সাতসকালেই হাতির মৃত্যু (death) ঘিরে চাঞ্চল্য নয়াগ্রামে। সোমবার সকালে গ্রামবাসীরা ধান জমিতে হাতিটিকে (elephant) মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। এরপরই গ্রামবাসীরা ভিড় করতে থাকে সেখানে। ঘটনা জানতে পেরে বন দফতরের টিম (Forest department team) ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। চিকিৎসক এসে নমুনা সংগ্রহের পর হাতিটিকে পোড়ানোর জন্য অন্যত্র সরানো হয়। ঘটনাটি ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের তিন নম্বর বড়খাঁকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর এলাকার।
জানা যায়, যে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে সেটা একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি। সোমবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিড়িবাড়িয়া জঙ্গল লাগোয়া রঘুনাথপুর এলাকার চাষের জমিতে পূর্ণবয়স্ক হাতিটিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি ফোন করে স্থানীয় বন দফতরকে জানায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বন দফতরের আধিকারিকরা। তবে কী কারণে ওই হাতির মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।
বন দফতর সূত্রে খবর, বন দফতরের পক্ষ থেকে মৃত হাতিটির ময়নাতদন্ত করা হবে। তারপর কী কারণে ওই হাতির মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে বলে বন দফতরের আধিকারিকরা জানান। তবে হাতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। জঙ্গলমহলে হাতির তাণ্ডবে ফসল ঘরবাড়ির ক্ষতি হয় এবং প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। তা সত্ত্বেও জঙ্গলমহলের মানুষ হাতি ঠাকুরকে দেবতা হিসেবে পুজো করেন। তাই এই হাতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যথেষ্ট চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে রঘুনাথপুর এলাকায়। বন দফতর সূত্রে আরও খবর, এই মুহুর্তে নয়াগ্রামে প্রায় ৩০টি হাতির একটি দল রয়েছে।
ফের হাতির হানায় মৃত্যু (death) হল এক ব্যক্তির। ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবারে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Medinipur) গোয়ালতোড় এলাকার। বন বিভাগ (Forest Department) সূত্রে জানা যায়, গোয়ালতোড় বন বিভাগের দুধপতি এলাকায় আচমকাই প্রবেশ করে একটি হাতি (elephant)। হাতি এলাকায় প্রবেশ করাতেই শয়ে শয়ে যুবক সেই হাতিটিকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। গোটা রাস্তাজুড়ে হাতিটিকে ঘিরে ধরে জনজোয়ার নামে। এরপরই ঘটে বিপত্তি। জানা যায়, ওই সময় মাধব মল্য নামে এক ব্যক্তি হাতির সামনে পড়ে যান। ঘটনাস্থলে তাঁকে সুরে করে আছাড় মারে হাতিটি। এরপর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বন দফতরের কর্মীরা। এরপর বন দফতরের তত্পরতায় হাতিটিকে অন্যত্র সরিয়ে আনা হয়। তবে ঘটনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। হাতি উত্ত্যক্ত করার ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন বন দফতর।
যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে দাঁড়িয়ে নারীরা যে স্বনির্ভর এবং সংসার চালানোর জন্য প্রস্তুত তা প্রমাণ করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার (Debra) রেখা দাস। স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর পরিবার সামলাতে ভরসা এখন কুলফির (Kulfi) দোকান।
এক অন্য দুর্গা (durga)! দশ বছর আগেই স্বামী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। নিজের হাতেই সংসারের ভার পড়েছে কুলপি বিক্রেতা রেখা দাসের। একা দুর্গা, পরিশ্রম ও জেদের বশে টেনে যাচ্ছেন সংসারের হাল। দলবতিপুরের বাসিন্দা রেখা দাস, নিজেই টলি ভ্যান চালিয়ে পাড়ায় পাড়ায় কুলফি বিক্রি করেন। আর তাঁর পয়সাতেই চলে সংসার। বাবা মায়ের দেখভালও করেন রেখা নিজেই। প্রতিদিন সকাল হলেই শাড়ি পরেই টলি ভ্যান নিয়ে রাস্তায়, পাড়ায়, ওলিতে-গলিতে ঘণ্টা বাজিয়ে কুলপি বিক্রি করে কাটছেন জীবন।
পরিবার সূত্রে খবর, স্বামী দশ বছর আগেই ছেড়েছেন। পরিবারের সমস্ত দায়-দায়িত্ব এখন রেখার কাঁধেই৷ কিন্তু এতে রেখার কোনও আপসোস নেই। বেজায় খুশিতে রয়েছেন তিনি। তাঁর মা তো বলেই দিয়েছেন, "আমার মেয়ে আমার কাছে দুর্গা।" এখন ডেবরায় মুখে মুখে এই দুর্গার নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজ্যে বহু সংখ্যক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে। সম্প্রতি এক আরটিআই করে এমনই সব বিস্ফোরক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ২০২১ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে (West Medinipur) ১২২ জন কৃষক ও খেতমজুর আত্মহত্যা করেছেন। এমনটাই বলছে সেই আরটিআই (RTI) রিপোর্ট।
উল্লেখ্য, রাজ্যের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতেই পরিসংখ্যান তৈরি করে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো বা এনসিআরবি। ২৭ শে অগাষ্ট আরটিআই কর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামী আরটিআই করেন। অর্থাত্ তাঁর জবাবেই পশ্চিম মেদিনীপুরের স্টেট পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার এন্ড ডেপুটি সুপারিটেনডেন্ট অফ পুলিসের তরফে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাতে গোটা দেশের বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে অন্য কয়েকটি রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গের নামের পাশেও কৃষি ও কৃষি সম্পর্কিত ক্ষেত্রে আত্মহত্যা দেখানো হয়েছে শূন্য। শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেই ২৩ থানা এলাকায় তথ্য প্রদান করা হয়েছে। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে ৬৩ জন আত্মহত্যা করেছেন। গোয়ালতোড়ে ১৪ ও আনন্দপুরে ১০ জনের আত্মহত্যার তথ্য রয়েছে।
তবে পশ্চিমবঙ্গের তরফে এনসিআরবি-তে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে মিলছে না আরটিআই থেকে পাওয়া তথ্য। এনসিআরবি-তে দেওয়া তথ্য রাজ্যের তরফে ২০২১ সালে কোনও কৃষক আত্মহত্যা করেননি বলেই জানানো হয়। তবে কি সঠিক তথ্য গোপন করছে রাজ্য সরকার? আরটিআই থেকে পাওয়া তথ্য সঠিক হলে, তা কতটা চিন্তার?
রক্ষকের উপরই হামলা! মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল এক পুলিস (police) কর্মীর, রক্ষা পাননি তাঁর স্ত্রীও। এলাকার দুষ্কৃতীদের দাবি মত চাঁদা এবং মদ কেনার টাকা (money) না দেওয়ায় পুলিস কর্মীকে বেধড়ক মারধর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরের (East Medinipur) খেজুরি বিধানসভার নিজ কসবা গ্রামে।
জানা যায়, কসবা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় পুলিসকর্মী রামকৃষ্ণ মণ্ডল। বর্তমানে তিনি কোলাঘাট থানায় কর্তব্যরত। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘ কয়েকদিন ধরে তাঁর বাড়িতে এলাকার কিছু দুষ্কৃতী সবসময় টাকা চাওয়া এবং মদ কেনার টাকা, পুজোর চাঁদা চাইতে আসে। তবে এবারের ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। সেদিনও তাঁর কাছে বেশ কিছু টাকা চায় রাজনৈতিক মদতপুষ্ট কিছু দুষ্কৃতী, এমনটাই অভিযোগ। রামকৃষ্ণবাবু তা দিতে অস্বীকার করলে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে তাঁকে। তাদের কাছে এই চাঁদার কারণ জানতে চাইলে দীর্ঘক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রামকৃষ্ণবাবু ও তাঁর স্ত্রী বাড়ি ফিরে এলেও দুষ্কৃতীরা পেছন পেছন ধাওয়া করে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁদের।
এরপর কিছু সময়ের মধ্যেই রামকৃষ্ণবাবুর বাড়ির পাশে পড়ে থাকা বাস ও লাঠি নিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলেই তিনি জ্ঞান হারান। অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীর চিৎকারেও প্রতিবেশীরা কেউ আসেনি সহযোগিতা করতে।
জ্ঞান ফিরতেই বাড়ির সদস্যরা তাঁকে নিয়ে যায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আহত পুলিসকর্মীর দাবি, এলাকার কিছু দুষ্কৃতীরা তাঁকে যখন তখন বিভিন্নভাবে টাকা পয়সা চেয়ে হুমকি দিত। তিনি দিতেন না বলেই এই ধরনের আক্রোশের শিকার হয়েছেন। তাঁর দাবি, "আমরা পুলিস কর্মী হয়ে যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি এবং যদি কোনওপ্রকার সহযোগিতা না পাই, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় রয়েছে, তাঁদের নিরাপত্তার কথা কে ভাববে?"
তবে পুলিস সূত্রে খবর, তাঁদের পারিবারিক বিবাদের জেড়েই এই ধরনের ঘটনা। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক বা দুষ্কৃতীদের সম্পর্ক নেই।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় মিড ডে মিল (Mid day meal) নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে অভিভাবকদের। তবে এবারের ঘটনা একেবারেই ভিন্ন। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ। তবে অভিভাবকদের অভিযোগের আঙুল ওই স্কুলেরই এক ক্লার্কের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার (Nandakumar) থানার কড়ক শচীন্দ্র স্মৃতি হাইস্কুল (school)। এদিন সকাল থেকেই বিক্ষোভে সরব হন অভিভাবকরা। অভিযুক্ত ক্লার্কের দুটি বাইক পুড়িয়ে দিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ (protest) করেন তাঁরা। সেই সঙ্গেই ক্লার্ককে আটক করতে হবে এই দাবি জানান অভিভাবকরা।
জানা যায়, মিড ডে মিলের দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে শো-কজ নোটিস পাঠান নন্দকুমার ব্লকের বিডিও শানু বক্সি। তিনি জানান, "স্কুলের মিড ডে মিলের খাওয়ার পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, ৫০-৬০ জন পড়ুয়া মিড ডে মিল খেয়েছে। সেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা অনেক বেশি দেখানো হয়েছে। খতিয়ে দেখে জানতে পারলাম, গত কয়েক মাস ধরে এভাবে বেশি পড়ুয়ার সংখ্যা দেখানো হয়েছে। তাই শো-কজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। স্কুল শিক্ষা দফতরকে জানানো হয়েছে বিষয়টি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে শো-কজ করা হল।"
এরপরই আজ সকাল থেকেই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক-অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। স্কুলের ক্লার্ক মূল অভিযুক্ত, এমনটাই দাবি করেন তাঁরা। ওই ক্লার্কের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আর্জি জানান বিক্ষুব্ধ পড়ুয়া এবং অভিভাবকরা।
ইতিহাস সমৃদ্ধ বাংলার পট (pot)। বিশ্ব দরবারে সমাদৃত পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Medinipur) নয়ার পটচিত্র। পিংলার পটচিত্র পরিদর্শনে এলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক আয়েশা রানী। পিংলা (pingla) ব্লকের একটি ছোট্ট গ্রাম নয়া। এই গ্রামের সঙ্গে মিশে আছে পশ্চিমবঙ্গের এক অন্যতম শিল্পমাধ্যমের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির ইতিহাস। যা শুধু রাজ্য নয় বিশ্বের দরবারে আজ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। পিংলা ব্লকের নয়া গ্রাম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে একমাত্র পটচিত্র গ্রাম। গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেওয়ালে এবং উঠোনে এই পটচিত্রের ছাপ রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাড়ির সামনেই পটচিত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন, আবার কেউ কেউ ঘরের সামনে বসেই ছবি আঁকেন।
সংস্কৃতে ‘পট’ শব্দের অর্থ হল কাপড়, আর ‘চিত্র’ মানে ছবি অর্থাৎ পটচিত্র বলতে কাপড়ের উপর অঙ্কিত চিত্রকে বোঝানো হয়। এই চিত্র অঙ্কন করার জন্য প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি সমস্ত রং ব্যবহার করা হয়। যেমন- গাছের সিম দিয়ে সবুজ রং, ভুসোকালি দিয়ে কালো রং, অপরাজিতা ফুল দিয়ে নীল রং, সেগুন গাছের পাতা দিয়ে মেরুন রং, পান-সুপারি চুন দিয়ে লাল রং, পুঁই ফল দিয়ে গোলাপি রং, কাঁচা হলুদ দিয়ে হলুদ রং, পুকুর খনন করে মাটি বের করে তা দিয়ে সাদা রং ইত্যাদি। সাধারণত এই সমস্ত প্রাকৃতিক রং দিয়ে ছাতা, হাতপাখা, হ্যান্ডব্যাগ, মোড়া, লন্ঠন, কেটলি ইত্যাদি আঁকা হলেও শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টি-শার্ট-এ শিল্পীরা ফেব্রিক রং ব্যবহার করে থাকেন।
জানা যায়, এই গ্রামের বেশিরভাগ পটুয়ারাই মুসলিম ধর্মাবলম্বী। কিন্তু তবুও তাঁরা রামায়ণ, মহাভারত, দুর্গা কাহিনী মঙ্গলকাব্যের বিভিন্ন পটচিত্র এঁকে থাকেন। সে জন্যই হয়ত ধর্মীয় সম্প্রীতির মেলবন্ধনের ছবি এই গ্রামেই ধরা পরে। আর এমনই একটি গ্রামের পটচিত্র পরিদর্শনে এলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক আয়েশা রানী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পিংলা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিশ্বরঞ্জন চক্রবর্তী, পিংলা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রশান্ত কীর্তনীয়া, পিংলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ মাইতি সহ প্রশাসনিক একাধিক কর্মকর্তারা। এদিন তাঁরা ঘুরে দেখেন প্রতিটি কার্যকলাপ। পরে পটুয়াদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন জেলাশাসক।
বামেদের সারা ভারত কৃষকসভা ও খেতমজুর সংগঠনের ডাকে মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাশাসকের দফতরে অভিযান ও আইন অমান্য কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে নিমতৌড়িতে (Nimtauri) পথসভা করা হয় সেই পথসভাতে নেতৃত্ব দেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। পাশাপাশি ছিলেন জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি-সহ অন্যান্য বাম নেতৃত্বরা। তবে এই কর্মসূচি ঘিরে চলে তুমুল বিক্ষোভ। বেলা বাড়তেই বামকর্মী সমর্থকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে ৩০ মিনিট ধরে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
জানা যায়, এই পথসভা শেষে নিমতৌড়ি চৌরাস্তার মোড় থেকে বামকর্মী সমর্থকরা মিছিল আকারে জেলাশাসক দফতরের মূল প্রবেশদ্বারের সামনে যেতে না যেতেই পুলিসি বাধা পায়। তবে পুলিসি বাধা পেলে বাম নেতৃত্ব-সহ কর্মী সমর্থকরা পুলিসি ব্যারিকেড ভেঙে এগনোর চেষ্টা করে। তবে পুলিস এই বিক্ষোভের মুখে পড়ে বিক্ষোভ না সামাল দিতে পেরে জল কামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। এর ফলে সেই বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে বিক্ষোভ চলে দীর্ঘক্ষণ।
অন্যদিকে শহর কলকাতাতেও (Kolkata) বিক্ষোভে সরব এআইডিএসও। এআইডিএসও-এর (AIDSO) তরফ থেকে মঙ্গলবার একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা যায়, হলদিবাড়ি কলেজের ফ্রি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করে কোচবিহারে (Cooch Behar) আন্দোলন করা হয়েছিল এআইডিএসও-এর পক্ষ থেকে। কিন্তু সেই সময় তাঁদের অভিযোগ, পুলিসি (Police) বাধার সম্মুখীন হয় এইআইডিএসও সমর্থকরা। তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। দেওয়া হয় জামিনঅযোগ্য ধারা। এবার তাদের নিঃশর্ত ছাড়তে হবে এই দাবিতে তাঁদের এই বিক্ষোভ মিছিল বলে জানা যায়।
মেদিনীপুর জেলে জাতীয় পতাকা (National Flag) তুলতে গিয়ে বাধার মুখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার (Union Minister)। এই অভিযোগ তুলে রীতিমতো বিবৃতি দিয়েছে তাঁর মন্ত্রক। সেই বিবৃতিতে বলা, 'কেন্দ্রীয় সরকারের অনুপ্রেরণায় রাজ্য এবং শিক্ষা দফতরের যৌথ উদ্যোগে নেওয়া এই কর্মসূচি। শিক্ষা মন্ত্রক থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জোড়া চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু মেদিনীপুর জেল (Midnapore Jail) বা সংশোধনাগারে কোনও নির্দেশিকা না আসায় জেল সুপার এই অনুষ্ঠান করতে এবং পতাকা তুলতে বাধা দেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনে বাধা দেওয়া মানে জাতীয় পতাকা তথা দেশের অবমাননা করা।'
তিনি জানান, গোটা ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং রাজ্য সরকার স্বাধীনতা দিবস পালন নিয়ে নির্বিকার। জানা গিয়েছে, ১৩-১৫ অগাস্ট দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আজাদি কা অম্রুত মহোৎসব পালনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এদিন মেদিনীপুর জেলে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার।
তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ মানতে নারাজ রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, 'পতাকা তোলার আগে উনি কি অনুমতি নিয়েছিলেন? সংশোধনাগার একটা সংরক্ষিত এলাকা। আমিও ওখানে ঢুকতে পারব না। আমি কি এই মুহূর্তে গিয়ে ফোর্ট উইলিয়াম বা বিএসএফ-র কোনও ক্যাম্পে গিয়ে পতাকা তুলতে পারব?'
তাঁর খোঁচা, 'জাতীয়বাদ শুধু বিজেপির পেটেন্ট নয়। এই দেশ আমার আপনার সবার।'