পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তৃণমূল (TMC) পরিচালিত নিউ ব্যারাকপুর (New Barrackpur) পুরসভার চেয়ারম্যান। দলীয় এক সভায় প্রবীর সাহা জানান, চায়ের দোকানে তোলপাড় করে লাভ নেই। পার্থ চট্টোপাধ্যায় অন্যায় করেছে তৃণমূল তাকে কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছে। শরীরের কোনও অংশে ক্যান্সার হলে কেটে বাদ দিয়ে দিতে হয়। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় এখন রাজ্য রাজনীতি। প্রবীর সাহা যে দলের নেতা, সেই তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র আবার মন্তব্যে নারাজ।
কুণাল ঘোষকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি খানিকটা রসিকতার সুরে বলেন, 'আমি অঙ্কোলজিস্ট বা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ নয়। তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করব না। বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের আবার সুর চড়া। তিনি বলেন, 'উনি কড়া ব্যবস্থা নিয়েছেন খুব খুব ভালো কথা। কিন্তু উনি নিজে পুলিসকে সরিয়ে দিন, পুরসভার যারা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, তাঁরা গিয়ে থাপ্পড় মেরে আসবে।'
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গে বলেন, 'একটা ক্যান্সার বড় হয়ে ফুলে গিয়েছে তাই দেখা গিয়েছে। কিন্তু ক্যান্সারের একাধিক স্টেজ রয়েছে, স্টেজ ওয়ান, স্টেজ টু। পুরো দলটাই ক্যান্সারে আক্রান্ত, লুঠের ক্যান্সার হয়েছে। মন্ত্রী ধরা পড়েছেন, জেলা সভাপতি ধরা পড়েছেন।'
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার পুরপ্রধানের। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে ক্যানসার (cancer) বলে সম্বোধন নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার পুরপ্রধান প্রবীর সাহার। সোশ্যাল মিডিয়ায় (social media) ভাইরাল হওয়া এক ভিডিও, তাতে দেখা যাচ্ছে নিউ বারাকপুর (New Barrackpore) পুরসভার পুরপ্রধানের এমন মন্তব্য ঘিরেই শোরগোল পড়েছে। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ক্যালকাটা নিউজ ডিজিটাল।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ শে অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস, আর সেই প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে নিউ ব্যারাকপুর শহর তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তুতি সভা করা হয়। সেই মঞ্চেই পুর চেয়ারম্যান প্রবীর সাহার মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয়েছে শোরগোল। তিনি সেদিন সভামঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, "চায়ের দোকানে তোলপাড় করে লাভ নেই। পার্থ চট্টোপাধ্যায় অন্যায় করেছে তৃণমূল তাকে কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছে। শরীরের কোনও অংশে ক্যান্সার হলে কেটে বাদ দিয়ে দিতে হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেই ক্যান্সার, তাই দল বাদ দিয়ে দিয়েছে। দল দলের মত চলছে।
ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ক্যালকাটা নিউজ ডিজিটাল
প্রসঙ্গত, তৃণমূল প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পরই অস্বস্তিতে শাসক দল। এরপরই তৃণমূলে তাঁর সব পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে। মমতা ক্যাবিনেট থেকেও সরানো হয়েছে তাঁকে।
রাজ্য মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের পর প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠক (Cabinet Meeting) করলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। এই বৈঠকে মন্ত্রীদের আরও স্বচ্ছ এবং সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পার্থ-কাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রীর, তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রতি এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ। সূত্রে মারফত এই খবর পাওয়া গিয়েছে।
সূত্রের খবর বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, 'ভালো ভাবে, সতর্ক হয়ে কাজ করুন। কোনও ফাইল সইয়ের আগে খতিয়ে দেখে নিন।' এমনকি, জেলা থেকে কলকাতায় আসা মন্ত্রীরা পাইলট কার এবং বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। এমন নির্দেশ নাকি এদিনের ক্যাবিনেট বৈঠকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতিমন্ত্রীদের জন্যও কাজ ভাগ করে দেওয়া হবে। এযাবৎকাল পূর্ণমন্ত্রীদের জন্য কাজ থাকলেও প্রতিমন্ত্রীদের জন্য সেভাবে ছিল না কাজ। সেই দায়িত্ব এবার ভাগ করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনটাই সূত্রের খবর। পাশাপাশি রাজ্যে আগামি দিনে ১৮টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিট ও ৫টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হবে।
৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে ৪০০০ কর্মসংস্থান হবে রাজ্যে। নবান্নের মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তই হয়েছে। বৃহস্পতিবার নবান্নে জানান অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২১ হাজার রেশন ডিলারেরর সহযোগিতায় ৯.২৫ কোটি মানুষকে পরিষেবা দিতে পারছে সরকার। আগে তাই দুয়ারে রেশন প্রকল্পে ৭৫ টাকা প্রতি কুইন্টাল কমিশন দেওয়া হতো। সরকার সন্তুষ্ট হয়ে এবার ৫০০০টাকা করে প্রতি মাসে কমিশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
"কেউ ছাড় পাবেন না, সময় এলে সব জানতে পারবেন"। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে বিস্ফোরক মন্তব্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, সূত্রের খবর। আদালতে এদিন মেজাজ হারান তিনি। জেলের মধ্যে গতকাল তাঁকে জেরা করা হয়। তারপর স্টেটমেন্ট পেপার স্ক্র্যাচ করে দেন। ফলে তদন্তে অসহযোগিতা করছেন পার্থ। এমনটাই আদালতে জানিয়েছেন ইডির আইনজীবী। উল্লেখ্য, ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে আদালতে পৌঁছেই এই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।
পাশাপাশি পার্থকে জেরা করতে জেলে গিয়েছিল ইডি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অসুস্থতার কথা মিথ্যে বলে ইডির আইনজীবী বলেছেন। ৪৮ ঘণ্টা তাঁকে চেকআপ করা হচ্ছে। এইমস সূত্রে জানা গেছে, ৭০-র বেশি বয়সী মানুষ কোমর্বিডিটিতে ভোগেন। তাঁর কোমর্বিডিটি আছে, এটা সবার থাকে বলে ইডির আইনজীবী সওয়াল করেন। তবে পার্থর আইনজীবী বলেন তাঁর হিমোগ্লোবিন কমেছে, বেড়েছে ক্রিয়েটিনিন।
এদিনের শুনানিতে পার্থর কত সম্পত্তি আর লেনদেনের হদিশ পাওয়া গিয়েছে, সেই খতিয়ান দেয় ইডি। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানান, পার্থ ও অর্পিতার নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৬০। এ ছাড়া ৩০ টি শেল কোম্পানির কথাও জানানো হয়েছে ইডির তরফে। এছাড়া জীবন বিমা সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও এদিন তুলে ধরেছেন ইডির আইনজীবীরা। ইডি জানিয়েছে, অর্পিতার জীবন বিমার টাকা পার্থর অ্যাকাউন্ট থেকে কাটা হয়েছে। সেই মেসেজ এসেছে পার্থর মোবাইলেই।
অন্যদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী অসুস্থতার কথা বলে জামিনের আবেদন জানালেও এদিন পার্থ-অর্পিতার জামিনের আবেদন খারিজ করে আদালত। ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ।
তবে আদালতে দাঁড়িয়ে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন মন্ত্রীর এমন মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
রবিবার, ১৪ অগাস্ট স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বেহালায় যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee)। প্রতি বছর তিনি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু এ বছর চিত্রটা ভিন্ন। এই বেহালার (Behala) এক বিধানসভা আসনের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) আপাতত জেলবন্দি। প্রতিবার বেহালার এই অনুষ্ঠানে 'দিদি'র পাশেই দেখা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। কিন্তু শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে আপাতত তিনি দলের কোনও পদে নেই। তাঁকে সরানো হয়েছে রাজ্য ক্যাবিনেট থেকে।
তাই তৃণমূল তথা রাজ্য মন্ত্রিসভার একদা নাম্বার দুয়ের অনুপস্থিতিতে বেহালাবাসীকে কী বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী? সেদিকে তাকিয়ে বিরোধীরা। এদিকে, জানা গিয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলে এদিন পরিদর্শন করল ৮ জন ডাক্তারের একটি টিম। টিমের সদস্যরা সকলেই এসএসকেএমের চিকিত্সক বলে জানা গিয়েছে। মূলত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখতেই এই মেডিক্যাল টিম বলে জেল সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে জেলেরই অন্য সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
খাওয়াদাওয়াও করছেন স্বাভাবিকভাবেই। গত দুদিনে পায়ের ব্যথা কিছুটা বেড়েছে। তাই মাঝেমধ্যেই সেলের বাইরে হাঁটাহাঁটি করছেন।
জেলে একদিন মাছ, একদিন মাংস, একদিন ডিম, একদিন সোয়াবিন ও বাকি দিন নিরামিষ খাচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পড়ছেন রামকৃষ্ণদেবের কথামৃত। অর্থাত্, টাকা মাটি মাটি টাকার সেই মূল মন্ত্রকেই এখন জেলের নিস্তরঙ্গ সেলে নিজের সঙ্গী করে নিয়েছেন পার্থবাবু।
সূত্রের খবর, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত পার্থর খাওয়ার আবদারে প্রায় প্রতিদিনই দুবেলা ভাত দিতে হচ্ছে। কখনও আবার বিকালের দিকে চপ, বেগুনি এনে দিতে হচ্ছে জেলের ক্যান্টিন থেকে অনেক জোরাজুরিতে। এর মধ্যে একদিন খাসির মাংসের ঝোল ও ভাত দিতে হয়েছে তাঁকে। যদিও গতকাল রাখি পূর্ণিমার দিন জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাতে আমিষ পড়েনি। গতকাল তাঁর দুপুরের মেনুতে ছিল ভাত, ডাল এবং দু-রকমের তরকারি। যা খাবার দেওয়া হয়েছে সবটুকুই খেয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মহাসচিব। পাশাপাশি তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
তদন্তে ভয় পাচ্ছি না। জেলে থাকতেও ভয় নেই। কিন্তু সামাজিক সম্মান নিয়ে টানাটানি করলে ভয় লাগে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
উল্লেখ্য, সময়ের ব্যবধান মাত্র তিন সপ্তাহ। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার প্রথম সারির দুই তৃণমূল নেতা। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি রীতিমতো সরগরম। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রেসিডেন্সি জেলে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের জালে দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এই আবহে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, আইন আইনের পথে চলবে। তদন্ত তদন্তের মতো চলবে। কেউ যদি দোষী হয়, তা হলে সে শাস্তি পাবে।
বিরোধী দল অসভ্যতামি করছে বলে দাবি করেন পুরসভার মেয়র। তবে এদিন কর্মীদের ধৈর্য না হারানোর পরামর্শ দিয়েছেন। দলীয় কর্মীদের আবেদন করে বলেন, যাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে, তাঁরা অসহিষ্ণু হবেন না। সবার উপরে মানুষ সত্য, মানুষের উপরে কেউ নেই। মানুষ ঠিক করবে কে দোষী বা কে দোষী নয়।
এই ইস্যুতে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পালটা দাবি, এভাবে চেরেদের বাঁচানো যাবে না। সিবিআই, ইডি নিরপেক্ষ তদন্ত করছে।
এখানেই শেষ নয়, ইতিমধ্যে শাসকদলের একাধিক মন্ত্রী-বিধায়কের সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলাও রুজু হয়েছে। ২০১৭ সালে দায়ের হয়েছিল এই মামলা। গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে কি তৃণমূল? প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।
নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন এসএসসি কর্তা এসপি সিনহা এবং অশোক সাহাকে গ্রেফতার(arrest) করে সিবিআই(CBI)। ইতিমধ্যেই তাঁদের দু-রাত কাটল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে(custody)। তবে সূত্রের খবর, তদন্তে অসহযোগিতা(non cooperation) করছেন এসপি সিনহা ও অশোক সাহা। উল্লেখ্য, তাঁদের দুজনকেই নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। কিন্তু নিয়োগের ক্ষেত্রে তথ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি সিবিআই-এর। সেগুলির খোঁজ দিচ্ছেন না এসপি সিনহা ও অশোক সাহা। অথচ তাঁরাই ছিলেন এই তথ্যের দায়িত্বে। নিয়োগ কে বা কারা করেছিল, জানতে চায় সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরে নানা তথ্য হাতে এসেছে সিবিআই-এর। সেখান থেকেই যোগসূত্র খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে সিবিআই। তবে এসপি সিনহা একেবারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বলে সূত্রের খবর। অশোক সাহা সামান্য কিছু বক্তব্য রেখেছেন। তা রেকর্ড করা হয়েছে, লিখিত এবং ভিডিও।
সিবিআইয়ের প্রশ্ন ছিল, নিয়োগের তথ্যকারী ডিস্ক গায়েবের পিছনে কার হাত?
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা কী ছিল? তবে এই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না এসপি সিনহা, খবর সিবিআই সূত্রে।
প্রসূন গুপ্ত: প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর টেলিভিশনে ঘন্টার পর ঘন্টা খবর ছিল তাঁকে নিয়ে। খবরের কাগজে পাতার পর পাতাজুড়ে পার্থ-অর্পিতার খবর। প্রাক্তন মন্ত্রীর কতজন বান্ধবী, তাঁদের কোথায় বাড়ি, আরও কত টাকা উদ্ধার হল ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখানেই শেষ নয় পার্থ কতটুকু বললেন ইডিকে, পার্থ অর্পিতাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরায় কী বেরোল। এই ধরনের খবরে ঝোঁক থাকতো আম আদমির। ট্রাম-বাস, ট্রেনে আলোচনার বিষয়বস্তুও তাঁরাই। পার্থ কী খেলেন, কোথায় শুলেন এই করতে করতে পার্থর খবরে ম্রিয়মান হয়ে গেলো অনুব্রত-কাণ্ডে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরে শুধুই অনুব্রত। বাড়ি ঘিরে নিয়ে প্রথমে আটক, তারপর বিকেলের দিকে গ্রেফতার। লহমায় লহমায় পরিবর্তন হলো অনুব্রত-কাণ্ড। বৃহস্পতিবার তাঁকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায় সিবিআইয়ের দফতরে। তারপর এদিন সকাল থেকে মাত্র একটাই খবর, অনুব্রত সকালে ডায়বেটিক ডায়েট মেনে চিনি ছাড়া চা, বিস্কুট এবং মুড়ি খেয়েছেন। এরপর আর খবর নেই, রহস্য এখানেই কেন অনুব্রতর অবস্থান পাওয়া যাচ্ছে না?
পার্থ ও অনুব্রতর মধ্যে বিস্তর ফারাক। প্রথমত অনুব্রত সংগঠন করা নেতা। বীরভূম জেলার পাতা নড়তো না তাঁর আদেশ ছাড়া। রাঙা মাটির দেশে একপ্রকার 'মুকুটহীন সুলতান' ছিলেন তিনি। এই জনপ্রিয়তা পার্থর কোথায়? পার্থকে গ্রেফতারের সঙ্গে ইডির হাতে এসেছিলো কোটি কোটি টাকার বান্ডিল এবং মহিলা বান্ধবীর প্রসঙ্গ। এই অবস্থান পার্থর বিপক্ষে গিয়েছে। দলও তাঁর দায় ঝেড়ে ফেলেছে। অনুব্রতর ক্ষেত্রেও দলের অভিমত অপরাধ প্রমাণ হলে রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলকেও সরিয়ে দেওয়া হবে। ব্যক্তিগত অপরাধের দায়িত্ব নেবে না দল। কিন্তু হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে অনুব্রতর নাম আসা সত্বেও তৃণমূলের হাজার হাজার সমর্থক তা মানতে নারাজ। তাঁরা ক্ষিপ্ত, তাঁদের বক্তব্য মদন মিত্রদের মতোই অনুব্রত ফেঁসে গিয়েছেন। দুটি ঘটনাই দলের উচ্চ নেতাদের নজরে এসেছে।
আজ এবং আগামীকাল এই নিয়ে রাজ্যের জেলায় জেলায় আন্দোলনে নামছে তৃণমূল যদিও প্রসঙ্গ অনুব্রত নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষতা।
এসএসসি (SSC) দুর্নীতিতে সম্প্রতি গ্রেফতার (Arrest) হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। বর্তমানে তিনি রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলে (Presidency Jail)। কিন্তু কেমন আছেন পার্থ? সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সি জেলের নিচুতলার কর্মীরা হুইল চেয়ার জোগাড় করে দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। সেই হুইল চেয়ার নিয়ে ঘুরতে দেখে ধমক দেন জেলার-রা। কোনও ধরনের অতিরিক্ত সুবিধা যাতে না দেওয়া হয় প্রাক্তন মন্ত্রীকে সেই বিষয়েও কড়া নজর রাখছে জেল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে পার্থ ঘণিষ্ট বান্ধবী অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee) রয়েছেন আলিপুরের মহিলা সংশোধনাগারে (Alipore Correctional Institution for Women)। তবে অর্পিতা রানির মতো রয়েছেন জেলে, এমনটাই সূত্রের খবর। বেশ কয়েকটি ছবিতে তাঁকে অভিনয় করতে দেখেছেন জেলের সহ বন্ধিরা। ফলে অর্পিতার বিছানা করা থেকে, জামা কাপড় পরিষ্কার করে দিচ্ছেন বাকিরা। কেউ বা আবার বিছানা পেতেও দিচ্ছেন।
এবার দেখা যাক প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে খাদ্য রসিক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের খাদ্যের তালিকা- যা বর্তমানে যথেষ্ট চর্চার বিষয়।
সূত্রের খবর, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত পার্থের খাওয়ার আবদারে প্রায় প্রতিদিনই দুবেলা ভাত দিতে হচ্ছে। কখনও আবার বিকালের দিকে চপ, বেগুনি এনে দিতে হচ্ছে জেলের ক্যান্টিন থেকে অনেক জোরাজুরিতে। এর মধ্যে একদিন খাঁসীর মাংসের ঝোল ও ভাত দিতে হয়েছে তাঁকে। যদিও গতকাল রাখী পূর্ণিমার দিন বৃহস্পতিবার জেলবন্দী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাতে আমিষ পড়েনি। গতকাল তাঁর দুপুরের মেনুতে ছিল- ভাত, ডাল এবং দু-রকমের তরকারী। যা খাবার দেওয়া হয়েছে সবটুকুই খেয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মহা সচিব। পাশাপাশি তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
আজ শুক্রবার আবার তাঁর খাবারের মেনুতে রয়েছে আমিষ খাবার। সকালে উঠে চা খেয়েছেন তিনি। তবেআপাতত বই পড়ায় মগ্ন রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তাঁর জেলের মধ্যে বইয়ের তালিকায় রয়েছে কথামৃত, মহাশ্বেতা দেবীর একটি বই।
এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সময় যত এগোচ্ছে জেল যাপনে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেল সূত্রে খবর,পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পায়ের ফোলা কিছুটা কমেছে বলে দাবি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের। নিয়মিত চিকিৎসকরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অবজারভেশনে রেখেছেন। তিনি বই পড়তে ভালোবাসেন। রাজনীতির সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি বই তাঁর সেলে গিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তিনি খবরের কাগজ পড়ছেন না। জেল সূত্রে আরও জানা গেছে, ছত্রধর মাহাত তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি। মাঝেমধ্যে কারারক্ষীদের নিয়ে ঘুরছেন সেলের বাইরে।
এদিকে, সূত্র মারফত জানা গেছে, পার্থ অর্পিতার মাঝে সেলের দূরত্ব ৫০০ মিটার। সংশোধনাগারে বসেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আইনি সাহায্য দিতে চেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিজের আইনজীবীদের অর্পিতাকে আইনি সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু অর্পিতা সেই সাহায্য নিতে অস্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে।
জেল যাপনে অর্পিতাও নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি রয়েছেন ২ নম্বর ওয়ার্ডে ২০ জন বন্দির সঙ্গে। নিরামিষ খাবার না পসন্দ অর্পিতার সোমবার জেলে অর্পিতার সঙ্গে দেখা করেন তাঁর আইনজীবীরা। অর্পিতা তাঁদের জানিয়েছিলেন, চিকেন, মটন, মাছ বা ডিম কিছুই তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না। জেল সূত্রে খবর, কোন্ দিন বন্দিদের কী খাবার দেওয়া হবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকে। তাই রুটিন বদল করা সম্ভব নয়।
জেলে খাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীও। খাদ্য রসিক মন্ত্রী নিরামিষ একেবারেই খেতে পারেন না। তিনি রোজ আমিষ চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রেও রুটিনের বাইরে কিছু করা যাবে না বলে জানিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষ।