
সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Central Force) দাবিতে এবার নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) সামনে বিক্ষোভে বসতে চলেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ (Sangrami Joutha Mancha)। রবিবার প্রকাশ করা একটি বিবৃতিতে এই বিষয়ে জানিয়েছে তারা। আগামী ৪ জুলাই বেলা ১টা নাগাদ বিক্ষোভে সামিল হবেন মঞ্চের সদস্যরা।
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে কিনা সেবিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয়। সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের অন্দরেও এবিষয়ে আলোচনা চলছে। তারই মাঝে কমিশনে বিক্ষোভ দেখাবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, এবার সরকারী কর্মী, চিকিৎসক, নার্স, শিক্ষক, অধ্যাপক, ব্যাঙ্ক কর্মী সহ একাধিক পেশায় নিযুক্তদের নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত করা হবে। ফলে তাঁদের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা জরুরি।
পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়নি বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে কিনা। ফলে স্বভাবতই সরকারী কর্মীরা উদ্বিগ্ন। তাই বাধ্য হয়েই এই কর্মসূচি নিচ্ছেন মঞ্চের নেতারা। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে গণ ইমেইল করার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তাঁরা।
শনিবার বকেয়া ডিএ (DA) বা মহার্ঘ্য ভাতার দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের একটি সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের (Sangrami Joutha Mancha) আন্দোলন ১০০ তম দিনে পড়ল। ডিএ বা মহার্ঘ্য ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই শহীদ মিনারে (Sahid Minar) বসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছেন তাঁরা। আজ অর্থাৎ শনিবার আদালতের অনুমতি নিয়েই মমতা ও অভিষেকের পাড়ায় মিছিল করবেন ডিএ আন্দোলনকারীরা।
সূত্রের খবর, শনিবার বেলা একটা থেকেই এই মিছিল শুরু হবে। শুরুর আগে ১০০টি শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে তাঁদের এই মিছিল শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। ডিএ আন্দোলনকারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সূত্রে খবর, তাঁদের এই মিছিল বন্ধ করতে জনস্বার্থ মামলাও করে রাজ্য সরকার। যদিও বিচারপতি ওই আবেদন নাকচ করে দেয়, এবং হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা অভিষেকের পাড়ায় অর্থাৎ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে তাঁদের মিছিল করার অনুমতি দেয়। অবশ্য সেই মিছিল হতে হবে শান্তিপূর্ণ।
ডিএ আন্দোলনকারীদের এই মিছিল নিয়ে পূর্বেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা গেছে বিরক্তির সুর। পাশাপাশি একই সুর শোনা গেছে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। এবার তাঁদের পাড়াতেই এই মিছিল যে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াবে সেটা বলাই বাহুল্য।
ওদিকে আন্দোলনকারী অর্থাৎ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষে দাবী আদালতের নির্দেশে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হলেও তাতে কোনও লাভ হয়নি। এবং তাঁদের দাবি, যে কোন রকম উপায়ই হোক তাঁদের সঙ্গে সরকারকে আলোচনার মাধ্যমে মধ্যস্থতা করতে হবে এবং বকেয়া ডিএ পরিশোধ করতে হবে।
ডিএ-এর দাবিতে যৌথ মঞ্চের (DA Agitation) আন্দোলনকে সমর্থন করায় নবান্ন (Nabanna) থেকে বদলি ১০ কর্মী। শুক্রবার নবান্ন যে নির্দেশিকা (Notice) জারি করেছে, তাতে দশজনের নাম আপাতত পাওয়া গিয়েছে। তাঁরা সকলেই গত দশ মার্চ প্রশাসনিক ধর্মঘটকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেদিনের মধ্যে প্রায় সবাই যৌথ মঞ্চের শহীদ মিনার ছাউনিতে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। খুব সম্ভবত কোনও ভিডিও ক্লিপ দেখে এদের চিহ্নিত করে, পরে তথ্য জোগাড় করে, ধরে ধরে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি যৌথ মঞ্চের।
নবান্ন থেকে ১০ জন সরকারি আধিকারিক ডিএ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ফলে বদলির নির্দেশ শাসক দলের প্রতিহিংসা চরিতার্থ। এমনটাই অভিযোগ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। রাজ্য সরকারের এই প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরেনের প্রতিবাদে, আদালতে গিয়ে আইনিভাবে মোকাবিলা করার হুশিয়ারি আন্দোলনকারীদের।
এ প্রসঙ্গে আরও জানিয়ে রাখা ভালো, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অনশনের আজ ৪৪ দিন ছিল। অবস্থান বিক্ষোভ চলছে ৫৮ দিন। দীর্ঘদিন ধরে অনশন করতে করতে বহু অনশনকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বহু অনশনকারী গুরুতরভাবে অসুস্থ। তাই এবার সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে অনশন প্রত্যাহার করা হয়েছে। শনিবার ডাবের জল খেয়ে অনশনভঙ্গ করলেন ভাস্কর ঘোষ এবং বিপুল রায়। শনিবার ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, লিভারের সমস্যা হয়। আমিও ৪২ দিনের মাথায় অনশন ভেঙেছি।' এদিন অনশনভঙ্গের পর তাপস সিংহ প্রতীকী বাঁশি বাজালেন।