শুক্রবার চারদিনে পড়লো কুড়মি (kurmi) সমাজের রেল রোকো আন্দোলন। পুরুলিয়া (Purulia) কুস্তাউর রেল স্টেশনে (railway station) হওয়া এই রেল অবরোধ জেরে বিপাকে সাধারণ রেল যাত্রীরা। প্রায় ৭২ ঘণ্টা অতিক্রম, তবুও নিজেদের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা। যতক্ষন না সিআরআই (CRI) রিপোর্ট সংশোধন করে রাজ্যে সরকার কেন্দ্র সরকারকে পাঠাচ্ছে ততক্ষণ তাঁদের এই আন্দোলন চলবে।
শুক্রবার অবশেষে সিআরআই রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠালো রাজ্য সরকার। তবে সেই রিপোর্ট এ কী আছে, তা দেখে আলোচনা করে রেল অবরোধ প্রত্যাহর করবে কুড়মি সমাজ, এমনটাই জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ইতিমধ্যে তার একটি প্রতিলিপি আদিবাসী কুড়মি সমাজের সদস্যদের হাতে তুলে দেয় পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের দেওয়া চিঠিতে বরফ গলেনি, তাই আন্দোলন তুলতে ব্যর্থ প্রশাসন। ফলে অব্যাহত পুরুলিয়া রেল অবরোধ। বৃহস্পতিবার পর শুক্রবার সকাল থেকে আন্দোলনে মধ্য দিয়ে রেললাইনে বসে চলছে খাওয়া দাওয়া। রেলট্র্যাকেই ঘুমোচ্ছেন আন্দোলনকারীরী। এক কথায় চারদিনের এই রেল অবরোধের জেরে পুরুলিয়া জনজীবন বিপর্যস্ত। যদিও রেল আধিকারিক থেকে জেলা প্রশাসন ধাপে ধাপে কুড়মি সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করলেও তাতে কাজ হয়নি। রেল অবরোধের জট কাটাতে ব্যর্থ প্রশাসন। এর জেরে সার দিয়ে একাধিক স্টেশনে দাঁড়িয়ে দূরপাল্লার ট্রেন। বাতিল হয়েছে কয়েকজোড়া এক্সপ্রেস এবং লোকাল ট্রেন।
অন্যদিকে ঝাড়গ্রামে কুড়মি সমাজের অবরোধ আন্দোলনের জেরে জাতীয় সড়কে ট্রাকের লম্বা লাইন। ধাপে ধাপে প্রায় ওড়িশা বর্ডার জামশোলা পর্যন্ত ট্রাক দাড়িয়ে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন সাধারণ যাত্রীরা। রাস্তায় লাইন দিয়ে দাড়িয়ে পিয়াজের ট্রাক। যা ইতিমধ্যে নষ্ট হতে শুরু করেছে। আরও নানা ধরনের সামগ্রীর একই হাল। ঝাড়গ্রাম বাজারের কাঁচামালের অবস্থাও একই রকম। এখান থেকে ঝাড়খন্ড, ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণে সব্জী পাইকারি করা হত। যা এই মুহুর্তে পুরোটাই বন্ধ। বাইরের সব্জিও ঢুকছে না ঝাড়গ্রামে। ফলে পুজোর আগে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার পেরিয়ে আজ বুধবার, ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিপর্যস্ত দক্ষিণ-পূর্ব রেলের (South Eastern Railway) বেশকিছু শাখার রেল যোগাযোগ। মূলত, কুড়মি সম্প্রদায়ের রেল অবরোধের (Rail blockade) জেরেই এই সমস্যা। একদিন পরেও পুরুলিয়ার (Purulia) কুস্তাউর স্টেশনে রেল অবরোধ ও ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষেরা। কুড়মি জাতিকে তপশিলি উপজাতির (ST) তালিকাভুক্ত করা, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তপশিলে তালিকাভুক্ত-সহ একাধিক দাবিতেই তাঁরা রেল অবরোধ করছেন। রেল অবরোধের জন্য বাতিল হয়েছে আদ্রা-হাওড়া শাখায় বহু ট্রেন। রেলের আদ্রা ডিভিশনের ১১টি প্যাসেঞ্জার আর এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। রুট বদল হয়েছে ৬টি এক্সপ্রেস ট্রেনের। এছাড়াও ৭ ট প্যাসেঞ্জার আর এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার ১৭টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ১২টি প্যাসেঞ্জার-এক্সপ্রেস ট্রেনের রুটও সংক্ষিপ্ত করা হয়। এর পাশাপাশি ১৩টি ট্রেনের রুট বদলে দেওয়া হয়। এই অবরোধে ব্যাপক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
মঙ্গলবার সকাল থেকে হয়রানির আশঙ্কায় পুরুলিয়া-আদ্রা শাখায় ৩টি লোকাল বাতিল করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে খড়গপুর শাখার খেমাশুলি স্টেশনে সকাল ৬টা থেকেই রেল অবরোধ শুরু হয়েছে। অবরোধের জেরে টাটানগর-খড়্গপুর প্যসেনঞ্জার, চক্রধরপুর-গোমো এক্সপ্রেস, খড়্গপুর-টাটানগর স্পেশাল, দুটি খড়্গপুর-ঝাড়গ্রাম স্পেশাল ট্রেন, ধানবাদ-ঝাড়গ্রাম এক্সপ্রেস, আসানসোল-রাঁচী প্যাসেনঞ্জার-এর মতো একাধিক ট্রেন বাতিল হয়েছে।
অদ্ভুতুরে কাণ্ড হস্টেল (Hostel) চত্বরে। অশরীরীর আতঙ্কে এখনও ভয়ে কাঁটা পুরুলিয়ার (Purulia) কাশীপুর গার্লস স্কুলের (school) আদিবাসী হস্টেলের আবাসিকরা। কুসংস্কার দূর করার চেষ্টা করেও সুফল মিললো না বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের।
ভূতের আতঙ্ক (panic) যেন কিছুতেই কাটছে না। একেবারে জাঁকিয়ে বসেছে আবাসিকদের মনে। স্কুলের হস্টেল ছেড়ে চলে গিয়েছে ছাত্রীরা। রাত হলেই নানারকম কাণ্ড কারখানার সম্মুখীন হচ্ছে বাকিরা। ছাত্রীরা জানান, মহিলার কান্নার শব্দ সঙ্গে নানারকম অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে তারা। আতঙ্কে হস্টেলে থাকার সাহসই পাচ্ছে না ছাত্রীরা। তাই যে যার মত বাড়ি চলে গিয়েছে। হস্টেলে রয়েছে হাতে গোনা মাত্র ৪ জন।
স্কুলের শিক্ষিকারা যতই বলুন, ভূত নেই। ছাত্রীদের মন মানতেই চাইছে না। এক্ষেত্রে কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাই যেন খাটছেই না। ইতিমধ্যেই, প্রধান শিক্ষিকা মিতালী চট্টোপাধ্যায় এই সমস্যা মেটাতে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া শাখার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ৫-ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বিজ্ঞান মঞ্চ কেন্দ্রের সম্পাদিকা কস্তুরী মুখোপাধ্যায় পুরুলিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী সহ পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া শাখার সম্পাদক চিকিত্সক নয়ন চট্টোপাধ্যায় ওই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অশরীরীর ভীতি দূর করার চেষ্টাও করেন। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক কমলাকান্ত হাঁসদাও। তিনি অশরীরীর তত্ত্ব উড়িয়ে অভিযোগ করেছেন, কিছু অসৎ মানুষ এইসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তবে এতদিনেও সমস্যা না মেটায় গোটা ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।
তবে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪ জন আবাসিক ফিরে এসেছে হস্টেলে। বাকিরা আতঙ্কে নিজেদের বাড়িতেই রয়েছে। কবে কাটবে আতঙ্ক? এখন সেই আশাতেই দিন গুনছে কাশীপুর গার্লস স্কুলের ছাত্রীরা।
শিক্ষক দিবসে (Teacher's Day) এবার লাগলো রাজনৈতিক রং। ঝালদা (Jhalda) পঞ্চায়েত সমিতি বনাম ঝালদা ১ নং ব্লক সভাপতি আয়োজিত শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। প্রকট তৃণমূলের ২ গোষ্ঠীর লড়াই। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও নারাজ।
জানা যায়, পুরুলিয়ায় (Purulia) তৃণমূলের ব্লক সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। এরপর থেকেই ঝালদা শহর ও গ্রামের তৃণমূল নেতা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ জমছিল। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে সোমবার শিক্ষক দিবসের মঞ্চে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
প্রতিবছর ঝালদা এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি আয়োজিত শিক্ষক দিবস অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতিবার তৃণমূলের সমস্ত নেতা কর্মীরা সমবেত হয়ে এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করেন। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছরও ঝালদা বাঁধাঘাটের কাছে একটি মাঠে পঞ্চায়েত সমিতি তাঁদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অন্যদিকে একই সময় শহর ঝালদার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কমিউনিটি হলে ঝালদা ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জয়প্রকাশ মাহাতো এবছর আলাদাভাবে শিক্ষক দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নেন। ফলে সমস্যায় পড়ে ব্লকের সাধারণ তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। আড়াআড়িভাবে দুভাগে ভাগ হয়ে যেতে বাধ্য হন কর্মীরা। আর এরপরই ঘটে বিপত্তি।
এদিন ঝালদা ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি বিপ্রদাস মাহাতো মঞ্চ থেকে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, "নবাগত কিছু তৃণমূল নেতা দলে এসে দলকে ভাঙার খেলায় মেতেছে। আর তাদেরকে মদত যোগাচ্ছে দলেরই কিছু নেতা। ঝালদা পঞ্চায়েত সমিতিকে দলেরই একাংশ ভেঙে দেওয়ার খেলায় মেতেছিল। কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টায় সমিতি ভাঙতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।"
আবার ওই মঞ্চ থেকেই জেলা যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আক্ষেপের সুরে বলেন, "তৃণমূল ক্ষমতায় আশার আগে থেকে সিপিএম-এর হাতে মার খেয়ে দল করার পরও এখন নবাগত কিছু তৃণমূল নেতা তাঁদের তৃণমূলী বলে মনেই করে না।"
এই বিষয়ে বাগমুন্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো কি বলছেন? তিনি বলেন, "জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে ব্লক সভাপতি শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান ডেকেছে, তাই উপস্থিত হয়েছি।"
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সোমেন বেলথরিয়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, "পঞ্চায়েত সমিতি সরকারি অনুষ্ঠান করতে পারে। তবে ব্লক স্তরে সবাইকে নিয়ে অনুষ্ঠান করার নির্দেশ রয়েছে। এছাড়া, দল বিরোধী কোনও বক্তব্য কেউ দিলে দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। একইসঙ্গে, খুব শীঘ্রই দলের সমস্ত পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস তাঁর।
কিন্তু, আশ্বাস দিলেও জল্পনা থামছে না। প্রশ্ন উঠছে, শিক্ষক দিবস পালন নিয়ে আমরা-ওরা মনোভাব পোষণ করছে কেন শাসকদলের নেতারা? আর কেনই বা রাজনৈতিক আঁকচা আঁকচির জন্য শিক্ষক দিবসের মঞ্চকে বেঁছে নেওয়া হল?
এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর (Gold Businessman) বাড়ি থেকে পরিচারিকার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের (Deadbody) ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুরুলিয়া (Purulia) শহরের দর্জি পাড়া এলাকায়। রহস্যজনক ভাবে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর স্ত্রীকেও ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুরুলিয়া সদর থানার পুলিস (Police)।
জানা গিয়েছে, মৃত পরিচারিকার নাম পার্বতী বাদ্যকর। বয়স ৫০। আহত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর স্ত্রী নন্দিতা দাস কর্মকার। রবিবার ওই পরিচারিকার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিস। আহত ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর স্ত্রীকেও উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
পুলিস ও প্রতিবেশীদের প্রাথমিক অনুমান, এটা খুনের ঘটনা। ওই বাড়িতে কর্মরত দুই রাজ কাঠমিস্ত্রি এই খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। যদিও ওই অভিযুক্ত দুজনই পলাতক।
পুলিস গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে রয়েছে কিনা তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে।
পুরুলিয়া সূচ কাণ্ডে(Purulia needle case) যাবজ্জীবন মঙ্গলা-সনাতনের। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দের ডিভিশন বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ড রদ করে দেয়। একই সঙ্গে উচ্চ আদালত জানায়, আগামী ৩০ বছর পর্যন্ত জামিনের(bail) আবেদন করতে পারবেন না সনাতন। ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর, ঘটনার প্রায় চারবছর পর ফাঁসির সাজা (death sentence) শুনিয়েছিল আদালত। পুরুলিয়া আদালতের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছে।
ঠিক কী হয়েছিল ?
২০১৭ সালে ১১ জুলাই পুরুলিয়ার সুচ কাণ্ডের (Purulia Needle Case) ঘটনা সারা রাজ্যে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। পুরুলিয়া মফস্বল থানার নদিয়াড়া গ্রামের তিন বছরের শিশু কন্যাকে (3Years old Baby Girl) শরীরে একাধিক সুচ (Needle) ঢুকিয়ে নৃশংসভাবে মেরে ফেলা হয়েছিল। পুরুলিয়ায় দেবেন মাহাত সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল ওই শিশুকন্যাকে। তাকে পরীক্ষা করতে গিয়ে চিকিৎসকেরা দেখেন তার সারা শরীরে ছিল ক্ষত। এমনকী যৌনাঙ্গেও গভীর ক্ষত দেখতে পেয়েছিলেন তাঁরা। এরপর পুলিশ এবং চাইল্ড লাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় হাসপাতালের তরফে। এরপর শিশুর এক্স রে করলে দেখা যায়, তার শরীরের ভিতর বড় আকারের সাতটি সূচ রয়েছে। এরপরই তদন্ত শুরু হয়।
এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত হন শিশুর মা মঙ্গলা গোস্বামী এবং প্রেমিক সনাতন গোস্বামী ওরফে ঠাকুর। সেই ঘটনাকে বিরলতম বলে উল্লেখ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে দুজনকেই ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল পুরুলিয়ার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। সেই মামলায় এবার কলকাতা হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডের সাজা রদ করল। বৃহস্পতিবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি বিভাস রঞ্জন দে-র ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। রাজ্যের তরফে এই মামলায় সওয়াল করেন আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধন। শুনানির পর মঙ্গলা ও তাঁর প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলা তাঁর স্বামীকে ছেড়ে কন্যা সন্তানকে নিয়ে সনাতনের বাড়িতেই থাকতেন। সন্তানকে নাকি পছন্দও করতেন না তিনি। ওই শিশুকে যৌন খেলনা হিসেবে ব্যবহার করা হত বলেও জানতে পারে পুলিস। আর ব্ল্যাক ম্যাজিকের চর্চা করতেন দুজনে। গ্রেফতার হওয়ার পর জেরায় এই সব কথা স্বীকার করেছিলেন সনাতন ও মঙ্গলা।
বলিউডের পুষ্পা (puspa) সিনেমার ফিল্মি কায়দায় দুধের (milk) গাড়িতে গরু পাচার (cow smuggling)। তবে শেষ রক্ষা হল না। দুর্ঘটনা কবলে পড়ে ফাঁস হল গরু পাচার। ঘটনাটি পুরুলিয়ার (Purulia) হুড়া ব্লকের বিসপুরিয়া এলাকার। সাত সকালে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
জানা গিয়েছে, একটি বেসরকরি সংস্থা দুধ কন্টেনারের ভিতরে গরু নিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘটনাস্থলে পাঁচটি গরুর মৃত্যু হয়। আহত হয় বেশ কয়েকটি গরু। স্থানীয়রা জানান, সাত সকালে পুরুলিয়ার হুড়া থানার অন্তর্গত পুরুলিয়া-বাঁকুড়া ৬০(এ) জাতীয় সড়কের উপর বিষপুরিয়া এলাকায় একটি দুধের গাড়িতে ২২ টি গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই সময় হঠাৎ ওই গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিস। গ্রামবাসীদের সহায়তায় গরুগুলিকে উদ্ধার করা হয়।
এবার প্রশ্ন উঠছে, যখন গরু পাচার কাণ্ডে রাজ্যে রাজনীতি তোলপাড়, ঠিক তখন কীভাবে বেসরকারি কোম্পানির দুধের কন্টেনারের ভিতর সবার চোখকে ধুলো দিয়ে এই গরু পাচার হচ্ছিল?
এই বিষয়ে বিজেপির জেলা সম্পাদক আব্দুল আলিম আনসারির অভিযোগ, "পুষ্পা সিনেমার কায়দায় গরু পাচার হচ্ছিল। অথচ পুলিস কিছুই জানেনা। পুরুলিয়াতেও গরু পাচার রমরমা রয়েছে, তারই প্রমাণ এই ঘটনা।" যদিও এই বিষয়ে পুলিস জানিয়েছে, গাড়ির চালক ও খালাসি বয়ান অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশের রেজিস্ট্রেশনের একটি দুধের গাড়িতে উত্তরপ্রদেশের ঔরঙ্গাবাদ জেলার বরুন হাট থেকে ২২ টি গরু বিহারে হয়ে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ঘটনায় নির্দিষ্ট মামলা নথিভুক্ত করেছে পুলিস।
সাত সকালেই বিনা চিকিৎসায় শিশু মৃত্যু (death) ঘিরে তোলপাড় শহর পুরুলিয়া (Purulia)। ঘটনায় মূহূর্তের মধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (hospital)। পরিবারের তরফ থেকে জানা যায়, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে সোমবার সকালে ভর্তি করা হয় বছর পাঁচের পুত্র সন্তানকে। এরপর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এই মর্মান্তিক মৃত্যু।
জানা যায়, পুরুলিয়ার টামনা থানার কোটলোই গ্রামের বাসিন্দা রাজীব কুমার তাঁর ছেলে শিবম কুমারকে সোমবার ভর্তি করে। যন্ত্রনায় ছটফট করছিল তাঁর ছেলে। অভিযোগ, হাসপাতালে নেই সঠিক পরিষেবা। এমনকি পরিষেবার কথা জিজ্ঞাসা করা হলেও তোয়াক্কা না করার অভিযোগ তুলেছে পরিবার। বারবার চিকিৎসকের দাবি জানালেও কোনও চিকিৎসক আসেননি। অবশেষে বিনা চিকিৎসায় মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয় ওই শিশুর।
মৃত শিশুর পরিবার চিকিৎসা গাফলতি অভিযোগ তুলে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। সাত সকালে এমন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই শোকের ছায়া পরিবার সহ এলাকায়।
তবে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় হাসপাতালে ছুটে আসেন স্থানীয় বিরোধী নেতৃত্বরা। তাঁদেরও এদিন সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরাতে দেখা যায়।
কয়লা পাচার-কাণ্ডে (Coal Case) এবার ইডির র্যাডারে বীরভূম (Birbhum) এবং পুরুলিয়ার দুই বিধায়ক। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় এই সংস্থার (ED) স্ক্যানারে রয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার এক মন্ত্রী। তিনি এক সময় বীরভূমের পর্যবেক্ষক ছিলেন। যদিও কে সেই মন্ত্রী এবং দুই বিধায়ক, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।
এদিকে, কয়লা-কাণ্ডে এবার ইডির নজরে রাজ্যের পদস্থ পুলিশ কর্তারা। অন্তত ৮ জন আইপিএস-কে ১৫ অগাস্টের পর দিল্লিতে তলব করেছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। সম্প্রতি কয়লা পাচার-কাণ্ড নিয়ে দিল্লিতে ইডির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকের পরেই এই পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় ওই তদন্তকারী সংস্থা। এমনটাই সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, আইপিএস জ্ঞানবন্ত সিং থেকে কোটেশ্বর রাও-সহ সুকেশ জৈন, তথাগত বসু, রাজীব মিশ্র-সহ ৮ জনকে তলব করেছে ইডি। অপরদিকে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে কোনও বিশেষ সুবিধা পাবেন না। এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলের জেলার। সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সি জেলের নিচুতলার কর্মীরা হুইল চেয়ার জোগাড় করে দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। সেই হুইল চেয়ার নিয়ে পার্থ ঘুরলে নিচুতলার কর্মীদের ধমক দেন জেলার। কোনও ধরনের অতিরিক্ত সুবিধা যাতে না দেওয়া হয় প্রাক্তন মন্ত্রীকে সেই বিষয়েও কড়া নজর রাখছে জেল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে পার্থর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় রয়েছেন আলিপুরের মহিলা সংশোধনাগারে। তবে অর্পিতা রানির মতো রয়েছেন জেলে, এমনটাই সূত্রের খবর। বেশ কয়েকটি ছবিতে তাঁকে অভিনয় করতে দেখেছেন জেলের সহ-বন্দিরা। ফলে অর্পিতার বিছানা করা থেকে, জামাকাপড় পরিষ্কার করে দিচ্ছেন বাকিরা। কেউ বা আবার বিছানা পেতেও দিচ্ছেন।