২০১৯ থেকে ২০২৩ চার চারটে বছর কেটে গিয়েছে। তবু হতাশা কাটেনি ভারতের। দু’বারই সেমিফাইনালে এসে স্বপ্নভঙ্গ হলো ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের (ICC Women’s World Cup T20)। টি-২০ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল হরমনপ্রীত কৌররা (Harmanpreet Kaur)। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ছন্নছাড়া ছিল টিম ইন্ডিয়া। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে অজি বাহিনী ৪ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে করে ১৭২। জবাবে ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ভারতীয় দলের রান ১৬৭। মাত্র ৫ রানে পরাজিত হলো ভারত।
অধিনায়ক হরমনপ্রীতের রান আউটের পরেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পরে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন। একা ২২ গজে দাঁড়িয়ে জেমাইমা রডরিগেজকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টানছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। ব্যক্তিগত রান করেন ৫২। কিন্তু রান আউটের পর আর খেলায় ফিরতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। নিজের রানআউট নিয়ে মুষড়ে পড়েছিলেন হরমনপ্রীত।
ম্যাচ শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তিনি জানিয়েছেন, আরো একটু সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল। এর আগে ২০২০ সালে মহিলা টি-২০ বিশ্বকাপ এবং ২০২২ সালে কমনওয়েলথ গেমসে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হয় ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল।
প্রসূন গুপ্ত: অস্ট্রেলিয়াতে টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) শেষ হতে না হতেই ফের ক্রীড়াপ্রেমীদের নজরে ফুটবল বিশ্বকাপ (FIFA World Cup)। একটি সার্ভে রিপোর্ট জানাচ্ছে যে ফুটবল বিশ্বকাপ সারা বিশ্বের প্রায় সব দেশই উপভোগ করে থাকে। আরও আশ্চর্যের বিষয় ভারত (Indian Football) এই পর্যায়ে পৌঁছতে না পারলেও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দর্শক ভারতেরই। এরপর চিন, বাংলাদেশ ইত্যাদি। কাজেই না খেললেও ভারতীয় দর্শকদের অস্বীকার করতে পারে না ফিফা। দেখা যায় বিশ্বের যেকোনও দেশেই খেলা হোক না কেন ভারতে দর্শকের কথা মনে রেখেই ক্রীড়াসূচি (Fixture) করা হয়ে থাকে।
বিজ্ঞাপন বা বিপণনে এগিয়ে ভারত। ২০১৮ বিশ্বকাপ হয়েছিল রাশিয়াতে, ফাইনালের সময় ফেলা হয়েছিল স্থানীয় সময় দুপুর ২টোয়। ব্রাজিলও ওদের সময় দুপুরেই খেলা ফেলেছিল। লাতিন আমেরিকার সময় ধরে খেলা ফেললে খেলা পড়তো ভোররাতে। কাজেই ভারতীয় বিশেষ করে বাঙালি দর্শককে অগ্রাহ্য করে না ফুটবল বিশ্ব। এবারে খেলা এশিয়ার অন্যতম তেলসমৃদ্ধ দেশে কাতারে। কোটি কোটি ডলার খরচ করে বানানো হয়েছে স্টেডিয়াম।লাগোয়া অত্যাধুনিক হোটেল ইত্যাদি। যদিও ইউরোপ বা আমেরিকানদের জন্য প্রকাশ্যে সুরা বিক্রি নিষিদ্ধ করেও আমদানির কথা ভেবে অবশেষে বিয়ার অবধি ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এবার চলে আসি ফুটবল পাগলের শহর কলকাতা বা ঢাকায়। একদিকে লাগোয়া বাংলাদেশ, অন্যদিকে লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ। এই দু'স্থানের দর্শক কয়েক কোটি। এরা জানে ভারত বা বাংলাদেশ আগামী ৫০ নাকি ১০০ বছরেও বিশ্বকাপ ফুটবল খেলতে পারবে কিনা সন্দেহের। তবুও বিশ্বকাপ এলে এঁরাই হয়ে যাবে কেউ ব্রাজিল, কেউ আর্জেন্টিনা, কেউবা জার্মানি বা স্পেন অথবা ফ্রান্সের সমর্থক। এরাই পাড়াতে কিংবা বাড়ির ছাদে অথবা ক্লাবে ক্লাবে লাগবে কেউ হলুদ/সবুজ, কেউ নীল/সাদা পতাকা। গলা ফাটাবে তারা অন্য দেশের জন্য। আসলে অন্য দেশ নয় এই দেশগুলিই হয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান বা ঢাকা মহামেডান বা আবাহনী চক্র। এরাই মাতোয়ারা করে রাখবে আগামী দুটি মাস।
শেষ ওভারে বেন স্টোকস মিডঅনের উপর দিয়ে বলটি তুলে দিতেই ১৯ ওভারেই বিশ্ব চ্যাম্পিও হলো ইংল্যান্ড দল। এবারের টি২০ বিশ্বকাপে ইংলিশম্যানেরাই ছিল চ্যাম্পিয়নের দাবিদার কিন্তু গ্রুপ লিগে আয়ারল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের পর অনেকেই ভেবেছিলো হয়তো একটু বেশি ভাবা হয়েছিল তাদের নিয়ে। আসলে এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ব্যালেন্স দল ছিল ইংরেজরাই। বেশির ভাগ খেলোয়াড়রাই আইপিএলের নামি দামি খেলোয়াড়। সেই প্রমাণটিই আজ দিয়ে দিলো। একই সাথে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে দিলো না তারা। ১৯৯২ এ এই মেলবোর্নেই হয়েছিল ইমরানের পাকিস্তানের সঙ্গে ইংল্যান্ডের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ ফাইনাল। সেবারেও পাক দল নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল এবং হেরেছিল। ভাবা গিয়েছিলো হয়তো ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে পারে কিন্তু হলো না শেষ হাসিটি ছিল বেন স্টোকের ব্যাটের ভরসায়।
ঠিক সময়ে রবিবাসরীয় মেলবোর্ন ফাইনাল শুরু হয়। ঝড়বৃষ্টির প্রবল সম্ভবনা যেমন ছিল তেমন ছিল খেলা না হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু ব্রিটিশদের কাছে আনলাকি ১৩ শেষ পর্যন্ত লাকি হয়ে উঠলো। প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৩৭ এই গুটিয়ে যায় আজম বাবরদের পাকিস্তান। সর্বোচ্চ রান আসে শান মাসুদের ব্যাট থেকে মাত্র ৩৮। এরপরই বাবরের ৩২। মেলবোর্ন মাঠ কিন্তু আজ বোলারদের যথেষ্ট সাহায্য করেছে। দু দলের বোলাররাই দুর্দান্ত বল করেছেন। বিশ্বের সেরা টি২০ জুটি রিজওয়ান, বাবর আজ প্রথম থেকেই ঢিমে তালে খেলছিল। রান ওঠেনি কোনও দলেরই আশানুরূপ।
এরমধ্যে স্যাম কারেন সেরা বল করেন মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট দখল করেন তিনি। এরপরই বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস বোলিংয়ের গোড়াপত্তন করতে এসে নেন একটি উইকেট। পরে ব্যাট করতে এসে ভারতের বিরুদ্ধে রেকর্ড করা বাটলার, হেলেস জুটি চলে যান বেশি রান করার আগেই। অধিনায়ক বাটলারের সংগ্রহ ২৬ এবং হেলেসের মাত্র ৭। একটা সময়ে দেখা যায় ৬০ বলে ৩ উইকেট এবং দরকার ৬১ রান। এই সময়ে স্টোকস খেলাটি ধরেন কিন্তু বড় শট নিতে দেখা যায় নি। নেবার মতো অবস্থায় মাঠ ছিল না। এরই মধ্যে আরও ৬ ওভারের মধ্যে আরও দুটি উইকেট পরে যায়। খেলা ধরেন অবশ্য মঈন খান। কোঠিন অবস্থায় ১৫ বলে ১৯ রান করে আউট হয়ে যান। এ সময়ে ১২ বলে ৭ রান দরকার ছিল যা আজকের সেরা স্টোকস তুলে নেন। পাক দলের দুর্ভাগ্য প্রথমে দুর্দান্ত বল করেও শাহীন আফ্রিদি তৃতীয় ওভার বল করতে এসে পায়ে পেশির টানে ম্যাথ থেকে বেরিয়ে যান সঙ্গে নিয়ে যান পাকিস্তানের ভাগ্য।
প্রসূন গুপ্ত: গ্রুপ লিগের ম্যাচে পাকিস্তানকে দেখে কেউ ভাবতেই পারেনি যে এই দলটি টি-২০-র ফাইনালে উঠবে। দলের সেরা ব্যাটার অধিনায়ক বাবর আজম বিশ্বের অন্যতম সেরা হওয়া সত্বেও লিগ ম্যাচগুলোতে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানের মেন্টর ম্যাথু হেডেন কিন্তু আশা হারাননি, বলেছিলেন বাবার ঠিক সময়ে আসল খেলাটি খেলে দেবে। বলা যেতেই পারে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোনওভাবে সেমিফাইনালে উঠেছিল তাঁরা। কৃতিত্ব অবশ্যই দেওয়া যেতে পারে নেদারল্যান্ড দলটিকে। আচমকাই রবিবারের সকালে টুর্নামেন্টের রং বদলে দিয়েছিলো চিরকালের চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে। বলা যেতে পারে ভাগ্যের জোরে সেমিফাইনালে উঠেছিল তাঁরা। লিগের শেষ ম্যাচে অবশ্য অনায়াসেই বাংলাদেশকে হারিয়ে উঠেছিল চূড়ান্ত পর্বে। এই একই ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯২-তে। সেবার ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে ইমরান খানের দল বিশ্বকাপ জিতেছিল।
বুধবারের টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দল নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে মেলবোর্নের পথে পাকিস্তান। অপেক্ষা এবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের দিকে। আজকে কখনওই পাকিস্তানকে চাপের মুখে পড়তে হয়নি।বোলিং বা ব্যাটিং উভয় ক্ষেত্রেই পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডের থেকে অনেক ভালো খেলেছে। প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড ১৫২ রান করে। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামস এবং মিচেল জুড়ি ভালো না খেললে এই রান উঠতো কিনা সন্দেহের। পাক বোলিংয়ে উইকেট টু উইকেট বল করার নির্দেশ ছিল মেন্টর ম্যাথু হেডেনের থেকে। ব্যাট করতে নেমে আজ নিজেকে অবশেষে তুলে ধরতে পারলেন বাবর। তাঁর সংগ্রহ ছিল ৫৩ এবং জুটির অন্য খেলোয়াড় মহম্মদ রিজওয়ান করেন ৫৭। ৩ নম্বরে ব্যাট করতে এসে হ্যারিস করেন ৩০ রান। একেবারে শেষ মুহূর্তে দুটি উইকেট পরে গেলেও তখন জেতাটা ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা।
১৯৯২-তে পাকিস্তান সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারায়। এবার কি সেদিকে যাচ্ছে ফাইনালের সমীকরণ। পরের সেমিফাইনালে অবশ্য ভারতকে ইতিহাস বদল করতে জিততেই হবে। ইংল্যান্ড দলটি কিন্তু যথেষ্ট ভাল। এবার ১৪০ কোটির টেনশন বৃহস্পতিবার বারবেলার দিকে তাকিয়েই।
প্রসূন গুপ্ত: চিত্র পরিষ্কার, চার দেশ টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। এই চার দেশের মধ্যে এমন সব ক্রিকেটার আছেন যাঁরা নিজের দিনে সেরাটা বের করতে পারেন। আলাদা করে খেলোয়াড় ধরে ধরে কে সেরা বা কে সেরাটা দিতে পারবে, সেমিফাইনালে এবং ফাইনালে তা নিয়ে আলোচনা বৃথা। ২০ ওভারের খেলায় সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়ে এই যে ব্যাটাররা বল পিটিয়ে যায় এবং শুরু থেকেই বোলাররা চেষ্টা করে উইকেট টু উইকেট বল ফেলতে। তবে অনেক বিশ্বমানের বোলার এই ফরম্যাটে ক্ষতিগ্রস্ত। তাঁদের করা অসাধারণ বলগুলিকে বাউন্ডারির বাইরে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেট বা ওয়ান ডেতেও বোলারদের ভূমিকা থাকে। এই কারণে তাঁদের ঝুলিতে শতাধিক উইকেট, টি-২০-তে সে সুযোগ কোথায়?কপিল দেবের বলে ছয় মারা অসম্ভব ছিল, কিন্তু আজকে কুড়ি-কুড়ি ফরম্যাটে কপিল করতেন কী? বাউন্স করা বল উইকেটকিপারের মাথার উপর দিয়ে সিক্সার মারছেন ব্যাটাররা।
এবার প্রশ্ন হচ্ছে চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভবনা কার? যদি বলা যায় ভারতের, অসম্ভব কিছু নয়। রোহিতের দলটির মধ্যে ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের সেরারা রয়েছেন। ফর্মে ফিরেছে কেএল রাহুল, বিরাট কোহলী। দীর্ঘদিন সুযোগ না পাওয়া অশ্বিনও উইকেট পাচ্ছেন। সমস্যা শুধু রোহিত ফর্মে নেই, কিন্তু কে বলতে পারে নক আউট পর্যায়ে ফর্মে ফিরতেই পারেন রো-হিট।
ধারাবাহিক ভালো খেলছেন কোহলি, সূর্যকুমার যাদবেরা। দলে ৬ জন ভালো ব্যাটার রয়েছেন। বোলিংয়ে শামি, আর্ষদীপ সিং ভালোই বল করছেন। কিন্তু তবুও মনে রাখতে হবে ইংল্যান্ড বা নিউজিল্যান্ডের অধিকাংশ ক্রিকেটার আইপিএল খেলেন এবং তাঁরা ভারতীয় খেলোয়াড়দের সঙ্গে বছরে ৩-৪ মাস ওঠাবসা করেন। এই তিন দেশের সবাই সব খেলোয়াড়দের সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল। রইলো বাকি পাকিস্তান, বাবরেরর দল এই বিশ্বকাপে খানিকটা ভাগ্যের জোরে শেষ চারে গিয়েছে।
টি-২০ বিশ্বকাপ (T-20 World Cup) থেকে ছিটকে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা (SriLanka)। তার মধ্যেই চাঞ্চল্যকর খবরে চিন্তিত শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট টিম (Cricket)। শেষমেশ বড় পদক্ষেপ নিল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের কার্যনির্বাহী কমিটি। ব্যাটার দানুস্কা গুনাথিলাকাকে (Danushka Gunathilaka) সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বরখাস্ত করার কথা ঘোষণা করেছে। এমনকি কোনও খেলার জন্য তাঁকে বিবেচনা করা হবে না। তবে এত বড় সিদ্ধান্তের পিছনে কী কারণ?
অস্ট্রেলিয়াতে টি-২০ বিশ্বকাপ চলাকালীন ধর্ষণের (Rape) অভিযোগে গ্রেফতার (Arrested) করা হয়েছে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান দানুস্কা গুনাথিলাকাকে (Danushka Gunathilaka)। ২৯ বছর বয়সী এক মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সিডনির হোটেল থেকে শ্রীলঙ্কার ব্যাটার-কে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় সিডনি সিটি পুলিস স্টেশনে। তাঁকে ছাড়াই অস্ট্রেলিয়া ছেড়েছে সিংহলি ক্রিকেট দল।
জানা গিয়েছে, একটি অনলাইন ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল দানুস্কার। গত ২ নভেম্বর দু'জনে সাক্ষাৎ করেন। তারপরই দানুস্কার বিরুদ্ধে এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে নিউ ওয়েলস পুলিস।
উল্লেখ্য, অভিযোগকারী ওই মহিলা জানিয়েছেন, ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে কিছু দিন আগেই। সেটি শ্রীলঙ্কা দল যে হোটেলে ছিল, সেখানে হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে একটি বাড়িতে। মহিলার অভিযোগ পেয়ে গুনাথিলাকাকে শনিবার ভোররাতে হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রূপ শীর্ষে থেকেই টি-২০ বিশ্বকাপের (T-20 World Cup) সেমিফাইনালে ভারত (India)। রবিবার সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচে জিম্বাবোয়ের (Zimbabwe) বিরুদ্ধে ৭১ রানে জয় পেল ভারত। রান রেটে গ্রূপের শীর্ষে টিম ইন্ডিয়া। শেষ চারে রোহিতদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড।
অ্যাডিলেড প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৮৬ রান করেছিল মেন ইন ব্লু। কে এল রাহুল একা করলেন ৫১। কিন্তু রোহিত রান পেলেন না। বিরাট রান পাননি। ২৬ করে আউট হয়ে গেলেন। তবে নতুন সূর্যোদয় দেখল অ্যাডিলেড। ২৫ বলে ৬১ রান সূর্যের। ভারতের এবি ডিভেলিয়ার্স। অফ স্টাম্পের বাইরের বল লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকালেন। ৩৬০ ডিগ্রি মনে করিয়ে দিলেন। এক ক্যালেন্ডার বছরে হাজার রান করে নতুন রেকর্ড গড়লেন সূর্য।
পাকিস্তানের মহম্মদ রিজওয়ানের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার যিনি টি-টোয়েন্টিতে এই রেকর্ড করলেন। সূর্যের তেজে ছারখার প্রতিপক্ষ। জবাবে ১১৫ রানে থামল জিম্বাবোয়ে। বল হাতে অশ্বিন পেলেন তিন উইকেট। হার্দিকের সংগ্রহ ২ উইকেট। সব মিলিয়ে ব্যাটিং, বোলিং সবেতেই দাপট ভারতের।
বিশ্বকাপ টি-২০ জমে উঠেছে। আচমকাই রবিবারের মস্ত ধাক্কা টুর্নামেন্টের রং পাল্টিয়ে দিল। ছুটির দিনে অনেকেই দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। রবিবারের একমাত্র খেলায় ধরে নিয়েছিল ভারতীয় দর্শকরা যে ভারত কোনও ভাবে জিম্বাবোয়েকে হারাক, শান্তিতে ভারত এক নম্বর হয়ে সেমিফাইনালে যাক। লোকের ধারণা আর কি বা রয়েছে রবিবাসরীয়তে? কারণ আজকের একটি খেলা দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম নেদারল্যান্ড, যেখানে টুসকি দিয়ে জিতে যাবে আফ্রিকানরা। আর খেলে বলতে পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ যেখানে ফল নিয়ে কি লাভ, কারণ এরা তো কেউই তো আর সেমিফাইনালে যাবে না। কিন্তু ক্রিকেট এক বলের খেলা, কখন কি হয়ে যাবে কেউই কি বলতে পারে?
কার্যত রবিবারের রবির রং পাল্টিয়ে ফেললো সমস্ত জল্পনা। ভারতীয় সময় আলো না ফোটা সকালে শুরু হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম নেদারল্যান্ডের খেলা। চিরকালের চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকা সদ্য বিশ্ব ক্রিকেটে আসা ফুটবলের চোকার্স দেশ নেদারল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো। জমে গেলো ক্রিকেট। সকলের কাছে মৃত্যু থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কাছে সুযোগ এসে গেল। যে জিতবে সেই যাবে সেমিফাইনালে। এবং এবার আর সুযোগ নষ্ট করলো না পাকিস্তান। বাংলাদেশকে অনায়াসেই হারিয়ে এবারে সেমিতে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি। অন্যদিকে ভারত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইংল্যান্ডের সঙে লড়াইতে।
ইতিহাস কি ফিরে আসে? ১৯৯২-এর বিশ্বকাপ ক্রিকেটে পাকিস্তান খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সেমিফানালে পৌঁছেছিল। তারপর জিতে ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইমরান খান বিশ্বকাপের দখল নিয়েছিল। দেখার বিষয় ভারত কি হারাতে পারবে ইংল্যান্ডকে? যদি পারে তবে অন্য খেলা, কিন্তু যদি ইংল্যান্ড ফাইনালে ওঠে? সেবারেও কিন্তু টুর্নামেন্টটি অস্ট্রেলিয়াতেই হয়েছিল ঠিক ৩০ বছর আগে।
প্রসূন গুপ্ত: ভারতীয় ক্রিকেটের সুপার স্টারের সংখ্যা খুব বেশি নয়। প্রচুর রান করলেই সুপারস্টার হওয়া যায় না। দেখতে হয়ে যে জনতার মনে সেই খেলোয়াড় কতটা দাগ কেটেছেন। ভারতীয় ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার সুনীল গাভাস্কার, দ্বিতীয় কপিলদেব, তৃতীয় সচিন তেন্ডুলকার এবং শেষ যিনি, তিনি আজকের নায়ক বিরাট কোহলি। ক্রিকেটে বিশ্বনাথ ভেঙ্গসরকার, বেদি, অনিল কুম্বলে, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলি থেকে মহেন্দ্র সিং ধোনি; এঁদের অবদান বিশাল। এছাড়াও অনেকেই তাঁদের ক্রিকেট জীবনে ভারতের হয়ে সেরা সব ম্যাচ খেললেও এঁদের নিয়ে ক্রিকেট বিশ্ব মাতামাতি করেনি। যদিও ভারতীয় ক্রিকেটে এঁদের অস্বীকার করা অন্যায়। তবুও আলোচিত সেরা চারে, উপরের নামগুলো নিজেদের সময় বিশ্ব সেরা ছিলেন।
বিরাট ক্রিকেটে এসেছেন সচিনের খেলা ছাড়ার আগে পরে। সচিন খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর হা হুতাশ উঠেছিল যে বিশ্বসেরা খেতাব আর বোধহয় আর ভারতে রইল না। কিন্তু দ্রুত কোহলি সচিনের জায়গাটা নিয়ে নিল, যদিও এখনও অনেক পথ বাকি। অবশ্য বিরাটের বয়স আজ ৩৪ পূর্ণ হল। বিরাটের খেলার মধ্যে, বিশেষ করে স্ট্রোক নেওয়ার ক্ষেত্রে কপিবুক গাভাস্করকে যেমন পাওয়া যায় তেমনই ফ্রন্টফুটে বা ব্যাকে গিয়ে অফ সাইড স্ট্রোক দেখলে সচিনকে মনে পরে। এযাবৎ বিরাট ১০২ টেস্টে ৮০৭৪ রান করেছেন, ৫০ ওভারের খেলায় ১২,৩৪৪ রান এবং টি-২০ তে ১১৩ ম্যাচে করেছেন ৩৯৩২। সচিনের মতো ১০০ সেঞ্চুরি না থাকলেও আরও দৃঢ়তার সঙ্গে খেললে তাঁর রেকর্ড ভেঙে দেবে বিরাটই, বলেছেন স্বয়ং সচিন তেন্ডুলকার।
গত তিন বছর ধরে রানের খরা চলছিল কোহলির। এত দীর্ঘ সময় এর আগে কারুর ব্যাড প্যাচ থাকে না। নেতৃত্ব হারালেন তবুও ফর্মে ফিরতে পারছিলেন না। সানি গাভাস্কর বারবার সতর্ক করেছিলেন। ইতিমধ্যে বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মাকে, সন্তানও হয়েছে। হয়তো এদর সাথে অনেকটাই জড়িয়ে পড়েছিলেন বিরাট। কিন্তু সুসময় এলো অবশেষে, এশিয়া কাপ যদি ট্রেলার হয়, তাহলে টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ পুরো সিনেমা। হারা ম্যাচ যেভাবে জিতিয়েছেন বিরাট, তার তুলনা কোনও কিছুতেই হয় না। একার খেলাতেই কামাল করছে ভারত। সবার আশা ফাইনাল অবধি এই ফর্মেই যেন থাকে ভিকে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে কঠিন হয়ে গেল সাউথ আফ্রিকার (South Africa) শেষ চারে যাওয়ার নিশ্চয়তা। বরুণ দেবের অভিশাপ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না দক্ষিণ আফ্রিকার। ৩০ বছর আগে সিডনির (Sydney) মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ডোনাল্ডদের মুখের হাসি মিলিয়ে দিয়েছিল বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার বাভুমা-কুইন্টন ডি ককদের একই পরিণতি হল। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতলে দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি সেমিফাইনালে যাওয়ার রাস্তা পাকা হয়ে যেত। পাকিস্তানের (Pakistan) ১৮৫ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর যখন ৯ ওভারে ৬৯, তখনই বৃষ্টি নামে।
ম্যাচ বন্ধ করতে বাধ্য হন আম্পায়াররা। সেই সময় ১১ ওভারে ১১৬ রান প্রয়োজন ছিল প্রোটিয়াদের। ওভার প্রতি প্রয়োজন ছিল প্রায় সাড়ে ১০ রান। স্থানীয় সময় পেরিয়ে যাওয়ায় ওভার যে কমবে, তা নিশ্চিত হয়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্যমাত্রা আরও কঠিন হতে পারে বলেই আশঙ্কা ছিল। ম্যাচ শুরু না হলে দক্ষিণ আফ্রিকা হারতই। ম্যাচ শুরুর পর দক্ষিণ আফ্রিকা বেশি উইকেট হারানোর কারণে তাদের লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে যায়। ম্যাচ কমে দাঁড়ায় ১৪ ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য হয় ১৪২ রান। অর্থাৎ পাঁচ ওভারে তুলতে হত ৭৩ রান। ওভার প্রতি তখন প্রয়োজন ১৪.৬ রান।
টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের বৃষ্টিবিঘ্নিত রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫ রানে হারাল ভারত (India beats Bangladesh)। এই জয়ের সঙ্গে শেষ চারের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল টিম ইন্ডিয়া (India)। বুধবার বাংলাদেশ টস জিতলেও প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৮৪ রান তোলে ভারত। সেখানে শেষ বল পর্যন্ত লড়ে জয়ের জন্য নির্ধারিত রানের ৫ রান আগে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। এদিন বিরাট কোহলির পাশাপাশি ব্যাটে রান পান কেএল রাহুল এবং সূর্যকুমার যাদব। ভারতের রান তাড়া করতে নেমে সাত ওভারে কোনও উইকেট না খুইয়ে বাংলাদেশের যখন ৬৬, তখনই বৃষ্টি নামে।
প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট বন্ধ ছিল খেলা। বৃষ্টির কারণে যদি খেলা বাতিল হতো, তাহলে ডার্ক-ওয়ার্থ লুইস (D/L) পদ্ধতিতে জিতে যেত বাংলাদেশ। কারণ ডি অ্যান্ড এল পদ্ধতিতে ৭ ওভার শেষে ১৭ রানে এগিয়ে ছিলেন শাকিবরা। দরকার ছিল ৪৯, আর খেলা স্থগিতের সময় বাংলাদেশের ৬৬। কিন্তু বৃষ্টি থেমে ডার্ক-ওয়ার্থ লুইস মেনে ফের খেলা শুরু হলে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। এদিনের ম্যাচে কাজে লাগলো না লিটন দাসের ঝড়ো অর্ধশতরান। দারুণ থ্রোয়ে অষ্টম ওভারে তাঁকে রান আউট করে কেএল রাহুল।
লিটনের রান আউট প্রাথমিকভাবে খেলায় ফেরায় ভারতকে। প্রথম থেকে ভারতীয় পেসারদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল লিটন। একটা সময় তাঁর স্ট্রাইক রেট ২০০-র উপরেও ছিল। এরপর শাকিব আল হাসান ম্যাচের রাশ খানিকটা ধরলেও ক্রমেই রান রেটের চাপ বাড়তে থাকায় একের পর এক উইকেট খোয়াতে শুরু করে বাংলাদেশ।
ডার্ক-ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সামনে ১৬ ওভারে ১৫১ রানের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মত, রান তাড়া করার অভিজ্ঞতা না থাকায় ২০ ওভারে পাঁচ রান আগেই থামে বাংলাদেশ।
একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল বিশ্বকাপ (T20 World Cup) থেকেই হয়তো ছিটকে যেতে পারে ইংল্যান্ড (England)। নেপথ্যে বৃষ্টি অসুর এবং রান রেট। কিন্তু নিউজিল্যান্ডকে (New Zealand) মঙ্গলবার হারিয়ে শেষ চারের আশা জিইয়ে রাখলেন ব্রিটিশরা (England)। যদিও এদিন খেলা শেষের পাঁচ ওভার আগে পর্যন্ত বোঝা যায়নি কে জিতবে। মঙ্গলবার প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৭৯ রান করেন বাটলাররা। অর্ধশতরান দুই ওপেনার জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের। নিউজ়িল্যান্ডের হয়ে গ্লেন ফিলিপ্স অনেক চেষ্টা করেও দলকে জেতাতে পারেননি।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইংল্যান্ড। বাটলারের সঙ্গে হেলস মিলে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। বেশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন হেলস। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অর্ধশতরান করেন তিনি। তিনি থামেন ব্যক্তিগত ৫২ রানে।
এদিকে, প্রথম দুই নিশ্চিত দল হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল আফগানিস্তান এবং নেদারল্যান্ড। নেদারল্যান্ড এখনও পর্যন্ত একটা ম্যাচ জেতেনি। পাশাপাশি আফগানিস্তানের দুটি ম্যাচ বৃষ্টি বিঘ্নিত হওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়েছে। একটি ম্যাচ শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে তারা। তাই মাত্র ২ পয়েন্ট এবং রান রেটে অনেক নিচে আফগানরা। যার ভিত্তিতে বিশ্বকাপে বিদায় নিশ্চিত আফগানদের।
অস্ট্রেলিয়া (Australia) যাওয়া ইস্তক খুব একটা ভালো আপ্যায়ন পাচ্ছে না ভারতীয় ক্রিকেট দল (India Cricket Team)। শুধু সিডনিতে মধ্যাহ্নভোজ নয়, অস্ট্রেলিয়ায় (Australia) নামার পর থেকেই নানাভাবে অপদস্থ টিম ইন্ডিয়া। এর আগে ব্রিসবেনে অব্যবস্থার শিকার হয়েছিলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, মহম্মদ শামিরা। সেখানে ভারতীয় দলকে থাকতে হয়েছে নিম্নমানের হোটেলে।
বিশ্বকাপের দিন কয়েক আগে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে ব্রিসবেনে যায় ভারত। সেখানেও আয়োজকদের ব্যবস্থায় খুশি হয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। আইসিসির প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দলকে যে মানের হোটেলে রাখার কথা, ব্রিসবেনে ভারতীয় দলের হোটেল সেই মানের ছিল না। আয়োজক অস্ট্রেলিয়াকে প্রত্যাশিত মানের হোটেলে রাখা হলেও, ভারতীয় দলকে থাকতে হয়েছে তুলনায় নিম্ন মানের হোটেলে। অথচ অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নারদের পড়শি করা হয়েছিল পাকিস্তান দলকে। অর্থাৎ, শুধু সিডনির খারাপ মধ্যহ্নভোজ নয়, ব্রিসবেনে খারাপ হোটেলে থাকতে বাধ্য করা হয় ভারতীয় দলকে। এমনটাই অভিযোগ করছে বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র।
জানা গিয়েছে, ব্রিসবেনে বিরাট কোহলিরা হোটেলে ছিলেন, ঘরগুলি ছোট। হোটেলে জিম, সুইমিং পুল থাকলেও বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়া একটি দলের উপযোগী নয়। আসবাব পত্র, খাবারের মানও যথাযথ নয়। এমনকি রুম সার্ভিস থেকে হাউস কিপিং জাতীয় পরিষেবাও প্রত্যাশিত মানের নয়। হোটেলটি ব্রিসবেনের যে জায়গায়, সেই অবস্থান পছন্দ হয়নি রোহিত, কোহলি, পান্ড্যদের। ব্রিসবেনের হোটেল নিয়ে অপছন্দের কথা ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে আইসিসিকে জানানো হয়েছিল। তাও হোটেল পরিবর্তন করে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
কুড়ি কুড়ি বিশ্বকাপ (T20 World Cup)। দ্বিতীয় পর্বে প্রথম জয় তুলে নিল বাংলাদেশ (Bangladesh)। নেদারল্যান্ডসকে (Netherlands) ৯ রানে হারালেন তাসকিন, মোসাদ্দেকরা। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৪৪ রান তোলে বাংলাদেশ। ২৭ বলে ৩৮ আফিফ হোসেনের। শেষ দিকে অসাধারণ খেলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক হোসেন। ডাচদের শুরুতেই ধাক্কা দেন তাসকিন। ফিরিয়ে দেন বিক্রমজিত সিং-কে। ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে একা লড়াই করে গেলেন কলিন একারমান। ৪৮ বলে ৬২ করলেন কলিন। ৯ রান দূরে থেমে গেল নেদারল্যান্ড। চার উইকেট নিলেন তাসকিন। ম্যাচে দুই দফা বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হলেও কোনো ওভার কাটা যায়নি।
ম্যাচ জিতে শাকিব বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্নপূরণের কথা বলেন। শাকিব ইন্টারভিউতে বলেন, 'তিনি ২০০৭ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলছেন। কিন্তু কোনওবার জিততে পারেননি। এবার আশা করছেন বিশ্বকাপ জেতার স্বপন পূরণ হবে।' নেদারল্যান্ডসকে হারানোর কৃতিত্ব অবশ্য তিনি দল বোলারদের দিলেন।
শাকিব আরও বলেছেন, ‘‘আমরা জানি অস্ট্রেলিয়ায় জোরে বোলাররা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দলে কয়েক জন তরুণ জোরে বোলার রয়েছে। ওরা নজর কাড়ছে।’’ এবারে বিশ্বকাপে শাকিবের অন্যতম লক্ষ্য, ফিল্ডিং। ফিল্ডিংয়ে বিশ্বের সেরা দল হয়ে উঠতে চান তিনি। আর তার জন্য প্রস্তুতিও শুরু করেছেন। শাকিব বলেছেন, ‘‘আমরা ফিল্ডিংয়ে বিশ্বের সেরা হতে চাই। আমাদের দলে বেশ কয়েক জন তরুণ ক্রিকেটার রয়েছে। ফিল্ডিংয়ে যদি প্রতি ম্যাচে ১০ রান বাঁচাতে পারি তা হলে সেটা আমাদেরই কাজে লাগবে।’’
মেলবোর্নে বিরাট জয়। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T-20 World Cup 2022) শেষ বলের থ্রিলার। পাকিস্তানকে চার উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল ভারত (India VS Pakistan) । জয় এল ভারতের ঝুলিতে।দীপাবলির আগেই বড়ো উপহার দিল কিং কোহলির (Virat Kohli) ব্যাট। একা কুম্ভের মতো দুর্গ রক্ষা করলেন। কোহলির চওড়া ব্যাট যেন খাপ খোলা তরবারি। ৫৩ বলে অপরাজিত ৮২। ছ'টা চার। চারটে ছয়। শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হ্যারিস রৌফদের জারিজুরি শেষ কোহলির ব্যাটের সামনে। আর বিরাটকে সঙ্গ দেন হার্দিক। ৪০ রান করে দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন। আর ফ্রি হিট, ওয়াইড, আউট, ওভার বাউন্ডারির মতো ঘটনাবহুল রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভারে আসে তৃপ্তির জয়।
মেলবোর্নে শুরুটা ছিল ভারতের। শেষেও মেন ইন ব্লু-এর দাপট বজায় ছিল।টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ান রান পাননি। তবে লড়াই করার মতো রান করেছিল পাকিস্তান। ৮ উইকেটে ১৫৯। তিন উইকেট পেলেন পান্ডিয়া। অর্শদীপ আরও তিন। আর ভারত করেছে ৬ উইকেটে ১৬০ রান।
প্রথমে নড়বড়ে শুরু করেছিল ভারত। রাহুল, রোহিত, সূর্যকুমার কেউ রান পাননি। কিন্তু কোহলি ছিলেন। ওয়াঘার সীমান্তের ওপারে পৌঁছে যাওয়া ম্যাচ এপারে নিয়ে এলেন। মেলবোর্ন থেকে ভারত। শুধু জয় হো।