আগামী ২০ মে ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং লখনউ সুপার জায়ান্টস আইপিএলের (IPL) সম্মুখ সমরে নামতে চলেছে। সেই দিন মোহনবাগান (Mohun Bagan) সমর্থকদের জন্য রয়েছে বিশেষ চমক। কারণ লখনউ সুপার জায়ান্টসদের (lucknow Super Giants) নীল রঙের জার্সি বদলে যাবে সবুজ মেরুনের ছোঁয়ায়। কলকাতার মোহনবাগানের সমর্থক এবং ভক্তদের মন জিততে এই রণকৌশল নিয়েছেন, খোদ লখনউ দলের কর্তা সঞ্জীব গোয়েঙ্কা (যিনি আবার মোহনবাগানের চেয়ারম্যান)। সবুজ মেরুন সমর্থকদের আবেগ নিয়ে যে তিনি সচেতন তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। ভক্তদের অনুরোধে মোহনবাগান নামের সামনে থেকে 'এটিকে' শব্দটি সরিয়েছিলেন তিনিই। এবার আইপিএল এবং মোহনবাগানকে এক সূত্রে বাঁধতে নয়া মাস্টারস্ট্রোক গোয়েঙ্কার।
লখনউ সুপার জায়ান্টসদের মেন্টর গৌতম গম্ভীর। এই গৌতম গম্ভীরই কলকাতা নাইট রাইডার্সকে দু'বার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের ট্রফি জিতিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর কেকেআর, গম্ভীরকে একপ্রকার ছুড়ে ফেলে দিয়েছে বললে খুব একটা ভুল হবে না বোধহয়। কেকেআর কর্তারা গম্ভীরকে দলে নেননি, নিদেন পক্ষে মেন্টর হিসেবেও গুরুত্ব দেননি। এই গৌতম একসময় কলকাতার প্রেমে নিমজ্জিত হয়ে এই শহরেই একটি ফ্ল্যাটও কিনেছিলেন। ২০ মে কলকাতায় আইপিএলের সিজনের শেষ ম্যাচ। এই ম্যাচেই চেক মেট করতে চাইছেন গম্ভীর।
ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইডেনের বুকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে লখনউ সুপার জায়ান্টসদের এই ম্যাচ তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। কলকাতার বিরুদ্ধে আগ্রাসী হয়ে নামবেন গৌতম গম্ভীরের সৈনিকরা। স্ট্রাটেজিতেও কলকাতার থেকে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে লখনউ। কিন্তু দল ময়দানে নামার আগেই মোক্ষম চাল চললেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। ইডেনের ময়দানে আইপিএল এবং মোহনবাগান সমর্থকদের এক করতে পারলে লখনউয়ের যুদ্ধ যে অনেকটা সহজ হয়ে যাবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০ মে শেষ চালে কে বাজিমাত করে এখন সেইটাই দেখার।
ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) গড় হিসেবে পরিচিত শিলিগুড়িতে (Siliguri) উদ্বোধন হল মোহনবাগান অ্যাভিনিউয়ের (Mohun Bagan Avenue)। রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মোহনবাগান অ্যাভিনিউয়ের শুভ সূচনা হল। তবে এখানেই শেষ নয়, শিলিগুড়ি আগামীতে পেতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল লেনও। এ-নিয়ে কথাবার্তা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন, শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব।
শিলিগুড়ি পুর এলাকাস্থিত মহানন্দা নদী সংলগ্ন নিরঞ্জন ঘাট থেকে, সূর্যসেন পার্ক অবধি রাস্তার নামকরণ করা হল মোহনবাগান অ্যাভিনিউ। ঘটনায় কার্যত উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা, মোহনবাগান সমর্থক থেকে শুরু করে ক্রীড়াপ্রেমী মহল। উদ্বোধনী পর্বে এদিন উপস্থিত ছিলেন মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত। উদ্বোধক শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব।
মেয়র গৌতম দেব এদিন জানান, একইসঙ্গে দুটি ক্লাবকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। হয়তো কিছুটা সময় লাগছে। তবে তারিখ চূড়ান্ত হলেই শিলিগুড়িতে ইস্টবেঙ্গল লেনও হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মোহনবাগান আইএসএল জয়ের (ISL Champion) পর শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। ক্লাব ডেভেলপ ফান্ডে এবং সমর্থকদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষণা করেন তিনি। তিনি বলেন, 'আমি দেখলাম বাংলারাও অনেক ছেলে এগিয়ে এসেছে। ভারতের হয়েও খেলেছেন এখানেও খেলছেন এবং তাঁদের জীবনে একরাশ স্বপ্ন। বুকভরা স্বপ্ন। আমরা সবাই স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, মোহনবাগান (Mohan Bagan Club) একটা করে জিতছে। ইস্টবেঙ্গল বেচারা এবছর দল তৈরি করতে পারেনি ঠিক করে। আমি ওদের দোষ দিচ্ছি না।'
তিনি জানান, 'কারণ হচ্ছে ওরা টিমটা ভালো করে তৈরি করতে পারেনি। কারণ ওদের আর্থিক অসুবিধা ছিল। কিন্তু মোহনবাগান যে খেলাটা আগেই খেলে দিয়েছে, সেটা হচ্ছে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার তো টাকার অভাব নেই। আর ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনের কর্ণধার, বাড়তি সাহায্য করে ক্লাবটাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। মোহনবাগান সুপার চ্যাম্পিয়ন, সুপার জায়ান্ট।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি অরূপকে বলেছিলাম সঞ্জীবের সঙ্গে কথা বলো। এই ATK শুনতে ভালো লাগে না। মোহনবাগান মোহনবাগান। তার ইতিহাস গোর্খাদের বিরুদ্ধে খালি পায়ে লড়াই করে এই মোহনবাগানকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর নাম গোষ্ঠ পাল, আমরা যেন ভুলে না যাই। আমার মনে আছে আমি তখন বেশ ছোট, আর আমার মা খুব খেলা দেখতেন। আমি কার সাপোর্টার বলবো না। আমি সবার সাপোর্টার।'
মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'কিন্তু আমার মা মোহনবাগানের খেলা হলেই কালীবাড়িতে পুজো দিতে যেতেন। আর আমার দাদা মোহনবাগানের সাপোর্টার তবে এখন নিজেই ইস্টবেঙ্গলে আছে। ওর বাড়ি প্রায় ভেঙেই যাচ্ছিল, সারাক্ষণ শুধু ফুটবল ফুটবল ফুটবল। এই করে ওর বৌ একদিন আমায় বলল, ওকে আমি ডিভোর্সই দিয়ে দিব। আমি বললাম কেন? বললো বাড়িতে সময় দেয় না সারাক্ষণ ফুটবল করে বেড়াই। এই করে জীবনটাও কাটিয়ে দিয়েছে। আমাদের পাড়ায় ছোট্টো একটা ক্লাব আছে মিলন সংঘ ক্লাব। সুপার লিগে খেলে। আমি একদিন ইতিহাস বাছতে গিয়ে খবর পেলাম আমার বাবা নাকি স্বাধীনতার আগে ওই ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আজও বাবার নামেই রেকর্ড আছে। এই জন্য আমাদের পরিবার এমনিতেই ফুটবলের সঙ্গে আন্তরিকভাবে যুক্ত।'
তাই তিনি আরও বলেন, 'আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, স্বপ্ন আমিও দেখি। যেদিন ফাইনাল খেলা সেদিন ভোরবেলা আমি দেখছি মোহনবাগান জিতে গিয়েছে। আমি বাড়িতে বললাম তখনও খেলাই শুরু হয়নি। তার মানে মাথায় একটা ক্লিক করছে, বাংলা এত দূর এসেও পিছিয়ে যাবে। এটা কখনও হয় না। এবং এটা আমি অরূপকে ম্যাসেজ করে জানিয়েও দিয়েছিলাম। যাতে চিন্তা করিস না বাংলা আজ ভারত সেরা, আমরা গর্বিত। আমরা কথায় কথায় বলি, what bengal thinks today, India thinks tomorrow- মোহনবাগানই এই পথটা আমাদের দেখিয়েছে। সব খেলার সেরা বাঙালির ফুটবল প্রমাণ করে দিয়েছে মোহনবাগান ক্লাব।'
এটা শুধু মোহনবাগানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটা ভারত সেরা। আগামী দিনে চাই আপনারা বিশ্বসেরা হোন। একদিন মোহনবাগান কেন ব্রাজিলের সঙ্গে খেলবে না, একদিন মোহনবাগান কেন পোল্যান্ডের সঙ্গে খেলবে না, একদিন মোহনবাগান কেন ইতালির সঙ্গে খেলবে না, খেলতে হবে এবং বিশ্বজয় করতে হবে। বাংলাকে নেগলেক্ট করলে হবে না। বাংলা করে দেখাতে পারে। বাংলা জয় করতে পারে। একদিন আপনারা বিশ্বজয় করবেন। সেইদিন মনে রাখবেন এই ছোট্টো কথাটা আমি বলে গিয়েছিলাম কারণ আমি মনে করি সারা পৃথিবী একদিন আপনাদের দরজায় আসবে। এভাবেই মোহনবাগান সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আমি সমর্থকদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য এবং মোহনবাগান ক্লাবকে ডেভলপ করতে রাজ্য সরকারের তরফে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে যাচ্ছি। আপনারা আরও ভালো খেলুন, আমাদের গর্ব আপনারা। এই মন্তব্য এদিন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, 'খেলা হয়েছে, খেলা হবে, আবার খেলা হবে। আবার জিততে হবে। বিশ্বজয় করতে হবে, আমি বিশ্বকাপ নিয়ে আসতে চাই।'
প্রসূন গুপ্ত: অবশেষে আইএসএল (ISL) ট্রফি জয় করলো শতাব্দী প্রাচীন মোহনবাগান দল। থুড়ি এটিকে মোহনবাগান (Mohunbagan)। যদিও শনিবার রাতেই উল্লাসিত দলের কর্নধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা দলের এটিকে নামটিকে বিদায় দিলেন, এবার থেকে নতুন মোড়কে মোহনবাগান সুপার জায়েন্টস। কিন্তু সাহেবদের ১৯১১-তে পরাজিত করা মোহনবাগান সমর্থকরা চায়, স্বাধীনতার লড়াইয়ে প্রথম ক্রীড়া দল স্বনামেই বিরাজমান হোক।
আরব সাগরের তীরে কাজু আর ফেনির গন্ধে ম-ম করা অথবা চিরকালের বাঁধা না মানা বাঙালির রোমান্টিকতা খোঁজা গোয়া কিন্তু বঙ্গবাসীকে বেড়াতে যাওয়ার বোনাস দিল আইএসএল ট্রফি। পমফ্রেট ফ্রাইয়ে শনিবার রাতে উপস্থিত বাঙালি আনন্দ করতে পারেনি। মন পড়ে রয়েছে মানিকতলা বা মালদা বাজারের গলদা চিংড়ির দিকে। রবিবার বোধহয় ধর্মতলার নিউ মার্কেটে কুঁচো চিংড়িও পাওয়া যাবে না।
আজ টুটু বোস বা মন্ত্রী অরূপ রায়ের বাড়ির লাঞ্চের মেনু কী জানতে উৎসুক ঘটি-বাঙাল সবাই। আজ আর ঘটি বাঙালের ঝগড়া নেই। আমরা পারছি না তা বলে বাংলায় ট্রফি আসবে না তা মোটেই চাই না, বলেই ফেললেন বাঙাল মন্ত্রী ইস্টবেঙ্গলের গোড়া সমর্থক পার্থ ভৌমিক। দিলীপ ঘোষকে খুশি মনেই ট্রফি জয়ের শুভেচ্ছা জানাবেন কি গর্বিত কাঠ বাঙাল রূপা গাঙ্গুলি?
বহুদিন বাংলায় ট্রফি নেই। আজকাল আর আই লিগ, আইএফএ শিল্ড বা ডুরান্ড ইত্যাদি ট্রফির দিকে নজরই নেই কলকাতার দুই প্রধানের। এখন তো আর জ্যোতিষ গুহ বা ধীরেন দেরা ক্লাব চালান না বা ওই ঐতিহ্য রাখাও সম্ভব নয়। ওসব অতীত মূল্যহীন। এটা ফেল কড়ি মাখো তেলের যুগ। কোটি কোটি টাকা ঢালো দল গড়ো। কে বাঙাল কে ঘটি কিছু আসে যায় না। যদি এমন হয় যে, গোটা দলটিতেই অবাঙালি বা বিদেশী দরকার তো কোই পরোয়া নেহি। দলের নামের আগে বা পরে যদি স্পনসরের নাম বসাতে হয় তবে তাই সই। হচ্ছেও তাই। আজকের বাজারে ট্রফি নিয়ে কেউ পাত্তা দেয় না। দুই দলের সুস্থ শত্রুতাটিও বিদায় নিয়েছে। টার্গেট একটিই আইএসএল ট্রফিতে কটা জয় জরুরী তাই ভাবো।
কিন্তু মালিকরা কি ভাবল তা নিয়ে কী আসে যায়। আজও দুই ক্লাবে খ্যাপা দর্শকের প্রাচুর্য, তারা জয় চায় ট্রফি চায়, তা ফাইনালে টাইব্রেকারে ৪-৩ হোক না কেন।
সেই জয়ই পেল মোহনবাগান। মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা রাতেই এসে গেল কর্মকর্তাদের কাছে। এল শুভেচ্ছা ইস্টবেঙ্গল সহ বিভিন্ন ক্লাব থেকে। শুভেচ্ছা তো চিরকালীন কিন্তু ওপার থেকে আসা উদ্বাস্তুদের একটা গর্বের জায়গা ছিল ইস্টবেঙ্গল, কিন্তু তার হতশ্রী অবস্থা দেখে ওপার থেকে আসা মানুষগুলো ভাবে কবে আর স্বনির্ভর হবো।
আইএসএল (isl) জয়ের পরেই মোহনবাগানের নাম পরিবর্তনের বড় ঘোষণা ক্লাব মালিক গোয়েঙ্কার (goenka) । শনিবারই পেলান্টিতে ৪-৩ গোলে বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে প্রথম বারের জন্য আইএসএল জিতে নেয় এটিকে মোহনবাগান। এর পরেই মোহনবাগান ক্লাব মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা ঘোষণা করে দলের নাম পরিবর্তনের কথা। শনিবার তিনি জানান, আইপিএলে তাঁর দল লখনউয়ের আদলে মোহনবাগানের আগে জুড়বে ' সুপারজায়ান্ট' অর্থাৎ মোহনবাগানের নামের শুরু থেকে সরে গেল ‘এটিকে’। পরের মরসুম থেকে দলের নতুন নাম হচ্ছে ‘মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস’। শনিবার মোহনবাগান জেতার পরে সঞ্জীব বলেন, ‘বাগান সমর্থকরা মোহনবাগানের নামের সামনে থেকে এটিকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছিলেন। এটাই মোহনবাগান সদস্য ও সমর্থকেদের আমার উপহার।’
ফুলটাইম হওয়ার পর দুপক্ষেরই গোল সংখ্যা ছিল ২-২, পরে পেলান্টিতে ৪-৩ গোলে বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে দেয় এটিকে মোহনবাগান। মোহনবাগান এর আগে তিন বার জাতীয় লিগ এবং দু’বার আই লিগ জিতেছিল। এটিকের সঙ্গে জুটি বাঁধার পর এই প্রথম আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হল মোহনবাগান। মোট ছ’বার ভারতসেরা হল সবুজ-মেরুন। প্রথম বার তারা জাতীয় লিগ জিতেছিল ১৯৯৮ সালে। ২০০০ এবং ২০০২ সালেও জাতীয় লিগ জেতে মোহনবাগান। জাতীয় লিগের নাম পাল্টে আই লিগ হওয়ার পর বেশ অনেক বছর অপেক্ষা করতে হয় সবুজ- মেরুনকে। ২০১৫ সালে ট্রফি জিতেছিল তারা। এ বারের লিগে মোহনবাগান শেষ করে তিন নম্বরে। ২০ ম্যাচে তারা পেয়েছে ৩৪ পয়েন্ট। লিগে ইস্টবেঙ্গলকেও দু’বার হারায় সবুজ-মেরুন।
ফের ডার্বির রং সবুজ-মেরুন (ATK Mohun Bagan)। আইএসএল ডার্বিতে শনিবার এটিকে মোহনবাগান জয় পেল ২-০ গোলে। বাগান শিবিরের দুই গোলদাতা স্লাভকো দামজানোভিচ ও দিমিত্রি পেত্রাতোস। লাল-হলুদকে (East Bengal) পরাজিত করে সুপার লীগের প্লে অফে পৌঁছে গেল জুয়ান ফেরান্দর দল।
আগামী ৪ঠা মার্চ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ওড়িশার মুখোমুখি হবে টিম এটিকে মোহনবাগান। এদিন শুরু থেকেই ছন্নছাড়া দেখাচ্ছিল দুই দলকেই। মিস পাস, মাঝ মাঠের ভঙ্গুর অবস্থা দেখা গিয়েছে। যদিও লাল হলুদের তুলনায় ধারে ও ভারে এগিয়ে ছিল মোহনবাগান। দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফেরে মোহনবাগান। প্রথম গোলটি আসে ৬৮ মিনিটে। গ্যালারিতে তখন আপামর মোহন সমর্থকদের উচ্ছাস। যদিও আর পাঁচটা ডার্বির মতো উত্তাপ ছিল না শনিবার। টিকিটের জন্য হা হুতাশ সেভাবে চোখে পড়েনি।
উল্লেখ্য, টানা ৮ ডার্বিতে জয় পেল বাগান শিবির। এই পরাজয়ে খানিক প্রশ্নের মুখে পড়ে গেলো ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিভন কনস্টান্টাইনের ভবিষ্যৎ। ১৯ পয়েন্ট নিয়ে লীগ তালিকায় ১০ নম্বরে শেষ করল ইস্টবেঙ্গল।
পরপর ছ'বার বড় ম্যাচ মোহনবাগানের কাছে হারের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল। যদিও রবিবারের ডুরান্ড কাপ ডার্বিতে গোটা নব্বই মিনিট ভালো খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু প্রথমার্ধের এক্সট্রা টাইমে ইস্টবেঙ্গলের সুমিত পাসির আত্মঘাতী গোলই বিপদ বাড়ায় লাল-হলুদ ব্রিগেডের। এদিন ৯০ মিনিট শেষে মোহনবাগানের পক্ষে ফল ১-০।
এই যুবভারতীতেই বছর তিনেক আগে শেষ ডার্বিতেও হারতে হয়েছিল লাল-হলুদ শিবিরকে। সেই ডার্বির পর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বইয়েছে। আইএসএল-এ মুখোমুখি হয়েছে এই দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু ফল গিয়েছে মোহনবাগানের পক্ষেই। তবে এদিন ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখে কিছুটা হারের জ্বালা জুড়িয়েছে সমর্থকদের। অন্তত বল পজেশন থেকে গোল শটে মোহনবাগানের থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। একাধিবার মোহনবাগানের গোলের কাছে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ চলে গেলেও তিন কাঠি পার করতে পারেননি ইভান গঞ্জালেজরা।
রবিবার ইমামি ইস্টবেঙ্গলের অভিজ্ঞ কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন দল গঠনে চমক দিয়েছিলেন। প্রথমার্ধে কারালাম্বোস কিরিয়াকু, ইভান গঞ্জালেজ, আলেক্স লিমা এবং এলিয়ান্দ্রো, এই চার বিদেশিকে দলে রেখেছিলেন তিনি। অপরদিকে, এটিকে মোহনবাগানের চার বিদেশি ছিলেন এফ পোগবা, জনি কাউকো, কার্ল ম্যাকহিউ এবং হুগো বুমোস। যদিও প্রথমার্ধে কিছু সময় ম্যাচে দাপট ছিল মোহনবাগানের। শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তায় হাঁটলেও ভাঙতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স। ফুটবল সমালোচকরা বলছেন, এই অতিরিক্ত রক্ষণই কাল হয়েছে লাল-হলুদ শিবিরের। প্রথম ৪৫ মিনিট প্রত্যাশা জাগিয়েও অউন গোলে পিছিয়ে থেকেই খেলা শেষ করে লাল-হলুদ।