বলিউডের একদা আইটেম ডান্সার রাখি সাওয়ান্তের (Rakhi Sawant) জীবন বরাবরই চর্চায়। তবে তাঁকে নিয়ে আলোচনায় এবার ঘি পড়েছে। কারণ এতদিন, রাখির বিবাহ থেকে শুরু করে বিচ্ছেদ যাত্রার আখ্যান নেটিজেন কেবল এক পক্ষ থেকেই শুনেছেন। এবার রাখির স্বামী আদিল খান দুরানি, সামাজিক মাধ্যমে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে ধরছেন রাখির বিরুদ্ধে। এমতাবস্থায় রাখির অস্বস্তি আরও একটু বাড়াল তাঁরই প্রিয় বান্ধবী।
সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে কিংবা মুম্বইয়ের রাস্তায় রেস্তোরাঁর বাইরে রাখির সঙ্গে আরও একজনকে প্রায়ই দেখা যেত। তিনি রাখির প্রিয় বান্ধবী, রাজশ্রী। এবার তিনিই পুলিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন রাখির বিরুদ্ধে। ঠিক কী নিয়ে অভিযোগ দায়ের? রাজশ্রী অভিযোগ করেছেন, রাখির স্বামী আদিল খান দুরানি যেদিন প্রথম সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসেন। সেইদিন রাজশ্রীকে ফোন করে শাসিয়েছেন রাখি। তবে রাখি ঠিক কী কী বলেছেন, তা এখনই উল্লেখ করতে রাজি নয় রাজশ্রী। সময় এলেই সব তথ্য প্রকাশ্যে আনবেন বলে জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে কী প্রতিক্রিয়া রাখির? সংবাদমাধ্যমের সামনে রাখি বলেছেন, 'আমার খারাপ সময়ে তুমি সবসময় আমার পাশে থেকেছ। আমি তোমার খারাপ সময়ে সবসময় তোমার পাশে দেখেছি। সে সবসময় আমার বন্ধু থাকবে। আমি বিস্মিত। আমি বুঝতেই পারছি না আমার জীবনে কেন সবকিছু একসঙ্গে খারাপ হচ্ছে?'
১৬ জুন সারা ভারতে মুক্তি পেয়েছে আদিপুরুষ (Adipurush)। সিনেমাটি নিয়ে প্রথম থেকেই ভক্তদের মধ্যে আগ্রহ ছিল। সিনেমার প্রি বুকিংয়েই বাজেটের বেশ খানিকটা টাকা আয় করে ফেলেছিলেন প্রযোজনা সংস্থা। সিনেমা মুক্তির তিন দিনের মধ্যেই ২৪৬ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলেছে সিনেমাটি। দর্শক সিনেমা হলমুখী হচ্ছেন ঠিকই, তবে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে তাঁরা বিশেষ খুশি নয়।
যারা সিনেমাটি দেখেছেন সামাজিক মাধ্যমে সদর্থক প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন না। আসল রামায়ণ গল্পের সঙ্গে নাকি কোনও মিল নেই আদিপুরুষের। চরিত্রগুলির নাম বদলানো হয়েছে ঠিকই, তবে সেই চরিত্রগুলি বাল্মীকির ভাবনার একেবারে বিপরীত। তবে সবচেয়ে বেশি চর্চায় এসেছে সিনেমার ডায়ালগ। হনুমানের রাবনের রাজ্যে 'লঙ্কা কাণ্ডের' দৃশ্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি হইচই শুরু হয়েছে। সেখানে হনুমানের সংলাপে নাকি 'টাপোরি' ভাষা প্রকাশ পেয়েছে।
হিন্দু ধর্মকে অবমাননার অভিযোগে একাধিক জায়গায় দর্শকেরা উত্তপ্ত হয়ে গিয়েছিলেন। এবার আইনি জটিলতায় জড়ালেন সিনেমার নির্মাতা থেকে শুরু করে অভিনেতারাও। অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার মুখপাত্র শিশির চতুর্বেদী থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছেন উত্তরপ্রদেশের হজরতগঞ্জ পুলিস স্টেশনে। অভিযোগে চতুর্বেদী দাবি করেছেন, এই সিনেমাটি হিন্দু ধর্মে অবমাননা করছে ভারতীয় দেবদেবীর ছবি এবং সংলাপের মাধ্যমে।
হিন্দু পুরাণ রামায়ণের গল্প থেকে তৈরী হয়েছে পরিচালক ওম রাউতের 'আদিপুরুষ' (Adipurush)। সিনেমার ট্রেলার মুক্তি থেকে প্রচার দেখে, এই সিনেমা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ বেড়েছিল, প্রত্যাশা বেড়েছিল। তবে ১৬ জুন, শুক্রবার সিনেমা মুক্তি পেতেই সেই প্রত্যাশায় জল পড়ল। সিনেমা বোঝার ক্ষেত্রে আনাড়ি ছাড়া, আদিপুরুষ সিনেমাকে ১০-এর মধ্যে মেরে কেটে ৫ নম্বরও দিতে পারলেন না দর্শকেরা। সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে সকলের মুখে একই সংলাপ, 'টাকাটাই নষ্ট'।
দর্শকেরা রামায়ণের যে গল্প পর্দায় দেখবেন বলে সিনেমাহলে গিয়েছিলেন, তেমন মুহূর্তই তৈরী করতে ব্যর্থ হয়েছেন পরিচালক। রামায়ণ না রেখে সিনেমার নাম যতই 'আদিপুরুষ' হোক না কেন, রাম-রাঘব, সীতা-জানকী, লক্ষণ-শেষ, ও রাবন- লঙ্কেশ হোক না কেন, তাতে তো আর মূল কাহিনীর স্বাদ বদলে যায় না। রামায়ণের মতো পুরাণ ছোট থেকে শুনে বড় হয়েছেন ভারতের অধিকাংশ মানুষেরা, জনপ্রিয় এই গল্পের পর্দায় এমন নিম্নমানের প্রতিফলন দেখে দর্শকেরা তেমন খুশি হননি।
তবে আদিপুরুষে হনুমানের সংলাপ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চর্চায়। রামায়ণের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের মুখে বসেছে 'টাপোরি' ভাষা। সিনেমায় লঙ্কা-কান্ড দৃশ্যায়নের সময় হনুমানকে বলতে শোনা যায়, 'তেল তেরে বাপ কা, আগ ভি তেরে বাপ কি, অউর জলেগি-ভি তেরে বাপ কি।' এই দৃশ্যের ভিডিও বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল।
সিনেমা মুক্তির পরেও আদিপুরুষ আইনি ঝঞ্ঝাটে জড়াল। ইতিমধ্যেই দিল্লি হাইকোর্টে হিন্দু সেনার দল একটি পিটিশন ফাইল করেছে। তাতে স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে, 'এই ছবিতে চরিত্রগুলিকে যেভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে তা বাল্মীকির লেখা রামায়ণের থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত। এতে হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে।' পিটিশনে শীঘ্রই এই বিষয়ে পদক্ষেপের আবেদন করা হয়েছে। কিছু আপত্তিকর দৃশ্যও কেটে বাদ দিতে বলা হয়েছে।
একেই বিচ্ছেদ মামলায় জেরবার নওয়াজ (Nawazuddin Siddiqui)। আরও মুশকিল বাড়ল নতুন বিতর্কে। বাঙালির ভাবাবেগে আঘাত, কুৎসা রটানোর অভিযোগে মামলা দায়ের হল বলিউড অভিনেতার বিরুদ্ধে। মামলা দায়ের (Case Filed) হল জনপ্রিয় নরম পানীয় সংস্থার বিরুদ্ধেও। সম্প্রতি ওই নরম পানীয় সংস্থার হয়ে বিজ্ঞাপনের মুখ হয়েছিলেন অভিনেতা। একাধিক ভাষায় ওই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। হিন্দি বিজ্ঞাপন নিয়ে সমস্যার কিছুই ছিল না। যত সমস্যা বাংলা ভাষার ডাবিং নিয়ে। সেখানে বাঙালিকে নিয়ে এমন মন্তব্য করা হয়েছে, যা আপত্তিকর মনে হয়েছে বাঙালি জনগণের কাছে।
জনপ্রিয় নরম পানীয় সংস্থার নতুন বিশেষত্ব, বোতলের গায়ে লেখা কোড স্ক্যান করলেই তাতে নানা জোক শোনা যাবে। এই অফার বাংলা ভাষাতেও প্রযোজ্য। বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, নওয়াজ দাঁড়িয়ে আছেন স্টেশনে, পানীয়র বোতলের কোড স্ক্যান করতেই, বাংলা ভাষায় শোনা যাচ্ছে, 'সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে, বাঙালি খালি পেটে শুয়ে পড়ে।' একথা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়তে দেখা যায় নওয়াজকে। এই বিজ্ঞাপন দেখেই নিন্দায় সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের একাংশের মানুষ।
এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী দিব্যায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, নওয়াজের বিরুদ্ধে পুলিসে অভিযোগ দায়ের করেন। সংশ্লিষ্ট পানীয় সংস্থার সিইও-এর বিরুদ্ধেও দায়ের করা হয় অভিযোগ। অভিযোগকারীর দাবি, বিজ্ঞাপনে বাঙালিকে নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে তা জাতির পক্ষে অপমানজনক। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩-এ ধারায় এবং আইটি আইনের ৬৬-এ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।