Breaking News
Abhishek Banerjee: বিজেপি নেত্রীকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের অভিযোগ, প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জাতীয় মহিলা কমিশনের      Convocation: যাদবপুরের পর এবার রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সমাবর্তনে স্থগিতাদেশ রাজভবনের      Sandeshkhali: স্ত্রীকে কাঁদতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন 'সন্দেশখালির বাঘ'...      High Court: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল, সুদ সহ বেতন ফেরতের নির্দেশ হাইকোর্টের      Sandeshkhali: সন্দেশখালিতে জমি দখল তদন্তে সক্রিয় সিবিআই, বয়ান রেকর্ড অভিযোগকারীদের      CBI: শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ! তদন্তে সিবিআই      Vote: জীবিত অথচ ভোটার তালিকায় মৃত! ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ধূপগুড়ির ১২ জন ভোটার      ED: মিলে গেল কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর, শ্রীঘই হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ ইডির      Ram Navami: রামনবমীর আনন্দে মেতেছে অযোধ্যা, রামলালার কপালে প্রথম সূর্যতিলক      Train: দমদমে ২১ দিনের ট্রাফিক ব্লক, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন, প্রভাবিত কোন কোন রুট?     

JeanLucGodarad

Godard: জ্ঞানের সন্ধানী জঁ লুক গদার, জানুন নিউ ওয়েভ ছবির অন্যতম পতাকা বাহককে

সৌমেন সুর: একসময় চায়ের দোকানে, রেস্তোরাঁ, রাস্তায়, ক্লাবে গদারকে নিয়ে রীতিমতো তর্কবিতর্ক হতো, বিদ্বজ্জনরা ঝড় তুলতো আলোচনায়। কখনও শোনা যেতো, 'তুই গদারের ছবি দেখিসনি। তাহলে তোর জীবনটাই বৃথা। আরে গোদারের ছবি দেখ, গদারকে বোঝ, কী রেঞ্জের সিনেমা প্রেজেন্ট করে সেটা একবার উপলব্ধি কর।' জঁ লুক গদার, আজকের বিষয় সুইস-ফরাসি এই চিত্র নির্মাতাকে। বিশ্ব চলচ্চিত্র নির্মাণ যখন ক্রমেই স্টুডিওমুখী, ঠিক তখন ফরাসি নিউ ওয়েভ ছবিতে গদারে অবদান অনস্বীকার্য।

সিনেমার পিকাসো হলেন জঁ লুক গদার। এই প্রথম কোনো ফিল্মমেকার বিশ্ব সিনেমার প্রেক্ষাপটে এলেন, যিনি প্রথম ছবি থেকেই নিজের পথ নিজে বাছলেন। ১৯৬০ সালের তাঁর প্রথম ছবি ব্রেথলেস থেকে ২০১৮-র শেষ ছবি দ্য ইমেজ বুক পর্যন্ত; তাঁর ছবি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বাস্তবিক জীবন থেকে দৈনন্দিন রাজনীতির প্রভাব সেলুলয়েডে তুলে আনা যায়। এসব তিনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন। তাই শুধু নয় সেই রাজনীতিকে একইসঙ্গে কাঠগড়ায় তুলতে ছাড়লেন না তিনি। আবার সাংস্কৃতিক শক একদিকে, আর অন্যদিকে শহুরে অর্থনীতির ধাক্কা। এসব সবকিছু তাঁর ছবির চিত্রনাট্যের মাধ্যমে বড় পর্দায় ফুটে উঠেছে কখনও মাই লাইফ টু লিভ, কখনও দ্য চাইনিজ, কখনও মেড ইন ইউএসএ, কখনও লেটার টু জেন, কখনও ফিল্ম সোশালিজম; এমনকি শেষ ছবি দ্য ইমেজ বুক হিসেবে। 

গদারকে বলা হয় দার্শনিক সাত্রে ও ব্রেখটের ভাব শিষ্য। সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে (অ্যানথ্রোপলজি) তিনি আগ্রহী হয়ে উঠলেন সাত্রের দর্শনে। তাঁর মন্তব্য, 'আমি মনে করি শিল্প এক বিশেষ বন্দুক। সব আইডিয়াও বন্দুক।' গদার মনে করেন আমাদের প্রকৃত সত্তার অন্বেষণ একজন চলচ্চিত্রকারের লক্ষ্য। বিশ শতকের সিনেমায় জঁ লুক গদারছিলেন আকাশচুম্বী প্রতিভাধর, যিনি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করে ষাটের দশকে আন্তর্জাতিক সিনেমার মানচিত্র পালটে দিলেন।

সত্যজিৎ রায়ের ভাষায়, 'চিত্র ভাষার ব্যবহারে বিপ্লবের পুরোধা গদার মুদ্রিত প্রবন্ধ এবং চলচ্চিত্রায়িত বক্তব্যকে সমার্থক করে দিলেন। তাঁর সিনেমায় অন্তর্ভুক্ত হল সংবাদ, রাজনীতি, দর্শন, বিজ্ঞাপনের ভাষা, সাহিত্য, সঙ্গী, চিত্রকলা ভাস্কর্য, স্থাপত্য, প্রযুক্তি, খবরের কাগজে প্রকাশিত চিঠিপত্র। বিষয় হিসেবে এলো বিপ্লব এবং নারী। সব মিলিয়ে তৈরি হলো আধুনিকতার এক জটিল কোলাজ। ডকুমেন্টারি ও ফিকশনের দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক গদারের সিনেমার বৈশিষ্ট্য।

গদারের ছবিতে প্রথম ফুটে ওঠে রাজনীতির এক তাৎপর্যপূর্ণ রূপ। তাঁর ছবিতে ফিরে আসে নারী, সঙ্গীত এবং সমুদ্র। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ইউরোপ মানুষের মোহভঙ্গ ও সামাজিক অবক্ষয় তুলে ধরে তাঁর ছবিগুলো। তিনি বোঝান এই সমাজে শিল্প, সংস্কৃতি, বিবেকবোধ; সবকিছুই পণ্য হয়ে উঠছে। ৯১ বছরে গদার মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেন। তবে যতদিন পৃথিবী থাকবে, সিনেমা নামক মাধ্যম থাকবে, ততদিন গদার আমাদের হৃদয়ে লীন হয়ে থাকবেন।

তথ্যঋণ: পার্থ মুখোপাধ্যায়, রাহুল দাশগুপ্ত

2 years ago