প্রসূন গুপ্ত: নরেন্দ্র মোদী লোকসভা চলাকালীন আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তাতে দাঁড়ায় এই যে, এপ্রিলের আগে ভোট হবে না, কিন্তু ইতিমধ্যেই দেশের ৫৬টি রাজ্যসভার আসন খালি হচ্ছে, কাজেই তা ফেব্রুয়ারির মধ্যে পূর্ণ করতে হবে। আগামী ২৭ মার্চ দেশের এই কটি আসনে ভোট যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৫টি আসনে নির্বাচন হতে চলেছে।
রাজ্যসভার ভোট দেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র বিধায়কদের আছে। এই মুহূর্তে বাংলার বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রবল শাক্তিশালী এবং তাদের দলে ২২৫ জন বিধায়ক রয়েছে (বিজেপি থেকে ভেঙে বেরিয়ে আসা ১২ জন তার মধ্যে আছে)। অন্যদিকে বিজেপির শক্তি ৬৬ জনের মোটামুটি। অতএব তৃণমূল ৪ জন এবং বিজেপি ১ জন সাংসদ বেছে নিতে পারবে। প্রশ্ন হচ্ছে কারা হতে পারেন আগামীর রাজ্যসভার সাংসদ।
গুঞ্জনে বহু নাম ঘোরাফেরা করছে। সম্প্রতি অমিত শাহ দিল্লিতে সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। শাহের সঙ্গে কথা হয়েছে বাংলার দায়িত্বে থাকা অন্য নেতাদের সঙ্গেও। সেখানে নাম উঠে এসেছে মূলত দুই ব্যক্তির, মিঠুন চক্রবর্তী এবং অনির্বান গাঙ্গুলির। অবিশ্যি দুটি নাম ঘোরাফেরা করছে মানেই তাদের মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়া হবে এমন নিশ্চয়তা নেই। তবু নাম তাদের রয়েছে।
অন্যদিকে তৃণমূলের প্রার্থী ঠিক করবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিজগৃহে অনেক্ষণ আলোচনা করেছেন মমতা। যাঁরা সাংসদ ছিলেন যথা শুভাশিস চক্রবর্তী, ড.শান্তনু সেন, নাদিমুল হক এবং আবির বিশ্বাস। এ ছাড়া তৃণমূলের একাংশের ভোটে জিতেছিলেন
কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র তথা আইনজীবী অভিষেক মনুসিংভী। মমতার অত্যন্ত কাছের কংগ্রেস নেতাকে ফের ফিরিয়ে আনতে পারেন এমন গুঞ্জন বাজারে আছে সে ক্ষেত্রে তৃণমূল তিন জন প্রার্থী দিতে পারবে। অথবা মমতা ৪ জন তৃণমূলকেই পাঠাবেন রাজ্যসভায়। বাদের তালিকা রয়েছে বলে খবর। বাদের খাতায় শান্তনু সেন এবং নাদিমুল রয়েছেন। যদি এমনটি হয় তবে নতুন মুখ কে হতে পারবেন ? উত্তরে জানা যাচ্ছে, এমন কাউকে মমতা পার্লামেন্টে পাঠাতে চাইছেন যিনি দলের ও দেশের হয়ে কথা বলতে পারবেন। আর ৪৮ ঘন্টার মধ্যে চিত্র পরিষ্কার হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের জন্য সাময়িক বন্ধ ভিআইপি রোডে চলা অরেঞ্জ লাইনের মেট্রোর কাজ। মেট্রো সূত্রে খবর, দিল্লি সফরে যাওয়ার জন্য ভিআইপি রোড ব্যবহার করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মেট্রো কাজ বন্ধ রাখার জন্য আবেদন করা হয় বিধাননগর পুলিস কমিশনারেটের পক্ষ থেকে। সেই কারণের সোমবার বেলা ১২ টা থেকে বন্ধ থাকছে মেট্রোর কাজ।
প্রসঙ্গত, বর্ধমান সফর থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। ড্যাশবোর্ডের ধাক্কার মাথায় সামান্য চোটও পান তিনি। সেই কথা মাথায় রেখেই এবার নিরাপত্তার কোনও খামতি রাখতে নারাজ প্রশাসন। পুলিস সূত্রে খবর, সেই কারণেই মেট্রোর কাজ বন্ধ রাখার জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে মেট্রো কর্তৃপক্ষ অরেঞ্জ লাইনের কাজ সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নির্মাণ বন্ধের কারণে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বলেই জানান মেট্রো আধিকারিকেরা।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরে মেট্রোর কাজ বন্ধ রাখা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। রাজ্য প্রশাসনকে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু লেখেন, এই লাইনের কাজ বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে। হাজার হাজার নয়, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ গাড়ি এই রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করে। এর পরেই বিরোধী দলনেতা বিধাননগর পুলিসের উদ্দেশ্যে ২টি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। লেখেন, নির্মাণ কাজ যদি নিরাপদ না হয়, তাহলে ট্রাফিক বিভাগ জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য আগে কেন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কি চিন্তার বিষয় নয়?
মেট্রো রেলওয়ের নির্মাণ কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার কথা বলে আপনারা মুখ্যমন্ত্রীকে কী বার্তা দিতে চাইলেন? হীরক রানি যেখানেই যাবেন সেখানে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে?
আর এখানেই ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মেট্রোর মত এতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য বন্ধ রাখা যায়। যেখানে দেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে, সেখানে বিধাননগর পুলিসের এই নির্দেশিকা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। তা বলাই বাহুল্য।
বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করবে না তৃণমূল। তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা নিয়ে তাঁকে কিছু না জানানোয় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অসৌজন্যের অভিযোগও তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী৷ এমতাবস্থায় একই দিনে মালদহ জেলায় মুখোমুখি হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল গান্ধী। আগামী ৩১ শে জানুয়ারি ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা নিয়ে বিহার থেকে মালদহ জেলায় প্রবেশ করবেন রাহুল গান্ধী। আর সেদিনই মালদহ শহরের ডি এস এ ময়দানে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা। আর একই দিনে দুই দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীদের সভাঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
৩১ শে জানুয়ারি বিহারের কাঠিয়ার থেকে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর রতুয়া হয়ে ইংরেজ বাজারে আসবেন রাহুল গান্ধী। রাত্রিবাস করবেন মালদহের সুজাপুরে। এরপর ১ তারিখ মুর্শিদাবাদে পৌঁছবে ন্যায়যাত্রা।
জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালিসাধন রায়ের অভিযোগ, তৃণমূল আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আর সেই কারণে তাদের কর্মসূচি লন্ডভন্ড করার জন্য ইচ্ছে করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা রাখা হয়েছে। পুলিস প্রশাসনকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলাই উদ্দেশ্য। পাল্টা জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শুভময় বসু বলেন, এই রাজ্যে কংগ্রেস বিষময় রাজনীতি করছে। রাহুল গান্ধী কর্মসূচি করবে, মুখ্যমন্ত্রী নিজস্ব প্রশাসনিক সভা করবে। সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক তৃণমূল থেকে সরে যাচ্ছে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তৃণমূল, আর সেই কারণেই কংগ্রেসের কর্মসূচির দিন ইচ্ছে করে প্রশাসনিক সভা রাখা হয়েছে। কটাক্ষ বিজেপি দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুরির।
বরাবরই মালদহ জেলা ছিল কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি। ২০১৮ সালে কংগ্রেসের কাছ থেকে মালদহ জেলা পরিষদ ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। ২০১৯ সালে কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়ে উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্র জিতে যায় বিজেপির খগেন মুর্মু। দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে মাত্র ৮ হাজার ভোটে জয়ী হন কংগ্রেসের আবু হাশেম খান চৌধুরী।
২০২১ সালে জেলার বারটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে আটটিতে জয়লাভ করে তৃণমূল, চারটি যায় বিজেপির দখলে। নিজেদের শক্ত ঘাঁটিতে শূণ্য হাতে ফিরতে হয় কংগ্রেসকে। আর সেই হারানো মাটি উদ্ধার করতে রাহুল গান্ধীর এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে এমনই কংগ্রেস সূত্রে খবর। সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে তৎপর তৃণমল।
ফের আঘাত পেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর গাড়ির সামনে হঠাৎ অন্য এক গাড়ি চলে আসায় ব্রেক কষতেই মাথায় চোট পান তিনি। তবে এই চোট তেমন গুরুতর নয় বলেই জানা গিয়েছে। আজ অর্থাৎ বুধবার গোদার জনসভা থেকে বেড়োনোর সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা সেরে কলকাতা ফিরেছেন।
২৪ জানুয়ারি, বুধবার বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা ছিল। সেখানে পৌঁছতে হাওড়ার ডুমুরজলা থেকে এদিন হেলিকপ্টারে চেপে রওনা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর কলকাতায় ফেরার সময় গাড়িতে চেপে রওনা দেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে হঠাৎ একটি গাড়ি চলে আসায় তাঁর গাড়ি জরুরী ভিত্তিতে ব্রেক কষতেই মাথায় আঘাত পান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কপাল উইন্ড স্ক্রিনে ঠুকে যায়। এরপর বেশ কিছুক্ষণের জন্য তাঁর কনভয় দাঁড়িয়ে যায়। প্রায় দেড় মিনিট পর ফের কনভয় কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর আঘাত গুরুতর নয়। সামান্য আঘাত পেয়েছেন তিনি। কনভয়ের সামনে কী করে গাড়ি চলে এলো তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। তবে জানা যাচ্ছে, কুয়াশার কারণেই দুর্ঘটনার কবলে পরে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি।
২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে নেতাজির নাম। মঙ্গলবার নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে তাঁর মৃত্যুরহস্য নিয়েই প্রশ্ন তুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এই ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, দেশের জন্য লড়াই করতে গিয়ে উনি কোথায় হারিয়ে গেলেন, তা আমরা আজও জানতে পারলাম না।
নেতাজির মৃত্যুরহস্য নিয়ে তোলা মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। নেতাজির মৃত্যুরহস্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই সুর মেলালেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর দাবি, নেতাজির অন্তর্ধানের সমস্ত রহস্য প্রকাশ্যে আনতে হবে।
নেতাজির মৃত্যুরহস্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পাল্টা দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার দাবি, দুর্নীতির ইস্যু থেকে জনগণের দৃষ্টি ঘোরানোর জন্যই নেতাজির মৃত্যুরহস্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূলের জমানায় চাকরি চুরি, গরিব মানুষের রেশনের চাল চুরি সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগের সাক্ষী থেকেছে এই বাংলা। যা নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে বাংলার শাসকদল। এই অবস্থায় দুর্নীতির ইস্যু থেকে মানুষের নজর ঘোরানোর জন্যই কি নেতাজির মৃত্যুরহস্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন মুখ্যমন্ত্রী?
অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের দিনই সোমবার রাজপথে নেমেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা পর্ব শেষের পরই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কলকাতার রাজপথে সংহতি মিছিল শুরু করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সর্বধর্ম সমন্বয়ে এই মিছিলে যোগ দেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দুপুর ৩টের আগে কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিয়ে, আরতি করে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
মিছিলের পুরোভাগে কোনও রাজনৈতিক নেতা নয়, ছিলেন সমস্ত ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। পুরোহিত, মোয়াজ্জেম, শিখ গুরু, গির্জার ফাদার প্রত্যেকে সামনে থেকে এই মিছিলকে নেতৃত্ব দেন। মিছিল করে তাঁরা পৌঁছে যান গড়চায়। সেখানে স্কুটিতে ওঠেন মমতা। সেই স্কুটি তাঁকে পৌঁছে দেয় গুরুদ্বারের সামনে। সেখানে নেমে গুরুদ্বারে একাই ঢুকলেন তৃণমূল নেত্রী। গুরুদ্বারের ধর্মগুরুরা তাঁকে স্বাগত জানিয়ে ভিতরে নিয়ে যান।
গুরুদ্বার থেকে বেরিয়ে ফের মিছিলে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জমায়েত হয়ে একটা মিছিল শুরু করে। এখানে অভিষেকের সঙ্গে ছিলেন সুজিত বসু, শান্তনু রায়, অনন্যা চট্টোপাধ্য়ায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়রা। ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারাও।
মিছিল এসে পৌঁছয় পার্ক সার্কাসে। সেখানেই তৈরি করা হয়েছিল মঞ্চ। বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, 'আজকের দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাঙালি হিসাবে গর্বের যে বিভিন্ন ধর্মের লক্ষাধিক মানুষ পায়ে পা মিলিয়েছেন। আমরা মানুষের স্বার্থে লড়াই করব। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী দিন লড়াই করতে হবে।'
সোমবার রাজপথে নামছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন সংহতি মিছিল শুরু করবেন তিনি। সর্বধর্ম সমন্বয়ে এই মিছিলে যোগ দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, আজ সোমবার কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিয়ে হাজরা থেকে এই সংহতি মিছিল শুরু করবেন তৃণমূলনেত্রী। যার পুরোভাগে কোনও রাজনৈতিক নেতা নয়, থাকবেন সমস্ত ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। পুরোহিত, মোয়াজ্জেম, শিখ গুরু, গির্জার ফাদার প্রত্যেকে সামনে থেকে এই মিছিলকে নেতৃত্ব দেবেন। মিছিল শেষ হবে পার্ক সার্কাসে।
পার্ক সার্কাসে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। সেখান থেকেই বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এও জানা গিয়েছে, ওই মঞ্চে কোনও রাজনৈতিক নেতা থাকবেন না। রবিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়ে পোস্ট করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক লিখেছেন, “মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বার যা-ই হোক, ঘৃণা, হিংসা ও নিরীহ মানুষের মৃতদেহের উপর তৈরি কোনও উপাসনাস্থল মেনে নিতে আমার ধর্ম আমায় শেখায়নি।”
একাধিক শর্তসাপেক্ষে ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্প্রীতি মিছিলের অনুমতি দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর আর্জি খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে ওই সম্প্রীতি মিছিলের অনুমতি দিল।
আগামী ২২ জানুয়ারি, অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের দিনেই বাংলায় সম্প্রীতি যাত্রার ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা ছাড়াও সব জেলার ব্লকে ব্লকে ওই মিছিল করার কথা বলা হয়েছে। সেই মিছিল নিয়ে আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই যাত্রায় এবার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। তবে মিছিল করার আগে বে কিছু বিষয় মাথায় রাখার কথা বলা হয়েছে।
এদিন প্রধান বিচারতি টি এস শিবজ্ঞানম উল্লেখ করেছেন, সংহতি যাত্রা চলাকালীন কোনও বক্তব্যে ধর্মীয় আবেগে আঘাত করা চলবে না। তাছাড়া এই ধরনের মিছিলে যানবাহনের সমস্যা হয়, সাধারণ মানুষের সমস্যা হয়, আটকে পড়তে পারে অ্যাম্বুল্যান্স, রাজ্য এবং শাসকদলকে সেদিকটাও নজর রাখতে বলেছে হাই কোর্ট।
প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, প্রতি ব্লকে যদি এই র্যালি হয় সেখানকার মানুষের সমস্যা হবে। এই র্যালির জন্য আগে থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। ওই দিন আরও ৩৫ টি মিছিলের আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলি অনুমতি পেলে সমস্যা আরও বাড়বে বলে পর্যবেক্ষণ আদালতের।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর সম্প্রীতি মিছিলের দিন বদলের দাবিতে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে তাঁর দাবি ছিল, রামমন্দির উদ্বোধনের দিন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ, শুভেন্দুর সেই আবেদন কার্যত খারিজ করে দিল।
আর মাত্র ৫টা দিন। তারপরই ঐতিহাসিক মুহূর্ত! ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই নিয়েই সাজ সাজ রব অযোধ্যায়। শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতিও তুঙ্গে। আর এরই মাঝে ওই দিনই কলকাতায় 'সংহতি মিছিলে'র ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছেন, হাজরা থেকে এই মিছিল হবে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত। এরপরই বুধবার এই মিছিল বন্ধের দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মামলা দায়েরের অনুমতিও দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামীকাল এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিনই বাংলায় 'সংহতি মিছিলে'র ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২২ জানুয়ারি এই মিছিলের বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই মিছিল পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টে। শুধু তাই নয়, রামপুজোর দিন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনেরও আর্জি জানালেন শুভেন্দু। তাঁকে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের এজলাসে এই মামলার শুনানি হতে পারে।
মেট্রো সম্প্রসারণে প্রয়োজন দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক। আর তা নিয়েই রাজ্য-মেট্রো সংঘাত চরমে। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর গলায় শোনা গেল তীব্র কটাক্ষের সুর। একপ্রকার গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “আমার রক্ত থাকতে দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক ভাঙতে দেব না।”
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক হৃদয়ের মণিমুক্তো। শেষ রক্তবিন্দু থাকতে ভাঙতে দেব না। প্রয়োজনে আমি বিকল্প রুট করে দেব। বুদ্ধি খরচ করুন।” অন্যদিকে, মেট্রোর সম্প্রসারণের জন্য আলিপুরের বডিগার্ড লাইনও ভাঙতে চায় রেল। এ বিষয়েও অনড় অবস্থানে বাংলার সরকার। তিনি বলেন, “আলিপুর বডিগার্ড লাইন পুলিসের হৃদয়ের মণিমুক্তো। রাজ্যের ঐতিহ্য। এর কোনওটাই ভাঙতে দেব না।” প্রয়োজনে মেট্রোর রুট বদলাতে হবে মত মমতার।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যের প্রতিটা মেট্রো প্রকল্পের কাজই তিনি করে দিয়েছিলেন। এদিন রেলের একাধিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কৃতিত্ব দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ভারতীয় রেলে আগে ২০টা জোন ছিল। মেট্রোকে নিয়ে ১টা জোন রাজ্য়ে তিনিই তৈরি করেছিলেন। এমনকি দিল্লি মেট্রোর জট ছাড়ানোর কৃতিত্বও দাবি করেন তিনি।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে কেন্দ্র বিরোধিতার সুর আরও চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশে বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতেই কি রেলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করলেন মুখ্যমন্ত্রী? নাকি রাজ্যে দলের ভিত মজবুত করতেই এই সিদ্ধান্ত তৃণমূল সুপ্রিমোর?
ইন্ডিয়া জোটের ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর প্রস্তাবেই সিলমোহর দেওয়া হল অবশেষে। বিজেপি-বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'র শনিবারের ভার্চুয়াল বৈঠক থেকে চেয়ারপার্সন করা হল কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে। শনিবার জোটের ভার্চুয়াল বৈঠকে চেয়ারপার্সন হিসাবে খাড়গের নামই প্রস্তাব করা হয়েছিল বলে সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে। এদিন এই বৈঠকে যোগ দেয়নি তৃণমূল। শনিবারের বৈঠকে মূলত জোটে এক জন আহ্বায়ক এবং চেয়ারপার্সন করা নিয়ে আলোচনা ছিল।
জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক হিসাবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নাম নিয়েই সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছিল। সূত্রের খবর, সেই প্রস্তাবে রাজি হননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দল জানিয়েছে, তাঁদের নেতা কোনও পদ চান না। অন্যদিকে এর আগের ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে মমতা প্রস্তাব দিয়েছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গের নামই। আর এদিনের বৈঠকে তাঁর প্রস্তাবেই সায় দিয়েছে জোট। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস সভাপতি খাড়গেকেই চেয়ারপার্সন করল 'ইন্ডিয়া'। তবে জানা গিয়েছে, খাড়গের নামে সকলের সায় মিললেও, এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। সূত্রের খবর, মমতা এবং সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদবের সঙ্গে আলোচনা করেই নাম ঘোষণা করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শনিবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেয়নি বাংলার শাসকদল তৃণমূল। কংগ্রেসের ডাকা 'ইন্ডিয়া' শিবিরের বৈঠকে মমতার যোগ দেওয়া নিয়ে প্রথম থেকেই ছিল ধোঁয়াশা। একেবারে শেষ মুহূর্তে বৈঠকের আমন্ত্রণ পাওয়ার কারণেই যোগ দিতে না পারার সম্ভবনা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অবশেষে তাই দেখা যায়। এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এদিন জুম আ্যপ-এর মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দিতে শুরু করেছিলেন বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতারা। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মল্লিকার্জুন খাড়গে, আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এছাড়াও এম কে স্ট্যালিন, শরদ পাওয়ার, লালু প্রসাদ যাদব, নীতীশ কুমার, সীতারাম ইয়েচুরি, প্রমূখ বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।
'এক দেশ, এক ভোট'-এর বিরোধিতায় কড়া চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মোদী সরকার গঠিত হাই লেভেল কমিটির সচিবকে চিঠি লিখে মূলত দুটি সমস্যার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। পৃথক ভাবে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, 'তাহলে কি আমরা প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম অফ গর্ভমেন্টের দিকে যাচ্ছি?'
'ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন'-এর মানে প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম অফ ইলেকশন, যেমনটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছে। মোদী সরকারের প্রস্তাবিত ওয়ান নেশন, ওয়ান ভোট পদ্ধতিকে এভাবেই তুলোধনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। 'এক দেশ, এক ভোট' বাস্তবায়িত করতে হাইলেভেল কমিটি গড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই কমিটির সচিব নীতেন চন্দ্র মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোকে চিঠি লিখে সুপারিশ চান। জবাবি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, 'ওয়ান ভোট, ওয়ান নেশন ধারণা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। আপনার ভাবনার সঙ্গে আমার ভাবনার ফারাক রয়েছে। ওয়ান নেশন, ওয়ান ভোট শুনতে নাটুকে এবং উত্তেজনাপূর্ণ।' এভাবেই কড়া জবাব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। 'দেশের সংবিধান কি ওয়ান নেশন, ওয়ান ভোটকে অনুসরণ করে? সংবিধানে বলা আমাদের দেশ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিশ্বাসী। সেখানে আপনারা কীভাবে এক দেশ, এক ভোট কার্যকর করতে পারেন?' চিঠিতে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
পৃথকভাবে সাংবাদিকদের সামনেও সরব ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, 'ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে বলে যা খুশি করে দেবো। আমি নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে দেখতে বলবো।' তাঁর দাবি, 'আমাদের দেশ বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য, ভাষার বহুত্ব, বহু ভাবনা সমৃদ্ধ। আমি ওয়ান নেশন, ওয়ান ভোটের ভাষাকে কুর্নিশ করি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর নিরিখে এই ভাষাকে কার্যক্ষেত্রে কার্যকর করা গ্রহণযোগ্য নয়', এভাবেই সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী।
২০২৪-এর লোকসভাকে পাখির চোখ করেই একেবারে জেলা ধরে ধরে প্রস্তুতি বৈঠক শুরু করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুর নেতৃত্বের সঙ্গে প্রস্তুতি বৈঠক শুরু করলেন নিজের বাড়ি কালীঘাট থেকেই। বৈঠকে উপস্থিত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ঘাটালের সাংসদ দেব। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নেতারা রয়েছেন এই বৈঠকে। এছাড়াও আছেন সুব্রত বক্সি, জুন মালিয়া, মানস ভুঁইয়্যা, শিউলি সাহারা। ভোটের আগে দলের রণকৌশল ও মানুষের কাছে পৌঁছানোর বার্তা দিতে আজ, বুধবার জেলাস্তরের তৃণমূল নেতাদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বৈঠক।
এদিন কালীঘাটের বৈঠকে কিছু বার্তা দেওয়া হয়েছে।
১) যুবদের প্রচারে ঝাঁঝ বাড়াতে হবে।
২) সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার বাড়াতে হবে।
৩) সুজয় হাজরাকে বলা হয়েছে জুন মালিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্ব মেটাতে।
৪) পঞ্চায়েতের আগে যেভাবে আন্দোলনে ঝাঁঝ বাড়িয়েছিলেন, সেটা কম মনে হচ্ছে, বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫) অনেক সাংগঠনিক নির্দেশ মানা হয়নি। চন্দ্রকোনা পঞ্চায়েত সমিতি উদাহরণ। নিয়ম না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
৬) কেশিয়ারি ব্লকের সভাপতি শ্রীনাথ হেমব্রমকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৭) শ্রীকান্ত মাহাতোকে ঝাড়গ্রামে সময় দিতে বলা হয়েছে।
৮) পূর্ব আর পশ্চিম মেদিনীপুরে মানস ভুইয়াকে বেশি করে সময় দিতে বলা হয়েছে।
৯) ঘরে বসে রাজনীতি নয়। মাঠে নামুন। স্পষ্ট বার্তা মমতা-অভিষেকের।
১০) সব ইস্যু নিয়ে বই ছাপানো হবে। সেই বই যাবে কর্মীদের কাছে। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
১১) জুন মালিয়ার সাথে দ্বন্দ্ব মেটাও। জেলা সভাপতি সুজর হাজরাকে নির্দেশ।
১২) সংবাদমাধ্যমে যে কেউ মুখ খুলবে না। কথা বলার জন্য দলের মুখপাত্ররা আছেন।
১৩) মেদিনীপুর পুরসভা দ্বন্দ্ব মেটাতে দায়িত্ব মানস ভুইয়া ও জেলা সভাপতিকে। এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ।
১৪) বিজেপি চোর বললে ওদের ডাকাত বলে প্রচার করো বৈঠকে বার্তা দলনেত্রীর। স্লোগান দিতে হবে " গলী গলি মে শোর হায় বিজেপি চোর হায়।"
এছাড়াও জানা গিয়েছে, রাজ্য স্তরের কয়েকজন মুখপাত্রর ভূমিকায় সন্তুষ্ট নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে কয়েকজন মুখপাত্র বদল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। কারও কোনও ব্যাপারে প্রশ্ন থাকলে, দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র আছে। সেখানে বলতে হবে। যদি কেউ এর পরেও নির্দেশ না মানে তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের নির্দেশ না মানলে কার্যত ছেটে ফেলা হবে। রাজ্য সভাপতিকে নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খড়গপুরে কেন দলীয় কার্যালয় এখনও তৈরি হলো না।বিধায়ককে প্রশ্নও করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও তিনি এদিন বলেন, 'আমরা INDIA জোটে আছি থাকব। তবে বাংলায় আমরা একা লড়ার জন্য যথেষ্ট।'
এদিন বৈঠকে প্রথম থেকেই অভিষেক বন্দোপাধ্যায় চুপচাপ থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে কিছু বলতে বলেন। অভিষেক প্রথমে কিছু বলতে চাননি। কিন্তু পরে মমতা বলেন, 'তুই যখন এসেছিস, তুই বল।' তারপর অভিষেক বন্দোপাধ্যায় নবজোয়ার যাত্রার অভিজ্ঞতা বলেন। এছাড়া বলেন, 'দল যা নির্দেশ দেবে তাই করব। সেই দায়িত্ব পালন করব।'
সন্দেশখালি আরেকটি শীতলকুচি হতে পারত। সেই ফাঁদই পেতেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তবে তাঁর পাতা ফাঁদে পা দেয়নি সিআরপিএফ জওয়ানরা। তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে শীতলকুচির কথা স্মরণ করিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট শুভেন্দু অধিকারীর।
বরাবরই রাজ্যে ঘটা যেকোনও বিশৃঙ্খলতা সম্পর্কে মন্তব্য করেন, প্রয়োজন পড়লে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কড়া পোস্ট শুভেন্দুর। পোস্টে শুভেন্দু ধন্যবাদ দিলেন সিআরপিএফ জওয়ানদের। বিঁধলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়কে। তাঁর পোস্টে মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে শুভেন্দু লেখেন, 'মুখ্যমন্ত্রীই দায়ী ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায়।' তাঁর সংযোজন, 'সাংবিধানিক নিয়ম অক্ষুন্ন রাখা, সাংবিধানিক পরিকাঠামোকে সম্মান এবং বিচার বিভাগীয় নির্দেশাবলী মেনে চলার বদলে তিনি দাঙ্গাকে আরও সমর্থন করছেন। তাঁর পার্টির কর্মীদের গুন্ডারাজের দিকেই ঠেলে দিচ্ছেন। তৃণমূল কর্মীরা রাজনৈতিক কম, মৌলবাদে বেশি বিশ্বাসী' বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন শুভেন্দু।
You @MamataOfficial, are the main reason for today's ghastly attack on the ED Officials and CRPF Jawans.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) January 5, 2024
Instead of upholding the Constitutional norms, respecting the Federal Structure and abiding by the Judicial directions, you have time and again tried to instigate your unruly… pic.twitter.com/3QuxNbGxtc
আর তারপরেই তিনি সিআরপিএফ জওয়ানদের ধন্যবাদ জানান। লেখেন, 'ওই পরিস্থিতিতেও গুলি না চালানোর জন্য সিআরপিএফ জওয়ানদের আমি ধন্যবাদ জানাই।' তাঁর সংযোজন, মমতা বন্দোপাধ্যায় এটাই চাইছিলেন, যদি ওই ভিড়ের মধ্যে কোনও একজনও মারা যেতেন, তাহলেই মুখ্যমন্ত্রী গোটা ঘটনার মনোযোগ দুর্নীতিবাজ ধরার থেকে সেই খুনের দিকে নিয়ে যেতে পারতেন। তবে তাঁর মতে, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পাতা সেই ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানালেন সিআরপিএফ জওয়ানদের। সন্দেশখালিকে আরেকটা শীতলকুচিতে পরিণত না করার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানালেন সিআরপিএফ জওয়ানদের। সঙ্গে একটি সভা থেকেও শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবারে সন্দেশখালির গোটা হামলায় দায়ী মমতা- বলেন একথাই।
সন্দেশখালি নিয়ে এমনিতেই সরগরম হয়ে আছে রাজ্য রাজনীতি। তার মধ্যে পুরো ঘটনা মমতা বন্দোপাধ্যায়েরই পরিকল্পনা বলে এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর এ নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা কোথায় গিয়ে পৌঁছয়, সেটাই দেখার।
আজ ৫ জানুয়ারি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) জন্মদিন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান সমস্ত ক্ষেত্রের প্রতিনিধিরা। শাসকদলের নেতা মন্ত্রীদের পাশাপাশি তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায় সিনেমা ও টেলিভিশন জগতের ব্যক্তিদেরও। আর এই বিশেষ দিনে সমস্ত রাজনৈতিক মতানৈক্য ভুলে তাঁকে 'দিদি' সম্বোধন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় মমতার উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করেছেন তিনি।
সরকারি নথি অনুযায়ী, ১৯৫৫ সালের ৫ জানুয়ারি জন্ম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই হিসেবে ৬৯ বছর পেরিয়ে গেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর এই জন্মদিনের বিশেষ দিনে কিছুটা পরে হলেও সমস্ত রাজনৈতিক মতানৈক্য ভুলে তাঁকে 'দিদি' বলে সম্বোধন করেছেন ও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মমতার উদ্দেশে শুভেচ্ছা বার্তা লিখেছেন, 'বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা দিদিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। তাঁর দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করি।'
Best wishes to West Bengal CM Mamata Didi on her birthday. Praying for her long and healthy life. @MamataOfficial
— Narendra Modi (@narendramodi) January 5, 2024