সোমবার সাতসকালে প্রগতি ময়দান সংলগ্ন ধাপায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। ভস্মীভূত হয়ে যায় হাসপাতালের বর্জ্য পদার্থ মজুত রাখা একটি গোডাউন ও তার ঠিক পাশের একটি প্লাস্টিক গোডাউন। অগ্নিকাণ্ডের খবর পাঠানো হয় দমকলে। সঙ্গে সঙ্গে ৩টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে। কিন্তু ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় কাজ করতে অসুবিধায় পড়েন দমকল কর্মীরা। কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে আসল কারণ ঠিক কী ছিল তা স্পষ্ট নয় এখনও। ঘটনার আকস্মিকতায় আতঙ্কে গোটা এলাকা।
বাসিন্দাদের দাবি, ঘনজনবসতিপূর্ণ এলাকায় দাহ্যবস্তুর গোডাউন হওয়ায় বড় কোনও দুর্ঘটনা যেকোনও সময় ঘটতে পারে। সেই কারণেই গোডাউন মালিককে একাধিক বার আপত্তি জানিয়েছিলেন। তবে তাতে কেউ কর্ণপাত করেননি। এমনকি গোডাউন ভাড়া নিতে বারণ করা হয়েছিল। আরও অভিযোগ, এলাকাবাসীর অপত্তি থাকা সত্ত্বেও প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস ধরে এই গোডাউন ব্যবহার করেছে ওই গোডাউন মালিক। সোমবার অগ্নিকাণ্ডের পর গুদামের মালিক বা কর্মীদের কাউকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।
গার্ডেনরিচের বহুতল বিপর্যয়ের পর থেকে একের পর এক বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠে আসছে প্রকাশ্যে। প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের নাকের ডগায় এতো অবৈধ নির্মাণ কীভাবে সম্ভব? তাহলে কি এতদিন ঘুমিয়ে ছিল বাংলার প্রশাসন? এই আবহেই সল্টলেক এফডি ব্লকে দেখা গেল প্রশাসনের অতিসক্রিয়তা।
জানা গিয়েছে, সল্টলেকের এফডি ব্লকের ১৮০ নম্বর বাড়ি, নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। সাত দিন আগে এই বাড়িটি অস্থায়ী রূপে বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ের জন্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। তারপরেই সোমবার বিকেলে বেআইনি নির্মাণ ঘোষণা করে নোটিশ বিধাননগর পুরনিগমের। ৭ বছর আগে নির্মাণ হওয়া বাড়ির অবৈধতা নিয়ে প্রশ্ন এতদিন পরে কেন? তাহলে কি বিজেপিকে ভাড়া দেওয়াতেই এই আক্রোশ প্রশাসনের? বাড়ির মালিক জানালেন সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই বাংলায়।
তবে এলাকার কাউন্সিলর বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, অবৈধ নির্মাণ বলেই নোটিশ গেছে। বাড়ির মালিক প্রমাণ করুক বাড়ি বৈধ কিনা।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি বিরোধীদের প্রতি স্বাভাবিক প্রতিহিংসার কারণেই প্রশাসনের এই পদক্ষেপ? না হলে এতদিন কেন ফেরেনি হুঁশ? বিরোধীরা বারংবার দাবি করেন, শাসকদলের কারণেই বাংলায় সুষ্ঠ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। বিরোধী দলের নির্বাচনী কার্যালয় হওয়ার ৭ দিনের মাথাতে প্রশাসনের অবৈধ নোটিশ যে সেই দাবিতেই শিলমোহর, তা বলাই বাহুল্য।
শিয়রে লোকসভা নির্বাচন। তাই নির্বাচনের পূর্বে একের পর দুর্নীতির জাল গোটাতে তৎপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা মহল। ইডির রেশন দুর্নীতির তদন্তে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে একাধিক রাঘববোয়াল। বনগাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য় গ্রেফতারের দু'মাসের মাথায় পেশ করা হল চার্জশিট।
সূত্রের খবর, রেশন দুর্নীতি মামলায় দ্বিতীয় চার্জশিট দিতে চলেছে ইডি। আজ, মঙ্গলবার নগর দায়রা আদালতে চার্জশিট পেশ করতে চলেছে ইডি। শঙ্কর ছাড়াও তাঁর পরিবারের আরও কয়েকজনের নামও চার্জশিটে উল্লেখ থাকার সম্ভবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগেরবারের চার্জশিটে শুধু শঙ্কর আঢ্য নয় তার পরিবারের আরও কয়েকজন এই দুর্নীতির নেপথ্যে রয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দামহলের। ফরেক্স ছাড়াও শঙ্করের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের একাধিক কোম্পানির নামও ছিল চার্জশিটে।
প্রয়াত গজল বিখ্য়াত পঙ্কজ উধাস। মৃত্য়ুকালে তাঁর বয়স ছিল ৭২ বছর। সোমবার মুম্বইয়ে গানের জগৎ থেকে চিরকালের জন্য় বিদায় নিয়েছেন তিনি। এদিন দুপুরে টুইটারে পোস্টের মাধ্য়মে গায়ক পঙ্কজ উধাস-এর মেয়ে নায়াব উধাস তাঁর প্রয়াণের খবর জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন পঙ্কজ উধাস। আট থেকে আশি সবার মনে গান দিয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত পঙ্কজ উধাস। ‘চান্দি জ্যায়সা রং’, ‘না কাজরে কি ধার’, ‘দিওয়ারো সে মিল কর রোনা’, ‘আহিস্তা’, ‘থোড়ি থোড়ি প্যায়ার করো’, নিকলো না বেনাকাব’- পঙ্কজ উদাসের গাওয়া এই অসাধারণ সব গজল আজও শ্রোতাদের মনের স্থায়ী রয়েছে। এছাড়াও নানাবিধ অ্য়ালবামেও কাজ করছিলেন তিনি। ৮০-র দশকে হিন্দি গানের জন্য় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তাঁর এই হঠাৎ মৃত্য়ুতে শোকস্তব্ধ গোটা বলিপাড়া।
বাংলার একাধিক জেলায় হঠাৎই নিষ্ক্রিয় আধার কার্ড! এমন অভিযোগ উঠতেই মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-সহ কেন্দ্রীয় সরকার ডার্টি গেমস খেলছে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও ইতিমধ্যে আধার সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তারপরেও আধারকে ইস্যু বানিয়ে হাওয়া গরম করছেন মুখ্যমন্ত্রী, অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। সংখ্যালঘু, তফশিলি তাস খেলে কি ভোটের আগে হাওয়া ঘোরানোর চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী, প্রশ্ন তুলছে বিরোধী শিবির। মতুয়া সম্প্রদায়কেও পাশে টানার চেষ্টায় মমতা। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, সন্দেশখালি-কাণ্ডে ভোটের আগে ব্যাকফুটে শাসক দল। তাই কি নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে হাওয়া গরম করছেন মুখ্যমন্ত্রী, উঠছে প্রশ্ন।
আধার-কাণ্ডে বিহিত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীকে, নবান্ন থেকে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আধার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই দাবি খোদ সামাজিক মাধ্যমে করছেন বিরোধী দলনেতা। তারপরেও কেন এত চড়া সুর মুখ্যমন্ত্রীর, বিরোধী মহলে উঠছে প্রশ্ন। সন্দেশখালি-কাণ্ডে কি পায়ের তলায় মাটি সরেছে শাসক দলের? তাই কি আধার নিয়ে সোচ্চার হয়ে পাশে থাকার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, এই প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহল।
তবে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই ইস্যুতে অভিযোগ আবার গুরুতর। তাঁর দাবি, ভোট পাগল মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের জন্য উন্মাদ হয়ে গিয়েছেন। নথি তুলে তাঁর দাবি, কোনও আধার কার্ড বাতিল হয়নি। টাকা দিয়ে এই কাজ রাঁচি থেকে করিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, গুরুতর অভিযোগ বিরোধী দলনেতার। এই কাজে রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমারের ভূমিকাও দেখছেন শুভেন্দু। মমতার প্রতিশ্রুতি আধারের বিকল্প কার্ড দেবে তাঁর সরকার। এই ঘোষণাকেও তোপ দাগেন বিরোধী দলনেতা।
এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় সন্দেশখালি ইস্যুতে। জাতীয় এসসি কমিশনের পর জাতীয় মহিলা কমিশনও বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে মুখ খুলেছেন। যদিও সন্দেশখালিকে গুরুত্বহীন বানাতে চক্রান্ত, বিরোধীদের উসকানি দাবি করে আসরে রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শাসক দলের নেতারা। তাই কি ঘুরিয়ে আধার কার্ডকে ইস্যু বানিয়ে ভোটার থুরি মানুষের মন জয়ের চেষ্টা, উঠছে প্রশ্ন।
পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। সমাধানের নামে দুর্নীতি হয়েছিল, উঠেছিল এমনই অভিযোগ। জানা গিয়েছিল, পাড়ায় সমাধানের রেকমেন্ডেশনে একাধিক শিক্ষক বদলি করা হয়েছিল। তবে প্রশ্ন জেগেছিল, এই 'পাড়ায় সমাধান'-এর আইনি বৈধতা কী? কাদের সিদ্ধান্তে ওই শিক্ষকদের বদলি? আগেও জানতে চেয়েছিল আদালত।
সম্প্রতি এই মামলায় বোর্ডের কাছে আদালত হলফনামা চাইলে, সেই হলফনামায় বোর্ডের উল্লেখ, কমিশনের নির্দেশেই ওই সকল বদলি করা হয়েছিল। শুধু তাই না, সেখানে সই ছিল তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীরও। এরপরেই সোমবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ২১৬ জন শিক্ষকের বদলিতে মন্ত্রীর এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বিচারপতির মন্তব্য, বোর্ডের হলফনামায় প্রকাশ, পাড়ায় সমাধান থেকে আসা রেকমেন্ডেশনের আবেদন গৃহীত হয়ে বদলি হয়েছে কমিশনের নির্দেশে। এরপরেই বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, কমিশনকে এই নির্দেশ কে দিল? মিনিস্টার ইন চার্জই বা কীভাবে সই করলেন? সেই রেকর্ড আদালতের কাছে পেশ করতে হবে বলেই মন্তব্য করেন বিচারপতি। শুধু তাই না, মামলায় রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, দুর্নীতি হয়েছে সামনে এসেছে। এরপর রাজ্য ঠিক করুক, এই মামলার তদন্ত রাজ্য তার হাতে রাখবে, নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দেবে আদালত।
যদিও সমস্ত প্রশ্নের উত্তরেই রাজ্যের তরফ থেকে আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, আদালতের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার কিছু সময় লাগবে। তাঁকে বেশ কিছু তথ্য জোগাড় করতে হবে, আর তার জন্যই সময় চাওয়া বলে জানান আইনজীবী কিশোর দত্ত। সোমবার পাড়ায় সমাধান মামলার শুনানির শেষে বিচারপতির নির্দেশ, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যকে এই মর্মে তাদের সব বক্তব্য পেশ করতে হবে আদালতে। এখন দেখার পরবর্তী শুনানিতে কোন দিকে মোড় নেয় পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির মামলা।
প্রসূন গুপ্তঃ একটা সময়ে বিধানসভাও রাজনৈতিক মানুষের একটা দর্শনীয় স্থান ছিল। ভিতরে প্রবেশ করতে গেলে অবশ্যই অনুমতি লাগলেও তা পেতে দেরি হতো না যদি উপযুক্ত প্রমাণ থাকতো। সে দিন গিয়েছে। বৃহস্পতিবারের বারবেলায় রাজ্য বাজেট, কাজেই তৎপরতা চোখে লাগার মতো।
বহুদিন বাদে বিধানসভায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল এই প্রতিবেদকের। কিন্তু বোঝার ভুলে সাত সকালে গিয়ে জানলাম বাজেট বিকেল ৩টেতে এবং তার আগে মন্ত্রিসভার বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তেমনটিই হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলার বিধানসভা সেই আগের মতোই রয়েছে পটভূমি পরিবর্তন তেমন কিছু বোঝা গেলো না। কিন্তু নিরাপত্তার কড়াকড়ি এতটাই যে মাছি গলার উপায় নেই। প্রশাসন যেমন মিডিয়ার বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে, তেমন বিরোধীরা যাতে বিধানসভার মূল প্রবেশদ্বারে হৈচৈ করতে না পারে তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সাধারণত বিধানসভার মূল দরজার উল্টোদিকে সাংবাদিকদের বসার জন্য প্রেস কর্নার রয়েছে। নিয়ম হয়েছে, ওই প্রেস কর্নারের বাইরে এসে গেটের সামনে ছবি তোলা যাবে না। ভিতরেও ক্যামেরা নেওয়া যাবে না। আইপিএস এবং অসংখ্য পুলিস নিশ্ছিদ্র করে রেখেছে প্রবেশ পথ। উপযুক্ত প্রেস কার্ড না থাকলে ঢোকা যাবে না বিধানসভায় সে তিনি যিনিই হন না কেন। নেতারা সাধারণত সঙ্গীসাথী নিয়ে যে কোনও জায়গায় যান। বিধানসভাতেও তারা প্রবেশ করতে পারেন। এবারে নিয়ম হয়েছে, একমাত্র গাড়ির চালক ও আপ্ত সহায়ক ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবেন না।
অনেকদিন বাদে এসেছি বলে বিধানসভার মার্শাল ডেকে পাঠালেন। প্রশ্ন করলাম, এতো কড়াকড়ি কেন? তিনি জানালেন, এমনিতেই মুখ্যমন্ত্রী থাকলে সিকিউরিটিতে জোর দেওয়া হয়ে থাকে, কিন্তু আজ আবার বাজেট। সম্প্রতি দিল্লিতে পার্লামেন্টে কিছু মানুষ কোনও এক বিজেপি সংসদের দেওয়া পাস নিয়ে ঢুকে পরে নিরীহ পটকা ফোটায়, তাতেই নাকি সারা ভারতের বিভিন্ন বিধানসভা ও মন্ত্রী মহলের অফিসে নিরাপত্তা অত্যন্ত কঠিন করা হয়েছে।
শেষে জানলাম বিরোধীরাও নাকি যা খুশি আন্দোলন করার করতে পারে, কিন্তু মূল প্রবেশ দরজার সামনে অর্থাৎ রাস্তায়। বিধানসভা আজ সাধারণের প্রবেশের বাইরে থাকা এক স্মারক ভূমি।
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। আর বাজেট অধিবেশনের তৃতীয় দিনেও উত্তাল বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ। নারী নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে বিধানসভায় বিজেপির বিধায়করা মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিলে, অধ্যক্ষ তা পাঠের সুযোগ দিলেও, তা নিয়ে আলোচনার দাবি খারিজ করা হয়।
এরপরেই বিজেপি বিধায়করা হাতে কালো পতাকা নিয়ে, পুলিস মন্ত্রী ধিক্কার লেখা পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে। বিরোধীদের মতে, এ রাজ্যের সরকার নারী নির্যাতনের মত নৃশংস ঘটনাকে আলোচনার জন্য প্রয়োজনীয় বলেই মনে করে না। এরই সঙ্গে অধিবেশন শুরু থেকেই বিজেপি বিধায়করা স্পিকারের বিশেষ দলে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আগেই এনেছে। মঙ্গলবার ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব খারিজের পর, একই ভাবে, অধিবেশনের তৃতীয় দিনেও দেখা গেল নারী নির্যাতনের মুলতুবি প্রস্তাব পাঠের সুযোগ দিলেও, তা নিয়ে আলোচনার সুযোগ দিলেন না স্পিকার।
মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে, এ রাজ্যে নারী নির্যাতনের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলে, সেই আলোচনা খারিজ করেন বিধানসভার স্পিকার। এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে পাল্টা স্লোগান তুলতে ছাড়েন না শাসক দলের মহিলা বিধায়করাও। এসব দৃশ্য দেখার পর, এই ঘটনা শোনার পর সাধারণের মনে প্রশ্ন জাগছে, আদৌ কি সত্যিই মহিলারা সুরক্ষিত এ রাজ্যে? নাকি শাসকের ঘটনা চাপা দেওয়ার প্রবণতা মহিলাদের দিন দিন অসুরক্ষিত করে তুলছে?
এ নিয়ে অধিবেশন কক্ষ উত্তাল হয়ে ওঠে। একদিকে নারী নির্যাতনের ঘটনায় আলোচনা না করতে দেওয়ার জন্য বিজেপি বিধায়করা যখন স্লোগান তোলেন, তখন পাল্টা স্লোগান তুলতে দেখা যায় শাসক দলের মহিলা বিধায়কদেরও। তবে, এই নিন্দনীয় ঘটনায় রাজ্য সরকার এবং বিধানসভার স্পিকারকে কালো পতাকা দেখানো যথার্থ বলেই মনে করছে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল।
নিয়োগের দাবিতে রাজপথেই দিন গুজরান চাকরিপ্রার্থীদের। যোগ্যতার প্রাপ্য মূল্য আদায় করতে একাধিকবার মিটিং মিছিল বিক্ষোভকে প্রতিবাদের হাতিয়ার বানিয়েছে তারা। এবার অবিলম্বে নূন্যতম ৫০ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ সহ ২০২২ টেটের ইন্টারভিউর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিতে করুণাময়ী সৌরভ গাঙ্গুলী ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পের সামনে ধরনামঞ্চে তাদের ৪ দিনের লাগাতার বিক্ষোভ। ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল এই ধরনা কর্মসূচি।রবিবার অন্তিমদিনেও মিলল না কোনও রফাসূত্র। মূলত তাদের অভিযোগ, সরকারের স্বদিচ্ছার অভাবেই আটকে রয়েছে তাঁদের নিয়োগ। আইন মেনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানেও সরকারের হুঁশ না ফিরলে অগামী দিনে তাই আইনের শিকল ভাঙার পথই বেছে নেবে তারা। কার্যত ধরনামঞ্চ থেকে আইন অমান্যের হুঁশিয়ারি ২০২২-এর টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে রেডরোডে মুখ্যমন্ত্রী ধরনায় ব্যস্ত। কিন্তু নিজের রাজ্যে ৭ বছর ধরে চাকরিপ্রার্থীদের যে নিয়োগ যন্ত্রনা সহ্য করতে হচ্ছে সেদিকে কেন হুঁশ নেই মাননীয়ার? তিনি কি চাকরিপ্রার্থীদের মুখ্যমন্ত্রী নন? তাদের নিয়োগ বঞ্চনা কি সত্যিই অর্থহীন? উত্তরের সন্ধানে ধরনামঞ্চ থেকে কালীঘাটে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখার করার সিদ্ধান্ত চাকরিপ্রার্থীদের।
বিগত কয়েক বছর ধরেই শহরের নানা প্রান্তে যোগ্যতার প্রাপ্য মূল্য আদায়ের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন বিভাগের চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও অন্ধকারে তাঁদের নিয়োগের ভবিষ্যৎ। জীবনের অর্ধেকটা সময় তাদের কেটে গিয়েছে রাজপথেই। দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। ভোট কিনতে ব্যস্ত সরকার। কিন্তু যাদের ভোটের মসনদ মিলবে তাদের প্রতিই ভ্রুক্ষেপ নেই সরকারের। কবে মিলবে নিয়োগ? ওয়াকিবহালমহলে এই প্রশ্নকে সামনে রেখে একাধিক তর্ক-বিতর্কের উথ্থান ঘটলেও জবাব আজও অধরা।
খেটে খাওয়াদের জন্য় রক্তদান। বাইক চালিয়েও মহৎ কাজ রাইডারদের। বাঁচবে মানুষ, ফিরবে সুখ! রক্তদানে খেটে খাওয়ারাই মুখ! এবার এই স্লোগানেই অভিনব রক্তদানের আয়োজন করল অ্যাপ বাইক সংস্থা। বুধবার ওই অ্যাপ বাইক সংস্থাটি বিধাননগরের আঞ্চলিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হল রক্তদান শিবির। যেখানে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন প্রায় ৫২ জন বাইক চালক। যাঁরা প্রত্যেকেই অ্যাপ বাইক চালক।
জানা গিয়েছে, বুধবার অনুষ্ঠিত হওয়া ওই রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার কোঠারি মেডিকেলের চিকিৎসকরাও। আয়োজক সংস্থার পক্ষে শামিম হোসেন জানান, "আমরা শুধু কাজ নয়, মানুষের হয়ে, মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। প্রচুর রাইডার আছেন, যাঁদের রাস্তায় দুর্ঘটনা হলেও রক্তের প্রয়োজন। ঠিক এই কারণ এবং আনুষঙ্গিক সবটা ভেবে এই ব্যবস্থা।''
বিভিন্ন এলাকা থেকে রক্ত দিতে এসেছিলেন তন্ময় দাস, অভিরূপ চক্রবর্তী, গৌতম মণ্ডল, শিংকু বাল্মীকির মতো বাইক চালকরা। যাঁদের আয়ের উৎসই অ্যাপ নির্ভর বাইক। তাঁদের কথায়, "সারাবছর কাজ করি, সংসার চালায়। কিন্তু একটু যদি মানুষের পাশে থাকা যায় তাতে ক্ষতি কী!'' তাই সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই আয়োজিত করা হয়েছিল এই রক্তদানের অনুষ্ঠানটি। তবে মানুষের পাশে থাকার জন্য় এবং যথা সম্ভব সাহায্য় করার কারণেই আগ্রহ আজ বহু মানুষ।
ফের বাজি বিস্ফোরণ! ফের রক্তাক্ত শৈশব! দক্ষিণ ২৪ পরগনা ডায়মন্ড হারবারের মশাট এলাকায় বাজি বিস্ফোরণে জখম বছর দশেকের এক নাবালক সহ ৩ জন। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ এলাকার এক জঙ্গলের মধ্যে বাজিগুলি দেখতে পায় আলমগির শেখ নামে পঞ্চম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। বাজি নিয়ে খেলতে গিয়েই ঘটে বিস্ফোরণ।
জানা গিয়েছে, সামনেই সবেবরাত, তার আগে লোকচক্ষুর আড়ালে জঙ্গলের মধ্যে মজুত করে রাখা হয়েছিল কিছু নিষিদ্ধ শব্দবাজি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিস। নাবালকের হাতে ও পায়ে গুরুতর আঘাত থাকায় তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। মজুত করে রাখা নিষিদ্ধ বাজি থেকেই বিস্ফোরণ বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিসের। তবে কে বা কারা রেখে গেল নিষিদ্ধ শব্দবাজি? তা জানতে শুরু তদন্ত। এই ঘটনা আরও একবার উস্কে দিল এগরা, নীলগঞ্জের ভয়ানক স্মৃতি। ২০২৩ এর মে মাসে বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এগরার খাদিকুল। মৃত্যু হয় মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ সহ ১০ জনের। তার কিছুদিনের মধ্যেই কেঁপে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার নীলগঞ্জ। একের পর এক বিস্ফোরণের পরেও কেন তৎপর নয় প্রশাসন? তবে কি আজও বাজি কারখানাগুলিতে গোপনে তৈরি হচ্ছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি? যার সন্ধান নেই পুলিসের কাছেও ? উঠছে প্রশ্ন।
তারুণ্যের হাত ধরে ব্রিগেডের মাঠে বুদ্ধের বার্তা। ব্রিগেড সমাবেশের একেবারে শেষে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বার্তা পাঠ করেছেন DYFI-এর রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। শনিবার পাম অ্যাভেনিউতে গিয়ে ওই বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। বুদ্ধ-বার্তা দিয়েই শেষ হয় রবিবারের ব্রিগেড। DYFI-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকের বার্তা আদতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গানের পংতি। সেখানে লেখা, যেখানে ডাক পড়ে, জীবন মরণ ঝড়ে, আমরা প্রস্তুত।’ বুদ্ধদেবের বার্তায় বলা হয়, এটাই ডিওয়াইএফআই। সুতরাং ব্রিগেডের সমাবেশ সাফল্যমণ্ডিত হবে।
সমাবেশের আগে প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকের কাছে শুভেচ্ছা বার্তা নিতে শনিবার রাতে পাম অ্যাভিনিউ পৌঁছয় রাজ্য DYFI নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, কলতান দাসগুপ্ত সহ রাজ্য নেতৃত্ব। আর সেখানেই মনে করা হচ্ছিল রবিবার ব্রিগেডে বুদ্ধদেবের লিখিত আকারে কোনও বার্তা পাঠ করা হতে পারে।
বুদ্ধদেব শেষ বার ব্রিগেডে হাজির হয়েছিলেন ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। তার আগে থেকেই তিনি গৃহবন্দি। সেই সভায় পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি থেকে এসে মঞ্চের নীচে গাড়িতেই বসেছিলেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা। যদিও অসুস্থতার কারণে গাড়িতে থেকেই ফিরে যান তিনি। ২০২১-এর ব্রিগেডে বুদ্ধবাবুর অডিওবার্তা প্রকাশ্যে আসে বাম নেতৃত্ব। এবার যৌবনের ব্রিগেডেও সুর বাঁধলেন রাজ্যের প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তা বলাই বাহুল্য।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির ঘরের সামনে বিতর্কিত পোস্টার। পোস্টারে লেখা ভিসিকেই কটাক্ষ করে নানারকম কৌতুকমূলক লাইন। লেখা রয়েছে, 'তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার চেয়ার খানি চাই।' এমনকি তাতেই কার্টুনের মাধ্যমে এক ব্যক্তির চেয়ার আটকানোর ছবি ছাপিয়ে লেখা, 'আমায় ছেড়ে যাস না প্লিজ, আমায় ছেড়ে যাস না।' পাঁচিলে, দেওয়ালের বিভিন্ন জায়গায় এই ছবি ছাপিয়েছে কেউ বা কারা। আর তা নিয়েই ফের তৈরি হল বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, যাদবপুরের ভিসি কে? তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে রীতিমত অচলাবস্থা চলছেই। গত বছর ডিসেম্বরের ২৮ তারিখেই জুটার তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে একটি চিঠি মারফত জানতে চাওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে! এই চিঠির উত্তরে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানিয়েছিলেন, দুটি চিঠি পেয়েছেন তিনি। একটি রাজ্যপালের ও একটি বিকাশ ভবনের। এরপর এখন কে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তার জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। সুতরাং এখান থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে সে বিষয়ে কিন্তু কোনও স্পষ্ট উত্তর রেজিস্ট্রারের কাছেও নেই। ঘটনাকে 'অভূতপূর্ব' বলেই মন্তব্য করেছিলেন জুটার সেক্রেটারি পার্থপ্রতিম রায়। এবার ভিসির ঘরের সামনে পোস্টার বিতর্কে সেই অচলাবস্থাকেই টেনে আনলেন তিনি।
এদিকে যাকে নিয়ে গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। যখন রাজ্যপাল তাঁকে অপসারণ করেন যাদবপুরের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের পদ থেকে। সেই বুদ্ধদেব সাউ এবার পোস্টার বিতর্কে সুর চড়ালেন। তিনি বললেন, যাঁরা এই কাজ করেছেন, এতে তাঁদের মনুষ্যত্ব, তাঁদের চরিত্র কেমন তা বোঝা যাচ্ছে।
তবে এর জেরে একমাত্র সমস্যার মুখে পড়তে হবে পড়ুয়াদেরই। উপাচার্য কে তা না জানা গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু কাজও যেতে পারে আটকে। আর এহেন পরিস্থিতির মধ্যেই এবার এই সব পোস্টার রহস্য। কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
ফের শহরের বুকে গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা! ঘরের মধ্যে পড়ে স্ত্রীর গলা কাটা দেহ। পাশে ঝুলন্ত অবস্থায় স্বামীর দেহ, কাতরাচ্ছেন দু'জনের কন্যা সন্তান। আর এই দেখেই আঁতকে উঠলেন প্রতিবেশীরা। শনিবারের হাড়হিম করার ঘটনাটি বিধাননগরের নারায়ণপুর থানা এলাকার।
সুখী পরিবার বলেই জানতেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু সেই সুখী পরিবারে কি এমন অন্ধকার নেমে এল যার জন্য স্বামী, স্ত্রী দুজনকেই মৃত অবস্থায় তাঁদের আবাসনে পাওয়া গেল। শনিবার দুপুরে নারায়ণপুর থানার ১০০ গজের মধ্যে অবস্থিত এক বহুতল আবাসনের নিচতলা থেকে উদ্ধার হল স্ত্রীর গলা কাটা রক্তাক্ত দেহ আর তার পাশাপাশি উদ্ধার স্বামীর ঝুলন্ত দেহ। নারায়ণপুর অঞ্চলের এই ঘটনায় স্তম্ভিত স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে খবর, সাগর মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী রূপা মুখোপাধ্যায়কে গলা কেটে খুন করার পর তাঁর কন্যা সন্তানেরও গলা কাটেন। এরপর নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আবাসনের নিচের তলার ঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর দেহ উদ্ধার করে। তবে তাঁদের কন্যা সন্তান জীবিত থাকায় তাকে চিনারপার্ক সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত সেখানেই সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান স্থানীয় বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় ও বিধাননগরের কমিশনার সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী সাগর মুখোপাধ্যায় কেন এই কাজ করলেন, বা এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে কিনা তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। দেহ দুটিকে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। সেই রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর আসল কারণ সামনে আসবে।
মণি ভট্টাচার্যঃ যাদবপুরের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কর্তৃক অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে অপসারণের ঘটনা নিয়ে সরগরম হয়ে আছে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। ঘটনাক্রমে রবিবার সমাবর্তনের আগেই শনিবার রাজ্যপাল কর্তৃক অপসারণ করা হয় যাদবপুরের অন্তর্বর্তী ভিসি বুদ্ধদেব সাউকে। এরপর পাল্টা শনিবার মধ্যরাতে বিকাশ ভবনের তরফে যাদবপুরকে একটি চিঠি দিয়ে জানানো হয় রাজ্যপালের ওই নির্দেশ বেআইনি। চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের মামলার রায়ের কথা উল্লেখ করে সুপারিশ করা হয় যে বুদ্ধদেব সাউই থাকবে যাদবপুরের উপাচার্য। এরপর অবশ্য রবিবার রাজভবনের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য ও যাদবপুর ACT অমান্য করার জন্যই বুদ্ধদেব সাউকে সরানো হয়েছে। এছাড়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, রাজ্য শিক্ষা দফতর বিশ্ববিদ্যালয় গুলির সায়ত্ব শাসনে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এখন প্রশ্ন, গোটা ঘটনায় আইন অনুযায়ী সঠিক কে? কী বলছে যাদবপুর ১৯৮১ ACT? তারই খোঁজ নিল সিএন।
১৯৮১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কার্য পরিচালনার জন্য একটি ACT গঠন করা হয়। যা ১৯৮৩ সালে পাশ হয় বিধানসভায়। তারপর থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত অনুষ্ঠান, পরীক্ষা, সমাবর্তন, সহ সমস্ত প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় এই ACT অনুযায়ী।জানা গেল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮১ ACT এর ৮ নম্বর রুলের ২,৩ ও ৯ নম্বর রুলের ১ নম্বর ধারা অনুযায়ী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ করবেন কেবল আচার্য। যদিও ১৯৮১ এর সেই ACT খানিক পরিবর্তন করা হয় ২০১১ সালে। সেখানে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বা রাজ্যপালকে। যেখানে উল্লেখ রয়েছে, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদ যদি শূন্য থাকে সেক্ষেত্রে আচার্য ওই পদে অন্তর্বর্তী ভিসি বা ভারপ্রাপ্ত ভিসিকে নিয়োগ করতে পারেন এবং তিনিই ওই নিয়োগ প্রত্যাহার করতে পারেন।
সুতরাং গোটা ঘটনায় যা স্পষ্ট হল, অন্তবর্তী ভিসি নিয়োগের অ্যাপয়েন্টমেন্ট অথরিটি কেবলমাত্র আচার্য বা রাজ্যপালের। সেখানে রাজ্যশিক্ষা দপ্তর, বিকাশ ভবন বা শিক্ষামন্ত্রী কেউই কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। তাহলে রাজ্যপাল কর্তৃক অপসারণ হতেই পারে, মত বিশেষজ্ঞদের। শুধু তাই না, রাজভবন সূত্রে জানা যায়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছেন বুদ্ধদেব সাউ। সুপ্রিম নির্দেশে তিনি অন্তর্বর্তী ভিসি হিসেবে থাকলেও, বুদ্ধদেব সাউ নিজেকে ভিসি বলেই দাবি করতেন। এছাড়াও বেশ কয়েকটি আইন অমান্য করেছেন বুদ্ধদেব সাউ। ফলে বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যপাল কর্তৃক যাদবপুরের অন্তর্বর্তী ভিসি অপসারণে যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন তাঁরা।