Breaking News
Abhishek Banerjee: বিজেপি নেত্রীকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের অভিযোগ, প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জাতীয় মহিলা কমিশনের      Convocation: যাদবপুরের পর এবার রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সমাবর্তনে স্থগিতাদেশ রাজভবনের      Sandeshkhali: স্ত্রীকে কাঁদতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন 'সন্দেশখালির বাঘ'...      High Court: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল, সুদ সহ বেতন ফেরতের নির্দেশ হাইকোর্টের      Sandeshkhali: সন্দেশখালিতে জমি দখল তদন্তে সক্রিয় সিবিআই, বয়ান রেকর্ড অভিযোগকারীদের      CBI: শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ! তদন্তে সিবিআই      Vote: জীবিত অথচ ভোটার তালিকায় মৃত! ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ধূপগুড়ির ১২ জন ভোটার      ED: মিলে গেল কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর, শ্রীঘই হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ ইডির      Ram Navami: রামনবমীর আনন্দে মেতেছে অযোধ্যা, রামলালার কপালে প্রথম সূর্যতিলক      Train: দমদমে ২১ দিনের ট্রাফিক ব্লক, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন, প্রভাবিত কোন কোন রুট?     

MotherLanguageDay

Bangla: আমি কোন কথা যে বলি! কোন পথে যে চলি!

'আমি কোন কথা যে বলি! কোন পথে যে চলি!' গানের লাইনটি ভীষণ ভাবে সার্থক এ ক্ষেত্রে, যেখানে বাংলা ভাষা প্রয়োগ নিয়ে বাঙালিরা কেত দেখানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কেন? কারণ, জানেন সারাদিনে আমরা যা বলি তার মধ্যে কত শতাংশ বাংলা?

চায়ের কাপে বিস্কুট ডুবিয়ে খাওয়ার সময় হঠাৎ মাথায় আসলো যে এই চা চীনা শব্দ। আবার বিস্কুট ফরাসি শব্দ। বিস্কুটের সাথে থাকা চানাচুর হিন্দি। চায়ে যে চিনি ও পানি থাকে সেখানে চিনি চীনা অথচ পানি হিন্দি শব্দ। আবার চা ভর্তি পেয়ালাটা ফারসি কিন্তু কাপটা ইংরেজি শব্দ। এদিকে ইংরেজি শব্দটাই আবার পর্তুগিজ। চা চীনা হলেও কফি কিন্তু তুর্কি শব্দ। আবার কেক পাউরুটির কেক ইংরেজি, পাউরুটি পর্তুগীজ। 

একটু দামী খানাপিনায় যাই। আগেই বলে রাখি, খানাপিনা হিন্দী আর দাম গ্রীক। রেস্তোরাঁ বা ব্যুফেতে গিয়ে পিৎজা, বার্গার বা চকোলেট অর্ডার দেওয়ার সময় কখনও কি খেয়াল করেছেন, রেস্তোরা আর ব্যুফে দুইটাই ফরাসী ভাষার, সাথে পিৎজাও। পিৎজাতে দেওয়া মশলাটা আরবি।

মশলাতে দেওয়া মরিচটা ফারসি! বার্গার কিংবা চপ দুটোই আবার ইংরেজি। কিন্তু চকোলেট আবার মেক্সিকান শব্দ। অর্ডারটা ইংরেজি। যে মেন্যু থেকে অর্ডার করছেন সেটা আবার ফরাসী। ম্যানেজারকে নগদে টাকা দেওয়ার সময় মাথায় রাখবেন, নগদ আরবি, আর ম্যানেজার ইটালিয়ান। আর যদি দারোয়ান কে বকশিস দেন, দারোয়ান ও তার বকশিস দুটোই ফারসি। এবার চলুন বাজারে, সবজি ফলমূল কিনতে। বাজারটা ফারসি, সবজিও। যে রাস্তা দিয়ে চলছেন সেটাও ফারসি। ফলমূলে আনারস পর্তুগিজ, আতা কিংবা বাতাবিলেবুও। লিচুটা আবার চীনা, তরমুজটা ফারসি, লেবুটা তুর্কী। পেয়ারা-কামরাঙা দুইটাই পর্তুগীজ। পেয়ারার রঙ সবুজটা কিন্তু ফারসি। ওজন করে আসল দাম দেওয়ার সময় মাথায় রাখবেন ওজনটা আরবি, আসল শব্দটাও আসলে আরবি। তবে দাম কিন্তু গ্রীক, আগেই বলেছি।

ধর্মকর্মেও একই অবস্থা। মসজিদ আরবি দরগাহ/ঈদগাহ ফারসি। গীর্জা কিন্তু পর্তুগীজ, সাথে গীর্জার পাদ্রীও। যিশু নিজেই পর্তুগীজ। কেয়াং এদিকে বর্মিজ, সাথে প্যাগোডা শব্দটা জাপানি। আর, মন্দিরের ঠাকুর হলেন তুর্কী। আর কি বাকি আছে? ও হ্যাঁ। কর্মস্থল! অফিস আদালতে বাবা, স্কুল কলেজে কিন্ডারগার্ডেনে সন্তান। বাবা নিজে কিন্তু তুর্কী, যে অফিসে বসে আছেন সেটা ইংরেজি, তবে আদালত আরবি, আদালতের আইন ফারসি, তবে উকিল আরবি। ছেলে যে স্কুলে বা কলেজে পড়ে সেটা ইংরেজি, কিন্তু কিন্ডারগার্ডেন আবার জার্মান! স্কুলে পড়ানো বই কেতাব দুইটাই আরবি শব্দ। যে কাগজে এত পড়াশোনা সেটা ফারসি। তবে কলমটা আবার আরবি। রাবার পেনসিল কিন্তু আবার ইংরেজি! পুরো স্ট্যাটাস মনে না থাকলে অন্তত এটা মনে রাখবেন যে মন শব্দটা আরবি। শব্দের কেচ্ছা-কাহিনী এখানেই খতম। তবে কেচ্ছাটা আরবি, কাহিনীটা হিন্দি, উভয়ের খতমটা আরবিতে।  মাফ চাইলাম না বা সরি বললাম না, কারণ মাফটা আরবি আর সরিটা ইংরেজি।

(সোমনাথ পাঠকের পাতা থেকে)

2 months ago
International Mother Language Day: এক বাঙালির গপ্পো

প্রসূন গুপ্তঃ বুধবার আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস। আন্তর্জাতিক বললেও আসলে এই দিবসের প্রণেতা ওপার বাংলার রক্তস্নাত বাঙালির আন্দোলনের ফলাফল। ২১ ফেব্রুয়ারী। লড়াই করে এই ভাষার লড়াইয়ে একটি দেশের জন্ম হয়েছিল কালেকালে 'বাংলাদেশ"। বাংলা ভাষা এবং বাঙালি নিয়ে লিখতে গেলে হয়তো দশ পাতা লেখা হয়ে যাবে। তাই প্রবাদপ্রতিম সমস্ত বাঙালিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ বহু পরিচিত প্রয়াত দুই বাঙালির কিছু কথা লিখতে বসেছি যা হয়তো অনেকেই জানে না। শচীন দেববর্মন ও পুত্র রাহুল দেববর্মন।

শচীন কর্তা ছিলেন অবিভক্ত ত্রিপুরার রাজ্ পরিবারের ছেলে। কুমিল্লায় মূল বাড়ি ছিল তাঁর। অবিশ্যি ত্রিপুরাতেও ছিল। এই বংশের ছেলে হলেও প্রশাসনের দিকে কোনও ঝোঁক ছিল না তাঁর। বিবাহ হয় আরেক পূর্ববঙ্গীয় মীরার সঙ্গে। তারপরেই বাড়ির অমতে গান বাজনা নিয়েই জীবন। চলে এলেন কলকাতায়। স্ত্রী এবং পুত্র টুবলু বা পঞ্চম অথবা রাহুলকে নিয়ে। এ বাংলায় বহু গান করে ছবিতে সুর দিয়ে চলে যান মুম্বই। রাহুল তখন কিশোর বয়সী।

শচীন দ্রুত দারুণ নাম করে ফেললেন মুম্বইয়ের চলচ্চিত্রে সুর দিয়ে। ধীরে ধীরে ষাটের দশকে রাহুলও সুর দিতে শুরু করেন। হিন্দি গানের সঙ্গে, সিনেমার সঙ্গে থাকলেও শচীন কর্তা নিয়মিত বাংলা গান করতেন। তাঁর দুটি অদ্ভুত বিষয় ছিল প্রথমত তিনি বাঙাল ভাষা ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেই চাইতেন না। হয়তো কাজের খাতিরে হিন্দি বলতে হতো ঠিকই কিন্তু সে হৃদি ছিল বাংলা মিশ্রিত। শচীন কর্তার সুর মানেই বাংলার ভাটিয়ালি সংগীত থাকবেই হিন্দি গানে। তাঁর মহড়ার সময়ে তিনি নির্দ্বিধায় টিমের সঙ্গে বাংলাতে কথা বলতেন । তাঁর প্রধান সহযোগী ছিলেন মান্না দে। ঘটি বাড়ির মান্না বাধ্য হয়েই বাঙাল ভাষা রপ্ত করেছিলেন। লতা মঙ্গেশকরকে ডাকতেন লোতা বলে, কিশোর কুমারকে ডাকতেন কিশুর বলে। দেব আনন্দকে ডাকতেন দ্যাভ বলে ইত্যাদি। নড়ানো যায় নি। ধুতি পাঞ্জাবি ছাড়া পড়তেন না। ইস্টবেঙ্গলের খেলা থাকলে মান্না দেকে দিয়ে এক ডজন জর্দা পান কিনে স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখতেন। পুত্র রাহুল সর্বকালের সেরা সুরকার হওয়া সত্বেও ভালো করে হিন্দি বলতে বা লিখতে পারতেন না। গীতিকার হিন্দিতে গান লিখলে সেটিকে বাংলা হরফে লিখে সুর দিতেন বলে জানিয়েছিলেন বন্ধু গুলজার এবং জাভেদ আখতার।

আসলে পিতাপুত্র মনেপ্রাণে বাঙালি ছিলেন এবং প্রবাসে থেকেও নিজের ভাষার প্রতি এই অগাধ শ্রদ্ধা কজনেরই বা ছিল বা আছে?

2 months ago
21 February: ভাষা আন্দোলনে আজ কোথায় বাঙালি, জানুন বিশ্লেষণ

প্রসূন গুপ্ত: ২১ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার সব খবর বাদ দিয়ে বোধকরি ভাষা দিবস স্মরণের দিন। আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো দিন, এমনটাই সোমবার রাত ১২টা থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে সেই পুরাতন অথবা চিরকালীন গান গেয়ে চলেছে বাংলাদেশের আপামর নাগরিক। ৭১ বছর হয়ে গেলো উর্দু ভাষাকে সরিয়ে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করার আত্মত্যাগের দিন। আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সৃষ্টিই হয়েছিল ওপার বাংলার ভাষা বাঁচাও আন্দোলনের ফলে।

এখন সমগ্র বিশ্ব আজকের দিনটি নিজ নিজ ভাষার জন্য নতুন করে নিজের দেশে পালন করে। ভারত ভাগ হওয়ার ফলে পাকিস্তানে চলে গেলো এদেশের মুসলিমরা এবং উদ্বাস্তু হয়ে এদেশে পাঞ্জাব ও বাংলার হিন্দু কিংবা শিখরা চলে আসলো ভারতে। পাকিস্তানে কি সংস্কৃতি রইলো অন্য কথা কিন্তু ব্যথিত হলো উদ্বাস্তু দুই বাংলার মানুষরা।

ওপার বাংলা থেকে যেমন বহু হিন্দু ভারতে চলে এসেছিলো তেমনই হাজার হাজার মুসলিম উদ্বাস্তু হয়ে চলে গিয়েছিলো পূর্ব পাকিস্তানে, যাদের অনেকেরই ভিটেমাটি ছিল কলকাতা থেকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলায়। এই ভাঙন বোধহয় আম নাগরিক কেউই চাইনি। তাই বাঙালি বিভক্ত হয়ে গেলো দু'ভাগে। আজকের বাংলাদেশ কিন্তু পাকিস্তান মুক্ত। তারা আজ গর্বিত বাঙালি। তাদের জাতীয় ভাষা বাংলা এবং সমস্ত সরকারি কাজ হয়ে থাকে বাংলা এবং ইংরেজিতে। অন্যদিকে এই বাংলা কিন্তু ভারতের অঙ্গরাজ্য। এ রাজ্যের ভাষা বাংলা হলেও এবং এদেশে কোনও জাতীয় ভাষা না থাকলেও যুগ যুগ ধরে সরকারি বা বেসরকারি কাজ বা সইসাবুত হয়ে থাকে ইংরেজি ও হিন্দিতে সেখানে বাংলা ভাষার আলাদা কোনও স্থান আছে কি?

তবে এটাও সত্যি যে আজকেও ও দেশে রবীন্দ্রনাথ থেকে সাহিত্য সংস্কৃতিতে বাংলা যতটা বাধ্যতামূলক তেমন এ রাজ্যে কোথায়? খোদ কলকাতা ভরে গিয়েছে হিন্দিভাষীতে, তারা বাঙালির সঙ্গে কথা বলে হিন্দিতে উত্তরও পায় তাতেই যা কিনা দক্ষিণ ভারতে বা পাঞ্জাব বা ওড়িশা অথবা গোয়াতে চলে না। সর্বধর্মের মানুষ যেমন থাকবে তেমন বহু ভাষাভাষীও থাকবে কিন্তু তার মাঝেই এ বাংলার রাজধানী থেকে বাংলা কেমন সতীনের সন্তান।

one year ago