প্রসূন গুপ্ত: ইন্দিরা গান্ধী ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ অবধি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ অর্থাৎ রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। অবিশ্যি এর মধ্যে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর প্রয়ানে তিনিই প্রথম রাজ্যসভা থেকে যাওয়া প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন। এরপর থেকে নেহেরু/গান্ধী পরিবার থেকে আর কেউ রাজ্যসভায় দাঁড়ান নি। এবারে ইন্দিরার পুত্রবধূ সনিয়া রাজ্যসভায় যাচ্ছেন। প্রশ্ন হচ্ছে সনিয়া হঠাৎ রাজ্যসভায় কেন? দাঁড়ালে কোথা থেকে এবং তাঁদের পারিবারিক কেন্দ্র রায়বেরিলিতে কে দাঁড়াবে?
আপাতত ঠিক হয়েছে সনিয়া গান্ধী রাজস্থান থেকে দাঁড়াচ্ছেন। সেখানকার সদ্য বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত, সনিয়ার নির্বাচনী এজেন্ট। এই রাজস্থান থেকেই সাংসদ ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তিনি আর সরাসরি রাজনীতিতে থাকছেন না বলেই খবর। অন্যদিকে পরে থাকে রায়বেরিলি।
সূত্রের খবর এবার প্রথম এই কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এতদিন খোদ সনিয়ার আপত্তিতে প্রিয়াঙ্কা ভোটে আসেন নি। তিনি কিন্তু প্রচারে ছিলেন বহুদিন। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি রাহুলের উপর আস্থা নেই তাঁর মায়ের?
বিষয়টি ভিন্ন। একসময় ভোট যাদুগর প্রশান্ত কিশোর গান্ধী পরিবারকে জানিয়েছিলেন যে, প্রিয়াঙ্কাকে প্রোজেক্ট করতে। তাঁর মধ্যে নাকি ঠাকুমা ইন্দিরার লক্ষন ইতিবাচক রয়েছে। কিন্তু সনিয়া বা রাহুল বিষয়টিকে আমল দেন নি। এখন শেষ মুহূর্তে বদল কি পিকের টোটকা?
প্রসঙ্গত নরেন্দ্র মোদী কিন্তু সময়ে সময়ে এই পরিবারকে কটাক্ষ করেছেন পরিবারতন্ত্র নিয়ে। কংগ্রেসের বক্তব্য ঐ কারনেই আরও বেশি করে বিরোধীতা করবে তারা। তাই কি প্রিয়াঙ্কাকে ভোটে নিয়ে আসা? সময় জবাব দেবে।
ওবিসিকে তালিকা ভুক্ত করে অতি দ্রুত মহিলা সংরক্ষণ বিল আইনে পরিণত করার দাবি জানালেন কংগ্রেস সাংসদ সনিয়া গান্ধী। বুধবার লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন কংগ্রেস প্রাক্তন সভানেত্রী। সনিয়ার দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই এই বিল নিয়ে নানা চর্চা হচ্ছে। এবার সময় এসেছে, এই বিলকে আইনে পরিণত করা।
এদিন লোকসভায় দাঁড়িয়ে আবেগে ভাসলেন সনিয়া। তিনি জানান, ভারতে মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের প্রথম কাজ শুরু করেছিলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর স্বামী রাজীব গান্ধী। কিন্তু রাজ্যসভায় সাত ভোটে হেরে গিয়ে সেই বিল আটকে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এই বিল আইনে পাস করার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস এখনও এই বিলকে সমর্থন করে বলেও জানান সনিয়া গান্ধী। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে তাঁর অনুরোধ আর দেরি না করে এই বিল আইনে পরিণত করার সময় এসেছে। সনিয়ার পর এই বিলকে দ্রুত আইনে পাস করাতে সরকারের কাছে অনুরোধ করেন ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝিও।
সংসদের বিশেষ অধিবেশন নিয়ে এবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রধান ও নেত্রী সনিয়া গান্ধী। বিশেষ অধিবেশনে ৯টি বিষয় আলোচনার জন্য দাবি করলেন কংগ্রেস নেত্রী। এদিকে জি-২০ সম্মেলনের আগে ইউরোপ উড়ে গেলেন রাহুল গান্ধী। সূত্রের খবর, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ানের অন্তর্গত আইনজীবী, ছাত্রছাত্রী ও প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন রাহুল।
এদিকে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে সনিয়া গান্ধী তাঁর চিঠিতে লিখেন, অন্য রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সহমত না হয় এই বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। এর অ্যাজেন্ডা কী, কেউ জানে না। জানানো হয়েছে এই পাঁচদিন সরকারের কাজ আছে। সনিয়া চিঠিতে জানিয়েছেন, সবার সঙ্গে সহমত হয়েই যাতে এই বিশেষ অধিবেশনে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার সংসদে সাসপেনশনের কোপে পড়েন কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী। শুক্রবার এই নিয়ে বিশেষ বৈঠক ডাকলেন কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধী। সরাসরি কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে যাবে দল।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে 'ইন্ডিয়া' জোটের অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কে বুধ ও বৃহস্পতিবার লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর নাম উঠেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিক বার অধীরকে নাম করে খোঁচা দিয়েছে কংগ্রেস ও বিরোধী জোটকে।
বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির শেষে 'অসংসদীয় আচরণ'-এর অভিযোগ তুলে অধীরের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। লোকসভায় সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন স্পিকার ওম বিড়লা। শুক্রবারই বাদল অধিবেশনের শেষ দিন। শুক্রবার সিদ্ধান্ত না নিলে অধীর চৌধুরীর সাসপেনশনের মেয়াদ গড়াবে শীতকালীন অধিবেশন পর্যন্ত
৫৩ বছর হয়ে গেলেও এখনও দেশের 'মোস্ট এলিজেবেল ব্যাচালর' হলেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। বিয়ে করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেকেই। এতদিন রাহুলকে সরাসরি বলা হত বিয়ে করার জন্য। কিন্তু এবারে ছেলের বিয়ের জন্য মা সনিয়া গান্ধীকে (Sonia Gandhi) বললেন এক মহিলা কৃষক। আর সেই শুনেই মুখে লাজুক হাসি রাহুলের। বিয়ে দেওয়ার সেই প্রস্তাবের মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছে। আর তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ঝড়ের গতিতে ভাইরাল।
मां, प्रियंका और मेरे लिए एक यादगार दिन, कुछ खास मेहमानों के साथ!
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) July 29, 2023
सोनीपत की किसान बहनों का दिल्ली दर्शन, उनके साथ घर पर खाना, और खूब सारी मज़ेदार बातें।
साथ मिले अनमोल तोहफे - देसी घी, मीठी लस्सी, घर का अचार और ढेर सारा प्यार।
पूरा वीडियो यूट्यूब पर:https://t.co/2rATB9CQoz pic.twitter.com/8ptZuUSDBk
সম্প্রতি দিল্লিতে গান্ধী পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন হরিয়ানার কৃষক পরিবারের কিছু মহিলা। দেখা গিয়েছে, সেই কৃষক মহিলাদের সঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া, গল্প-গুজব, নাচ-গান করেছেন গান্ধী পরিবার। সেই মহিলারা গান্ধী পরিবারের জন্য নিয়ে এসেছেন লস্যি, আচার ইত্যাদি। এসব দেখে আপ্লুত তাঁরা। এরই মধ্যে এক ব্যক্তিগত প্রশ্ন করে বসেন এক মহিলা কৃষক। তিনি সরাসরি সনিয়া গান্ধীকে প্রশ্ন করেন, 'ছেলের বিয়ে কবে দিচ্ছেন?' আর এর উত্তরে সনিয়া বললেন 'আপনিই পাত্রীই খুঁজে দিন না।' সনিয়ার এমন কথা শুনে বাকি মহিলারাও হাসতে শুরু করেন। পাশে বসে রাহুল, আর তাঁর মুখেও দেখা যায় লাজুক হাসি।
প্রসূন গুপ্তঃ সোমবার থেকে বেঙ্গালুরুতে শুরু হয়েছে ২৬ বিরোধী দলের বৈঠক। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফার আলোচনা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আগমন হলেও কংগ্রেস বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সোমবার প্রথম দফার বৈঠক ও নৈশভোজের যে আয়োজন কংগ্রেস করেছিল, প্রাথমিকভাবে মিডিয়াতে ছড়িয়ে গিয়েছিলো যে মমতা অনুপস্থিত থাকবেন, কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে দেখা গেল একেবারে সোনিয়া গান্ধীর পাশেই মমতার আসন স্থির করা রয়েছে। জানা গিয়েছে, সোনিয়ার ইচ্ছাতেই এই ব্যবস্থা। স্বাভাবিকভাবে সভার ফাঁকে বারবার সোনিয়াকে মমতার সঙ্গে একান্তে কথা বলতে দেখা গেলো। শেষে ছিল নৈশভোজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও অনুষ্ঠানে কিছু খান না। এদিনও তিনি খাবার প্লেট নেননি কিন্তু চা খেয়েছেন। অবিশ্যি তৃণমূলের অন্য প্রতিনিধিরা নৈশভোজ সেরেছেন।
রাহুল গান্ধীকে একবার দেখা গেলো ডেরেক ও'ব্রায়ানের সঙ্গে কথা বলতে, আবার কথা হচ্ছিলো সিপিএমের সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গেও। উত্তর ভারতীয় ও দক্ষিণ ভারতীয় ছাড়াও কন্টিনেটাল ডিশ ছিল। আয়োজক অবশ্যই সদ্য ক্ষমতায় আসা কংগ্রেস তথা মল্লিকার্জুন খাড়গে ও সিদ্ধারামাইয়া। অবিশ্যি মমতা ভক্ত রাজ্যের কংগ্রেস সভাপতি শিবকুমার নিজে বিমানবন্দর থেকে মমতা, অভিষেককে আনতে যান। শিবকুমার এজেন্সির হাতে গ্রেফতার হলে মমতা প্রতিবাদ করেছিলেন।
প্রথমদিন আলোচনায় কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে জানান, প্রথম ধাপে জোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ সফল। কাজেই এবারে পরের ধাপে যেতে হবে। মঙ্গলবার যা আলোচনা হবে তা মূলত কোন প্রক্রিয়াতে জোট এগোবে। জানা গিয়েছে যে, এই ২৬ দলের ভিতর থেকে তিনটি কমিটি করা হতে পারে। তাদের কাজ হতে পারে ১) নিয়মিত প্রতিটি দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, ২) আসন সমঝোতা করা ন্যূনতম ইস্যুর ভিত্তিতে, ৩) একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী যতটা দেওয়া যায় ৫৪৩ টি আসনে। এই কমিটিগুলি আগামী দিনে লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু হওয়ার আগে অবধি সমঝোতা বজায় রাখার কাজ করবে। একই সাথে এজেন্সির চাপ বা গ্রেফতারের মতো ঘটনা ঘটলে কমিটি ব্যবস্থা নেবে। যদিও এটাও বাস্তব কখনোই সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের সমঝোতা হওয়া খুব কঠিন কাজ কারণ সিপিএমের বিরোধিতা করেই তৃণমূলের আগমন। আজকের সভা শেষে ইউপিএ জোটের নতুন নাম হল—‘ইন্ডিয়া’ (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়ান্স)।
ফের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কংগ্রেস সাংসদ সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi unwell)। জ্বরের কারণে দিল্লির শ্রী গঙ্গারাম হাসপাতালে (Delhi Hospital) ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। বৃহস্পতিবারই চিকিৎসাধীন হয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি, এমনটাই হাসপাতাল সূত্রে খবর।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, সোনিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁর কয়েকটি শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়েছে। কংগ্রেস নেত্রীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে একটি মেডিক্যাল টিম গঠন হয়েছে। এ বছর জানুয়ারিতে শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তিন মাসের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার হাসপাতালে ভর্তি হলেন কংগ্রেস সাংসদ।
প্রসূন গুপ্ত: বলা হয় কংগ্রেস দল কিন্তু এই কংগ্রেস বারবার বদলেছে। মহাত্মা গান্ধী বা নেহেরুর আমলে ভোট হয়েছে বহুবার স্বাধীনতার আগে, স্বাধীন ভারতেও হয়েছে। স্বাধীনতার পরে জাতীয় কংগ্রেসের রাজনৈতিক ভোট চিহ্ন ছিল জোড়া বলদ। নেহেরু এবং লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুর পরে দলের আদি সদস্য বা সিণ্ডিকেটের বিরুদ্ধে লড়াই করে ইন্দিরা গান্ধী 'নব কংগ্রেস' তৈরি করেন এবং সভাপতি হন অসমের দেবকান্ত বড়ুয়া। তখন ভোট প্রতীক গাই-বাছুর। এরপর ১৯৭৭-এ কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতা হারায়, অনেকেই সেসময়ে ইন্দিরার পাশ থেকে সরে যান। ইন্দিরা ১৯৮০-র নির্বাচনের আগে ফের কংগ্রেস ভেঙে তৈরি করেন কংগ্রেস (আই) বা ইন্দিরা কংগ্রেস।
অদ্যবধি এটাই জাতীয় কংগ্রেস, যাদের ভোট প্রতীক হাত। এই হাত চিহ্নের প্রথম দলীয় সভাপতি নির্বাচন সোমবার হচ্ছে এবং তৃতীয়বার ইন্দিরা কংগ্রেসে নির্বাচিত হতে চলেছেন গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ। গান্ধী পরিবারের বাইরে প্রথম কংগ্রেসের সভাপতি হন নরসিমা রাও, একইসাথে প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন। ১৯৯৬-এ কংগ্রেস ফের কেন্দ্রে ক্ষমতা হারাবার পর অপসারিত হন রাও এবং রাজনীতির অন্তরালে থাকা সোনিয়ার ঘনিষ্ঠ বিহারের সীতারাম কেশরিকে সভাপতি করা হয়। ১৯৯৬-২০০৪ টানা প্রায় ৮ বছর কেন্দ্রে কংগ্রেস ছিল ক্ষমতার অলিন্দের বাইরে। ১৯৯৭ এ কলকাতায় এআইসিসির বৈঠকে মোটামুটি ধার্য হয় সোনিয়া গান্ধীই সভাপতির দায়িত্বে আসছেন।
বাজপেয়ীর জমানার পর ১০ বছর কংগ্রেস পরিচালিত ইউপিএ সরকার কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকে। এরপর কখনও সোনিয়া, কখনও পুত্র রাহুল সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। বিকল্প ছিল না থাকলেও গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠরা মানেনি। হঠাৎ রাহুল সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। এবং অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী হয়ে ফেরেন সোনিয়া। ইতিমধ্যে বারবার দল ভেঙেছে তারই সঙ্গে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে হয়েছে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী। যার সাম্প্রতিক নাম বিক্ষুব্ধ-২৩ বা জি-২৩। এবার রাহুল জানান যে আর গান্ধী পরিবারের কেউ সভাপতি হবে না। বাইরের কেউ হবেন এবং ভোটের মাধ্যমে ঠিক হবে। এই প্রথম গণতান্ত্রিক উপায়ে শতাব্দীপ্রাচীন দলে কোনও ভোট হচ্ছে।
প্রার্থী গান্ধী পরিবারের পরম ঘনিষ্ঠ মালিকার্জুন খাড়গে এবং বিরুদ্ধে লোকসভার সুশিক্ষিত সুদর্শন শশী থারুর। মোট ভোটার ৯৮০০, যাঁরা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ভোট দেবেন ,যা থাকবে গোপন ব্যালটে। আগামী ১৯ অক্টোবর ফল ঘোষণা কিন্তু যে দিকে এগোচ্ছে তাতে খাড়গের জয় সুনিশ্চিত। কারণ মাথায় যে সেই গান্ধী পরিবারের হাত, এমনটাই দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
প্রসূন গুপ্ত: জল্পনাটা ছিলই, সেটাই অবশেষে বাস্তবে পরিণত হল। অনেকদিন ধরেই রাজীব-নরসিমার আমলের ফ্রন্টলাইনে থাকা একঝাঁক কংগ্রেস নেতা গান্ধী পরিবারের উপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। তাঁরা তো দলের অন্দরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হিসাবে পরিগণিত। গুলাম নবী একা নয়, এর মধ্যে আনন্দ শর্মা, কপিল সিব্বল ইত্যাদিও রয়েছেন। ২০১৪ এবং পরে ২০১৯-এ কংগ্রেসের পরাজয়, একইসঙ্গে বিরোধী দলের তকমা না থাকায় এঁরা দলের হাইকমান্ডকেই দায়ী করছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, 'সোনিয়া অসুস্থ কিন্তু তাঁকেই জোর করে সভানেত্রীর পদে রাখা হচ্ছে।' এছাড়া সোনিয়ার বিকল্প মানেই রাহুল। যদিও রাহুল বা সোনিয়া বা গান্ধী পরিবারের প্রতি তাঁদের আনুগত্যের অভাৱ ছিল না। কিন্তু আজাদরা বারবার সতর্ক করে জানিয়েছিলেন যে, রাহুল দায়িত্ব নিক। কিন্তু কংগ্রেস চাইছে রাজীব বা ইন্দিরার মতো দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করুন তিনি। ক্ষেত্র বিশেষে দেখা গিয়েছে, রাহুলের ধৈর্য্য কম এবং মাঝেমধ্যেই তিনি দেশের বাইরে চলে যান। দলের মুখ যদি বিপদের সময়ে দলের কর্মীদের পাশে থেকে তাদের চাঙ্গা না করেন তবে বিজেপির মতো মহাশক্তিকে রাখা অসম্ভব।
আনন্দদের মতে কোনও বিষয়টাই পরিষ্কার হচ্ছে না। পুরাতনদের আমল না দিয়ে রাহুল কিছু স্তাবক নিয়ে চলতেই পছন্দ করেন। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কিংবা সচিন পাইলটকেও কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ক্ষোভে দল ছাড়েন জ্যোতিরাদিত্য, দল ছাড়েন কপিল সিব্বল। এবারে দল ছাড়লেন গুলাম নবী আজাদ। অন্দরে এমন কথাও উঠেছে যে ন্যাশনাল হেরাল্ড-কাণ্ডে মস্ত চাপ রয়েছে গান্ধী পরিবার, সেই কারণেই কি তাঁরা বিজেপিকে খোলা মাঠে খেলতে দিচ্ছেন?
দল ছাড়ার আগে গুলাম তাঁর জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ দায়িত্ব ছেড়েছেন, দায়িত্ব ছেড়েছিলেন আনন্দ শর্মাও। এবারে আনন্দ কবে দল ছাড়েন সেটাই দেখার। অবশ্য অন্য একটি কথাও দিল্লির রাজনীতির অলিন্দে ঘুরছে, গুলাম নাকি ক্রমশই মোদী ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন। যদিও বর্তমান বিজেপিতে একজনও মুসলিম সাংসদ নেই, নেই কোনও মন্ত্রীও। ফলে গুলাম বিজেপিতে গেলে কি কোনও সুবিধা পাবেন? উত্তর পাওয়া যাচ্ছে, যথেষ্ট বয়স হয়েছে আজাদের, ইন্দিরার আমলের নেতা তিনি। এরপর যদি শেষ ইনিংসে যদি রাজ্যপালের কোনও দায়িত্ব কোনও রাজ্যে পাওয়া যায় মন্দ কি? সমস্তটাই আপাতত জল্পনাই।
ফের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। তাঁর সঙ্গে যেতে পারেন রাহুল-প্রিয়ঙ্কা। মঙ্গলবার কংগ্রেসের তরফে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। তবে ঠিক কবে তাঁরা বিদেশ যাবেন বা কোথায় যাবেন। খোলসা করেনি হাত শিবির (Congress)। এদিকে, ৪ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কর্মসূচি ডেকেছে কংগ্রেস। সেই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)।
দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশে এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী বিদেশ যাচ্ছেন। নয়াদিল্লি ফেরার আগে সনিয়াজি তাঁর অসুস্থ মায়ের সঙ্গেও দেখা করবেন। রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে যাবেন।'
আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে কংগ্রেসের কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত 'ভারত জোড়ো' কর্মসূচি। দলের সভাপতি নির্বাচনের দিনক্ষণও ঘোষণা হতে পারে এ সপ্তাহে।
গুলাম নবি আজাদের (Gulam Nabi Azad) পথে হেঁটেই এবার কংগ্রেসের (Congress) গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়লেন আনন্দ শর্মা। সোনিয়া গান্ধীকে (Sonia Gandhi) চিঠি লিখে হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) পর্যবেক্ষক কমিটির প্রধানের পদ ছাড়লেন প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দিন কয়েক আগে একইভাবে পদত্যাগ করেছেন গুলাম নবি আজাদ। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রচার কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
জানা গিয়েছে, কংগ্রেস সভানেত্রীকে চিঠিতে আনন্দ শর্মা লেখেন, তাঁকে না জানিয়েই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এতে আহত হয়েছে তাঁর আত্মসম্মান।
চলতি বছর অক্টোবরে হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। ২৬ এপ্রিল হিমাচল প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক কমিটির প্রধান পদে বসানো হয় আনন্দ শর্মাকে। ওই রাজ্যে কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ নেতা তিনি। ১৯৮২ সালে বিধানসভা ভোটে প্রথম বার জিতেছিলেন। ১৯৮৪ সালে তাঁকে রাজ্যসভার প্রার্থী করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। সেই থেকেই রাজ্যসভার সাংসদ আনন্দ শর্মা।
এদিকে, বছরের শেষে জম্মু কাশ্মীরে ভোটের আগে বড়সড় ধাক্কা প্রদেশ কংগ্রেসে। নির্বাচন প্রচার কমিটির সভাপতি পদ ছাড়লেন গুলাম নবি আজাদ। মঙ্গলবার প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদকে এই পদে নিয়োগ করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। এই সিদ্ধান্তের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ইস্তফা দিলেন আজাদ। আর আজাদের এই পদক্ষেপের পরেই ইস্তফার হিড়িক জম্মু-কাশ্মীর কংগ্রেসে। আজাদ অনুগামী হিসেবে উপত্যকায় পরিচিত প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গুলাম আহমেদ মীর, প্রাক্তন বিধায়ক হাজি আব্দুল রশিদ দারের মতো নেতারা বিভিন্ন কমিটি থেকে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেছেন।
চলতি বছরের শেষে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচন হতে পারে। এই সম্ভাবনা উসকে দিয়ে আসন পুনর্বিন্যাস চলছে উপত্যকায়। আর জম্মু-কাশ্মীরের একদা শাসক দল কংগ্রেস সেখানে নতুন করে সংগঠন সাজাতে চাইছে। সেই উদ্দেশে সাত বছর প্রদেশ সভাপতির পদে থাকা মীর জুলাইয়ে ইস্তফা দিয়েছিলেন। সোমবার তাঁর জায়গার ভিকর রসুল ওয়ানিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নিয়োগ করেছেন সোনিয়া গান্ধী।