আদালত অবমাননা মামলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে উত্তর দেওয়ার আরও সময় দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের করা মামলায় আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে রাজীব সিনহার (Rajiv Sinha) বিরুদ্ধে। আদালতের নির্দেশ না মেনে অবমাননা করা হয়েছে বলেই পর্যবেক্ষণ ছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে রুল জারি হয় ও আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ অর্থাৎ শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ আদালত অবমাননার রুলের উত্তর দিতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিল রাজীবকে।
আজ অর্থাৎ শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ আদালতে সশরীরে হাজিরা দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ২৪শে নভেম্বর সশরীরে হাজিরা দিয়ে আদালত অবমাননার বিষয়টি ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু এদিন অর্থাৎ শুনানির দিন রুলের উত্তর দেওয়ার জন্য সময়ের আর্জি জানালে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তাঁকে সময় দেয়। এছাড়াও জানানো হয়েছে, হলফনামার মাধ্যমে তাঁকে দিতে হবে উত্তর।
এদিন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, রুলের উত্তর দিতে আরও সময় দেওয়া হল নির্বাচন কমিশনারকে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হল কমিশনারকে। তার মধ্যে তাঁকে উত্তর দিতে হবে। ৮ জানুয়ারির মধ্যে শুনানি শেষ করতে হবে। ওই দিন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারে ডিভিশন বেঞ্চ। তবে প্রয়োজনে ফের তাঁকে হাইকোর্টে ডাকা হতে পারে এমনটাই জানিয়েছে হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থেকে আদালতের একাধিক নির্দেশ অবমাননা করেছেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা বিরুদ্ধে এমনটা দাবি করেই আদালতে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা আদালত অবমাননা করা হয়েছে বলেই পর্যবেক্ষণ ছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের।
মঙ্গলবার রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠক করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা (Rajib Sinha)। মনোনয়ন পর্বে অশান্তি এবং নিরাপত্তা সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওই বৈঠকে।
সর্বদলীয় বৈঠক না করে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল বামফ্রন্ট সহ সব বিরোধী রাজনৈতিক দল। তারপর মঙ্গলবারের ওই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছে বিজেপি এবং কংগ্রেস। মনোনয়ন জমার সময় বৃদ্ধি, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সহ মোট পাঁচ দফা আবেদন করে ওই মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ১৪ জুলাই নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও মামলার রায়দান এখনও বাকি।
৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election)। এক দফাতেই হবে ভোট। ঘোষণা করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা সাংবাদিক বৈঠক করেন।
কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাঝে এক মাস সময়। ৯ জুন থেকে মনোনয়ন জমা শুরু করতে পারবেন প্রার্থীরা। ১৫ জুন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। ১১ জুলাই ফল ঘোষণা। এমনই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
দীর্ঘদিন ধরেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে টালবাহানা চলছিল। রাজ্যপালের অনুমোদন নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করে রাজ্য। এবার রাজ্যের নোটিস পাওয়ার পর পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করলেন নতুন মুখ্য কমিশনার রাজীব সিনহা।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election) কবে, তা নিয়ে দফতর কিছু জানে না। সবটাই সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে হবে। বুধবার রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার (Commisioner) হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে এমনই জানালেন রাজীব সিনহা (Rajib Sinha)। কয়েকবছর আগে রাজ্যের মুখ্যসচিব ছিলেন তিনি।
রাজীবের দাবি, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ করে রাজ্য সরকার। তাঁদের কাছে তারিখ জেনে তা ঘোষণা করবে কমিশন। কমিশনের কাজ হবে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা। রাজীব সিনহা সবে দায়িত্ব পেয়েছেন। এখনও নির্বাচনের দিনক্ষণ তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। বুধবার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজীব বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের একক সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে না। রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে, তাঁদের মতামত জেনে কমিশন একটি তারিখ ঘোষণা করে।
গত ২৮ মে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার পদের মেয়াদ শেষ হয়েছিল। রাজ্য সরকারই নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাজীব সিনহার নাম প্রস্তাব করে। প্রাথমিকক ভাবে রাজভবন তাতে আপত্তি দেখায়। পরে রাজভবন তাতে সিলমোহর দেয়। যদিও এই অনুমতি দিতে রাজভবনের কিছুটা সময় লাগে।