এক টেট পরীক্ষার্থীর (TET Exam) করা মামলায় তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে ফের জরিমানা করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বুধবার পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে (Manik Bhattacharya) পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন। আগামি দুই সপ্তাহের মধ্যে এই জরিমানার টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি (Justice Ganguly)। জানা গিয়েছে, সহিলা পারভিন নামে ২০১৭-র এক টেট পরীক্ষার্থী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তিনি তথ্যের অধিকার আইনে তাঁর ওএমআর শিট চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। এর জন্য নির্ধারিত টাকা দিয়ে এই আবেদন জানিয়েছিলেন সহিলা পারভিন। কিন্তু সহিলার অভিযোগ, 'তাঁকে যথাযথ ওএমআর শিট দেয়নি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।' যে সময়ের এই ঘটনা, সেই মুহূর্তে পর্ষদের সভাপতি পদে মানিক ভট্টাচার্য।
জানা গিয়েছে, সহিলা পারভিন ২০১৭ সালে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ফলাফল জানতে পারেনি তিনি। তা জানতে চেয়েই আবেদন করেছিলেন সহিলা। সেই সময় পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছিল, ৫০০ টাকা ড্রাফট কেটে নির্দিষ্ট ফরম্যাটে আবেদন করতে হবে। তিনি সেই মতো আবেদন জানানো সত্বেও তাঁকে বলা হয়, সঠিক ফরম্যাটে আবেদনে করা হয়নি। কিন্তু অভিযোগকারীর দাবি, 'যে ফরম্যাটে তিনি আবেদন করেছেন, সেটা ছাড়া আর কোনও ফরম্যাট নেই। সেই কারণে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।'
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, মানিক ভট্টাচার্যকে জরিমানা এই প্রথম নয়। এর আগেও আদালত প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতিকে জরিমানা করেছিল। এক চাকরিপ্রার্থী অভিযোগ তুলেছিলেন, ৮ বছর পরও পরীক্ষার ফল জানায়নি পর্ষদ। সেই সময়েও পর্ষদের সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মানিক ভট্টাচার্যকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ।
১১ নভেম্বর, ২০২২ আয়োজিত টেট (TET 2022) পরীক্ষার ব্যবস্থাপনায় সন্তোষপ্রকাশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Ganguly)। 'টেট হওয়ার পর কার্বন কপি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে কাজ ভালো হচ্ছে।' এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এহেন মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের।
নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত টেট-২০২২ ওএমআর শিট সংরক্ষণ করা থাকবে। ৫.৫ লক্ষের বেশি ওএমআর শিট সংরক্ষণ করা হচ্ছে। আদালতে জানালের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী। রবিবার রাজ্যজুড়ে টেটে বসেন ৭ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী। আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছিল রাজ্য প্রশাসন। ছুটির দিন হলেও পথে ছিল পর্যাপ্ত বাস, ছিল অতিরিক্ত ট্রেনের ব্যবস্থা।
যদিও একাধিক অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন কিছু পরীক্ষার্থী। কোথাও বায়োমেট্রিক বিকল, কোথাও অ্যাডমিট কার্ডের পরীক্ষা কেন্দ্রের ভুল ঠিকানার মতো অভিযোগ উঠেছে। যদিও পরীক্ষার সন্ধ্যায় পর্ষদ সভাপতি দাবি করেছেন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে চলতি বছরের টেট পরীক্ষা। এই আয়োজনের জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান।
পাঁচ বছর পর, ১১ ডিসেম্বর রবিবার টেট (TET 2022) পরীক্ষা আয়োজিত হয়েছিল রাজ্যজুড়ে। বহু প্রতীক্ষিত এই পরীক্ষার জন্য সাজোসাজো রব ছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (Primary Board) কন্ট্রোল রুমে। ব্যাপক কড়াকড়ির আশ্রয় নিয়েছিল পর্ষদ। এমনকি, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন এনেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের কাজে খুশি শিক্ষা দফতর। এবার তাই প্রাথমিকের দেখানো পথেই হাঁটতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি (SSC)। এসএসসি-র নিয়োগ পরীক্ষায় ওএমআর শিট নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। আদালতে খালি ওএমআর শিট দিয়ে চাকরি পাওয়ার তথ্যও জমা পড়েছে। সেই অভিযোগ যাতে আর না উঠে আসে, তাই প্রাথমিকের পথেই হাঁটবে এসএসসি। আগামী এসএসসির নিয়োগ পরীক্ষায় দেওয়া হবে ডুপ্লিকেট ওএমআর শিট।
এদিকে, রবিবার আয়োজিত পরীক্ষায় প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী বসেছিলেন। প্রশাসনিক তরফে ছিল পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এবং আয়োজন। ছুটির দিনেও রাস্তায় ছিল প্রচুর বাস, চলেছে অতিরিক্ত ট্রেন এবং খোলা ছিল ফেরি ঘাট। তবুও অব্যবস্থার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন কিছু পরীক্ষার্থী। দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুলে তো পরীক্ষা শেষে চলেছে বিক্ষোভ। নেপথ্যে বায়োমেট্রিক বিকল থাকা।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, 'তাঁদের বায়মেট্রিক না হওয়ায়, পরীক্ষা দিয়েও হয়তো অনুপস্থিত হয়ে যাবেন।' এই ধরনের অভিযোগকে সঙ্গী করেই ১১ ডিসেম্বর 'সুষ্ঠুভাবে' সম্পন্ন রাজ্যের টেট। এমনটাই ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের।
গ্রুপ ডি নিয়োগে (Group D) ফের প্রকাশ্যে বড়সড় দুর্নীতি (Recruitment Corruption)। সাদা ওএমআর শিট (OMR Sheet) জমা দিয়েও নম্বর বেড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর তালিকাভুক্ত একজনের নম্বর ৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩, অপর একজনের নম্বর ২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৩। একজনের নম্বর আবার শূন্য থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৩। ২৮২৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০০ জনের ওএমআর শিট নিয়ে বসতে হবে বৈঠকে। মঙ্গলবার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Ganguly)।
গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় লক্ষী টুঙ্গার করা মামলায় আগামী ১৪ই ডিসেম্বর স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে বৈঠক করবেন সিবিআই, মামলাকারীর আইনজীবী এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রতিনিধি।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের বাজেয়াপ্ত করা হার্ডডিস্ক এবং ওএমআর শিট খতিয়ে দেখা হবে। তারপরে আগামী ২১ ডিসেম্বর প্রাথমিক রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা দেবে। এমনটাই সিবিআইকে নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
এদিকে, নবম-দশম অবৈধ নিয়োগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪০ জনের ওএমআর শিট আপলোড করার নির্দেশ হাইকোর্টের। যাদের নম্বর ০ থেকে ৫২ বা তার বেশি করা হয়েছে, সেই বিকৃত ওএমআর শিটগুলোই আপলোড করা নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিনই ওএমআর শিট সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে রিপোর্ট পেশ সিবিআইয়ের।
হাইকোর্টের নির্দেশ, '৪০ জনের ওএমআর শিট আপলোড করা হবে এবং তাঁরা মামলায় অন্তর্ভুক্ত হতে চাইলে অবশ্যই হতে পারবেন ১৬-ই ডিসেম্বরের মধ্যে।' জানা গিয়েছে, ১৮৩ জনের পর নবম-দশমে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া আরও ৪০ জনের হদিশ মিলেছে। সূত্রের খবর, ওএমআর শিট কারচুপি করেই ৪০ জনকে চাকরির সুপারিশ করেছিল এসএসসি।
টেট মামলার (TET Case) ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র (OMR Sheet) সংক্রান্ত সিবিআইয়ের রিপোর্ট জমা নিল না কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে (CBI) বরং পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে আদালত। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ওএমআর শিট নষ্টের ঘটনায় পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে সিবিআই জেরা করতে পারবে। এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। ১৮ নভেম্বর রয়েছে শীর্ষ আদালতে শুনানি। তাই সিবিআইয়ের মুখবন্ধ খামে জমা রিপোর্ট গ্রহণ করল না হাইকোর্ট।
এদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের কাজের ভূয়সী প্রশংসা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। সোমবার সিবিআইয়ের আইও-কে ডেকে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলেন বিচারপতি। তিনি জানান, প্রথম দিকেই আমি দুর্নীতি লক্ষ্য করেছিলাম। তাই আমি সিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। আমি নির্দেশ দিতে পারি, কিন্তু প্রধান কাজ করতে হবে সিবিআইকে। আমি চাই সিবিআই এই কাজটা দায়িত্ব নিয়ে করবে। সিবিআইয়ের পতাকা মাথা উঁচু করে উড়ুক, আমি এটাই চাই। আমি কিছু মন্তব্য করি আমার উদ্বেগ থেকে।
তাঁর মন্তব্য, 'আমাকে নিয়ে অনেকের বিড়ম্বনা রয়েছে। কিন্তু আমি কাজ করছি বঞ্চিতদের জন্য। আমি চাই এটা ওরা বুঝুক, যে আমি এই কাজ করছি রাজ্যের ভবিষ্যতের জন্য। আর ওই বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের জন্য এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিই। আমি বিচারের দায়িত্ব পালন করছি, সিবিআইয়ের তদন্তে আপাতত খুশি। সিবিআই ভালো কাজ করছে।'
হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডেডলাইন রাত ৮টার মধ্যে মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) সিবিআই (CBI) দফতরে হাজিরা দিতে হবে। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা অবধি তাঁর কোনও খোঁজ না পেয়ে যাদবপুর থানায় জেনারেল ডায়রি কোর্ট নিযুক্ত এসিপির। তাঁর যাদবপুরের বাড়িতে কোর্ট নিযুক্ত এসিপি এবং কলকাতা পুলিসের একটি দল গিয়ে খোঁজ করলেও পাওয়া যায়নি তাঁকে। তারপরেই কোর্টের স্থির করে ডেওয়া ডেডলাইন শেষের আগেই যাদবপুর থানায় 'নিখোঁজ' মানিক ভট্টাচার্যের নামে জেনারেল ডায়রি (GD)।
যদিও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতিকে একদিনের রক্ষাকবচ দিয়েছে। বুধবার পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে না সিবিআই। তারপরেও যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও পাওয়া যায়নি মানিক ভট্টাচার্যকে। এমনটাই সিবিআই সূত্রে খবর। খুব সম্ভবত তিনি দিল্লিতে আছেন, এমনটাই অনুমান তদন্তকারীদের।
এদিকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিলে তাঁকে কী কী প্রশ্ন করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সম্ভাব্য সেই প্রশ্নমালা-- ১) OMR শিট নষ্টের মূল উদ্দেশ্য কী?
২) কেন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নষ্ট করা হলো OMR শিট?
৩) OMR শিট নষ্ট করার জন্য কার নির্দেশ ছিল?
৪) প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সঙ্গে এই বিষয়ে আপনার কি কথা হয়েছিল?
৫) OMR শিট নষ্ট করার পেছনে পার্থবাবুর কোনও নির্দেশ ছিল?
এমন একাধিক প্রশ্ন মানিককে বিঁধতে তৈরি করে রাখছে সিবিআই।
২০১৪-র টেটের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট (TET OMR Sheet) নষ্টের মামলায় সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। এই তদন্তে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৮টার মধ্যে তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ। প্রয়োজনে তাঁকে গ্রেফতার করে জেরা করতে পারবে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এদিন স্পষ্ট করে দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এমনকি, যে এজেন্সির হাত ধরে ওএমআর শিট তৈরি, সেই এজেন্সি নির্বাচন কীভাবে হচ্ছে? খতিয়ে দেখবে সিবিআই। কার নির্দেশে ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে? নিয়ম মেনে নষ্ট হয়েছে কিনা? এসব খতিয়ে দেখে আগামি একমাসের মধ্যে আদালতকে রিপোর্ট দেবে সিবিআই। পয়লা নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
২০১৪-র টেট পরীক্ষার পর লক্ষাধিক ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত এক অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। সেই অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ। এই ঘটনার সময় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। তাই তাঁকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৮টার মধ্যে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এদিকে, প্রাথমিকে ২০২০ সালের নিয়োগের পর এখনও ৩৯২৯টি শূন্যপদ রয়েছে। সেই পদে অবিলম্বে নিয়োগ করতে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। প্রাথমিক ধাপে ২৫২ জনকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই আড়াইশো জন সেই শূন্যপদে নিয়োগ চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যোগ্য প্রার্থীদের সব নথি খতিয়ে দেখে নিয়োগের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামি নভেম্বরে। সেদিন কোর্টকে জানাতে হবে আদালতের এই নির্দেশের পর কতজন চাকরি পেলেন।
এদিকে, অন্য একটি মামলায় ৬৫ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ছয়টি প্রশ্ন ভুল মামলায় এই ৬৫ জনকে চাকরির নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২৩ সেপ্টেম্বর এই মর্মেই বেশ কয়েকজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। এবার ওই মর্মে আরো ৬৫ জনকে চাকরি দিতে নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আদালতকে জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ১৮৫ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
মাদ্রাসার সার্ভিস কমিশনে (Madrasa Service Commission) শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ। উত্তরপত্র (OMR Sheet) কেলেঙ্কারির অভিযোগে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা দায়ের চাকরিপ্রার্থীর। তাঁর জমা দেওয়া ওএমআর শিটে তৃতীয় ব্যক্তি কলম চালিয়েছে। ফলে বদলে গিয়েছে উত্তর। এই অভিযোগ তুলে সেই ওএমআর শিট বাতিলের দাবিতে আদালতে দরবার সেই চাকরিপ্রার্থীর। আবেদনের গুরুত্ব বিচার করে সেই ওএমআর শিটকে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবে পাঠালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি CFSL-কে এই মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
অভিযোগ, মাদ্রাসা নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নের ভিত্তিতে যে উত্তরপত্র দেওয়া হয়, তাতে অপশন থাকে। এক পরীক্ষার্থী কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন উত্তরপত্রের "A", "B", "C" বিকল্পগুলোর মধ্যে A এবং B সঠিক উত্তর এর জন্য। কিন্তু তাঁর উত্তরপত্রে C বিকল্প মার্কিং করা। আদৌ তিনি সেই উত্তর দেননি। পরে মেধাতালিকায় তাঁর নাম না থাকায় সন্দেহ হওয়ায় তিনি তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করেন। সেই চাকরিপ্রার্থী জানতে পারেন তিনি নাকি C বিকল্প বেছেছিলেন। তিনি উত্তীর্ণ হলেও আদতে তাঁকে চাকরি না দেওয়ার জন্য এই বেনিয়ম করেছে পর্ষদ।
এরপরেই আদালতের দ্বারস্থ হলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ওই উত্তরপত্র চেয়ে পাঠান। শুক্রবার মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ সেই উত্তরপত্র জমা করলে, হায়দরাবাদে সিএফএসএল-এ যায় সেই খাতা। পাশাপাশি এদিন হাইকোর্টের নির্দেশ, CFSL ওএমআর সিট খতিয়ে দেখবে। পরীক্ষার্থীর কলমের কালির সঙ্গে অন্য কলমের কালি বিবেচনা করা হবে। এছাড়া দেখতে হবে, উত্তরপত্র একই চাপ প্রয়োগ করে লেখা হয়েছে কিনা। আদালতের নির্দেশ মতো আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থী যে কালিতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কলম-সহ সেই কালিও জমা দেন আদালতে। জানা গিয়েছে, ৩১ অগস্টের মধ্যে CFSL-কে পাঠাতে হবে। সায়েন্স ল্যাবরেটরির অধিকর্তাকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা করতে হবে।
এদিনে শুনানিতে বিচারপতির মন্তব্য, রাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতি এখন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবারই পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের সচিবকে ওএমআর সিট এবং কলম (বল পেন) হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে হবে। জানা গিয়েছে, ১৭ জানুয়ারি ২০২১ পরীক্ষা হয়। ওই বছর ১১ অগস্ট ফল প্রকাশ হয়।