
উত্তরবঙ্গে ফের ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হাতির। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের ভিতর ওয়েস্ট রাজাভাতখাওয়া রেঞ্জে একই সঙ্গে মৃত্যু হল তিনটি হাতির। সোমবার সকালে আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়িগামী একটি পার্সেল ট্রেনের সামনে আচমকা চলে আসে হাতির দলটি। রাজাভাতখাওয়া ও কালচিনি রেলস্টেশনের মাঝে প্রাণ গেল তাদের।
সোমবার সকালে আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ির একটি মালগাড়ি যাচ্ছিল। সেই সময় শাবককে সঙ্গে নিয়ে একটি পূর্ণবয়স্ক ও একটি মাঝবয়সী হাতি রেললাইন পারাপার করছিল। মালগাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়ে তিনটি হাতি। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেল এবং বনদফতর ও রেলের উচ্চ আধিকারিকরা। তিনটি হাতির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। এই ঘটনার জেরে বেশ কিছুক্ষণ রেল চলাচল ব্যাহত হয়।
ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিস। এভাবে ট্রেনের ধাক্কায় বারংবার হাতি মৃত্যুর ঘটনায় চিন্তিত বনদফতর। রেলের তরফে নয়া প্রযুক্তি প্রয়োগ করে হাতি মৃত্যু আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। রেললাইনের পাশে ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়। এটি মূলত এক ধরনের থার্মাল ডিভাইস। রেললাইনের কাছাকাছি কোনও হাতি এলে তার শরীরের তাপমাত্রা সেন্স করবে এই ডিভাইস। তখনই গাড়ির চালক সতর্ক হয়ে যাবেন। হাতি কাছাকাছি থাকলে ৩০ ফুটের মধ্যে এই ডিভাইস কাজ করে। এই ডিভাইসের জন্য নিকটবর্তী স্টেশনে অ্যালার্ম বেজে উঠবে। এক্ষেত্রে কেন মালগাড়ির চালক আগে থেকে বুঝতে পারলেন না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মালগাড়ির চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের ভিজিয়ানগরামে দু'টি ট্রেনের সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত কমপক্ষে ৫০ জন। এদিকে, ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে এদিন একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। একাধিক ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। ওই লাইনে রেল পরিষেবা কার্যত ব্যহত হয়েছে। কোন ট্রেনগুলি বাতিল হয়েছে, আর কোনগুলির যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে, দেখে নেওয়া যাক...
সোমবার বাতিল ট্রেনগুলি হল
০৮৫২৭ রায়পুর-বিশাখাপত্তনম প্যাসেঞ্জার স্পেশাল ও ০৮৫২৮ বিশাখাপত্তনম-রায়পুর প্যাসেঞ্জার স্পেশাল।
যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে যে ট্রেনগুলির
১১০২০ ভুবনেশ্বর-মুম্বই কোনারক এক্সপ্রেস, ১২৭০৩ হাওড়া-সেকেন্দ্রাবাদ ফলকনামা এক্সপ্রেস, ১২২৪৫ হাওড়া-বেঙ্গালুরু দুরন্ত এক্সপ্রেস, ০৩৩৫৭ বারউনি-কোয়েম্বাটুর স্পেশাল
এছাড়া, বেশ কিছু ট্রেনের যাত্রাপথও সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ২০৮০৯ সম্বলপুর-হুজুর সাহিব নান্দেদ সুপারফাস্ট ট্রেন। এই ট্রেনটি বিজয়নগরম পর্যন্ত গিয়ে ফের সম্বলপুর ফিরবে। আর ১৭৪৭৯ পুরী-তিরুপতি এক্সপ্রেস বালুগাঁও স্টেশন পর্যন্ত যাবে।
উল্লেখ্য, রবিবার রাতে ভিজিয়ানগরামে বিশাখাপত্তনম-পলাশা প্যাসেঞ্জার ট্রেন ও বিশাখাপত্তনম রায়গড় প্যাসেঞ্জার ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ফলে লাইনচ্যূত হয়ে যায় ৩টি বগি। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল কর্মীদের ‘ভুল’-এই দুর্ঘটনা। লোকো পাইলট সিগন্যাল দেখেননি। ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন রেলমন্ত্রী। শোকপ্রকাশ করেছে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও।
অন্ধ্রপ্রদেশের ভিজিয়ানগরাম জেলায় দুটি ট্রেনের সংঘর্ষ। প্যাসেঞ্জার ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যূত হয়েছে। ঘটনায় মৃত্যু কমপক্ষে ৬ জনের। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে রাত ১০টা নাগাদ জানা গিয়েছিল, ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৮ জন যাত্রী। ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৩। তাঁদের মধ্যে ৭ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। বাকিদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া চলছে। এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি।
বিশাখাপত্তনম-পলাশা প্যাসেঞ্জার ট্রেন ও বিশাখাপত্তনম রায়গড় প্যাসেঞ্জার ট্রেনের মধ্যে এই সংঘর্ষটি হয়। ঘটনায় ৩টি বগি লাইনচ্যূত হয়েছে। সাউথ কোস্টের রেলওয়ে জ়োন এমনই জানিয়েছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও রেলের উদ্ধারকারী দল। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডিও রাজ্যের আধিকারিকদের উদ্ধারকাজের নির্দেশ দিয়েছেন।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অন্ধকার থাকায় উদ্ধারকাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। সকালে আলো ফুটলে, দ্রুত উদ্ধারকাজ করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রেলমন্ত্রকের তরফে মৃতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা, গুরুতর আহতদের ২ লাখ টাকা ও যাঁদের চোট সামান্য, তাঁদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন। দুর্ঘটনার জেরে এখনও পর্যন্ত ১২টি ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি, এরই মধ্যে ফের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা (Train Accident)। বুধবার রাতে বিহারের (Bihar) বক্সারে লাইনচ্যুত হয়ে যায় আনন্দ বিহার-কামাক্ষ্যা নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেস ট্রেন। দুর্ঘটনায় অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ও ৭০ জন আহত হয়েছেন বলে সূত্রের খবর। বৃহস্পতিবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার মৃতদের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা ও আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
সূত্রের খবর, ১১ অক্টোবর, বুধবার রাত ৯টা ৩৫মিনিট নাগাদ বিহারের বক্সারের রঘুনাথপুর রেল স্টেশনের কাছেই লাইনচ্যুত হয়ে যায় আনন্দ বিহার-কামাক্ষ্যা নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি। একটির উপর আরেকটি কামরা উঠে যায়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, ট্রেনটির চারটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে, কিন্তু পরে জানা গিয়েছে, ট্রেনটির প্রায় প্রতিটি কামরাই ট্র্যাকের উপরে নেই। কিছু কামরা গড়িয়ে পড়েছে রেললাইনের পাশের ট্র্যাকে। আবার কয়েকটি কামরা বেঁকে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ট্রেনের বগির নীচ থেকে চাকা ভেঙে পাশে পড়ে থাকতেও দেখা যায়। উপড়ে গিয়েছে রেললাইনও।
গতকাল রাতে এই ঘটনা হওয়ার পরই দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। গতকাল রাত থেকেই শুরু হয় উদ্ধারকাজ। এ দিন সকালে শুরু হয় রেললাইন মেরামতির কাজ। এদিকে, রেল দুর্ঘটনার জেরে একাধিক ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। রুটও বদলে ফেলা হয়েছে। তবে কীভাবে এই ঘটনাটি ঘটল, তার তদন্ত চলছে। যেভাবে ট্রেনের কামরাগুলো লাইনচ্যুত হয়েছে তাতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কার করা হচ্ছে।
ফের বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল ট্রেন (Train)। সূত্রের খবর, মুম্বইগামী পবন এক্সপ্রেসের (Pawan Express) একটি চাকা ভাঙা অবস্থায় প্রায় ১০ কিমি রাস্তা ছুটেছে। এরপর বিকট আওয়াজ শুনতে পেয়ে চেন টেনে ট্রেন থামালেন যাত্রীরা। ঘটনাটি রবিরার রাতে বিহারের (Bihar) মুজফফরপুরে ঘটেছে বলে সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, রবিবার রাতে মুজফফরপুর থেকে মুম্বইগামী পবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ার পর থেকেই হঠাৎ একটা বিকট আওয়াজ শুনতে পান যাত্রীরা। কিন্তু এই বিকট আওয়াজের পরও ট্রেনটি দ্রুতগতিতে ছুটতে থাকে। আর এভাবেই ট্রেনটি ১০ কিমি পথ আরও যাত্রা করে। পরে ভগবানপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছলে সেখানে যাত্রীরা ট্রেনের চেন টেনে থামিয়ে দেন। এরপরই ট্রেনের সেই আওয়াজের কথা ট্রেন চালককে জানানো হলে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা হয়।
এরপর তদন্ত করার পর দেখা যায়, ট্রেনের এস ১১ নম্বর কোচের একটি চাকা ভাঙা ছিল। আর এর জন্যই বিকট আওয়াজ হচ্ছিল। এরপর সেই রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে যান রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ার ও রেলকর্মীরা। চাকায় ফাটল ধরার পরার পরেই সেটিকে বদল করা হয়। এরপর সমস্ত বিষয় ভালোভাবে চেক করার পর ফের যাত্রা শুরু করে ট্রেনটি।
ওড়িশার (Odisha) বালেশ্বরে (Balasore) ট্রেন দুর্ঘটনার (Train Accident) তদন্তে এরাজ্যের দুটি জেলায় তল্লাশি চালাল সিবিআই। দুর্ঘটনাস্থলের সিগন্যাল এবং রিলে রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী আমির খানের সন্ধানে হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে তল্লাশি চালায় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।
সিবিআই সূত্রে খবর, হুগলির ডানকুনির বাসিন্দা আমির খান। খড়গপুর ডিভিশনের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ঘটনার দিন তিনি বাহানগা বাজার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। বালেশ্বরের সোরহা বাজার এলাকার একটি বাড়িত ভাড়া থাকতেন বলে জানা গেছে। যদিও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি বলেই সূত্রের খবর।
যদিও আমির খানের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক বিবৃতি দিয়ে বলেন, 'রেলের এক কর্মী নিখোঁজ হয়েছেন বলে কিছু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু, তা সঠিক নয়। কেউ নিখোঁজ বা অপহরণ হননি। রেলের সব কর্মী তদন্তে সহায়তা করছেন।' এদিকে আমির খানের সোহরা বাজার এলাকার ভাড়া বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromondeal Express) দুর্ঘটনায় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। প্রিয়জনকে হারিয়েছেন অনেকে। সেই ক্ষত সারতে এখনও সময় লাগবে অনেকটা। আর এধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা (Train Accident) থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে ট্রেনে ওঠার আগে বিমা করে রাখতে ভুলবেন না। খুব কম খরচেই বিমা করার সুযোগ দিচ্ছে রেল। টিকিট কাটার সময় মাত্র ৩৫ পয়সা খরচ করতে হবে। তাহলেই মিলবে বিমার সুবিধা। রেল দুর্ঘটনায় কোনও বিমা (Insurance) করা যাত্রীর মৃত্যু হলে, তিনি পেয়ে যেতে পারেন ১০ লক্ষ টাকা।
কোনও যাত্রী দুর্ঘটনায় প্রাণে বাঁচলেও পুরোপুরি অক্ষম হয়ে পড়েন, তবেও তিনি ১০ লক্ষ টাকা পাবেন। যদি আংশিক অক্ষম হন, পাবেন ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য ২ লক্ষ টাকা। শুধু তাই নয়। রেল দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যু হলে দেহ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার খরচ হিসাবেও আইআরসিটিসি ১০ হাজার টাকা দেবে বলেই বিমার নিয়ম বলছে।
বিমার সুবিধা পাওয়ার জন্য অনলাইনে টিকিট কাটতে হবে। কনফার্ম টিকিটের সঙ্গে আর এসি টিকিটেও মেলে বিমার সুবিধা। টিকিট কাটার পরে মোবাইলে বিমা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানিয়ে দেয় আইআরসিটিসি। তবে বিমা বাধ্যতামূলক নয়।
২ জুন, শুক্রবারের ওই অভিশপ্ত রাত এখনও কেউ ভুলতে পারেননি। এবার আরও একটি ট্রেন দুর্ঘটনার (Train Accident) কবলে। ঘটনাস্থল সেই ওড়িশা (Odisha)। জানা গিয়েছে, ওড়িশার বারগড় জেলার মেধাপালির কাছে মালগাড়ির (Freight Car) পাঁচটি কামরা বেলাইন হয়েছে। ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই।
জানা গিয়েছে, চুনাপাথর ভর্তি ওই মালগাড়ি ন্যারোগেজ লাইন দিয়ে খনি এলাকা থেকে সিমেন্ট কারখানা পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত হয়। ভারতীয় রেলের অন্তর্গত নয়। এমনই জানিয়েছে ইস্ট কোস্ট রেলওয়ে। কী কারণে বেলাইন হল মালগাড়ি, তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ।
শুক্রবার সন্ধেবেলায় ৭ টা নাগাদ বেলাইন হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এছাড়াও দুর্ঘটনাগ্রস্থ হয় মালগাড়ি ও বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসও। দুর্ঘটনায় ২৭৫ জনের প্রাণ গিয়েছে।
বালেশ্বরের (Balasore) ট্রেন দুর্ঘটনায় রেলের প্রাথমিক দাবি, সিগন্যালের (Signal) সমস্যার জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এই দুর্ঘটনায় আহত যশবন্তপুরের চালকের (Driver) বয়ানে কিন্তু অন্য তথ্যই উঠে এসেছে। হাসপাতালে আহত যশবন্তপুরের চালক সিআর রথের দাবি, পাশাপাশি দুটি ট্র্যাক দিয়েই ছুটছিল দুটি ট্রেন। তাঁর ট্রেনের পিছনের চারটে বগি কীভাবে খুলে গেল, তা তিনি বুঝতে পারেননি। বিশেষজ্ঞদের দাবি, চালকের এই বয়ানের সঙ্গে অবশ্য মিলছে না রেলের প্রাথমিক রিপোর্ট। তবে দক্ষিণ-পূর্ব রেল জানিয়েছে, শুক্রবারের এই ঘটনায় সুস্থ আছেন তিনটি ট্রেনের চালক, সহকারি চালক এবং গার্ডেরা।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার কিছুক্ষণের মধ্যেই বালেশ্বরের দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে এনেছিল রেল। সেখানে দাবি করা হয়েছিল, সিগন্যাল বুঝতে না পেরে লুপ লাইনে ঢুকে গিয়েছিল আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। আর এখানেই প্রশ্ন তোলেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা দাবি করেন, লুপ লাইনে যদি দ্রুত গতিতে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেস ঢুকে যায়, তাহলে মালগাড়ি অক্ষত রইল কী ভাবে। কী ভাবে পাশের ট্র্যাকে ছিটকে এল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া যশবন্তপুরের চারটি বগি? রেল জানায়, বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট পরে প্রকাশ করা হবে।
এদিকে রবিবার সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে দক্ষিণ-পূর্ব রেল বাহানাগায় কাজ প্রায় শেষের পথে। লাইন থেকে সরানো হয়েছে দুমড়ে যাওয়া বগি। রেলের দাবি এই ঘটনায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কমবেশি ২১টি বগি হয় লাইচ্যুত না হলে আটকে গিয়েছিল।
মণি ভট্টাচার্য: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় (Coromandel Express Accident) এখনও অবধি মৃত ২৮৮। আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০০-এর বেশি। এ অবস্থায় একদিকে এখনও যেমন চলছে উদ্ধারকার্য, তেমনই চলছে বিভাগীয় তদন্ত। এ অবস্থায় আনরিজার্ভড বা জেনারেল কামরায় থাকা যাত্রীদের অধিকাংশ মৃতদেহ সনাক্ত করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কতৃপক্ষ। সূত্রের খবর, রিজার্ভড কামরার যাত্রীদের তথ্য ঘেঁটে তাঁদের মৃতদের পরিবারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে রেল। কিন্তু কিছু মৃতদেহ বা আহতের পরিচয়ের খোঁজ এখনও পায়নি রেল কর্তৃপক্ষ।
এই সমস্যার সমাধান করতে রেলের ওয়েবসাইটে বা বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁদের ছবি দিয়ে খোঁজ চালানো হবে, এমনটা আগেই সিএন-ডিজিটালকে জানিয়েছিল ওড়িশার মুখ্য সচিব। এবার দক্ষিণ পূর্ব রেলের ওয়েবসাইটে এই দুর্ঘটনায় আহত ও মৃতের ছবি সহ তথ্য আপলোড করেছে দক্ষিণ পূর্ব রেল। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী বলেন, 'আপাতত যাদের স্পষ্ট ছবি পাওয়া গেছে তাদের ছবি আপলোড করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট তথ্য-প্রমাণ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে পরিবারকে মৃতদেহ বা আহত ব্যক্তিদের তুলে দেওয়া হবে।'
নিম্নলিখিত ওয়েবসাইট গুলির মাধ্যমেই খোঁজ চালানো হচ্ছে।
নিহতদের খোঁজের জন্য
আহতদের খোঁজের জন্য
ইতিমধ্যেই ট্রেন দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ জানিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কতৃপক্ষ। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, সিগন্যালিং বিভ্রাটের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।' সাম্প্রতিক কালে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেনি বলেই দাবি রেলের। এর পিছনে আদতে কী কারণ রয়েছে তা নিয়ে উচ্চবিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অর্চনা জোশি। তিনি জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার আসল কারণ তদন্তের রিপোর্টেই পাওয়া যাবে। যদিও এই ঘটনায় রেলের গাফিলতি বলেই দাবি সাধারণের। পাশাপাশি রেল আধিকারিকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
দীপিকা দাস: প্রাথমিক তদন্তে (Preliminary Probe) উঠে এল, ট্রেন দুর্ঘটনার পিছনের কারণ। সিগন্যাল (Signal) ত্রুটির জন্যই ওড়িশার বালেশ্বরে প্রাণ গেল ২৮৮ জনের, এমনটাই প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। শনিবার সিএন-ডিজিটালকে এমনটাই জানালেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের সিপিআরও আদিত্য কুমার চৌধুরী। তিনি জানান, একটি যৌথ পরিদর্শনের পর প্রাথমিকভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। রেল আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সিগন্যালের ত্রুটির কথাই জানিয়েছেন। লুপ লাইনে ঢোকার ফলেই নাকি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সঙ্গে মালগাড়ির সংঘর্ষ হয়। তবে জানানো হয়েছে, এটি প্রাথমিক রিপোর্ট। এখনও তদন্ত বাকি রয়েছে ও বিস্তারিত তদন্তের পরই প্রকাশ্যে আসবে যে, ঠিক কী কারণে এমন ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আপাতত ভাবে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যের পর জানা গিয়েছে, যে এই করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা হার মানিয়েছে গাইসলের দুর্ঘটনার ভয়াবহতাকেও।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় ট্রেন দুর্ঘটনার পর থেকেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ওড়িশার বালেশ্বর। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে। আবার আহত হয়েছেন ১০০০-এর বেশি। এরপরই সিএন ডিজিটালের তরফে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের সিপিআরও আদিত্য কুমার চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'প্রাথমিকভাবে তদন্ত করার পর রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, আপ মেন লাইনে সিগন্যাল দেওয়া ছিল কিন্তু পয়েন্ট ছিল লুপ লাইনে। ফলে সিগন্যালের ত্রুটির কারণেই এমনটা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এরপর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষেই করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়।' তিনি আরও জানিয়েছেন, 'এই তথ্য একেবারেই প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। ঠিক কী ঘটেছিল, তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। পুরো ঘটনা চূড়ান্ত তদন্তের পরই প্রকাশ্যে জারি করা হবে প্রেস বিজ্ঞপ্তি।'
এছাড়া এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ, তা জানতে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অর্চনা জোশীর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তাঁর ফোন ব্যস্ত থাকায় তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
একটুর জন্য রক্ষা। নাহলে ফের বড়সড় ট্রেন দুর্ঘটনার (Train Accident) কবলে পড়তে হত যাত্রীদের। চলন্ত অবস্থাতেই গয়া থেকে দিল্লিগামী মহাবোধী এক্সপ্রেসের (Mahabodhi Express) দুটি বগি ইঞ্জিন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শনিবার বিহারের (Bihar) রোহতাস জেলার দীনদয়াল উপাধ্যায় রেলওয়ে ব্লকে সাসারাম এবং কারাবান্দিয়া স্টেশনে মাঝে দুর্ঘটনার শিকার হয় ট্রেনটি। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রেনটি প্রায় ৪২ মিনিটের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি রেলের ইঞ্জিনিয়াররা চলে আসে। এরপর বগিটিকে সংযুক্ত করে দেয় এবং রওনা দেয় গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে।
আচমকা ইঞ্জিন থেকে বগি দুটি আলাদা হয়ে যায়। আর তা গার্ডের নজরে আসতেই চালককে সাবধান করেন। চালক ট্রেন থামিয়ে দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে RPF এবং GRP-এর একটি দলও।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী টিম। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, এর পিছনে কার গাফিলতি রয়েছে, তাও তদন্ত করে দেখা হবে।