লোকসভার আগে এটাই দ্বিতীয় মোদী সরকারের শেষ বাজেট। কিন্তু এই বাজেটে হতাশ মধ্যবিত্তরা। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বাজেটে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে বড় কোনও ছাড় দিলেন না করদাতাদের। অর্থমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, আপাতত করকাঠামো অপরিবর্তিত থাকছে। তবে প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থায় সংস্কারে জোর দিয়ে একাধিক ঘোষণা করেন তিনি।
কেন আয়করে ছাড় দেওয়া হল না? নির্মলার ব্যাখ্যা, ‘‘ভোটের বছর বলেই এ বিষয়ে আমরা কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলাম না।’’ তবে কর আদায়ের পদ্ধতিতে বেশ কিছু সংস্কার ঘোষণা করেছেন নির্মলা। তিনি জানিয়েছেন, করদাতাদের পরিষেবা সহজ করতে ডিসপিউটেড ট্যাক্স বা ট্যাক্স বিবাদের ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০১০ পর্যন্ত যাঁদের এই ডিসপিউটেড ট্যাক্সের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত করে ছাড় দেওয়া হবে। ২০১০ সালের পরে ট্যাক্স বিবাদ থাকলে সেক্ষেত্রেও ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হবে। যা ১ কোটি করদাতাকে উপকৃত করবে।
প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থার কথা তুলে ধরতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেছেন যে, ‘আমরা এমন প্রশাসন চাই যার উপরে মানুষের বিশ্বাস থাকবে। মানুষ আগের তুলনায় বেশি রোজগার করছেন। প্রকৃত আয় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। মানুষ আগের তুলনায় ভাল রয়েছেন। গত ১০ বছরে মানুষ নিজেদের আশা আকাঙ্খা বেশি করে মেটাতে পারছেন।’'
যোগাযোগের উন্নতিতে সীতারমণ বাজেটে ঘোষণা করেছেন- তিনটি রেলওয়ে করিডর তৈরি হবে। শক্তি, খনিজ এবং সিমেন্ট করিডর হবে। এছাড়া বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগের করিডর এবং ট্রাফিক ডেনসিটি করিডরও তৈরি হবে। এখন আমাদের ১৪৯টি বিমানবন্দর রয়েছে। ভারতীয় সংস্থারা এক হাজারেরও বেশি বিমানের অর্ডার দিয়েছে। আগামী দিনে আরও সস্তা হবে বিমান সফর। রেলের ৪০ হাজার সাধারণ বগি বন্দেভারত এক্সপ্রেসের মতো হবে। ট্রেনের গতি বাড়বে। মেট্রো রেলকে সব রকম সাহায্য করবে কেন্দ্রীয় সরকার। গোটা দেশের মেট্রো রেলের উন্নয়ন হবে।
দেশের ১ কোটি পরিবার প্রতি মাসে ৩০০ ইউনিট করে সৌর বিদ্যুৎ বিনামূল্যে পাবে বলেও বাজেটে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
ফের রাজ্যে আয়কর হানা (Income Tax Raid)। এবারে এক মদের কারখানায় হানা দিল আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর রাতে হুগলির পোলবার মহানাদ গ্রামে এক মদের কারখানায় হানা দিলেন আয়কর আধিকারিকরা। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ অ্যালপাইন ডিস্টিলারিজ প্রাইভেট লিমিটেডে পৌঁছে যান আয়কর দফতরের টিম।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার যখন ভোরের আলোও ফোটেনি, সে সময় হুগলির পোলবার মহানাদ গ্রামে পৌঁছে যান আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। এর পর অ্যালপাইন ডিস্টিলারিজ প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক মদের কারখানায় হানা দেন তাঁরা। তবে শুধুমাত্র আয়কর আধিকারিকরা নন, তাঁদের সঙ্গে আসেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও। এরপর শুরু হয় তল্লাশি। জানা গিয়েছে, এদিন ভোরে মোট পাঁচটি গাড়িতে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা আসে। গ্রামের লোকজনও একে একে আসতে শুরু করেন এলাকায়। তারাও এই ঘটনায় হতবাক। উল্লেখ্য, এই কারখানায় পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে প্রায় ৩০০ জন কাজ করেন।
সারা রাজ্যজুড়ে যখন বিভিন্ন দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হানা দিয়েই চলেছে। তারই মাঝে রাজ্যে এবারে আয়কর দফতরের হানা (Income Tax Raid)। ক্যামাক স্ট্রিটের এক বেসরকারি ইস্পাত প্রস্তুতকারত সংস্থার অফিসে হানা দিয়েছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, আর্থিক লেনদেন ঘিরে বেনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া তল্লাশি অভিযান এখনও জারি রয়েছে। কিন্তু তল্লাশি ঠিক মতো নিয়ম মেনে হচ্ছে না অভিযোগ সংস্থায় কর্মরত কর্মীদের। তাঁরা জানিয়েছেন, তল্লাশির নামে তাঁদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। ফলে সংস্থার কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছে পুলিস।
জানা গিয়েছে, গত শনিবার থেকে ক্যামাক স্ট্রিটের এক বেসরকারি ইস্পাত প্রস্তুতকারক সংস্থার অফিসে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা তল্লাশি শুরু করেছে। তা এখনও চলছে। কিন্তু তাঁরা যথাযথ নিয়ম মেনে তল্লাশি করছে না বলে অভিযোগ সংস্থায় কর্মরত কর্মীদের। তাঁরা জানিয়েছেন, অফিসের কর্মীদের সকলের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কর্মীদের আটকে রাখা হয়েছে। এমনকী পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারছেন না তাঁরা এমনটাই অভিযোগ করছেন। সংস্থার বেশ কয়েকটি অফিস সিল করে দেওয়া হলেও আয়কর দফতরের পদ্ধতি অনুযায়ী সেটি সিল করা হয়নি বলেই কর্মীদের অভিযোগ।
ফলে আয়কর দফতরের আধিকারিকদের ঘিরে রীতিমত বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন সংস্থার কর্মীরা। তাঁদের তল্লাশি ঘিরে এক ধুন্ধুমার কাণ্ড। এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিস।
বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে একহাত নেন তিনি। অধিকারী পরিবারের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর তোলা প্রশ্নের জবাব দিলেন শুভেন্দু। আপলোড করেন আয়কর রিটার্নও। তারসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পারিবারের সম্পত্তি নিয়েও পালটা প্রশ্ন তোলেন তিনি।
যদিও তৃণমূলের তরফে শুভেন্দুর তোলা প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়। জবাব দেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। টুইটারে বিরোধী দলনেতাকে খোঁচা দিয়ে তিনি লেখেন, সন্দেহ সবসময় অপরাধীর মনকেই তাড়া করে। এরসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী কারোর নাম করে কোনও অভিযোগ করেননি। তাও শুভেন্দু আয়করের নথি টুইট করেছেন।
শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জ কটাক্ষ করে কুণাল লিখেছেন, "বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এমন প্রতিক্রিয়ার কারণ হল প্রচন্ড ভয় এবং অপরাধবোধ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কারও নাম করে কোনও অভিযোগ করেননি। কিন্তু মিস্টার অধিকারী নিজেই টুইট করে আয়করের যাবতীয় বিষয় জানিয়েছেন।"
মুখ্যমন্ত্রীর দীর্ঘদিন নবান্নে না আসা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। সেসবের জবাব দিতে গিয়ে নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, "কাদের ৬০, ৭০টা ট্রলার আছে, কটা গাড়ি আছে, কটা পেট্রলপাম্প আছে আমরা সেসবের কাগজপত্র বের করছি। এতদিন করিনি, কিন্তু এবার করছি।"
রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা তোলা হোক কিংবা পয়সার বিনিময়ে বাজি কারখানাকে আড়াল করা। সর্বক্ষেত্রে জনসাধারণের অভিযোগ পুলিসের বিরুদ্ধেই। সেজন্যই বারবার জনরোষের টার্গেট পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে এবার বোলপুরে ধরা পড়ল আরও বড় অভিযোগ। সেখানে আবার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগে পুলিশের হাতে হাতকড়া পড়েছে।
সূত্রের খবর, সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগে শনিবার বীরভূমের রামপুরহাট থেকে গ্রেফতার কনস্টেবল মনোজিত্ বাগীশ। কেন? অভিযোগ, বেআইনি পথে দেদার কামাই করেছেন এই কনস্টেবল। ধৃত কনস্টেবল রামপুরহাট থানায় কর্মরত ছিলেন। এর আগে হাওড়া গ্রামীণ ও হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে কাজ করেছেন। শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা।
সূত্রের খবর, ২০২২ সালের অগাস্টে মনোজিত্ বাগীশের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখায় অভিযোগ জমা পড়ে। তার পরই কোটিপতি কনস্টেবলের উপর গোয়েন্দাদের নজর। কারণ, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ। পুলিশ সূত্রের খবর, মনোজিতের ফিক্সড ডিপোজিটের পরিমাণ ৭৬ লক্ষ টাকা। জীবনবিমা ১০ লক্ষের। ১১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকায় বান্ধবীকে দিয়েছেন গাড়ি উপহার। গোয়েন্দাদের নজরে কনস্টেবলের জমি ও সোনাও।
একজন কনস্টেবলের এত পয়সার উত্স কী? পৈতৃক সম্পত্তি? না কি সবটাই কালো টাকার খেল? অভিযুক্ত কনস্টেবল মনোজিত্ বাগীশকে হেফাজতে নিয়ে তারই খোঁজ চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা।
লাভের অঙ্ক ১২ হাজার ৪০০ কোটি। ভাবছেন এই খতিয়ান কোনও বহুজাতিক সংস্থার ? তাহলে ভুল করবেন। এই লাভের অঙ্ক টাটা বা আম্বানিদেরও নয়। তাহলে এই লাভের অঙ্ক কার ? বাণিজ্যে এই বসত লক্ষ্মী ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। গত পাঁচ বছরের এই তথ্য সংসদে সামনে এসেছে। তা পেশ করেছেন সরকারের একমন্ত্রী।
বোর্ডের সংবিধান অনুযায়ী, তার আর্থিক খতিয়ান প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু সম্প্রচার স্বত্ত্ব বিক্রি সম্প্রতি বোর্ডের প্রচুর টাকাই ভাঁড়াড়ে এসেছে। সংসদকে জানানো হয়েছে, গত অর্থবর্ষে বোর্ডের আয় হয়েছে ৭ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ৩ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ লাভের পরিমাণ ৪ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা। গত পাঁচ অর্থবর্ষের হিসাব দেখানো হয়েছে, তার মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবর্ষেই বোর্ডের লাভের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
পাশাপাশি সম্প্রচার স্বত্ব থেকে প্রাপ্ত অর্থও যোগ হবে। এ ছাড়া, দেশের মাটিতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়ের সম্প্রচার স্বত্ব রয়েছে। সেখান থেকে মোটা টাকা ঢোকার কথা বোর্ডের কোষাগারে।
কংগ্রেস নেতা গঙ্গাধর গৌড়ার দু’টি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালান আয়কর (Income tax) আধিকারিকরা। উদ্ধার নগদ ৩০ লক্ষ টাকা। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ দক্ষিণ কন্নড় (Karnatak) জেলার বেলতানগঠীতে গৌড়ার বাড়িতে পৌঁছন আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা। এমনকি মহকুমা হাসপাতাল (Hospital) লাগোয়া ওই বাড়ি ছাড়াও ইডাবেট্টু এলাকায় তাঁর আর একটি বাড়িতেও অভিযান চলে।
কর্নাটকের প্রাক্তন মন্ত্রীর গঙ্গাধর গৌড়ার ছেলে রঞ্জনের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানেও তল্লাশি চালানো হয়। গৌড়ার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি। তবে তিন জায়গায় নানা নথিপত্র খতিয়ে দেখেন আধিকারিকেরা। কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন ১০ মে। যদিও প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে টিকিট না পাওয়ায় নির্বাচনী লড়াইয়ে এবার নেই গৌড়া। টিকিট না পেয়ে রাজনীতি ছা়ড়ার ঘোষণাও করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গঙ্গাধর গৌড়া।
মধ্যবিত্তের মুখে হাসি ফুটিয়ে কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৩-এ (Union Budget 2023) বড়সড় ঘোষণা অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের (Nirmala Sitharaman)। নতুন কর কাঠামো বুধবার ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বেতনভুকদের কাছে যে কাঠামো যথেষ্ট সাশ্রয়ী। নগদ অর্থের সংস্থানও করতে পারবেন মধ্যবিত্ত শ্রেণি, এমনটাই দাবি অর্থনীতিবিদদের। জানা গিয়েছে, বছরে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর ছাড়। পাশাপাশি আয়কর ছাড়ের সীমা ৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। কারও বছরে ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় হলে ৪৫ হাজার টাকা আয়কর (Income Tax) দিতে হবে, যা আগের তুলনায় ২৫% কম। যাঁর ১৫ লক্ষ টাকা বাৎসরিক আয় তাঁকে দেড় লক্ষ টাকা কর দিতে হবে। আগে দিতে হত ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৪০ হাজার টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন একজন বেতনভুক।
জানা গিয়েছে, ০ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বছরে আয় করলে কোনও কর দিতে হবে না। ৩ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাৎসরিক আয়ে কর দিতে হবে ৫ শতাংশ। বাৎসরিক আয় ৬ লক্ষ টাকা থেকে ৯ লক্ষ টাকা হলে কর দিতে হবে ১০ শতাংশ। বাৎসরিক আয় ৯ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকার মধ্যে হলে কর দিতে হবে ১৫ শতাংশ। ১২ লক্ষ টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর দিতে হবে ২০ শতাংশ। বছরে আয় যদি ১৫ লক্ষ টাকার বেশি হয় তা হলে ৩০ শতাংশ হারে দিতে হবে কর। এভাবেই নতুন কর কাঠামো ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির (ED investigation) নজরে এবার নোটবন্দির সময়ের ব্যাঙ্কিং লেনদেন। আয়কর দফতরের (Income Tax) নথি দেখে আর্থিক গরমিল বের করার চেষ্টায় কেন্দ্রীয় এই সংস্থা। ২০১৬ সালে দেশব্যাপী ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল (Demonetization) করেছিল কেন্দ্র। সেই সময় বিভিন্ন ব্যাঙ্কে বিপুল টাকা কারা নামে বা বেনামে রেখেছিলেন সেই তালিকায় চোখ ইডির।
মূলত আয়কর দফতরের ওয়েভার স্কিমে কাদের নাম ছিল, সেটাই জানতে উদগ্রীব ইডি কর্তারা। তাদের নজরে এই রাজ্যের বেশকিছু ছোট ব্যাঙ্ক। যারা আরবিআইয়ের অনুমোদন পাওয়ার আগে স্মল ফিনান্স হিসেবে কাজ করত। কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে এই রাজ্যর একাধিক নেতামন্ত্রী। বিশেষ নজর উত্তর ২৪ পরগনায়। এমনটাই ইডি সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, নোটবন্দির সময় দেশের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি তৃতীয় মাধ্যমের সাহায্যে তাঁদের কাছে থাকা ৫০০ ও হাজার টাকার নোট বদলেছেন। যে তালিকায় রয়েছেন এই রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালী। সেই সংক্রান্ত ফাইল ইতিমধ্যে আয়কর দফতর থেকে ইডির কাছে এসেছে। সেই ফাইলে চোখ বুলিয়েই নোটবন্দির সময় অর্থ তছরূপের গভীরতা বুঝে নিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
এই মুহূর্তে রাজ্যে ঘটে চলা সাম্প্রতিক ঘটনার মধ্যে অন্যতম গরু পাচার, কয়লা পাচার, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি, টেট দুর্নীতি। এইসব দুর্নীতির তদন্তে তত্পর ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। পার্থ-অর্পিতার পর অনুব্রত মণ্ডলও সিবিআই হেফাজতে। এই আবহে ইডি-সিবিআইয়ের পর এবার রাজ্যে সক্রিয় হল আরও একটি কেন্দ্রীয় এজেন্সি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে হানা দিলেন আয়কর বিভাগের আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, এদিন এলগিন রোড, পার্ক সার্কাস, পার্ক স্ট্রিট–সহ একাধিক জায়গায় হানা দেন আয়কর আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, শহরের ৩০ টি জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছেন ১৫০ জন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। যে ঠিকানাগুলিতে এদিন তল্লাশি চালানো হয়েছে সেগুলি মূলত তিনটি নির্মাণ সংস্থার বলে দাবি। যদিও ঠিক কীসের ভিত্তিতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, তা স্পষ্ট করেনি আয়কর বিভাগ। এর মধ্যে তিনটি বিখ্যাত নির্মাণ সংস্থার সদর দফতর ছিল বলে আয়কর বিভাগ সূত্রের দাবি।
তবে সূত্রের দাবি, তিনটি নামী নির্মাণ সংস্থা থেকে বেশ কিছু নথি মিলেছে। আধিকারিকরা এদিন কথা বলেন তিনটি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে। এই নির্মাণ সংস্থাগুলি ভুয়ো বা ড্যামি সংস্থা তৈরি করে লেনদেন করত বলে খবর। এমনকী কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য বেশ কিছু পদ্ধতিও তাঁরা বের করেছিল বলে সূত্রের দাবি।