দীর্ঘ ৪০ বছর পর ফের গ্রিসের (Greece) মাটিতে পা রাখলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ১৯৮৩ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে গ্রিসে গিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। আর এবারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে গ্রিসে গেলেন নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। তিনি সেদেশে পা রাখার আগেই সারা দেশজুড়ে ওঠে মোদী ঝড়। শুক্রবার তিনি গ্রিসের এথেন্সে পৌঁছন। আর সেখানে তাঁর বিমান অবতরণ করার পরই তাঁকে স্বাগত জানান গ্রিসের বিদেশমন্ত্রী জর্জ জেরাপেটরিটিস। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রবাসী ভারতীয়রা মুখোমুখি হতেই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন তাঁরা। চারিদিক থেকে ভেসে আসে মোদী স্লোগান।
সূত্রের খবর, গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস-এর আমন্ত্রণেই শুক্রবার সকালে গ্রিসে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই গ্রিসের রাষ্ট্রপতি ক্যাটেরিনা সাকেলারোপলু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেছেন ও তাঁকে সম্বর্ধনা দিয়েছেন। সূত্রের খবর, মোদী এর পর গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এই গ্রিস সফরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হবে। তাছাড়াও সামরিক এবং প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া আরও নিবিড় এবং মজবুত করার চেষ্টা করা হবে এই সফরে। এছাড়াও দুই রাষ্ট্রপ্রধানের উপস্থিতিতে জাহাজনির্মাণ শিল্প নিয়ে কোনও মউ স্বাক্ষর হতে পারে বলে খবর।
অন্যদিকে এদিন মোদী বিমানবন্দর থেকে এথেন্সের হোটেলে পৌঁছলে তাঁকে স্বাগত জানাতে গ্রিসের ভারতীয় সম্প্রদায়ের একাংশ উপস্থিত হন সেখানে। পরে এথেন্সের হোটেল গ্রেনেড ব্রেটাগনে-তে পৌঁছনো ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় মোদীকে। ভিড়ের মধ্যেও শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক, প্রত্যেকের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে করমর্দন করতে বহু মানুষ একসঙ্গে হাত বাড়িয়ে দেন। কাউকেই ফিরিয়ে দেননি মোদী। ভাইরাল ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে দেখা হতেই 'মোদীজি কি জয়', 'জয় হো', 'চক দে'এর মতো স্লোগান দিতে থাকেন প্রবাসী ভারতীয়রা।
আজ দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে (BRICS Summit) যোগ দিতেই তিনি যাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকা। তাঁর বিদেশ ভ্রমণের আগে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের থেকে প্রধানমন্ত্রীর মোদীর বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে তিনি জানান, একাধিক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে পারেন। ব্রিকসের সদস্য হিসাবে সেখানে উপস্থিত থাকবেন চিনা প্রেসিডেন্টও। ফলে তাঁর সঙ্গেও এ যাত্রায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে কিনা তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। তবে এখানেই শেষ নয়, ব্রিকস সম্মেলনের পর তিনি ২৫ অগাস্ট গ্রিসেও যাবেন প্রধানমন্ত্রী, সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে পৌঁছবেন। আজই তিনি ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক্কালে আয়োজিত বিশেষ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এরপর ২৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নেবেন। ২৪ অগাস্ট, প্রধানমন্ত্রী মোদী ব্রিকস এবং আফ্রিকান দেশগুলির সম্মেলনেও অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী মূলত সেদেশের প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে সেই দেশে গিয়েছেন। তবে ব্রিকস সম্মেলন ছাড়াও অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মসূচি। সূত্রের খবর, আজ দুপুর ৩টে ৫৫ নাগাদ স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টার পৌঁছবেন তিনি। দুপুর ৪টে যোগ দেবেন ব্রিকস বিজনেস ফোরাম লিডার'স ডায়লগে। বিকাল ৬টায় ব্রিকসের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন। এরপর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে নৈশ্যভোজে যোগ দেবেন। উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে তিনি উড়ে যাবেন গ্রিসেও। প্রধানমন্ত্রী খোদ জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৪০ বছর পর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি সেখানে পা রাখবেন। ফলে তিনি সেখানে যেতে পেরে খুব সম্মানিত অনুভব করছেন।
ভয়াবহ দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার মধ্যরাতে গ্রিসে (Greece) একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ (trains collide) একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের। এই সংঘর্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আর কমপক্ষে ৮৫ জন আহত হয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেম্প শহরে দুর্ঘটনার পর বেশ কয়েকটি ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। সংঘর্ষের জেরে যাত্রীবাহী ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন (Fire)।
উদ্ধারকাজ শুরু করেছে এথেন্স প্রশাসন। মৃত্যের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। থেসালি অঞ্চলের গভর্নর জানিয়েছেন, যাত্রীবাহী ট্রেনটি ৩৫০ যাত্রীকে নিয়ে এথেন্স থেকে গ্রিসের উত্তর দিকের শহর থেসালোনিকি যাচ্ছিল। ঘটনার পরপরই ২৫০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যাত্রীবাহী ট্রেনের প্রথম দু'টি কামরা সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত বলে জানান তিনি।
ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র বলেছেন, যাত্রীদের উদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে। বহু মানুষ জ্বলন্ত ট্রেনের কামরায় আটকে পড়েছিলেন। তাঁদের উদ্ধারে বেশ বেগ পেতে হয় দমকলকর্মীদের। তিনি আরও বলেন, 'দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের তীব্রতার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছে। উদ্ধারে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।'
❗️ Two trains collide in northern #Greece, killing at least 16 people and 85 were injured
— NEXTA (@nexta_tv) March 1, 2023
Rescuers have been working to save passengers and extinguish a fire caused by the crash. There were about 350 people on the train.
It is not yet known what caused the collision. pic.twitter.com/QEyU5K91wG
ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে দুর্ঘটনাস্থলের বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও। তাতে দেখা গিয়েছে, লাইনের দুই ধারে ছিটকে পড়ে রয়েছে একাধিক কামরা। অগ্নিদ্বগ্ধ কামরাগুলিতে আটকে পড়েছেন একাধিক যাত্রী। পাশপাশি চলছে উদ্ধারকাজ।