ভুয়ো (Fake) আন্তঃদেশীয় কল সেন্টারের (Call Center) পর্দা ফাঁস। অভিযান চালিয়ে সাত জনকে গ্রেফতার (Arrest) করল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই কল সেন্টারে হানা দেয় পুলিস। সূত্রের খবর, বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় খবর আসে, সল্টলেক সেক্টর ফাইভের বেঙ্গল ইন্টেলিজেন্স পার্কের ১৩ তলায় বিনীত টেকনোলজিস্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ভুয়ো কল সেন্টার চলছে। খবর পেয়েই ওখানে হানা দেয় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস।
পুলিস জানতে পারে বিদেশি নাগরিকদের কল করে, টেক সাপোর্ট দেওয়ার নাম করে প্রতারণা করছিল এই বিনীত টেকনোলজিস্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে সংস্থাটি। তারই পরীক্ষাতে মঙ্গলবার ওই ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিয়ে, সাত জনকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস। এদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, হার্ডডিক্স, ডেবিট কার্ড, মোবাইল ফোন-সহ নগদ আনুমানিক ৫৫ হাজার টাকা। মঙ্গলবারই অভিযুক্তদের বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলা হবে।
আবার বিধাননগর কমিশনারেট (Bidhannagar Police) এলাকার নারায়ণপুরের পূর্ব বেড়াবেড়িতে ভুয়ো কল সেন্টারের (Fake Call Center) হদিশ। ৫-জি টাওয়ার বসানোর নামে টাকা হাতানোর অভিযোগে পুলিসের হাতে গ্রেফতার মোট ২১ জন। ধৃতদের মধ্যে ১১ জন তরুণী ও ১০ জন তরুণ। নারায়ণপুর থানার অভিযানে উদ্ধার ৪৬টি মোবাইল-সহ বহু নথি। বৃহস্পতিবার ধৃতদের ব্যারাকপুর কোর্টে তোলা হয়। পুলিস সূত্রে খবর, সূত্র মারফত খবর পেয়ে নারায়ণপুর থানার উচ্চপদস্থ কর্তারা ওই ভুয়ো কলসেন্টারে হানা দেন।
তাঁরা গিয়ে দেখেন সেখানে যুবক-যুবতী বসে কল সেন্টার চালাচ্ছেন। এরপরই তাঁদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস। তদন্তে জানা যায়, এই অফিসে বসে সাধারণ মানুষকে ফোন করে ফাইভ জি মোবাইল টাওয়ার বসানোর নামে প্রসেসিং ফি বাবদ মোটা টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এভাবে তাঁরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা করে চলেছে। এরপরেই তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিস।
জানা গিয়েছে, ধৃতরা বিহার, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, সল্টলেক, নদীয়া, হাওড়া-সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
লোনের নামে প্রতারণা চক্র। সল্টলেকে গ্রেফতার চার তরুনী-সহ ছয় জন। শুক্রবার রাতে সল্টলেকের বিডি ব্লকে হানা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তদের। বিধাননগর উত্তর থানার বিশেষ অভিযানে এই প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস। জানা গিয়েছে, রীতিমতো বাড়ি ভাড়া নিয়ে তাঁরা লোনের নামে এই প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিল।
শনিবার বিধাননগর কোর্টে তোলা হয় অভিযুক্তদের। পুলিসের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বিডি ব্লকের ৪২২ নম্বর বাড়ি সাত-আট মাস ধরে ভাড়া নিয়ে সেখানে ভুয়ো কল সেন্টার খোলা হয়। আদতে কল সেন্টারের আড়ালে লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণা চলতো। বিশেষ অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার হানা দেয় বিধাননগর উত্তর থানার পুলিস।
কল সেন্টার থেকে চার তরুণী-সহ মোট ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে জানা যায়, এরা ওই কল সেন্টারে বসেই বিভিন্ন মানুষকে ফোন করে লোনের জন্য প্রস্তাব দিতেন। কেউ এই লোনের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলে, সেই লোন পাইয়ে দিতে নানা পদক্ষেপ বাবদ টাকা নেওয়া হত। এর পাশাপাশি একটি বিমাও করতে হবে বলে টাকা নেওয়া হতো। এই প্রতারণা চক্রের মাথা কে, ধৃতদের জেরা করে জানতে চায় পুলিস।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পথদুর্ঘটনা(Road accident)। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশেই উল্টে গেল একটি ছোট গাড়ি। শিলিগুড়ি(Siliguri) মহকুমার অন্তর্গত ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মুরালিগঞ্জ এলাকার ঘটনায় আহত গাড়ির চালক। ঘটনাস্থলে বিধাননগর থানার পুলিস(Bidhannagar police)। আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বিধাননগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠায় পুলিস।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ওই গাড়িটি বিহার থেকে শিলিগুড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময় শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মুরালিগঞ্জ এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা। গাড়িটি আচমকাই নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। ঘটনায় গাড়ির চালক আহত হয়। এই ঘটনার জেরে স্থানীয়রা তড়িঘড়ি খবর দেয় পুলিসে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিধাননগর থানার পুলিস। এরপর পুলিস আহতকে উদ্ধার করে বিধাননগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠায়। দুর্ঘটনার পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিস।
এবার সাইবার প্রতারণার (Cyber Fraud) শিকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ঘটনার তদন্ত শুরু করে রাজস্থান থেকে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস (Cyber Police)। সূত্রের খবর, ২০২২-র অক্টোবরে মাসে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (Judicial Magistrate) সোমশুভ্র ঘোষাল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগ, 'তিনি, পরিবার নিয়ে পুরীতে ঘুরতে যাওয়ার জন্যে অনলাইনে একটি ফাইভ স্টার হোটেল বুকিংয়ের চেষ্টা করেন। সেই সময় তাঁকে হোটেল বুকিং প্রসিডিওরের জন্য একজন ফোন করেন। সেখানে তাঁকে হোটেলে বুকিংয়ের জন্যে টাকা জমা করতে বলা হয়। মাননীয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে একটি অ্যাকাউন্ট ডিটেলস দেওয়া হয়।'
জানা গিয়েছে, তিনি সেই অ্যাকাউন্টে ৯২ হাজার টাকা ট্রান্সফার করেন। তবে কিছুদিন পরে ওই হোটেলে খোজ নিলে জানতে পারেন, তাঁর নামে ওই হোটেলে কোনও বুকিং হয়নি। প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে পুলিসের দ্বারস্থ হন তিনি। এই অভিযোগের তদন্ত শুরু করে পুলিস জানতে পারে ওই হোটেলের ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে এই প্রতারণা চক্র চালানো হচ্ছিল। এরপরই টাকা কোন অ্যাকাউন্ট জমা পড়েছে সেই সূত্র ধরে রাজস্থানের ভরতপুর এলাকায় হানা দেয় পুলিস।
সেখান থেকেই এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত প্রেম চাঁদকে গ্রেফতার করে পুলিস। ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে আসা হয় তাঁকে। শনিবার তাঁকে বিধাননগর আদালতে তোলা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত আছে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস।
পুলিস পরিচয় (Fake Police) দিয়ে বিধাননগর (Bidhannagar) এলাকায় ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেফতার দুই। বিধাননগর নর্থ থানার হাতে ধৃতরা হলেন বিক্রম সিং এবং সুরজ প্রসাদ ঝা। বুধবার অভিযুক্ত দু'জনকে বিধাননগর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিস।
পুলিস সূত্র মারফত খবর, ১৪ই ফেব্রুয়ারি অসীম কুমার বল্লভ দত্তাবাদের বাসিন্দা বিধাননগর উত্তর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, অফিস থেকে বাইকে বাড়ি ফেরার সময় বিধাননগর কলেজের সামনে দু'জন যুবক তার গাড়ি আটকায়। নিজেদেরকে পুলিসকর্মী বলে পরিচয় দিয়ে ভয় দেখানো হয়। মোবাইল ফোন এবং টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তারা। ভয় দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ। এদিকে, অভিযোগকারীর বেশ কয়েকজন বন্ধুকে ওই পথ দিয়ে আসতে দেখে দুষ্কৃতীরা বাইকে চম্পট দেয়। তাদের ঘটনার বিবরণ দেওয়ার পরে যে পথ দিয়ে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায় সেই পথ ধরে বাইক নিয়ে তাদের ধাওয়া করা হয়।
একটি স্কুলের কাছে তাদের বাইক থামাতে সক্ষম হয়। ওই দুই ভুয়ো পুলিসকে ধরে ফেলে বিধাননগর উত্তর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাদের থেকে ছিনতাই হওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার করে পুলিস। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, শুধু বিধাননগর নয়, গোটা কলকাতারজুড়েই তারা নিজেদের পুলিস পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করতো।
ফের খাস কলকাতায় (Kolkata) প্রতারণার অভিযোগ। এবার ব্যাঙ্কে চাকরি (bank job) দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা (fraud) করার অভিযোগ। বৃহস্পতিবার রাতে ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিয়ে ১০ মহিলা-সহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করলো বিধাননগর (Bidhan Nagar) ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিস (police)। উদ্ধার হয়েছে একাধিক ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট।
পুলিস সূত্রে খবর, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের এসডিএফ বিল্ডিংয়ের ২১৫ নম্বর ঘরে ইভান অ্যাচিভার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি ভুয়ো কল সেন্টার চালু করেছিলেন প্রতারকরা। সেখান থেকে ওয়ার্ক ইন্ডিয়া নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন দিতেন তারা। ব্যাঙ্কের ব্যাক অফিসে চাকরি দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো বলেই পুলিস সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, এই অ্যাপের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের যারা চাকরির জন্য প্রোফাইল তৈরি করতেন, তাঁদের বিভিন্ন ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ফোন করতেন প্রতারকরা। সেখানে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন বাবদ কিছু টাকা জমা করতে বলা হত। রেজিস্ট্রেশন করার পরই চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের জন্যে ডাকা হত। তবে পরবর্তীতে তাঁদের কাছ থেকে আরও টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা চালাতো এই চক্র, বলে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
এরপরই বৃহস্পতিবার রাতে এসডিএফ বিল্ডিংয়ের ওই ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দেয় বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিস। সেখান থেকে ১০জন মহিলা-সহ মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। তাদের মধ্যে এই ইভান অ্যাচিভার্স প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থার কর্ণধার হাসিবুর রহমানকেও গ্রেফতার করেছে পুলিস। তাদের কাছ থেকে একাধিক কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, কাস্টমার ডেটা উদ্ধার করেছে পুলিস। শুক্রবার অভিযুক্তদের বিধাননগর আদালতে তোলা হয়।
এই চক্র তাদের প্রতারণা চক্রের জাল কত দূর পর্যন্ত বিস্তার করেছিল এবং এই চক্রের সঙ্গে অন্য কাদের যোগ রয়েছে সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিস।
ফের ডেঙ্গিতে (dengue) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু (death) ৮ বছরের এক নাবালিকার। সে বিধাননগর (Bidhannagar) পুরনিগমের ১৮ নং ওয়ার্ডের পূর্ব নারায়ণতলার বাসিন্দা। ঘটনায় একদিকে যেমন শোকের ছায়া গোটা এলাকায়, অন্যদিকে অভিযোগ ওঠেছে পুরসভার গাফিলতির।
স্থানীয় সূত্রে যেমনটা জানা গিয়েছে, নারায়ণতলার বাসিন্দা ঋত্বিকা সাউ বেশ কয়েকদিন ধরেই জ্বরে (fever) ভুগছিল। মঙ্গলবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তড়িঘড়ি বিসি আর শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিত্সা হচ্ছিল তার। তবে মাঝরাতেই হাসপাতাল থেকে পরিবারের কাছে খবর আসে ঋত্বিকার মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ছিল ছোট ঋত্বিকা। তার শরীরে এনএসওয়ান ভাইরাসের দেখা মিলেছিল।
তবে এমন ঘটনার পরই ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। স্থানীয়রা সরাসরি অভিযোগ করেছেন পুরসভার গাফিলতির। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় কম পরিমাণে দেওয়া হয় ব্লিচিং অথবা মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার অন্য সরঞ্জাম। আর দিলেও তার কোনও প্রভাব তাঁরা দেখতে পান না। সকাল থেকেই ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করে রাখতে হয়। যেখানে ডেঙ্গি আক্রান্তে সংখ্যা হু-হু করে বাড়ছে সেখানে উদাসীন মনোভাব পুরসভার।
অন্যদিকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এই বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে জানান, তিনি যথা সম্ভব চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে মৃত্যু বেদনাদায়ক। তিনি দুঃখিত, আগামীদিনেও তাঁর যা করণীয় তাই করবেন।
অন্যদিকে এদিনই রাজপথে নেমে মানুষকে সচেতনতার বার্তা দেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। এদিন তিনি ভবানীপুরের (Bhabanipur) একাধিক এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষকে বার্তা দেন। তিনি স্পষ্টতই বলেন, আগে মানুষকে সচেতন হতে হবে, শুধুমাত্র পুরসভার ভূমিকা যথেষ্ট নয়। এবছর মাত্রারিক্তভাবে ডেঙ্গির প্রভাব বেড়েছে তাই নিজস্ব উদ্যোগে মানুষকে এই রোগ মোকাবিলা করতে হবে। না হলে একা পুরসভার পক্ষ থেকে কখনই সম্ভব নয় এই রোগ মোকাবিলা করা।
হাইকোর্টের (High Court) নির্দেশ উপেক্ষা করে বিধান নগরের (Bidhannagar Corporation) ৩৫ এবং ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধ কাজকর্ম চলছে। দুই ওয়ার্ডের তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলর এবং প্রশাসনের মদতে পুকুর ভরাট এবং বেআইনি নির্মাণ চলছে। এভাবেই বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের নামে বিধাননগর পুরনিগম এলাকায় ব্যানার। সুকান্ত নগর লোহাপুল এলাকায় পড়া এই ব্যানার চোখে পড়ে প্রাতঃ ভ্রমণকারীদের। স্পষ্টতই পুরনিগমের ৩৫ এবং ৩৬ নম্বর; এই দুই ওয়ার্ডে চাঞ্চল্য। অবিলম্বে এই বেআইনি কাজ বন্ধ করতেও ওই ব্যানারে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। বিধান নগর পুরনিগমের ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর জয়দেব নস্কর এবং চামেলি নস্করকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল।
এই ব্যানার প্রসঙ্গে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়দেব নস্কর জানান, আমার ওয়ার্ডে কোনও পুকুর নেই। কিন্তু অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু ব্যবসায়ী শুরু করেছিল এই অবৈধ নির্মাণ। তারপর আমি খবর পেয়ে লিখিতভাবে বিধান নগর দক্ষিণ থানা, বিধান নগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী এবং বিধান নগর পুরনিগমের কমিশনারকে জানিয়েছি। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চামেলি নস্করের আবার চ্যালেঞ্জ, 'কেউ একজন আমাকে ডেকে নিয়ে দেখাক দিদি এখানে পুকুর ভরাট হয়েছে। আমি বরং পুকুর কাটছি, জলাশয়-খাল সংস্কার করছি। তৃণমূলকে মানুষের কাছে অপরাধী করতে এসব করা হচ্ছে।'
এই ব্যানার প্রসঙ্গে বিজেপির দাবি, 'বিজেপিতে কোনও দুর্নীতি পরায়ণ নেতা থাকে না। দলের কেউ এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত না। তৃণমূলের বখরা নিয়ে ঝামেলা নিজেদের মধ্যে। তাই এই পোস্টার। এঁরা এসব করবে বলেই পেশি শক্তি দেখিয়ে পুর ভোট করতে দেয় না। কোনও মানুষ ভয়ে ভোট দিতে আসে না।'
রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকের পরিচয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে একাধিক ব্যক্তির থেকে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার (fraud) অভিযোগ। ঘটনায় গ্রেফতার (arrest) এক। শহর কলকাতায় (kolkata) এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার বাগুইআটি (Baguihati) এলাকা থেকে এক মহিলাকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম (Bidhannagar Cyber Crime) থানার পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, ভামৌর জানা নামের ওই মহিলা নিজেকে রেল দফতরের এইচআর বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এরপরই তাঁদের রেলের বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতেন এই মহিলা। তাঁদের থেকে ধাপে ধাপে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিতেন। কিছুদিন আগেই অভিযোগ পেয়ে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস।
সেই সূত্র ধরেই নাম উঠে আসে অভিযুক্ত এই মহিলার। এরপরই শুক্রবার রাতে বাগুইহাটি এলাকা থেকে ধৃত মহিলাকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস। শনিবার অভিযুক্তকে বিধাননগর আদালতে তোলা হলে পুলিস নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায়। পাশাপাশি এই চক্রের অন্যদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস।
এদিকে, কলকাতা সংলগ্ন সেক্টর ফাইভে শেয়ার মার্কেটে টাকা খাটানোর নাম করে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ২ জন। বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ মানুষ প্রতারিত হয়েছেন বলেই অভিযোগ। জানা যায়, শুক্রবার গভীর রাতে সেক্টর ফাইভ অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় শতাধিক প্রতারিত ব্যক্তি। এরপরই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বিধান নগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিস এসে ওই অফিস থেকে স্বর্ণেন্দু জানা ও সুদীপ্ত জানা নামে দুজনকে গ্রেফতার করে।
অভিযোগ ওঠে, মার্জিন ট্রেডিং ফান্ড নামে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে কোম্পানি খুলে শেয়ার মার্কেটে টাকা খাটানোর নাম করে প্রতারণা করছিলেন ধৃতরা। এই কোম্পানিতে প্রায় ৫০ জন এজেন্ট কাজ করতেন। সাধারণ মানুষের থেকে প্রায় ২০০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়ায় টাকা না পেয়ে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলেও কোনওভাবে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। এরপরই শুক্রবার গভীর রাতে বিভিন্ন জেলা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতারিতরা একত্রিত হয়ে সেক্টর ফাইভের ওই অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিধান নগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিস। সেই সময় অফিসের মধ্যে ছিল দুজন তাঁদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, প্রায় ৩২ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে। এই কোম্পানির আড়ালে বড়সড় প্রতারণা চক্র কাজ করছে বলেই অনুমান। তবে শহর কলকাতায় একের পর এক আর্থিক তছরুপে আতঙ্কিত শহরবাসী।
বুধবার সল্টলেক (Saltlake) এফ-ই ব্লকের গেস্ট হাউস থেকে রনি দত্ত নামে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনায় বিধাননগর পুলিসের (Bidhannagar) হাতে গ্রেফতার দুই। জানা গিয়েছে, রনির সঙ্গে সেদিন গেস্ট হাউসের ঘরে ছিলেন এক যুবতী, তাঁকেই গ্রেফতার করেছে পুলিস। পাশাপাশি সেই যুবতীর ফেসবুক বন্ধু অরিজিৎ পাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। শনিবার দু'জনকেই আদালতে তোলা হয়েছে। আত্মহত্যার প্ররোচনা (Suicide Abetment) দেওয়ার অভিযোগে এই গ্রেফতার, এমনটাই জানিয়েছে পুলিস।
যদিও দুই অভিযুক্ত কেউই তাঁদের অপরাধ স্বীকার করেনি। অরিজিত জানান, আমি কিছু করিনি। সেদিন আমি গিয়েছিলাম ৫ থেকে ৭ মিনিট ছিলাম। সেদিন আমি শেষে গেস্ট হাউসে গিয়েছিলাম বলে আমাকে এরকম ভাবে করছে, আমি কিছু করিনি। ২০২০ থেকে আমার সঙ্গে মেয়েটির ফেসবুকে আলাপ। তারপর থেকে আমরা মাত্র দু-তিন বার দেখা করেছি।
অপর অভিযুক্ত তরুণীর দাবি, 'কেন সুইসাইড করলো, অরিজিত এসেছিল বলে? আমার সঙ্গে ওর কোন সম্পর্ক ছিল না। আমি হাত ভেঙে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। আমি জানিনা ও চলে যাওয়ার পরে কী হয়েছে?'
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বুধবার এফ-ই ব্লকের ওই গেস্ট হাউস থেকে থানায় ফোন আসে যে একটি রুমে চিৎকার-চেঁচামেচি হচ্ছে। এতে অন্য গেস্টে এবং স্থানীয়দের অসুবিধা হচ্ছে। পুলিস পৌঁছে দরজায় ধাক্কালে এক তরুণী বিবস্ত্র ও আহত অবস্থায় দরজা খোলেন। পুলিস ঘরে ঢুকে দেখে, গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে রনি দত্ত। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয় তাঁকে। অনুশীলাকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হ্বয়েছিল প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য। এরপরেই মৃতের পরিবার বিধান নগর দক্ষিণ থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করে।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে গেস্ট হাউসের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, ঘটনার দিন রাতে আরও এক যুবক এসেছিল রুমে। সেই যুবকের খোঁজ করতে গিয়ে জানা যায়, তিনি কোন্নগরের বাসিন্দা অরিজিৎ পাত্র। শুক্রবার তাঁকে থানায় ডেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস। অবশেষে রাতে গ্রেফতার করা হয় অরিজিৎকে। শনিবার সকালে হাসপাতাল থেকে ঘর থেকে উদ্ধার তরুণীকে থানায় নিয়ে এসে অরিজিতের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার তাঁকেও গ্রেফতার করে পুলিস।
দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিস জানতে পারে, রনি দত্ত অভিযুক্ত তরুণীকে ভালোবাসতেন। কিন্তু সেই তরুণীর তরফে তেমন কোনও সাড়াশব্দ ছিল না। বুধবার রাতে রনি, তরুণী এবং অরিজিৎকে আপত্তিজনক অবস্থায় দেখে ফেলে। সেটা তিনি মেনে নিতে পারেনি। এছাড়াও ওই দিন দু'জনে মিলে রনিকে অপমান করে, গালিগালাজ করে। সেই নিয়ে ব্যাপক চিৎকার-চেঁচামেচি হয়। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যা করেন রনি দত্ত।
এদিকে, যার নামে রুম বুকিং ছিল, সেই নির্ঝর চৌধুরীর এই ঘটনায় ভূমিকা কী, জানতে তাঁকে তলব করবে পুলিস। এমনটাই পুলিস সূত্রে খবর।
বুধবার মধ্যরাতে সল্টলেকের (Saltlake) FE-427 গেস্ট হাউস (Guest House) থেকে উদ্ধার যুবকের মৃতদেহ। একই ঘর থেকে উদ্ধার প্রায় অর্ধনগ্ন যুবতী। এই মৃত্যু ঘিরে একাধিক রহস্য। মৃত যুবকের গলায় ওড়নার ফাঁস এবং ওই যুবতীর গায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পেয়েছে বিধাননগর (Bidhannagar) দক্ষিণ থানার পুলিস। পুলিস সূত্রে খবর, বিধাননগর দক্ষিণ থানা অন্তর্গত FE-427 ব্লকের একটি গেস্ট হাউস থেকে বুধবার রাতে ফোন আসে। গেস্ট হাউসের একটি রুম থেকে প্রচণ্ড চিৎকার-চেঁচামেচি হচ্ছে, যার জন্যে আশেপাশের মানুষের সমস্যা হচ্ছে। এই অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিস।
পুলিস গিয়ে দরজায় ধাক্কা দিতেই ভিতর থেকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দরজা খুলে দেন ওই যুবতী। পুলিস ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায় গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো যুবকের নিথর দেহ পড়ে। তড়িঘড়ি দু'জনকেই উদ্ধার করে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা রনি দত্ত বলে ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, দু'মাস আগে ওই গেস্ট হাউসের এই রুমটি বুক করা হয় নির্ঝর চৌধুরী নামে। সেই সময় থেকেই এই রুমে পুরুলিয়ার বাসিন্দা রনি দত্ত এবং ওই যুবতী বসবাস করছিলেন। বুধবার এই দু'জনের মধ্যে বচসা হয় এবং মারধরের পর এই ঘটনা কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিস। যেহেতু যুবতী চিকিৎসাধীন, তাই এখনও তাঁর জবানবন্দি নিতে পারেনি তদন্তকারীরা। তবে নির্ঝর চৌধুরী উদ্ধার হওয়া যুবতীর দাদা। এমনটাই পুলিসকে জানিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
সল্টলেকের ওই গেস্ট হাউসের এক কর্মী জানান, রাত প্রায় ১২টা নাগাদ আমরা খবর পাই একটি ঘর থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি চলছে। উপরে গিয়ে দেখি এক ভদ্রমহিলা বলেন তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে দিতে। উনি নিজেই ভাইয়ের সঙ্গে কী কথা বলেছেন জানি না। বরং ভদ্র মহিলার ড্রাইভার এসেছিলেন। ইতিমধ্যে আমরা পুলিসকে খবর দিলে, ওরা কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে যান। ওরাই ঘরে ঢুকে ওই ভদ্রমহিলা এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে।
এদিকে, পুলিস আসার আগে ওই ঘরে গিয়েছিলেন এক ড্রাইভার। তাঁর ভূমিকা খতিয়ে দেখবে পুলিস। ইতিমধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। রহস্যময় ব্যক্তি ওই ড্রাইভার কেন পুলিস আসার আগে ঘটনাস্থল ছেড়েছেন? তদন্তে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। এমনটাই বিধাননগর পুলিস সূত্রে খবর।
বিদেশি নাগরিকদের টেক সাপোর্টের নাম করে প্রতারণা (fraud)। ভুয়ো কল সেন্টারে (Fake call center) হানা দিয়ে ১১ অভিযুক্তকে গ্রেফতার (arrest) করলো বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিস (police)। উদ্ধার একাধিক ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট। খাস কলকাতায় এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য।
পুলিস সূত্রে খবর, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের এসডিএফ বিল্ডিংয়ে একেএস কনসালটেন্সি নামের একটি ভুয়ো কল সেন্টার চালু করেছিল এই প্রতারকরা। সেই কল সেন্টার থেকে বিদেশি নাগরিকদের ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল ব্যবহার করে ফোন করা হত। এরপরই বিভিন্ন নামী সফটওয়্যার কোম্পানির কর্মী পরিচয় দিয়ে বিদেশি নাগরিকদের টেক সাপোর্ট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত প্রতারকরা। সেখান থেকে টেক সাপোর্টের নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত বলে পুলিস সূত্র জানিয়েছে। আরও জানা যায়, এই প্রক্রিয়ায় প্রায় লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা করেছে প্রতারকরা।
এই তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে সেই অফিসে হানা দেয় বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিস। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। অফিস থেকে ২০টির বেশি মোবাইল ফোন, ১০ টির বেশি কম্পিউটার সহ একাধিক ইলেকট্রনিক গ্যাজেট উদ্ধার করেছে পুলিস। শুক্রবার অভিযুক্তদের বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। পুলিস তাদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। পাশাপাশ এই চক্রের মূল পাণ্ডার খোঁজও চালাচ্ছে বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিস।
শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের (TET 2014 Job Aspirants) মধ্যরাতে জোর করে পুলিস বাসে তুলেছে বিধাননগর পুলিস (Bidhannagar Police)। ইতিমধ্যে পুলিসের 'অতি সক্রিয়তার' বিরুদ্ধে সরব হয়েছে শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সামাজিক মাধ্যমে সোচ্চার অপর্ণা সেন (Aparna Sen), সোহিনী সরকার, শ্রীলেখা মিত্ররা (Sreelekha Mitra)। এই পরিস্থিতিতে নিয়োগ জট কাটাতে সরকারকে আলোচনায় বসার আর্জি জানালেন বিদ্বজ্জনেরা (Intellectuals)। এমনকি মধ্যরাতে পুলিসি বলপ্রয়োগে আন্দোলন ভাঙার চেষ্টাকে ধিক্কার জানিয়েছেন অপর্ণা সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, বিনায়ক সেনরা।
তাঁরা লিখেছেন, 'সংবাদ মাধ্যমে আমরা দেখেছি যে অনশনরত চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য কীভাবে বিধাননগর পুলিশ বলপ্রয়োগ করে আন্দোলনকে ভাঙার চেষ্টা করেছে। এই ঘটনাকে আমরা ধিক্কার জানাই এবং পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে মনে করি। ১৪৪ ধারা বলবৎ করার আদেশ দিতে গিয়ে মাননীয় বিচারক মন্তব্য করেন, "পুলিশ কি পাওয়ার লেস?" এই মন্তব্য অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নাগরিক সুরক্ষার বিরোধী বলে মনে করি। অবিলম্বে সরকারকে আলোচনার মাধ্যমে এই জটিলতা কাটিয়ে ওঠার আবেদন জানাচ্ছি এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের যাতে না করা হয়, সে বিষয়ে দৃষ্টি দিতে অনুরোধ করছি।'
এই বিবৃতির নিচে সই করেন-- ডাক্তার বিনায়ক সেন, অপর্ণা সেন, ডাক্তার কুণাল সরকার, বিভাস চক্রবর্তী, সুমন মুখোপাধ্যায়, সুজন মুখোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, রেশমি সেন, কৌশিক সেন, ঋদ্ধি সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায় এবং দেবলীনা দত্ত।
৮৪ ঘণ্টার ধর্না তুলতে সময় লাগলো মাত্র ১৫ মিনিট। শুক্রবার মধ্যরাতে চ্যাংদোলা করে, টেনে-হিঁচড়ে ধর্নায় বসা চাকরিপ্রার্থীদের (TET 2014) ভ্যানে তোলে বিধান নগর পুলিস (Bidhannagar Police)। যদিও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই মাইকিং শুরু করে পুলিস। ১৪৪ ধারা জারি থাকা জায়গা থেকে সরে যেতে চাকরিপ্রার্থীদের হুঁশিয়ারি দেয় বিধান নগর কমিশনারেট। সেদিন দুপুরেই হাইকোর্ট (Calcutta High Court) নির্দেশ দিয়েছিল, ১৪৪ ধারা কার্যকর রাখতে পদক্ষেপ নেবে পুলিস। পাশাপাশি পর্ষদ অফিসে যাতে কর্মীদের ঢুকতে এবং বেরোতে অসুবিধা না হয় নিশ্চিত করবে পুলিস।
যদিও ধর্না সরানো নিয়ে টুঁ শব্দ করেনি আদালত। তারপরেই কোর্ট নির্দেশকে হাতিয়ার করে আসরে নামে বিধান নগর কমিশনারেট। বিকেলের পর থেকে করুণাময়ী এবং এপিসি ভবনের মাঝে বাড়তে থাকে পুলিস। শুরু হয় মাইকিং। ইতিমধ্যেই সন্ধ্যা বাড়লে একের পর এক অনশনকারী অসুস্থ হতে শুরু করে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে সরলেও অনেকেই সহযোদ্ধাদের পাশে থাকতে অসুস্থ শরীরেই ধর্নাস্থলে থেকে যান। ক্রমেই রাত বাড়ে। আন্দোলনের ধারা পরিবর্তন করেন চাকরিপ্রার্থীরা।
অবশেষে রাত ১২টার পর সক্রিয় হয় পুলিস। প্রথমে ধর্নাস্থল ছাড়তে দু'মিনিট সময় দেওয়া হয় চাকরিপ্রার্থীদের। সেই আবেদনে কাজ না হওয়ায় ধর্নাস্থলে ঢুকে বল প্রয়োগ শুরু করে পুলিস। প্রায় ৫০ ঘণ্টার বেশি সময় অনশনে থাকা ক্লান্ত-শ্রান্ত চাকরিপ্রার্থীদের টেনেহিঁচড়ে-চ্যাংদোলা করে পুলিসের বাসে তুলে বিধান নগরের তিন থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, এসব চাকরিপ্রার্থীরা ফের ফিরে যাবেন মাতঙ্গিনী হাজরার পাদদেশে। সেখানেই অবস্থান মঞ্চে কালো ব্যাজ করে বিক্ষোভ দেখাবেন চাকরিপ্রার্থীরা। একইসঙ্গে পুলিসের এই হামলার প্রতিবাদে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে এই ধর্নায় নেতৃত্ব দেওয়া তিন চাকরিপ্রার্থীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
সংবাদ মাধ্যমের সামনে এই অভিযোগ করেন তাঁদের সহকর্মীরা। যদিও বৃহস্পতিবার রাতেই ঘোষণা হয়েছে, 'শান্তিপূর্ণ অনশনে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের বল প্রয়োগ করে পুলিসি বাসে তোলার প্রতিবাদে শুক্রবার থেকেই আন্দোলনে নামছে বাম-বিজেপি-কংগ্রেস।' বড়সড় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে করুণাময়ী, শিয়ালদহ এবং হাওড়ায় মোতায়েন হয়েছে অতিরিক্ত পুলিস।