Breaking News
Abhishek Banerjee: বিজেপি নেত্রীকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের অভিযোগ, প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জাতীয় মহিলা কমিশনের      Convocation: যাদবপুরের পর এবার রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সমাবর্তনে স্থগিতাদেশ রাজভবনের      Sandeshkhali: স্ত্রীকে কাঁদতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন 'সন্দেশখালির বাঘ'...      High Court: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল, সুদ সহ বেতন ফেরতের নির্দেশ হাইকোর্টের      Sandeshkhali: সন্দেশখালিতে জমি দখল তদন্তে সক্রিয় সিবিআই, বয়ান রেকর্ড অভিযোগকারীদের      CBI: শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ! তদন্তে সিবিআই      Vote: জীবিত অথচ ভোটার তালিকায় মৃত! ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ধূপগুড়ির ১২ জন ভোটার      ED: মিলে গেল কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর, শ্রীঘই হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ ইডির      Ram Navami: রামনবমীর আনন্দে মেতেছে অযোধ্যা, রামলালার কপালে প্রথম সূর্যতিলক      Train: দমদমে ২১ দিনের ট্রাফিক ব্লক, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন, প্রভাবিত কোন কোন রুট?     

Foodlover

Special: 'ভোজন রসিক বাঙালি', জানুন খাদ্যরসিক দেশবন্ধু থেকে রামমোহনের কীর্তি

সৌমেন সুর: সে একটা দিন গেছে। এখন আর তেমন কিছু চোখে পড়ে না। যখন মানুষ খেয়ে এবং খাইয়ে সমান তৃপ্তি পেতো। জিনিসপত্রের তেমন আকাল ছিল না। এক একজন খেতে পারতেনও প্রচুর। সেসব কথা শুনলে নেহাতই্ গল্পকথা মনে হবে। যেমন ধরুন রাজা রামমোহন রায়ের কথা। তিনি ছিলেন সুপুরুষ ও তেজস্বী। খাওয়ার ব্যাপারে তিনি ছিলেন অনেকের উপরে। একটা গোটা পাঁঠার মাংস খাওয়া তার কাছে কোনও কঠিন ব্যাপার ছিল না। দিনে বারো সের দুধ খেতেন। পঞ্চাশটা আম আর এক কাঁদি কলা-নারকেল অনায়াসে সেবন করতেন। নিজের শারীরিক শক্তি সম্পর্কে ছিল প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস।

অন্যদিকে প্যারীমোহন সরকার, প্রথম জীবনে ছিলেন ভীষণ পেটুক। সে সময় তিনি জলখাবার সারতেন এক ধামা মুড়ি আর শ'খানেক মুলো খেয়ে। বারাসাতে এক নিমন্ত্রণ বাড়িতে তর্ক করে খেয়ে ফেলেছিলেন একসের ছানাবড়া। মাংস খাওয়ার ব্যাপারে বিদ্যাসাগর মহাশয় ছিলেন তার যোগ্য সহচর। পাঁঠা কাটা হলে দুই বন্ধু মিলে অর্ধেকটা সাবাড় করে দিতেন।

দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনও এ ব্যাপারে কম যান না। পেটভরে পোলাও মাংস খেয়ে, দু সের রসগোল্লা-অম্লান বদনে খেয়ে ফেলতেন। সেকালের খাওয়া নিয়ে কোনও কথা উঠলে ঠাকুরবাড়ির কথা চলে আসে অবিশ্বাস্যভাবে। দ্বারকানাথ, দেবেন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ-- এঁরা প্রচুর খেতে না পারলেও খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে ছিলেন ভীষণ শৌখিন। রবীন্দ্রনাথ আবার এক খাবার দুবার খেতেন না। প্রখ্যাত লেখিকা পার্ল বাক বাঙালি রান্নার প্রশংসা করে গেছেন। সবুজ কলাপাতার উপরে অতি মিহি চালের ভাতের সঙ্গে নানা দর্শনধারী পদের গুন ও স্বাদুতাকে তিনি পোয়েটিক বলে বর্ণনা করে গেছেন।

তথ্যঋণ/ সুরজিত্ ধর

one year ago
Food Lovers: অশোক কুমার ও কিশোর কুমার; দু'জনেই মনে প্রাণে খাঁটি বাঙালি এবং খাদ্যরসিক

শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: গত ১৩ অক্টোবর ছিল ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি অভিনেতা অশোক কুমারের জন্মদিন। পাশাপাশি তাঁর ছোট ভাই ভারতীয় সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তি গায়ক ও অভিনেতা কিশোর কুমারের মৃত্যুদিন। বলিউডের এই দুই কিংবদন্তি শিল্পীকে কাছ থেকে দেখার ও মেশার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। ওরা প্রবাসী বাঙালি হলেও এঁদের মধ্যে যথেষ্ট বাঙালিয়ানা ছিল। অশোক কুমার বাংলা লিখতে ও পড়তে পারতেন। কিন্তু কিশোর কুমার বাংলা লিখতে ও পড়তে পারতেন না। তবে অশোক কুমার ও কিশোর কুমার দু'জনেই পরিষ্কার বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারতেন। 

বাড়িতে ওরা বাংলা ও হিন্দি দুই ভাষাতেই কথা বলতেন। অশোক কুমার ও কিশোর কুমার দু'জনেই ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। অশোক কুমার বিরাট মাপের অভিনেতা তো ছিলেনই তা ছাড়াও উনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে খুবই দক্ষ ছিলেন। খুব ভাল ছবি আঁকতেন।   খুব ভাল জ্যোতিষচর্চা করতেন। অসম্ভব ভালো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করতেন। নিয়মিত সকাল বেলায় ঘন্টা দুয়েক বিনা পয়সায় রুগি দেখতেন এবং ওষুধ দিতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজনা করা ছাড়াও তিনি অনেক বড়বড় ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। 

নানান বিষয়ে পড়াশোনা করতেন। সাহিত্যের প্রতি ওর গভীর অনুরাগ ছিল। বাংলা সাহিত্যের প্রতি ছিল প্রবল ভালবাসা। নিয়মিত বাংলা কবিতা, উপন্যাস পড়তেন। আমি বেশ কিছু বাংলা কবিতার বই ও বাংলা পত্রপত্রিকা দাদামণিকে পড়তে দিয়েছিলাম। বাংলা বই পেলে খুব খুশি হতেন অশোক কুমার। কলকাতা থেকে ওর ঘনিষ্ঠরা কেউ এলে তাজা সবজি, মিষ্টি নিয়ে আসত। অশোক কুমার পটল ভাজা খেতে খুব ভালবাসতেন। কলকাতার সন্দেশ ও রসগোল্লার প্রতি খুবই দুর্বল ছিলেন। 

তবে অশোক কুমার খুবই নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া করতেন। খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তেন এবং খুবই ভোরে উঠেতেন। এমনিতে কাজের ব্যাপারে ভীষণ সিরিয়াস ছিলেন দাদামণি। আবার প্রিয়জনদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডাও দিতেন। পাশাপাশি কিশোর কুমারও অসম্ভব প্রতিভাধর ছিলেন। একাধারে অভিনেতা, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সুরকার-গায়ক। দারুণ মজার মানুষ ছিলেন কিশোর কুমার। সর্বদাই হাসি মজা করে সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন। বাংলা ভাষা পড়তে বা লিখতে না জানলেও পরিষ্কার বাংলায় কথা বলতেন। 

বাঙালি হিসেবে উনি খুবই গর্ব অনুভব করতেন। বাঙালি খাবারের প্রতি ছিল বিশেষ দুর্বলতা। এমনিতে সিগারেট, মদ্যপান এসব কোন নেশা না থাকলেও, খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে উনি বড় ভাই অশোক কুমারের মত কঠোর নিয়ম মেনে চলতেন না। ঘি, মশলা যুক্ত সুস্বাদু খাবার খুবই পছন্দ করতেন। পছন্দ করতেন ঘিতে ভাজা ফুলকো ফুলকো লুচি, ছোলার ডাল, বেগুন ভাজা, আলুর দম সহযোগে জল খাবার খেতে ও খাওয়াতে। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা ছিল নানা রকমের বাঙালি মাছের পদ ও কলকাতার বাঙালি মিষ্টির প্রতি। কিশোর কুমার প্রায়ই বলতেন বাঙালিদের মতো মাছ রান্না করতে কেউ পারে না।

গলদা চিংড়ি র মালাইকারি, ইলিশ ভাপা, ভেটকি সর্ষে, কাতলা মাছের দম, ট্যাংরার ঝাল, শিং, মাগুরের ঝোল প্রভৃতি পছন্দ করতেন। মিষ্টির মধ্যে দই, রাবড়ি, রাজ ভোগ, রসগোল্লা, নতুন গুড়ের সন্দেশ, জল ভরা তালশাস, মালাই চমচম ইত্যাদি ভালবাসেন।  নিজে কলকাতা থেকে যাওয়ার সময় অনেক দই, মিষ্টি ও মাছ নিয়ে যেতেন।

2 years ago
Kapoor: বাংলার সঙ্গে কাপুরদের যোগ আত্মিক, সেভাবে বাঙালির মতোন এঁরাও যথেষ্ট খাদ্যরসিক

প্রসূন গুপ্ত: পৃথ্বিরাজ কাপুর পশ্চিম পাকিস্তান থেকে কলকাতায় চলে আসেন। খুব ভালো বাংলা বলতে পারতেন, এখানে টুকিটাকি কাজ করতে করতেই বাম রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রথমে থিয়েটার, পরে সিনেমায় যোগ দেন। কলকাতার নানা খাবারে তখন ঝোঁক ছিল অসম্ভব। একদিকে জন্মসূত্রে পাঞ্জাবি, তাই পাঞ্জাবি খানা এবং পরে কলকাতায় থেকে মাছ থেকে খাঁসির মাংস, মিষ্টির প্রতি পৃথ্বিরাজের আগ্রহ বাড়ে। একই খাবারের আকর্ষণ ছিল রাজ কাপুরের। তিনিও বাংলা জানতেন, শাম্মি বা শশী এত ভালো বাংলা না জানলেও খাওয়ার প্রতি আকর্ষণ তাঁদেরও এই কলকাতার সূত্রে।

শুধু খাবারই নয় বিদেশী সুরার প্রতিও আকর্ষণ ছিল কাপুরদের। রাজ বা তাঁর বংশধরাও নানান ডিশ খেতে ও খাওয়াতে ভালোবাসতেন। এদের মুম্বাইয়ের বাড়িতে বা আরকে স্টুডিওতে প্রায়ই খানাপিনার আসর বসতো। সিনেমা জগৎ বলে শুধু নয় সাংবাদিক থেকে রাজনৈতিক নেতা বা মুম্বইয়ের ক্রিকেটারদের নিমন্ত্রণ থাকতো কাপুরদের আসরে। দোল হোলিতে আরকে স্টুডিওতে ৫০০ অতিথির নিমন্ত্রণ থাকতো কম করে।

ঋষি কাপুর খেতে এবং মদ্যপান করতে ভীষণ ভালোবাসতেন। তিনি যখন নায়কের চরিত্রে অভিনয়ে ছিলেন, তখন স্ত্রী নিতু সিং অনেকটাই তাঁকে কন্ট্রোল করতেন। কিন্তু সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিতু জানিয়েছেন, ঋষি নাকি ৩০ দিনে ৩০ রকম ডিশের বায়না করতেন। করোনা আবহে তিনি মদের দোকান বন্ধ ছিল বলে তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন।

কিন্তু এই পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম অর্থাৎ রণবীর কাপুর কিন্তু একবারেই খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক। সকালে ফ্রুট জুস্, ডিমের সাদা অংশ-সহ একটি টোস্ট এবং ফল। 

দুপুরে প্রায় কিছুই নয়। খিদে পেলে  হেলথ বিস্কুট, রাতে সবুজ সবজি, সেদ্ধ মাংস এবং একটি রুটি। রণবীর জানে তাঁর বাজার এবং চেহারা ধরে রাখতে হবে।

2 years ago