সমাজে ক্রমশ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে হেরোইনের (Heroin) প্রতি আসক্তি (Addiction)। গ্রামীণ এলাকা থেকে শহর, হেরোইনের আসক্তির ফলে ক্রমশ বেড়েই চলেছে চুরি থেকে শুরু করে নানানরকম অসামাজিক কাজকর্ম। বাড়ছে অশান্তি।
বুধবার গবীর রাতে হেরোইনে নেশাগ্রস্ত হয়ে নিজের বাড়িতেই আগুন (Fire) ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সামশেরগঞ্জ থানার পুলিস ও দমকলের (Fire Brigade) একটি ইঞ্জিন। বেশ কিছুক্ষণের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। যদিও আগুনে কার্যত ভস্মীভূত হয়ে যায় বাড়ির যাবতীয় আসবাবপত্র। জানা গিয়েছে, এদিন রাতে হেরোইনে নেশাগ্রস্ত হয়ে বাড়িতে আসে আব্দুল মহলদার নামে এক ব্যক্তি। আগেই হেরোইন খেয়ে বাড়ির সমস্ত ছেলেমেয়েদের তাড়িয়ে দেয় সে। তারপর হঠাতই নিজের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় ওই ব্যক্তি। তাতেই কার্যত নষ্ট হয়ে যায় বাড়ির যাবতীয় আসবাবপত্র। ক্রমশ সাধারণ মানুষ ও যুব সমাজের মধ্যে হেরোইন আসক্তি বৃদ্ধির ফলে এধরনের ঘটনা ঘটছে বলেই দাবি স্থানীয়দের। অবিলম্বে হেরোইন রোধে পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ রাজ্যের একদা সচিবালয় মহাকরণে অগ্নিকান্ড (Fire at Writers Building)। জনমানসে রাইটার্স বিল্ডিং নামে খ্যাত এই সরকারি অফিসের একতলার একটি ঘরে আগুন লাগে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিনের (Fire Tenders) প্রচেষ্টায় প্রায় একঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাস্থলে ছিলেন কলকাতা পুলিসের সিপি বিনীত গোয়েল, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং ডিজি দমকল রণবীর কুমার।
জানা গিয়েছে প্রথম তলার স্বরাষ্ট্র দফতরের একটি অফিস ঘরে লাগা এই আগুনে কম্পুটার এবং কিছু নথি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বাইরে হতাহতের কোনও খবর নেই। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ফরেন্সিক তদন্ত হবে। এমনটাই জানান দমকল মন্ত্রী।
সংস্কারের স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাজ্য প্রশাসনের একদা এই আঁতুড়ঘর। অধিকাংশ দফতর নবান্নে স্থানান্তরিত হলেও এখনও কয়েকটি দফতর রয়ে গিয়েছে কলকাতার বড় লালবাড়িতে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই ধুন্ধুমার কাণ্ড বর্ধমান (Burdwan) বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের তালা ইট দিয়ে ভেঙে ও গেট টপকে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েন এসএফআইয়ের (SFI) সদস্যরা। ঘটনায় মুহূর্তের মধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এদিন মূলত দুর্নীতি, স্বজনপোষণ ও বেনিয়ম নিয়ে অভিযোগ তুলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় (university) অভিযানের ডাক দিয়েছিল এসএফআইয়ের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি। তবে বেলা বাড়তেই তাঁদের এই প্রতিবাদ মিছিল ভয়াবহ রূপ নেয়। এদিন কার্জন গেট (Curzon Gate) থেকে বিশ্ববিদ্যালয় গেটে মিছিল পৌঁছলে রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষোভকারীদের আটকাতে নিরাপত্তারক্ষীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা মেরে দেয়। কিন্তু এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের তালা ইট দিয়ে ভেঙে ও গেট টপকে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েন এসএফআই-র সদস্যরা। এখানেই শেষ নয়, কার্যত উপাচার্যের কার্যালয়ের গেট আটকে তার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালান তাঁরা। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্যের আশ্বাসে উঠে যায় এসএফআইয়ের বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাড়ি চত্বর।
জানা যায়, বর্ধমানের বাদামতলা (Badamtala) থেকে শুরু হয় এসএফআইয়ের মিছিল। এরপর কার্জন গেট, বিসি রোড (B.C Road) হয়ে সেই মিছিল বেলা ১২ টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশদ্বারে গিয়ে পৌঁছয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের তালা খোলার দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন এসএফআই কর্মীরা।
পুরাতন ঢাকার চকবাজারের দেবী ঘাটে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড(fire)। প্লাস্টিক কারখানায়(plastic factory) ভয়াবহ আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে ছয় জনের মৃত্যুর(death) খবর মিলেছে। সূত্রের খবর, নিহত ছয়জনই কারখানার নিচে অবস্থিত একটি হোটেলের শ্রমিক। সোমবার দুপুরে আগুন লাগে বলে জানা গেছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
জানা গিয়েছে, রাতে ডিউটি করে হোটেলের উপরের একটি ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন কর্মীরা। সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে ওই আগুন ছড়িয়ে পুড়ে যায় হোটেল এবং ঘরগুলি। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তারপরেই সেখান থেকেই কর্মীদের দেহ উদ্ধার হয়। ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনতলা ভবনের নিচতলায় অবস্থিত একটি হোটেলের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসে ওয়্যার হাউস পরিদর্শক বলেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছজন মারা গিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান জানান, যে ঘর থেকে আগুন ছড়ায় সেখানে এবং আশপাশের কোনও ভবনেই নির্মাণের কোনও নিয়মনীতি মানা হয়নি। এই কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এত দেরি হয়েছে। অন্যদিকে, লালবাগ পুলিসের উপকমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন জানান, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সেখানে ওই ঘর এবং হোটেলগুলি করা হয়েছে। অবৈধভাবে এইসব হোটেল এবং অন্যান্য কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে ওই এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, এদিন বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মৃত্যুদিন। বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস থাকায় সবাই ছিলেন ছুটিতে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, বেলা ১২টা নাগাদ বিকট শব্দ শুনতে পান তাঁরা। এসে দেখেন ওই হোটেলে আগুন জ্বলছে। এরপর সেখান থেকে আগুন আশপাশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার মানুষজন। তারা আরও জানান, সরকারি জমি লিজ নিয়ে সেখানে কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। যে হোটেল থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে, সেখানে আগে গ্যাসের লাইন ছিল। বিল বকেয়া থাকায় হোটেলটির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। তখন থেকে তারা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করছে। কিন্তু সংকীর্ণ জায়গায় নিয়ম না মেনেই সব কিছু করার ফলে আগুন লাগে বলে দাবি তাদের।
৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন। মহাকরণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এদিন প্রধানমন্ত্রী সহ সকলকে শুভেচ্ছা জানান তিনি। ফিরহাদ হাকিম বলেন, ভারতের স্বাধীনতার পর অনেকে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বি আর আম্বেদকরের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে ভারতীয় সংবিধান।
স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় দুর্নীতি নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন। তাঁর আক্রমণের লক্ষ্যে ছিল রাজ্যের শাসকদল। তিনি বলেন, একদিকে দেশের কিছু মানুষের থাকার জায়গা নেই আর অন্যদিকে কিছু মানুষ থাকার জায়গায় বান্ডিল বান্ডিল টাকা রাখছে। নাম না করে পার্থ অর্পিতার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কটাক্ষ প্রধানমন্ত্রীর। নরেন্দ্র মোদী বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে পুরো শক্তি নিয়ে লড়তে হবে।
পালটা মোদীকে আক্রমণ করেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নাম করে সরকারি এজেন্সি দিয়ে রাজনৈতিক অভিষন্ধি পূরণ করা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, টাকা উদ্ধারের ঘটনা যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে নীরব মোদী, মেহুল চোকসি কয়েক হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে। তার কি কোনও ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এসএসসি দুর্নীতি নিয়োগ মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার। পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে বিপুল নগদ টাকা, সোনা উদ্ধারে হতভম্ব রাজ্যবাসী। অন্যদিকে, গরুপাচার পাচার মামলায় বীরভূমের হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার। দুজনকেই গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
শনিবার রাতে চুঁচুড়া থানার পুলিস (police) কোদালিয়া মনসাতলায় হানা দিয়ে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র (firearm)-সহ গুলি ও বিস্ফোরক (Explosive) উদ্ধার করেছে। ঘটনায় গ্রেফতার (arrest) করা হয়েছে ৮ জন দুষ্কৃতীকে। হুগলির (Hooghly) কুখ্যাত দুষ্কৃতী টোটন বিশ্বাসকে ইমামবাড়া হাসপাতালে (hospital) গুলি করে প্রাণে মারার চেষ্টার পর নড়েচড়ে বসল চন্দননগর পুলিস। টোটন বিশ্বাসকে এসএসকেএম (SSKM) থেকে চুঁচুড়া আদালতে (court) নিয়ে যাওয়ার সময় টোটন বাহিনী প্রিজন ভ্যানের পিছু নেয়। ঘটনায় ইতিমধ্যেই ডানকুনিতে ৩৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে টোটনের ভাই রূপচাঁদ। তাদের জেরা করে পুলিস আরও কিছু দুষ্কৃতীদের সন্ধান পায়।
চুঁচুড়ার রবীন্দ্র নগর এলাকায় বাড়ি টোটনের। এক সময় সেই এলাকায় নিজের সাম্রাজ্য চালাত টোটন। তাঁর সঙ্গীরা গ্রেফতার হতেই গ্যাং-এর দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়। কোদালিয়াতেও আশ্রয় নেয় কয়েকজন। এই খবর পেতেই গতকাল রাতে মনসাতলায় সুকুমার মাঝি ওরফে সুকুর বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিস আটজনকে গ্রেফতার করে। ২০টি আগ্নেয়াস্ত্র তার মধ্যে ৯ এমএম, পিস্তল পাইপ গান উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হয় তিনটি ফাঁকা ম্যাগাজিন ও ২০৭ রাউন্ড কার্তুজ। ২ কেজি বিস্ফোরকও উদ্ধার করে পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, হীরালাল পাশোয়ান (ওরফে হিরুয়া), সুজিত মণ্ডল, সোমনাথ সরদার (ওরফে জিতু), বিকাশ রাজভর, রবি পাশোয়ান(ওরফে রবিয়া), নীল পাশোয়ান, সুকুমার মাঝি ও সৌমিত্র কর্মকার (ওরফে ফাটা) মোট এই ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ধৃতদের রবিবার চুঁচুড়া আদালতে পেশ করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালে টোটনকে যখন চন্দননগর পুলিস গ্রেফতার করে, তখন তার কাছ থেকে কারাবাইনের মত আধুনিক অস্ত্র সহ প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। তবে টোটনকে গুলি চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বাবু পাল সহ পাঁচজনকে আগেই গ্রেফতার করে পুলিস।
হলিউড ছবি ফরেস্ট গাম্পের বলিউড সংস্করণ লাল সিং চাড্ডা। মুক্তির পর থেকে এই ছবির বক্স অফিস সংগ্রহে খুব একটা মুখের হাসি চওড়া হচ্ছে না নির্মাতাদের। অনেক প্রেক্ষাগৃহে ন্যূনতম দর্শক অনুপস্থিতির কারণে বাতিল হচ্ছে শো। এই পরিস্থিতিতে এবার বড়সড় আইনি জটে পড়ল লাল সিং চাড্ডা। ভারতীয় সেনা এবইং হিন্দু আবেগকে আঘাত করার দায়ে অভিযোগ দায়ের এই ছবির বিরুদ্ধে। শুধু প্রযোজক-পরিচালকের বিরুদ্ধে নয়, ছবি নির্মাণে যুক্ত সকলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
ফলে স্বাধীনতার ৭৫-এ সময় একদমই ভালো যাচ্ছে না মিস্টার পারফেকশনিস্টের। এই ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্র অর্থাৎ আমির খান অভিনীত লাল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মী। তার ক্রিয়াকলাপ দেশের আইনের চোখে ‘অসঙ্গত’ বলে অভিযোগ বিনীত জিন্দাল নামে দিল্লির এক আইনজীবীর। এই দাবিতে পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরার কাছে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর সশস্ত্র বাহিনীকে ‘অসম্মান’ করেছে এই ছবি। মূলত এমনটাই অভিযোগ ওই আইনজীবীর। পাশাপাশি দাঙ্গা বাঁধানোর উদ্দেশে ইন্ধন, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা তৈরি করা, কোনও ব্যক্তির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মতো ধারায় এফএইআর দায়ের করেন তিনি।
লাল সিং চাড্ডা ছবির প্রযোজক প্যারামাউন্ট পিকচার্স, আমির, পরিচালক অদ্বৈত চন্দনের নামও উল্লেখ হয়েছে এফআইআর-এ। মামলাকারীর অভিযোগ, 'ছবি নির্মাতারা এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে কার্গিল যুদ্ধে পাঠিয়েছেন। যেটা অবাস্তব। এই মানসিক অবস্থা নিয়ে লালকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার অনুমতি কী ভাবে দেওয়া হল? সে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ, কঠোর প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ সীমান্তে যেতে পারেন না। অতএব, নির্মাতারা ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বদনাম করছেন।’
এই ছবির একটি দৃশ্যে পাকিস্তানি কর্মী লাল সিং চড্ডাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, 'আমি নামাজ পড়ি এবং প্রার্থনা করি, লাল, আপনি কেন তা করেন না?' সেখানে লালের উত্তর, 'মা বলেছেন, পুজোপাঠ ম্যালেরিয়া। এতে দাঙ্গা হয়।' আইনজীবীর বক্তব্য, এটা হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে মানহানিকর বিবৃতি। এতেই আরও দাঙ্গার উস্কানি দেওয়া হচ্ছে।
তদন্তে ভয় পাচ্ছি না। জেলে থাকতেও ভয় নেই। কিন্তু সামাজিক সম্মান নিয়ে টানাটানি করলে ভয় লাগে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
উল্লেখ্য, সময়ের ব্যবধান মাত্র তিন সপ্তাহ। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার প্রথম সারির দুই তৃণমূল নেতা। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি রীতিমতো সরগরম। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রেসিডেন্সি জেলে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের জালে দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এই আবহে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, আইন আইনের পথে চলবে। তদন্ত তদন্তের মতো চলবে। কেউ যদি দোষী হয়, তা হলে সে শাস্তি পাবে।
বিরোধী দল অসভ্যতামি করছে বলে দাবি করেন পুরসভার মেয়র। তবে এদিন কর্মীদের ধৈর্য না হারানোর পরামর্শ দিয়েছেন। দলীয় কর্মীদের আবেদন করে বলেন, যাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে, তাঁরা অসহিষ্ণু হবেন না। সবার উপরে মানুষ সত্য, মানুষের উপরে কেউ নেই। মানুষ ঠিক করবে কে দোষী বা কে দোষী নয়।
এই ইস্যুতে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পালটা দাবি, এভাবে চেরেদের বাঁচানো যাবে না। সিবিআই, ইডি নিরপেক্ষ তদন্ত করছে।
এখানেই শেষ নয়, ইতিমধ্যে শাসকদলের একাধিক মন্ত্রী-বিধায়কের সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলাও রুজু হয়েছে। ২০১৭ সালে দায়ের হয়েছিল এই মামলা। গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে কি তৃণমূল? প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।
পাঁচ বছরে নেতা-মন্ত্রীদের ব্যাপক সম্পত্তিবৃদ্ধি (Asset) কীভাবে? এই সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় ইডিকে (ED) যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এই নেতা-মন্ত্রীদের তালিকায় নাম রয়েছে শুধু তৃণমূলের (TMC) ১৯ জনের। এই প্রচার ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। বিরোধীদের আক্রমণের মুখে ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক-সহ ওই ১৯ জন। এবার বিরোধীদের আক্রমণ ভোঁতা করতে আসরে শাসক শিবির। বুধবার বিধানসভায় একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, অরূপ রায়, শিউলি সাহা প্রমুখ। তাঁদের অভিযোগ, আদালতের রায়ের একটা অংশ তুলে ধরা হচ্ছে। বাকিটা সামনে আসছে না। বুধবার মহামান্য প্রধান বিচারপতির সেই রায়ের কপি আপলোড করেছে। সেই কপি দেখেই এই সাংবাদিক বৈঠক। তাঁদের দাবি, 'সম্পত্তিবৃদ্ধির নিরিখে শুধু শাসক দল নয়, বাম, কংগ্রেস নেতাদের নাম রয়েছে আদালতের কপিতে।'
এই সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'চক্রান্ত করে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। আমি লজ্জিত, পার্থ চট্টোপাধ্যায় যা করেছেন। এই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিনতাম না। কিন্তু, তার মানে এই নয়, তৃণমূল কংগ্রেস করা মানে সবাই চোর। আমি ছোটবেলা থেকে ব্যবসা করছি, সেই টাকা দিয়ে মানুষের কাজ করেছি এবং তার থেকেই ব্যক্তিগত সম্পত্তি করেছি। অনেকে রোজগারের টাকায় করে, আমি ব্যবসা করে করেছি। এতে অন্যায়ের কী আছে? মানুষের কাজ করার স্বার্থে আমরা কাজ করেছি। তারপরও ব্যক্তিগতভাবে চক্রান্ত করা হচ্ছে। অপমান করা হচ্ছে।'
তিনি জানান, একটা জনস্বার্থ মামলা হয়েছে ২০১৭ সালে। আমাদের সম্পত্তি নাকি খুব বেড়ে গিয়েছে। আমরা কোনও ফ্যাক্ট লুকিয়েছি? তাহলে তো আয়কর দফতর ধরতে পারতো। অদ্ভুত লাগে এই মামলায় কোর্টের পর্যবেক্ষণ নিয়ে অর্ধসত্য প্রকাশিত হচ্ছে।
সূর্যকান্তবাবুকে বলছি। জ্যোতি বসু আসার আগে চন্দন বসুর নাম শুনিনি। তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। অমিত শাহর ছেলে জয় সাহা আছেন।
ব্যবসা করছেন, সম্পত্তি বেড়েছে। আমি সুজনবাবুকে বলি, সিপিএম-এর ছেলেদের জিজ্ঞাসা করুন চেতলায় আমার নামে কোনও অভিযোগ আছে কি না? শুধু তৃণমূলের নেতাদের নাম নেবেন। আর কারও নাম নেবেন না, সেটা ঠিক নয়।
এই জনস্বার্থ মামলায় সম্পত্তিবৃদ্ধির তালিকায় নাম এসেছে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুরও। এদিন তিনিও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক বৈঠকে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'কোর্ট পর্যবেক্ষণের একটা অংশ তোলা হচ্ছে। পুরো কোর্টের রায় আমরা তুলে ধরছি। নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তিবৃদ্ধি নিয়ে যে মামলা, সেই তালিকায় নাম রয়েছে অধীর চৌধুরী, সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য,
কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, আবু হেনা, ফণীভূষণ মাহাতো, ধীরেন বাগদি, তরুণকান্তি ঘোষ,
চন্দন সাহা, নেপাল মাহাতদের। সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল প্রত্যেকের নাম আছে। কিন্তু সিপিএম, কংগ্রেস টানা আমাদের বিরুদ্ধে প্রচার করে যাচ্ছে। এটা ভুল এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজনীতিবিদ মানে সমাজের কাছে ভিলেন, মানুষের শত্রু, এমন উদাহরণ তুলে ধরা হচ্ছে। এর শেষ কোথায়?'
ব্রাত্য বসু জানান, আমরা দলের উচ্চপদস্থ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবো। ২০১৬ সালে বিরোধীদের এমন কোনও প্রার্থী নেই, যিনি ২০২১-এ জিতেছেন। এঁরা যদি আবার ২০২৬-এ লড়েন, সে সময় তাঁদের সম্পত্তি খতিয়ে দেখা হোক। আমরা নজর রাখবো।
রাজ্যের অপর এক মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, 'এই মামলাতে আয়কর দফতরের একটা ফাঁক আছে। আমাদের এখন যা সম্পত্তি আছে, তার মূল্য দিনের পর দিন বাড়বে।
রাষ্ট্রপতি হোক বা কেন্দ্রীয় সংস্থা, প্রত্যেককে বিজেপি ব্যবহার করছে।
এখানেই থামেননি তৃণমূল ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিমরা। শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা এসব নিয়ে কুৎসা করব না, আবার গান্ধীগিরিও করব না। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।