আকাশে-বাতাসে এখন মা উমার আগমনী বার্তার সুর। আনন্দের জোয়ারে ভেসে যেতে এখন অপেক্ষার প্রহর গোনা শুরু উৎসবপ্ৰিয় বাঙালির। দুর্গাপুরের (Durgapur) বিধাননগরের উত্তরপল্লির পুজো একটা আলাদা ছন্দে অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর (Durga puja) উদ্যোক্তা ৫০ জন মহিলা। করোনার (covid 19) ভয়ঙ্কর থাবায় মানুষের পকেটে টান পড়েছিল, পুজো নমো নমো করে হয়েছিল গত দু বছর। করোনার ভয়ঙ্কর রুদ্রমূর্তিকে হেলায় হারানোর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন গত বছরই তাঁরা। আনন্দের আবহে হেলায় হারাতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছিলেন তাঁরা।
প্রতিজ্ঞার সেই সংঘবদ্ধ লড়াইয়ে তাঁরা ঠিক করেছিলেন, আর চাঁদা তুলে অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে পুজোর আয়োজন করবেন না তাঁরা। মহিলারা সেদিন নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন এই পুজোর দায়িত্ব। সংকল্প করেন প্রতিদিন একটু একটু করে ভাঁড়ে জমানো টাকা দিয়ে হবে পুজোর আয়োজন। কোনও একটি দিনকে বেছে একসাথে পঞ্চাশটি ভাঁড় ভাঙা হবে। আর কষ্টার্জিত সেই জমানো টাকা দিয়ে হবে মা উমার পুজোর আয়োজন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দুর্গাপুরের বিধাননগরের উত্তরপল্লি পুজো কমিটির এই মহিলাদের বেশিরভাগই গৃহবধূ। রবিবার ছিল সেই মহেন্দ্রক্ষণ, এলাকার মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে এই পঞ্চাশজন গৃহবধূ একসঙ্গে পঞ্চাশটি ভাঁড় ভাঙলেন। আর সেই সঞ্চিত টাকা দিয়ে বরাত দিলেন পুজোর আয়োজনের। পুজোর প্রস্তুতির শুভ সূচনা হল আজ থেকেই। হাই বাজেট নয়, নজর কাড়া কোনও থিমও নয়, বিধাননগরের উত্তরপল্লির পুজো মা উমার আগমনী বার্তার সুরে যেন এক নতুন ভাষা খুঁজে পাবে। পাবে এক নতুন দিশা, আর সেই অর্থেই আজ থেকেই শুরু অপেক্ষার প্রহর গোনা।
পুলিসের (Police) কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়ে হয়রানির শিকার মৃত গৃহবধূর পরিবার। শনিবার দুপুরে দক্ষিণ পূর্ব রেলের (South Eastern Railway) হাওড়া খড়গপুর শাখার ফুলেশ্বর-চেঙ্গাইলের মাঝখান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় সাবিনা পারভিন নামে এক গৃহবধূর দেহ। তাঁর দেহ উদ্ধার করে তাঁর স্বামী সানি নস্কর। তড়িঘড়ি উলুবেড়িয়া হাসপাতালে (hospital) নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত (death) বলে ঘোষণা করেন।
গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, সাবিনাকে ট্রেন (train) থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে তাঁর স্বামী। এই অভিযোগ প্রথমে পরিবারের সদস্যরা জানাতে যান উলুবেড়িয়া জিআরপি-তে। জিআরপি অভিযোগ নিতে অস্বীকার করলে তাঁরা উলবেড়িয়া থানায় যান। কিন্তু সেখানেও অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। রাত বারোটা পর্যন্ত মৃত গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন থানা ও জিআরপি করতে থাকে, কিন্তু কোথাও অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি। পরে খবর পেয়ে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে জিআরপি অভিযোগ দায়ের করে।
এই বিষয়ে জিআরপি থানার এক কর্তা বলেন, যে ট্রেন থেকে পড়েছে, সেই ট্রেন কোনও মেমো দেয়নি। তাই অভিযোগ দায়ের করা যাবে না। অন্যদিকে উলুবেড়িয়া থানার এক আধিকারিক বলেন, যেহেতু এটা রেললাইনের মধ্যে ঘটেছে তাই এর অভিযোগ সেখানে করা যাবে না। রেল ও উলুবেড়িয়া থানার পুলিসের হয়রানি শিকার হলেন মৃত গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন। তবে এত কিছুর পর যে সুরাহা মিলবে সেই বিষয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে পরিবার।
সম্পর্কে 'সন্দেহ' কতটা ভয়ানক হতে পারে তার জ্বলন্ত প্রমাণ এই ঘটনা। স্বামী, স্ত্রীকে (Husband-Wife) সন্দেহ করতেন। তার জেরে স্ত্রীকে মারধরও করতেন। দিনের পর দিন স্বামীর অকথ্য অত্যাচার (Torture) সহ্য করতে করতে বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল রঞ্জনাবেনের। এরপরই নিয়েছেন দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত। ঘুমের মধ্যেই রবিবার স্বামীকে হত্যা (Murder) করলেন তিনি। খুনের অভিযোগে রঞ্জনাবেনকে গ্রেফতার (Arrested) করেছে পুলিস।
জানা গিয়েছে, স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এই কাজ করেছেন তিনি। পুলিসকে অভিযুক্ত জানিয়েছেন, তিনি কেবল সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। রবিবার রাতে আসে সেই সুবর্ণ সুযোগ। ছেলেমেয়েকে নিয়ে যে ঘরে ঘুমোন, তার পাশের ঘরে অঘোরে ঘুমোচ্ছিলেন স্বামী নবীন। ছেলেমেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে স্বামীর ঘরে গিয়ে গলা টিপে ধরেন রঞ্জনবেন। তারপর স্বামী অচৈতন্য হয়ে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ইলেক্ট্রিক শক দেন তিনি।
ছেলেমেয়েকে সকালে স্কুলে পাঠানোর পর রঞ্জনাবেন চিৎকার শুরু করেন। তা শুনে তাঁর শ্বশুর এলে, দেখতে পান, ছেলে নবীন বিছানায় পড়ে রয়েছে। গলায় ও পায়ের নিচে আঘাতের দাগ রয়েছে। যদিও রঞ্জনাবেন তখন বলেন বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়েছেন। তবুও সন্দেহ হয় অভিযুক্তর শ্বশুরের।
সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানায় খবর দেন। পুলিস এসে তদন্ত শুরু করতেই বেরিয়ে আসে আসল রহস্য। রঞ্জনাবেন নিজে স্বীকার করে নিয়েছেন সত্যিটা। অবশেষে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিস।