গ্রেফতারির দিন তিনেক পর ঘুরিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। রবিবার বেহালায় (Behala) স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকেই মমতার প্রশ্ন, 'কেষ্ট কী করেছিল? ওকে ধরলে কেন? একটা কেষ্টকে জেলে পুরলে হাজার কেষ্ট তৈরি হবে। কেষ্টরা এজেন্সিকে ভয় পায় না। প্রতি ভোটে ওকে নজরবন্দি করে রাখে।' এভাবেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের খাসতালুকে দাঁড়িয়ে বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতির পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। যদিও প্রায় ঘণ্টাখানেকের বক্তৃতায় নেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গ।
এদিন তাঁর বক্তব্যের প্রথম থেকেই রাজ্যের তিন বিরোধী দলকে আক্রমণ শানিয়েছেন। সারদা-কাণ্ডের উত্থান প্রসঙ্গে নাম না করে সুজন চক্রবর্তী, খুনের মামলা প্রসঙ্গে ঘুরিয়ে অধীর চৌধুরী এবং মির্জাফর নাম উচ্চারণ করে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, 'মাঝরাতে কেন অনুব্রতর বাড়িতে ঢুকেছে এজেন্সি, ওর ঘরবাড়িতে তাণ্ডব করে তছনছ করে দিয়ে এসেছে। তৃণমূলকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু ২০২৪-এ মোদী সরকারই থাকবে না।'
এদিন আর কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
জল্পনার অবসান। সোমবার ১৫ আগস্ট অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বাড়িতে হোমযজ্ঞ হচ্ছে। উল্লেখ্য, এই অনুষ্ঠানের জন্য কদিন আগে থেকেই বাড়ির ছাদে একটি প্যান্ডেল (Pandel) করা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ বৃহস্পতিবার সিবিআই-এর (CBI) হাতে গ্রেফতার (Arrest) হওয়ার পর অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির ছাদের সেই প্যান্ডেল খুলে ফেলার কাজ শুরু হয়। কিন্তু সম্প্রতি সেই প্যান্ডেল নতুন করে করা হচ্ছে এবং জানা যাচ্ছে আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার হোমযজ্ঞের আয়োজন হবে। তৃণমূল নেতা গদাধর হাজরা জানিয়েছেন, সুকন্যা মণ্ডল অর্থাৎ অনুব্রত মন্ডলের মেয়ে (Anubrata Daughter) এই হোমযজ্ঞ করতে রাজি হয়েছেন এবং তাঁর উপস্থিতিতেই এই হোমযজ্ঞ হবে। তবে কার নামে এই হোমযজ্ঞ হবে, তা এখনও স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, অনুব্রত মণ্ডলের বর্তমান বাড়ির লাগোয়া যে প্রাসাদোপম নতুন বাড়িটি তৈরি হয়েছে, তার গৃহপ্রবেশ উপলক্ষ্যেই এই হোমযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছিল। বাড়ির ছাদে তৈরি করা হয়েছিল বিশাল প্যান্ডেল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সিবিআই তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। ফলে সেদিনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, হোমযজ্ঞ কি আদৌ হবে? কারণ, গৃহকর্তাই তো নেই। বাস্তবিক হয়তো হোমযজ্ঞের অনুষ্ঠান বাতিল করারই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই কারণে, খুলে ফেলা হচ্ছিল ছাদের প্যান্ডেল। কিন্তু গদাধরবাবুর কথা অনুযায়ী, অনুব্রতর মেয়ে সেই অনুষ্ঠান করতে রাজি হওয়ায় ফের প্যান্ডের বাঁধার কাজ শুরু হয়েছে।
সিবিআইয়ের (CBI) পক্ষ থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) গ্রেফতার করার পর তাঁর একাধিক আবদার পূরণ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। কিন্তু তিনি বারংবার সিবিআই অধিকারিকদের জানান, তিনি তাঁর মেয়ের (Daughter) সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু তদন্ত চলাকালীন বাইরের কোনও ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা যাবে না বলে জানিয়ে দেন তদন্তকারী আধিকারিক। সিবিআই সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়ার পর দুবার ফোনে তাঁর মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু বারংবার তিনি চাইছেন তাঁর মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে। সেটা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। শুধুমাত্র আইনজীবীর সঙ্গে তিনি কথা বলতে পারবেন, এ কথাই তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কোর্টের নির্দেশে ৪৮ ঘণ্টা পরপর অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরীক্ষা (Medical Test) করাতে হবে। সেইমতো আজ অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরীক্ষার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁকে আজ পুনরায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে কমান্ড হাসপাতালে।
প্রেসিডেন্সি জেলে (Presidency) শনিবার পরিদর্শন করে ৮ জন ডাক্তারের একটি টিম। টিমের সদস্যরা সকলেই এসএসকেএমের চিকিত্সক বলে জানা গিয়েছে। মূলত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখতেই এই মেডিক্যাল টিম বলে জেল সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে জেলেরই অন্য সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
খাওয়াদাওয়াও করছেন স্বাভাবিকভাবেই। গত দুদিনে পায়ের ব্যথা কিছুটা বেড়েছে। তাই মাঝেমধ্যেই সেলের বাইরে হাঁটাহাঁটি করছেন।
অন্যদিকে, গরুপাচার মামলায় সিবিআই-এর এবার নজর বীরভূম জেলার পুলিস কর্মীদের ওপর। গরু পাচারের লভ্যাংশ পেত পুলিস কর্মীরাও। এমন কয়েকজন পুলিস কর্মীকে তলব করতে চলেছে সিবিআই।
তদন্তে ভয় পাচ্ছি না। জেলে থাকতেও ভয় নেই। কিন্তু সামাজিক সম্মান নিয়ে টানাটানি করলে ভয় লাগে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
উল্লেখ্য, সময়ের ব্যবধান মাত্র তিন সপ্তাহ। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার প্রথম সারির দুই তৃণমূল নেতা। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি রীতিমতো সরগরম। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রেসিডেন্সি জেলে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের জালে দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এই আবহে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, আইন আইনের পথে চলবে। তদন্ত তদন্তের মতো চলবে। কেউ যদি দোষী হয়, তা হলে সে শাস্তি পাবে।
বিরোধী দল অসভ্যতামি করছে বলে দাবি করেন পুরসভার মেয়র। তবে এদিন কর্মীদের ধৈর্য না হারানোর পরামর্শ দিয়েছেন। দলীয় কর্মীদের আবেদন করে বলেন, যাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে, তাঁরা অসহিষ্ণু হবেন না। সবার উপরে মানুষ সত্য, মানুষের উপরে কেউ নেই। মানুষ ঠিক করবে কে দোষী বা কে দোষী নয়।
এই ইস্যুতে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পালটা দাবি, এভাবে চেরেদের বাঁচানো যাবে না। সিবিআই, ইডি নিরপেক্ষ তদন্ত করছে।
এখানেই শেষ নয়, ইতিমধ্যে শাসকদলের একাধিক মন্ত্রী-বিধায়কের সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলাও রুজু হয়েছে। ২০১৭ সালে দায়ের হয়েছিল এই মামলা। গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে কি তৃণমূল? প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।
অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য সিবিআই-এর হাতে। পাচার হওয়া গরু পিছু আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা কমিশন (Commission) ধার্য করে দিয়েছিলেন কেষ্ট। পাশাপাশি তা বেড়ে দাঁড়াত পাঁচ থেকে ছ’হাজারে। আবার কয়লার ক্ষেত্রে গাড়ি পিছু ১০ হাজার টাকাই ছিল ফিক্সড রেট। অর্থাৎ শুধু গরুই নয়, পাশাপাশি কয়লাতেও অনুব্রত মণ্ডলের যে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল, সেটাও সিবিআই-এর (CBI) তদন্তে উঠে এসেছে। ২০১৫ থেকে শুরু গরু পাচারের ডিল। তিন মাসে ৬ কোটির ডিল হয়েছিল। এনামুল টাকা দিত সায়গলকে, সায়গলের কাছ থেকে অনুব্রতর কাছে টাকা আসত। সূত্রের খবর, এমনই প্রমাণ এসেছে সিবিআই-এর কাছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে অনুব্রত বাহিনীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে সিবিআই।
গরু পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের বাহুবলী হিসাবে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু কীভাবে পরিচালিত হত এই চক্র?
২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মালদহ, মুর্শিদাবাদ সীমান্তে ২০ হাজার গরু ধরা পড়ে। কিন্তু পাচারের অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বরং খাতায় গরুগুলিকে বাছুর দেখানো হয়। সিবিআই তদন্ত করে আরও জেনেছে,
সেই গরুগুলিকে বাছুর দেখিয়ে কম দামে নিলামে বিক্রি করা হত। এরপর সেই গরুগুলিকে এনামুলের সিন্ডিকেটের হাতে বিক্রি করা হত। নিলামে কেনার পর সেই সব গরুর বেশিরভাগ চলে যেত ইলামবাজারের হাটে। অভিযোগ, এখান থেকে দুভাবে লাভবান হতেন অনুব্রতর মতো প্রভাবশালীরা। গরুর লরি জেলাতে প্রবেশ করতে দেওয়া বাবদ টাকা। তারপর ইলামবাজার হাট থেকে সীমান্ত পার করতে সেফ প্যাসেজ করে দেওয়া বাবদ টাকা।
অভিযোগ, হাট থেকে শুরু করে বাংলাদেশে গরু পাচারের ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই কাজ দেখভাল করত সায়গল।
বৃহস্পতিবার আটক হওয়ার সময় বাড়ি থেকে আড়াই কেজি মুড়ি (Puffed Rice) নিয়ে বেরিয়েছিলেন। মূলত এটাই গত ৪৮ ঘণ্টায় তাঁর খোরাক। সিবিআই শসা (Cucumber) এনে দিয়েছিল। এছাড়া সেই অর্থে রান্না করা বাইরের খাবার (Cooked Food) খেতে চাইছেন না অনুব্রত। তবে দিনে বার তিনেক চা ও ক্রিম ক্র্যাকার বিস্কুট খেয়েছেন। যদিও চা বলতে দুধ-চিনি ছাড়া লাল চা।
অন্যদিকে, বিপুল অঙ্কের টাকা কোথায় কোথায় এবং কার কার কাছে গচ্ছিত রেখেছেন অনুব্রত? জেরায় জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। বোলপুরে পৈতৃক বাড়ি ছাড়া বাকি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি কী কী আছে? কোথায় কোথায় আছে? জানার চেষ্টা চলছে। অনুব্রতর নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সামান্য টাকা আছে। তাঁর খরচ চলে কিভাবে? বিলাসবহুল জীবনযাপন কীভাবে? ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডলের চিকিৎসার বিপুল খরচ কিভাবে মিটিয়েছেন তিনি? এসব নিয়েউ প্রশ্ন করতে চলেছে সিবিআই।
জানা গিয়েছে, অনুব্রতর নিজের নামে প্রায় কিছুই নেই। সবই বেনামে। বাড়ি থেকে উদ্ধার ডায়েরির সূত্র ধরেই প্রশ্ন করতে চলেছে সিবিআই।
গরু পাচারকাণ্ডে (Cow Smuggling) যুক্ত থাকার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার বীরভূমের দাপুটে নেতা তথা তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) সিবিআই হেফাজতে যান। তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যান সিবিআই (CBI) আধিকারিকরা। এই ঘটনার পর বিরোধী শিবিরের নেতা-কর্মীরা উল্লাসে ফেটে পড়লেও এর প্রতিবাদে পরবর্তীতে আবার তৃণমূলের তরফ থেকে পাল্টা মিছিল বের করা হয়। অন্যদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার খোয়াইয়ের সোনাঝুরি হাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল সোনাঝুরি হাট কমিটি।
শনিবার সোনাঝুরি হাটে (Sonajhuri Hat) বাইরে থেকে প্রচুর পর্যটকদের (Tourist) আগমন হয়। সেই মতো পর্যটকরা এদিন এখানে বেড়াতে এসে অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে পড়েন। তাঁরা হঠাৎ এদিন এসে দেখতে পান, হাট বন্ধ রয়েছে।
তবে পর্যটকদের অসুবিধা হলেও হাট কমিটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পর্যটকদের একদিন অসুবিধা হচ্ছে সেটা মানছি। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল এখানকার অভিভাবকের মতো। যে কারণেই সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আজ হাট বন্ধ রাখা হবে এবং দুপুরবেলায় এই এলাকার হস্তশিল্পীদের তরফ থেকে একটি মিছিল করা হবে। সেই মিছিল যাবে রেল ময়দান পর্যন্ত।
নিজাম প্যালেসের (Nizam Palace) এমএসও বিল্ডিং-এর ১৪ তলায় সিবিআই গেস্ট রুমের (CBI Guest Room) একটি ঘরে কাল শিফট করা হল অনুব্রত (Anubrata) মণ্ডলকে। ঘরে আছে তক্তপোশ। মাথার ওপর পাখা। একটি বালিশ। একটি চাদর। একটি কম্বল। গেস্ট রুমের বাইরে দুই সিআরপিএফ জওয়ান মোতায়েন রাখা হয়েছে। ১৪ নম্বর ফ্লোরে মোট মোতায়েন আটজন জওয়ান।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘরে একটি টিভি (TV) রাখার আবদার করেছেন অনুব্রত। তিনি নাকি খবর দেখতে চান। খবরে মূলত দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব জানতে চান কেষ্ট। পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর মন্ত্রীত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দল থেকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। তাঁর ক্ষেত্রে দলের মনোভাব কী? খবর দেখে জানতে চান বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি।
কাল মেয়ের সঙ্গে ফোনে দুবার কথা হয়েছে। মাহারা মেয়ে কেঁদেছেন। স্পিকার ফোন অন করে দুবার কথা বলার সময় চোখে জল ছিল অনুব্রতরও। একজন বাড়ির লোককে সঙ্গে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁকে পুরুষ হতে হবে। কে থাকবেন, এখনও স্পষ্ট নয়। কাল বুকে ব্যথা হয়েছিল। কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে নতুন করে আর কোনও শারীরিক সমস্যার কথা বলেননি তিনি। তারাপীঠ মন্দিরের প্রসাদ ও ফুল একটি কাগজের খামে ভরে নিজের কাছে সর্বক্ষণ রাখছেন অনুব্রত।
অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। শুক্রবার আলিপুর কমান্ড হাসপাতালে তাঁকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে ফিরে সিজিও কমপ্লেক্সে চা খেয়েছেন তিনি। এদিন সকালে একবার অনুব্রত মণ্ডলের শ্বাসকষ্ট হয়েছিল। দু'বার নেবুলাইজার নিয়ে আপাতত স্বাভাবিক তিনি। শুক্রবার বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এক সিবিআই কর্তার উপস্থিতিতে স্পিকার অন করেই মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন অনুব্রত। আধ ঘণ্টার জন্য তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে গিয়েছেন আইনজীবী।
জানা গিয়েছে, রাতে সিপিডব্লিউডি ক্যান্টিন থেকে আনা খাবার খেয়েছেন তিনি। সকালে খাচ্ছেন ভাত, রাতে রুটি-সবজি। শুক্রবার রাতে তাঁকে গেস্ট রুমে রাখা হবে। দেওয়া হবে তক্তার বিছানা। টিভি দেখার ইচ্ছা হলে তাঁর ঘরে লাগতে পারে টিভিও। সম্ভবত শনিবার থেকে পুরোদমে তাঁকে জেরা শুরু করবে সিবিআই।
সূত্রের খবর, তাঁর গ্রেফতারিতে দলের প্রতিক্রিয়া এবং মানুষের প্রতিক্রিয়া কী? এক সঙ্গীর থেকে খোঁজখবর নিয়েছেন অনুব্রত। তাঁর সঙ্গে ২৪ ঘণ্টাই একজন সঙ্গী থাকছেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। বীরভূম থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা তাঁর জন্য মুড়ি ও জামাকাপড় পাঠিয়েছেন। এসএসকেএম হাসপাতালের লিখে দেওয়া ওষুধেই এদিন সায় দিয়েছে কমান্ড হাসপাতাল।
এদিকে, তাঁর গেস্ট রুমের নজরদারিতে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি একা থাকতে পারতেন না। তাই তাঁর ঘরে একজন করে সঙ্গী থাকতে অনুমতি দিয়েছে সিবিআই।
বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণের রাস্তায় রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। এদিন ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে বঙ্গ বিজেপির ধর্নামঞ্চে বীরভূম তৃণমূলের সভাপতি-সহ রাজ্যের শাসক দলকে তীব্র কটাক্ষ করেন সুকান্ত মজুমদার। একই চড়া সুর শোনা গিয়েছে বাম এবং কংগ্রেসের গলায়। তবে বিরোধীদের এই সমালোচনার জবাব দিয়েছে ঘাসফুল শিবিরও। সিবিআই-ইডিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। এদিন এই অভিযোগ করেন শাসক দলের সাংসদ সৌগত রায়।
শুক্রবার ওয়াই চ্যানেলের কর্মসূচি থেকে বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা, যিনি বলতেন শুঁটিয়ে লাল করে দেব। তিনি এখন ইডি-সিবিআইয়ের ভয়ে নিজেই লাল হয়ে গিয়েছেন। সিবিআই থেকে বাঁচতে বলছেন আমার পিছনে অপারেশন করে দিন।'
কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর খোঁচা, 'একে তো অনুব্রত গ্রেফতার, তারপর যদি শোনেন দলের কোনও পদ নেই তাহলে তো অক্সিজেন যাওয়া আরও বন্ধ হয়ে যাবে। প্রকৃত বিচার হোক। আমার কারও প্রতি প্রতিহিংসা নেই।' সুর চড়িয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, 'অনুব্রতকে বহিষ্কার করতে হবে। কিন্তু কিন্তু এঁরা সব চুনোপুটি, আসল কারা, মানুষ বলছে হাওয়াই চটি, কোটিপতি।'
কী বলছে বিজেপি
কী প্রতিক্রিয়া বাম-কংগ্রেসের
তবে বিরোধীদের এই আক্রমণের জবাবে দমদমের সাংসদ সৌগত রায় জানান, ইডি- সিবিআইকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইডিকে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। এটাও রাজনৈতিক বিষয়। অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে এখনই পার্টির কোনও স্ট্যান্ড নেই।
তাঁর নামে কোনো চার্জশিট নেই। দলের কাছে গোটা বিষয় এখনও পরিষ্কার নয়।
দেশের মাটিতে স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার আনন্দ। যুদ্ধ, আন্দোলন, অন্যায় অত্যাচার, সহস্র প্রাণের বলিদানের বিনিময়ে পাওয়া ১৯৪৭-র ১৫ অগাস্ট। এ বছর আবার সেই স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব অর্থাৎ ৭৫তম বর্ষ (75th Independence Day)। সে উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (Ministry of Home Affairs) পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তদন্তের ক্ষেত্রে বিশেষ নজির স্থাপন এবং উল্লেখযোগ্য পরিষেবা প্রদানের জন্য ১৫১ জন পুলিসকর্মীকে (Police) এই পদক দেওয়া হবে বলে জানায়। ১৫১ জনের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ২৮ জন। এই তালিকায় রয়েছে বাংলার ৮ পুলিসকর্মী। আর সবচেয়ে শীর্ষে রয়েছে ১৫ জন সিবিআই (CBI) আধিকারিকের নাম। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র পুলিস (Maharastra Police)।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত সিবিআই কর্মকর্তাদের মধ্যে ডেপুটি সুপার, ইনসপেক্টর রয়েছেন। কয়েকজনের নাম-- নয়াদিল্লির সিবিআই শ্রী সুরেন্দর কুমার রোহিলা, ভাদৌরিয়ার সিবিআই শ্রী প্রমোদ কুমার, গান্ধীনগরের শ্রী সন্দীপসিং সুরেশসিংহ, শ্রী কুমার ভাস্কর, কলকাতার শ্রী দীপক কুমার, ইন্সপেক্টর, সিবিআই।
অন্যদিকে, স্বাধীনতা দিবসে রাজ্যের তরফ থেকে সম্মান পাবেন ১২ জন আইপিএস। রেড রোডের মঞ্চ থেকেই আইপিএসদের সম্মান তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 'চিফ মিনিস্টার পুলিস মেডেল' নামে এই সম্মান আইপিএসদের তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।
সম্মান প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন রাজ্য পুলিসের ডিজি। হাওড়ার পুলিস কমিশনার। কলকাতা পুলিসের তিনজন ডেপুটি কমিশনার। ডিআইজি র্যাঙ্কের দুই আইপিএস অফিসার। এছাড়াও ডিআইজি এবং এডিজি র্যাঙ্কের পুলিস আধিকারিকদের তুলে দেওয়া হবে সম্মান।
প্রসূন গুপ্ত: প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর টেলিভিশনে ঘন্টার পর ঘন্টা খবর ছিল তাঁকে নিয়ে। খবরের কাগজে পাতার পর পাতাজুড়ে পার্থ-অর্পিতার খবর। প্রাক্তন মন্ত্রীর কতজন বান্ধবী, তাঁদের কোথায় বাড়ি, আরও কত টাকা উদ্ধার হল ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখানেই শেষ নয় পার্থ কতটুকু বললেন ইডিকে, পার্থ অর্পিতাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরায় কী বেরোল। এই ধরনের খবরে ঝোঁক থাকতো আম আদমির। ট্রাম-বাস, ট্রেনে আলোচনার বিষয়বস্তুও তাঁরাই। পার্থ কী খেলেন, কোথায় শুলেন এই করতে করতে পার্থর খবরে ম্রিয়মান হয়ে গেলো অনুব্রত-কাণ্ডে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরে শুধুই অনুব্রত। বাড়ি ঘিরে নিয়ে প্রথমে আটক, তারপর বিকেলের দিকে গ্রেফতার। লহমায় লহমায় পরিবর্তন হলো অনুব্রত-কাণ্ড। বৃহস্পতিবার তাঁকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায় সিবিআইয়ের দফতরে। তারপর এদিন সকাল থেকে মাত্র একটাই খবর, অনুব্রত সকালে ডায়বেটিক ডায়েট মেনে চিনি ছাড়া চা, বিস্কুট এবং মুড়ি খেয়েছেন। এরপর আর খবর নেই, রহস্য এখানেই কেন অনুব্রতর অবস্থান পাওয়া যাচ্ছে না?
পার্থ ও অনুব্রতর মধ্যে বিস্তর ফারাক। প্রথমত অনুব্রত সংগঠন করা নেতা। বীরভূম জেলার পাতা নড়তো না তাঁর আদেশ ছাড়া। রাঙা মাটির দেশে একপ্রকার 'মুকুটহীন সুলতান' ছিলেন তিনি। এই জনপ্রিয়তা পার্থর কোথায়? পার্থকে গ্রেফতারের সঙ্গে ইডির হাতে এসেছিলো কোটি কোটি টাকার বান্ডিল এবং মহিলা বান্ধবীর প্রসঙ্গ। এই অবস্থান পার্থর বিপক্ষে গিয়েছে। দলও তাঁর দায় ঝেড়ে ফেলেছে। অনুব্রতর ক্ষেত্রেও দলের অভিমত অপরাধ প্রমাণ হলে রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলকেও সরিয়ে দেওয়া হবে। ব্যক্তিগত অপরাধের দায়িত্ব নেবে না দল। কিন্তু হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে অনুব্রতর নাম আসা সত্বেও তৃণমূলের হাজার হাজার সমর্থক তা মানতে নারাজ। তাঁরা ক্ষিপ্ত, তাঁদের বক্তব্য মদন মিত্রদের মতোই অনুব্রত ফেঁসে গিয়েছেন। দুটি ঘটনাই দলের উচ্চ নেতাদের নজরে এসেছে।
আজ এবং আগামীকাল এই নিয়ে রাজ্যের জেলায় জেলায় আন্দোলনে নামছে তৃণমূল যদিও প্রসঙ্গ অনুব্রত নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতা।
বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) আদালতে তুলে সিবিআই দাবি করেছিল, তৃণমূল নেতার দেহরক্ষী সায়গল হোসেন অনুব্রতর হয়েই টাকা তুলত। সিবিআই (CBI) সূত্রের খবর, গরু পাচার করার জন্য অনুব্রতর সঙ্গে এনামুল হকের (Enamul Haq) একটা রফা হয়েছিল। সেই রফায় বলা ছিল, প্রত্যেক তিন মাস অন্তর ছয় কোটি টাকা করে দিতে হবে এনামুলকে। এমনকি, এই কথোপকথন হত ফোনের মাধ্যমেই।
এদিকে, অনুব্রতকে গ্রেফতারের দিনেই তাঁর চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর বয়ান রেকর্ড করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। পাশাপাশি সিবিআই র্যাডারে আসতে চলেছে বোলপুর হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুও। বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুকে সিবিআইয়ের নোটিস পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, শুক্রবার ভোররাতে অনুব্রতকে নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌছয় সিবিআই। তারপর সেখানেই অস্থায়ী ভাবে ক্যাম্প খাটে তৃণমূল নেতার বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এদিন সকাল থেকেই ফের কেন্দ্রীয় সংস্থার জেরার মুখে অনুব্রত মণ্ডল। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন আধ ঘণ্টা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন তৃণমূল নেতা।
জানা গিয়েছে, সায়গল হোসেনের বয়ানের ভিত্তিতে অনুব্রতকে বেশ কিছু প্রশ্ন করতে পারেন সিবিআই অফিসাররা। কারণ, সায়গলের সঙ্গে অনুব্রতর বেশ কিছু ফোনের রেকর্ডিং মিলেছে। এমনকি, একজন নিরাপত্তারক্ষী হয়ে কীভাবে তার এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি হল, এর উৎস কোথায়? সেই বিষয় সেসময়ে সেহগালকে প্রশ্ন করা হয়। সেই সংক্রান্ত বিষয়ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অনুব্রতকে।
বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির নেপথ্যে কী রয়েছে এই গরু পাচার। এই সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখতে চাইছেন সিবিআই অফিসাররা।
যাঁর নামে বাঘে গরুতে একঘাটে জল খেত, আজ কিনা তাঁর চোখে জল!ভোট আসলেই বীরভূমের (Birbhum) বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) সামলাতে কাল ঘাম ছুটত পুলিস থেকে শুরু করে কমিশনের কর্তাদের। কখনও প্রকাশ্যে পুলিসকে বোমা মারার হুমকি দিয়েছেন তো, আবার কখনও গাঁজা কেসে জেলে ঢোকানোর। আজ সেই দাপুটে নেতা একেবারে নির্বাক। কার্যত ভেঙে পড়লেন বীরভূম জেলা তৃণমূল (TMC) সভাপতি। বৃহস্পতিবার রাতে নিজাম (Nizam) প্যালেসে নিয়ে আসার পথে দৌর্দণ্ড্যপ্রতাপ নেতার এহেন অবস্থা লেন্সবন্দি হল। যা দেখে কিছুটা হলেও অবাক হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অনেকেই।
গরু পাচার মামলায় বৃহস্পতিবার বীরভূমের বাড়ি থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। আগামী ১০ দিন তাঁকে সিবিআই হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ আদালত। ২০ অগাস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে পেয়েছে তাঁকে। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুব্রতকে সিবিআইয়ের গাড়িতে করে কলকাতার নিজাম প্যালেসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তবে ধনেখালিতে যানজটে আটকে যায় গাড়ি। একদা বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল বাড়ি থেকে বেরোলেই অনায়াসে রাস্তা ফাঁকা হয়ে যেত। কোনও বাধা বিপত্তি ছাড়াই তিনি পৌঁছে যেতেন গন্তব্যে। একাধিকবার কলকাতায় এসেছেন বাধা-বিপত্তি ছাড়াই। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পরে কলকাতায় ফিরতে গিয়ে বেগ পেতে হল অনুব্রত মণ্ডলকে। গোটা জাতীয় সড়কে কার্যত গাড়ি বন্দী হয়ে থাকতে হল দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল সভাপতিকে। জাতীয় সড়কে প্রায় এক ঘন্টা আটকে ছিলেন তিনি। এরপর স্থানীয় পুলিসের সহযোগিতায় কনভয় ফের কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
আর ফেরার পথে কিছুক্ষণের জন্যে পালসিটের কাছে একটি পেট্রোল পাম্পে দাঁড়ায় সিবিআইয়ের গাড়ি। সঙ্গে সঙ্গে অনুব্রত মন্ডলের দিকে ছুটে যান সাংবাদিকরা। একাধিক প্রশ্ন করা হলেও একেবারে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন তিনি। কেবল ক্যামেরায় ধরা পড়ল অনুব্রতের চোখের জল। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ। সাড়ে সাত ঘণ্টা পর অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে মধ্যরাত ২ টো ৪৫ মিনিট নাগাদ নিজাম প্যালেসে প্রবেশ করেন সিবিআই আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে অনুব্রতর বাড়ি ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তারপর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে টানটান উত্তেজনার শেষে গ্রেফতার হন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই আধিকারিকেরা একেবারে বাড়ির ভিতরে দোতলায় অনুব্রতর ঘরে গিয়ে তাঁকে গ্রেফতারি পরোয়ানাতে স্বাক্ষর করিয়ে গ্রেফতার করেন।
সূত্রের খবর, সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন অনুব্রতর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এছাড়া তাঁর জন্য একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনে একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এমনকি অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী সায়গলের বিপুল সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। তাঁর ফোন রেকর্ড থেকেও উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক তথ্য। যা এখন সিবিআইয়ের হাতে। জানা গিয়েছে, গরু পাচার মামলার একাধিক তথ্য এখন সিবিআইয়ের কাছে। সেই সব বিষয়কে সামনে রেখেই আজ থেকে আগামী কয়েকদিন লাগাতার জেরা করবেন সিবিআই আধিকারিকরা বলে মনে করা হচ্ছে।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করে সিবিআই (CBI) অনুব্রত মণ্ডলকে বৃহস্পতিবার আসানসোলে নিয়ে যায়। কিন্তু এদিন সকালে যখন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে (Anubrata Mondal) যখন গ্রেফতার করে তখন লোকে-লোকারণ্য তাঁর বোলপুরের বাড়ি। কিন্তু বেলা গড়াতেই শুনশান হয়ে যায় সেই এলাকা। পাশাপাশি তালা পড়ে অনুব্রতর বাড়ি এবং অফিসে। কিন্তু সেই ফাঁকা বাড়ির সময় ঘুরতে দেখা যায় এক গরুকে। কিছুক্ষণ সেই গরু, অনুব্রতর বাড়ির মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়েও থাকে। আবার রাস্তায় নেমে হাঁটতে শুরু করে।
এদিকে, বীরভূম থেকে অনুব্রতকে যখন আসানসোল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন রাস্তায় একাধিকবার তাঁকে গরু চোর কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। এমনকি, আসানসোল আদালতেও বিক্ষোভ দেখায় বাম কর্মী-সমর্থকরা। তাঁর উদ্দেশে ছোড়া হয় জুতোও।
এদিন তাঁকে ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। অপরদিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই অনুব্রতকে আনা হয়েছে কলকাতায়। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে কলকাতা আসার পথে একাধিকবার তাঁর কনভয় দাঁড়ায়। তাঁর কাছে গিয়ে সংবাদমাধ্যম কিছু জানতে চাইলে অনুব্রত মণ্ডল কিছুই জানাবেন না বলে হাত নেড়ে জানিয়ে দিন।