নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য হাইকোর্টের। মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন বেআইনি ভাবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের চাকরি বাতিল নিয়ে বড় মন্তব্য করলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তিনি বলেন, 'রাজ্যজুড়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এখন ভুয়ো শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হলে পুরো পরীক্ষায় প্রভাব পড়বে। পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই এখনই এনিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া সমস্যার। মাধ্যমিক মিটলে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে আদালত।'
আদালতের পর্যবেক্ষণ, '২০১৬-র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নবম-দশম শ্রেণিতে প্রায় ১১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। তার মধ্যে ১০ শতাংশ বা প্রায় হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে।' ইতিমধ্যে নবম-দশম শ্রেণিতে বিকৃত OMR শিটের জেরে চাকরি মামলার রায় দান স্থগিত রেখেছে ডিভিশন বেঞ্চ। সেই রায়ের দিকে তাকিয়ে এখন কমিশন।
হাতির হানায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর (Madhyamik Student) মৃত্যু। জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri Incident) টাকিমারি এলাকার ঘটনায় স্পষ্টতই শোকের ছায়া। জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক শুরুর দিনেই এই মর্মান্তিক মৃত্যু। মৃত কিশোরের বাড়ি জলপাইগুড়ির টাকিমারি এলাকায়। জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে জঙ্গলের পথ ধরে বাবার বাইকে চেপে বেলাকোবায় পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পথে হাতির (Elephant Attack) সামনে পড়ে যান দু'জনে।
কোনওভাবে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন বাবা। কিন্তু 'মৃত্যুদূতের' সামনে পড়ে যায় ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তাকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে হাতি। বন দফতর খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় বন দফতরের উদাসীনতার অভিযোগে সরব স্থানীয়রা। প্রতিবছর হাতির হানায় মানুষের মৃত্যু হলেও বন দফতর কোনও দায়িত্ব নিচ্ছে না। শুধু চাকরির প্রতিশ্রুতি দিলে কি পরিবারের সান্ত্বনা মেলে? এভাবেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
সবাই আতঙ্কে আছে কেন ইলেকট্রিক ফেন্সিং দেওয়া হচ্ছে না? এই প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ কিশোরের স্কুল এবং বন্ধুরা। ঘটনা প্রসঙ্গে রেঞ্জ অফিসার জানান, 'সকাল ৯টা নাগাদ জঙ্গলের পাশের একটা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বাবাকে একটা হাতি ধরে ফেলে। বাবা কোনওভাবে বেঁচে গেলেও, ছেলেকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। খবর পেয়েই আমরা যাই, জখম সেই কিশোরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। আমরা জেনেছি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়ার জন্য এই দুর্ঘটনা। আমাদের সচেতনতা প্রচার চলছে। শর্টে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য ওই রাস্তা ধরেছিল। তবে সকাল ৯টা নাগাদ বেড়িয়ে অন্য রাস্তা ধরে গেলেও সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছন যেতো।'
শুরু চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam 2023)। প্রশ্ন ফাঁস ও অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে পর্ষদ (WBBSE)। এবছর পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে অভিভাবকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ২০২৩-র মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭২৪ জন পরীক্ষার্থী। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৭৫।
জানা গিয়েছে, ২৮৬৭ সেন্টারে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। ৪০ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষককর্মী সুষ্ঠু পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। ৯৯% বেশি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা। যে সমস্ত সেন্টারে বা বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে না তাকে স্পর্শকাতর বুথ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এবছর পাহাড়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯০০০। সেখানে ৬০টি সেন্টারে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, অ্যাডিনো ভাইরাসের কথা মাথায় রেখে স্কুলগুলিতে করা হয়েছে সিক রুমের ব্যবস্থা। স্কুলগুলিতে থাকছে স্পেশাল চাইল্ডদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও। বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি পর্ষদের অফিসে বসে কেন্দ্রগুলিতে নজরদারি। এমনকি পর্ষদের অফিসে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম।
অতিরিক্ত ভেনু সুপারভাইজার অ্যাপ মাধ্যমে চালাবেন নজরদারি। প্রত্যেক ভেনুতে থাকবে কড়া পুলিসি ব্যবস্থা। মোবাইল ইলেকট্রনিক্স গেজেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা। ১১টার সময় প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হবে কন্ট্রোলরুমে। সাড়ে ১১ নাগাদ ক্লাসরুমে পৌঁছবে প্রশ্নপত্র। ১১:৪৫ মিনিটে প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে পরীক্ষার্থীদের।
এদিকে, সম্প্রতি পর্ষদ সভাপতি পরীক্ষার্থীদের জানান, 'মাধ্যমিক পরীক্ষা ছাত্র জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। কিন্তু শেষ পরীক্ষা নয়।' তাই মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরীক্ষা দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি মে মাসের শেষ সপ্তাহে ফল ঘোষণার সম্ভাবনা বলেও জানান পর্ষদ সভাপতি।
২৩ তারিখ থেকে শুরু চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik 2023)। ২৭ তারিখ সাগরদিঘি বিধানসভায় উপনির্বাচন থাকায় সেদিনের পরীক্ষাসূচি বদলেছে। এবছর প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী (৬,৯৮,৬২৮ জন) পরীক্ষায় বসছে। টোকাটুকি এবং প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করতে এবার কড়া পদক্ষেপ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের (Secondary Education Board)। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এই তথ্য জানান পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, প্রতি পরীক্ষাকেন্দ্রে পুলিস থাকবে, বসবে সিসি ক্যামেরা। কমবেশি সব জেলায় পৌঁছেছে প্রশ্নপত্র। রাজ্যের ৩৭৩টি থানার কড়া পুলিসি নজরদারিতে থাকছে প্রশ্নপত্র।
জানা গিয়েছে, শুধু পরীক্ষার্থীরা এবার পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে ঢুকতে পারবে। অভিভাবকরা যাতে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করছে পর্ষদ। এদিন জানান মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সভাপতি। কোন পরীক্ষার্থীর কোথায় সিট পড়ছে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে ঝোলানো থাকবে সেই তথ্য। গত বছরের তুলনায় অনেক কমেছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৭৫ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। নাম নথিভুক্ত করেও পরীক্ষায় বসছেন না অনেক পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে পর্ষদ সভাপতি করোনা অতিমারীকে দায়ী করেছেন।
করোনাকালে প্রস্তুতির অভাব, অফলাইন ক্লাসে পড়াশোনার সমস্যা এবং পঠনপাঠন বন্ধের মতো সমস্যাকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ধরছেন পর্ষদ সভাপতি। পাশাপাশি অনেকে টেস্ট পরীক্ষায় পাশ করেনি, কেউ আবার ফর্ম ফিলআপ করেনি বলে জানান পর্ষদ সভাপতি। এবার রাজ্যব্যাপী প্রায় ২৯০০ পরীক্ষা কেন্দ্রে ৪০ হাজার পরীক্ষক নিয়োগ করেছে পর্ষদ। সব পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসিটিভি আর ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে দেওয়া হবে অ্যাডমিট কার্ড। এদিন সংবাদ মাধ্যমকে জানান পর্ষদ সভাপতি।