নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ দুটি মোটর বাইকের। ঘটনাস্থলে মৃত্য়ু হয় তিন যুবকের। ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়া জেলার বল্লভপাড়া বড়োশাঁকো এলাকায়। জানা গিয়েছে, মৃত একজনের বাড়ি কাটোয়ার চাউল পট্টি এলাকায়। তাঁর নাম শায়ন দত্ত (২৪)। অপর দিক থেকে আসা বাইকে যে দুজন ছিলেন, তাঁরা হলেন শুভজিৎ ঘোষ (১৯) এবং বাপন দাস (২১)। দুই যুবকের বাড়ি বল্লভপাড়া গ্রামে। তিন যুবকের মৃতদেহ গুলিকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে খবর, গতকাল অর্থাৎ বুধবার সন্ধ্য়া সাড়ে ৯টা নাগাদ নদীয়ার বড়শাঁকো এলাকায় দ্রুত গতিতে দুদিক থেকে দুটি বাইক আসছিল। সেই সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুটি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এরফলে রাস্তা দিয়ে যাওয়া একটি টোটো গাড়ির উপর ছিটকে গিয়ে পড়ে বাইকে থাকা একজন। ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হন টোটো চালক এবং টোটোতে থাকা এক যাত্রী। আহত দু'জনকে ভর্তি করা হয় কাটোয়া হাসপাতালে। ঘটনাকে ঘিরে শোকের ছায়া নেমেছে মৃতের দুই পরিবারে।
বেঙ্গল কেমিক্যাল গেটের সামনে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল আহত দুই শিশুর মধ্যে এক শিশুর। গতকাল, শনিবার ওই শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই কান্নায় ভেঙে পড়ার পাশাপাশি বিক্ষোভে ফেটে পড়ে মৃতের পরিবার ও স্থানীয়রা।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার কাঁকুড়গাছির দিক থেকে বাইপাসে দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে একটি গাড়ি। রাস্তার মধ্যে উল্টে গিয়ে পাল্টি খায় গাড়িটি। সেই সময়ই আচমকা গাড়িটির ধাক্কায় গুরুতরভাব জখম হয় শিশু দুটি। ধাক্কা মারার পরই পালিয়ে যায় ড্রাইভার। স্থানীয়রা গাড়ি সরিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। আর তারপরই নিরীহ বাচ্চা দুটির এই শোচনীয় পরিণতিতে এলাকার মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিস এলে পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তাঁরা।
কলকাতায় ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা। দুই শিশু সহ তিনজনের উপর উঠে গেল চলন্ত গাড়ি। রক্তে ভাসলো চারিদিক। বেঙ্গল কেমিক্যাল গেটের সামনে ঘটে মর্মান্তিক এই পথ দুর্ঘটনা। গাড়িটি দ্রুতগতিতে এসে রাস্তার পাশে গার্ডরেল ভেঙে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাচ্চা সহ মোট তিনজনকে ধাক্কা মারে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফুলবাগান থানার পুলিস।
জানা গিয়েছে, কাঁকুড়গাছির দিক থেকে বাইপাসে দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে একটি গাড়ি। রাস্তার মধ্যে উল্টে গিয়ে পাল্টি খায় গাড়িটি। সেই সময়ই আচমকা গাড়িটির ধাক্কায় গুরুতরভাব জখম হয় শিশু দুটি। ধাক্কা মারার পরই পালিয়ে যায় ড্রাইভার। স্থানীয়রা গাড়ি সরিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। আর তারপরই নিরীহ বাচ্চা দুটির এই শোচনীয় পরিণতিতে এলাকার মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পুলিস এলে পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তা অবরোধ করে তাঁরা।
ভূপতিনগরে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ওপর হামলার ঘটনায় এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনে পুলিস প্রশাসনের বিরুদ্ধে নালিশ বিজেপির। মূলত পুলিস সুপার, অতিরিক্ত পুলিস সুপার গ্রামীণ পূর্ব মেদিনীপুর, মহকুমা পুলিস অফিসার কন্টাই এবং ভূপতিনগরের ওসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করছে পুলিস। কিন্ত পুলিসের এই পক্ষপাতিত্ব কাম্য নয়। তাই পুলিস প্রশাসনের বিরুদ্ধে কমিশনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি বিজেপির।
প্রসঙ্গত, ভূপতিনগরকাণ্ডের তদন্তে অভিযোগ উঠেছিল অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে আটক করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছিল এনআইএর তদন্তকারী আধিকারিকরা। বাঁশ-লাঠি নিয়ে সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর হামলার ঘটনা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছে সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির উপর শাসকদলের দুষ্কৃতিদের ধেয়ে আসার ঘটনা। কিন্তু বঙ্গে সত্য উদঘাটন করতে গেলে কেন বার বার আক্রান্ত হতে হবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকেই? স্থানীয় পুলিস প্রশাসন কেন নিরুত্তাপ এই ঘটনায়। তবে কি সত্যিই প্রশাসনের অঙ্গুলিহেলনেই চলে পুলিস? কমিশনের হস্তক্ষেপেই মিলবে সব প্রশ্নের জবাব তা বলাই বাহুল্য।
মধ্যরাতে শহর কলকাতার বুকে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। গার্ডেনরিচে নির্মীয়মান বহুতল ভেঙে বিপত্তি। ঝুপড়ির উপরে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান বহুতলটি। কমপক্ষে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে এখনও অবধি জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে ১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে ধ্বংসস্তূপ থেকে। তাদের মধ্যে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১১ জন। ২ জন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। অনেকেই বহুতলের ভিতরে আটকে রয়েছে বলে আশঙ্কা। রাত থেকেই চলছে উদ্ধারকাজ। ইতিমধ্যে ঘটনায় প্রমোটারদের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
হঠাৎ করে মধ্যরাতে কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটে দুর্ঘটনা। গোটা শহর যখন ঘুমন্ত ঠিক তখনই হুড়মুড়িয়ে একটি নির্মীয়মান বহুতল ভেঙে পড়ে পাশের ঝুপড়ির উপরে। ঝুপড়িতে সেসময় ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন সকলে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন ২ জন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত হয়েছেন বহু।
ইতিমধ্যেই দমকল এবং পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। পুলিসের উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। ২ জনকে উদ্ধার করে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। মৃত ২ জনেই মহিলা বলে জানা গিয়েছে। মৃত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, পুরোটাই বেআইনিভাবে তৈরি করা হয়েছে। সেকারণে তাঁরা সেটা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। স্থানীয়রা চারতলার পরের কাজ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাসিন্দাদের কথায় কর্ণপাত না করেই নির্মাণ কাজ চালাচ্ছিলেন প্রমোটার এমনই অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
এদিকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ। এনডিআরএফও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন। বহুতল লাগোয়া কয়েকটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। স্থানীয়রা মেয়রকে সামনে পেয়ে তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
সাত সকালে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক পথচারীর। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া রানীগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, মৃত ব্য়ক্তির নাম বাদল নাথ (৬৫)।
জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো এদিন সকালেও প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন বাদল নাথ। সেই সময় জাতীয় সড়কের তারাপুর মোড়ের কাছে পিছন দিক থেকে আসা একটি ডাম্পার তাঁকে ধাক্কা দেয়। ডাম্পারের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে গুরুতরভাবে আহত হয়ে পড়েন তিনি। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে মেজিয়া ব্লক প্রথম স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে।
তারপরই বিক্ষোভের আঁচ উপচে পড়তে থাকে জাতীয় সড়কে। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় মানুষজন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, দিনের পর দিন পথ দুর্ঘটনা বাড়লেও পথ দুর্ঘটনায় এড়াতে কোনওরকম ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। তাই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা এলাকার মানুষ।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল রাজ্যের! রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আবেদন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। এমনকি ইডির তরফে এই ম্যামলায় দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, ইডির আবেদন গ্রহণ করেছেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চ। কিছুক্ষণ পরই শুরু হবে শুনানি।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি ইডির ওপর হামলার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। এবং শেখ শাহজাহানকে গতকাল বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে সিআইডিকে সিবিআই এর হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। সেই কারণে গতকাল সিআইডির পক্ষ থেকে শেখ শাহজাহানকে সিবিআই এর হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ, রাজ্যের এই আবেদন খারিজ করে দিয়ে আবার কলকাতা হাইকোর্টে তাদের ফেরত পাঠিয়েছে। তারপরই রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল ইডি।
প্রধান বিচারপতি আজ এজলাসে না বসায়। প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চের মামলার শুনানি হবে বিচারপতি হরিশ টন্ডন বিচারপতি হিরণময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। ফলে এটা স্পষ্ট যে এই ঘটনায় এখনও অবধি আদালতে জোড়া ধাক্কার মুখে রাজ্য।
শহরের কর্মব্যস্ত সময়ে রাস্তার মাঝেই দাউদাউ করে জ্বলে উঠল যাত্রীবাহী বেসরকারি বাস। ঘটনাটি ঘটেছে নিউটাউনের ডিজি ব্লকে অ্যাকশন এরিয়া ১ বিশ্ববাংলা মোড়ের কাছে। যদিও ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও আহত বা মৃতের খবর পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দমকলের একটি ইঞ্জিন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নিউটাউন থেকে আলিপুর রুটের ২৬০ নম্বর বাসে আগুন লাগে। যাত্রী নিয়ে আলিপুর থেকে নিউটাউনের দিকে আসছিল বাসটি। প্যাসেঞ্জার নামানোর পর হঠাৎ ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে বাসে থাকা বাকি যাত্রীরাও বাস থেকে নেমে যান। পুরো বাসটি আগুনের গ্রাসে চলে যায়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়ায় পথচলতি মানুষ থেকে শুরু করে যাত্রীদের মধ্যে।
বেপরোয়া সরকারি বাসের ধাক্কায় মৃত্য়ু হল এক ব্য়ক্তির। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচলের পাহাড়পুর ৮১ নং জাতীয় সড়কে। জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম হাসিরুদ্দিন (৫৫)। বাড়ি মালদহের চাঁচল ২ নং ব্লকের সাহুরগাছি গ্রামে। ঘটনায় মৃতদেহ আটকে রেখে জাতীয় সড়কে পথ অবরুদ্ধ করে অবস্থান-বিক্ষোভে বসলেন মৃতের পরিবার সহ প্রতিবেশীরা। এর ফলে সমস্য়া পড়েন নিত্যযাত্রীরা।
জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার দুপুরে নিজের চাষের জমি দেখে বাড়ি ফিরছিলেন হাসিরুদ্দিন। ঠিক সেই সময় ৮১ নং জাতীয় সড়কের পাহাড়পুর বাইপাসে ভুল রুটে বেপরোয়া গতিতে একটি সরকারি বাস এসে সাইকেল সহ তাঁকে ধাক্কা মারে। বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে গুরুতর জখম হয়ে পড়েন তিনি। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্য়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
এরপর আজ, শনিবার ভোরে কলকাতা থেকে চাঁচলে ওই ব্য়ক্তির দেহ ফিরতে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১১ টা পর্যন্ত প্রায় ৬ ঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিস যাওয়ার পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠেছে সরকারি বাসের চালকের ভূমিকা নিয়ে। ইতিমধ্য়ে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
শেখ শাহজাহানকে বসিরহাট আদালত থেকে সোজাসুজি আনা হল ভবানী ভবনে। পুলিসের কড়া নিরাপত্তায় আনা হয় তাঁকে। এবার ইডির উপর আক্রমনের মামলায় তদন্তভার গেল সিআইডি-র হাতে। আগামী ১০ দিন রাখা হবে সেখানে। গত ৫ই জানুয়ারি সন্দেশখালিতে ইডির ওপর যে আক্রমণ করা হয়েছিল সেই নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে সিআইডি আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, গ্রেফতারের পর শেখ শাহজাহান পুলিসকে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, 'ইডি আমাকে গ্রেফতার করতে পারে, সেই আশঙ্কায় ইডি হানার দিন লোকজন ডেকে ইডি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর হামলার নির্দেশ দিয়েছি'।
শেখ শাহজাহান তাঁর নিজের এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। আদালতে দেওয়া নথিতে দাবি রাজ্য পুলিসের। শাহজাহান জামিন পেলে সাক্ষীদের ভয় দেখাবে, তথ্য লোপাটে চেষ্টা করবে। শুধু তাই নয়, এই তৃণমূল নেতাকে হেফাজতে রাখা দরকার বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার জন্য়। এছাড়াও ইডি আধিকারিকদের কাছ থেকে লুট হওয়া সমস্ত জিনিস এবং নথিপত্র উদ্ধার করতে শাহজাহানকে হেফাজতে রাখা অবশ্য়ই দরকার।
সন্দেশখালি ইস্যুতে যেন শাসকের চক্ষুশূল বিরোধীরা। দীপাঞ্চলের মানুষের মুখোমুখি হতে গিয়ে এবার বাধা পেলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। কলকাতার সায়েন্স সিটির কাছে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয় আইএসএফ বিধায়ককে। পুলিসের এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ বিধায়ক।
সন্দেশখালির পাশাপাশি বাসন্তী যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ঠিক কোথায় যেতে বাধা? পুলিসকে প্রশ্ন নওশাদের। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে দাবি করা হয় পুলিসের তরফে। এরপরেই পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়ান আইএসএফ বিধায়ক। ১৪৪ ধারা দেখিয়ে আটকানো হয় নওশাদকে। প্রশ্ন, সায়েন্স সিটি থেকে সন্দেশখালির দূরত্ব ৬২ কিলোমিটার। সেখানে কীভাবে ১৪৪ ধারা জারি হল?
দীর্ঘ বাকবিতণ্ডার পর গ্রেফতার করা হয় নওশাদ সিদ্দিকিকে। গ্রেফতার করে প্রগতি ময়দান থানার পুলিস। যদিও গ্রেফতারির কারণ জানতে চাইলে, কোনও উত্তর দেয়নি পুলিস। তবে কি সন্দেশখালিতে শুধুমাত্র শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদেরই অবাধ বিচরণ?
প্রতিবাদী হলেই শাসক নেতার মুখে হারাবে মান? সন্দেশখালিতে নারীসম্ভ্রম লুঠের অভিযোগ উঠছে বারবার। পার্থ ভৌমিকের বড়বাজার থেকে মহিলা আনানোর মন্তব্যের পর এবার শওকত মোল্লা। কলকাতা থেকে ৫ হাজার, ১০ হাজারে মহিলা ভাড়া করা হচ্ছে। মহিলাদের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্যে অভিযুক্ত ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। বিধায়কের মন্তব্যকে সমর্থন জানালেন মঞ্চে উপস্থিত আরেক নেতা।
ভাঙড়ের শানপুকুর অঞ্চলে একটি প্রস্তুতি সভা থেকে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন শওকত মোল্লা। সেই সভা থেকে তিনি আরও বলেন, 'আজ যে খবর প্রকাশ করা হচ্ছে, তার ৯০% মিথ্যা কথা, এটা আমি শপথ করে বলতে পারি। কেউ কেউ ঘোমটা দিয়ে কথা বলছে, কেউ কেউ সরাসরি কথা বলছে। পরবর্তীকালে দেখা যাচ্ছে এরা সিগারেট খাচ্ছে। এতদিন ওই এলাকায় এমন ঘটনা ঘটছে, কেউ ফোনে একটাও ছবি তোলেনি। পিছন থেকে বিজেপি সিপিআইএম উস্কানি দিচ্ছে।'
এরপরই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিজেপি নেতা বিকাশ সর্দার ও কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়।
শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারিতে কোনও বাধা নেই। স্পষ্ট জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। যা রীতিমত চাপ বাড়ছে শাসকদলের উপর। এই অবস্থায় নতুন করে সন্দেশখালির 'বেতাজ বাদশা' শেখ শাহজাহনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল রাজ্য পুলিস। গৌর দাস নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছে এই এফআইআর বলে জানা গিয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ভয় দেখানো-ঘর-বাড়ি ভাঙচুর সহ একাধিক ধারা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নয়া এফআইআরে ৮০ হাজার টাকা লুটের মতো অভিযোগ রয়েছে 'বাদশা'র বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বসিরহাট জেলা পুলিস।
উল্লেখ্য, আজ সোমবার সন্দেশখালির ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়তে হয় রাজ্য-প্রশাসনকে। যা নিয়ে চরম অস্বস্তি। যদিও দীর্ঘ শুনানি শেষে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করার উপর আদালতের কোন স্থগিতাদেশ নেই বলে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। সন্দেশখালির অশান্তির ঘটনায় হাই কোর্টের দায়ের করা স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় এমনটাই জানালেন প্রধান বিচারপতি। পাশাপাশি, আদালত বান্ধব জয়ন্ত নারায়ন চট্টোপাধ্যায় রিপোর্ট পেশ করতে পারবেন বলে নির্দেশ আদালতের। এর পাশাপাশি রাজ্য পুলিস, সিবিআই, ইডি-কেও মামলায় পার্টি করা হল। শেখ শাহজাহান কেও মামলায় পার্টি করা হল। হাইকোর্টের তরফ থেকে দুটি সংবাদপত্রে নোটিশ দিয়ে জানানো হবে যে তাকে মামলায় পার্টি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৪ মার্চ এই সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালিতে শাহজাহানের গ্রেফতারি চেয়ে পথে নেমেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। প্রায় প্রতি দিনই চলছে বিক্ষোভ। নতুন এফআইআর এবং আদালতের নির্দেশের পর এবার সন্দেশখালির বাঘ খাঁচাবন্দি হয় কিনা, তা সময়ের অপেক্ষা।
বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার ফের অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। রাজ্য রাজনীতিতে জোর চর্চা, বাঘের ঘরে এই মুহূর্তে ক্ষোভের বাসা। ঝুপখালিতে যে ক্ষোভের আগুন জ্বলেছিল ২৪ ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই তার আঁচ এসে পড়ল বেড়মজুরে। সন্দেশখালির একাধিক প্রত্যন্ত এলাকা এখন ফুটছে। সকাল থেকে ছিল চাপা উত্তেজনা, বেলা গড়াতেই বিক্ষোভ আকার নিল জনরোষের।
রাজনৈতিক মহল বলছে, শাসক দলের অন্দরে সন্দেশখালির 'বাঘ' হিসেবে পরিচিত শাহজাহান। আর বেড়মজুরের কাছাড়িবাড়িতে তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি, তৈয়ব মোল্লার মাছের ভেড়ির আলাঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। হাতে লাঠি, গাছের ডাল নিয়েও রাস্তায় নেমে পড়েন মহিলারাও। শাহজাহান, শিবু-উত্তমের পর বৃহস্পতিবার শাহজাহানের মেজোভাই সিরাজের বিরুদ্ধে ঝুপখালিতে সরব হয়েছিল গ্রামবাসীরা। এবার সামনে নয়া অভিযুক্ত বেড়মজুর অঞ্চলের তৃণমূলের সম্পাদক অজিত মাইতি।
জনবিস্ফোরণের মুখে পড়ে লেজে গোবরে অবস্থা হয় অজিত মাইতির। কিল, চড়, ঘুষি শুধু নয় ক্ষোভে বিস্ফোরণে চলে জুতো পেটা! ভাঙচুর চালানো হয় বাড়িতেও। গ্রামবাসীদের রোষে ভাঙল বাড়ির সীমানা, চুরমার হল বাইক। এতদিন ধরে অত্যাচারের যে অভিযোগ উঠেছে, যাঁরা অত্যাচারিত হয়েছিলেন তারাই এখন সামনে সারিতে নেমে আন্দোলনে সরব হয়েছেন। জমি কেড়েছে, আমাদের টাকায় সম্পত্তি বানিয়েছে গ্রামবাসীদের মুখে মুখে এমনটাই অভিযোগ।
ঘটনার পরই মুখ খোলেন তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে, এমনটাই অভিযোগ অজিত মাইতির। ৩ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করছেন ওই তৃণমূল নেতা।
দখল হয়ে যাওয়া জমিজমা ফেরতের পাশাপাশি তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে বেড়মজুরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিস বাহিনী। তখন পুলিসের সামনেই প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন গ্রামবাসীরা। এতদিন অত্যাচার চালিয়েছে, সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটনা নিয়ে মন্তব্য বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
এখন জমি ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়ে পড়ছে সন্দেশখালির আনাচে-কানাচে। শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠছে গ্রামবাসীরা। শাহজাহান এখনও ধরা পড়েনি।গারদে শিবু-উত্তম। এবার রোষে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ শাসকদলের আরও এক নেতা।
সন্দেশখালির অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানের গা ঘেঁষেই যেন কাঠগড়ায় উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিস প্রশাসন। দিনের পর দিন চলা নির্যাতনের অভিযোগ। কীভাবে চোখ বন্ধ করে ছিল পুলিস? প্রশ্নের জবাব পেতে সন্দেশখালি পৌঁছয় জাতীয় মহিলা কমিশন। দু-জন নির্যাতিতাকে সঙ্গে নিয়ে রেখা শর্মা ও প্রতিনিধি দল পৌঁছয় সন্দেশখালি থানায়। কথা বলেন সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে। এরপরই তিনি বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া উপায় নেই বলে দাবি করেন।
পুলিসেও ভয়। আতঙ্কে কথা বলতে চাইছেন না মহিলারা। সন্দেশখালিতে ধর্ষণের অভিযোগ তুললেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। বাংলার পরিস্থিতি ভয়াবহ। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলেন রেখা শর্মা। বিনা কারণে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদেরও গ্রেফতার করা হয় বলেও অভিযোগ। সন্দেশখালিতে পুলিসের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন রেখা শর্মা।
মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর সাম্রাজ্যে দিল্লি থেকে ছুটে আসছে মহিলা কমিশন। মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার সময় হল না? সন্দেশখালির মা-বোনেরা কি এতটাই তুচ্ছ? দিল্লির হস্তক্ষেপই যেন সমাধানের আশা। কিন্তু মা-মাটি-মানুষের সরকার বলে দাবি করা প্রশাসনের ঘড়িতে সন্দেশখালির জন্য সময় বরাদ্দ হবে? জবাব না হয় ভবিষ্যতের মুঠোই দিক।