তৃণমূল নেতামন্ত্রীদের অস্বাভাবিক সম্পত্তিবৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার ইতিমধ্যে হাইকোর্টে শুনানি চলছে। সেই মামলায় ইডিকে পার্টি হতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও এই নির্দেশের বিরোধিতা করে পাল্টা আবেদন করেছেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী। এই টানাপোড়েনে এবার বিরোধী দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের। সেখানেও শুভেন্দু অধিকারী-সহ মহম্মদ সেলিম, আব্দুল মান্নানের সম্পত্তিবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
শাসক পক্ষের ১৯ নেতামন্ত্রীর সম্পত্তি নিয়ে যখন জলঘোলা, তখন বিরোধী পক্ষের ১৭ নেতার সম্পত্তিবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। এই মামলায় বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের একাধিক নেতার নামোল্লেখ রয়েছে। শুভেন্দু-সহ শিশির অধিকারী, দিব্যেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, সৌমিত্র খাঁ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান-সহ প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য এবং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের নাম রয়েছে।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা দায়ের হয়েছে। আগামি সপ্তাহেই শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা।
এদিকে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে রাজ্যের অন্তত ১৯ জন জনপ্রতিনিধির সম্পত্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। হাইকোর্টে দায়ের করা মামলায় ১৯ জনের তালিকা জমা পড়ে। তাতে নাম রয়েছে ফিরহাদ হাকিম, অরূপ রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এমনকী অমিত মিত্রর মতো মন্ত্রীদের। সম্পত্তি অর্থাৎ আর্থিক বিষয়ে মামলা বলে গত ৮ আগস্ট ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।
নেতাদের সম্পত্তি কীভাবে ক্রমশ ফুলেফেঁপে উঠছে, সেই প্রশ্ন তুলে সেই মামলায় ইডিকে পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবার নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আবেদন রাজ্যের তিন মন্ত্রীর। মন্ত্রীরা হলেন, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ রায়, ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আবেদনকারী মন্ত্রীদের দাবি, এই মামলার বিচার লোক আয়োগে হওয়া উচিত।
তৃণমূল (TMC) সমালোচকদের চামড়া দিয়ে জুতো বানানো হবে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের (Sougata Ray) সাম্প্রতিক এই মন্তব্যে শোরগোল তুঙ্গে। এই আবহে এবার প্রবীণ সাংসদকে পাল্টা দিলেন বিজেপির (BJP) দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে (Durgapur) এক চা চক্রে বিজেপি সাংসদ বলেন, 'সৌগত রায়কে জুতোপেটা করা উচিৎ। একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধ, যিনি কিনা অধ্যাপক, এটা তাঁর মুখের ভাষা। পিঠের চামড়া দিয়ে জুতো বানাবে! পিছনে কুকুর তাড়া করলে যিনি দৌড়তে গেলে পড়ে যাবেন, তিনি এসব কুকথা বলছেন। আবার আমার সমালোচনা করে বলে দেখ দিলীপ ঘোষ কুকথা বলে। এঁদেরকে কী পুজো করা উচিৎ?'
আজ দুর্গাপুরে প্রাতঃভ্রমণে বেরোন বিজেপির সহ-সভাপতি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। নিউটাউনশিপ থানার অন্তর্গত এমএএমসি টাউনশিপে প্রথম যান তিনি। কথা বলেন
স্থানীয় প্রাতঃভ্রমনকারীদের সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে সেলফি তোলার আবদারও রাখেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর আবেদন, তৃণমূলকে ভোট দেবেন না, এরা বিশ্বাসের মর্যাদা দেয় না। পাশাপাশি আয়জিত চা চক্রে সাম্প্রতিক ইস্যুতে শাসক দলকে তুলোধোনা করলেন বিজেপির মেদিনীপুরের সাংসদ।
গ্রাম পঞ্চায়েতে (Panchayet) সংখ্যাগরিষ্ঠ (Majority) হয়ে বোর্ড গঠন করল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। অথচ প্রধান হলেন বিজেপির (BJP)। উপপ্রধান ঘাসফুলের! সংরক্ষণের (Reservation) গেড়োয় এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে উত্তরবঙ্গে।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ইতিহাসে এমনই রোমাঞ্চকর ঘটনার সাক্ষী থাকল খড়িবাড়ির বিন্নাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত। ১৩ আসন বিশিষ্ট বিন্নাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ৯টি এবং বিজেপি ৪টি আসন পায়। তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও প্রধান পদটি তফশিলি উপজাতির জন্য সংরক্ষিত থাকায় বেকায়দায় পড়ে শাসকদল। কারণ, তাদের এমন কোনও সদস্যই নেই। গত ২৫ জুলাই বোর্ড গঠনের প্রথম সভায় বিজেপি এলেও সেদিন তৃণমূল সদস্যরা উপস্থিত না থাকায় সভা বাতিল হয়। নতুন করে আজ (বুধবার) বোর্ড গঠনের সভা ডাকা হয়।
নির্বাচনে বিজেপির দুই তফশিলি উপজাতি প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। অবশেষে সংরক্ষণের গেরোয় প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপির আলাকসু লাকড়া। সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল কংগ্রেসের উপপ্রধান হন প্রমোদ প্রসাদ। গ্রাম পঞ্চায়েতে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পুলিস। পাশাপাশি ১৪৪ ধারা জারি করা হয় পঞ্চায়েত অফিস এলাকায়।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ইতিহাসে প্রথমবার বিজেপির প্রধান হওয়ায় এদিন উল্লাস দেখা যায় বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। জেলা সভাপতি আনন্দময় বর্মণ বলেন, আমাদের দুই তপশিলি উপজাতির জয়ী সদস্যদের ভয় দেখিয়ে লোভ দেখিয়ে তৃণমূল দলে টানতে চেয়েছিল, তা আমরা হতে দিইনি। নবনির্বাচিত প্রধান আলাকসু বলেন, মানুষের জন্য কাজ করব।
প্রসূন গুপ্ত: ২০১৯-এর ভোটে বাজপেয়ী বা আদবানি ঘনিষ্ঠ অনেকে বিজেপির টিকিট পায়নি। বয়সের কারণে বাদ দেওয়া হয়েছিল লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং মুরলী মনোহর জোশীর মতো নেতাদের। প্রার্থী ছিলেন না যশবন্ত সিনহা, শত্রুঘ্ন সিনহা-সহ অনেকেই। তাৎপর্যের বিষয় এই যে এঁরা সকলেই বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। এদের কেউ কেউ রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছিলেন, কেউ আবার কংগ্রেস বা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। শত্রুঘ্ন তো সম্প্রতি ফের লোকসভা সদস্য হয়েছেন তৃণমূলের টিকিটে।
এই ব্যতীত বিজেপির সংসদীয় বোর্ড আছে নীতি নির্ধারক কমিটি। যার সদস্যরা প্রবল ক্ষমতাবান এবং দলের সংগঠনের পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকে। ১১ জন সদস্য সারা ভারত থেকে এই দায়িত্বে।
সদ্য গঠিত বোর্ড দেখলেই বোঝা যাবে আসন্ন ২০২৪-এর নির্বাচনকে মাথায় রেখে মূলত মোদী, অমিত শাহ ঘনিষ্ঠরাই দায়িত্বে এলেন। নতুন কমিটির প্রায় সবাই রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের নেতা। কিন্তু এই সংসদীয় কমিটি আরএসএস-র নির্দেশে হয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া গেলো না। এই কমিতিতে জায়গা পায়নি যোগী আদিত্যনাথ।
তবে বাদ গিয়েছেন জাতীয় রাজনীতির মামা অর্থাৎ দীর্ঘদিনের মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। শিবরাজ বরাবর আদবানি ঘনিষ্ঠ হিসেবে গেরুয়া শিবিরে পরিচিত। সবাইকে চমকে দিয়ে বাদ গিয়েছেন বাজপেয়ী-আদবানি ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি নীতিন গডকড়িও।
নীতিন গডকড়ির বাদ যাওয়া সম্ভাব্য ছিল, কিন্তু যোগী? জানা গিয়েছে, গুণগানে তিনি কোনও দিনই মোদীর পছন্দের নয়। পছন্দের নয় অমিত শাহেরও। অথচ শোনা যাচ্ছিলো মোদীর পর নাকি যোগীই বিজেপির মুখ। সেই রাস্তাটাই কি এবার তবে বন্ধ করে দেওয়া হলো? মোদীর উত্তরসূরি হিসেবে খুলে গেলো অমিত শাহের সম্ভাবনা? অন্যদিকে কমিটিতে এলেন কর্ণাটকের বিতর্কিত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়াদুরাপ্পা। এ ছাড়া যাঁরাই এসেছেন তাঁরা মোদী ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ব্যতিক্রম শুধু রাজনাথ সিং। বাজপেয়ীর স্নেহধন্য রাজনাথ রয়ে গেলেন, তবে তা কতদিনের জন্য তার উত্তর পাওয়া যাবে ২০২৪ এর টিকিট তাঁর ভাগ্যে আছে কিনা দেখার পর।
নবান্ন অভিযানের (Nabanna Abhijan) দিন বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ঝাণ্ডার সঙ্গে ডাণ্ডা বহনের আবেদন করেছেন দলের সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। যদিও তাঁর এই আবেদন ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির (BJP) সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের যুক্তি, 'নবান্ন অভিযানের দিন পুলিস জল কামান ছুঁড়বে সেই কামানের মাঝে আমাদের পতাকা সোজা করে ধরে রাখতে ডাণ্ডা দরকার।'
বারাসাতের এক রক্তদান শিবিরে থেকে বিজেপি সাংসদ বলেন, 'তৃণমূল নেতারা আমাদের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ চুরি করছে। তার বিরুদ্ধে নবান্ন অভিযান হবে। সেখানে ঝাণ্ডা নেবেন, ঝাণ্ডার সাথে ডাণ্ডাও নেবেন।' এরই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সুকান্ত জানান, নবান্ন অভিযানে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়বে, জলকামান চালাবে। সেখানে আমাদের আমাদের পতাকা শক্ত করে ধরে থাকতে হবে এবং তার জন্য ডাণ্ডাই লাগবে।' হিংসার বদলে হিংসার রাজনীতি ভারতীয় জনতা পার্টি সমর্থন করে না। আমরা সংবিধানে বিশ্বাসী।
পাশাপাশি তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য, 'আমাদের কর্মীদের গায়ে হাত দিয়ে যদি ভাবেন বেঁচে যাবেন তবে ভুল। আজ না হয় কাল আপনাদের কীভাবে ট্রিটমেন্ট করতে হয় তার ব্যবস্থা করব।' এদিন বাইক র্যালির মাধ্যমে মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসাত ডাকবাংলো মোড় হয়ে সেই রক্তদান শিবিরে অংশ নিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি।
এদিকে, সুকান্ত মজুমদারের এই হুঁশিয়ারিকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'গণআন্দোলন কাকে বলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাম জমানায় শান্তিপূর্ণ ভাবে করে দেখিয়ে দিয়েছেন। আর এই যে ঝাণ্ডার সঙ্গে ডাণ্ডার তুলনা টেনে হিংসা, সন্ত্রাসে প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে। এই মন্তব্য প্ররোচনামূলক।'
দলনেত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে রাজ্যব্যাপী তৃণমূল পালন করছে খেলা হবে দিবস (Khela Hobe Diwas)। মঙ্গলবার দুটি পৃথক মিছিল (TMC Rally) বের হয়েছিল মানিকতলা এবং সল্টলেকে। মানিকতলার মিছিলে দেখা গিয়েছে অভিনব প্রতিবাদ। এক ব্যক্তিকে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) সাজিয়ে মিছিলে হাঁটানো হয়। সেই ব্যক্তির দেহ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল ফ্লেক্স। যাতে লেখা, 'আমি শুভেন্দু অধিকারী আমি চোর।' এই প্রতিবাদ বিষয়ে তৃণমূলের এক নেতা বলেন,'আমরা আজ কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে, মমতা সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের পক্ষে সোচ্চার হতে পথে নেমেছি।'
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জুজু দেখিয়ে রাজ্যের উন্নয়ন স্তব্ধ করে দেওয়া যাবে না। নারদা-কাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারীর নামে এফআইআর আছে, সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার নাম আছে। তারপরেও ইডি এবং সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই মিছিলের অন্যতম আয়োজক সেই তৃণমূল নেতার দাবি, 'শীত গ্রীষ্ম বর্ষা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ভরসা।'
এই মিছিলের সমালোচনায় সরব বিজেপি। দলের সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'যারা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন, তাদের মুখে দড়ি পরিয়ে সিবিআই গামছা বেঁধে জেলে নিয়ে যাবে। এঁরা প্রত্যেকেই জেলে যাবেন। খেলা হবে দিবসের নামে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি চেষ্টা করছে। নিজেদের দুর্নীতি থেকে মুখ ঘোরাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এঁদের রাস্তায় নামিয়েছে।'
মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে পালিত হচ্ছে খেলা দিবস (Khela Hobe Diwas)। রবিবার বেহালার সভামঞ্চ থেকে এই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। এবার এই 'খেলা হবে' দিবসে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি (BJP)। ফের রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার মতো পরিবেশ তৈরি হতে পারে। এদিন রাজ ভবনের (Raj Bhawan) সামনে দাঁড়িয়ে আশঙ্কাপ্রকাশ করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, 'বিজেপিও ভালো খেলতে পারে। কিন্তু আমাদের খেলার মতো মাঠ তৈরি করে দিন, আমরা ভালোই ব্যাটিং করব। শুধু মাঠ থেকে পুলিসকে সরিয়ে দিন। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপর মিথ্যা মামলা চাপানো বন্ধ করুন।'
পাশাপাশি তাঁর আশঙ্কা, 'সাম্প্রতিককালে শাসক দলের একের পর এক নেতামন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তাতে সামগ্রিকভাবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলায় প্রভাব পড়তে পারে। ১৬ অগাস্ট ১৯৪৬ সালে কুখ্যাত গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং সংগঠিত হয়েছিল। আর ১৬ অগাস্ট মুখ্যমন্ত্রী খেলা হবে দিবসের ডাক দিয়েছেন। অর্থাৎ বিরোধীদের উপর হামলায় ইন্ধন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যে ভাষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন, আমরা সেটাও রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।'
বিজেপির এই রাজ ভবন সফরকে পাল্টা কটাক্ষের সুরে বিঁধেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, 'যারা উন্নয়নের পরিবেশে বেড়ে ওঠে না, যাদের কোনও জনভিত্তি নেই, যারা মানুষের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত, তাঁরাই অন্য কোনওভাবে না পেরে শান্ত বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ তৈরি চেষ্টা করছে। তারা জেনে রাখুক বাংলায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা আছে। তাই শান্ত বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করলে প্রশাসন তাদের মতো করেই ব্যবস্থা নেবে।'
পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, 'সন্ত্রাসের রাজনীতিকে হাতিয়ার করে বাংলা দখলের চেষ্টা করেছিল বিজেপি। কিন্তু মানুষ প্রত্যাখ্যাত করেছে। তাই আগামি দিনে ওরা হিংসার আশ্রয় নিলে বাংলার মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।'
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বেহালায় তৃণমূলের অনুষ্ঠানে ঘুরিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই অবস্থানকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছে বিরোধী দলগুলো। একযোগে আক্রমণ করেছে বিজেপি-কংগ্রেস। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'তৃণমূলের নৌকা ডুবতে চলেছে। মানুষ বুঝতে পারছে তৃণমূল চোরদের দল। অনুব্রত মণ্ডল সাংসদ, বিধায়ক না হয়েও মেডিক্যাল কলেজের মালিক। এমনটা শোনা যাচ্ছে। চুরি না করলে এমনটা কী করে হয়? আগে শুনতাম চোরের মায়ের বড় গলা, এখন চোরের দিদির বড় গলা।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, ঝাড়খণ্ডে বিধায়ক কেনবেচা বাংলার পুলিস আটকেছে। এদিন সেই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের পাল্টা, 'উনি এ রাজ্যে বিজেপির বিধায়ক চুরি করে পিএসির চেয়ারম্যান করেছে। আরও অনেক বিরোধী বিধায়ককে কিনেছেন।'
একই সুর শোনা গিয়েছে সিপিএম-র গলায়। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'বেহালার যিনি বিধায়ক আগে জেলে গিয়েছেন। বেহালায় বসে তিনি অনুব্রতর কথাই বলে গেলেন। অনুব্রত মণ্ডল কেন এমএলএ, এমপি না, সেটা দলনেত্রীর বিষয়। উনি যা বলেছেন তার কোনও ব্যাখ্যা বা যুক্তি নেই। যেহেতু অনুব্রতর কাছে মধুভান্ড আছে, তাই বেহালায় দাঁড়িয়ে অনুব্রতর কথা বলে গেলেন। আসলে ভয় পেয়ে হালুম করলেন।'
এদিন বেহালার জনসভায় মমতার প্রশ্ন, 'কেষ্ট কী করেছিল? ওকে ধরলে কেন? একটা কেষ্টকে জেলে পুরলে হাজার কেষ্ট তৈরি হবে। কেষ্টরা এজেন্সিকে ভয় পায় না। প্রতি ভোটে ওকে নজরবন্দি করে রাখে।'
শুক্রবার রাতে তুফানগঞ্জ বিধানসভার অন্তর্গত শালবাড়ি দু'নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিস (Panchayet Office) খোলা ছিল রাতেও। রাতে পঞ্চায়েত অফিস খোলা কেন? তা নিয়ে যথারীতি রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো বিরোধীরা তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ (Agitation) দেখালেন।
অন্যদিকে, এই ঘটনায় গতকাল গভীর রাতে শালবাড়ি থেকে তিনজন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে আনে বক্সিরহাট থানার পুলিস। এর বিরুদ্ধে বক্সিরহাট থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। উপস্থিত ছিলেন কোচবিহারের বিজেপির সমস্ত বিধায়ক (BJP MLA)।বিধায়কদের দাবি, গতকাল যে সমস্ত বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা কোনও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেনি। মিথ্যা অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বক্সিরহাট থানার ওসি তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়ে তৃণমূলেরই অঙ্গুলি হেলনে এই সমস্ত কাজ করছেন।
অন্যদিকে, তৃণমূলের অভিযোগ, সরকারি কর্মীদের কাজ করা নিয়ে বিজেপির চার বিধায়ক যা করলেন, তাতে তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সরকারের জনহিতকর প্রকল্পের সংখ্যা বেড়েছে। তাই সরকারি অফিসে কাজও বেড়েছে। সেইসব কাজ অনেক সময় ৮ ঘণ্টা ডিউটি আওয়ার্স-এর মধ্যে করা সম্ভব নয়। তাই কর্মীরা বেশি সময় কাজ করছেন। কিন্তু বিজেপি অযথা বিক্ষোভ দেখিয়ে সব পণ্ড করে দিচ্ছে।
এবার বিতর্কে বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA)। শুক্রবার একটি জনসভায় যোগ দেন বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা (Amarnath Sakha)। সেখানে তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে কটাক্ষের সুরে বলেন, "কেউ চাকরির (job) জন্য তৃণমূল নেতাদের (trinamul leader) টাকা দিয়েছেন, কেউ আবার সরকারি বাড়ি পাওয়ার জন্য তৃণমূল নেতাদের টাকা দিয়েছেন। যারা টাকা নিয়েছে তাদের টুঁটি টিপে টাকাটা আদায় করুন। নাহলে গয়ারাম নেতারা পালিয়ে যাবে। অনেকেই বাইরে জায়গা কিনে নিয়েছে। তারা পালিয়ে যাবে।" বিজেপি বিধায়কের এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই পারদ চড়তে শুরু করেছে বাঁকুড়ার (Bankura) রাজনৈতিক মহলে।
জানা যায়, বাঁকুড়ার ওন্দা বিধানসভার জামজুড়ি গ্রামে একটি সভায় বক্তব্য রাখেন ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা। সেখানে দলীয় কর্মী ও এলাকার বাসিন্দাদের এমন নিদান দেন বিধায়ক। তাঁর সেই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তাঁর এমন বক্তব্যে তৃণমূলের দাবি, উস্কানিমূলক এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিজেপি বিধায়ক আসলে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এরপর এলাকায় কোনও অশান্তি হলে তার দায় বিধায়কের।
তৃণমূলের এই বক্তব্যকে অবশ্য বিধায়ক বিশেষ একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর দাবি, তাঁর ওই বক্তব্য ছিল দুর্নীতিগ্রস্থ তৃণমূল নেতাদের জন্য। তৃণমূলের উপর থেকে নিচ সকলেই চোর। সেই চোর নেতাদের কাছ থেকেই দেওয়া টাকা আদায়ের কথা নিজের বক্তব্যে তুলে ধরা হয়েছেন তিনি।
"বোম (bomb) ফাটিয়ে বিজয় উল্লাস করা বিজেপি (BJP) কর্মীদের এক মিনিটে শায়েস্তা করতে পারি। আমাদের লাখো অনুব্রত তৈরি রয়েছে।"- বিতর্কিত মন্তব্য আউশগ্রাম দু নম্বর ব্লকের তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অরূপ মিদ্দার (Arup Middya)। তাঁর এমন মন্তব্যে তোলপাড় বর্ধমানের (Burdwan) রাজনৈতিক মহল। একটি দলীয় সভায় তিনি বলেন, "ফের খেলা হবে বিজেপির সঙ্গে, খেলা হবে সিপিএমের (CPIM) সঙ্গে এবং যারা আমাদের সঙ্গে থেকে বেইমানি করছে তাদের বিরুদ্ধেও খেলা হবে।"
তিনি আরও বলেন, "এখানে আমরা সিপিএমের বিরুদ্ধে খেলবো, বিজেপির বিরুদ্ধে খেলবো। আমাদের মধ্যে থেকে যারা আমাদের সঙ্গে বেইমানি করছেন, তাদের সঙ্গেও খেলব। গতকাল খবর পেয়েছি ভালকি এলাকায় বোম ফাটানো হয়েছে রাত্রি সাড়ে আটটা পর্যন্ত। আমি পুলিসকে বলে দিয়েছি সরকারটা এখনও তৃণমূল কংগ্রেসের আছে। আমি যদি আমার ছেলেদের বলে দিই তাহলে ওদেরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিজেপি যে কটা করছে, খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু আমাদের ব্লক সভাপতি থেকে এমএলএ সবাই বলেছেন শান্ত থাকতে, তাই এই সময় আমাদের শান্ত থাকতে হবে। আমাদের নেতাকে ধরে ওরা যদি মনে করে থাকে আমাদের সংগঠনকে শেষ করে দেবে, অত সোজা নয়। উনি যে বীজ বপন করে গিয়েছেন, আমাদের প্রত্যেকটি নেতারা সবাই নিজেরা অনুব্রত মণ্ডল তৈরি হয়ে আছে। আমাদের ভয় পাবার কিছু নেই। এলাকায় লাখো লাখো অনুব্রত মণ্ডল আছে।"
তবে এখানেই থামেননি তিনি, আরও জানান, "গতকাল বোলপুরে যে খেলা খেলেছে, সেটা গোটা ভারতবর্ষের বুকে কলঙ্ক। একটা অসুস্থ লোককে ধরতে ৪৭ টা গাড়ি নিয়ে
গিয়েছে। এটা গণতন্ত্রের লজ্জা। এটা বিজেপির লজ্জা। গরু ডানা গজিয়ে যায়নি। তুমি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তুমি সেনাবাহিনী, বিএসএফের হেড। তাহলে তুমি কী করছিলে? তোমাকে প্রথমে অ্যারেস্ট করতে হবে। কারণ, গরু পাচার যদি হয়ে থাকে তাহলে আমার নেতারা করেনি, তুমি করেছ। সেটা মিথ্যে করে আমার নেতাদের ঘাড়ে চাপাতে চাইছে।"
তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতির এমন বক্তব্যে শোরগোল পড়েছে এলাকায়। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র জানান, "তৃণমূল তো চোর, তোলাবাজদের দল, তা অরূপ মিদ্দার কথাতেই প্রমান হচ্ছে। কী খেলা হচ্ছে তা মানুষ দেখছে।"
পূর্ব ঘোষণা মতো সেপ্টেম্বরে নবান্ন অভিযানের ডাক বিজেপির। ৭ সেপ্টেম্বর বঙ্গ বিজেপির তরফে এই কর্মসূচি ডাকা হয়েছে। এই কর্মসূচি সফল করতে সমাজের সবস্তরকে যোগ দিতে আহ্বান জানান বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর আবেদন, 'মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে এই লড়াই। তাই সাধারণ নাগরিক কোনও দল করে না কিন্তু প্রসাশনিক বঞ্চনার স্বীকার, চাকরিপ্রার্থী যারা দীর্ঘদিন অবস্থান করছেন, প্রকৃত বুদ্ধিজীবী, যাদের মেধা পয়সার কাছে বিক্রি হয় না। এঁরা সবাই এই কর্মসূচিতে যোগ দিন'।
এদিন সুকান্ত মজুমদার একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন। অনুব্রতর গ্রেফতারি থেকে রাজ্যের তিন মন্ত্রীর হাইকোর্টে দ্বারস্থ হওয়া। এই জাতীয় নানা ইস্যুতে সরব ছিলেন তিনি। এদিন রাজ্যের তিন মন্ত্রী হাইকোর্টে আবেদন করেছে, সম্পত্তিবৃদ্ধি সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামালায় যাতে ইডিকে যুক্ত না করা হয়।
এই পদক্ষেপকে খোঁচা দিয়ে বিজেপি সাংসদ বলেন, 'এটা খানিকটা ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি মতো। এতদিন আমরা টাকার পাহাড় দেখেছি। এবার টাকার এভারেস্ট দেখবো। তাই যেসব মন্ত্রীদের সম্পত্তিবৃদ্ধি পেয়েছে তাঁরাই আদালতে গিয়েছিলেন।'
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে (Raiganj University) সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার (BJP) আন্দোলন ঘিরে ধুন্ধুমার রায়গঞ্জে (Raiganj)। শুক্রবার প্রতিবাদ মিছিলে বের হলে মাঝপথেই মিছিল আটকায় পুলিস (Police)। এরপরই পুলিসের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়।
জানা যায়, এদিন প্রথমে রায়গঞ্জের বিদ্রোহী মোড়ে পুলিসের তরফে মিছিল আটকানো হয়। সেখানেই ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিসের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। রাস্তার ওপর বিজেপির কর্মীরা বসে পড়েন। ফলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় ওই এলাকায়। কিছুক্ষণ পরই সেখানে উপস্থিত হন রায়গঞ্জ লোকসভার সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। এরপর তাঁর নেতৃত্বে মিছিল এগোতে থাকলে সেই মিছিল ফের আটকায় পুলিস। কিন্তু নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের ফলে একসময় পুলিস পিছু হটে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংসদ জানান, "রাজ্যজুড়ে একের পর এক তৃণমূল নেতৃত্ব গ্রেফতার হওয়া শুরু হয়েছে। রাজ্যে সমস্ত চাকরির ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগ থেকে পিএইচডি, বিল্ডিং তৈরি থেকে সর্বত্র দুর্নীতি হয়েছে। তাই এদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা যারা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের কেউ পার পাবেন না। আমরা চাই অতি দ্রুত কেন্দ্রীয় সংস্থা রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্ত করতে আসুক।"
শেষরক্ষা হল না। অবশেষে গ্রেফতার হলেন অনুব্রত মণ্ডল। নকুলদানা, গুড় বাতাসা, চড়াম চড়াম ঢাক- এমন সব ডায়লগে একটা সময় ভোটের বাজার গরম করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর সেই সব ডায়লগ নিয়ে বাজার গরমের পাশাপাশি বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। আজ সেই নেতা সিবিআইয়ের জালে।
তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় উল্লাস বিজেপির। আসানসোল কোর্ট মোড়ে অনুব্রতর গ্রেফতারিতে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল সহ অন্যান্য কর্মী-সমর্থকরা নকুল দানা বিতরণ করলেন পথচলতি মানুষ ও বাসযাত্রীদের। পাশাপাশি শাসকদলকে নিশানা করেন বিজেপি নেত্রী।
বর্ধমানের কার্জন গেটেও উল্লাস বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির খবর সামনে আসতেই ঢাক ঢোল পিটিয়ে বিজয় উল্লাসে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। বিজেপির বর্ধমান জেলা যুব মোর্চার সভাপতি পিন্টু সামের নেতৃত্বে কার্জন গেট চত্বরে ঢাক বাজিয়ে বিজয় উল্লাস। পথ চলতি সাধারণ মানুষকে করানো হল মিষ্টিমুখ। দেওয়া হল গুড়, বাতাসা ও নকুলদানা।
অনুব্রতর গ্রেফতারে খুশির হাওয়া বাঁকুড়ার পুয়াবাগানে। সেখানে বাজল চড়াম চড়াম ঢাক। বিলি করা হল গুড় বাতাসা, নকুলদানা। বৃহঃস্পতিবার সকালেই বীরভূমের বাহুবলি তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি ঘিরে ফেলে সিবিআই ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। এরপরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পথচলতি মানুষ থেকে স্থানীয় দোকানদারদের বিলি করা হল গুড়বাতাসা ও নকুলদানা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা কেশিয়ারি মোড়ে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর রাস্তায় আসা সাধারণ মানুষজনদের নকুলদানা এবং বাতাসা খাওয়ালেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। এদিন পা্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা স্লোগান দিতে থাকেন চোর চোর বলে।
অনুব্রতর গ্রেফতারিতে উৎসবের আমেজ গেরুয়া শিবিরে। গুড় বাতাসা, নকুলদানা বিলি করে মেদিনীপুর শহরের রিং রোডে উৎসব পালন জেলা বিজেপি নেতৃত্বের। কেষ্টর গ্রেফতারির খুশিতে মেদিনীপুর পৌরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যানকেও গুড় বাতাসা খাওয়ালেন বিজেপি কর্মীরা। একসময় গুড় বাতাসা আর নকুলদানার নিদান দিয়েছিলেন খোদ অনুব্রত মণ্ডল। রীতিমতো গুড় বাতাসা বিলি করে উৎসবে মাতলেন বিজেপি কর্মীরা। শুধু গুড় বাতাসাই নয় সঙ্গে রয়েছে নকুলদানাও। এদিনের এই কর্মসূচি থেকে শাসকশিবিরকে কড়া ভাষায় নিশানাও করেন বিজেপি নেতা কর্মীরা।
পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অষ্টমবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী (Bihar CM) হিসেবে শপথ নিলেন নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। আর তাঁর ডেপুটি হিসেবে শপথ নিলেন তেজস্বী যাদব (Tejaswi Yadav)। বুধবার দুপুরে রাজ ভবনে আধ ঘণ্টার অনুষ্ঠানে এই দু'জনকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল ফাগু চৌহান। মঙ্গলবারই আরজেডি, কংগ্রেস (RJD-Congress)-সহ অন্য দলের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ার দাবি জানাতে রাজ ভবনে গিয়েছিলেন নীতীশ-তেজস্বী।
সেই সাক্ষাৎ শেষে বেড়িয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে নীতীশ কুমার দাবি করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে ১৬৪ বিধায়কের সমর্থন আছে। বুধবারই শপথ নেবে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। সেই ঘোষণা মোতাবেক এদিন দুপুর দুটো নাগাদ রাজ ভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী এবং উপমুখ্যমন্ত্রী এদিন শপথ নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, প্রথমবার ২০০০ সালে এনডিএ শরিক হিসেবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। লালুপ্রসাদ যাদবের দাপট কমিয়ে সেবার প্রথম যাদব পরিবারের বাইরে থেকে মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছিল বিহার। তারপর ২০১৫ অবধি পরপর মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন বিহারের এই কুর্মি নেতা।
যদিও ২০১৫-তে আরজেডি কংগ্রেসের সঙ্গে গড়া জোট সরকার মাত্র দুই বছর স্থায়ী হয়েছিল। সেই মহাজোট ভেঙে বেড়িয়ে ফের বিজেপির হাত ধরে নীতীশ। ২০১৭ সালে ফের একবার এনডিএ শরিক হিসেবে মাজপথেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন তিনি। ২০২০-র বিধানসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েই লড়েন নীতীশ। যদিও রাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে জেডিইউ।
তাও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নীতীশ কুমারকেও সমর্থন করে বিজেপি। কিন্তু দুই বছর বাদে ফের ডিগবাজি নীতীশের। এবার আবার মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অষ্টমবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন তিনি।