সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ১০ দিন। কিন্তু এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। আর এই নিয়ে এবারে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। পুলিসের 'ইনঅ্যাকশন' দেখে কার্যত বিস্ময় প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, 'যে ঘটনায় প্রায় তিন হাজার মানুষ অভিযুক্ত, সেই ঘটনায় মাত্র ৪ জনকে কেন গ্রেফতার করা হল? আর সোমবার এরই মাঝে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শেখ শাহজাহানের আইনজীবী। আইনজীবী মারফত শাহজাহান হাইকোর্টকে জানান, তিনি সন্দেশখালির মামলায় যুক্ত হতে চান। কারণ, তিনি চান এই ঘটনায় তাঁর বক্তব্যও শোনা হোক। কিন্তু তাতেও বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় শাহজাহানের আইনজীবীকে।
ইডির আইনজীবী এসভি রাজু সন্দেশখালির ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। মামলায় আদালতের ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য পুলিস। শেখ শাহজাহানের নামে বাড়িতে থেকে বাইরে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ পাওয়ার পরও পুলিস শেখ শাজাহানের বাড়িতে গিয়ে তাঁর খোঁজ করলো না কেন, প্রশ্ন বিচারপতির। 'এটাই পুলিশ ইন অ্যাকশন', মন্তব্য বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের। 'এমন মামলায় কেস ডাইরি না দেখে কোনো অর্ডার দেওয়া যায় না। পুলিস এতদিন ধরে কী করেছে সেটা কেস ডাইরি দেখেই বোঝা সম্ভব। কাল কেস ডাইরি আনতে হবে পুলিসকে।' এমনটাই মন্তব্য বিচারপতির। এরপরই রাজ্যের কাছে কেস ডাইরি তলব কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের। আগামীকাল রাজ্যকে দিতে হবে কেস ডাইরি ও ভিডিও ফুটেজ। আর সেই দিনের পর লুঠ হওয়া সম্পত্তির মধ্যে কী কী উদ্ধার করতে পেরেছে, তাও জানাতে হবে হাইকোর্টকে। এরপরই শাহজাহানের আইনজীবী মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন জানান।
শেখ শাহজাহানের আইনজীবীকে বিচারপতির প্রশ্ন, 'আপনার মক্কেল কেন সারেন্ডার করছেন না? এতক্ষণ আপনি এজি কে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এতক্ষণ আমি ভেবেছি আপনি রাজ্যের জুনিয়র আইনজীবী। আপনি এজি কে থামানোর চেষ্টা করছিলেন কেন? এজি আপনাকে চুপ করতে বলার পরেও আপনি তাঁকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন।' আগামীকালই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সন্দেশখালির ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে সাময়িক স্বস্তিতে ইডি আধিকারিকরা। বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে রক্ষাকবচ দিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। সন্দেশখালি ঘটনায় ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধে সোমবার পর্যন্ত কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারবে না পুলিস, মৌখিকভাবে নির্দেশ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
রেশন বন্টন দুর্নীতির মামলায় তদন্তে গিয়ে ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তাঁর অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত ইডি। এই ঘটনায় পুলিসের পক্ষ থেকে দায়ের ২টি পৃথক মামলা। সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় পুলিস এফআইআর দায়ের করে। বেশ কয়েকজনকে জামিন যোগ্য ধারায় গ্রেফতারও করে। পাশাপাশি স্থানীয় পুলিস প্রশাসনকে না জানিয়ে ইডি আধিকারিকদের তল্লাশি অভিযান চালানোর জন্য ইডির বিরুদ্ধেও পৃথক স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে। যদিও সেই মামলায় যে ধারা পুলিসের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে, সেগুলো সবই জামিন অযোগ্য বলে সূত্রের খবর।
অভিযোগ, সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতার শেখ শাহজাহানের অনুগামীদের আক্রমণের ঘটনায় পুলিস নিরপেক্ষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এছাড়াও ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলার পাশাপাশি পুলিসের করা এফআইআরের কপি না দেওয়ার ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্টে রক্ষাকবচের আবেদন করে ইডি। গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছিল। পাশাপাশি বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয় সন্দেশখালির ঘটনায়। ২০১৮-তে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক খুনের মামলা রয়েছে, যা পুলিস এবং সিআইডি তদন্ত করছিল। সেই মামলাতেও সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ মৃতদের পরিবার।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, রাজ্য পুলিস, ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না। আগামী সোমবার রয়েছে মামলার পরবর্তী শুনানি। এই সময়ের মধ্যে ইডি আধিকারিকদের তলব করতে পারবে না পুলিস। পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপও গ্রহণ করতে পারবে না পুলিস।
অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের দিন কালীঘাটে রামপুজোর আয়োজনে 'না' পুলিসের। সেই নিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিজেপি। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে সোমবার মামলার শুনানি হবে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু জোর তরজা।
আগামী ২২ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন রয়েছে। 'রামলালা' অর্থাৎ ভগবান রামের মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠা ঘিরে সাজ সাজ রব সেখানে। আর সেই আবহেই কলকাতার কালীঘাটে রামপুজো করা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। জানা গিয়েছে, একমাস আগেই পুলিসের কাছে আবেদন করা হয় যে অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার দিন কালীঘাটে রাম পুজো করার। কিন্তু তাতেও অনুমতি না দেওয়ায় পুলিসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হাইকোর্টে।
কালীঘাট বহুমুখী সেবা সমিতির উদ্যোগেই এই পুজো। জানা গিয়েছে, বাদামতলা ৬৬ পল্লীতে অযোধ্যার রাম পুজোর টিভিতে দর্শন সহ এখানে পুজো ও ভোগ বিতরণের অনুষ্ঠানের অনুমতি দিচ্ছে না পুলিস। কালীঘাট বহুমুখী সেবা সমিতির পক্ষ থেকে এই আবেদন করা হয়। আর আজ অর্থাৎ বুধবার অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন কালীঘাট বহুমুখী সেবা সমিতির সদস্যরা। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আগামী সোমবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
কলকাতা হাইকোর্টে জোর ধাক্কা 'কালীঘাটে কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের! তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশের উপরে কোনওরকমের হস্তক্ষেপ করল না বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। কণ্ঠস্বরের নমুনার পরবর্তী প্রক্রিয়ার উপরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সাফ জানিয়ে দিল ডিভিশন বেঞ্চ। কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই মামলার প্রেক্ষিতেই ডিভিশন বেঞ্চ হস্তক্ষেপ না করে এমনটাই নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে এখনও আর ফ্যাসাদে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।
নিয়োগ দুর্নীতিতে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য কম জলঘোলা হয়নি। এদিন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আইনজীবী বলেন, 'সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র-এর জোর করে ভয়েস টেস্ট এর জন্য নিয়ে গিয়েছে ইডি।বিচারপতি অমৃতা সিনহা মামলার শুনানি করলেন রুদ্ধদ্বার। যার ভয়েস টেস্ট হবে তিনি এই মামলায় যুক্ত ছিলেন না। রাত ৮টার পর ইডি অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে গিয়ে কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করতে নিয়ে গেলো এসএসকেএম থেকে ইএসআই জোকায়। এটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।'
এর পরই কেন্দ্রের আইনজীবী বিল্লোদল ভট্টাচার্য্য বলেন, 'বিচারপতি সিনহার আগে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের কাছে জামিনের আবেদনের মামলায় ভয়েস টেস্টের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি ঘোষ। এই কণ্ঠস্বর পরীক্ষার নির্দেশ বিচারপতি সিনহা নতুন দেননি। বিচারপতি ঘোষের নির্দেশ-এ দেরি হচ্ছিল, তদন্ত শ্লথ হচ্ছিল। তাই তিনি ইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তদন্তের স্বার্থে।'
ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বলেন, 'বিচারপতি সিনহার নির্দেশের পর আমরা এসএসকেএম যাই। ওনাকে সাবধানে নিয়ে গিয়ে টেস্ট করাই ও তারপর আবার এসএসকেএম-এ ফেরত দি। এসএসকেএম-এ তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভর্তি আছেন। এসএসকেএম বলছে তিনি সুস্থ না। অথচ অন্য হাসপাতাল ইএসআই জোকা বলেছে তিনি সুস্থ। ওনার কণ্ঠস্বর পরীক্ষা না করলে তদন্ত দেরি হচ্ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে তদন্ত শেষ করতে হবে।' এছাড়াও ইডির আইনজীবীর অভিযোগ, 'আমরা তদন্ত কিভাবে করবো? গোটা রাজ্য আমাদের বিরুদ্ধে। রাজ্য অসহযোগিতা করছে।'
এর পরই বুধবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, এই মামলায় হস্তক্ষেপ করবে না ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার পুরো সিদ্ধান্ত নেবে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চ। তবে তিনি প্রশ্ন করেন, 'ইডি হেফাজতে আছে ওই অভিযুক্ত। তাহলে ইডি ওই হাসপাতালেই কণ্ঠস্বর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারতো। সেটা না করে একজন অসুস্থ মানুষকে নিয়ে গেলো জোকা ইএসআই। আর কণ্ঠস্বর পরীক্ষার রিপোর্ট কখনও কোনও প্রমাণ হিসাবে গণ্য করা হয় না। তবে এই কণ্ঠস্বর পরীক্ষা নিয়ে কিসের তৎপরতা ইডির? কী উদ্দেশে?'
সন্দেশখালিতে ইডির তদন্তকারী আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় এবারে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের কাছে আবেদন করেছিলেন তাঁরা।মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছেন বিচারপতি। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এই শুনানি বলে জানা গিয়েছে।
ইডির অভিযোগ, 'রেশন দুর্নীতির মামলায় তল্লাশি করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন ইডি অফিসাররা। উল্টে আমাদের অফিসারদের বিরুদ্ধে পুলিস এফআইআর করেছে বলে আমরা শুনতে পাচ্ছি। সব সংবাদমাধ্যমে এটা প্রচার হচ্ছে। আমরা বসিরহাট কোর্টেও খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু সেখানেও এমন কোনও এফআইআৎ কপি যায়নি। ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়নি। উল্টে পুলিস প্রতিদিন আমাদের অফিসে খোঁজ করছে, কোন কোন অফিসার সেদিন সেখানে গিয়েছিল। আমাদের আশঙ্কা, তাঁদের নামেও নতুন অভিযোগ দায়ের করবে হেনস্থার জন্য।' ইডি আরও জানিয়েছে, সন্দেশখালিতে ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিসের এফআইআর-এর কপি দিচ্ছে না পুলিস। তাই আদালতের দারস্থ হয়েছে ইডি।
সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর হামলার ঘটনায় এবার আদালতের দ্বারস্থ বিজেপি। ইডির উপর প্রাণঘাতী হামলার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তদন্তের আবেদন জানানো হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সন্দেশখালিতে রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করতে যায় ইডি গোয়েন্দারা। সেখানেই শেখ শাহজাহানের গুন্ডা বাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত ইডি গোয়েন্দারা। ভাঙচুর করা হয় ইডির গাড়ি। আক্রান্ত সংবাদমাধ্যম। এরপর থেকই নিখোঁজ শাহজাহান। সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি হয়েছে ইতিমধ্যেই। এর পর তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবিও জানায় বিজেপি।
সোমবার শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। মামলাও গ্রহণ করেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। চলতি সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা বলে জানায় আদালত।
বিজেপি পক্ষের আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত দাবি করেন, সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাজাহানের বাড়িতে ইডি তল্লাশি করতে গিয়ে ইডির তদন্তকারী আফিসাররা আক্রান্ত হন। শুধু তাই নয়, বনগাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়েও একই পরিস্থিতির শিকার হন ইডি আধিকারিকরা। তাই এই ঘটনায় সিবিআই বা এনআইএ তদন্তের দাবি জানানো হয় বিজেপির পক্ষ থেকে। এবং সন্দেশখালিতে এই আবহে যাতে আর কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার আবেদনও করা হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে।
সিঙ্গুর মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরও সিঙ্গুরের জমিহারাদের এখনও কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হল না। জমি ফেরতের বিষয়টিও কেন এখনও সম্পন্ন করা হয়নি। এ ব্যাপারে রাজ্যের অবস্থান কী? সিঙ্গুরের জমি ফেরত নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জানতে চায় হাইকোর্ট। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যকে জানাতে হবে।
সিঙ্গুরের জমি ফেরত চেয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। জমি শুধু ফেরতই নয়, ফিরিয়ে দিতে হবে আগের অবস্থাতে এমনটাই দাবি করা হয়েছিল। পূর্বে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, জমিদাতা কৃষকদের ক্ষতিপূরণ সহ জমি ফেরত এর বিষয় বিবেচনা করবে রাজ্য। কিন্তু আবেদনকারীদের দাবি, রাজ্যের কাছে বহুবার আবেদন করেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে জমি ফেরতের দাবি নিয়ে এবারে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে ভারতীয় শান্তি দল নামে একটি সংগঠন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও সিঙ্গুরের জমিহারাদের ক্ষতিপূরণ ও জমি ফেরত দেয়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ফলে উদ্বিগ্ন প্রধান বিচারপতি জানতে চান রাজ্যের অবস্থান। আগামী চার সপ্তাহ পর রাজ্যকে জানাতে হবে তার উত্তর। রাজ্যকে জানাতে হবে সিঙ্গুরের জমি ফেরত ও ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে কি ভাবছে তারা। আগামী চার সপ্তাহ পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
ভোকেশনালে এগ্রিকালচার বিষয় নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন পড়ুয়ারা। ক্লাসও শুরু হয়, কিন্তু রেজিস্ট্রেশন দিতে অস্বীকার করে পশ্চিমবঙ্গ নার্সিং কাউন্সিল। এরপরেই গত ৭ই ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পড়ুয়া সুপর্ণা মাইতি এবং তনুজা পাণ্ডা। কিন্তু মামলাকারীদের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ্র। এরপরেই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানায় মামলাকারীরা।
জিএনএম পরীক্ষায় বসার অনুমতিই পাননি মামলাকারীরা। তাঁদের বক্তব্য তাঁদেরও উচ্চমাধ্যমিকে অংক, জীবন বিজ্ঞান, জীববিদ্যা ছিল। তাই কলা বিভাগ বা বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা যদি রেজিট্রেশন পায় তাহলে তারা কেন পাবেন না।
এ বিষয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩সালে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেন, রেজিস্ট্রেশন করে GNM নার্সিং কোর্স-এর ২২-২৫ বর্ষের ওই দুই পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসার। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করায় বুধবার ডিভিশন বেঞ্চের তরফে,কমিশনের রেজিস্ট্রার কে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ বলবৎ করতে হবে এমনটাই জানানো হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে।
প্রাথমিকের নিয়োগ মামলায় বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রাথমিকের ৪২ হাজার ৯৪৯ প্রার্থীর প্যানেল প্রকাশ করতে হবে পর্ষদকে। বুধবার প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই শুনানি শেষে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
২০১৬ সালের প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত মামলার বুধবার শুনানি ছিল হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে। সেখানে আজ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, ৪২ হাজার ৯৪৯ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। যদি প্যানেল আগেই প্রকাশ হয়ে থাকে, তাহলে সেই প্যানেলের হার্ড কপি ও সফ্ট কপি উভয়ই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৫ জানুয়ারি। ওই দিনই পর্ষদকে আদালতে প্যানেলের হার্ড কপি জমা দিতে হবে।
২০১৪ র টেটের প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া হয় তার মাধ্যমে প্রায় ৪২৫০০ শিক্ষক নিয়োগ হয়। মামলায় অভিযোগ ওঠে যে সংরক্ষণ নীতি না মেনেই নিয়োগ হয়েছিল। এই মামলার প্রেক্ষিতেই অভিযোগ ওঠে যে অ্যাপটিচিউড টেস্ট না নিয়েই ইচ্ছামত নম্বর দেওয়া হয়েছে এবং ইন্টারভিউ নিয়ম মেনে হয়নি। কারও ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতি না মেনে নিয়োগ হয়েছে। এই মামলাতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইন্টারভিউয়ার অর্থাৎ যারা ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর ৩৬ হাজার চাকরি প্রার্থীদের চাকরি বাতিল করেন তিনি।
২০১৪ সালে টেট পরীক্ষার মাধ্যমে ২০১৬ এবং ২০২০ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ হয়। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী গত ১২ ডিসেম্বর হলফনামা জমা দেয় পর্ষদ। জানানো হয়, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্যানেল প্রকাশ করা হয়। তবে সে যুক্তি খারিজ করে দেন বিচারপতি সিনহা। দুটি নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ প্যানেল প্রকাশের কথা বলেন। পর্ষদের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। এরপর বুধবার ওই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে নির্দেশ দেয়, আগামী ১০ দিনের মধ্যে ৪২ হাজার ৯৪৯ জন শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল প্রকাশ করতে হবে। আগামী ১৫ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।
কামদুনি মামলায় এল নয়া মোড়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এবার পৃথক মামলা দায়ের করলেন নির্যাতিতার দাদা। মঙ্গলবার সেই মামলার প্রাথমিক শুনানির পর ৮ অভিযুক্ত এবং রাজ্য সরকারকে নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, রাজ্য সরকারও যেহেতু একই আবেদন জানিয়েছে, সেই কারণে রাজ্য সরকারের আবেদনের সঙ্গে মামলাটি ট্যাগ করে দেওয়া হল। বিস্তারিত শুনানি আজ হয়নি। আরও জানা গিয়েছে, আজই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য চিঠি দেবেন নির্যাতিতার পরিবার এবং প্রতিবাদীরা।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল নির্যাতিতার পরিবার। এরপর নির্যাতিতার দাদাও আরও একটি পৃথক মামলা করেন। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, 'এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এটি সারা দেশের ক্ষেত্রে নজির হতে পারে।' আপাতত এই মামলার শুনানি স্থগিত করা হয়েছে ও মামলায় যুক্ত সব পক্ষের থেকে জবাব চেয়ে নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আবার নির্যাতিতার দাদার দায়ের করা এই মামলার পর্যবেক্ষণে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং সেই মামলায় একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশও জারি করা হয়েছে। তাহলে এখন কি করে তাদের আবার হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে শীর্ষ আদালত? বিষয়টি বিরল হিসেবেই দেখতে হবে। একটি মামলার জন্য কি এই নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে? তাই আপাতত বিবাদীপক্ষকে নোটিশ দেওয়া হোক।
কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় নির্যাতিতার পরিবার। এদিন সেই মামলার কথা উল্লেখ করেই এই মামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। আর এই নোটিশের জবাব পেলেই পরের শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে।
বেআইনি নির্মাণ নিয়ে বরাবরই কড়া মনোভাব দেখিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করার পর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান মামলাকারী। কলকাতা পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে কাশীপুর এলাকায় বেআইনি নির্মাণ বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ সাউ।অভিযোগ, মামলা করার পর থেকেই পরিবারটির উপর নানাভাবে অত্যাচার শুরু হয়েছিল। তারপরেই আশ্চর্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান দিলীপ সাউ।
দিলীপ কোথায়? জানেন না তাঁর পরিবারও। তাঁর খোঁজে পুলিসের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ দিলীপ সাউ-এর স্ত্রীর। আরও অভিযোগ, স্বামী মামলা করার প্রতিবাদে স্ত্রীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে গ্রেফতার করে কাশিপুর থানা। এর জন্য ২৭ দিন জেল খাটতে হয় দিলীপ সাউয়ের স্ত্রীকে। অত্যাচার এখানেই শেষ হয়নি, স্থানীয় দুষ্কৃতীরা, তাঁর বাড়িতে এসে ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ।
দিলীপ সাউয়ের এক ছেলেকে হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী। জামিন পাওয়ার পর নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দিলীপ সাউয়ের স্ত্রী। হাইকোর্ট পরিবারটিকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বাড়ির সামনে পুলিস পোস্টিং-এর নির্দেশ দেয়। গত ২২ তারিখ আদালতে নির্দেশ অনুযায়ী দিলীপ সাউয়ের স্ত্রী ও তাঁর মেয়েকে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়ে যায় পুলিস। আদালতে নির্দেশমতো দু'দিন পুলিস পোস্টিং ছিল। দুষ্কৃতীরা বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করায় আতঙ্ক কাটছে না বলে অভিযোগ পরিবারের।
স্থানীয় কাউন্সিলর কার্তিক মান্না বলছেন, এই বিষয়টি আমার জানা নেই। বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে আমি নিজেও লড়াই করছি। আমি খোঁজ নেব। ওই পরিবারটা যদি আমার কাছে আসেন, বিষয়টি আমি দেখবো।
ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর যুক্ত বলে অভিযোগ করেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। একই সঙ্গে পরিবারের উপর যেভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, তাতে কলকাতার আইনশৃঙ্খলা কোন জায়গায় পৌঁছেছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দেন বিজেপি কাউন্সিলর।
অবশেষে নবান্নের (Nabanna) সামনে ধরনায় বসতে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court), তবে রয়েছে কিছু শর্ত। নবান্নের সামনে ধরনায় বসতে চায় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ডিএ আন্দোলনকারীরা (DA Agitation)। এবারে বৃহস্পতিবার সেই আবেদনেই অনুমতি দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর ধরনায় বসার অনুমতি পেয়েছেন তাঁরা। তবে বিচারপতির তরফে কিছু শর্ত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এদিন শর্তসাপেক্ষে নবান্নের বাসস্ট্যান্ডের সামনে ধরনায় বসার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
ডিএ-র দাবিতে ধর্মতলার শহীদ মিনারের সামনে দীর্ঘদিন ধরে ধরনা চালাচ্ছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। এবার নবান্নের সামনে বাসস্ট্যান্ডে ধরনায় বসতে চান তাঁরা। এই কর্মসূচিতে অনুমতি দেয়নি পুলিস। এরপরই হাইকোর্টে যায় তাঁরা। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে হয়। আর তখনই তিনি এই কর্মসূচিতে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেন। আদালতের শর্ত, ট্রাফিক সচল রাখতে হবে, পুলিসকে বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান করতে হবে। ট্রাফিক-এর সমস্যা যাতে না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। তিন দিন ধরে অবস্থান করবেন তারা। শব্দদূষণ যাতে না হয় সেদিকেও দেখতে হবে।
এদিন পুলিসের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, নবান্ন বাসস্ট্যান্ড অত্যাধিক স্পর্শকাতর এলাকা। ওখানে প্রচুর ব্যস্ত রাস্তা। শিবপুর পুলিস স্টেশনের মধ্যে পড়ে। একাধিক মানুষ ওখান দিয়ে যাতায়াত করেন। আর ওটা স্ট্যান্ড না ওটা বাস টার্মিনাস। ৪০০ জন ব্যক্তি ওখানে থাকবে। কীভাবে আমরা সামলাবো?'
আন্দোলনকারীদের আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় এরপর বলেন, 'আলাদা দিনের ব্যবস্থা করে দিন। ছুটির দিন লোক কম বেরোয়। পুলিস ব্যাবস্থা নিক। ১ লাখ স্কোয়ারফুট জায়গা আর আবেদনকারীরা তো মাত্র ২০০০০ স্কোয়ারফুট চাইছে। তবে বাস টার্মিনাস যেন বন্ধ না হয়। ট্রাফিক সচল থাকতে হবে। বিক্ষোভকারীদের সেদিকে নজর রাখতে হবে।'
দু'পক্ষের সওয়াল জবারের পর অবশেষে ধরনায় অনুমতি দেওয়ায় উচ্ছ্বসিত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা অর্থাৎ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা। তাঁরা বলছেন, রাজ্য সরকারের লজ্জা নেই, তাঁদের আওয়াজ এবার সরাসরি নবান্নের ১৪ তলায় পৌঁছতে চান তাঁরা। তবে এরপরেও যদি সুরাহার পথ না বেরোয় তাঁদের আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে বলেই জানান আন্দোলনকারীরা।
হাইকোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দিল এসএসসি। বুধবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বার রশিদির বিশেষ বেঞ্চে রিপোর্ট জমা করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে সময় নিয়েছে আদালত। যারা এই মামলায় যুক্ত হলেন তাঁরা তাঁদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা দেবেন আদালতে। পাশাপশি সিবিআই-এর কাছে রিপোর্ট তলব করল ডিভিশন বেঞ্চ। ৯ জানুয়ারি সিবিআইকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের।
এদিন আদালতে এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্র বলেন, কাদের নামে বিকৃত ওএমআর শিট তৈরী করা হয়েছে, RANK JUMPING-এর নাম সহ আদালতের নির্দেশ মত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে আদালতে। বিচারপতি বলেন, এগুলো আদালত রেকর্ডে রাখল। এর পরেই বিচারপতি জানতে চান, চাকরিহারাদের কারোর হলফনামা আছে যা আদালতের কাছে জমা দিতে চায়? যারা সংযুক্ত হতে চায় তারা মামলায় সংযুক্ত হতে পারে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৫ জানুয়ারি।
এবারে এসএসকেএম হাসপাতালের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হল কলকাতা হাইকোর্টে। এসএসকেএম বিভিন্ন দুর্নীতিতে নাম থাকা অভিযুক্তদের আশ্রয় দিচ্ছে অভিযোগ তুলে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। ওই হাসপাতাল চিকিৎসা পরিষেবার অপব্যবহার করছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা দায়ের করেছেন মামলাকারী।
জানা গিয়েছে, মামলাটি করেছেন হাইকোর্টের আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। তিনি বলেছেন, 'চিকিৎসার প্রয়োজন নেই অথচ ওই হাসপাতালে প্রভাবশালীরা বেড দখল করে রেখেছেন। সেখানে তাঁদের 'ভন্ড' চিকিৎসা চলছে। সাধারণ মানুষ বেড পাচ্ছেন না। আশঙ্কাজনক রোগীরা উপযুক্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না।' তাই মামলাকারীর আবেদন, ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অভিযুক্তদের সব মেডিক্যাল রিপোর্ট আনা হোক। তা যাচাই করা হোক কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও হাসপাতালকে দিয়ে। সিবিআই এবং ইডিকে নির্দেশ দিক আদালত, ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকা অভিযুক্তদের কেস রেকর্ড আদালতে জমা করা হোক। রমাপ্রসাদ সরকারের বক্তব্য, বৃহত্তর জনগণের স্বার্থে এই মামলা করা হয়েছে। এসএসকেএম হাসপাতালে সকলের জন্য সমান চিকিৎসা করা হোক। প্রভাবশালীদের অতিরিক্ত গুরুত্ব যেন না দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে যখন বিধ্বস্ত কমিশন, তখন ফের একবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল এসএসসি। প্রত্যেকবারের মত আজ অর্থাৎ সোমবারও তার অন্যথা হল না। সোমবার আদালতে ফের একটি রিপোর্ট জমা দিল এসএসসি। আর এরপরই ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্নের মুখে এসএসসি। এসএসসি-র প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে এদিন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, 'এসএসসি কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছে কি? কী লুকোতে চাইছে এসএসসি?'
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সাব্বর রশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে প্রশ্নের মুখে এসএসসি। আদালতে এসএসসি স্বীকার করল, নবম ও দশমে RANK JUMPING ও গ্রুপ সি, গ্রুপ ডির ক্ষেত্রে ওএমআর শিট বিকৃত হয়েছে। তবে প্রথমে স্বীকার করলেও পরে জানানো হয়, এক্ষেত্রে রেকমেন্ডেশনই দেয়নি এসএসসি। আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে সময় চাইলো এসএসসি। আগামী বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানি। সেই দিন এসএসসি জমা দেবে নিয়োগ সংক্রান্ত সব লিস্ট। কাদের RANK JUMPING করা হয়েছে ও কত OMR পরিবর্তন করা হয়েছে, সেদিনই সব তথ্য আদালতে জমা দেবে এসএসসি।
এদিন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, 'এসএসসি কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছে কি? কি লুকোতে চাইছে এসএসসি?' এসএসসির বাছাই প্রক্রিয়া, ওএমআরশিট ম্যানিপুলেশন, গ্রুপ জাম্পিং এবং সুপারিশ ছাড়াই নিয়োগ পাওয়া এই সবকিছু সম্পর্কে এসএসসির স্ট্যান্ড কী? জানতে চায় আদালত। ২০ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন এই বিষয়গুলির ওপর হলফনামা ও রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে এসএসসিকে এমনটাই নির্দেশ বিশেষ বেঞ্চের।