ধনা মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উদয়ন গুহ বলেন, '২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী নিজে বহুবার উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন। এখানে উত্তরবঙ্গে বহু কাজ হয়েছে এবং হবে। উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত, আগামীদিনে এই কথা কারও মুখে আসবে না। এই কথা বলে যারা উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্যের দাবি করে তাঁদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে সমাজ থেকে আলাদা করে দিতে হবে।'
তিনি জানান, রাতারাতি সব হবে না। সবার সঙ্গে কথা বলে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি আগে করতে হবে। একইসঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এই মঞ্চ থেকে উদয়ন গুহ বলেন, 'কেউ দাদা ধরে পঞ্চায়েত টিকিট পাবে না। জোর করে কেউ পঞ্চায়েত প্রধান হবে না।'
এই মঞ্চ থেকে এদিন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, 'দলে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই।' বুথে কর্মীদের এক হওয়ার বার্তা দেন তিনি। পাশপাশি তিনি বলেন, 'বর্তমান রাজ্যে ইডি-সিবিআই বলে একটা প্যানিক চলছে। তাই যারা বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী, তাদের ইডি সিবিআই মামলায় এক থেকে দেড় বছর জেল খাটার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।'
তবে এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুর চড়িয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা সুকুমার রায়ও। কী বললেন তিনি?