রাজ্যের সাম্প্রতিক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক জাদুকর পিসি সরকার জুনিয়র। সিএন-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই দুর্নীতিকে 'চিটিংবাজি' আখ্যা দিয়েছেন তিনি। দুর্নীতিতে যারা জড়িত, তাঁদের ভ্যানিশ করে দিতে চান জাদুকর। এদিন সিএন-কে পিসি সরকার জুনিয়র বলেন,'বাঙালির বীরগাঁথা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাংলাকে নষ্ট করে দিয়েছে চোর-ছ্যাচরের দল। বাংলার এখন দুর্বুদ্ধির তারিফ চলছে। টাকার পাহাড় মানে বাঙালি। একটা বউ থাকতে ওহ লাভলি অনেকগুলো বউ মানেও বাঙালি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন নষ্ট করা হচ্ছে। মেধাবী বাঙালিকে পথে বসিয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী গ্রেফতার হওয়া বাংলার লজ্জা। অযোগ্যদের চাকরি দিয়ে বাংলা শিক্ষা ব্যবস্থা নষ্ট হচ্ছে।'
তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিঃসন্দেহে ভাল। তাঁর সঙ্গে থাকা মানুষরা কেউ ভালো নয়। তাঁর ডান হাত, বাঁ হাত, সৈন্যবাহিনী চোর, ডাকাত, বেইমান। তাই ভালো কিছু করার উদ্দেশ্য থাকলেও, করতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যতক্ষণ না এই হাতগুলো কাটা পড়বে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভালো কিছু করতে পারবে না। তবে আমার পছন্দের মানুষ নরেন্দ্র মোদি। তাঁকে দেখে ২০১৪ সালে বিজেপির হয়ে ভোট লড়েছিলাম।'
পিসি সরকার জুনিয়রের বিস্ফোরক অভিযোগ, 'জাদুকর হিসেবে সারা বিশ্বে বাংলার সম্মানকে তুলে ধরলেও, বর্তমানে বাংলাতে সম্মান পাই না। বাংলায় আমাকে শো করতে দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলায় আমি আর কোন শো করতে পারিনি। নরেন্দ্র মোদীকে পছন্দ করি বলেই হয়তো আমাকে আর বাংলায় শো করতে দেয় না তৃণমূল সরকার। তাই বিদেশে এখন শো করছি।'
ফের খারিজ পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) জামিনের (Bail Plea) আর্জি। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এই দু'জনের জেল হেফাজতের (Jail Custody) নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এদিন ভার্চুয়ালি নিয়োগ-কাণ্ডে ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার পার্থ-অর্পিতাকে আদালতে পেশ করা হয়। পার্থর আইনজীবী বয়সের দোহাই দিয়ে জামিনের আবেদন করলেও, এই বিষয়ে নীরব ছিলেন অর্পিতার আইনজীবী। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আইনজীবী জানান, এতদিন হেফাজতে রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কতবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ছে? পার্থ চট্টোপাধ্যায় তদন্তের সবক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন। তারপরেও জামিনে বাধা কোথায়?
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আইনজীবী বলেন, চার্জশিট জমা পড়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তৈরি বাগ কমিটির রিপোর্টে নাম ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। পরে টাকা উদ্ধার হল, সেখানেও নাম উঠল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। কিন্তু কোথাও উপযুক্ত প্রমাণ নেই।' তিনি জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় একা, মেডিক্যাল সাপোর্ট পাচ্ছেন না। ৬৫ দিন ধরে জেলে রয়েছেন।
এই যুক্তির পাল্টা ইডির আইনজীবী জানান, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে আর্থিক তছরূপের পরিমাণ ১০০ কোটি ছাড়িয়ে দেড়শো কোটিতে পৌঁছেছে। হাজার হাজার ছেলেমেয়ে কাঁদছে। বাবলি চ্যাটার্জি ফাউন্ডেশনের খোঁজ মিলেছে। ওই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই যুক্ত। ট্রাস্টি হিসেবে রয়েছেন। পাটুলিতে ১৮ একর জমির খোঁজ মিলেছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্যদের নাম আছে। আরও দু'টো কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে একক এবং যৌথভাবে ১০০-র উপর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে ইডি।
এদিকে, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, আমি আজ জামিনের আবেদন করছি না। আদালতের উপর ভরসা রাখছি। তবে আমি তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতের বিরোধিতা করছি। বিচারক পাল্টা বলেন, 'হেফাজতের বিরোধিতা করতে হলে লিখিত আবেদন করতে হবে। অর্পিতার আইনজীবী এদিন বলেন, 'আমার মক্কেল মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চান। জেলারকে বলা হলেও কোনও উত্তর আসেনি। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মা বৃদ্ধা। জেলের নিজস্ব যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে কথা বলতে চান আমার মক্কেল।'
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ((SSC recruitment scam) ধৃত সুবীরেশ ভট্টাচার্যর ১০ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজত (Jail Custody)। তাঁর সিবিআই (CBI) হেফাজতের আর্জি খারিজ করেছে আদালত। উলটে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সোমবার আদালতের (COurt Order) ভর্ৎসনা মুখে পড়তে হয়েছে। এদিন বিচারক সিবিআইয়ের আইওকে প্রশ্ন করেন, 'সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে আদালতে আনতে এত দেরি কেন? নিজাম প্যালেস থেকে হেঁটে আসলেও এরকম হয় না।' সিবিআইয়ের আইনজীবীর জবাব, 'রাস্তায় ট্র্যাফিক জ্যাম ছিল।'
তিনি জানান,এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তদন্তে কোনও সহযোগিতা করেনি। তাঁকে জেরায় অদ্ভুত উত্তর মিলছে। দুর্নীতিকাণ্ডে কে কে জড়িত,কে নিয়োগের নির্দেশ দিত? এ বিষয়ে কিছুই বলছেন না তিনি। সেই কারণে আরও একবার সিবিআই হেফাজতের দাবি করছি। এই সওয়ালের পাল্টা আদালতের প্রশ্ন, '৬ দিন পেয়েছিলেন, কী করলেন এতদিন? এই মামলায় এখনও পর্যন্ত কতজন গ্রেফতার?
সিবিআইয়ের জবাব, ৪ জন গ্রেফতার, তাঁদের মধ্যে এক পুলিস হেফাজতে রয়েছেন। বাকিরা রয়েছেন জেল হেফাজতে। এরপরেই সিবিআই হেফাজতের আবেদন খারিজ করে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে জেল হেফাজতে পাঠায় আদালত।
এদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে একসপ্তাহ আগে গ্রেফতার স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশবাবুকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এই নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মোট ছ'জনকে গ্রেফতার করলো এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইতিমধ্যে শান্তিপ্রসাদ সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রসন্ন সাহা-সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডির হাত ঘুরে সম্প্রতি সিবিআই হেফাজতে এসেছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এবার গ্রেফতার হলেন আরও এক শিক্ষাকর্তা তথা এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এই প্রথম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে গ্রেফতার করল সিবিআই। সূত্রের খবর, তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না তিনি। তথ্য গোপন করছিলেন এবং ভুল তথ্য দিয়ে তদন্তকে অন্যদিকে পরিচালনার চেষ্টা করেছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যে গত মাসে তাঁর বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাট সিল করে দিয়ে যায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। সস্ত্রীক উত্তরবঙ্গ থেকে এসে ফ্ল্যাটের ছাদে কাটাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেখান থেকেই সাংবাদিক বৈঠক করেন এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান।
সিজিও কমপ্লেক্সে (CGO Complex) ম্যারাথন জেরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। পিংলার বিলাসবহুল স্কুলের অর্থের উৎস কী? জানতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলছে জেরা। শনিবার আমেরিকা থেকে কলকাতা ফিরেই সোমবার দুপুরে ইডি (ED) ডাকে সাড়া দিতে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন কল্যাণময় বাবু। তারপর থেকেই চলছে জেরা। ইতিমধ্যে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাইকে (Son in Law) দু'বার তলব করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা।
কিন্তু কোনও তলবেই সাড়া না দেওয়ায় সাত দিন আগে ইডি তাঁকে তৃতীয়বার সশরীরে হাজিরার নোটিস পাঠায়। সেই নোটিস পেয়েই শনিবার কলকাতায় পৌঁছন তিনি। এরপরেই এদিন দুপুর দু'টো নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে যান কল্যাণময় বাবু।
ইডি সূত্রে খবর, কল্যাণময় ভট্টাচার্য্য একাধিক কোম্পানির ডিরেক্টর। সেই সব কোম্পানির সঙ্গে যোগ রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার বিসিএম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চেয়ারম্যান এই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। সেসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাইকে। পাশাপাশি তাঁর বয়ান নথিবদ্ধ করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারির পরে একাধিক তথ্য তদন্তকারী সংস্থার হাতে উঠে এসেছে। বেশ কিছু আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য তদন্তকারীদের হাতে উঠে এসেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এর আগে তাকে ২৩ অগাস্ট তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল পয়লা সেপ্টেম্বর আসার জন্য। সেই তলবে গরহাজির থাকায় ২রা সেপ্টেম্বর আবার নোটিস পাঠানো হয়। তখনও তিনি গরহাজির ছিলেন। তৃতীয়বার নোটিসে অবশেষে সাড়া দিলেন তিনি।
বাংলায় চলা শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) ব্যবস্থা নিতে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে (CM Mamata) চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু এখনও সেই চিঠির কোনও জবাব পেলাম না। শুক্রবার দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে দাঁড়িয়ে এই মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান (Union Education Minister)। খড়গপুর আইআইটির অনুষ্ঠানে যোগদানের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এদিন সকাল শহরে পা রেখেই দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিতে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এরপরেই মন্দিরে উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের সামনে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী।
তিনি জানান, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে বাংলায় এতকিছু হয়ে গেল। কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে, বড় কর্তা, মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পরেও রাজ্য সরকার এখনও কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমিয়ে যাচ্ছে। আর কত সময় লাগবে তরুণদের ন্যায় পেতে? এসব প্রশ্নের জবাব চেয়ে এবং মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যবস্থা নিতে বলে একটা চিঠি পাঠিয়েছিলাম গত অগাস্ট মাসে। কিন্তু এখনও জবাব পাইনি।
তাঁর মন্তব্য, 'এই দুর্নীতি-কাণ্ডে মন্ত্রী, উপাছারজ-সহ সবাই জড়িত। এই দুর্নীতি-কাণ্ড মানুষের দরজা পর্যন্ত পৌঁছে গণতান্ত্রিক উপায়ে এই সরকারকে সরানোই লক্ষ্য।' কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ, 'বাংলায় নানা খাতে পাঠানো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিয়েও দুর্নীতি হয়, সরকার আর পার্টি এক হয়ে যায়। এমনকি, সর্বশিক্ষা অভিযানের টাকাতেও নয়ছয় লক্ষ্য করা গিয়েছে।'
যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই দাবি সর্বৈব মিথ্যা এই দাবি করে কুণাল ঘোষের প্রস্তাব, 'ধর্মেন্দ্র প্রধান ব্যাপম কেলেঙ্কারিতে বিদ্ধ মধ্যপ্রদেশ কিংবা সরকারি সিদ্ধান্তে ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়া ত্রিপুরায় গিয়ে এসব বলুন। ডবল ইঞ্জিন সরকার যেখানে যেখানে ইন্যম করেছে সেখানে যান। বাংলার শিক্ষাব্যবস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে অনেক উন্নতি করেছে। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট বলছে। ধর্মেন্দ্র প্রধান সত্যের অপলাপ করেছেন।' কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, 'অযোগ্য বঙ্গ বিজেপির নেতারা নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভুল তথ্য দিয়ে ভুল বলান। ধর্মেন্দ্র প্রধানজি ভালো করে খোঁজ নিক।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (recruitment scam) এবার গ্রেফতার স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশবাবুকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই (CBI)। এই নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মোট ছ'জনকে গ্রেফতার করলো এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইতিমধ্যে শান্তিপ্রসাদ সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রসন্ন সাহা-সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডির হাত ঘুরে সম্প্রতি সিবিআই হেফাজতে এসেছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Parth Chatterjee)।
এবার গ্রেফতার হলেন আরও এক শিক্ষাকর্তা তথা এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এই প্রথম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে গ্রেফতার করল সিবিআই। সূত্রের খবর, তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না তিনি। তথ্য গোপন করছিলেন এবং ভুল তথ্য দিয়ে তদন্তকে অন্যদিকে পরিচালনার চেষ্টা করেছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যে গত মাসে তাঁর বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাট সিল করে দিয়ে যায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। সস্ত্রীক উত্তরবঙ্গ থেকে এসে ফ্ল্যাটের ছাদে কাটাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেখান থেকেই সাংবাদিক বৈঠক করেন এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান।
এদিকে, নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম উঠে আসতেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়-সহ তাঁর একাধিক জায়গায় দফায় দফায় চলে সিবিআই তল্লাশি। যদিও কলকাতায় সংবাদ মাধ্যমকে সুবীরেশবাবু জানিয়েছিলেন তাঁর আমলে নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হয়নি।
অনুনয়-বিনয় সার। নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। একইভাবে ধৃত প্রাক্তন পর্ষদকর্তা কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়েরও ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজত (CBI Custody)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আবেদন এবং সওয়ালকে প্রাধান্য দিয়েই এই নির্দেশ আলিপুর আদালতের বিশেষ সিবিআই কোর্টের। যদিও এদিনও জামিনের পক্ষে নিজেই সওয়াল করেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
রীতিমতো কান্নায় ভেঙে তিনি আদালতকে বলেন, 'সব সওয়াল-জবাব শুনলাম। এবার একটু বলতে চাই। আমি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ছিলাম। এসএসসি স্বসাশিত সংস্থা। তাদের কোনও কাজেই আমি হস্তক্ষেপ করিনি। বোর্ড পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সব দফতর করে। এখানে মন্ত্রীর কী করার? তাছাড়া আমি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, পিএইচডি। আমার আত্মীয় শিবদাস বন্দোপাধ্যায়। বহু বছর চাকরি করেছি। পরবর্তীকালে জনপ্রতিনিধি হয়েছি। আমাকে ষাট দিন একটা সংস্থা হেফাজতে রাখল। এখন একটা সংস্থা হেফাজতে চাইছে। আমি ক্লান্ত,অসুস্থ, প্রচুর ওষুধ খেতে হয়। যেকোনও শর্তে আমাকে জামিন দিন। আমি বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল। আপনার কাছে বিচারের প্রত্যাশা করি।'
এদিকে, শুক্রবার একই এজলাসে তোলা হয়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। তাঁর হয়েও জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী। তিনি জানান, কল্যাণময়বাবু একজন উচ্চবিত্ত ঘরের ব্যক্তি। একসঙ্গে একাধিক মামলা দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। তাঁর বিরুদ্ধে ১২০-বি-সহ আলাদা আলাদা মামলা। তদন্তকারী সংস্থা জানেই না কী কারণে গ্রেফতারি। আমার মক্কেলের বিরুদ্ধ কোনও অভিযোগ নেই তথ্য নেই।
বিচারকের প্রশ্ন, আপনি নিয়োগপত্রে সই করেছেন? সেটাকে ষড়যন্ত্র বলা যায় কি? কল্যাণময়ের আইনজীবীর পাল্টা, 'সেটা আমি বলছি না। সিবিআই বলছে নিয়োগপত্র ভুয়ো। ভুয়ো নিয়োগপত্র যাঁদের পাওয়ার কথা ছিল, তারা পায়নি। একজন ষাট বছরের অধ্যাপককে যদি হেফাজতে চায় তাহলে বলার কিছু নেই।'
প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতির আইনজীবীর দাবি, 'আমার মক্কেল কোনও নিয়োগপত্রে সই করেনি। তাঁর সই স্ক্যান করে বসানো হয়েছে। তিনি সশরীরে উপস্থিত থেকে সই করেনি।' বিচারকের পাল্টা প্রশ্ন, 'আপনার সই স্ক্যান কে করবে?' জবাবে কল্যাণময় বাবুর আইনজীবী জানান, আমার মক্কেলের স্ক্যান সই পর্ষদে থাকতো। তিনি পর্ষদের দারোয়ান নয়। তাই জানা নেই ওটার অপব্যাবহার হয়ছে কিনা। কল্যাণময় বাবু কোনও পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ নিতেন না। শুধু নির্দেশ দিতেন।
অপরদিকে, এদিন আলিপুর কোর্ট থেকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে (Recruitment Scam) পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হেফাজতে পেতে আলিপুর আদালতে সওয়াল সিবিআইয়ের (CBI)। ইডির হাতে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজত হয়েছে। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে মূল অভিযুক্ত (Partha Chatterjee) হিসেবে পার্থর হেফাজত চায় সিবিআই। সেই মর্মেই এদিন আদালতে সওয়াল করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থার আইনজীবী। যদিও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীর সওয়াল, তাঁর মক্কেলকে কেন আদলতে আনা হলো জানি না। কী জন্য ডাকা হল, না জানলে সওয়াল করব কী করে? পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে ইডি (ED)। এখন সিবিআই তাঁকে হেফাজতে চাইছে। ওদের নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। এতে আমার মক্কেলকে হেনস্থা করা হচ্ছে।
এই সওয়ালের পরই সিবিআই আইনজীবীকে বিচারকের প্রশ্ন, আপনাদের কপি অপরপক্ষের কাছে পৌঁছয়নি? আপনার কাছে অন্য কোনও কপি আছে? সিবিআইয়ের জবাব আমরা জানিয়েছি। পাল্টা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, আমাদের কাছে কিছু আসেনি। সিবিআই আমার মক্কেলকে গ্রেফতার করেনি। গ্রেফতার না করে কীভাবে হেফাজতে চাইতে পারে? ওরা জেলে গিয়েও এই মামলায় আমার মক্কেলকে জেরা করতে পারে। এদিকে, পাল্টা সিবিআই আইনজীবী জানান, এসএসসি গ্রুপ সি নিয়োগের পরীক্ষা হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের হাত ধরে। সেখানে অশিক্ষককর্মী নেওয়া হয়। পরীক্ষার পর হয় কাউন্সেলিং। যারা চাকরি পায় তাদের রেকমেন্ডেশন লেটার দিয়ে নিয়োগ হয়। তদন্তে এই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। ৪০০-র বেশি মানুষ ভুয়ো নিয়োগপত্র পেয়েছে। যারা অনেকেই পাশ করেনি বা পরীক্ষা দেয়নি। বেশিরভাগ রেকমেন্ডেশন লেটার ভুয়ো। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এই ভুয়ো নিয়োগ ষড়যন্ত্রের মূল চক্রী।
পাশাপাশি তাঁদের সওয়াল, 'এই দুর্নীতি হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তে। অন্য অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিনহা, অশোক কুমার সাহা তাঁদের আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়ছে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। তাই প্রধান অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। অন্য ধৃতদের সামনাসামনি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এতদিন তিনি ইডি হেফাজতে ছিলেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের এর প্রয়োজন। তাই পুলিস কাস্টডি চাইছি।'
পার্থর আইনজীবীর পাল্টা, 'অভিযুক্ত একজন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব। তাঁর বিরুদ্ধে করা এফআইআর-এ আইপিসির ৪২০ এবং ১২০-বি ধারার উল্লেখ রয়েছে। এই ধরনের এফআইআর একজন জনপ্রতিনিধির নামে হয়েই থাকে। কিন্তু এখানে তদন্তকারী সংস্থা অনেক কিছু লুকনোর চেষ্টা করছে, অপরপক্ষকে ধোঁয়াশাতে রাখছে। আমরা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। গ্রেফতারির আগেও তাঁকে ডাকা হয়েছে, প্রতিবা তিনি গিয়েছেন। মোট তিন বার ডাকা হয়েছিল, তিনবারই গিয়েছেন। অর্থাৎ অভিযুক্ত প্রত্যেকবার সিবিআইকে সাহায্য করছে।
এই সওয়াল জবাবের পর বিচারকের মন্তব্য, 'তদন্তকারী দল ভিন্ন তাই তাদের প্রয়োজন ভিন্ন।' অপরদিকে, শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে সদ্য ধৃত কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় পার্থবাবুর। দু'জনকে এজলাসে নিচুস্বরে কথা বলতেও দেখা গিয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) হেফজত চাইল সিবিআই (CBI)। এই মর্মে আলিপুর কোর্টে আবেদন করেছে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে সশরীরে আলিপুর আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে বুধবার ভার্চুয়ালি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আদালতে তোলা হয়েছিল। এদিনও জামিনের আবেদন খারিজ করে দু'জনকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান ইডি-সিবিআই (ED Court) আদালতের বিচারক।
যদিও বুধবারই প্রথমবার কোর্টে জামিনের সওয়াল করেন ইডির হাতে গ্রেফতার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। একইভাবে 'আমি অসুস্থ, আমাকে শান্তিতে বাঁচতে দিন, জামিন দিন', কাঁদতে কাঁদতে এই আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তবে কান্নাকাটি বৃথা, ফের ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে এই দুই অভিযুক্ত। বুধবার অবশ্য শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাঁদতে কাঁদতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিচারকের কাছে বলেন, 'আমার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। আমাকে জামিন দিন, বাঁচতে দিন। ইডি ৩০ ঘন্টা ছিল আমার বিরুদ্ধে কিছুই সংগ্রহ করতে পারেনি। আমি জানতে চাই কে এটা করেছে? ইডি আমার বাড়িতে আসুন। আমার বিধানসভা কেন্দ্রে আসুন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার মেয়ে আমেরিকায় থাকেন। আমাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন।'
ভিডিও কলে হওয়া শুনানিতে পার্থর সওয়াল, 'আমি বৃদ্ধ মানুষ, একজন জনপ্রতিনিধি। অর্থনীতিতে স্নাতক। বহুদিনের রাজনীতিবিদ। আমার শারীরিক সমস্যা সংক্রান্ত ইএসআই জোকার রিপোর্ট জমা আছে দেখে নিতে পারেন।'
১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে বুধবার ভার্চুয়ালি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে (Partha Arpita) আদালতে তোলা হয়। এদিনও জামিনের আবেদন খারিজ করে দু'জনকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতে (Jail Custody) পাঠান ইডি-সিবিআই (ED Court) আদালতের বিচারক। যদিও এই প্রথমবার কোর্টে জামিনের সওয়াল করেন ইডির হাতে গ্রেফতার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। রীতিমতো কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, 'স্যার আমার বাড়িতে ইডি প্রায় ৩০ ঘন্টা ছিলেন। আমি জানি না কীভাবে তারা নগদ পেলেন। আমি বাথরুমে ছিলাম ৪ ঘন্টা, তারপর বেডরুমে ছিলাম। আমি জানি না কীভাবে এত নগদ উদ্ধার হল। আমার বাবা নেই, বৃদ্ধা মা আছেন। তাঁকে দেখানো জন্য আমার দরকার।'
এই সওয়ালের পরেই অর্পিতাকে বিচারকের প্রশ্ন, 'টাকা কোথা থেকে পাওয়া গেল? আপনি কি মায়ের সঙ্গে থাকেন? ফ্ল্যাট কার নামে? আপনি টাকার বিষয়ে কিছু জানেন?'
জবাবে অর্পিতা জানান, ফ্ল্যাট আমার নামে। সেখান থেকেই টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু এই নগদের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার এন্টারটেইনমেন্টের ব্যবসা আছে। সংস্থার নাম ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্ট। কিন্তু নগদ উদ্ধার নিয়ে আমি অবগত নই। আমার কাছে এটাই আশ্চর্যের যে আমার বাড়ি থেকে এতো নগদ কীভাবে উদ্ধার হল!
একইভাবে 'আমি অসুস্থ, আমাকে শান্তিতে বাঁচতে দিন, জামিন দিন', কাঁদতে কাঁদতে এই আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তবে কান্নাকাটি বৃথা, ফের ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে এই দুই অভিযুক্ত। এদিন অবশ্য শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাঁদতে কাঁদতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিচারকের কাছে বলেন, 'আমার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। আমাকে জামিন দিন, বাঁচতে দিন। ইডি ৩০ ঘন্টা ছিল আমার বিরুদ্ধে কিছুই সংগ্রহ করতে পারেনি। আমি জানতে চাই কে এটা করেছে? ইডি আমার বাড়িতে আসুন। আমার বিধানসভা কেন্দ্রে আসুন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার মেয়ে আমেরিকায় থাকেন। আমাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন।'
ভিডিও কলে হওয়া শুনানিতে পার্থর সওয়াল, 'আমি বৃদ্ধ মানুষ, একজন জনপ্রতিনিধি। অর্থনীতিতে স্নাতক। বহুদিনের রাজনীতিবিদ। আমার শারীরিক সমস্যা সংক্রান্ত ইএসআই জোকার রিপোর্ট জমা আছে দেখে নিতে পারেন।'
দুই অভিযুক্তের এই সওয়াল পালা শেষে ইডির যুক্তি, 'নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড ১০০ কোটি টাকার। আরও বাড়তে পারে টাকার অঙ্ক। রাসবিহারী কানেক্টর এবং যামিনী রায় রোডে সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। অর্পিতার অ্যাকাউন্টে আরও ৫ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। যত তদন্ত এগোবে, এই টাকার অঙ্কের পরিমাণ আরও বাড়বে।'
ইডি আইনজীবী আদালতকে জানান, 'আমরা যেদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিলাম উনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। উনি দলের সেকন্ড ইন কমান্ড। আমরা যে সিজার লিস্ট অনেক দিয়েছিলাম, ওটা উনি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তারপর এসএসকেএম-এ ভর্তি হয়েছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে আরও তিনটি কোম্পানি পাওয়া গিয়েছে। পিংলায় একটি স্কুলের খোঁজও পাওয়া গিয়েছে।' দুই তরফের এই সওয়াল-জবাবের পর এদিন প্রায় ঘণ্টা চারেক রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। অবশেষে সন্ধ্যা ৭টার পর জামিনের আবেদন খারিজ করে ফের দু'জনকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে বুধবার ভার্চুয়ালি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে (Partha Arpita) আদালতে তোলা হয়। এদিনও জামিনের আবেদন খারিজ করে দু'জনকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান ইডি-সিবিআই (ED Court) আদালতের বিচারক। যদিও এই প্রথমবার কোর্টে জামিনের সওয়াল করেন ইডির হাতে গ্রেফতার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। একইভাবে 'আমি অসুস্থ, আমাকে শান্তিতে বাঁচতে দিন, জামিন দিন', কাঁদতে কাঁদতে এই আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তবে কান্নাকাটি বৃথা, ফের ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে (Jail Custody) এই দুই অভিযুক্ত।
এদিন অবশ্য শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাঁদতে কাঁদতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিচারকের কাছে বলেন, 'আমার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। আমাকে জামিন দিন, বাঁচতে দিন। ইডি ৩০ ঘন্টা ছিল আমার বিরুদ্ধে কিছুই সংগ্রহ করতে পারেনি। আমি জানতে চাই কে এটা করেছে? ইডি আমার বাড়িতে আসুন। আমার বিধানসভা কেন্দ্রে আসুন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার মেয়ে আমেরিকায় থাকেন। আমাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন।'
ভিডিও কলে হওয়া শুনানিতে পার্থর সওয়াল, 'আমি বৃদ্ধ মানুষ, একজন জনপ্রতিনিধি। অর্থনীতিতে স্নাতক। বহুদিনের রাজনীতিবিদ। আমার শারীরিক সমস্যা সংক্রান্ত ইএসআই জোকার রিপোর্ট জমা আছে দেখে নিতে পারেন।'
পার্থর পরেই এদিন কান্নায় ভেঙে জামিনের আবেদন করে অন্যতম অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'স্যার আমার বাড়িতে ইডি প্রায় ৩০ ঘন্টা ছিলেন। আমি জানি না কীভাবে তারা নগদ পেলেন। আমি বাথরুমে ছিলাম ৪ ঘন্টা, তারপর বেডরুমে ছিলাম।আমি জানি না কীভাবে এত নগদ উদ্ধার হল। আমার মা অসুস্থ, মায়ের সঙ্গে থাকতে হবে।' এই সওয়ালের পরেই অর্পিতাকে বিচারকের প্রশ্ন, 'টাকা কোথা থেকে পাওয়া গেল? আপনি কি মায়ের সঙ্গে থাকেন? ফ্ল্যাট কার নামে? আপনি টাকার বিষয়ে কিছু জানেন?'
এই প্রশ্নের জবাবে অর্পিতা জানান, ফ্ল্যাট আমার নামে। সেখান থেকেই টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু এই নগদের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার এন্টারটেইনমেন্টের ব্যবসা আছে। সংস্থার নাম ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্ট। কিন্তু নগদ উদ্ধার নিয়ে আমি অবগত নই। আমার কাছে এটাই আশ্চর্যের যে আমার বাড়ি থেকে এতো নগদ কীভাবে উদ্ধার হল!
দুই অভিযুক্তের এই সওয়াল পালা শেষে ইডির যুক্তি, 'নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড ১০০ কোটি টাকার। আরও বাড়তে পারে টাকার অঙ্ক। রাসবিহারী কানেক্টর এবং যামিনী রায় রোডে সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। অর্পিতার অ্যাকাউন্টে আরও ৫ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। যত তদন্ত এগোবে, এই টাকার অঙ্কের পরিমাণ আরও বাড়বে।'
ইডি আইনজীবী আদালতকে জানান, 'আমরা যেদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিলাম উনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। উনি দলের সেকন্ড ইন কমান্ড। আমরা যে সিজার লিস্ট অনেক দিয়েছিলাম, ওটা উনি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তারপর এসএসকেএম-এ ভর্তি হয়েছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে আরও তিনটি কোম্পানি পাওয়া গিয়েছে। পিংলায় একটি স্কুলের খোঁজও পাওয়া গিয়েছে।' দুই তরফের এই সওয়াল-জবাবের পর এদিন প্রায় ঘণ্টা চারেক রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। অবশেষে সন্ধ্যা ৭টার পর জামিনের আবেদন খারিজ করে ফের দু'জনকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (APA) বিচারক বদল। ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিশেষ ইডি-সিবিআই (ED-CBI Court) আদালতের নতুন বিচারক বিদ্যুৎ কুমার রায়ের এজলাসে হবে জামিন মামলার শুনানি। বিচারক জীবন কুমার সাধু অবসর নেওয়ায় এই রদবদল। বিচার ভবন সূত্রে এমনটাই খবর। এদিকে, বুধবার ভার্চুয়ালি পার্থ-অর্পিতাকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে হাজির করা হবে। ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত এই দু'জন জামিনের আবেদন করেন কিনা? সেদিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্য।
নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভার্চুয়াল শুনানির আবেদন করা হয় জেল কর্তৃপক্ষের তরফে। সেই আবেদন গ্রাহ্য করে এই দুই বিচারাধীন বন্দিকে ভার্চুয়ালি হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক তছরূপের মামলায় এখনও অবধি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে পেয়েছে ইডি। সেই তথ্য-প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এদিনের শুনানিতে জামিনের বিরোধিতা করতে পারেন ইডির আইনজীবী।
গত শুনানিতে যেকোনও শর্তে জামিন চেয়ে আদালতে দরবার করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যদিও ইডির পাল্টা যুক্তিতে খারিজ হয়েছে সেই জামিনের আবেদন। বুধবার শুনানিতে কী ঘটতে পারে, সেদিকে তাকিয়ে রাজ্য রাজনীতি।
এবার সমবায় ব্যাঙ্কের (Co Operative Bank) নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে কাঠগড়ায় রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী অরূপ রায় (Arup Ray)। হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জমা পড়া অতিরিক্ত হলফনামায় নিয়ম ভেঙে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠদের চাকরি পাওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে এবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), পরেশ অধিকারী, অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে একইসারিতে পড়লেন মন্ত্রী অরূপ রায়ও।
হাইকোর্টে দাখিল হলফনামায় অভিযোগ, সমবায়মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সত্য সামন্তের বোন সমবায় ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়েছেন। ৫২টি শূন্যপদ থাকলেও নিয়োগ হয়েছে ১৩৪ জনের। একাধিক ব্যক্তির ঘনিষ্ঠদের চাকরি হয়েছে তমলুক-ঘাটাল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে। এই ব্যাঙ্কে তৃণমূল নেতাদের ঘনিষ্ঠদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে আদালতে।
অতিরিক্ত হলফনামায় বলা হয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি প্রয়াত দেবব্রত দাসের ভাইপোও অবৈধ ভাবে চাকরি পেয়েছেন। চাকরি পেয়েছেন সেই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ্র মাইতির ভাইপো। এখানেই শেষ নয় অতিরিক্ত হলফনামায় দাবি, কেন্দ্রীয় এই সমবায় ব্যাঙ্কের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সিইও প্রণয় কুমার চক্রবর্তীর ভাইপো চাকরি পেয়েছেন। এছাড়াও ব্যাঙ্ক সচিব কৌশিক কুলভির ভাইপো, ব্যাঙ্ক কর্তা নিমাই অধিকারীর মেয়ে এবং ব্যাঙ্কের কর্তা তপন কুমার কুলিয়ার ছেলেও চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ।
হলফনামায় অভিযোগ, ৫২টি শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত ১৩৪ জন নিযুক্ত হয়েছেন। যদিও এই অভিযোগকে অসত্য ভিত্তিহীন বলেছেন মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি জানান, প্রকৃত তদন্ত হোক। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁরা শাস্তি পাবে।