পদ্মা সেতুর (Padma Setu Inauguration) উদ্বোধন হয়েছে দিন কয়েক আগে। ঢাকায় চালু হয়েছে মেট্রো পরিষেবাও। রবিবার একটি উড়ালপুলের উদ্বোধনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (PM Seikh Hasina) ঘোষণা করলেন খুব শীঘ্রই ঢাকাকে স্মার্টসিটি হিসাবে তৈরি করবে বাংলাদেশ সরকার। এবছর নভেম্বরেই মেয়াদ ফুরোচ্ছে বাংলাদেশের (Bangladesh) হাসিনা-সরকারের।
তার আগেই ঢাকাকে স্মার্ট সিটি হিসাবে গড়ে তোলার কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবেন হাসিনা? এই প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসছে বিরোধী মহলে। রবিবার সে সম্পর্কে বিশদ জানান প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। রবিবার হাসিনা বলেন, 'ঢাকাকে আমরা স্মার্ট সিটি হিসাবে গড়ে তুলব। ঢাকার মূল সমস্যা হল যোগাযোগ ব্যবস্থা। আমাদের লক্ষ্য হবে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করা।'
তবে একইসঙ্গে তিনি জানান, গত বেশ কয়েক বছরে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজধানী শহরের পরিকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে।
প্রসূন গুপ্ত: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার দিল্লিতে ৪ দিনের সফরে এসেছেন। তাঁকে বিমানবন্দর থেকে অভ্যর্থনা জানিয়ে সসম্মানে শহরে নিয়ে আসা হয়েছে। হাসিনা দিল্লিতে এসে খুশি। বারবার তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে বন্ধু হিসেবে ভারতের কথা। তিনি আশা করেছিলেন, তাঁর আমন্ত্রণে হয়তো বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে আসবেন। কিন্তু পরে জানালেন, হয়তো এবার দেখা হলো না, পরে নিশ্চয় যোগাযোগ হবে। হাসিনা মমতাকে নবনির্মিত পদ্মা নদীর উপর সুবিশাল সেতুটি দেখতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পাশাপাশি মঙ্গলবার রাইসিনা হিলসে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের কথা শেখ হাসিনার। সম্প্রতি প্রবল অর্থনৈতিক সংকট এবং পেট্রোলিয়াম সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিতে চিন্তিত শেখ হাসিনা।
খবরে প্রকাশ, চিন অর্থনৈতিক ভাবে শ্রীলংকার পাশে দাঁড়ানোর পরে সে দেশে এমনই অবস্থা হয়েছিল, যা গৃহযুদ্ধের পথে দেশকে নিয়ে গিয়েছে। হাসিনা অবশ্য জানিয়েছেন তাঁদের দেশে সেই সমস্যা নেই। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার বিএনপির সঙ্গে একাধিক মৌলবাদী দল এখন সে দেশে গাঁটছড়া বেঁধেছে। আলোচনায় এ দেশের প্রধানমন্ত্রীর সহোযোগিতা চাইতে পারেন হাসিনা।
কিন্তু সব থেকে তাৎপর্য্যপূর্ণ বিষয়, হাসিনার মুখে কিন্তু আজও ৭১-এর স্বাধীনতার মুক্তিযুদ্ধের কথা যেখানে নিঃসন্দেহে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা ভুলতে নারাজ হাসিনা। এদেশে আসার আগে এক সাক্ষৎকারে সে কথা জানিয়েছেন তিনি।
তিনি ভুলতে পারেন না ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যার নির্মম ঘটনাও। সেবারেও ইন্দিরা তাঁদের দুই বোনকে এ দেশে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এবারের সফরে এসে সেদিনের কথা তাঁর মুখে উঠে এসেছে। তিনি জানিয়েছেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক চিরকাল ভালো রাখতেও আগ্রহী তাঁর সরকার। আজকের বৈঠকের পর আলাদা করে ফের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হতে পারে। সোমবার সন্ধ্যায় হাসিনার সম্মানে এক নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল।
বছর তিনেক পর চার দিনের ভারত সফরে এলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই সফরে পড়শি দু’দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, জলবণ্টন, রেল, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি খাতে একাধিক চুক্তি সই করা হতে পারে। রবিবার জানান বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, 'আশা করব, শেখ হাসিনার সফর সফল হবে। আমাদের লক্ষ্যপূরণে সাহায্য করবে।' জ্বালানি নিয়েও দু’দেশের রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে কথা হতে পারে বলে জানান তিনি। দু’দেশের মধ্যে মউ স্বাক্ষর প্রসঙ্গে মোমেন জানান, এ নিয়ে আলোচনা চলছে। চুক্তির সংখ্যা আরও বাড়তেও পারে।
এই সফরে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও মজবুত করতে ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। এদিকে, গোরু পাচার নিয়ে বাংলার রাজনীতি উত্তাল, শ্রীঘরে তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সেই পরিবেশে ভারত সফরের আগে গোরু পাচার নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমরা ভারতের গোরুর উপর নির্ভর করি না। সীমান্তে গোরু পাচার বন্ধ করতে হবে। আমরা উদ্যোগী হয়েছি। ভারতকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে।' তিনি জানান, আমরা নিজেরাই দেশে গোরু উৎপাদন করছি। এতে নিজেদের স্বনির্ভরতা বাড়বে এবং আর্থিক স্বাবলম্বী বৃদ্ধি পাবে।