প্রসূন গুপ্ত: ৩০ জুন মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পটভূমি বদলে গিয়েছিলো। শিবসেনা দু'ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে উদ্ধব সেনা আর শিন্ডে সেনায় পরিণত হয়। মূল চালক উদ্ধব ঠাকরেকে সরে যেতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে। ক্ষমতায় এসেছিলো বিজেপির হাত ধরে শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়ক একনাথ শিন্ডে, সঙ্গে পেয়েছিলেন প্রায় ৪০ জনের বেশি বিধায়ক। ভেঙে গিয়েছিলো শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেস জোট সরকার। শিন্ডে হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ হয়েছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী।
সেবার বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছিল 'শিন্ডে শিবসেনা'র থেকে ৩ গুন্ বেশি আসন থাকা সত্বেও তাদের মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দেওয়া সঠিক? স্বয়ং ফড়নবিস আপত্তি তুলেছিলেন কিন্তু অমিত শাহের অনুরোধে তিনি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। শোনা যাচ্ছে, এরপর দু'মাস গড়ায়নি এরই মধ্যে দুই শরিকের মধ্যে শুরু মন কষাকষি। শিন্ডে শিবসেনার ধারণা হয়েছে, যতই একনাথ মুখ্যমন্ত্রী হন না কেন, আসলে রাজ্য চালাচ্ছে ফড়নবিস।
শিন্ডের সঙ্গে শিবসেনা বিধায়ক যেমন বেরিয়েছিল, তেমন ১২ সাংসদও নতুন জোটে যোগ দেন। এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে শোনা যাচ্ছে শিবসেনার জেতা আসন বুলধনা কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে বিজেপি। এভাবেই জোটের অন্দরে কোথাও বিদ্রোহের ছবি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে জানিয়েছেন, ২০২৪-এ শিন্ডের বদলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন দেবেন্দ্র ফড়নবিস। এতেই ঘৃতাহুতি হয়েছে বিদ্রোহী শিবসেনার মধ্যে। দলের সমর্থকদের মধ্যে এমন কথাও হচ্ছে যে, বিহারে নীতীশ কুমারকে দেখে ভাবনা ভাবা উচিত ছিল।
অনেকেই ফের উদ্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এরই মধ্যে বিজেপির হাতছাড়া বৃহন্মুম্বই বা মুম্বই পুরসভা। এই পুরসভা ফের একক ভাবে দখল করতে চাইছে ফড়নবিসের দল। এতে ফের ক্ষিপ্ত শিন্ডে বাহিনী। এই মুম্বই পুরসভা কিন্তু এশিয়ার মধ্যে অন্যতম ধনী সংস্থা ফলে চিরকাল এটা দখলে সব দলই উদগ্রীব। শেষ খবর এই দোলাচলে বেজায় খুশি উদ্ধব, শরদ পাওয়াররা। পাওয়ার তো বলেছিলেন, এই সরকার ৬ মাসও টিকবে না।
যৌন ক্ষুধা কার বেশি, পুরুষ না মহিলার? না, এর উত্তর দেওয়ার জন্য এই প্রতিবেদন নয়। তবে সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষার রিপোর্ট থেকে পাঠককূল হয়তো একটা ধারণা পেলেও পেতে পারেন। কিন্তু কী সেই সমীক্ষা?
সমীক্ষাটা হয়েছিল ২০১৯-২০ সালের মধ্যে। করেছিল ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে (এনএফএইচএস) (NFHS)। সারা দেশের ৭০৭ টি জেলায় চালানো হয়েছিল সমীক্ষা। তাতে কথা বলা হয়েছিল এক লক্ষ পুরুষ (Men) এবং ১ লক্ষ ১০ হাজার মহিলার (Women) সঙ্গে। তাতেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, ১১ টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের যৌনসঙ্গী (Sexual Partner) কিন্তু বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যে সব রাজ্যে এই চিত্র উঠে এসেছে, সেগুলি হল রাজস্থান, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ, মধ্যপ্রদেশ, অসম, কেরল, লাক্ষাদ্বীপ, পুদুচেরি এবং তামিলনাড়ু। এদের মধ্যে রাজস্থানের চিত্র উল্লেখযোগ্য। সেখানেই একজন মহিলার যৌনসঙ্গী সবচেয়ে বেশি। তথ্য অনুসারে, ওই রাজ্যে একজন মহিলার যেখানে যৌনসঙ্গী গড়ে ৩.১, সেখানে একজন পুরুষের যৌনসঙ্গী ১.৮। শহুরে মহিলাদের তুলনায় গ্রামীণ ক্ষেত্রে যেমন একাধিক যৌনসঙ্গী রাখার প্রবণতা বেশি, তেমনি একজন বিবাহিত মহিলার তুলনায় এই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছে অবিবাহিত, ডিভোর্সি, বিধবা অথবা আলাদা থাকা মহিলাদের ক্ষেত্রে। এঁদের একজনের সঙ্গে দুই বা তার বেশি পুরুষের সম্পর্ক ধরা পড়েছে সমীক্ষায়।
অবশ্য এই সমীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল কিছুটা আলাদা। একাধিক জনের সঙ্গে যৌন মিলনের ফলে কতটা বিপদ আমরা ডেকে আনছি, সেটা যাচাই করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। শুধু তাই নয়, এই পরিসংখ্যানে আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রের এমন কিছু তথ্য থাকে, যা ভবিষ্যতে সরকারকে নীতি নির্ধারণে অনেকটাই সাহায্য করে থাকে।
প্রসূন গুপ্ত: জন্মাষ্টমীর আনন্দে যখন রাজধানী মাতোয়ারা তখন সকাল থেকে সিবিআই হানা দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়ার বাড়িতে। বিষয় আবগারি দফতরের বেহিসাবি কাজ। দিল্লি আবগারি নীতিতে বেনিয়ম চলছে এই অভিযোগে সিবিআই আগেই এফআইআর করেছিল। তাঁদের বক্তব্য, মদ বিক্রির সংক্রান্ত বেনিয়ম। দিল্লি পুলিস যদিও দিল্লি সরকারের অধীনস্থ নয়। কাজেই শোনা গিয়েছ, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে আবগারি দফতরের কাজ নিয়ে অসন্তুষ্ট তারা। এরপরই নাকি তদন্তে নামে সিবিআই এবং বর্তমান আপ সরকারের আবগারি দফতরের মন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে সিসোদিয়ার বাড়িতে একবার সিবিআই হানা দিয়েছিল, আজ নিয়ে দ্বিতীয়বার সিবিআই তল্লাশি।
শুধুমাত্র মনীশ সিসোদিয়ার বাড়িই নয়, তাঁর বাড়ির আশেপাশে ২০টিরও বেশি এলাকায় একইসঙ্গে অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সিসোদিয়া অবশ্য বিচলিত নয় বলে জানাচ্ছেন। এই নিয়ে তিনি টুইটও করেছেন। তিনি টুইটে জানাচ্ছেন, সিবিআই এসেছে, স্বাগত তাদের। আমরা (অর্থাৎ আপ পার্টি) খুব সৎ, এই বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যের যে, দেশে যারা ভালো কাজ করে তাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। এ সমস্ত কারণে আমাদের দেশ পয়লা নম্বরে যেতে পারল না।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, এর আগেও সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে। সেবারও কিছু পায়নি, এবারও পাবে না। কেজরিওয়াল প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ বলে জানা গিয়েছে।
মূল ঘটনার বিষয় মদের দোকান। সিসোদিয়া জানিয়েছেন, দিল্লির কিছু অঞ্চলে বা এলাকায় মদের দোকান খোলা নিয়ে অবস্থান পাল্টিয়েছেন উপ-রাজ্যপাল অনিল বাইজল। মন্ত্রিসভা থেকে একসময় অনুমোদন করা হয়েছিল নতুন স্থানে এই ব্যবসা খোলা হবে। মন্ত্রিসভার এই বিলে সম্মতি নাকি জানিয়েছিলেন উপ-রাজ্যপাল। পরে অজানা কারণে এই নীতি অনুমোদন করছেন না তিনি। এর ফলে হাজার হাজার কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপি বিরোধীরা সচল হয়ে জানাচ্ছে, সিবিআই দিয়ে রাজনীতি চালাচ্ছে সরকার।
দিঘার (Digha) উত্তাল সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়া পর্যটককে (Tourist) উদ্ধার করলেন স্থানীয় যুবক, নুলিয়া ও সিভিল ডিফেন্সের (Civil Defence) কর্মীরা। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের জেরে আজ সকাল থেকে উত্তাল রয়েছে দিঘার সমুদ্র। আর সমুদ্রে প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে নামতে গিয়ে তলিয়ে গেলেন এক পর্যটক। তাঁকে উদ্ধার (Rescue) করে দিঘা রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। এই যুবকের নাম সুপ্রকাশ মণ্ডল বলে জানা গিয়েছে। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়।
এদিন সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে উপকূলে। গার্ডওয়াল ছাপিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ। আগেই এই সময় উত্তাল সমুদ্রে নামতে বারণ করা হয়েছিল। স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে বারবার মাইকিংও করা হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান ওই পর্যটক। সবার চোখের সামনেই তিনি ঢেউয়ের তোড়ে অনেক দূরে চলে যান। সঙ্গে সঙ্গে এই দৃশ্য দেখে দৌড়ে আসেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। আসেন নুলিয়ারাও। জলে ঝাঁপ দেন স্থানীয় কয়েকজন যুবকও। তাঁদের প্রচেষ্টায় ওই যুবককে উদ্ধার করে ডাঙায় তোলা সম্ভব হয়। তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
ওই যুবককে বাঁচিয়ে এখন হিরো এলাকারই ছেলে সৈকত। দেখুন, তাঁকে নিয়ে কেমন উচ্ছ্বাস। শুনুুন তাঁর কথা। সকলেই তাঁর মুখ খেকে শুনতে চাইছে উদ্ধারের সেই কাহিনী। জীবন হাতে নিয়ে জলে সে কীভাবে ঝাঁপ দিলেন, সে কথা শুনুন তাঁর মুখ থেকেই।
মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) পালাবদল একমাস হয়ে গিয়েছে। উদ্ধবের জায়গায় খানিকটা নাটকীয় পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন একনাথ শিন্ডে (CM Eknath Shinde)। তাঁর ডেপুটি সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস। এবার শিন্ডে সেনা এবং বিজেপি জোট সরকারের ৪০দিনের মাথায় মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ (Cabinet Expansion)। মঙ্গলবার এই জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় ১৮ জন শপথ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৭ জনই আগেও কোনও না কোনও আমলে ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। তবে সবপক্ষকে হতাশ করে এই মন্ত্রিসভায় নেই কোনও মহিলা প্রতিনিধি।
এদিন সকাল ১১টায় রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির কাছে শপথ নিলেন শিন্ডে সেনার ৯ জন এবং বিজেপির ৯ জন বিধায়ক। এই তালিকায় রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি চন্দ্রকান্ত পাটিল, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুধীর মুঙ্গনতিওয়ার প্রমুখ। রয়েছেন সদ্য কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে আসা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা রাধাকৃষ্ণ ভিকে পাতিলও।
মহারাষ্ট্রের ধনীতম বিধায়ক তথা মুম্বই শহর বিজেপির সভাপতি এমপি লোঢাও এই জোট সরকারের ক্যাবিনেটে জায়গা পেয়েছেন। এছাড়াও আছেন বিজেপি বিধায়ক, তফসিলি নেতা বিজয়কুমার গাভিট, সুরেশ খারে, অতুল সাভের মতো গেরুয়া শিবির প্রভাবশালী নেতারাও। অন্য দিকে, শিন্ডে ঘনিষ্ঠ দীপক কেসরকর, তানাজি সামন্ত, গুলাবরাও পাটিল, উদয় সাবন্তরা ঠাঁই পেয়েছেন মন্ত্রিসভায়। ২০১৯-এর বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেস ছেড়ে শিবসেনায় যোগ দিয়ে জিতেছিলেন আব্দুল সাত্তার। শিন্ডে শিবিরে যোগ দিয়ে এবার মন্ত্রী তিনিও।