ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের (Hemant Soren) বিধায়কপদ খারিজের সুপারিশ রাজ ভবনে পাঠিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন (ECI)। রাজ ভবন সূত্রে এই তথ্যই দেওয়া হয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলোকে। অফিস অফ প্রফিট (Office of profit issue) বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রিত্ব (Jharkhand CM) খোয়াতে পারেন হেমন্ত সোরেন। এই সম্ভাবনা ঘিরেই এখন তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী হয়েও ঝাড়খণ্ডের এক খনির লিজ হেমন্ত সোরেনের নামে রয়েছে। এই অভিযোগ করে রাজ্যপালের কাছে দরবার করেছিল বিজেপি। সেই অভিযোগের গুরুত্ব বিচার করে নির্বাচন কমিশনের কাছে সুপারিশ চেয়ে পাঠান ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল রমেশ বৈশ্য। মুখবন্ধ খামে নাকি সেই সুপারিশপত্র এসে পৌঁছেছে ঝাড়খণ্ড রাজ ভবনে।
যদিও সরকারি ভাবে এখনও কোনও ঘোষণা রাজ ভবনের তরফে করা হয়নি। কিন্তু সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিধায়কদের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে রাঁচি পৌঁছতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর বিবৃতিতে জানিয়েছে, একাধিক সংবাদ মাধ্যম থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানতে পেরেছেন তাঁর বিধায়কপদ খারিজের সুপারিশ রাজ ভবনকে করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সরকারি ভাবে রাজ ভবন বা নির্বাচন কমিশন কেউ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরকে এই বিষয়ে অবগত করেনি।'
সূত্রে মারফৎ খবর ১৯৫১ ভারতীয় জন প্রতিনিধিত্ব আইনের ৯-এ ধারাকে লঙ্ঘন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। অভিযোগ পর্যালোচনা করে এমনটাই জানতে পেরেছে নির্বাচন কমিশন। এমনকি, ১৮ অগাস্ট পর্যন্ত কমিশন আয়োজিত শুনানিতে হেমন্ত সোরেন এবং তাঁর ভাই বসন্ত সোরেনের সওয়ালও নথিবদ্ধ করেছে।
যদিও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার অভিযোগ, 'বিজেপি এবং তার কয়েকজন ধামাধারী সংবাদ মাধ্যম নিজেরাই এই চিঠি লিখে রাজ্যপালকে পাঠিয়েছে। নির্লজ্জের মতো সাংবিধানিক সংস্থাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে বিজেপি।'
পাল্টা বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত ডুবের দাবি, 'মুখ্যমন্ত্রী নিজের নামেই লিজ নেওয়া খনি। এর চেয়ে বড় দুর্নীতি আর কী হতে পারে? নির্বাচন কমিশন যা করেছে, সেটা সব রাজনীতিবিদদের কাছে শিক্ষণীয়।'
প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও নিউ টাউনে প্রাতঃভ্রমণে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। এদিন উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের সামনে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) জেলযাত্রা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। বুধবার তৃণমূল নেতাকে কোর্টে তোলার আগে বেশ খোশমেজাজে ছিলেন। সে প্রসঙ্গে বিজেপি (BJP) সাংসদ বলেন, 'জানি না ভেতরে কী হয়েছে। উনি হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন এবার বেল হয়ে যাবে। কিংবা কেউ কেউ বলেছেন চিন্তা করবেন না আমরা আছি। আমার মনে হচ্ছে যে ধরনের সম্পত্তি উনার পাওয়া যাচ্ছে এত সহজে উনি ছাড়া পাবেন না। সাজা উনাকে পেতেই হবে। উকিলরা হয়তো বলেছেন হেসে কথা বলুন তাই হয়তো উনি করেছেন।'
অনুব্রত মণ্ডলের জামিন খারিজ প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি জানান, উনি (পড়ুন অনুব্রত) না থেকেই কোর্টের জজকে পর্যন্ত হুমকি দিচ্ছেন। ওখানে সমস্ত কিছু উনার পরিচালনায়। যে ভাবে ব্যবসায়ীরা এখন কথা বলছেন, অন্য লোকেরা যারা মুখ খুলেছেন, উনি যদি ছাড়া পান সমস্ত কিছু চাপা পড়ে যাবে। কেউই আর মুখ খুলবে না। কোনওরকম তদন্তই এগোবে না। কেউ কোনও তথ্য দেবে না। সেজন্য যতক্ষণ না তদন্তে যথেষ্ট পরিমাণ তথ্য আসছে, তাকে নিশ্চয়ই আটকে জেলে রাখা উচিত।
এদিকে, দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বিজেপি সাংসদকে অর্ধ উন্মাদ কটাক্ষ করে বলেছেন, 'বিজেপি দিলীপ ঘোষকে ব্যবহার করে ফেলে দিয়েছে।' পাশাপাশি কামারহাটির বিধায়কের দাবি, জেলে আমিও গিয়েছিলাম। অনুব্রত মণ্ডলকে কোর্টের রায়ে জেলে যেতে হয়েছে। আমাদের পার্টি কখনই বলেনি কোর্ট, আদালত মানব না।
কী বলছেন দিলীপ ঘোষ এবং মদন মিত্র?
দু'দফায় ১৪ দিনের সিবিআই হেফাজত (CBI Custody) শেষে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে (Jail Term) গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বুধবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে (CBI Court) খারিজ হয়েছে তৃণমূলের (TMC) বীরভূম জেলা সভাপতির জামিনের আবেদন। অপরাধের গুরুত্ব বিচার অভিযুক্তের জামিন খারিজ করেছে আদালত। এমনটাই জানিয়েছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। এবার এই তৃণমূল নেতার জেলযাত্রা ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক চর্চা।
বুধবার গঙ্গারামপুরে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই বৈঠকে অনুব্রত মণ্ডলের ১৪ দিনের জেল হেফাজতকে খানিকটা কটাক্ষের সুরে বিঁধেছেন তিনি। সুকান্তবাবু বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকে বেড়িয়েছে কেষ্ট কী করেছে, ওখানেই অনুব্রত প্রভাবশালী হয়ে গিয়েছেন। আর প্রভাবশালী ব্যক্তিকে এভাবে জামিন দেওয়া যায় না। এখনও যদি অনুব্রত মণ্ডল বুঝতে না পারে কেন তাঁর জামিন হল না, তাহলে এতদিন কী রাজনীতি করলেন?'
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন জানান, অনুব্রত মণ্ডলের ১৪ দিনের জেল বিচারাধীন বিষয়। তাই বিশেষ মন্তব্য করব না। কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতা এবং সাজা হওয়ার পরিসংখ্যান নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আমরা চাই নারদা-কাণ্ডে এফআইআর-এ নাম থাকা বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে তদন্ত হোক। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত হোক। ঝাড়খণ্ড-কাণ্ডে নাম উঠে আসা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও তদন্ত হোক।'
কী বলছে বিজেপি-তৃণমূল?
মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu-Kashmir) কাঠুয়া জেলার হীরানগর এলাকায় রহস্যজনক পরিস্থিতিতে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) (BJP Leader) এক নেতার মৃতদেহ (Deadbody) উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। গাছ থেকে ঝুলন্ত (hanging) অবস্থায় পাওয়া যায় সোম রাজের (Som Raj) দেহ। গত তিন দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন ওই নেতা। তাঁর পরিবার ও বিজেপির অন্য নেতাদের দাবি, খুন করা হয়েছে তাঁকে।
এক পুলিস আধিকারিক জানিয়েছেন, হীরানগর শহরের এক গ্রামবাসী সকালে বিজেপি নেতার দেহ গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। এরপর তিনি সঙ্গে সঙ্গে পুলিসে খবর দেন। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শরীরে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে বলে জানান। ইতিমধ্যে পুলিস মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।
সোম রাজের পরিবারের অভিযোগ, তিনি আত্মহত্যা করেননি। তাঁকে খুন করা হয়েছে। অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। একই সঙ্গে সোম রাজের বাড়িতে পৌঁছে বহু বিজেপি নেতা তাঁর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন।
গোরু পাচারকে কটাক্ষ করে মঙ্গলবার জোড়া ট্যুইট করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন আবার দুধের কন্টেনারে গোরু পাচার করতে গিয়ে শেষরক্ষা হয়নি। সেই কন্টেনার উলটে মৃত ৫ গোরু, উদ্ধার ২২টি গোরু। গোরু পাচারের এই অভিনব পদ্ধতিকেই খোঁচা দেন শুভেন্দু। তিনি একটি ট্যুইটে লেখেন, 'গোরু পাচারের অভিনব পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ গিয়েছে পাচারকারীদের থেকে। পুষ্পা ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এভাবে গোরু পাচার। পুরুলিয়ায় একটা আমূল দুধের কন্টেনারে ভরে পাচার হচ্ছিল গোরু। সেই পাচার পদ্ধতি ফাঁস হয়ে গিয়েছে কারণ সেই গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।'
একই ভাবে আরও একটি ট্যুইটে একটি ভিডিও পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা লেখেন, 'বাংলায় কোটি কোটি টাকার পাচার চক্র এখনও সক্রিয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে বিএসএফ নজরদারি বাড়ানোয় গোরু পাচারের পুরনো পদ্ধতি ব্যর্থ হয়েছে। তাই এভাবে গোরু পাচার এখন পাচারকারীদের কাছে আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে।'
The multi-crore cattle smuggling syndicate is still active in WB. @BSF_India has tightened the screws under Hon'ble Home Minister Shri @AmitShah Ji's able supervision. The tried & tested formulas have now failed. It has become extremely difficult to smuggle cattle using old ways: pic.twitter.com/K85NsjlaBT
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) August 23, 2022
যদিও শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগকে ঘুরিয়ে খোঁচা দিয়েছে তৃণমূল। এমনকি, পুরুলিয়ায় দুধের কন্টেনারে গোরু পাচার প্রসঙ্গকে গুরুত্বদিতে নারাজ শাসক দল। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'গোরু যে সব জায়গা থেকে আসে সেগুলো পাহারা দেয় বিএসএফ। যা অমিত শাহের মন্ত্রকের অধীনে। এতো গোরুর উৎস গো বলয়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ইত্যাদি ইত্যাদি। সেগুলো পশ্চিম সীমান্ত থেকে এসে পূর্ব সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। গোরুর তো আর পাখনা নেই উড়ে উড়ে বাংলাদেশ চলে যাবে। গরুগুলো যখন আনা হচ্ছে, তখন বিএসএফ-র নজরদারি নেই কেন? এখন তো সীমান্ত থেকে ৫০ কিমি পর্যন্ত বেড়েছে বিএসএফ-র এক্তিয়ার।'
ঠিক কী বললেন কুণাল ঘোষ?
সিবিআইয়ের (CBI) উদ্দেশে করা তাঁর মন্তব্য ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই তপ্ত পরিবেশের মধ্যেও নিজের অবস্থানে অনড় বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। মঙ্গলবার প্রাতঃভ্রমণ সেরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ। সেই সময়েও দিলীপবাবুর মন্তব্য, 'সিবিআই তদন্ত নিয়ে আমি নতুন কিছু বলিনি। কোর্ট নিজেই হতাশা ব্যক্ত করেছে। একজন কর্মী হিসেবে আমি নিজেই হতাশা ব্যক্ত করছি।' পাশাপাশি এদিন কলকাতা (Kolkata) থেকে বিজেপির বিধানসভা এবং লোকসভায় আসন পাওয়া নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি।
তাঁর প্রশ্ন, 'বিজেপি কলকাতায় কবে সিট পেয়েছে? কলকাতার লোক দুর্নীতি নিয়ে ভাবে না। নিজের সুবিধা নিয়েই থাকে। গোটা রাজ্যে প্রতিবাদ চলছে। কলকাতায় প্রতিবাদ কোথায়? তাঁরা নিজেরা নিজেদের নিয়ে থাকেন। আমি যা বলি সত্য বলি। কারও খারাপ লাগলে আমার কিছু করার নেই। কারও যদি দম থাকে, কলকাতায় বিজেপিকে জিতিয়ে দেখাক। এখানকার বাঙালিদের এটাই চরিত্র। কালীঘাটের কাছে থাকি, আনন্দে থাকি। ভিখারি হয়ে থাকি। কিচ্ছু যায় আসে না। পুজোর টাকা পেয়ে খুশি থাকি।' এভাবেই সরব ছিলেন দিলীপ ঘোষ।
পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রীয় অর্থ বন্ধ রাখা নিয়ে ফের সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'দেবে না তো। আমরাই দিতে বারণ করেছি। টাকার হিসেব না দিলে টাকা দেবে না। হিসেব দিন, টাকা নিন।'
যদিও দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'দিলীপবাবু কোনও মানসিক অবসাদে ভুগছেন। কলকাতার মানুষকে অপমান করার কোনও অধিকার নেই দিলীপ ঘোষের। শুধু কলকাতায় নয়, জেলাতেও হারছে বিজেপি। উনি হতাশাগ্রস্ত, বিজেপির মধ্যে থেকেই অপমানিত, অবহেলিত, উপেক্ষিত।'
প্রসূন গুপ্ত: ৩০ জুন মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পটভূমি বদলে গিয়েছিলো। শিবসেনা দু'ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে উদ্ধব সেনা আর শিন্ডে সেনায় পরিণত হয়। মূল চালক উদ্ধব ঠাকরেকে সরে যেতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে। ক্ষমতায় এসেছিলো বিজেপির হাত ধরে শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়ক একনাথ শিন্ডে, সঙ্গে পেয়েছিলেন প্রায় ৪০ জনের বেশি বিধায়ক। ভেঙে গিয়েছিলো শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেস জোট সরকার। শিন্ডে হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ হয়েছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী।
সেবার বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছিল 'শিন্ডে শিবসেনা'র থেকে ৩ গুন্ বেশি আসন থাকা সত্বেও তাদের মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দেওয়া সঠিক? স্বয়ং ফড়নবিস আপত্তি তুলেছিলেন কিন্তু অমিত শাহের অনুরোধে তিনি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। শোনা যাচ্ছে, এরপর দু'মাস গড়ায়নি এরই মধ্যে দুই শরিকের মধ্যে শুরু মন কষাকষি। শিন্ডে শিবসেনার ধারণা হয়েছে, যতই একনাথ মুখ্যমন্ত্রী হন না কেন, আসলে রাজ্য চালাচ্ছে ফড়নবিস।
শিন্ডের সঙ্গে শিবসেনা বিধায়ক যেমন বেরিয়েছিল, তেমন ১২ সাংসদও নতুন জোটে যোগ দেন। এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে শোনা যাচ্ছে শিবসেনার জেতা আসন বুলধনা কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে বিজেপি। এভাবেই জোটের অন্দরে কোথাও বিদ্রোহের ছবি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে জানিয়েছেন, ২০২৪-এ শিন্ডের বদলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন দেবেন্দ্র ফড়নবিস। এতেই ঘৃতাহুতি হয়েছে বিদ্রোহী শিবসেনার মধ্যে। দলের সমর্থকদের মধ্যে এমন কথাও হচ্ছে যে, বিহারে নীতীশ কুমারকে দেখে ভাবনা ভাবা উচিত ছিল।
অনেকেই ফের উদ্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এরই মধ্যে বিজেপির হাতছাড়া বৃহন্মুম্বই বা মুম্বই পুরসভা। এই পুরসভা ফের একক ভাবে দখল করতে চাইছে ফড়নবিসের দল। এতে ফের ক্ষিপ্ত শিন্ডে বাহিনী। এই মুম্বই পুরসভা কিন্তু এশিয়ার মধ্যে অন্যতম ধনী সংস্থা ফলে চিরকাল এটা দখলে সব দলই উদগ্রীব। শেষ খবর এই দোলাচলে বেজায় খুশি উদ্ধব, শরদ পাওয়াররা। পাওয়ার তো বলেছিলেন, এই সরকার ৬ মাসও টিকবে না।
সম্প্রতি বিজেপি সঙ্গ ত্যাগ করে বিহারে মহাজোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন নীতীশ কুমার। বিজেপি বিরোধী ৭ দলের এই জোট সরকারের অন্যতম বড় শরিক আরজেডি এবং কংগ্রেস। বিহারের আম আদমি যখন এই রূপান্তরে গা ভাসাচ্ছেন, তখনই মুখ্যমন্ত্রী কনভয়ে হামলা। পাটনায় পাথর ছুড়ে হামলা নীতীশ কুমারের কনভয়ের গাড়িতে। যদিও ওই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী।
ঘটনার একাধিক ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে।
Patna | Stones pelted at the convoy of Bihar CM Nitish Kumar; CM was not present in the convoy at the time of the incident. pic.twitter.com/5kNnn7IDlv
— ANI (@ANI) August 21, 2022
তেমনই এক ভাইরাল ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, জনবহুল রাস্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় যাওয়ার সময় স্থানীয় কিছু লোক লাঠি, পাথর দিয়ে হামলা চালায়। দাঁড়িয়ে পড়ে কনভয়। এরপর আশপাশ থেকে দলে দলে আরও লোক ছুটে এসে কনভয়ের গাড়িতে পাথর ছুড়তে থাকেন। রাস্তায় নেমে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে মহিলাদের।
কেন এই হামলা, নির্দিষ্ট কোনও কারণ অবশ্য এখনও জানা যায়নি। সূত্রের দাবি, যে এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে, কিছু দিন আগে সেই এলাকারই এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। সেই ক্ষোভ থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে হামলা চালানো হতে পারে।
দলের সঙ্গে ছিলাম এবং দলের সঙ্গে আছি। শনিবার ফের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। মেডিক্যাল পরীক্ষার পর তাঁকে যখন ফের জেলে ফেরানো হচ্ছিল, তখনই সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশ্যে এই মন্তব্য করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শনিবার বিকেলে যখন তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়, তখন অবশ্য তিনি জানিয়েছিলেন শরীর ভালো নেই। এদিকে, তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিবের এই মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, 'তদন্ত সম্পূর্ণ হয়ে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয় এলে, নিশ্চয় দল তাঁকে সম্মান ফিরিয়ে দেবে। এমনটা আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব আগেই জানিয়েছে। কেউ যদি বলি আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আছি, তাতে দলের অস্বস্তি কেন হবে? দল পাল্টা কী অবস্থান নিয়েছে, বা কী বলছে সেটাই বিবেচ্য। তৃণমূল ইতিমধ্যে অবস্থান পরিষ্কার করেছে। তদন্তে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হলে অবশ্যই দল এবং মন্ত্রিসভা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।'
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগের দিন বলছিলেন কেউ ছাড় পাবে না। তাই শাসক দল আকার-ইঙ্গিতে বলে দিয়েছে, যেহেতু টাকা পাওয়া গিয়েছে তাই সরাসরি বলতে পারেনি, যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দল আছে, এবং পাল্টা উনি বললেন আমি দলের সঙ্গে আছি।' বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ কটাক্ষের সুরে বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো উনার উপর থেকে ভরসার হাত তুলে নিয়েছেন। কেউ একবারও ওর না করছে না। উনি তো বলবেনই দলের সঙ্গে আছি এবং দলের সঙ্গে থাকবো। কিন্তু দল কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছে? এখন তো শুধু ইডি-সিবিআই সঙ্গে আছে।'
১০ দিন সিবিআই হেফাজত (CBI Custody) শেষে ফের ৪ দিনের কেন্দ্রীয় সংস্থার হেফাজতে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। শনিবার বিকেলেই অনুব্রতকে নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে পথে সিবিআই। এই আবহে ফের একবার বিরোধী আক্রমণের মুখে তৃণমূল কংগ্রেস। বাম এবং বিজেপি একযোগে আক্রমণ শানিয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে (TMC)। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির (BJP) সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'অনুব্রত মণ্ডলের চার দিনের সিবিআই হেফাজতের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। এখন ন্যানো কারখানার বদলে চালকলে গাড়ি পাওয়া গিয়েছে, অনুব্রত সিবিআই হেফাজতে থাকলে আরও সম্পত্তির হদিশ মিলবে।'
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, 'অনুব্রত মণ্ডল এত প্রভাবশালী তাই জামিনের সুযোগ নেই। যদি বিচারব্যবস্থা বলে কিছু থাকে তাহলে জেলেই থাকতে হবে। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে বাইরে কীভাবে ঘুরে বেড়াবেন অনুব্রত মণ্ডল?'
কী বলছে বিজেপি-সিপিএম?
এদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আর্জি খারিজ। ফের ৪ দিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি। ২৪ অগাস্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। অর্থাত্ বীরভূমের দাপুটে নেতার ফের ঠিকানা নিজাম প্যালেস। অনুব্রতর শারীরিক অসুস্থতার যুক্তি খারিজ আদালতে। সূত্রের খবর, জামিন পেলে প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন, তাই প্রভাবশালী তত্ত্বে খারিজ জামিনের আবেদন।
১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের (CBI Custody) শেষে শনিবার অনুব্রত মণ্ডলকে ফের আসানসোলে আদালতে (Asansol Court) তোলা হয়েছিল। তার আগে কলকাতা থেকে নিয়ে এসে এই তৃণমূল নেতাকে (Anubrata Mondal) রাখা হয় ইসিএল ট্রানজিট হাউসে। সে সময় বীরভূম তৃণমূলের সভাপতিকে দেখতে ভিড় জমে ট্রানজিট হাউসের সামনে। যদিও কেন্দ্রীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো গিয়েছে। কিন্তু অনুব্রতকে নিয়ে যখন সিবিআইয়ের কনভয় কোর্টে পৌছয়, তখন তৃণমূলের নেতার উদ্দেশে 'গোরু চোর' স্লোগান তোলা হয়। কোর্ট চত্বরে থাকা জনতার মধ্যে থেকেই ওঠে এই স্লোগান। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ বিজেপিই লোক জড়ো করে এনে এই স্লোগান তুলিয়েছে।
পাশাপাশি আসানসোলের ঘড়ি মোড়ে কংগ্রেসের অভিনব বিক্ষোভ। হাতে মাগুর মাছ নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কংগ্রেস কর্মীরা। অভিযোগ, এই বিক্ষোভে বাধা দিতে ছুটে আসে তৃণমূল। দু'পক্ষের মধ্যে বচসা এবং বাকবিতণ্ডা হাতাহাতির আকার নেয়। রাস্তায় পড়ে যেতে দেখা গিয়েছে অনেক কংগ্রেস কর্মীদের। এখানেও পুলিশের মধ্যস্থতায় এড়ানো গিয়েছে বড় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি।
দেখুন সেই ভিডিও:
এদিকে, আসানসোলে যখন অনুব্রত-বিরোধী প্রচার, তখন কোর্টের বাইরে তাঁর গাড়ি ঘিরে জয় বাংলা স্লোগান তোলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। সিবিআইয়ের কনভয় যখন কোর্ট থেকে বেড়িয়ে কলকাতামুখী তখন কোর্ট চত্বরে উপস্থিত তৃণমূল সমর্থকরা এই স্লোগান তোলেন। বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতির পাশে থাকতেই 'জয় বাংলা' স্লোগান। এমনটাই সংবাদমাধ্যমকে জানান শাসক দলের উপস্থিত কর্মীসমর্থকরা। পাশাপাশি কলকাতায় পথে নেমেছিল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। দলের সোশাল মিডিয়া সেলের তরফ থেকে এই অভিনব বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। ফুটবল নাচিয়ে হাতে মুড়ি,নিয়ে দেখানো হয়েছে এই বিক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, 'ইডি-সিবিআই তদন্ত নিরপেক্ষ ভাবে হচ্ছে না।'
দেখুন সেই ভিডিও:
ঘাসফুল শিবিরের সোশাল মিডিয়া সেলের কর্মীরা মিছিল করে এসে বিজেপির রাজ্য দফতর মুরলিধর সেন লেনের উল্টো রাস্তাতে বিক্ষোভ দেখান। সেই সময় অফিস থেকে বেড়িয়ে এসে পাল্টা 'বিজেপি জিন্দাবাদ', 'ভারত মাতা কি জয়' স্লোগান তোলেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। যদিও এখানেও সক্রিয় হয়ে বড় ঘটনা আটকিয়েছে পুলিস।
গোরু পাচারের তদন্তে নেমে শুক্রবার ভোলেব্যোম রাইস মিলে (Rice Mill in Birbhum) অভিযান চালায় সিবিআই। তদন্তে এই মিলের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে এবং প্রয়াত স্ত্রীয়ের যোগসূত্র পেয়েছে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (CBI)। আর শুক্রবার সকালে সেই রাইস মিলে প্রবেশের পরেই চক্ষু চড়কগাছ কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের। মিল চত্বরে সার দিয়ে দাঁড়ানো একাধিক বহুমূল্যের গাড়ি (Car Found)। যে গাড়িগুলোর মধ্যে একটি গাড়ি, যাতে সরকারি স্টিকার লাগানো, বিশেষ নজর কেড়েছে তদন্তকারীদের। আর এই গাড়ি উদ্ধার ঘিরে তুঙ্গে শাসক-বিরোধী তরজা। তৃণমূলকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছে বিজেপি, বাম, কংগ্রেস। পাল্টা যুক্তি খাড়া করেছে শাসক শিবিরও।
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ব্যাঙ্গের সুরে বলেন, 'আমাদের কৃষ্ণের অষ্টতর শতনাম আর কলিকালের কেষ্ট অর্থাৎ দিদির কেষ্টার অষ্টতর শত দোষ। দিদি তো বলেই দিয়েছেন, কী এমন হয়েছে? একজনকে তো শুধু প্রাণে মারা হুমকিই দিয়েছে। আপনারা কেন এত মাথা ঘামাচ্ছেন?' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, 'রাইস মিলে থাকা গাড়িতে সরকারি স্টিকার কেন? মাত্র একটা গাড়ি পাওয়া গিয়েছে। আর বাকিগুলো? এটা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। আর সে কারণেই সিবিআই-ইডিকে ভয় পাচ্ছে।'
কটাক্ষের সুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'দিদি লাখ লাখ অনুব্রত তৈরি করবেন বলে দিয়েছেন। তাই বাংলায় যতদিন এই মুখ্যমন্ত্রী আছেন এবং তৃণমূল সরকার আছেন, কোনও কিছু নিয়ে অবাক হবেন না।'
কী বলছে বিরোধী দলগুলো?
এই বিষয়ে কৌশলে প্রতিক্রিয়া এড়িয়েছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। আর যে তথ্যের উপর এই বিতর্ক, সেটা হয় সংবাদ মাধ্যম থেকে পাওয়া কিংবা এজেন্সি কিছু দিয়েছে। তাই উলটো দিকের বক্তব্য শুনে তবেই বলা যাবে।'
শুনুন তৃণমূলের বক্তব্য-
তৃণমূলের ১৯ নেতামন্ত্রীর সম্পত্তিবৃদ্ধি (Asset Case) নিয়ে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বিচারাধীন জনস্বার্থ মামলা (PIL)। পাশাপাশি বিরোধী দলের ১৭ নেতার সম্পত্তিবৃদ্ধি নিয়েও বৃহস্পতিবার পাল্টা জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে হাইকোর্টেই। এবার শাসক-বিরোধী দলের নেতাদের নামে চলা এই জোড়া মামলা ঘিরে তুঙ্গে চাপানউতোর। বিরোধী দলের যে ১৭ নেতানেত্রীর নামে মামলা দায়ের হয়েছে, সেই তালিকায় নাম আছে বিজেপির দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, সৌমিত্র খাঁ প্রমুখদের। সেই প্রসঙ্গে বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'আমরা ইডি, সিবিআই যে কোনও ধরনের তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। তৃণমূল নেতারা ইডির বিরোধিতা করে কোর্টে গিয়েছে। কিন্তু আমাদের কেউ বিরোধিতা করতে কোর্টে যাবে না।'
বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় জানান, এটা প্রতিহিংসার রাজনীতি। আমরা কষ্ট করে জনপ্রতিনিধি হয়েছি। এদিকে তৃণমূল নেতারা যা সম্পত্তি বানিয়েছে, তাঁদের কাছে আমরা অনেকটাই ক্ষুদ্র। পাল্টা দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় নাম আছে প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের। সেই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'আমরা চাই সবার তদন্ত হোক। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পত্তিরও তদন্ত হোক। আমি শুধু জানতে চাই বিধায়ক, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেতন না নিয়ে দিদির চলে কীভাবে?'
তৃণমূলের তরফে মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'তৃণমূল নেতাদের নামে মামলা হলে সব ঠিক আছে। আর বিজেপি কারও নামে মামলা হলে সেটা প্রতিহিংসা। ২০১৬ সালে তো বিজেপিই পার্টি অফিসে টিভি চালিয়ে শুভেন্দুর টাকা নেওয়ার ছবি দেখিয়েছিল। এবং স্লোগান তুলেছিল সিবিআই চাই। শুভেন্দু তো এখন তাঁদের সঙ্গেই ঘুরে বেড়াচ্ছে।'
ঠিক কী বললেন সুকান্ত মজুমদারম, অধীর চৌধুরী এবং কুণাল ঘোষ?
পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তৃণমূল (TMC) পরিচালিত নিউ ব্যারাকপুর (New Barrackpur) পুরসভার চেয়ারম্যান। দলীয় এক সভায় প্রবীর সাহা জানান, চায়ের দোকানে তোলপাড় করে লাভ নেই। পার্থ চট্টোপাধ্যায় অন্যায় করেছে তৃণমূল তাকে কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছে। শরীরের কোনও অংশে ক্যান্সার হলে কেটে বাদ দিয়ে দিতে হয়। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় এখন রাজ্য রাজনীতি। প্রবীর সাহা যে দলের নেতা, সেই তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র আবার মন্তব্যে নারাজ।
কুণাল ঘোষকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি খানিকটা রসিকতার সুরে বলেন, 'আমি অঙ্কোলজিস্ট বা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ নয়। তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করব না। বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের আবার সুর চড়া। তিনি বলেন, 'উনি কড়া ব্যবস্থা নিয়েছেন খুব খুব ভালো কথা। কিন্তু উনি নিজে পুলিসকে সরিয়ে দিন, পুরসভার যারা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, তাঁরা গিয়ে থাপ্পড় মেরে আসবে।'
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গে বলেন, 'একটা ক্যান্সার বড় হয়ে ফুলে গিয়েছে তাই দেখা গিয়েছে। কিন্তু ক্যান্সারের একাধিক স্টেজ রয়েছে, স্টেজ ওয়ান, স্টেজ টু। পুরো দলটাই ক্যান্সারে আক্রান্ত, লুঠের ক্যান্সার হয়েছে। মন্ত্রী ধরা পড়েছেন, জেলা সভাপতি ধরা পড়েছেন।'
একই গ্রামে বাকি সকলে পানীয় জল (Water) পেলেও, বঞ্চিত সেই গ্রামেরই পাঁচটি পরিবার (family)। কিন্তু কেন এই দুর্ব্যবহার? অপরাধ একটাই, এই পাঁচটি পরিবার বিজেপি (BJP) সমর্থিত। আর সেই কারণেই পানীয় জল থেকে বঞ্চিত এই পরিবারের সদস্যরা পানীয় জল থেকে। এমনই ঘটনার সাক্ষী রইল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল বিধানসভার বেতকুন্ডু অঞ্চলের ইচ্ছাপুর (Icchapur) গ্রামের মানুষেরা।
জানা যায়, এই ইচ্ছাপূর গ্রামের রানা পাড়ার ৫ পরিবারকে পানীয় জল থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অপরাধ তাঁরা বিজেপি সমর্থক, শুধু পানীয় জল না, তাঁরা বঞ্চিত বার্ধক্য ভাতা, আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়া থেকে। তাঁদের পাশের বাড়িতে জল রয়েছে, কিন্তু তাঁরা জল পাচ্ছেনা, প্রায় ১ কিলোমিটার হেঁটে আনতে হয় জল এই বৃদ্ধ বয়সে। তবে এই ঘটনা প্রশাসনকে জানিয়েও হয়নি কোনও লাভ। এমনকি গ্রামের প্রধান থেকে পঞ্চায়েত সব স্তরেই লিখিতভাবে জানানো হয়েছে কিন্তু ফল মেলেনি। শেষমেষ সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন তাঁরা, যাতে দ্রুত এই অবস্থার সুরাহা মেলে। যাতে একটু সুস্থভাবে তাঁরা বাঁচতে পারেন। তবে কবে মিলবে মুক্তি জানেন না কেউ। আদতেও মিলবে? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।