দীর্ঘ দশ বছর ধরে তালা বদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন দুই ভাই। তাঁরা দুজনেই মানসিক ভারসাম্য়হীন। এমন ছবি ধরা পড়ল নিউটাউন শহরের গৌরাঙ্গ নগরের ক্ষুদিরাম পল্লীতে। জানা গিয়েছে, ক্ষুদিরাম পল্লীর বাসিন্দা বৃদ্ধ দম্পতি নির্মল মণ্ডল ও নমিতা মণ্ডল-এর দুই ছেলে শ্রীপদ মণ্ডল ও সুজিত মণ্ডল। এই দুই ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থতার কারণে টানা দশ বছর ধরে ঘরের মধ্যে তালাবন্ধ অবস্থায় রয়েছেন।
পরিবারের দাবি, কুড়ি বছর ধরে মানসিক রোগে ভুগছেন দুই ভাই। তাঁদের বিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে ঝামেলা-অশান্তি হওয়ায় তাঁদের বৌ ছেড়ে চলে যায়। তারপর থেকে তাঁরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমনকি তাঁরা রাস্তায় বেরোলেই এলাকাবাসীদের মারধর পর্যন্ত করে। অবশেষে কিছু বুঝতে না পেরে তাঁদের ঘরের মধ্যে তালা বন্ধ করে রাখার সিদ্ধান্ত নেন তাঁর পরিবার। এরমধ্য়ে তাঁদের চিকিৎসাও করতে থাকে।
কিন্তু বাবা-মা জানিয়েছেন, তাঁরা আর চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারছে না। মা লোকের বাড়ি কাজ করে কোনো রকমে খাওয়াটা চালিয়ে যাচ্ছে। দুই ছেলেকে গ্রিলের দরজার তলা থেকে খাবার দেওয়া হয়। ঘরের মধ্যে না আছে পাখা না আছে লাইট। সেগুলো লাগালে ভেঙে দেয় তাঁরা। ভয়ে কেউ দরজার তালা ও খুলতেও যায় না। সেই কারণে বৃদ্ধ দম্পতি এখন প্রশাসন ও সরকারি সাহায্যের আশায় রয়েছে।
অর্থের অভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েকে চিকিৎসা করাতে না পেরে বেঁধে রাখতে বাধ্য় হলেন মা-বাবা। ঘটনাটি দুবরাজপুর ব্লকের হালসোত কলোনিপাড়ার। ১৪ বছরের ওই নাবালিকাকে প্রায় ৭-৮ বছর ধরে বাড়িতে থাকা বাঁশের খুটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হত। অভিযোগ, বারংবার গ্রামের প্রধান, মেম্বার এবং বিডিও অফিসে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মানসিক ভারসাম্য়হীন ওই নাবালিকার জন্মের পর অল্প অল্প কথা বলতে পারলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকেই মানসিক ভারসাম্য়হীনতার কারণে দিন-রাত বেঁধে রাখতে হয় তাঁকে। কারণ বেঁধে না রাখলে সে যেখানে সেখানে পালিয়ে যায় বলে পরিবারের দাবি।
অসুস্থ নাবালিকার বাবা কার্তিক বাগদি ভিক্ষা করে কোনওক্রমে সংসার চালান। দিনে আয় বলতে ২-৩ কেজি চাল। আর এভাবে দিন চলে যাচ্ছে। মা শকুন্তলা বাগদি বাড়িতেই থাকেন। তাঁর অসুস্থ মেয়ের জন্য কোথাও কাজে যেতে পারেন না সে। আর্থিক অনটনের কারণে চোখের সামনে মেয়ের অসহায়তা দেখছে তাঁর বাবা-মা।
জানা গিয়েছে, তাঁরা কোনো সরকারি ভাতা কিংবা সাহায্য পাননা। যদি সরকারিভাবে কোনও সাহায্য পাওয়া যায় তাহলে অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারবেন বলে তাঁরা জানান। তবে এই বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছে ব্লক আধিকারিক।