দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত হাজরা মোড় বুধবার যেন মিছিল-আন্দোলনের হটস্পট। হাইকোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর ক্যামাক স্ট্রিট অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) অফিসের সামনে দিয়ে মিছিল শুরু করে নিজাম প্যালেস এবং এক্সাইড মোড় ঘুরে হাজরা মোড়ে এসে মিছিল শেষ করেন রাজ্য গ্রুপ ডি (Group D) চাকরিপ্রার্থীরা। এদিকে তার আগেই হাজরা মোড়ে এসে জড়ো হন ২০০৯ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু রুট ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে এগোনোর চেষ্টা করতেই পুলিসের সঙ্গে বিপুল ধস্তাধস্তি বেঁধে যায় তাঁদের।
২০০৯ সালের প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, তাঁরা বুধবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যাবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু এই নিয়ে একাধিকবার মেল এবং লিখিত আবেদন করা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। ফলে বিনা অনুমতিতেই তাঁরা হাজরা মোড়ে জড়ো হন। পরিস্থিতি বুঝে আগে থেকেই প্রচুর সংখ্যায় পুলিস মোতায়েন করা হয়েছিল। এর মধ্যেই কয়েকজন পুলিসের ঘেরাটোপ গলে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে দৌড়তে থাকেন। তখন উলটো দিক থেকে পুলিস এবং কমব্যাট ফোর্স এসে তাদের আটকে দেয়। রাস্তায় রীতিমত শুয়ে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা। টেনে হিঁচড়ে, চ্যাংদোলা করে তাঁদের গাড়িতে তোলা হয়।
তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজরা মোড়ে এসে হাজির হয় রাজ্য গ্রুপ ডি-র চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল। হাজরা মোড়ে পৌঁছে গিয়েও নিজেদের দাবিতে অনড় চাকরিপ্রার্থীরা বারবার স্লোগান তোলেন, দ্রুত নিয়োগ দিন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের মুখে হাসি ফিরিয়ে দিন। একই দাবি তাঁদের অভিভাবকদেরও। সে মুহুর্মূহু স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিসি ব্যারিকেডের মধ্যে থেকেই তাদের এই স্লোগান বিক্ষোভে অন্য মাত্রা নেয়।
২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে নবান্নে বসে ৬০ হাজার গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রুপ ডি রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর ২০১৭ সালের ২০ মে ১৯ লক্ষ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেন। লিখিত পরীক্ষায় পাস করেন মাত্র ১৮ হাজার জন। ইন্টারভিউয়ের চূড়ান্ত প্যানেলে ৫ হাজার ৪২২ জনের নাম এলেও বাকিদের ওয়েটিং লিস্ট আজও প্রকাশ্যে আনা হয়নি। আর তারপর ১০০ দিন নয়, ২০০ দিন নয়, ৪০০ দিন। ৪০০ দিন ধরে তারা বসে রয়েছেন মাতঙ্গিনী হাজরা মূর্তির পাদদেশে। কিন্তু তাদের মঞ্চে একবারও যাওয়ার সময় হয়নি শিক্ষামন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর। অথচ তাদের দফতর মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব দফতর এবং সেখানে নেই কোনও আইনি জটিলতা, এমনটাই দাবি চাকরিপ্রার্থীদের।
এর আগেও তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে ১৯ জুলাই শহীদ মিনার থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত তারা মিছিল করেছেন শহরের রাজপথে। ফের দ্বিতীয়বার হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের সামনে থেকেই মিছিলে সামিল হলেন রাজ্য গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, ভুতুড়ে এসএমএসের মাধ্যমে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের হয়েছে নিয়োগ। যোগ্য মেধার দাম চাই, পুজোর আগে অবিলম্বে নিয়োগ চাই।
মিছিল সামাল দিতে বুধবার রাস্তায় দেখা গেল হাজার হাজার পুলিসকর্মীকে। বুধবার ক্যামাক স্ট্রিট এবং থিয়েটার রোড সংলগ্ন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকেই মিছিলে হাঁটতে শুরু করেন চাকরিপ্রার্থীরা। অভিষেকের অফিসের সামনে দিয়ে মিছিল যাওয়ার জন্য ক্যামাক স্ট্রিটের রাস্তায় ছ'ফুটের জায়গা দেওয়া হয় চাকরিপ্রার্থীদের। খালি গায়ে স্লোগান লিখে ধুনো জ্বালিয়ে হাতে মশাল নিয়ে মিছিলে সামিল হতে দেখা যায় চাকরিপ্রার্থীদের।
শুধু চাকরিপ্রার্থীরাই নন, মিছিলে শামিল হন তাদের অভিভাবকেরাও। তাদের স্পষ্ট দাবি, লক্ষীর ভান্ডার তাদের চাই না, বরং তার পরিবর্তে চাকরি দেওয়া হোক গ্রুপ ডি যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের। এদিনের মিছিল থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের I.N.D.I.A জোটকেও কার্যত কটাক্ষ করলেন রাজ্য গ্রুপ ডি মহিলা চাকরিপ্রার্থীরা। এক বিশেষ ধরনের ব্যানার সম্বলিত পোশাকে ব্যারিকেড করে একসঙ্গে তারা মিছিলে সামিল হন।
তাদের আরও দাবি, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার মহিলা সংরক্ষণ বিল আনছে সেখানে রাজ্যের মহিলা চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগ দুর্নীতির কারণে চাকরি থেকে বঞ্চিত। এদিনে রাজ্য গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলে সামিল হন কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচী এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। নিজাম প্যালেস এবং এক্সাইড মোড় ঘুরে মিছিল এসে শেষ হয় হাজরা মোড়ে। চাকরিপ্রার্থীদের এই মিছিলের পদধ্বনি এবং স্লোগান কি আদৌ পৌঁছল রাজ্য প্রশাসনের কানে? রাজ্য প্রশাসন পদক্ষেপ না নিলে আগামী দিনে যে বৃহত্তর আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, তা যেন ফের একবার বুঝিয়ে দিলেন রাজ্য গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা।
২৭ সেপ্টেম্বর মিছিলের পুলিসি অনুমতি না মেলায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্য গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা। পুলিসের আপত্তির জায়গা ছিল গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলের রুট, যা শহরের অন্যতম হাই সিকিউরিটি জোন এবং ব্যস্ততম জায়গা। মিছিলের রুট পরিবর্তন করে অনুমতি দিয়েছিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। কিন্তু মঙ্গলবার মিছিলের রুট থেকে ক্যামাক স্ট্রিটকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে ফের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসের দ্বারস্থ রাজ্য। তবে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিয়ে আগের পরিবর্তিত রুটই বহাল রাখল হাইকোর্ট।
বিচারপতি জানিয়ে দেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস ক্যামাক স্ট্রিটের উপর দিয়েই যাবে গ্ৰুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল। মিছিলের জন্য স্পেশাল চ্যানেল করতে হবে। স্কুল পড়ুয়ারা যাতে আটকে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্যকেই।
প্রসঙ্গত, গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের আগের রুট ছিল হাজরা থেকে কালীঘাট ফায়ার ব্রিগেড পেরিয়ে হরিশ মুখার্জি রোড, আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোড হয়ে ফের হাজরা মোড় পর্যন্ত। কিন্তু ওই রাস্তায় মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন থাকায় হাই সিকিউরিটি জোনের কারণ দেখিয়ে রুট পরিবর্তনের আবেদন করে রাজ্য। রাজ্যের আবেদন বিবেচনা করে বিচারপতি পরামর্শ দেন, থিয়েটার রোড মোড় থেকে শুরু হয়ে ক্যামাক স্ট্রিট ক্রসিং, নিজাম প্যালেস, এক্সাইড মোড়, আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোড হয়ে হাজরা মোড় পর্যন্ত যাবে গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের এই মিছিল। এদিন ফের রাজ্যের তরফে আবেদন জানানো হয়, ক্যামাক স্ট্রিটে রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস, সেই কারণে রুট পরিবর্তন করা হোক। আবেদন খারিজ করে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের পর্যবেক্ষণ, "ক্যামাক স্ট্রিটে মিছিল হলে অসুবিধা কোথায়? আপনাদের আবেদন মতো কালীঘাট এলাকায় অনুমতি দেওয়া হয়নি। ক্যামাক স্ট্রিটে কোনও স্কুল নেই আর এটা কোনও ধরনা কর্মসূচি নয়। ওই এলাকায় চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল থামবে না এটা বলতে পারি, মিছিল হবেই।
এদিনের মামলার শুনানিতে গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি আপত্তি জানিয়ে বলেন, মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের প্রস্তুতি শেষ, ব্যানার ছাপা হয়ে গিয়েছে। যদি আপত্তি থাকত যেদিন আদালতে রুট তৈরি হল, সেদিন বললো না কেন ? রাজ্যের আইনজীবী অমৃতা পাঁজা মল্লিক বলেন, ক্যমাক স্ট্রিটে স্কুল আছে, মিছিলের সময় স্কুল ছুটি হবে, তাতে ট্রাফিক সমস্যা হতে পারে ।তাই ক্যামাক স্ট্রিট থেকে শুরু না করে নিজাম প্যালেস থেকে শুরু করা হোক। আমরা চাইছি থিয়েটার রোড হয়ে এক্সাইড মোড় থেকে আশুতোষ কলেজের সামনে দিয়ে হাজরা মোড়। বিচারপতি বলেন, স্কুল থাকলে তার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করবে পুলিস। খুব জোর হলে ১০০ জন মিছিল করবে। আমি মিছিলের সদস্যদের শান্তিপূর্ণ মিছিল করতে বলতে পারি, আমি দিন বদলাতে কি করে বলি? মিছিল হবে ওই দিনে ওই রাস্তাতেই, ব্যবস্থা করতে হবে পুলিসকে।
সব মিলিয়ে একটা বিষয় যেন পরিস্কার, গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল নিয়ে রক্তচাপ বাড়ছে পুলিস প্রশাসনে। বুধবারের এই মিছিলের থেকে হকের চাকরির দাবিতে স্লোগান রাজ্য সরকারের আরও অস্বস্তি বাড়ায় কি না, সেটাই দেখার।
নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগের পর এবার গ্রুপ-ডি-র ওয়েটিং লিস্ট নিয়ে মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের। মঙ্গলবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানান, 'গ্রুপ-ডি-র ওয়েটিং লিস্ট কিন্তু গঙ্গার মত স্বচ্ছ নয়। এটা মনে রাখতে হবে।' গ্রুপ-ডি-র নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার প্রেক্ষিতে মন্তব্য বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। এমন নির্দেশ কমিশনকে দিয়েছেন বিচারপতি।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে সম্প্রতি ১৯১১ জন কর্মরত গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এই ১৯১১ জনের শূন্যপদে ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে দায়ের হওয়া মামলাও এই মুহূর্তে বিচারাধীন। এমতাবস্থায় বিচারপতি বসুর মঙ্গলবারের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ন বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন বিচারপতি বসু। মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন বেআইনি ভাবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের চাকরি বাতিল নিয়ে বিশ্বজিৎ বসু বলেন, 'রাজ্যজুড়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এখন ভুয়ো শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হলে পুরো পরীক্ষায় প্রভাব পড়বে। পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই এখনই এনিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া সমস্যার। মাধ্যমিক মিটলে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে আদালত।'
OMR শিট (OMR Sheet Case) বিকৃত-কাণ্ডে গ্রুপ ডি পদে ১৯১১ জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের (Caluctta High Court) সিঙ্গল বেঞ্চ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে এঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে এই নির্দেশ দেয় সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন চাকুরীহারারা। ডিভিশন বেঞ্চ এই আবেদনের শুনানিতে সিঙ্গল বেঞ্চের বেতন ফেরতের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। যদিও চাকরি বাতিলের নির্দেশ নিয়ে এদিন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি ডিভিশন বেঞ্চ (Division Bench)। অর্থাৎ চাকরি বাতিলের নির্দেশ এখনও বহাল রইলো। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৭ ফেব্রুয়ারি।
এদিকে, চাকরিহারাদের আবেদনে উল্লেখ, 'আমরা গত ৫ বছর ধরে চাকরি করছি। চাকরি পাওয়ার পর যথাযথ শ্রমও দিয়েছি। তাহলে এখন কেন বেতন ফেরত দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে?' এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ওএমআর শিট বিকৃত করে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে ২ হাজার ৮০০-র বেশি চাকরিপ্রার্থীর। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ১৯১১ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নির্দেশে মেনেই এই সিদ্ধান্ত।
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গ্রুপ ডি (Group D) চাকুরিহারারা। তাঁদের মামলা গ্রহণ ডিভিশন বেঞ্চে (Division Bench)। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Ganguly) সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের, বৃহস্পতিবার শুনানির সম্ভাবনা। আবেদনে দাবি, বেতন বন্ধ ও ফেরতের উপর থাকা সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ। এমনকি চাকরি বাতিলের নির্দেশনামাতেও স্থগিতাদেশ চেয়ে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের এজলাসে আবেদন।
আবেদনে উল্লেখ, 'আমরা গত ৫ বছর ধরে চাকরি করছি। চাকরি পাওয়ার পর যথাযথ শ্রমও দিয়েছি। তাহলে এখন কেন বেতন ফেরত দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে?' এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ওএমআর শিট বিকৃত করে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে ২ হাজার ৮০০-র বেশি চাকরিপ্রার্থীর। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ১৯১১ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নির্দেশে মেনেই এই সিদ্ধান্ত।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই ডিভিশন বেঞ্চে চাকরিহারা গ্রুপ ডি কর্মীরা।
নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগ (Teacher Recruitment) মামলায় ডিভিশন বেঞ্চে (Division Bench) চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকারা। উত্তরপত্র বিকৃত করে (ওএমআর শিট) ৯৫২ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। হাইকোর্টের (Calcutta High Court) সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে এঁদের মধ্যে ৮০৫ জনের চাকরি গিয়েছে। এবার সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশনে বেঞ্চে আবেদন। যদিও বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ, সিঙ্গল বেঞ্চর বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি। বুধবার ফের আবেদনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ (Division Bench)।
এই ৯৫২ জনের ওএমআর শিট গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার করে সিবিআই। এই ৯৫২ জনের ওএমআর শিট স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি খতিয়ে দেখে এবং বিকৃত করা হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু কমিশনকে নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে এঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে থেকে ৮০৫ জনের সুপারিশ বাতিল করেছে কমিশন। অর্থাৎ ৮০৫ জনের চাকরি গিয়েছে। আরও ১৩২ জনকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেবে কমিশন।
এবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
এদিকে, হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের চাকরি বাতিলের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে চাকরি যাওয়া গ্রুপ ডি কর্মীরা। সোমবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ওঠে।
শুক্রবারই বেআইনি নিয়োগের অভিযোগে এসএসসি নিযুক্ত ১৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি বাতিল করেছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চে। জানা গিয়েছে, এই আবেদনের প্রেক্ষিতেও সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর কোনও স্থগিতাদেশ পড়েনি।
গ্রুপ-ডি নিয়োগ (Group D) দুর্নীতি মামলায় সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে পার্টি করতে নির্দেশ হাইকোর্টের। এসএসসি-র (SSC) প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে অবিলম্বে জানাতে হবে কার বা কাদের নির্দেশে তিনি এই দুর্নীতি (Corruption) করেছেন। যদি না জানান, তাহলে তিনিই দোষী বলে ধরা হবে। তিনি তাঁর ডিগ্রি আপাতত ব্যবহার করতে পারবেন না, যত দিন না সিবিআইয়ের আনা অভিযোগ ভুল প্রমাণিত হয়। তিনি যদি আদালতের নির্দেশে এসে জানান কারা কারা যুক্ত ছিল, তাহলে প্রয়োজনে পরিবারকেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হবে। শুক্রবার পর্যবেক্ষণে জানান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Ganguly)।
জানা গিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে কঠোর ‘সাজা’র কথা শোনালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রুপ-ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ। যত দিন না এই মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, ততদিন নিজের ‘ডক্টরেট’ উপাধি ব্যবহার করতে পারবেন না সুবীরেশ।
শুক্রবার এসএসসি কোর্টকে জানিয়েছে, সুবীরেশ ভট্টাচার্য এই দুর্নীতির আমলে কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। কমিশনের ডাটা রুম তিনি ব্যবহার করতে না দিলে এই কাজ সম্ভব ছিল না।
সম্ভাবনাকে সত্যি করেই ১৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি বাতিল করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC Group D) সুপারিশকে মান্যতা দিয়ে পর্ষদের এই সিদ্ধান্ত। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Ganguly) বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ধরেই এই পদক্ষেপ এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের। জানা গিয়েছে, ওএমআর শিট (OMR Sheet) জালিয়াতির জেরে ২৮২০ জন গ্রুপ ডি পদে চাকরির সুপারিশ পত্র পেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে চাকরি হারানো এই ১৯১১ জন চাকরিতে যোগ দেন, বাকিরা যোগ দেননি।
এদিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় এই ১৯১১ জন প্রার্থীর নিয়োগপত্র বাতিলের কথা। বৃহস্পতিবারই হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, যাঁদের চাকরি বাতিল হবে, সেই শূন্যপদে মেরিট লিস্টে ওয়েটিংয়ে থাকা যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে। তাঁদের বিস্তারিত তালিকাও প্রকাশ করবে এসএসসি। জানা গিয়েছে, যে ১৯১১ জনের নিয়োগ বাতিল বলে ঘোষণা হয়েছে, তাঁরা আজ থেকে কোনও বেতন পাবেন না। পাশাপাশি এযাবৎকাল পাওয়া বেতন কিস্তিতে ফেরত দিতে হবে, এই নির্দেশ এদিন দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই ১৯১১ জনকে সিবিআই তদন্তের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে, নিতে পারবে হেফাজতেও। কোর্ট অর্ডার ছাড়া দেশের কোনও নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেবেন না এই 'অযোগ্য' চাকরিপ্রার্থীরা। এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামি ১৪ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি, স্কুল সার্ভিস কমিশন-মধ্যশিক্ষা পর্ষদ হলফনামা দিয়ে জানাবে তারা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে।
গ্রুপ ডি OMR শিট বিকৃত মামলায় আড়াই হাজারের বেশি চাকরি বাতিলের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। গ্রুপ-ডি মামলায় (Group D Case) শুক্রবারের মধ্যে চাকরির সুপারিশ বাতিলের নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly)। ২৮২০ জন যারা কারচুপি করেছে, তাঁদের প্রত্যেকের চাকরি বাতিল করতে হবে। এদের তালিকা আবার নতুন করে আপলোড করতে হবে, নোটিশ দিতে হবে। ৬৯৮৮ যারা মেরিট লিস্টে তাঁদের তালিকা থেকে শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। এদের মধ্যে কারও OMR শিট বিকৃত পাওয়া গেলে পরে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেখা যাক কার অদৃশ্য হাত আছে এসবের পিছনে। বৃহস্পতিবার শুনানিতে এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, কমিশন সব OMR পরীক্ষা করেছে, যেগুলি সিবিআই দিয়েছে। OMR শিটগুলি গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার হয়। এসএসসিকে বিচারপতি বলেন, ' পরীক্ষা করে কারচুপি হয়েছে, যদি আপনি জেনেছেন তাহলে পদক্ষেপ নিতেই হবে। অনেক সময় দিয়েছি। এবার তাঁরা আসতে বাধ্য এই কোর্টে। কিছুদিন জেলে থাকার ব্যবস্থা করব।'
এদিন আরও একধাপ এগিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মত আমি উদার নই।'
বেআইনি ভাবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের সরাসরি জেরা করুক সিবিআই (CBI Investigation)। কাকে টাকা দিয়ে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন, জানুক কেন্দ্রীয় সংস্থা। মঙ্গলবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে এই নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বিশ্বজিত বসুর (Justice Basu)। তিনি বলেন, 'এটা ইয়ার্কি হচ্ছে! পড়ুয়াদের কথা না ভেবে এভাবে চাকরি পাচ্ছে, আবার এসব কথা বলছে। টাকা কাদের দিয়ে চাকরি পেয়েছে, এটা জানতেই হবে সিবিআইকে।'
এদিকে এসএসসিকে হাইকোর্টের প্রশ্ন, 'যদি এই কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়, সেখানে দ্রুত নিয়োগের জন্য কতটা প্রস্তুত এসএসসি। কারণ কর্মী না থাকলে স্কুল চালানো সমস্যা হবে। কেন এসএসসি এদের সরাতে নিজে পদক্ষেপ করছে না?'
এমনকি ৪৪৮৭ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী ও ওয়েটিং লিষ্টে থাকা প্রার্থীদের ওএমআর শিট প্রকাশ করতে হবে। ওই ওএমআর শিট প্রকাশ করতে হবে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে। যেগুলি সিবিআই গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার করেছে, সেই ওএমআর শিট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি। এর আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও ওমআর শিটগুলো আপলোডের নির্দেশ দিলেও সেটা এখনও কার্যকর করেনি এসএসসি। সেই নিয়ে এবার দ্বিতীয় নির্দেশ।
গ্রুপ ডি নিয়োগে (Group D) ফের প্রকাশ্যে বড়সড় দুর্নীতি (Recruitment Corruption)। সাদা ওএমআর শিট (OMR Sheet) জমা দিয়েও নম্বর বেড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর তালিকাভুক্ত একজনের নম্বর ৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩, অপর একজনের নম্বর ২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৩। একজনের নম্বর আবার শূন্য থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৩। ২৮২৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০০ জনের ওএমআর শিট নিয়ে বসতে হবে বৈঠকে। মঙ্গলবার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Ganguly)।
গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় লক্ষী টুঙ্গার করা মামলায় আগামী ১৪ই ডিসেম্বর স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে বৈঠক করবেন সিবিআই, মামলাকারীর আইনজীবী এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রতিনিধি।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের বাজেয়াপ্ত করা হার্ডডিস্ক এবং ওএমআর শিট খতিয়ে দেখা হবে। তারপরে আগামী ২১ ডিসেম্বর প্রাথমিক রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা দেবে। এমনটাই সিবিআইকে নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
এদিকে, নবম-দশম অবৈধ নিয়োগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪০ জনের ওএমআর শিট আপলোড করার নির্দেশ হাইকোর্টের। যাদের নম্বর ০ থেকে ৫২ বা তার বেশি করা হয়েছে, সেই বিকৃত ওএমআর শিটগুলোই আপলোড করা নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিনই ওএমআর শিট সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে রিপোর্ট পেশ সিবিআইয়ের।
হাইকোর্টের নির্দেশ, '৪০ জনের ওএমআর শিট আপলোড করা হবে এবং তাঁরা মামলায় অন্তর্ভুক্ত হতে চাইলে অবশ্যই হতে পারবেন ১৬-ই ডিসেম্বরের মধ্যে।' জানা গিয়েছে, ১৮৩ জনের পর নবম-দশমে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া আরও ৪০ জনের হদিশ মিলেছে। সূত্রের খবর, ওএমআর শিট কারচুপি করেই ৪০ জনকে চাকরির সুপারিশ করেছিল এসএসসি।
নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় আদালতে হাজিরা দিলেন সিবিআই (CBI) সিটের নবনিযুক্ত প্রধান অশ্বিন শেনভি। গ্রুপ-ডি-র (Group D) দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় তাঁকে উপস্থিত থাকতে বলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এদিন সিট (CBI SIT) প্রধান উপস্থিত হলে, বিচারপতি তাঁকে বলেন, 'যা সাহায্য লাগবে আদালতে (Calcutta High Court) এসে জানাবেন, আদালত সবরকম সাহায্য করবে। এই দুর্নীতির শেষ দেখা দরকার। যারা এই দুর্নীতিতে যুক্ত তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।' পাল্টা সিবিআই কর্তা জানান, এখনও পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার পদে দুর্নীতি হয়েছে। তার মধ্যে ৯ হাজার ওএমআর শিট বিকৃত হয়েছে।
তিনি আদালতকে জানান, 'মূল প্যানেল থেকে ওয়েটিং লিস্ট, সর্বত্র দুর্নীতি হয়েছে।' বিচারপতি বলেন, 'যে যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে তারা শুধু ফলাফলের আশায় বসে আছেন। তারা জানতে চায় না সিবিআই কী করল, স্কুল সার্ভিস কমিশন কী করল? তারা চায় নিয়োগপত্র। এই দুর্নীতির তদন্ত, বিচার অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে। এবার তদন্ত- বিচার তার লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।'
'জল থেকে কাদা সরিয়ে জলটাকে স্বচ্ছ করুন,' কমিশনকে উদ্দেশ করে মন্তব্য বিচারপতির।
এসএসসি গ্রুপ ডি (SSC Group D) মামলায় সিবিআই সিটে রদবদল আগেই হয়ছে। কিন্তু এই সিটের প্রধান করা হয়েছিল অখিলেশ সিংকে। তাঁকে আর সিবিআইতে পাওয়া যাবে না। তিনি অসম ক্যাডারে ফিরে গিয়েছেন। তিনি কোনওভাবে সিবিআইয়ের সঙ্গে আর যুক্ত নয়। হাইকোর্টে (Calcutta High Court) এই তথ্য জানিয়েছিলেন সিবিআই আইনজীবী। এরপরেই সিবিআই সিটের (CBI SIT) মাথায় বসানো হল ডিআইজি সিবিআই অশ্বিন সেনভিকে, তিনি এখন চণ্ডীগড়ে ডিআইজি-এসইবি সিবিআই পদে কর্মরত। এদিন শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে অখিলেশ সিংয়ের বিকল্প হিসেবে ডিআইজি পদমর্যাদার তিন আধিকারিকের নাম দেওয়া হয়। এই তিন জন হলেন-- সুধাংশু খারে(কলকাতা), মাইকেল রাজ (ঝাড়খণ্ড), অশ্বিন সেনভি (চণ্ডীগড়)।
এরপরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন পঙ্কজ শ্রীবাস্তবকে ফিরিয়ে আনা যায়? তিনি বর্তমানে সিবিআই অ্যাকাডেমিতে কর্মরত। শ্রীবাস্তব আইজি পদমর্যাদার অধিকারিক।সিবিআই জানায় এ ব্যাপারে তথ্য জানাতে সময় লাগবে। তারপরই বিচারপতির মন্তব্য, আমি তদন্তে সময় নষ্ট করতে রাজি নই। আমি অশ্বিন সেনভি, যিনি বর্তমানে চণ্ডীগড়ে সিবিআইতে কর্মরত তাঁকে সিটের প্রধান হিসাবে নির্বাচিত করছি।
তিনি সাত দিনের মধ্যে তদন্তভার গ্রহণ করবেন। আদালতের অনুমতি ছাড়া তাকে বদলি করা যাবে না। ২৪ নভেম্বর দুপুর দুটো নাগাদ এই মামলার পরবর্তী শুনানি। জানা গিয়েছে, নবম-দ্বাদশ শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের যে সিট, তাকেই নেতৃত্ব দেবেন সেনভি।
স্কুল সার্ভিস কমিশন না এসএসসি (SSC Case) গ্রুপ-ডি (Group C and D) নিয়োগ-কাণ্ডের তদন্তে থাকা সিবিআইয়ের সিটে (CBI SIT) রদবদল। সিটের ২ জনকে সরিয়ে, চার জনকে নিযুক্ত করলো কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে সিটের দায়িত্বে আনা হল কেন্দ্রীয় সংস্থার ডিআইজি অখিলেশ সিংকে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে বহাল থাকবে। বুধবার অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলএন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Ganguly)। এদিন শুনানিতে এসএসসি গ্রুপ-ডি নিয়োগ-কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিবিআইয়ের আইও-কে ডেকে পাঠায় হাইকোর্ট। তাঁর সঙ্গে কথা বলার পরেই এই পদক্ষেপ আদালতের। জানা গিয়েছে সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিং ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন।
সিবিআই সিটে রদবদলের ফলে দু'জনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন কেসি ঋষিনামণ এবং ইমরান আশিক। গত কয়েকদিনে নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের ধীর গতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় এই সংস্থাকে লোকবল বাড়াতেও পরামর্শ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, প্রায় এক বছর হতে চললো সিবিআই তদন্তের নির্দেশ সেওয়া হয়েছে। জুন মাসে সিট গঠন করা হয়েছে। গ্রুপ-ডি মামলায় মোট ৫৪২ জনের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থা মাত্র ১৬ জনকে জেরা করেছে।'
তিনি জানান, প্রত্যেককে জেরা করা হলে আরও তথ্য হাতে আসতো। এর কারণ হতে পারে সিবিআইয়ে আধিকারিকদের অভাব নয়তো দক্ষতার অভাব। এরপরেই সিট পুনর্গঠনে চার জন সিবিআই অফিসারের নাম চান বিচারপতি। ডেপুটি এসপি অংশুমান সাহা, ইনস্পেক্টর বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, প্রদীপ ত্রিপাঠী এবং ওয়াসিম আক্রম খানকে সিটের সদস্য করেন বিচারপতি। ডিআইজি অখিলেশ সিংয়ের নেতৃত্বে সিটের এই চার সদস্য কাজ করবে। অখিলেশ সিংকে বর্তমান দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে এখুনি কলকাতা পাঠাতে হবে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে বদলি করা যাবে না। এমনটাই স্পষ্ট করে দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি এই মামলার তদন্তে কতটা অগ্রগতি তা ৭ দিনের সিবিআইকে জানাতে হবে। আগামি ২২ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।