বোরখা পড়ে অবৈধ সুদ কারবারি করে প্রতারণার অভিযোগ। প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে বাড়িঘর খোয়ালেন রেক্সোনা খাতুন নামের এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার সালার থানার মাধাইপুর গ্রামে।
জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে আকবর হোসেন রেক্সোনার কাছে দু'লক্ষ টাকা সুদে ধার নেয়। কর্মসূত্রে আকবর থাকেন এখন দুবাইয়ে। কিন্তু দুবাই থেকে প্রতিমাসের সুদ ১০ হাজার টাকা ও নগদের অংশ পাঠিয়ে দিতেন তিনি। আকবর হোসেনের স্ত্রী ও মেয়ে সেই টাকা রেক্সোনাকে প্রতি মাসে শোধও করেন। সমস্ত হিসাব ও চুক্তিপত্র গ্রামের স্থানীয় দলিল লেখক জামশেদ শেখ লিখেছিল।
অভিযোগ, শেষ কিস্তি পরিশোধের সময় আকবরের স্ত্রীর কাছ থেকে সেই চুক্তিপত্র নিয়ে নেন রেক্সোনা। শুধু আকবর নয়, গ্রামের এমন আরও পাঁচ থেকে ছটি ভিটেবাড়ি এভাবেই দখল করেছে রেক্সোনা। বোরখা পড়া গৃহবধুর এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক গ্রামবাসীরা।
রামনবমীতে মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর, বেলডাঙা এলাকায় বিঘ্নিত হয়েছিল শান্তি শৃঙ্খলা। মন্দির থেকে মসজিদ-হামলা চালানো হয়েছিল সর্বত্র। সোমবার মুর্শিদাবাদের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের আবেদনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মামলায় রাজ্য পুলিসের কাছে রিপোর্ট তলব কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের।
প্রসঙ্গত, সোমবার মামলার শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, রামনবমী উদ্দেশ্য করে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বোমা ফাটানো হয়। অথচ এই মিছিলের অনুমতি আগে থেকেই পুলিসের কাছ থেকে নেওয়া ছিল। তবে বিশৃঙ্খলার ঘটনার সময়ে পুলিসের কোনও ভূমিকা ছিল না।
যদিও রাজ্যের আইনজীবী জানান, এটা সম্পূর্ণ দুই পক্ষের ঝামেলার ফল। দুই পক্ষ থেকেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা ধর্মীয় বিবাদ। এখানে পুলিসও আক্রান্ত হয়েছে। মোট ন'টা লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্তভার পেয়েছে সিআইডি। ঘটনার সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী সেখানে উপস্থিত ছিল বলেও আদালতে জানান রাজ্যের আইনজীবী।
যদিও এএসজি অশোক চক্রবর্তী জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী ওখানে রুট মার্চ করছিল নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাইকোর্টের নির্দেশ, এনআইএ এবং সিআইডি যৌথ তদন্ত চালাবে কি না তা নির্ধারিত হবে মঙ্গলবার। যে সকল ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে তা সংরক্ষণ করতে হবে। এরই সঙ্গে এসপি মুর্শিদাবাদ এবং সিআইডিকে মঙ্গলবার দুপুর ৩টের মধ্যে সম্পূর্ণ রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চের।
হাওড়ার দাসনগরে এক ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। সোমবার ভোর রাতে দাসনগর থানার অন্তর্গত বিরাজময়ী রোডে রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিস এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দাসনগর থানার পুলিস।
জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম রাজকুমার রাম (৫৫)। তিনি দাসনগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। পেশায় ট্রলি ভ্যান চালক। ক্যাটারিং-এর বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র ভ্যানে চাপিয়ে নিয়ে যেতেন। রবিবার রাতে জন্মদিন উপলক্ষে একটি বাড়িতে অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানের পর সেখান থেকে বাসনপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ভ্যান নিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর সোমবার ভোর রাতে স্থানীয়দের থেকে তাঁর স্ত্রী খবর পান যে রাজকুমার সিড়ির পাশে পড়ে রয়েছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর স্ত্রী।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দাসনগর থানার পুলিস। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখান থেকে পুলিস উদ্ধার করে হাওড়া হাসপতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে পুলিস একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা নাকি এই মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিস জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
প্রসূন গুপ্ত: হিন্দিতে প্রবাদ আছে পাহাড় খুদা নিকলে চুঁহা। বাংলা করার দরকার নেই। এই মূহুর্তে সবকটি বিরোধী দলের কাছে সবথেকে সমালোচিত তৃণমূল নেতার নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত দুবছর ধরে এমন একটি দিন যায়নি যেদিন বিরোধীরা অভিষেককে গালি না দিয়ে এক ঢোকে জল খেয়েছে। কি না বলা হয়েছে। অথচ এবারে লোকসভা নির্বাচনে সবার নজর ছিল অভিষেকের ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে। ভাবা হচ্ছিল তাঁকে জব্দ করার জন্য জবরদস্ত প্রার্থী নিশ্চয়ই দেওয়া। কসরৎ কম হয় নি। জল্পনায় উঠে এসেছে বহু নাম কিন্তু শেষে অভিজিৎ দাস নামক এক অখ্যাত?
আসলে সাগরদিঘি ব্র্যান্ড করতে গিয়েই গুবলেট হয়েছে সব। শোনা যাচ্ছিল যে, আইএসএফ প্রধান নওশাদ সিদ্দিকি প্রার্থী হচ্ছেন। তেমন দাবি করেছিলেন নওশাদ। সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিজিৎ গাঙ্গুলীও বলেছিলেন তিনি দাঁড়িয়ে লক্ষ লক্ষ ভোটে জিতবেন। কিন্তু দুজনেই সময় মত সরে গেলেন। নওশাদের যুক্তি অবশ্যই মানার মত। তিনি বুঝতে পারেন যে, সিএএ ইত্যাদি চক্কর তাঁর জমানত যেতে পারে। সিপিএম বা কংগ্রেস তা ঠেকাতে পারবে না। অন্যদিকে বিজেপির ধারনা ছিল যে যদি নওশাদ সংখ্যালঘু ভোটে থাবা দিতে পারে তবে বেশ হেভিওয়েট কাউকে দাঁড় করিয়ে জিতার লড়াই দেওয়া যাবে। কিন্তু নওশাদ রাজি না হওয়ায় সবকটি দলই বিপাকে পড়ল।
মুখ রক্ষায় সিপিএম একজন প্রার্থী দিল এবং দুদিন আগে বিজেপি প্রার্থী করল অনামী অভিজিৎ দাসকে। এই অভিজিৎবাবু আরএসএস করা নেতা। ২০০৯ এবং ২০১৪র লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে পরাজিত হয়েছেন। ফের তাঁকেই প্রার্থী করা হল মূলত সঙ্ঘ পরিবারের নির্দেশেই বলে খবর। নাম এসেছিল অনেক। যথা কৌস্তভ বাগচী, রূদ্রনীল ঘোষ, শঙ্কুদেব পান্ডা ইত্যাদি কিন্তু সঙ্ঘ মন করেছে এদের বিজেপিতে মোটেই বিশ্বাস যোগ্যতা নেই। হারজিত পরের বিষয় কিন্তু লড়াইয়ে থাকুক আদি বিজেপি। ১ জুন ভোট। ফল ৪ জুন । অভিষেক নিশ্চিন্তে সারা বাংলায় প্রচারই করতে পারবে।
ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে কার্যত প্রলয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সহ ওমান এবং বেহরিনে। বড় রাস্তা থেকে শুরু করে বিমানবন্দর সর্বত্র জলে ডুবে গিয়েছে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার অতিভারী বৃষ্টিতেই এই অবস্থা দেশের। এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এখনও বহু জায়গা জলে ডুবে রয়েছে। ছুটি দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ এবং অফিসগুলিতে। একেবারে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বেনজির পরিস্থিতি দুবাইয়ে।
গত কয়েক দশকে এমন বর্ষণের সাক্ষী থাকেননি দুবাই বাসী। রাস্তা দিয়ে বয়ে চলেছে স্রোতের মতো জল। শপিং মলের ছাদ বেয়ে নামছে জলের ধারা। উঁচু উঁচু হাইরাইজ বিল্ডিং ঝড়ের দাপটে অস্থির। সেখানকার বাসিন্দারা রীতিমতো থরহরি কম্প অবস্থায় রয়েছে।
বিমানবন্দরের রানওয়ে পর্যন্ত ডুবে গিয়েছে দুবাইয়ে। এতটাই বর্ষণ হয়েছে সেখানে। এর আগে কখনও এমন বৃষ্টির কথা ভাবতেই পারেনি দুবাই। রুক্ষ-শুষ্ক মরু অঞ্চল দুবাই। কর্মসূত্রে দুবাইয়ে অসংখ্য ভারতীয় থাকেন। প্রবল বর্ষণে বিমানবন্দরে জল জমে যাওয়া বহু বিমান উড়তে পারছে না। অনেকেই দেশে ফিরতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। ভারতে আসার জন্য যাঁরা বিমানবন্দরে আটকে রয়ছেন তাঁদের সুবিধার্থেই এই হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যেসব ভারতীয় পর্যটকরা আটকে রয়েছেন সেখানে তাঁদের জন্য ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে এই ত্রাণ তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
ফের খবরের শিরোনামে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এবার বিতর্কে রামনবমী উদযাপন করা নিয়ে। রামনবমীর অনুষ্ঠান প্রত্যাহার করতে বলা হল রেজিস্ট্রার-এর তরফে। এই মর্মে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা। প্রথমে অনুষ্ঠান পালনের জন্য় অনুমতি দেওয়া হলেও পরে অনুমতি প্রত্যাহার করে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু।
গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের রামনবমী উৎসব পালনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু নোটিশ দিয়ে সেই অনুমতি প্রত্যাহার করল। তবে ঠিক কী কারণে নির্দিষ্ট করা অনুমতি বাতিল করা হল, সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য রেজিস্ট্রারকে ফোন করলেও রেজিস্ট্রার ফোন ধরেনি বলে অভিযোগ।
যদিও রাষ্ট্রবাদী ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বদের দাবি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো থেকে ইফতার পার্টি সবকিছুই সুপরিকল্পিতভাবে অনুষ্ঠিত হলেও কেন রামনবমী পালন করার অনুমতি দিতে দ্বিচারিতা? প্রশ্ন তুলছেন রাষ্ট্রবাদী ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব। রাজ্য সরকারের তরফে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে রাম নবমীতে। তাহলে কেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রামনবমী পালন করা যাবেনা, যা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
প্রসূন গুপ্তঃ স্বাধীনতা উত্তর যুগে যে কয়েকটি এলাকা লাল দুর্গ হিসাবে খ্যাত হয়েছিল তার অন্যতম যাদবপুর। এর কারণও ছিল। অঞ্চলের বিশাল স্থানে এসেছিলো উদ্বাস্তুরা এবং ইতিহাস বলে বাম বা সিপিএম বা নক্সালরা যেখানে সংগঠন পোক্ত করেছিল তার বেশির ভাগই উদ্বাস্তু এলাকা ছিল। কিন্তু এই মিথটি ভেঙে দিয়েছিলেন ১৯৮৪/৮৫ তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ফের এই লোকসভা সিপিএমের হাতে চলে যায় ১৯৮৯ তে। ফের তৃণমূল দল তৈরি হলে এই যাদবপুর থেকে জিতে আসেন কৃষ্ণা বসু। ফের ২০০৪-এ ফের সিপিএমের হাতে আসে এই লোকসভা। কিন্তু ২০০৯ থেকে এই লোকসভা ফের চলে আসে তৃণমূলের হাতে।
যাদবপুর লোকসভায় ৭টি বিধানসভা আছে। টালিগঞ্জ, যাদবপুর, সোনারপুর ১ ও ২, বারুইপুর ১ ও ২ এবং ভাঙ্গর। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে ৭টির মধ্যে ৬টি বিধানসভা যেতে তৃণমূল। একমাত্র ভাঙ্গরে আইএসএফ এর প্রার্থী নৌশাদ সিদ্দিকী জেতেন। গত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তী বিজেপির অনুপম হাজরাকে প্রায় ৩ লক্ষ ভোটে পরাজিত করেন। এবারে কিন্তু মিমি আর লড়াইয়ে নেই, এসেছেন আর এক গ্ল্যামার দুনিয়ার অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। বিরুদ্ধে বিজেপির উচ্চ শিক্ষিত অনির্বান গাঙ্গুলি এবং সিপিএমের সৃজন ভট্টাচার্য।
লড়াইটা কেমন হবে উঠেছে প্রশ্ন? প্রথমত এবারে লড়াই তৃণমূল বনাম বিজেপি নাকি তৃণমূলের লড়াই সিপিএমের সঙ্গে? বাম প্রার্থী সৃজন নব্য যুবা। জনপ্রিয়তা আছে তাঁর। একই সাথে জানতে হবে যে গতবারে লড়াই কিন্তু ত্রিমুখী হয়েছিল এই যাদবপুরেই। একমাত্র সিপিএম প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্য সারা বাংলায় নিজের জামানত রাখতে পেরেছিলেন। যদি সেই মোতাবেক ভোট হয় তবে সায়নীর বড়সড় ভোট জিতে আসাটা সমস্যার হবে না। কিন্তু যদি সৃজনকে খোদ সিপিএম ভোট না দিয়ে অনির্বাণকে দেয় তবে লড়াই জোরদার। আবার যদি সিপিএমের পুরাতন ভোট দলেই ফিরে আসে তবে লড়াই জোরদার তৃণমূলের সঙ্গে তাদের। সে যাই হোক না কেন কলকাতা, বিশেষ করে দক্ষিণ কলকাতা লাগোয়া যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র কিন্তু তৃণমূলের অন্যতম খাসতালুক ফলে অনেকটাই পা বাড়িয়ে খেলছেন সায়নী।
প্রসূন গুপ্তঃ অবশেষে একেবারে ভোট শুরুর দোরগোড়ায় আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করল পুরাতন সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াকে। বড্ড দেরিতে এই ঘোষণা হলো। অঞ্চলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা ইতিমধ্যেই ৫০ শতাংশ অঞ্চলে প্রচার সেরে ফেলেছেন। এবারে প্রশ্ন এই আসানসোল কেন্দ্রে প্রার্থী ঠিক করতে এত দেরি হলো কেন?
প্রথমত একেবারে প্রথমেই ভোজপুরি গায়ক/অভিনেতা পবন সিংকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু বাঙালিকে নিয়ে পবনের একটি আপত্তিকর গানে তুমুল প্রতিবাদ ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। মানে মানে পবন এক প্রকার পালিয়ে যান ভোট লড়াই থেকে।
এরপর বিজেপি ভাবতে শুরু করে যে, একসময় পরপর দুবার এই লোকসভা জেতার পরে বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় দল ছেড়ে, পদ ছেড়ে তৃণমূলে যদি দেন এবং তাদের সিম্বলে জিতে মমতা মন্ত্রিসভার সদস্য হন। অন্যদিকে উপনির্বাচনে আসানসোল কেন্দ্রে প্রার্থী হন অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ শত্রুঘ্ন এবং ৩ লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতে আসেন। কাজেই অঞ্চলটি যে বেশ কঠিন তা বেশ ভালো বুঝতে পারে বিজেপি। কিন্তু শত্রুর বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে পায় না তারা। একবার প্রাক্তন তৃণমূল এবং বর্তমানে বিজেপির নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে কে প্রার্থী করার ভাবনা আসে তাদের কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে গোপন বৈঠকের কথা জানতে পেরে জিতেনকে বাতিল করা হয়। অবাঙালি অধ্যুষিত এই অঞ্চলে শেষ পর্যন্ত আলুওলিয়াকে ঠিক করা হয়।
আলুওয়ালিয়া ২০১৪-তে দার্জিলিং থেকে সাংসদ হন, ২০১৯ পদ্মফুল চিন্হে জিতে আসেন বর্ধমান/ দুর্গাপুর থেকে। শেষ বার অবিশ্যি নামমাত্র ভোটে জেতেন আলুওয়ালিয়া। এই আলুওয়ালিয়া মূলত প্রয়াত সুষমা স্বরাজের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং লালকৃষ্ণ আদবানিরও পছন্দের মানুষ। সুরিন্দর আসানসোলের মানুষ, চমৎকার বাংলা বলেন, তাঁর স্ত্রীও বাঙালি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কিন্তু একটাই মাইনাস পয়েন্ট তিনি মোদী/শাহের অপছন্দের নেতা বলেই গুঞ্জন। শেষ পর্যন্ত উপায়ান্তর না দেখেই তাঁকে প্রার্থী করা হলো। সমস্যা হচ্ছে শত্রুঘ্ন কঠিন প্রার্থী। আসানসোলে প্রচুর বিহারী এবং মুসলিম ভোট। এ ছাড়া শত্রু বিহারীবাবুও বটে কাজেই বেশ কঠিন লড়াই আলুওয়ালিয়ার।
ফের পণের দাবিতে প্রাণ গেল এক গৃহবধূর। পরিকল্পনামাফিক খুনের অভিযোগ মৃতার পরিবারের। ইতিমধ্য়েই পুলিসের হাতে গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত স্বামী। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে জিয়াগঞ্জ থানার আমিনা বাজার এলাকায়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম রকসেনা খাতুন (১৯)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিস গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মেয়ের উপর তাঁর স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন নানানভাবে অত্যাচার করত। প্রায়শই জিনিসপত্রের দাবিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্য়ে ঝামেলা অশান্তি চলত। এরপর গতকাল অর্থাৎ রবিবার ওই গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্য়ে থানায় গিয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিস মৃতার স্বামী মিসকাতুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।
হাতে গোনা আর কয়েকটা মাত্র দিন। তারপরেই শুরু হতে চলেছে দিল্লির কুরসি দখলের লড়াই। রবিবাসরীয় সকালে কলেজ স্কোয়ারে মর্নিং ওয়াক থেকে শুরু করে চায়ে পে চর্চার মাধ্যমে জনসংযোগ সারেন উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। চায়ের আড্ডায় যোগ দিয়ে বিজেপির দলীয় কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগের কথাও শোনেন তিনি।
উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে মূলত গণতন্ত্রের সম্মানের লড়াই হতে চলেছে। এদিন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাম না করে আক্রমণ করেন তাপস রায়। সংসদে কোনওদিন উত্তর কলকাতার মানুষদের দাবিদাওয়ার কথা জানাননি সাংসদ, অভিযোগ বিজেপি প্রার্থীর।
কলেজ স্কোয়ারে প্রচার সেরে বেলেঘাটার সিআইটি রোডে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নেন উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। এদিন হুড খোলা জিপে চড়ে নির্বাচনী প্রচার সারেন তিনি। উত্তর কলকাতায় জয় নিশ্চিত, জানান জয়ের বিষয় আত্মবিশ্বাসী তাপস।
এনআই-এর উপর হামলার ঘটনায় তৃণমূলকে নিশানা করেন তাপস রায়। এছাড়াও উত্তর কলকাতার একাধিক বেআইনি নির্মাণের বিষয়েও চিন্তাপ্রকাশ করেন তিনি।
প্রতিপক্ষ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কখনও দুর্নীতিগ্রস্ত তো কখনও সুবিধাবাদী বলে কটাক্ষ করেছেন উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। এর থেকেই স্পষ্ট যে লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে। তবে শেষ হাসি কে হাসবে তা জানতে আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে রাজ্যবাসীকে।
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের আরও পাঁচটি আসনে প্রার্থী দিল বামফ্রন্ট। আজ, শুক্রবার বিকেলে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে দলীয় দফতরে সেই ঘোষণা করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। প্রার্থী দেওয়া নিয়ে আইএসএফের দর কষাকষিতে বামফ্রন্ট যে অসন্তুষ্ট সেটাও বোঝা গিয়েছে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে। আইএসএফের পর ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী দিল সিপিআইএম।
ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আইএসএফ দাঁড় করিয়েছে মজনু লস্করকে। নওশাদ সিদ্দিকী প্রথমে এই আসন থেকে লড়াই করবেন বলে বারবার জানিয়ে এলেও তা হয়নি। এই ভোলবদলের কারণ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে নওশাদ বলছেন, তিনি দলের ঊর্ধ্বে নন। আইএসএফের প্রার্থী দেওয়ার পর আজ সিপিআইএম প্রতীকুর রহমানকে ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী করল। সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক এবং সাম্প্রতিক সন্দেশখালি আন্দোলনের মুখ হিসেবে উঠে আসা নিরাপদ সর্দারকে প্রার্থী করা হয়েছে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে।
ব্যারাকপুর আসন থেকে সিপিআইএমের হয়ে লড়বেন দেবদূত ঘোষ। ঘাটাল আসনে সিপিআইয়ের তপন গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বারাসত কেন্দ্র থেকে লড়াই করবেন ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী প্রবীর ঘোষ। এদিন বামফ্রন্টের তরফে জানানো হয়েছে, ৩০টি আসনে লড়বেন বামফ্রন্টের প্রার্থীরা। জয়নগর ও মথুরাপুর আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে। ১২টি আসনে বামেদের সমর্থনে লড়াই করবে কংগ্রেস। পুরুলিয়ায় একাই লড়বে ফরওয়ার্ড ব্লক।
ফাইভ জির যুগে ফের কুসংস্কারের বলি। তান্ত্রিক সন্দেহে 'খুন'। মৃত ব্যক্তির নাম জয়দেব বর্মন। চাঞ্চল্য়কর ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচল ১ নং ব্লকের ভগবানপুর গ্রামে। ইতিমধ্য়ে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। জানা গিয়েছে, মৃত ব্য়ক্তির নাম জয়দেব বর্মন (৬০)। অভিযোগ, গ্রামের কেউ অসুস্থ হলেই তাঁকে দায়ী করা হত।
অভিযোগ, ভগবানপুরের গ্রামবাসীরা সন্দেহ করেন যে জয়দেব বর্মন তন্ত্র সাধনা করেন। সেই সন্দেহের বসে একাধিকবার হেনস্থা করা হয়েছে তাঁকে। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে সালিশি সভা করে মল মূত্র খাইয়ে মারধর করাও হয়েছে। এরপর গতকাল, বৃহস্পতিবার গাছ থেকে উদ্ধার হয় ওই ব্য়ক্তির ঝুলন্ত মৃতদেহ। খুনের অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার। এই ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে গোটা পরিবার। বর্তমান যুগে এই ধরণের মধ্যযুগের কু সংস্কার কীভাবে তা নিয়ে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। প্রশ্নের মুখে পুলিস প্রশাসনের ভূমিকা।
একদিকে যখন শিক্ষামন্ত্রীকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর সুপারিশ করল রাজ্যপাল, অন্যদিকে তখন বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতিতে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত চরমে। সম্প্রতি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকরী উপাচার্য রজত কিশোর দে-কে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়। মূলত সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে রাজভবন। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়, রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দফতরের বেআইনি আদেশে যে সকল উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ স্তব্ধ করে করে রেখেছেন, আচার্য তাঁদের সতর্ক করছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ‘ক্ষমতা কুক্ষিগত’ করতে চাইছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে সেখানে।
রাজভবনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, উপাচার্যেরা যে সব নির্দেশ দিয়েছিলেন, আচার্য তা ক্ষমতাবলে রদ করে দিচ্ছেন। এ নিয়ে অবশ্য টুইট কটাক্ষ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এরপরেই রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার রাজ্যকে সুপারিশ করে নির্বাচনী আইন বিধি লঙ্ঘন করার জন্য ব্রাত্য বসুকে যেন শিক্ষামন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী টুইটে কটাক্ষ করে লেখেন, ‘‘আমি রাষ্ট্রপতির কাছে যদি রাজ্যপালকে সরানোর সুপারিশ করতাম, তা হলে সেটা যেমন হাস্যকর হত, এটাও ঠিক তেমনই। আমি কোনও নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করে থাকলে তা কমিশনের নজরে আনার অধিকার রয়েছে রাজনৈতিক দলের। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী কোনও রাজ্যের মন্ত্রীর অপসারণ বা নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেন একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাজ্যপাল এমন অভিযোগ তুলে নিজের সাংবিধানিক পদের অপব্যবহার করছেন। নিজের রাজনৈতিক পরিচয়ও প্রকাশ্যে এনেছেন। নিজের সাংবিধানিক সীমাও লঙ্ঘন করেছেন।’’
ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু নয় মাসের শিশু কন্যার। মঙ্গলবার দুপুরে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচলের খরবা স্ট্যান্ডে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিস গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শিশু কন্যাটির নাম আনিসা পারভিন। বয়স মাত্র নয় মাস। এদিন সকালে শিশুটির মা সাগরি খাতুন চাঁচলে নিয়ে আসেন ডাক্তারের কাছে। তারপর ডাক্তার দেখিয়ে মেয়েকে নিয়ে অটোয় করে বাড়ি ফিরছিলেন। ঠিক সেই সময় চাঁচল আশাপুর রাজ্য সড়কের খরবা স্ট্যান্ডে একটি স্কুল পড়ুয়াকে বাঁচাতে গিয়ে উল্টে যায় অটোটি। এরফলে দুর্ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই নয় মাসের শিশু কন্যাটির। শিশুর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের পরিবার থেকে শুরু করে প্রতিবেশীরা।
গোবরডাঙ্গা আকাঙ্ক্ষার ১৫৮ তম দিনে মহরম্বরে শেষ হলো জাতীয় রং বাহারী উৎসব। এই উৎসবটি ভারতবর্ষের সব থেকে দীর্ঘতম উৎসবের মধ্যে ধরা যায়। নাটকের শহর গোবরডাঙ্গার অন্যতম তরুণ তুর্কি নাট্যদল গোবরডাঙ্গা আকাঙ্ক্ষা নাট্য সংস্থার বর্ষ ব্যাপি জাতীয় রং বাহারী উৎসবের শুভ সূচনা হয়েছিল গত ১৮ এপ্রিল ২০২৩। শেষ হলো দীর্ঘ ১৫৮ দিনের জাতীয় নাট্যোৎসব।
গত ৩১ শে মার্চ ২০২৪ গোবরডাঙ্গা পৌর টাউন হলে সকালে নিত্য প্রতিযোগিতা এবং বিকাল ৪:৩০ মিনিটে আকাঙ্ক্ষার সদস্য, সদস্যা ও অভিভাবিকাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উদ্বোধনী নৃত্য আকাঙ্ক্ষিত মিলন মঞ্চস্থ হয়। দিল্লি NSD, সাহিত্যকলা একাডেমী সহ দিল্লির একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রূপসজ্জাশিল্পী অনুপ ঘোষ ও কলকাতা পূর্বাঞ্চল সাংস্কৃতিক দফতরের অধিকর্তা আশিস গির বাংলা সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে উভয়-উভয়ের হাতে তুলে দেন। বিশিষ্ট পরিচালক ও বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতিক দফতরের অধিকর্তা আশিস গির বটবৃক্ষে জল সিঞ্চনের মধ্যে দিয়ে এবং অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন। আকাঙ্ক্ষার পক্ষ থেকে বিশিষ্ট রূপসজ্জাশিল্পী অনুপ ঘোষকে জাতীয় রং বাহারি সম্মান, বিশিষ্ট বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যকে নাট্য যোদ্ধা সম্মান, বিশিষ্ট শিক্ষক এবং সাংবাদিক পবিত্র মুখোপাধ্যায়কে স্বর্গীয় নিত্যানন্দ দত্তের স্মৃতিতে জীবন কৃতি সম্মান, বিশিষ্ট কবি রিনা গিরিকে সৃজন সম্মান ও বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী বনানী বোস কে আকাঙ্ক্ষা সম্মানের সম্মানিত করা হয়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণেশ্বর কোমল গান্ধারের কর্ণধার মুরারি মুখোপাধ্যায়, গোবরডাঙ্গা নকসার কর্ণধার আশিস দাস। ওঁনারা প্রত্যেকেই তাদের মূল্যবান বক্তব্যের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের এই নাট্যদল গোবরডাঙ্গা আকাঙ্ক্ষার ১৫০ দিন অতিক্রমের লক্ষ্য পূরণকে সাধুবাদ জানান।
বর্ষ ব্যাপী এই উৎসবের মধ্যে ছিল সাহিত্য পাঠের আসর,কবিতা পাঠ, চলচ্চিত্র দেখা, বিদ্যালয়ের ভিত্তিক প্রতিযোগিতা, দলের নাট্যকর্মশালা, বিদ্যালয়ের ভিত্তিক নাট্য কর্মশালা, প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতা,বিশেষ সম্মান প্রদান ও বিশেষ বিশেষ দিন পালন। সারা বছরের এই উৎসবে ১৩ টি নাটক মঞ্চস্থ হয়। বছর জুড়ে ছিল রঙিন উৎসব। বর্ষব্যাপী উৎসবে শেষ দিনে ছিল সন্ধ্যায় তিনটি নাটক ও ম্যাজিক শো, খাঁটুরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রযোজিত জাতীয় স্তরে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ইংরেজি ভাষায় নাটক পার্সোনাল সেফটি, চাঁদপাড়া অ্যাক্টো প্রযোজিত ছাঁচ ভাঙার গান, গোবরডাঙ্গা আকাঙ্ক্ষার প্রযোজনায় স্পোর্টসম্যান। রচনা ও নির্দেশনায় প্রতাপ সেন। অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে ম্যাজিক শো এর মাধ্যমে পরিবেশনায় সুভাষ চক্রবর্তী। এটি একটি রূপক ধর্মী প্রযোজনা বিশ্ববরেণ্য কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন কাহিনী ভিত্তিক একটি ম্যাজিক শো।
গোবরডাঙ্গা আকাঙ্ক্ষার উৎসবে দর্শকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। আকাঙ্ক্ষার সম্পাদিকা তনুশ্রী দেবনাথ দত্ত জানান, আমাদের এই ১৫০ দিনের লক্ষ্য পূরণের অঙ্গীকার সম্পূর্ণ। প্রমথনাথ বসুর স্মৃতি বিজড়িত গোবরডাঙ্গা পৌর টাউন হলে ১৫৮ তম দিনে আমরা শেষ করলাম আমাদের বর্ষ ব্যাপি জাতীয় নাট্য মেলা ২৩-২৪। বাংলার হারিয়ে যাওয়া শিল্প সংস্কৃতি নিয়েই ছিল আমাদের এই উৎসব সেই শিল্প-সংস্কৃতিকে ধরে রাখা এবং তরুণ প্রজন্মকে থিয়েটার মুখী করার যে উদ্দেশ্য আমাদের এই উৎসবে ছিল সেই উদ্দেশ্য সফল।