যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের (TMC Leader Kuntal Ghosh) বাড়িতে উদ্ধার হয়েছে দুটি ডায়রি। সেই ডায়রির পাতায় পাতায় রহস্য এবং সাঙ্কেতিক ভাষা। ইডির (ED Arrest) গোয়েন্দারা এখন সেই সাঙ্কেতিক ভাষার রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যস্ত। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে এই ডায়রি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনটাই প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করছে ইডি। তবে শুধু জোড়া ডায়রি নয় যুব তৃণমূল নেতার বাড়িতে পাওয়া তিনটি পেন ড্রাইভও (Pen Drive Mystery) কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে বড় তথ্য-প্রমাণ বলে সূত্রের খবর। সেই পেন ড্রাইভে কী রয়েছে,খতিয়ে দেখতে দু'জন অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
এদিকে, ইডির হাতে গ্রেফতারির দিন এবং সোমবার তাপস মণ্ডলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন কুন্তল ঘোষ। তাপস মণ্ডল তাঁর থেকে টাকা চেয়েছিলেন, না দেওয়ায় চক্রান্তের শিকার তিনি। গ্রেফতারির পর গত তিন দিন যাবৎ এই দাবি করছেন কুন্তল। এমনকি নীলাদ্রী বলে জনৈকর নাম প্রকাশ্যে এনেছেন যুব তৃণমূল নেতা। মঙ্গলবার ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে আসা তাপস মণ্ডল বলেন, 'নীলাদ্রি আমার একজন পরিচিত। আমার কাছে আসে, তাঁকে চিনি।' পাশাপাশি কুন্তলের থেকে টাকা চাওয়া প্রসঙ্গে তাপস মণ্ডল জানান, 'টাকা তো চাইবো, চাকরিপ্রার্থীদের টাকা চাইবো না! ওকে যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকাই চাওয়া হয়েছে।'
এদিকে কুন্তলের স্ত্রী দাবি করেন, তাপস কুন্তলের ফ্ল্যাটে এসে থাকতেন। সেই ফ্ল্যাটে তাপসের ইনসুলিন পাওয়া গিয়েছে। এই দাবিও অস্বীকার করেন তাপস মণ্ডল। এমনকি, কুন্তলকে কোনওভাবেই তিনি ব্ল্যাকমেল করতেন না। সিজিও কমপ্লেক্সের ঢোকার মুখে জোর গলায় এই দাবি করেন তাপস মণ্ডল।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ইডির (ED) তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃত যুব তৃণমূল নেতা (TMC Leader) কুন্তল ঘোষের ডায়রিতে একাধিক সাংকেতিক ওয়ার্ড লেখা। ডায়রি কারও হাতে পড়লেও কোন তথ্য যাতে ফাঁস না হয়, তার জন্য সাংকেতিক ভাষায় লেখা। এমনটাই মনে করছেন ইডি গোয়েন্দারা। এই সাংকেতিক ভাষায় লেখা, মোট কত টাকা তোলা হয়েছে, এমনটাই প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করছে ইডি। এদিকে, হেফাজতে থাকা কুন্তলকে (Kuntal Ghosh) সোমবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে ইডি দফতরে আনা হয়েছে, চলছে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ।
পাশাপাশি সোমবারও তাঁর গ্রেফতারিতে তাপস মণ্ডলের চক্রান্ত দেখছেন কুন্তল ঘোষ। মেডিক্যাল টেস্টের জন্য যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে যুব তৃণমূল নেতা বলেন, 'আগেও বলেছি, এখনও বলছি তাপস মণ্ডলের চক্রান্ত।' এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ইডি সূত্রে খবর যেদিন গ্রেফতার হয়েছেন কুন্তল ঘোষ, সেদিনই তাঁকে ডায়রি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তিনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। তাই গ্রেফতারের পর হেফাজতে নিয়ে ফের তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। কিন্তু এখনও ডায়রি প্রশ্নে কোনও সদুত্তর পায়নি কেন্দ্রীয় সংস্থা।
অপরদিকে, সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুর পর সতর্ক ইডি। কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে কুন্তলকে। জেরার সময় হচ্ছে ভিডিওগ্রাফি। তাঁর গতিবিধি রাখা হয়েছে সিসিটিভি নজরদারিতে। এমনকি শৌচাগারে গেলেও, চলছে বাইরে থেকে নজরদারি।