১৮ দিন পার, মানুষের ক্ষোভে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। পুঞ্জীভূত রাগ ফেটে বেরোচ্ছে ক্রমাগত। প্রশাসনের উপরও ভরসা হারিয়ে এবার রাস্তাতেই বিচার চেয়ে মানুষ। সন্দেশখালি ঢুকতে বাধার মুখে দিল্লির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। বাধার মুখে আইনজীবীও। এই ছবি দেখতে দেখতে চোখ সয়ে গেছে প্রায়। তারই মধ্যে এবার অন্য ছবি দেখাল শাসক তৃণমূল। সন্দেশখালি জুড়ে যখন কাঁদো কাঁদো রব। তারই মাঝে বেড়মজুরে খোলকর্তাল নিয়ে, গলায় মালা পরে কীর্তনে মজে সুজিত-পার্থরা। সঙ্গে হাজির সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোও।
তবে শুধুই নাচানাচি নয়। পাশাপাশি সন্দেশখালির মানুষকে দিলেন জমি ফেরানোর আশ্বাসও। বছর শুরুর সময় থেকেই ক্ষণে ক্ষণে উত্তাপ ছড়িয়েছে সন্দেশখালিতে। গোটা এলাকা জুড়ে দাবি একটাই। শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারই। পুলিসের জালে দুই শাগরেদ এলেও এখনও অধরা সন্দেশখালির বাঘ। সেখানেই যখন গ্রামবাসীদের আক্রমণের তিরে স্থানীয় তৃণমূল, তখনই এবার দ্বীপাঞ্চলের মাটিতে পা পড়ল শাসক তৃণমূলের।
শনিবারের পর রবিবারও সন্দেশখালিতে হাজির রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং সুজিত বসু। রবিবার একেবারে ফুলের মালা পরে ঢোল নিয়ে কীর্তনে মজে থাকতে দেখা গেল রাজ্যের নেতা মন্ত্রীদের। এসব দৃশ্য দেখে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিকই, মানুষের ক্ষোভ প্রশমনে শেষ দাওয়াই হরিবোল? কীর্তন করে এতদিনের অত্যাচারে ইতি টানা যাবে? মন্ত্রীদের উপস্থিতিতেই আবার তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে ধাওয়া করে উত্তরটাও বোধ হয় বুঝিয়ে দিয়েছে সন্দেশখালির মানুষ।
শনিবার সন্দেশখালিতে গিয়েছেন ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। প্রথমে ছদ্মবেশে সন্দেশখালি ঢুকলেও পুলিসি বাধার মুখে পড়েন বাম নেত্রী মীনাক্ষী। ১৪৪ ধারার যুক্তি দেখিয়ে গ্রামে যেতে বাধা দেওয়া হয় মিনাক্ষী-সহ সিপিএমের যুব নেতানেত্রীরা। তবে শনিবার সকাল থেকেই গ্রামে ঘুরছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং সুজিত বসু। তাঁরা কীভাবে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন, প্রশ্ন মীনাক্ষীর।
শনিবার সকালে মুখ ঢাকা দিয়ে পুলিসের নজর এড়িয়ে সন্দেশখালিতে পৌঁছন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। টোটো করে গ্রামে গ্রামে ঘোরেন। কথা বললেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে। গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন বাম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের বাড়িতেও যান মীনাক্ষী। দুপুর দেড়টার পর মিনাক্ষীদের পুলিস আটকায়। তার আগেই বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে ফেলেছেন মিনাক্ষীরা। মহিলা আধিকারিকের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বাম নেত্রী। পুলিসের তরফে সাফ জানানো হয়, যেহেতু সন্দেশখালির বিভিন্ন জায়গাতে ১৪৪ ধারা রয়েছে তাই সেখানে একসঙ্গে এত লোকজন নিয়ে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। তারপরই পুলিসের কাছে লিখিত অর্ডার দেখতে চান মীনাক্ষীরা। যদিও পুলিস কোনওরকম অর্ডার দেখাতে পারেনি।
এদিকে, শনিবার গ্রামের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সন্দেশখালিতে যান সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। পুলিসি বাধা পেয়ে মীনাক্ষী দুই মন্ত্রীকে ‘শাহজাহানের লোক’ বলে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘‘পার্থ, সুজিত শাহজাহানের দলের লোক। ওঁরা মানুষকে ভয় দেখাতে এসেছেন। যখন জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছিল, তখন ওঁরা কোথায় ছিলেন? ‘দুয়ারে সরকার’ কোথায় ছিল?’’
মীনাক্ষী আরও বলেন, ‘‘১৪৪ ধারা জারি থাকলে আমি একা যেতে পারি। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে তো বাধা নেই। আমরা যেতে চাইছি। যেতে দিচ্ছে না। আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ আছে। পুলিসের সঙ্গে কথা বলতে চাই। মানুষ জমি ফেরত চায়। পুলিশের শাস্তি চাই। পুলিশ মানুষের কথা শোনে না। আমরা সে বিষয়ে কথা বলতে এসেছি। জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিস তা বার করে দিক।’’ থানায় যেতে চাইলে বাধা দেওয়া হয় মীনাক্ষীদের। সন্দেশখালি ঘাটের কাছে বসে পড়েন তিনি। উল্লেখ্য, এর আগেও সন্দেশখালি যাওয়ার পথে পুলিসি বাধার মুখে পড়েন মীনাক্ষীরা।
'ইডির রং-ডায়াল। উনি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না। উনার থেকে কিছু পাওয়া যাবে না।' তাপস রায়ের উপর এতটাই আত্মবিশ্বাস রয়েছে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির। শুক্রবার সাতসকালে রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। সকাল সাড়ে ৬ টা থেকে তল্লাশি চালানো শুরু হয়েছে তাঁদের বাড়িতে। শাসক দলের দুই হেভিওয়েট নেতার বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তল্লাশির খবর পেতেই পুলিস অফিসাররা পৌঁছে গিয়েছেন তাঁদের বাড়িতে। সুজিত বসুর বাড়িতে বিধাননগর কমিশনারেটের অফিসার ও তাপস রায়ের বাড়িতে কলকাতা পুলিসের আধিকারিকদের দেখা যায়।
বরানগর পুরসভায় এর আগেও অভিযানে এসেছে ইডি। চেয়ারম্যান অপর্ণা মৌলিককে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জমা নিয়েছে নথিও। এবার জানা যাচ্ছে, বরানগর পুরসভার সেসব নথি খতিয়ে দেখে তাতে তাপস রায়ের যোগ পেয়েছে ইডি। শুধু তাই না, অয়ন শীলের যে সংস্থার হাত ধরে পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে একাধিক বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, তাতেও তাপস রায়ের যোগ পেয়েছে ইডি, এমনটাই খবর। আর তাই এবার সরাসরি তাপস রায়ের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাতে হাজির ইডি। প্রিন্টার নিয়েও ঢুকতে দেখা যায় ইডির আধিকারিকদের।
ইডির আধিকারিকদের সঙ্গে রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তার জন্য কলকাতা পুলিসের তরফ থেকেও চোখে পড়ল সক্রিয়তা। তাপস রায়ের বাড়ির সামনে পুলিসের এসিপি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে মোতায়েন পুলিসবাহিনী। অবাঞ্চিত কোনও মানুষ বা তাপস রায়ের অনুগামীকে তাঁর বাড়ির সামনে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোরে রাজ্যের দমকল মন্ত্রীর লেকটাউনের দুটি বাড়িতে ও তাপস রায়ের বাড়িতে ইডির হানার পাশাপাশি উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তী বাড়িতেও হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা। এদিন ভোর সাড়ে ছটা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে পাঁচ ইডি অধিকারিকের একটি দল সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে পৌঁছয়। ইডি আধিকারিকদের পৌঁছনোর খবর পেয়ে প্রাক্তন পুর প্রধানের বাড়ির সামনে আসে দমদম থানার আধিকারিকেরা। যদিও তারা বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেনি, রাস্তা থেকেই তাদের ফিরে যেতে হয়।
সুজিত বসু (দমকলমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার):
১৯১৯ থেকে ২১ অবধি বিশ্বে স্প্যানিশ ফ্লু-এর উৎপাত ছিল। শুনেছি কয়েক লক্ষ মানুষ ভারতেই মারা গিয়েছিলো। তখন বিজ্ঞান এতো উন্নত ছিল না। এরপর ধীরে ধীরে চলে যায় ওই সংক্রমণ। কিন্তু শুনেছি পরবর্তীতে এই ভাইরাস চরিত্র পরিবর্তন করে টাইফয়েড বা সমতুল্য রোগে পরিণত হয়েছিল। আর আজ সেই সংক্রমণ যদি থেকেও থাকে তবে সাধারণ জ্বরে পরিণত হয়েছে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন সঠিক। করোনা ভাইরাস কিন্তু যখন চিনে এলো প্রথমে অন্যদেশে সেই খবর চেপে যাওয়া হয়েছিল বলে খবর। কিন্তু ধীরে সেই ভাইরাস লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ নিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছিল কয়েক কোটি মানুষ। আজ আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে কল্পনা করা যায় না। সম্প্রতি সমস্ত বিদেশি চ্যানেলের দিকে লক্ষ্য করে দেখলাম ফের নাকি নতুন রূপে এই ভাইরাস এসেছে যার নাম বিএফ-৭। তৎপরতা শুরু হয়েছে শীত প্রধান দেশে।
আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই স্বাস্থ্য দফতর দেখছেন দীর্ঘদিন ধরে। তিনি তো জানিয়েছেন যে আগেই আতঙ্কের কিছু নেই। কিছু হলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রস্তুত আছে। কিন্তু আমাদেরও দায়িত্ব আছে। সরকার নজরে রাখছে সমস্ত পরিস্থিতি।চিন্তা করবেন না।
গতবারের করোনা আবহে আমার দায়িত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিলো। আমি নিজে দু-দুবার কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমার বিধাননগর এলাকাতে খুবই সতর্কতার সাথে কাজ করতে হয়েছে। কসমোপলিটন এলাকা। এলাকায় উচ্চবিত্ত মানুষ যেমন আছে তেমন খেতে খাওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়। ফলে দায়িত্ব ছিল অনেক। আমরা এলাকায় এলাকায় চাল ডাল সবজি ডিম্ মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি।
৯ মাস ভিআইপি রোডে অভাবী মানুষের দু'বেলা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। যাদের বাড়িতে বাজার করার লোক নেই, তিনি যিনিই হন বাড়িতে রান্না করা খাবার পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। দিয়েছি ড্ৰাই ফুডের প্যাকেট। আক্রান্ত রোগীদের যথাযোগ্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। একটা কমিটি গড়েছিলাম 'স্পর্শ', যারা কাজ করেছে। প্রতিটি পুজো কমিটির মাধ্যমে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এলাকার বেশির ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য আবেদনে তারা সাড়া দিয়েছেন।
এরপরেও করোনার প্রভাব ছিল। তবে নিশ্চিত শক্তিহীন। তাই ফের বলতে চাই, ভয় পাবেন না আমরা দায়িত্বে আছি সারা বাংলায়। তবে সতর্ক থাকতে হবে।রাজ্য প্রশাসন থেকে যে ঘোষণা হবে তা পালন করতে হবে। শুনছি এখনই কেন্দ্রীয় স্তরে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জানিনা এতো তাড়াহুড়ো কেন? তাই আতঙ্কে থাকবেন না আমরা আছি। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর চোখে কাতার বিশ্বকাপ। 'অবিশ্বাস্য' জাপানের উপর বাজি ধরছেন কি মন্ত্রী, কী বলছেন দমকলমন্ত্রী?
ঘুরে এলাম অসাধারণ দেশ কাতার এবং রাজধানী দোহা। খুব অল্প সময়ের মধ্যে নাকি বিশ্বকাপের আয়োজন করেছে কাতার সরকার। বিমানবন্দর থেকে হোটেল যেখানেই যান না কেন, আপনাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত প্রশাসন। খুব সুন্দর বানিয়েছে প্রেস কর্নার। সারা বিশ্বের কত যে মিডিয়া এসেছে তাদের সরঞ্জাম নিয়ে না দেখলে কল্পনা করা যাবে না। ওই দেশে দেখলাম প্রচুর ভারতীয় এবং বাংলাদেশি। খিদে পেলে অনায়াসেই পছন্দসই খাওয়ার পেয়ে যাবেন। অনেকেই সে দেশের প্রশাসনকে সমালোচনা করছে, কিন্তু আমি বলবো যস্মিন দেশে যদাচার। এমনিতেও ইউরোপীয়, বিশেষ করে ইংরেজ দর্শকরা বরাবরই হুজুগে। আগের বিশ্বকাপের মতো রাস্তাঘাটে হুজ্জুতি একেবারেই করা যাবে না এই বিশ্বকাপে। এদিকে সে দেশে অনেক বঙ্গ সন্তানের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তারা বিস্মিত চোখেই বললো, আপনি এখানে? বললাম কয়েকটা দিন থাকবো মাত্র। এরপরই ঢুকে গেলাম বিশ্বকাপের আসরে। দুর্দান্ত স্টেডিয়ামগুলি, সম্ভবত বিশ্বসেরা। ভিআইপি বলে নিশ্চিন্ত বসার জায়গা পেলাম বটে কিন্তু খেলার মাঠে আম জনতার সঙ্গে বসে খেলা দেখার আনন্দ আলাদা।
দুটি খেলা দেখলাম, বাকি হোটেলে বসে। পর্তুগাল এবং ঘানার গ্রুপ লিগের খেলা। দারুন এই খেলায় ৩-২ গোলে পর্তুগাল জিতলো বটে। শুধু তাই নয় অন্যতম প্রিয় খেলোয়াড় রোনাল্ডোর পেনাল্টিতে গোলও হল। কিন্তু কোথাও কি একটা পর্তুগালের ফাঁকফোকর ধরা পড়ল? এরপর ব্রাজিল আর সার্বিয়ার খেলা দেখলাম। ব্রাজিল তার চিরায়িত আক্রমণ বানালো পূর্ব ইউরোপের ছোট দেশ সার্বিয়ার বিরুদ্ধে। আমরা বাঙালিরা যাকে বলি সাম্বা ঝড়। নেইমারের নেতৃত্বে সেলেকাওদের দৌড় উদবুদ্ধু করল। তবে ব্রাজিল ডিফেন্স কিন্তু মাঝেমধ্যেই ফাঁক হয়ে গিয়েছিল। নক আউটে কিন্তু হলুদ-সবুজ জার্সিকে অনেক সতর্ক হতে হবে।
যেহেতু আমার দফতরের প্রচুর কাজ, তাই ফিরে আসতেই হল। শত কাজের মধ্যে রাতে কিন্তু খেলা দেখেছি। আমার রাতে ঘুমোতে দুটো-আড়াইটে বেজে যায়। কাজেই রাত জেগে কাজ করতে করতে টিভিতে নজর রাখছি। একসময় নিয়মিত খেলতাম কাজেই খেলা আমার কাছে অন্যতম প্রিয় আনন্দ। রবিবার রাতে নক আউটের দুটি খেলা দেখলাম। ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড অসাধারণ পাসিং ফুটবল খেললো। যেমন এমব্যাপে তেমন ব্রিটিশ হ্যারি কেন।দুজনের পায়েই শক্তিশালী শট। নকআউটে গোলও পেলেন তারা। এখানেই আবার বলবো লিগের খেলা কিন্তু নক আউটে চলবে না। এখানে ডিফেন্স মজবুত রেখে আক্রমণ বা প্রতি আক্রমণে যেতে হবে। আজ জাপানের খেলা, দারুন দৌড়ে খেলছেন জাপানিরা। জার্মানি স্পেনকে হারিয়েছে কিন্তু ওরা যখন আক্রমণে যায় তখন ডিফেন্স অনেকটাই ফাঁকা থাকে। ক্রোয়েশিয়া যথেষ্ট শক্তিশালী দল কাজেই ক্রোটরা চেষ্টা করবে কাউন্টার আক্রমণে যাওয়ার
ফলে আগামী খেলাগুলিতে পরিচিত দলগুলিকেই ফের কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা যাবে বলেই আমার ধারণা। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
কুঁদঘাটের (Kudghat Fire) বাবুরাম ঘোষ রোড এলাকার এক প্রযোজনা সংস্থার (Production House) গুদামে বিধ্বংসী আগুন। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ লাগা এই আগুন সকাল ৯টা নাগাদ নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল (Fire Brigade)। ১৫টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় এই আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, পুরো ভস্মীভূত হয়েছে গুদাম এবং ভিতরে থাকা সামগ্রি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেওয়ালও। তবে প্রাণহানির খবর নেই।
ঘটনাস্থলে ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুজিত বসু এবং অরূপ বিশ্বাস। জানা গিয়েছে, টলিউডের ওয়েব সিরিজ প্রোডাকশনের সব সরঞ্জাম এসকে মুভিজের এই গুদাম থেকেই সরবারহ হতো। যদিও স্থানীয়দের দাবি, রাত তিনটে নাগাদ লাগে আগুন লেগেছে। আগুন ছড়ানোর আগেই গুদামকর্মীরা মালপত্র সরাতে থাকায় ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। তাঁরা দমকল দেরিতে আসার অভিযোগ তুলেছে।
গুদামের ভিতরে ক্যামেরা, ট্রাইপড, লাইট, লোহার জিনিসপত্র এসি কম্প্রেসারের মতো জিনিস ছিল। সেগুলো অনেকটাই পুড়ে ছাই হয়েছে, দাবি গুদামকর্মীদের। এদিন সকালে দাবানলের মতো আগুনের খবর ছড়াতেই ঘটনাস্থলে আসেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। শট সার্কিট থেকে এই আগুন কিনা খতিয়ে দেখবে ফরেন্সিক এবং দমকল।
এদিকে, কুঁদঘাটে যখন আগুন নেভাতে ব্যস্ত প্রশাসন, তখন বারুইপুর থানা চত্বরে অগ্নিকাণ্ড! পুড়ে ছাই ১৫টির মতো বাজেয়াপ্ত বাইক এবং পুলিসের একটি টহলদারি ভ্যান। জানা গিয়েছে, থানায় স্তূপীকৃত বাজেয়াপ্ত বাজির মশলা থেকেই এই অগ্নিকাণ্ড। তবে পুলিস, স্থানীয় এবং দমকলের প্রচেষ্টায় প্রাণহানি ছাড়া এই আগুনও নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে।
অপরদিকে, ভয়াবহ আগুনে সর্বস্বান্ত ক্যানিং বাজার এলাকার ৯-১০টি দোকানের ব্যবসায়ীরা। বুধবার রাতে মাতলা ব্রিজ সংলগ্ন এই বাজারের একটি দোকানে শট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। সেই আগুন ছড়িয়ে মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ভস্মীভূত হয়ে যায় কাপড়ের দোকান। কিন্তু মধ্যরাতে আগুন লাগায় প্রাণহানির কোনও খবর নেই।
রাস্তা বন্ধ হলেই বিশ্ববাংলা (Biswa Bangla) থেকে ঘ্যাচাং ফুঁ করে দেব। বৃহস্পতিবার শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের (Sreebhumi Sporting) পুজো উদ্বোধনে এসে ঘুরিয়ে এই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। এদিন ফিতে কেটে শ্রীভূমি ক্লাবের পুজো মণ্ডপ ঘুরে দেখেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বলিউডের পরিচিত সঙ্গীতশিল্পী শান। এরপরেই অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠে পরোক্ষে তাঁর মন্ত্রিসভার দমকল মন্ত্রীকে (Sujit Basu) সমঝে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'সুজিত বাবুকে অনুরোধ আমার রাস্তা যাতে বন্ধ না হয়ে যায়। লোকে প্লেন ধরতে পারল না, রাস্তায় হাঁটতে পারল না। সেসব যাতে না হয়। এখানে নতুন কমিশনার গৌরব এসেছে, ওকে দায়িত্ব দিলাম লক্ষ্য রাখবে। রাস্তা বন্ধ হলেই আমাকে জানাবে, আমি একদম বিশ্ববাংলা থেকে ঘ্যাচাং ফুঁ করে দেব। এখানে প্রচুর লোক আসে, কিন্তু যেহেতু আমি একজন মন্ত্রী, দায়িত্ববান, তখন খেয়াল রাখতে হবে আমার পুজোর পাশাপাশি অন্য পুজোতেও যাতে লোক আসে।'
তিনি জানান আমি কিন্তু নজর রাখব। যদি কিছু বজ্জাতি কর, তখন দিদি অন্য ভাষায় কথা বলবে। এভাবেই সুজিত বসুকে পরোক্ষে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ঘোষণা করেন আজ থেকেই পুজো শুরু হয়ে গেল। এরপর সল্টলেক এফডি ব্লক, টালা প্রত্যয়ের পুজো এবং টালা ব্রিজ উদ্বোধনে যান মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যব্যাপী পুজোর (Durga Puja 2022) গন্ধ। বিশ্বকর্মা পুজো (Viswakarma Puja) মানেই মায়ের আগমনের প্রহর গোনা। আর শনিবার দার্জিলিং থেকে হিঙ্গলগঞ্জ যন্ত্রের দেবতার পুজোয় মেতে রইল। পিছিয়ে নেই কলকাতা পুরসভা (KMC), মন্ত্রী সুজিত বসু এবং পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ছোট লালবাড়ির পুজোয় এবার সর্ব ধর্ম সমন্বয় দেখা গিয়েছে। পুরসভার নিকাশি বিভাগের সহ-ইঞ্জিনিয়ার আতাউর রহমান এবং তাজমূল হোসেন আয়োজন করেছিলেন বিশ্বকর্মা পুজোর। সেই আনন্দে শামিল হতে সপরিবারে হাজির ছিলেন মেয়র পারিষদ (নিকাশী) তারক সিং।
শুধু তারক সিং নয় আনন্দ ভাগ করে নিতে হাজির ছিলেন ডিজি (নিকাশি) শান্তনু ঘোষ-সহ বিভাগীয় আধিকারিক এবং কর্মীরা। এদিন তারকবাবু জানান, বাংলায় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ। চিরকাল ধরেই বাংলায় ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের উৎসব পালন করা হয়। পুরসভায় পুজো আয়োজনের অন্যত্ম উদ্যোক্তা তাজমূল জানান, বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজনে যুক্ত থাকতে পেরে আমি খুশি। প্রতিবার তাঁদের উদ্যোগেই পুজোর আয়োজন চলছে। একমাত্র বাংলায় সর্বধর্ম সম্প্রীতির নজির সবচেয়ে বেশি।
এদিকে, বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষ্যে ঘুড়ি উড়নোয় মাতলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। লেকটাউন শ্রীভূমি এলাকায় মন্ত্রীর বাসভবনের কাছে এক আবাসনের ছাদ থেকে ঘুড়ি উড়ান তিনি। তাঁকে অন্য ঘুরিকে ভো-কাট্টা করতেও দেখা গিয়েছে। এক কথায় এলাকার বাসিন্দা থেকে বন্ধুদের নিয়ে বিশ্বকর্মা পুজোয় মেতে উঠলেন মন্ত্রী সুজিত বসু।
দুর্গাপুজোয় (Durga Puja 2022) বড়সড় অগ্নিকাণ্ড এড়াতে দমকলের (Fire Brigade) উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন মন্ত্রী সুজিত বসু (Minister Sujit Basu)। পুজোপ্যান্ডেলের বৈদ্যুতিক সংযোগ, ওয়ারিং ঠিকই রাখতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেটা দেখতে দমকল কর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন মন্ত্রী। এই বৈঠকে রাজ্যের একাধিক ফায়ার স্টেশনের (Fire Station) ওসিরাও উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন এসইএস মনোজ আগরওয়াল, ডিজি (ফায়ার) রণবীর কুমার-সহ অন্য কর্তারা।
বৈঠক প্রসঙ্গে দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস বলেন, 'রাজ্যে দমকলের সব ডিভিশনাল কর্তা এবং ফায়ার স্টেশনের ওসিদের নিয়ে এই বৈঠক হয়েছে। সমস্ত ওসিদের বলেছি বড় দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সতর্ক করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে পুজো পরিচালনার জন্য আমাদের অফিসারদের নজরদারি চালাতে হবে। অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে হবে। নির্বিঘ্নে মানুষ যাতে প্যান্ডেলে আসতে পারে, সেদিকটা নিশ্চিত করতে হবে।'
তিনি জানান, এর বাইরে আমাদের ডে টু ডে সার্ভিস রয়েছে। ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট যারা চান, তাঁরা যেন হ্যারাস না হয়। ফাইল দ্রুততার সঙ্গে ছেড়ে দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী চান প্রশাসন ভাল করে চলুক। কঠিন কাজ যেন ভাল করে করি। দমকল পুজোর সময় চার্জ নেবে না। ফায়ার সার্ভিস থেকে সচেতনতা হবে।
মন্ত্রী বলেন, 'আমরা এতবড় উৎসব আয়োজনে প্রস্তুত। আগেও স্পেশাল জব করেছে। আমফানের সময় লোকও মারা গিয়েছিল। ফায়ার অডিটগুলো দ্রুততার সঙ্গে কাজ করবে। এবারের পুজো আলাদা, ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে। প্যান্ডেলের সবকিছুই কিছুই দাহ্য পদার্থ। ইলেকট্রিক ওয়ারিং যাতে ঠিক হয়, তার জন্য লোকাল ওসিকে বলেছি। পরিদর্শন করবেন তারা, ফায়ার মাস্ট। সেটা স্থানীয় পুজোর কর্তাদের শিখে নেওয়া প্রয়োজন। টেম্পোরারি ফায়ার স্টেশন থাকবে পুজোর সময় ১৯টি।'