চিকিত্সকের গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর (atient Death) অভিযোগ (Allegations)। অভিযোগ উঠেছে বাগদা (Baghdad) গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিত্সকের বিরুদ্ধে। অভিযোকারী পরিবারের পক্ষ থেকে বিএমওএইস এর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মৃত রোগীর নাম স্মৃতি বিশ্বাস। তিনি হরিহরপুরের বাসিন্দা। শনিবার সকালে অসুস্থ অবস্থায় নিয়ে আসে তাঁর প্রতিবেশীরা। অভিযোগ, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে জরুরী বিভাগে ছিল না ডাক্তার। দীর্ঘ কুড়ি পঁচিশ মিনিট হলেও কোনও ডাক্তারের দেখা পাওয়া যায়নি। নার্স এসে রোগীকে দেখলেও ডাক্তার অনেক দেরিতে আসার কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে রোগীর, দাবি পরিবারের।
মৃত স্মৃতি বিশ্বাসের ভাই শ্রীবাস বিশ্বাসের দাবি, প্রশাসনের কাছে আবেদন জানায় সঠিক তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যদিও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়া ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চূড়ান্ত অব্যবস্থা ও অমানবিকতার ছবি। টাকার অভাবে অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করতে পারেনি রোগীর পরিবার। অভিযোগ কর্তব্যরত চিকিৎসককে বলেও হয়নি সুরাহা। উলটে রোগীর পরিবারকে বলা হয়, 'ট্রেনে করে বর্ধমানে নিয়ে যান।' এরপর নিরুপায় হয়ে ট্রেন পথে আশঙ্কাজনক রোগীকে নিয়ে বর্ধমানে যাওয়ার তোরজোড় শুরু হতেই ভাতার স্টেশনে মৃত্যু হয় বছর ৪৮-র মেনকা কোঁড়ার।
ঠিক কী ঘটেছে বৃহস্পতিবার? জানা গিয়েছে, ৪৮ বছরের মেনকা কোঁড়ার বাড়ি বর্ধমানের পারবীরহাটার কোঁড়া পাড়ায়। ধান কাটার জন্য সপরিবারে ভাতারের কাঁচগোড়িয়া গ্রামে এসেছিলেন মেনকারা। গত দু-তিন দিন অসুস্থ থাকায় দুর্বল হয়ে পড়েন মেনকাদেবী। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ তাঁকে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা তিনটে স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দেন। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায়, তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে রেফার করা হয়।
এখন এই অব্যবস্থার ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, রেফার রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা না করে দিয়ে কীভাবে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হল? ভাতারের ঘটনায় মৃতার ভাই রাজু কোঁড়ার অভিযোগ, 'দিদিকে সকাল সাড়ে আটটার সময় হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য হাসপাতালে বলি, তাঁরা বলে টাকা লাগবে। আমাদের কাছে অত টাকা নেই শুনে বলা হয়, যাঁদের বাড়ির ধান কাটতে এসেছেন, তাঁদের বাড়ি থেকে টাকা আনতে। এদিকে দিদি ছটফট করছে, তখন ঠিক করি, ট্রেনে করে বর্ধমান নিয়ে যাব। সেই মতো টোটো করে স্টেশনে নিয়ে আসি। প্ল্যাটফর্ম ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই দিদি মারা যান।'
মৃতার স্বামী অসিত কোঁড়ার অভিযোগ, 'আমাদের রোগীকে নিয়ে বর্ধমানে যেতে বললে, আমরা বলি পয়সা নেই কীভাবে যাবো। ওরা বলে ট্রেনে করে চলে যাও। এরপর সঙ্গে যা টাকা ছিল, সেই টাকায় টোটো ভাড়া করে স্টেশনে নিয়ে যাই। তারপরেই মারা গেলো রোগী। হাসপাতালে ছাড়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই এই ঘটনা। সঠিক সময়ে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা গেলে স্ত্রী বেঁচে যেতেন।'
তবে এখানেই দুর্গতির শেষ নেই। জানা গিয়েছে, রেল স্টেশনে গাছের তলায় বাঁধানো বেদিতে মৃতদেহ রেখে কান্নাকাটি শুরু করে মৃতার পরিজন। কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ীর নজরে বিষয়টি পড়লে তাঁরা চাঁদা তুলে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করেন। সেই গাড়ি করে মৃতদেহকে বর্ধমানে পরিবার। এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ভাতারের এই ঘটনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) জগন্নাথ হেমব্রম জানান, 'ঘটনার কথা শুনেছি। বিএমওএইচ-কে রিপোর্ট দিতে বলেছি। শুনেছি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি খারাপ আছে। এই ঘটনা অনভিপ্রেত।'
শহরের সরকারি হাসপাতালে ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে রোগী মৃত্যুর (Patient Death) ঘটনা। এবার কাঠগড়ায় এনআরএস হাসপাতাল (NRS Hospital)। অভিযোগ, চার হাসপাতালে ঘুরে এনআরএস হাসপাতালে আসলে চিকিৎসা না পেয়েই মৃত্যু বছর ২৪-র যুবকের। জানা গিয়েছে, বাইক থেকে পড়ে চোট পান ওই যুবক (Young Boy Died)। পায়ে গুরুতর চোট পেলে এবং যন্ত্রণা শুরু হলে শহরের একাধিক হাসপাতাল ঘুরে এনআরএস-এ আনা হয় সেই যুবককে। দীর্ঘক্ষণ তাঁকে চিকিৎসা না দিয়ে ফেলে রাখা হয়, তাতেই যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। শুধু চিকিৎসায় গাফিলতি নয়, উঠেছে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ। যদিও হাসপাতাল সূত্রে খবর, চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতিও চলছিল। সেই সময় মৃত্যু হয় যুবকের।
এদিকে পরিবারের অভিযোগ, ভালো ছেলে কথা বলছিল। নিজে জলও খায় তারপরেও কীভাবে এই ঘটনা। ওকে ভর্তির সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাঁদের অনেক অনুনয়-বিনয় করা হয়। রোগী সমেত ঢুকতে দেওয়া হয়নি, কার্ড করে না আনলে চিকিৎসা হবে না। আমাদের এসব বলা হয়। এভাবে সকাল ৯টা অবধি ফেলে রেখেছিল রোগীকে। প্রাথমিক চিকিৎসা হলে ওই যুবক বেঁচে যেত। এমন আক্ষেপ শোনা গিয়েছে পরিবারের গলায়।
মৃতের মা জানান, 'বাইক থেকে পড়ে পায়ে চোট পায়। যন্ত্রণা হলে ভাঙড়ে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। রাতে ব্যথা হলে এসএসকেএম হাসপাতালে আনলে এক্সরে কর কিছু পায়নি। আমাদের বলে চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও কিছু না পেয়ে বলে নীলরতনে নিয়ে যান। সকাল ৬টা নাগাদ এই হাসপাতালে আনলে বলে আগে কাগজ আনুন, তারপর চিকিৎসা শুরু হবে। সিস্টারের কাছে গিয়ে ভর্তির কাগজ তৈরি করতে গিয়ে বলি একটু তাড়াতাড়ি করুন। বলে তাড়াতাড়ি হবে না। এভাবে সকাল ৯টা অবধি ছেলেটাকে ফেলে রাখে। একটা ইঞ্জেকশন দিলেই ব্যথা কমতো, আমার ছেলেটা বেঁচে যেত।'
ভুল চিকিৎসার (Wrong Treatment) বলি ১৪ বছরের এক নাবালিকা (Minor)। নিউটাউন থানার অন্তর্গত প্রমোদগড় এলাকার ঘটনা। ভুল চিকিত্সার অভিযোগ তুলে উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করল ডাক্তারের চেম্বার (Doctors Chamber)। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিস বাহিনী।
স্বর্ণালী মণ্ডল নামে বছর ১৪র এক নাবালিকাকে জ্বর এবং পেট ব্যথার চিকিৎসার জন্য শুক্রবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেই ডাক্তার ভুল চিকিৎসা করে বলে অভিযোগ। যে কারণে মেয়েটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে, এমনটাই অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরবর্তীকালে ওই মেয়েটিকে নিয়ে যখন আরজিকর হাসপাতালে যাওয়া হয়, তখন চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং সেই খবরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ক্ষিপ্ত জনতা ওই অভিযুক্ত ডাক্তারকে মারধর করে এবং তার চেম্বারটি ভাঙচুর করে। নিউটাউন থানার পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে এবং ওই চিকিৎসককে আটক করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা রয়েছে নিউটাউন প্রমোদগড় এলাকায়।
ঠিক কী ঘটেছিল, আসুন শুনে নিই মৃতের এক নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে।
এই ঘটনায় বাড়িতে শোকের ছায়া। মৃতের দিদির অভিযোগ, কী চিকিত্সা করা হচ্ছে, তা তাদের একবারের জন্যও বলা হয়নি। তাঁদের কাছে এটা পরিষ্কার, ডাক্তারের ভুল চিকিত্সাতেই এই মৃত্যু। তাই তাঁরা দোষীর উপযুক্ত শাস্তি চান।