বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণের রাস্তায় রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। এদিন ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে বঙ্গ বিজেপির ধর্নামঞ্চে বীরভূম তৃণমূলের সভাপতি-সহ রাজ্যের শাসক দলকে তীব্র কটাক্ষ করেন সুকান্ত মজুমদার। একই চড়া সুর শোনা গিয়েছে বাম এবং কংগ্রেসের গলায়। তবে বিরোধীদের এই সমালোচনার জবাব দিয়েছে ঘাসফুল শিবিরও। সিবিআই-ইডিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। এদিন এই অভিযোগ করেন শাসক দলের সাংসদ সৌগত রায়।
শুক্রবার ওয়াই চ্যানেলের কর্মসূচি থেকে বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা, যিনি বলতেন শুঁটিয়ে লাল করে দেব। তিনি এখন ইডি-সিবিআইয়ের ভয়ে নিজেই লাল হয়ে গিয়েছেন। সিবিআই থেকে বাঁচতে বলছেন আমার পিছনে অপারেশন করে দিন।'
কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর খোঁচা, 'একে তো অনুব্রত গ্রেফতার, তারপর যদি শোনেন দলের কোনও পদ নেই তাহলে তো অক্সিজেন যাওয়া আরও বন্ধ হয়ে যাবে। প্রকৃত বিচার হোক। আমার কারও প্রতি প্রতিহিংসা নেই।' সুর চড়িয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, 'অনুব্রতকে বহিষ্কার করতে হবে। কিন্তু কিন্তু এঁরা সব চুনোপুটি, আসল কারা, মানুষ বলছে হাওয়াই চটি, কোটিপতি।'
কী বলছে বিজেপি
কী প্রতিক্রিয়া বাম-কংগ্রেসের
তবে বিরোধীদের এই আক্রমণের জবাবে দমদমের সাংসদ সৌগত রায় জানান, ইডি- সিবিআইকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইডিকে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। এটাও রাজনৈতিক বিষয়। অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে এখনই পার্টির কোনও স্ট্যান্ড নেই।
তাঁর নামে কোনো চার্জশিট নেই। দলের কাছে গোটা বিষয় এখনও পরিষ্কার নয়।
এবার রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ (DA) মামলায় নয়া মোড়। রাজ্য সরকার কলকাতা হাইকোর্টের (Highcourt) নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে। বৃহস্পতিবারই তারা রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল। এরপর শুক্রবার এই মামলায় রাজ্যের আবেদন গৃহীত হল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে (Division Bench)।
তিন মাসের মধ্যে সরকারি কর্মীদের ডিএ-র দিতে গত ২০মে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। রায়ে জানানো হয়েছিল, আগামী তিন মাসের মধ্যে সরকারি কর্মীদের সকল বকেয়া ও মহার্ঘভাতা মিটিয়ে দিয়ে হবে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছিল, ডিএ হল একজন সরকারি কর্মীর মৌলিক অধিকার।
সেই রায় কার্যকর করার চূড়ান্ত সময়সীমার দশ দিন আগেই ডিএ মামলায় নয়া মোড়। এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া সময় শেষ হতে চললেও রাজ্য সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ডিএ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশিকা দিয়েছিল রাজ্য সরকারকে, তা পালনের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এমনটাই অভিযোগ মূল মামলাকারীদের।
এবার ফের হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে আদালতের শরণাপন্ন নবান্ন। বৃহস্পতিবার ফের রিভিউ পিটিশন দাখিল করার পর এদিন সেই মামলা গৃহীত হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুনানির দিনের।
বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) গ্রেফতারি (arrest) নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতার দাবিতে পশ্চিম মেদিনীপুর (West Medinipur), বীরভূম (Birbhum) জেলার একাধিক জায়গায় শুক্রবারই বের হয় তৃণমূলের মিছিল। অন্যদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর কলকাতায়ও (Kolkata) মিছিল বের করে তৃণমূলের ছাত্র-যুব শাখা। "তদন্তের নামে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ চলছে না, চলবে না"- স্লোগানে উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে এক প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়। এই মিছিলটি রবীন্দ্রভারতী ইউনিভার্সিটি (Rabindrabharati University) থেকে চিড়িয়ামোড় (chiriamore) পর্যন্ত যায়। মিছিলে পা মেলায় বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।
পাশাপাশি ইডি, সিবিআই (CBI) পক্ষপাতদুষ্ট। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ পূরণে ইডি, সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে, এমনই অভিযোগ তুলে শুক্রবার শহর শিলিগুড়ির রাজপথে নামল দার্জিলিং জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বরা। শিলিগুড়ি (Siliguri) কলেজের গেট সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। সেই মিছিলে অংশ নেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি, চেয়ারম্যান সহ অন্যান্যরাও। তাঁদের দাবি, নিরপেক্ষ তদন্ত করে দুর্নীতিগ্রস্থ সকলকে গ্রেফতার করতে হবে।
একই সঙ্গে "ইডি, সিবিআই দিয়ে ভয় দেখানো যাবে না" পাশাপাশি একাধিক প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল সমর্থিত মহিলারা। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের খালিনা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে তৃণমূল কর্মীরা। বৃহস্পতিবার এই কর্মসূচি ঘোষণার পর অভিনব প্রতিবাদে অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে সিবিআই বোলপুরে অনুব্রত-র বাড়িতে যে নোটিস দেয় তাতে তাঁকে গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত সাব্যস্ত করা হয়েছে। পরে বিকেলের দিকে তাঁকে গ্রেফতার বলে ঘোষণা করা হয়। অনুব্রতর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। বুধবার মাঝরাতে বোলপুরে পৌঁছয় সিবিআই টিম। বৃহস্পতিবার সকাল ৯.৪৫ মিনিট নাগাদ সিবিআইয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একটি দল তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করে। সূত্রের খবর, তাঁকে হাজিরা এড়ানো প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আধিকারিকরা এবং আটক করে আসানসোলে নিয়ে যায়।
প্রসূন গুপ্ত: প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর টেলিভিশনে ঘন্টার পর ঘন্টা খবর ছিল তাঁকে নিয়ে। খবরের কাগজে পাতার পর পাতাজুড়ে পার্থ-অর্পিতার খবর। প্রাক্তন মন্ত্রীর কতজন বান্ধবী, তাঁদের কোথায় বাড়ি, আরও কত টাকা উদ্ধার হল ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখানেই শেষ নয় পার্থ কতটুকু বললেন ইডিকে, পার্থ অর্পিতাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরায় কী বেরোল। এই ধরনের খবরে ঝোঁক থাকতো আম আদমির। ট্রাম-বাস, ট্রেনে আলোচনার বিষয়বস্তুও তাঁরাই। পার্থ কী খেলেন, কোথায় শুলেন এই করতে করতে পার্থর খবরে ম্রিয়মান হয়ে গেলো অনুব্রত-কাণ্ডে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরে শুধুই অনুব্রত। বাড়ি ঘিরে নিয়ে প্রথমে আটক, তারপর বিকেলের দিকে গ্রেফতার। লহমায় লহমায় পরিবর্তন হলো অনুব্রত-কাণ্ড। বৃহস্পতিবার তাঁকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায় সিবিআইয়ের দফতরে। তারপর এদিন সকাল থেকে মাত্র একটাই খবর, অনুব্রত সকালে ডায়বেটিক ডায়েট মেনে চিনি ছাড়া চা, বিস্কুট এবং মুড়ি খেয়েছেন। এরপর আর খবর নেই, রহস্য এখানেই কেন অনুব্রতর অবস্থান পাওয়া যাচ্ছে না?
পার্থ ও অনুব্রতর মধ্যে বিস্তর ফারাক। প্রথমত অনুব্রত সংগঠন করা নেতা। বীরভূম জেলার পাতা নড়তো না তাঁর আদেশ ছাড়া। রাঙা মাটির দেশে একপ্রকার 'মুকুটহীন সুলতান' ছিলেন তিনি। এই জনপ্রিয়তা পার্থর কোথায়? পার্থকে গ্রেফতারের সঙ্গে ইডির হাতে এসেছিলো কোটি কোটি টাকার বান্ডিল এবং মহিলা বান্ধবীর প্রসঙ্গ। এই অবস্থান পার্থর বিপক্ষে গিয়েছে। দলও তাঁর দায় ঝেড়ে ফেলেছে। অনুব্রতর ক্ষেত্রেও দলের অভিমত অপরাধ প্রমাণ হলে রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলকেও সরিয়ে দেওয়া হবে। ব্যক্তিগত অপরাধের দায়িত্ব নেবে না দল। কিন্তু হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে অনুব্রতর নাম আসা সত্বেও তৃণমূলের হাজার হাজার সমর্থক তা মানতে নারাজ। তাঁরা ক্ষিপ্ত, তাঁদের বক্তব্য মদন মিত্রদের মতোই অনুব্রত ফেঁসে গিয়েছেন। দুটি ঘটনাই দলের উচ্চ নেতাদের নজরে এসেছে।
আজ এবং আগামীকাল এই নিয়ে রাজ্যের জেলায় জেলায় আন্দোলনে নামছে তৃণমূল যদিও প্রসঙ্গ অনুব্রত নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতা।
বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) আদালতে তুলে সিবিআই দাবি করেছিল, তৃণমূল নেতার দেহরক্ষী সায়গল হোসেন অনুব্রতর হয়েই টাকা তুলত। সিবিআই (CBI) সূত্রের খবর, গরু পাচার করার জন্য অনুব্রতর সঙ্গে এনামুল হকের (Enamul Haq) একটা রফা হয়েছিল। সেই রফায় বলা ছিল, প্রত্যেক তিন মাস অন্তর ছয় কোটি টাকা করে দিতে হবে এনামুলকে। এমনকি, এই কথোপকথন হত ফোনের মাধ্যমেই।
এদিকে, অনুব্রতকে গ্রেফতারের দিনেই তাঁর চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর বয়ান রেকর্ড করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। পাশাপাশি সিবিআই র্যাডারে আসতে চলেছে বোলপুর হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুও। বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুকে সিবিআইয়ের নোটিস পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, শুক্রবার ভোররাতে অনুব্রতকে নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌছয় সিবিআই। তারপর সেখানেই অস্থায়ী ভাবে ক্যাম্প খাটে তৃণমূল নেতার বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এদিন সকাল থেকেই ফের কেন্দ্রীয় সংস্থার জেরার মুখে অনুব্রত মণ্ডল। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন আধ ঘণ্টা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন তৃণমূল নেতা।
জানা গিয়েছে, সায়গল হোসেনের বয়ানের ভিত্তিতে অনুব্রতকে বেশ কিছু প্রশ্ন করতে পারেন সিবিআই অফিসাররা। কারণ, সায়গলের সঙ্গে অনুব্রতর বেশ কিছু ফোনের রেকর্ডিং মিলেছে। এমনকি, একজন নিরাপত্তারক্ষী হয়ে কীভাবে তার এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি হল, এর উৎস কোথায়? সেই বিষয় সেসময়ে সেহগালকে প্রশ্ন করা হয়। সেই সংক্রান্ত বিষয়ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অনুব্রতকে।
বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির নেপথ্যে কী রয়েছে এই গরু পাচার। এই সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখতে চাইছেন সিবিআই অফিসাররা।
ছুটি না নিয়ে একটানা কাজ করার ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর একাধিক জওয়ান (Army) কখনও গুলি করে আত্মঘাতী (Suicide) হয়েছে। আবার কখনও সার্ভিস রিভলভার দিয়ে গুলি চালিয়েছে ব্যারাকে থাকা সহকর্মীদের উদ্দেশ্যে। তাদের নিয়ম মেনে ছুটি (holiday) দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এবার সতর্ক হল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন (National Medical Commission)।
দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্নাতকোত্তরের চিকিৎসকদের মানসিক স্বাস্থ্যের দুরবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। সাপ্তাহিক কোন ছুটি না নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটানা হাসপাতালে কাজ করার ফলে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে্ন পোস্ট গ্রাজুয়েটের মেডিক্যাল ছাত্ররা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য। এর ফলে কেউ আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন। আবার কেউ নানান ধরনের সমস্যায় ভুগছেন। যা ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতে পারে রোগী চিকিৎসা ব্যাবস্থায়।
সে কারণে গত ২৮ শে জুন এই সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। এই বৈঠকের পর সমস্ত দেশের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্নানকোত্তরের চিকিৎসক পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে। আর যাঁরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন তাঁদের কাউন্সেলিং করা থেকে শুরু করে, যোগাভ্যাস এবং ছুটি দিতে হবে প্রয়োজন মত।
পাশাপাশি, এই সংক্রান্ত সমস্যা দেখভালের জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। স্নানকোত্তরের মেডিক্যালের পড়ুয়ারা তাঁদের সমস্যা ইমেইল মারফত কিংবা কমপ্লেইন বক্সে লিখিতভাবেও জানাতে পারবেন বলে জানায়।
যাঁর নামে বাঘে গরুতে একঘাটে জল খেত, আজ কিনা তাঁর চোখে জল!ভোট আসলেই বীরভূমের (Birbhum) বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) সামলাতে কাল ঘাম ছুটত পুলিস থেকে শুরু করে কমিশনের কর্তাদের। কখনও প্রকাশ্যে পুলিসকে বোমা মারার হুমকি দিয়েছেন তো, আবার কখনও গাঁজা কেসে জেলে ঢোকানোর। আজ সেই দাপুটে নেতা একেবারে নির্বাক। কার্যত ভেঙে পড়লেন বীরভূম জেলা তৃণমূল (TMC) সভাপতি। বৃহস্পতিবার রাতে নিজাম (Nizam) প্যালেসে নিয়ে আসার পথে দৌর্দণ্ড্যপ্রতাপ নেতার এহেন অবস্থা লেন্সবন্দি হল। যা দেখে কিছুটা হলেও অবাক হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অনেকেই।
গরু পাচার মামলায় বৃহস্পতিবার বীরভূমের বাড়ি থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। আগামী ১০ দিন তাঁকে সিবিআই হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ আদালত। ২০ অগাস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে পেয়েছে তাঁকে। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুব্রতকে সিবিআইয়ের গাড়িতে করে কলকাতার নিজাম প্যালেসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তবে ধনেখালিতে যানজটে আটকে যায় গাড়ি। একদা বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল বাড়ি থেকে বেরোলেই অনায়াসে রাস্তা ফাঁকা হয়ে যেত। কোনও বাধা বিপত্তি ছাড়াই তিনি পৌঁছে যেতেন গন্তব্যে। একাধিকবার কলকাতায় এসেছেন বাধা-বিপত্তি ছাড়াই। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পরে কলকাতায় ফিরতে গিয়ে বেগ পেতে হল অনুব্রত মণ্ডলকে। গোটা জাতীয় সড়কে কার্যত গাড়ি বন্দী হয়ে থাকতে হল দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল সভাপতিকে। জাতীয় সড়কে প্রায় এক ঘন্টা আটকে ছিলেন তিনি। এরপর স্থানীয় পুলিসের সহযোগিতায় কনভয় ফের কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
আর ফেরার পথে কিছুক্ষণের জন্যে পালসিটের কাছে একটি পেট্রোল পাম্পে দাঁড়ায় সিবিআইয়ের গাড়ি। সঙ্গে সঙ্গে অনুব্রত মন্ডলের দিকে ছুটে যান সাংবাদিকরা। একাধিক প্রশ্ন করা হলেও একেবারে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন তিনি। কেবল ক্যামেরায় ধরা পড়ল অনুব্রতের চোখের জল। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ। সাড়ে সাত ঘণ্টা পর অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে মধ্যরাত ২ টো ৪৫ মিনিট নাগাদ নিজাম প্যালেসে প্রবেশ করেন সিবিআই আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে অনুব্রতর বাড়ি ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তারপর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে টানটান উত্তেজনার শেষে গ্রেফতার হন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই আধিকারিকেরা একেবারে বাড়ির ভিতরে দোতলায় অনুব্রতর ঘরে গিয়ে তাঁকে গ্রেফতারি পরোয়ানাতে স্বাক্ষর করিয়ে গ্রেফতার করেন।
সূত্রের খবর, সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন অনুব্রতর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এছাড়া তাঁর জন্য একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনে একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এমনকি অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী সায়গলের বিপুল সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। তাঁর ফোন রেকর্ড থেকেও উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক তথ্য। যা এখন সিবিআইয়ের হাতে। জানা গিয়েছে, গরু পাচার মামলার একাধিক তথ্য এখন সিবিআইয়ের কাছে। সেই সব বিষয়কে সামনে রেখেই আজ থেকে আগামী কয়েকদিন লাগাতার জেরা করবেন সিবিআই আধিকারিকরা বলে মনে করা হচ্ছে।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করে সিবিআই (CBI) অনুব্রত মণ্ডলকে বৃহস্পতিবার আসানসোলে নিয়ে যায়। কিন্তু এদিন সকালে যখন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে (Anubrata Mondal) যখন গ্রেফতার করে তখন লোকে-লোকারণ্য তাঁর বোলপুরের বাড়ি। কিন্তু বেলা গড়াতেই শুনশান হয়ে যায় সেই এলাকা। পাশাপাশি তালা পড়ে অনুব্রতর বাড়ি এবং অফিসে। কিন্তু সেই ফাঁকা বাড়ির সময় ঘুরতে দেখা যায় এক গরুকে। কিছুক্ষণ সেই গরু, অনুব্রতর বাড়ির মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়েও থাকে। আবার রাস্তায় নেমে হাঁটতে শুরু করে।
এদিকে, বীরভূম থেকে অনুব্রতকে যখন আসানসোল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন রাস্তায় একাধিকবার তাঁকে গরু চোর কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। এমনকি, আসানসোল আদালতেও বিক্ষোভ দেখায় বাম কর্মী-সমর্থকরা। তাঁর উদ্দেশে ছোড়া হয় জুতোও।
এদিন তাঁকে ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। অপরদিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই অনুব্রতকে আনা হয়েছে কলকাতায়। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে কলকাতা আসার পথে একাধিকবার তাঁর কনভয় দাঁড়ায়। তাঁর কাছে গিয়ে সংবাদমাধ্যম কিছু জানতে চাইলে অনুব্রত মণ্ডল কিছুই জানাবেন না বলে হাত নেড়ে জানিয়ে দিন।
চলতি মরশুমে সেভাবে বৃষ্টিপাত (Rain) পায়নি দক্ষিণবঙ্গবাসী (South Bengal)। অবশেষে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে স্বস্তি ফিরেছে কিছুটা। তবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস (Weather Update) দিলেও তার দেখা মেলেনি। মাঝারি থেকে হালকা বৃষ্টিতে ভিজেছে দক্ষিণবঙ্গ।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ,শুক্রবার পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ার কোনও কোনও জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও বাকি জেলাগুলির কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। আপাতত তাপমাত্রার পরিবর্তনেরও কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়া দফতরের তরফে।
অন্যদিকে, ১৩ অগাস্ট শনিবার সকালের উত্তরবঙ্গের কোথাও ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে সবকটি জেলারই কোথাও না কোথাও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী দিন পাঁচেকে তাপমাত্রার হেরফের হওয়ারও কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়া দফতরের তরফে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কলকাতা ও আশপাশের এলাকার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আকাশ মেধলা থাকবে। সঙ্গে কয়েক পশলা বৃষ্টি কিংবা বজ্রবিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩১ ও ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। এদিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৯৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার সকালে অনুব্রতর গ্রেফতারিকে (Anubrata Arrest) স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) বলেন, 'সিবিআইয়ের দেশে গরিমা আছে। তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন তুলছিল মানুষ। তাই সিবিআই সঠিক কাজ করেছে। আইনের আওতায় এনে তদন্ত প্রক্রিয়া চালাবে সিবিআই। অনুব্রত মণ্ডল একজন মাফিয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata) প্রশ্রয়ে-আশ্রয়ে একজন মুদির দোকানি থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক।'
এদিন সিপিএম-র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, 'বিড়াল যদি বলে মাছ খাব না, তাহলে কে বিশ্বাস করবে? কয়লা পাচার-কাণ্ডে নাম না জড়ালে কেউ নাম জানত অভিষেকের। আর ওই বৈভবের টাকায় তো শহরজোড়া হোর্ডিং।'
শুধু বিজেপি বাম-নয় সরব ছিল কংগ্রেসও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'বাংলার এই দুর্নীতি নিয়ে আমরা আগেও বলেছি। এখন যেটা দেখছেন সেটা হিমশৈলের চূড়া।' দেখুন আর কী বললো বাম-বিজেপি-কংগ্রেস।
এদিকে, কোনও অনৈতিক কাজ এবং দুর্নীতিকে তৃণমূল প্রশ্রয় দেয় না। দুর্নীতির (Corruption) বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দলের। অনুব্রতর (Anubrata Mondal) গ্রেফতারির পর জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার শাসক শিবিরের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Minister Chandrima Bhattacharya) এবং প্রাক্তন বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী। চন্দ্রিমাদেবী জানান, দলনেত্রী-সহ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করেছেন, মানুষের পক্ষে যা ক্ষতিকর বা মানুষকে যদি কেউ ঠকায়, সেই কাজকে দল সমর্থন করে না। আগে এবং আজও তৃণমূলের এই বিষয়ে অবস্থান একই। মানুষের সমর্থনে তিন বার তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তাই মানুষের আশীর্বাদ ছাড়া কোনও সম্পদে তৃণমূলের আর কোনও আগ্রহ নেই।
বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার করোনা সংক্রমণ (Corona New Cases) সামান্য বাড়ল। তবে মৃত্যুসংখ্যা (Death) সামান্য হলেও কমেছে। বুধবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫১৯, মৃত্যুসংখ্যা ছিল ৫। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতর যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে, তাতে আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য বেড়ে হয়েছে ৫৯৮ এবং মৃত্যুসংখ্যা কমে হয়েছে ৪। অর্থাত্, বৃহত্তরভাবে দেখতে গেলে রাজ্যের করোনা-চিত্রে তেমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ২৪ ঘণ্টায় হয়নি। যদিও গত কদিনের পরিসংখ্যান বিচার করে বলাই যায়, সংক্রমণ আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। কমেছে মৃত্যুও। কিন্তু একজনেরও মৃত্যুও কখনও কাম্য নয়। সেই হিসাবে মৃত্যুসংখ্যাকে শূন্যে নামিয়ে আনাটাই রাজ্যের কাছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় রাজ্য আগামিদিনে কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার। কারণ, দিল্লিতে সংক্রমণের মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই জনবহুল স্থানে মাস্ক (Mask) ব্যবহার নিয়ে সেখানকার প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। মাস্কবিহীন অবস্থায় ধরা পড়লেই ৫০০ টাকা জরিমানার (Fine) কথা ঘোষণা করেছে সেখানকার প্রশাসন। এমনকী নজরদারি চালানোর জন্য সেখানে বিশেষ বাহিনীও গঠন করা হয়েছে। সেই জায়গায় রাজ্যে সচেতনতার বিষয়টি সাধারণ মানুষের সদিচ্ছার উপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
করোনায় সুস্থতার (Recovery) সংখ্যা বেড়ে যাওয়াটাই রাজ্যের কাছে এখন সবচেয়ে আশার কথা। বৃহস্পতিবারও যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯৮, সেখানে সুস্থতার সংখ্যা ৮০২। ফলে সক্রিয় আক্রান্তের (Active Cases) সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে। যেমন এদিন তা ছিল ৬২১৭। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মাত্র ২২১ জন। করোনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে। এদিন তা ছিল ১২ হাজারের কাছাকাছি। এদিন পজিটিভিটি রেট ছিল ৫.০২ শতাংশ।
আগামি ২০ অগাস্ট অর্থাৎ ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠানো হল অনুব্রত মণ্ডলকে। গোরু পাচার-কাণ্ডে বৃহস্পতিবার ধৃত বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। এদিন অনুব্রতর আইনজীবী জামিনের আবেদন না করলেও, সিবিআই হেফাজত কমানোর পক্ষে সওয়াল করেন। তিনি আদালতকে বলেন, 'যতটা সম্ভব কমানো হোক তাঁর মক্কেলের সিবিআই হেফাজত। আমরা সহযোগিতা করতে রাজি।' এরপরেই ১০ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক।
এই মামলায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্র খুঁজতে অনুব্রত মণ্ডলকে হেফাজতে নিয়ে জেরার প্রয়োজন আছে। এদিন এই সওয়াল সিবিআইয়ের তরফে করা হয়েছে। পাশাপাশি ধৃত অনুব্রত মণ্ডল এদিন এজলাসে বলেন, 'তাঁর ফিস্টুলার সমস্যা আছে। বুকে ব্যথা-সহ নানা শারীরিক ব্যাধি রয়েছে। তাই মহামান্য আদালত যাতে তাঁর দিকটা বিচার করেন।'
তবে এদিন বিকেলে যখন অনুব্রত মণ্ডলকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়, তখন এজলাসে সাংবাদিকদের ঢুকতে বাধা দেন পুলিসকর্মীরা। কোর্টের বাইরে সাংবাদিকদের বের করে ভিতর থেকে কোর্ট গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে কোর্ট চত্বরে উপস্থিত পুলিস আধিকারিক এবং সাংবাদিকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার পরিবেশও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি এই শুনানি চলাকালীন।
মায়ের ভালোবাসার (Mother's Love) কাছে পৃথিবীর সব কিছুই যেন তুচ্ছ। যখন সন্তান জীবনে সফলতা অর্জন করে, বাবা-মা সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হন। ব্যতিক্রম নন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (United States) নিউ জার্সির (New Jersey) ওই মহিলা। তিনি তাঁর মেয়ের ডক্টরেট ডিগ্রি (doctorate degree) অর্জনে খুশি হয়ে মেয়েকে অভিনন্দন জানাতে একটি হোর্ডিং লাগিয়েছেন রাস্তায়। যা ইতিমধ্যে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কেন্দ্র বাসবি নামে ওই মহিলা তাঁর মেয়ের জন্য এতটাই গর্বিত যে, মেয়ের কৃতিত্বের কথা পুরো শহরকে জানাতে চেয়েছিলেন। গর্বিত মা বিলবোর্ড ভাড়া করে সেখানে মেয়ের ডক্টরেট ডিগ্রি লাভের কথা লেখেন। সঙ্গে মেয়ের ছবিও দেন।
২৮ শে জুলাই ফেসবুকে কেন্দ্র বাসবি নিজে সেই বোর্ডের ছবি শেয়ার করেছিলেন। এবং মেয়েকে উদ্দেশ্যে করে লিখেছিলেন, "তুমি অবশ্যই আমার উজ্জ্বল নক্ষত্র। আমি সবচেয়ে গর্বিত মা। ভীষণ ভালোবাসি। তোমার আগামী জীবন আরও সুন্দর হোক।"
পোস্টটিতে শত শত লাইক এবং কমেন্ট পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা তাঁর মেয়ে ডক্টর স্মলসকে কৃতিত্ব অর্জনের জন্য এবং মিসেস বাসবিকে এত গর্বিত হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ক্যামডেনের কাছে এয়ারপোর্ট সার্কেলের ঠিক দক্ষিণে ১৩০ রুট দিয়ে যাওয়ার সময় ডাঃ ক্রিস্টিন এস স্মলসের ছবি দেওয়া এই বোর্ডটি দেখতে পাওয়া যায়। ফিলাডেলফিয়া কলেজ অফ অস্টিওপ্যাথিক মেডিসিন থেকে মনোবিজ্ঞানের উপর ডক্টরেট অর্জন করেছেন ক্রিস্টিন।
কোনও অনৈতিক কাজ এবং দুর্নীতিকে তৃণমূল (TMC) প্রশ্রয় দেয় না। দুর্নীতির (Corruption) বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দলের। অনুব্রতর (Anubrata Mondal) গ্রেফতারির পর জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার শাসক শিবিরের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Minister Chandrima Bhattacharya) এবং প্রাক্তন বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী। চন্দ্রিমাদেবী জানান, দলনেত্রী-সহ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করেছেন, মানুষের পক্ষে যা ক্ষতিকর বা মানুষকে যদি কেউ ঠকায়, সেই কাজকে দল সমর্থন করে না। আগে এবং আজও তৃণমূলের এই বিষয়ে অবস্থান একই। মানুষের সমর্থনে তিন বার তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তাই মানুষের আশীর্বাদ ছাড়া কোনও সম্পদে তৃণমূলের আর কোনও আগ্রহ নেই।
তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো নিরপেক্ষ চেহারা হারিয়ে ফেলছে। সবার সঙ্গে নিরপেক্ষ ব্যবহার করুক তদন্তকারী সংস্থাগুলো। এটুকু আশা আমরা করতেই পারি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রের শাসক দলের কারও বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো উঠেপড়ে লাগে। কিন্তু কেন্দ্রের শাসক দলের পক্ষে কেউ অভিযুক্ত হলে, সেই তৎপরতা দেখা যায় না।' এই অভিযোগ তোলার সময় তিনি সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়কের গাড়ি থেকে অর্থ উদ্ধারের প্রসঙ্গ তোলেন। এবং একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হয়েও ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এভাবেও ঘুরিয়ে বিজেপিকে কাঠগড়ায় তোলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী।
তাঁর দাবি, 'বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে সারদা কর্তার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তারপরেও বিরোধী দলনেতাকে ডাকাডাকি নেই, তাঁর বিরুদ্ধে কোণও কেন্দ্রীয় সংস্থার তৎপরতা নেই। শুধু বিরোধী দলনেতা নয়, তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে। কিন্তু ইডি, সিবিআই কেউই তাঁদের তদন্তের আওতায় আনছে না।'
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আরও জানান, বিচারব্যবস্থা, মাননীয় বিচারপতি সবার প্রতি আমাদের আস্থা এবং বিশ্বাস আছে। সবদিক খতিয়ে দেখেই বিচারব্যবস্থা পদক্ষেপ নেবে। তৃণমূলের তরফে আগামি দুই দিন সিবিআই-ইডির নিরপেক্ষতা চেয়ে এবং কেন্দ্রের সরকার দ্বারা প্রভাবিত না হওয়ার দাবিতে জেলায় জেলায় মিছিল করবে দল। এদিন জানান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং সমীর ভট্টাচার্য। পাশাপাশি তাঁরা জানান, অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা? যথা সময়ে সংবাদ মাধ্যম জানতে পারবে। দলনেত্রী এবং শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হবে। এমনটাই বৃহস্পতিবার জানান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং সমীর চক্রবর্তী। দুর্নীতিতে কেউ অভিযুক্ত হলে তৃণমূল তাঁকে সমর্থন করবে না। এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন ওই দুই নেতা।
বার দশেক তলব করার পরেও বীরভূমের 'মুকুটহীন শাহেনশা' অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই দপ্তরে যাননি। কেন যাননি, সে প্রশ্ন নিয়ে দ্বিমত আছে। কেউ বলছে চিরকাল রাজ্য পুলিসের উপর দাপট দেখানো অনুব্রত হয়তো ভেবেছিলেন সিবিআইও বোধহয় একই গোত্রের। ভাবেননি যে তাঁকে বাড়ির থেকে তুলে আনা হতে পারে। কিন্তু তাঁর বোঝা উচিত ছিল গত বিধানসভা ভোটের পর ববি হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়-সহ নেতাদের এই সিবিআই কিন্তু ভোরবেলায় বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল। অতএব তার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে এমন ধারণাটাই ভুল ছিল। অন্য মত বলছে অনুব্রত হয়তো হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হওয়ার আশংকায় সিবিআই দফতরে যাননি। কিন্তু সকলেরই প্রশ্ন অনুব্রতর মতো প্রভাবশালী ক্ষমতাবান নেতার গ্রেফতারে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হল তৃণমূল?
এই বিষয়ে নিয়েও দ্বিমত আছে। একদল বলছেন, যথেষ্ট ক্ষতি হল, কারণ হিসাবে তারা বলছে, এই অনুব্রতর দাপটে সিপিএম বিজেপি বীরভূমে একঘাটে জল খেত। ২০১১ থেকে ২০২১ এর মধ্যে যত নির্বাচন হয়েছে অনুব্রত প্রমাণ করেছেন তিনি অপরাজেয়। সেন্ট্রাল ফোর্স দিয়েও তাঁকে আটকানো যায়নি। ঘরে বসে ভোটযুদ্ধের অপারেশন চালিয়েছিলেন। দুঃসময়ে অর্থাৎ ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে পর্যন্ত বিজেপি এখানে দাঁত ফোটাতে পারেনি। দুটি আসনেই বড় জয় এসেছিল তৃণমূলের। এছাড়া বিধানসভা বা পঞ্চায়েত তো ছিলই। কাজেই তাঁর গ্রেফতারে বীরভূমে শক্তি হারালো তৃণমূল। তারা বলছে পূর্ব মেদিনীপুরের লক্ষণ শেঠ বা উত্তর ২৪ পরগনার মজিদ মাস্টারের দানা ছাঁটার পর দুই জেলাতেই সংগঠনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সিপিএম-র। এঁরা কেউই ঈশ্বর প্রেরিত দূত ছিলেন না।
অন্য একটি তৃণমূল গোষ্ঠীর মতে কেউ আইনের জালে পড়তেই পারে কিন্তু দলটি চলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। অতএব চিন্তার কিছু নেই। সত্যিই কি তার উত্তর দিতে পারবে আসন্ন মানিকতলা উপনির্বাচন এবং তারপরে পঞ্চায়েত নির্বাচন?