প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রাখতে জানেন দেশের প্রধানমন্ত্রী! এমনটাই শোনা যাচ্ছে জনমুখে। বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিনেই নিজের জন্মদিনের দিন দেশবাসীকে বিশেষ উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা জয়ন্তী উপলক্ষে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা (PM Vishwakarma Yojana) চালু করলেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পের জন্য সমাজের শিল্পী ও কারিগররা একাধিক সুবিধা পাবেন বলে জানা গিয়েছে। আগেই এই পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এই নতুন যোজনা অনুযায়ী, শিল্পী ও কারিগররা আরও বেশি সুবিধা পাবেন বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রকল্পের উদ্বোধন করে মোদী বলেন, 'গরিবের ছেলে মোদী আপনাদের সেবায় সদা তৎপর।'
নিজের ৭৩তম জন্মদিনে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার নয়াদিল্লির দ্বারকায় এক্সপো সেন্টার ‘যশোভূমি’ (YashoBhoomi) উদ্বোধন করেন মোদী। পাশাপাশি বিশ্বকর্মা জয়ন্তীতে সূচনা করলেন 'পিএম বিশ্বকর্মা' প্রকল্পেরও। পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার অধীনে ২০২৩-২৪ থেকে ২০২৭-২৮ আর্থিক বছরে ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করবে কেন্দ্র।
এই প্রকল্পের অধীন সুবিধাভোগীদের ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত টুলকিট প্রদান করা হবে। সুবিধাভোগীদের ৫০০ টাকা স্টাইপেন্ডে মৌলিক দক্ষতা সম্পন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জামানত মুক্ত ঋণ দেওয়া হবে শিল্পী ও কারিগরদের। পাশাপাশি তৈরি করা পণ্যের জন্য গুণমান শংসাপত্র, ব্র্যান্ডিং এবং বিজ্ঞাপনের জন্য বিপনন সহায়তা করা হবে। মোট ১৮ ধরনের শিল্পী ও কারিগররা পিএম বিশ্বকর্মার সুবিধা পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
সৌমেন সুরঃ আর মাত্র সাতদিন পরে অর্থাৎ ১৮ই সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো। বিষয়টি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে বলেই তথ্যটা আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম। বিশ্বকর্মা হলেন সবকিছুর স্রষ্টা। এই বিশ্বের সমস্ত কারিগর শিল্পীর প্রধান প্রতিনিধি তিনি। একসময় এই বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড ছিল অন্ধকারে পূর্ণ। তখন জল, পৃথিবী, বায়ু, তেজ, স্পন্দন, ধ্বনি ছিল না। জীব পদার্থের অস্তিত্ব ছিল না। সবকিছুই অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। একদিন হঠাৎ ধ্বনি জেগে ওঠে। সংকেত হয়- সৃষ্টির সূচনা আরম্ভ হলো। এক উজ্জ্বল আলোকময় দীপ্তির মধ্যে প্রকাশিত হলেন স্বয়ং বিশ্বকর্মা। জন্ম হলো জল,মাটি,বায়ু,গ্রহ,নক্ষত্র, দেবতা, দানব, মানব। জগৎকে যিনি সৃষ্টি করলেন তিনি মহাস্রষ্টা বিশ্বকর্মা।
বেদ বেদান্ত, রামায়ণ, মহাভারত বিভিন্ন পুরাণে বিশ্বকর্মার যে ভাবনা জন্ম নিলো উত্তরকালে তার প্রতিফলন দেখা দিলো। প্রাচীন সমাজ ব্যবস্থা ভেঙে যখন আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠলো স্বাভাবিকভাবে পরিবর্তন এলো জীবনযাত্রার। সমস্ত শ্রমিক শ্রেণির মানুষের কাছে তাদের কর্মের দেবতা হয়ে উঠলেন বিশ্বকর্মা। বৈদিক যুগে যা ছিল অরূপে, একালে তারই প্রকাশ হলো রূপে। বর্তমানে মানুষের জীবনে যন্ত্রের ব্যবহার ক্রমশই বেড়ে চলেছে। আর যন্ত্র অর্থে বিশ্বকর্মা। তাই অনেক বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর মতো বিশ্বকর্মা পুজোর দিন দেবমূর্তি এনে পুজোর আয়োজন করা হয়। বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে যন্ত্রসংক্রান্ত বিষয় শিক্ষা দেওয়া হয় সেখানে বিশ্বকর্মা পুজো হয়।
বিশেকর্মা শুধু যন্ত্র সৃষ্টি করেন না, তিনি জ্ঞানের প্রসারও করেন। কোথাও কোথাও দীপাবলির দিন বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করা হয়। বিশ্বকর্মা পুজোয় আর এক বৈশিষ্ট্য হলো ঘুড়ি ওড়ানো। ঘুড়ির মধ্যে দিয়ে মানুষ মেলে ধরে নিজেকে অসীম অনন্তে, যা বিশ্বকর্মার মূল ভাবের প্রতীক। এই বিশ্বকর্মা পুজো শুধু বাংলায় নয়, অসম, ত্রিপুরা, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের নানা অঞ্চলে প্রচলন আছে, এমন কি দক্ষিণ ভারতের কিছু কিছু আঞ্চলে এই পুজোর প্রচলন আছে।
চলতি বছরের বাজেট প্রস্তাবের সময়ই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছিলেন 'পিএম বিশ্বকর্মা প্রকল্প'-এর (PM Vishwakarma Yojana) কথা। এরপর দেশের ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবসের উদযাপনী অনুষ্ঠানের সময় জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এই প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রীও। তিনি জানান যে, পরেই মাস বিশ্বকর্মা জয়ন্তী ও সেই দিন থেকেই বিশ্বকর্মা প্রকল্প চালু করা হবে। আর এই ঘোষণার একদিন পরেই অর্থাৎ বুধবার এই প্রকল্প চালুর সরকারি নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার তরফে ঘোষণা করা হল এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩০ লক্ষ কারিগর পরিবার সুবিধা পাবে।
The PM in Union Cabinet meeting today approved ‘PM Vishwakarma’ scheme to support people with traditional skills. Under this scheme, loans up to Rs 1 lakh will be provided on liberal terms: Union Minister Ashwini Vaishnaw pic.twitter.com/CcDkV5slX1
— ANI (@ANI) August 16, 2023
বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendr Modi) অধীনে মন্ত্রীসভার এক বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, এই প্রকল্পের অধীনে প্রথমে দেশের কারিগরদের কম সুদে ঋণ দেওয়া হবে। প্রায় ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। প্রথম দফায় ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে ও দ্বিতীয় দফায় ঋণ দেওয়া হবে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। সুদ দিতে হবে মাত্র ৫ শতাংশ হারে। জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১৩ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর বাজেটে 'বিশ্বকর্মা যোজনা প্রকল্প'র কথা ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি তখন জানিয়েছিলেন, এই প্রকল্পের জন্য স্বর্ণকার, ধোপা, নাপিত, দক্ষতা সম্পন্ন কারিগররা একাধিক সুবিধা পাবেন। এছাড়াও আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি, কারিগরদের প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের প্রচার কীভাবে হয়, তাও শেখানো হবে বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে।
নৃশংস ঘটনা, ঠাকুর দেখতে গিয়ে যৌননিগ্রহের (sexually assaulted) শিকার নাবালিকা! শনিবার ছিল বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja)। সেই উপলক্ষে বীরভূমের (Birbhum) নানুর থানার অন্তর্গত সাঁওতা গ্রামের এক নাবালিকা তার বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয় ঠাকুর দেখার জন্য। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পরিবার সূত্রে খবর, বন্ধুরা সবাই মিলে কীর্ণাহারে যায় ঠাকুর দেখতে। দ্বাদশ শ্রেণীর ওই ছাত্রী দুপুরে বেরিয়ে বিকাল পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করে। ফোনে ছাত্রী জানায় দ্রুত ফিরে আসছে সে। কিন্তু এরপর রাত হলেও ওই নাবালিকা বাড়ি ফেরেনি। এরই মধ্যে রবিবার সকালে রক্তাক্ত এবং সারা শরীরের জামা ছেঁড়া অবস্থায় বাড়ি ফেরে ওই নাবালিকা। তার এই অবস্থা দেখে নাবালিকার মা তাকে বকাবকি শুরু করেন। সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে। এরপরই তৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পাশাপাশি থানায় অভিযোগ জানানো হয়।
ওই নাবালিকা বাড়ি ফিরে তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছে, সন্ধ্যাবেলায় সে যখন বাড়ি ফিরছিল, সেই সময় চারজন তার পথ আটকায়। এরপর তাকে তুলে নিয়ে যায়। তাকে কিছু খাইয়ে দেওয়া হয় এবং সে অজ্ঞান হয়ে যায়। সকালবেলায় যখন তার চেতন ফেরে তখন একটি জায়গায় নিজেকে শুয়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পায়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যৌননিগ্রহের অভিযোগ আনা হয়েছে ওই নাবালিকার পরিবারের সদস্যদের তরফ থেকে। পুলিস বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
বিশ্বকর্মা পুজোর দিনই ঘটে গেল বিপত্তি। পুজো চলাকালীন বাড়ির মধ্যে ঢুকে এক যুবককে ছুরি দিয়ে এলোপাথারি কোপানোর অভিযোগ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। খবর জানাজানি হতেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে উত্তর ২৪ পরগণার (North 24 Parganas) নাটাগড় রামকৃষ্ণ পল্লী এলাকায়। ঘটনাস্থলে ঘোলা থানার পুলিস (police)।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার বাড়িতে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja)। সেই সময়ই এলাকার বেশ কিছু দুষ্কৃতী বাড়ির ভিতর ঢুকে ছুরি দিয়ে এক যুবককে এলোপাথারি কোপাতে থাকে। আহত যুবকের নাম সৈকত নাথ। শনিবার এমন ঘটনার পর আহতকে তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে, সেখানে প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিস বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
পুলিস সূত্রে খবর, ঘটনায় পর থেকেই অভিযুক্ত দুষ্কৃতীরা পলাতক। দুষ্কৃতীদের খোঁজার কাজ চালাচ্ছে ঘোলা থানার পুলিস। ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কিত আহতের পরিবার সহ এলাকাবাসী।
পরিবারের অভিযোগ, এই ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। এলাকার এই দুষ্কৃতীরা এর আগেও এলাকার অন্যান্য যুবকদের বিনা কারণেই মেরেছে। বাড়িতেও যদি মানুষ সুরক্ষিত না থাকে তাহলে আর কোথায় যাবেন তাঁরা? পুলিসকে জানিয়েও মিলছে না সুরাহা। এখন তাঁরা কী করবেন? এই প্রশ্নই তুলেছেম পরিবারের সদস্যরা। ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আহত যুবকের পরিবারের লোকজন।