চেক মেট। ৭১ মিনিটে দিমিত্রি পেত্রাতোসের বাঁ-পায়ের শটে ২৩ বছর পর ডুরান্ড কাপ ঘরে তুলল মোহনবাগান। ৬১ মিনিট দুটি হলুদ কার্ড দেখার জন্য লাল কার্ড দেখেন মোহনবাগানের অনিরুদ্ধ থাপা। ১০ জন হয়ে যাওয়ার গোল পায় সবুজ-মেরুন। নিজেদের বক্স থেকে বল পেয়ে বাঁ-দিক থেকে ডান দিকে কাট করেন পেত্রাতোস। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া তাঁর বাঁ-পায়ের শটে ১৯ বছর পর ডুরান্ড এল কলকাতায়।
দিন কয়েক আগেই ডুরান্ড কাপের গ্রুপের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতার দুই প্রধান। সেই ম্যাচে নায়ক হয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের নন্দকুমার। সেই ম্যাচে বেশ ফ্যাকাশে দেখিয়েছিল দ্রিমিকে। কিন্তু রবিসারয়ীয় যুবভারতীতে দিমিত্রি পেত্রাতোস দেখিয়ে দিলেন বড় ম্যাচে বড়রাই খেলেন।
কেমন হল ডুরান্ড ফাইনালের ডার্বি? এক কথায়, ভীষণ এলোমেলো। প্রথম ৪৫ মিনিটে দু দলই দাঁড়িয়ে ছিল এক সারিতে। এর মধ্যে শেষ বেলায় একসঙ্গে চার ফুটবলারের হলুদ কার্ড দেখা ছাড়া তেমন কোনও উত্তেজনা ছিল না।
১৯ বছর পর ডুরান্ড ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই বড় ক্লাব। ২০০৪ সালের ফাইনালে দিল্লি আম্বেদকর স্টেডিয়ামে এক বঙ্গসন্তানের জোড়া গোলে ডুরান্ড জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। ১৯ বছর পর চন্দন দাসকে ম্লান করে যুবভারতীতে নায়ক হলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস।
সেমিফাইনালে বিতর্কিত পেনাল্টি। রবিবার ডুরান্ড কাপের ফাইনালে নামার আগে সেসব নিয়ে ভাবতে নারাজ মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো। ডুরান্ডের প্রথম ডার্বিতে হারের ক্ষত এখনও টাটকা। টিমের অন্যতম ফুটবলার আর্মান্দো সাদিকু জানিয়ে দিলেন, এবার তাঁদের মাথায় প্রতিশোধই ঘুরছে।
কোয়ার্টার ফাইনালে মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে পেনাল্টি পায়নি। সেমিফাইনালে পেনাল্টি থেকে গোল পান জেসন কামিংস। সেই পেনাল্টি নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু তা পাত্তা দিতে নারাজ মোহনবাগান কোচ ফেরান্দো। গত ডার্বিই তাঁর প্রথম ম্যাচ ছিল। খারাপ খেলেছিলেন তিনি। এবার গোল করে টিমকে ট্রফি জেতাতে চান। জানালেন সাদিকু।
প্রাক মরশুমের ম্যাচে টিমকে গুছিয়ে নিতে চাইছেন কোচ ফেরান্দো। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের অধীনে ইস্টবেঙ্গল দারুণ ফর্মে আছে। তাই সতর্ক সবুজ-মেরুন কোচ। এবার আর কোনও সুযোগ দিতে চান না ইস্টবেঙ্গলকে।
১৯ বছর পর ফের কলকাতা ডার্বি। ডুরান্ড কাপ ফাইনালে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। সেমিফাইনালে পিছিয়ে পড়েও এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ২-১ গোলের ব্যবধানে জয়। প্রথমার্ধের দুর্বলতা কাটিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত ছন্দে সবুজ-মেরুন। বল পজিশন কম নিয়েও গোয়াকে হারিয়ে ডুরান্ডের ফাইনালে উঠল মোহনবাগান।
সেমিফাইনালের মতো হাই ভোল্টেজ ম্যাচে মোহনবাগান প্রথম থেকেই একেবারেই ছন্দ পায়নি। গোয়া বরং পাসিং ফুটবলে মোহনবাগানকে চাপে রেখেছিল। হুগো বুমোর ভুলে ২২ মিনিটে গোয়ার হয়ে প্রথম গোল করেন নোয়া সাদিকু। বারবার আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করলেও, ব্যর্থ হয় ফেরান্দোর স্ট্র্যাটেজি। ৪২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান মোহনবাগান। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেনি। বক্সের লাইনে ফাউল করে এফসি গোয়া। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে গোয়ার আপত্তি ছিল। কিন্তু ভুল করেননি জেসন কামিংস। দ্বিতীয়ার্ধে হুগো বুমোর পরিবর্তে নামেন সাদিকু। মোহনবাগানের আক্রমণে বদল আসে। পরিবর্ত ফুটবলার হয়ে নেমেই ৬০ মিনিটের মাথায় গোল পান সাদিকু।
শেষদিকে কামিংসকে তুলে মনবীরকেও নামান কোচ ফেরান্দো। ততক্ষণে গোয়া চাপে পড়ায় মোহনবাগানের কাছে খেলাও সহজ হয়ে যায়। ব্রেন্ডল হামিলকেও মাঠে নামান ফেরান্দো। নামান লিস্টন কোলাসোকেও। আর গোল শোধ করতে পারেনি এফসি গোয়া।
ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গল এফসি। গোকুলাম কেরালাকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারাল লাল-হলুদ ব্রিগেড। বৃষ্টিস্নাত যুবভারতী স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতেই এক মিনিটের মধ্যে ব্যবধান বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। গর্জে ওঠে গ্যালারি। কর্নার থেকে গোল করেন জর্ডন এলসি। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে গোকুলামের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় লাল-হলুদ। আর সমতা ফেরাতে পারেনি গোকুলাম।
এদিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলে ইস্টবেঙ্গল। প্রথমার্ধের খেলা ১-০ ব্যবধানেই শেষ হয়। ৫৭ মিনিটে গোকুলামের হয়ে গোল করেন বৌবা। ৭৮ মিনিটে তাঁরই আত্মঘাতী গোলে ডুরান্ডের শেষ চারে জায়গা পাকা করে নেয় ইস্টবেঙ্গল।
সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের মুখোমুখি নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড। রবিবার ডুরান্ডের দ্বিতীয় কোয়ার্টারফাইনালে নামছে মোহনবাগান। ফাইনালের আগে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই দুই প্রতিপক্ষের।
শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে গোকুলম কেরলের বিরুদ্ধে নামবে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে লাল-হলুদের বাধা কেরলের ক্লাব। লড়াই সহজ নয় ইস্টবেঙ্গলের। ইস্টবেঙ্গল পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকলেও যুবভারতীতে (Yuva Bharati) লড়াই সহজ হবে না।
ইস্টবেঙ্গল টিমে গ্রুপ লিগে গোল পেয়েছে সিভেরিয়ো। ক্রেসপো, ক্লেটন সিলভারাও ছন্দে আছেন। ডুরান্ডে এখনও পর্যন্ত হারেনি দল। দীর্ঘদিন পর ডার্বি জিতিয়েছেন কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত। এবার মরশুম শুরুর আগে ঘরে একটা ট্রফি চাইছে সমর্থকরাও।
ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান দুই ক্লাবই ১৬ বার করে ডুরান্ড জয় করেছে। কিন্তু এই ডুরান্ড ইস্টবেঙ্গলের পথে আগেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার সেই পুরনো পরিসংখ্যান ভুলে নতুন রূপে নামতে চাইছে লাল-হলুদ। ভুলে জয়ের হাসি নিয়েই সেমিফাইনালে যেতে চাইছে লাল-হলুদ।
ডুরান্ড কাপের তালিকায় পিঠোপিঠি চলছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দী ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। ইতিমধ্যেই কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। গ্রুপ এ-র শীর্ষে ছিল তারা। মোহনবাগান রয়েছে ঠিক তাদের পরেই। দ্বিতীয় স্থানে। ৬টি গ্রুপ থেকে শীর্ষস্থানে থাকা ৬টি দল যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে। আর, প্রতি গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে থাকা দলগুলির মধ্যে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে আরও ২টি দল। এই মোট ৮টি দল উঠবে ডুরান্ডের কোয়ার্টার ফাইনালে। এখনও যেখানে পৌঁছাতে পারেনি মোহনবাগান। তবে, তাদের সুযোগও শেষ হয়ে যায়নি। গোল-পার্থক্যই এর কারণ।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় স্থানে থাকা দলগুলির মধ্যে এখন সব থেকে বেশি পয়েন্ট সবুজ-মেরুনের। গোল পার্থক্যও সব থেকে বেশি। তিন ম্যাচ খেলে মোহনবাগানের পয়েন্ট ৬। তাদের গোল পার্থক্য +৬। তবে বাকি গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে থাকা দলগুলির এখনও ম্যাচ বাকি রয়েছে। সেটাই এখন ভাবাচ্ছে মোহন-সমর্থকদের।
ডুরান্ড কাপের নক-আউটে ইস্টবেঙ্গল। বুধবার কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ পঞ্জাব এফসিকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল লাল-হলুদ। ম্যাচের একমাত্র গোল স্প্যানিশ ফুটবলার সিভেরিও-র। তিন ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে নক-আউটে উঠল লাল-হলুদ।
চার বছর ডার্বি জয়ের পর এদিন ডুরান্ড কাপের এই ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল। ডার্বি জয়ের পর অবশ্য কলকাতা লিগে পুলিশকে হারিয়েছিল লাল-হলুদ। তবুও এই ম্যাচ ঘিরে সমর্থকদের বিশেষ উন্মাদনা ছিল। ম্যাচের ২০ মিনিটে প্রথমে ফ্রি-কিক, সেখান থেকে কর্নার পায় ইস্টবেঙ্গল। সেই কর্নার থেকেই হেডে গোল করেন সিভেরিও।
প্রথম ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় ডার্বিতে খেলেননি নিশু কুমার। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে তিনি দলে ফিরেছেন। তবে এদিন ডার্বি পরবর্তী ডুরান্ড কাপের এই ম্যাচে কিশোর ভারতী স্টেডিয়াম ভরিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। ৯০ মিনিটে সুযোগ তৈরি করেও গোল করতে পারেননি লাল-হলুদ ফুটবলাররা।
বুধবার ডুরান্ডে ফের ইস্টবেঙ্গল। কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ পঞ্জাব এফসি। ডার্বি জয়ের পর এখন দুটি প্রশ্ন লাল-হলুদ সমর্থকদের মনে। আর তা-হল কোন অঙ্কে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে তাঁদের দল।
অঙ্ক খুব পরিষ্কার। এদিনের ম্যাচে পঞ্জাব এফসির বিরুদ্ধে জিতলেই নক-আউটে উঠবে ইস্টবেঙ্গল। সেক্ষেত্রে এই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হিসাবে নকআউটে উঠতে হলে অপেক্ষা করতে হবে মোহনবাগান সুপার জায়েন্টকে। কারণ, পঞ্জাবকে হারালে সাত পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ শীর্ষে থেকেই নকআউটে উঠবে কার্লোস কুয়াদ্রাতের দল।
লাল-হলুদ সমর্থকদের দ্বিতীয় প্রশ্ন এদিন কী বল পায়ে দেখা যাবে ক্লেটন সিলভাকে? পঞ্জাব ম্যাচে আগে যা ইঙ্গিত তাতে এদিন বল পায়ে নামতে পারেন ব্রাজিলীয় এই ফুটবলার।
এমনকী পরখ করা হতে পারে লাল-হলুদে যোগ দেওয়া আর এক স্প্যানিশকেও। তবে ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাতের এই ম্যাচ থেকে একটাই টার্গেট। তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়া। লিগে একটি ম্যাচ খেললেও ডার্বির পর ডুরান্ডে এই ম্যাচ খেলতে নামছে লাল-হলুদ
লাল হলুদের ঝড়ের নাম ইস্টবেঙ্গল। বৃষ্টির মরশুমে এমনই ঝড়ের সাক্ষী থাকল কলকাতা। নিজেদের হাফ থেকে ছিটকে আসা একটা বল। সেই বল থেকেই তারকা খচিত মোহন বাগান ডিফেন্সকে নরিয়ে দিলেন অখ্যাত নন্দকুমার। ম্যাচের বয়স তখন ৬০ মিনিট। ওড়িশার এই ছেলেটার বাঁ পায়েই প্রায় দেড় হাজার দিন পর ভারতীয় ফুটবলের সবথেকে বড় ম্যাচ জিতল ইস্টবেঙ্গল। ডুরান্ড কাপে মোহন বাগান সুপার জায়ান্টকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল। শুধু জয় নয় নন্দকুমারের পায়েই ন-বছর পর ডার্বিতে গোল করল ইস্ট বেঙ্গল।
টানা ৮ ডার্বি জিতে শনিবার যুবভারতীতে নেমেছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। সমর্থকরা দেখতে গিয়েছিলেন তারকা খচিত সবুজ মেরুনকে। বাগান কোচ জুয়ান ফেরেন্ডো তাঁর প্রথম একাদশ সাজিয়েছিলেন কয়েকজন তারকাকে নিয়েই। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অনিরুদ্ধ থাপা, আরমান্দো সাদিকু।
উল্টোদিকে ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিস কোচ ডার্বির দল সাজাতে গিয়ে ভরসা করেছিলেন দুই ভারতীয় নন্দকুমার ও মহেশের উপর। সাপোর্ট সিস্টেমে রাখা হয়েছিল বোরহা, তোরোর মতো স্পনিসকে। প্রথম ৪৫ মিনিটে ম্যাচের নিরিখে এগিয়েছিল মোহনবাগান।
৫৯ মিনিটে নিজেদের মিডফিল্ড থেকে হঠাৎ করেই একটি লং শট করেন বাগান ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি,যা অল্পের জন্য ইস্টবেঙ্গলের গোল লক্ষ্য় ভ্রস্ট হয়। নড়ে বসে যুবভারতী। এর পরেই নিজেদের ডিফেন্স থেকে ছিটকে আসা একটি বলকে মোহনবাগান মাঝমাঠ থেকে পিক আপ করেন নন্দকুমার। প্রায় ৩৫ গজ ছুটে এবং বাঁ পাশে দেশের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপাকে রেখে মোহনবাগান টপবক্স থেকে ম্যাচ ফিনিস করে দেন ২৭ বছরের এই যুবক। ৬০ মিনিটের মাথায় গোল খেয়ে চাপ বাড়াতে ভাঁড়ার থেকে নিজেদের সেরা অস্ত্রগুলো মাঠে নামান বাগান কোচ।
৫৯ মিনিটে নিজেদের মিডফিল্ড থেকে হঠাৎ করেই একটি লং শট করেন বাগান ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি,যা অল্পের জন্য ইস্টবেঙ্গলের গোল লক্ষ্য় ভ্রস্ট হয়। নড়ে বসে যুবভারতী। এর পরেই নিজেদের ডিফেন্স থেকে ছিটকে আসা একটি বলকে মোহনবাগান মাঝমাঠ থেকে পিক আপ করেন নন্দকুমার। প্রায় ৩৫ গজ ছুটে এবং বাঁ পাশে দেশের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপাকে রেখে মোহনবাগান টপবক্স থেকে ম্যাচ ফিনিস করে দেন ২৭ বছরের এই যুবক। ৬০ মিনিটের মাথায় গোল খেয়ে চাপ বাড়াতে ভাঁড়ার থেকে নিজেদের সেরা অস্ত্রগুলো মাঠে নামান বাগান কোচ।
ম্যাচের ৮১ মিনিটে দিনের সবথেকে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মোহন বাগানের বিশ্বকাপার জেসান কামিন্স। শেষ বেলায় ডিফেন্স ভরাট করে দিমিত্রি পেত্রাতোস সহ মোহন বাগানের সেরা অস্ত্রগুলিকে ভোঁতা করে দেন ইস্ট বেঙ্গলের স্প্যানিস কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত।
আজ মরশুমের প্রথম ডার্বি ম্যাচে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ও মোহনবাগান (Mohunbagan)। সকাল থেকেই সাজো সাজো রব যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন চত্বরে। দুই দলেরই সমর্থকদের মধ্যে চিরাচরিত উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। সেই উত্তেজনার জোশ আরও একটু বাড়াতে ম্যাচে উপস্থিত হলেন অভিনেতা ভিকি কৌশল। ২০২৩ ডুরান্ড কাপের থিম সংয়ে এবার দেখা গিয়েছিল ভিকি কৌশলকে। তাই আয়োজকরাই তাঁকে এই ম্যাচে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
ডুরান্ড কাপের থিম সংটি গেয়েছেন অরিজিৎ সিং। ম্যাচ দেখতে আসার কথা ছিল, তাঁরও। তবে কোনও কারণবশত গায়ক উপস্থিত হতে পারেননি। ভিকিকে ময়দানে দেখে দুই দলের সমর্থকেরা বাড়তি উৎসাহ পেয়েছে। ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান আজ নতুন জার্সিতে ময়দানে নেমেছে। সবুজ মেরুন ও লাল হলুদের ছটায় ভরে গিয়েছে ময়দানের প্রান্তর।
তবে ডুরান্ড কাপ নিয়ে এই বছর মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস বোধহয় আগের থেকে কম। কারণ ম্যাচ শুরু হলেও দর্শকাসন নাকি খালি রয়েছে অনেকগুলি। এদিকে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি হচ্ছে শহর কলকাতায়। এই অবস্থায় ডার্বি ম্যাচ বেশ কঠিন হতে চলেছে।
কলকাতাবাসীর জীবনে যতটা রাজনীতি, ঠিক ততটা জুড়ে রয়েছে খেলাধুলা। জেলায় জেলায় খেলাধুলার নানা অনুষ্ঠান হতেই থাকে। তার প্রচার অনুষ্ঠানও হয়। তবে মঙ্গলবার শহরবাসী যে ঘটনার সাক্ষী থাকবেন, তা হয়তো আগে কখনও হয়নি। আগামী ৩ আগস্ট থেকে শুরু হতে চলেছে ডুরান্ড কাপ। দেশের ১৪টি শহর প্রদক্ষিণ করে মঙ্গলবার কলকাতায় আসবে 'ডুরান্ড কাপ' (Durand Cup)। এই খেলার প্রচারেই অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছেন দুই অবসরপ্রাপ্ত জওয়ান।
চৌরঙ্গিতে অবস্থিত 'দ্যা ৪২'। কলকাতার সবচেয়ে লম্বা বহুতল এটি। এই বহুতলের ছাদ থেকেই ঝাঁপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুই প্রাক্তন সেনা লেফটেন্যান্ট কর্নেল সত্যেন্দ্র ভার্মা এবং ক্যাপ্টেন কমল সিং। বুঝলেন না তো? তাঁরা ঝাঁপ দেবেন ঠিকই, তবে প্যারাস্যুট নিয়ে। কত সিনেমায় এমন দৃশ্য আগে দেখেছেন কলকাতাবাসী। তবে এবার চাক্ষুষ করবেন সেই দৃশ্য। বহুতল থেকে লাফ দিয়ে সমতলে আসতে বেশি সময় লাগবে না। যদিও প্রাক্তন সেনাদের ইচ্ছে তাঁরা ময়দানেই নামবেন। তবে হওয়ার গতিবেগে সেই সমতল কাছাকাছি অন্য কোনও জায়গায় হতে পারে।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ডুরান্ড কাপকে স্বাগত জানাতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান হবে। প্রায় এক ঘন্টা এই অনুষ্ঠান চলবে। এরই মধ্যে এই 'বেস জাম্প' অনুষ্ঠিত হবে। তবে সঠিক সময় জানা যায়নি এখনও।
যত দিন যাচ্ছে ভারতীয় স্ট্রাইকার সুনীল ছেত্রীর একের পর এক কৃতিত্ব ব্যাগে পুড়ছেন | ভাবা গিয়েছিলো বাইচুং ভুটিয়ার পর আন্তর্জাতিক মানের স্ট্রাইকার যে কবে আসবে তার ঠিক নেই। দু'জনই পাহাড়ের ছেলে। সাধারণত পাহাড়ি খেলোয়াড়দের দম প্রচুর হয় বলে মানুষ জানে। কিন্তু স্কিল, সেটাও তো একটি বিষয়। গৌতম সুরজিৎদের সময়ে ভারত খুব বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি। এর আগে পিকে চুনীদের আমলে ভারত এশিয়াডে দুর্দান্ত ফল করেছিল। পরবর্তী ভালো ফল বলতে ওই এশিয়াডে ১৯৮২ তে দিল্লিতে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিল ভারত। কিন্তু সে সব আদি ইতিহাস। এখন খেলার মূলমন্ত্র স্পিড ও স্কিল। বিশ্বকাপ থেকে ইউরোপিয়ান বা ল্যাটিন আমেরিকার ফুটবল সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে।
ভারতও বদলেছে নিজেকে কিন্তু ভারতে গত ৪০ বছরে বাইচুং ভুটিয়া, সুদীপ চ্যাটার্জি এবং সুনীল ছেত্রী ছাড়া এই দক্ষতা দেখতে পারেনি তেমন ভাবে কেউই। স্পিড বিষয়টিকে আয়ত্ব করা কঠিন বিষয়। সুনীলকে কিন্তু বিদেশিরা আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় হিসাবে মেনে নিয়েছে। বিদেশি টিমে সুনীল খেলেছে।
রবিবার ছিল ডুরান্ড কাপের ফাইনাল। টানটান উত্তেজনা ছিল ফাইনাল ঘিরে। ইতিমধ্যে একে একে বিদায় নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং সারা জাগিয়েছিল মহামেডানও। ইদানিং তথাকথিত এই তিন বাংলার কোনও দলের ক্লাবে ট্রফি ওঠেনি। ফাইনালে খেলেছে সুনীল ছেত্রীর ব্যাঙ্গালোর এফসি এবং মুম্বই সিটি। মজার বিষয় এই দুই ক্লাবের কোনও অস্তিত্বই ছিল না কয়েক বছর আগে। কিন্তু আইএসএল আসার পর অনেক দলের মধ্যে এই দুটি দলও অন্যতম। মুম্বইকে অনেকেই বলেছিলো ডার্ক হর্স। কিন্তু ফাইনালে দাগ ফোটাতেই পারেনি। সুনীলকে অবশ্য মুম্বই কিছুটা আটকে রাখতে 'পুলিসম্যান' মার্কিং করেছিল তাতে ব্যাঙ্গালোরের সুবিধা হয়েছে। ২-১ গোলে জিতে ডুরান্ড কাপ এখন ব্যাঙ্গালোরে।
সুব্রত ভট্টাচার্যের জামাইয়ের লকারে অনেক ট্রফি আছে, ছিল না ডুরান্ড। এবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের হাত ধরে সেটাও চলে এলো সুনীলের দেরাজে। এই রেকর্ড বাইচুংয়ের ছিল না।
পরপর ছ'বার বড় ম্যাচ মোহনবাগানের কাছে হারের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল। যদিও রবিবারের ডুরান্ড কাপ ডার্বিতে গোটা নব্বই মিনিট ভালো খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু প্রথমার্ধের এক্সট্রা টাইমে ইস্টবেঙ্গলের সুমিত পাসির আত্মঘাতী গোলই বিপদ বাড়ায় লাল-হলুদ ব্রিগেডের। এদিন ৯০ মিনিট শেষে মোহনবাগানের পক্ষে ফল ১-০।
এই যুবভারতীতেই বছর তিনেক আগে শেষ ডার্বিতেও হারতে হয়েছিল লাল-হলুদ শিবিরকে। সেই ডার্বির পর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বইয়েছে। আইএসএল-এ মুখোমুখি হয়েছে এই দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু ফল গিয়েছে মোহনবাগানের পক্ষেই। তবে এদিন ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখে কিছুটা হারের জ্বালা জুড়িয়েছে সমর্থকদের। অন্তত বল পজেশন থেকে গোল শটে মোহনবাগানের থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। একাধিবার মোহনবাগানের গোলের কাছে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ চলে গেলেও তিন কাঠি পার করতে পারেননি ইভান গঞ্জালেজরা।
রবিবার ইমামি ইস্টবেঙ্গলের অভিজ্ঞ কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন দল গঠনে চমক দিয়েছিলেন। প্রথমার্ধে কারালাম্বোস কিরিয়াকু, ইভান গঞ্জালেজ, আলেক্স লিমা এবং এলিয়ান্দ্রো, এই চার বিদেশিকে দলে রেখেছিলেন তিনি। অপরদিকে, এটিকে মোহনবাগানের চার বিদেশি ছিলেন এফ পোগবা, জনি কাউকো, কার্ল ম্যাকহিউ এবং হুগো বুমোস। যদিও প্রথমার্ধে কিছু সময় ম্যাচে দাপট ছিল মোহনবাগানের। শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তায় হাঁটলেও ভাঙতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স। ফুটবল সমালোচকরা বলছেন, এই অতিরিক্ত রক্ষণই কাল হয়েছে লাল-হলুদ শিবিরের। প্রথম ৪৫ মিনিট প্রত্যাশা জাগিয়েও অউন গোলে পিছিয়ে থেকেই খেলা শেষ করে লাল-হলুদ।
প্রসূন গুপ্ত: আগামিকাল অর্থাৎ রবিবার বাজারে যে আর পার্থ অনুব্রত থাকছে না, তা হলফ করে এখনই বলে দেওয়া যায়। অনেকদিন বাদে কলকাতা বিশেষ করে যুবভারতীতে ফের ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান মুখোমুখি হচ্ছে। তবে এই দল এখন শুধু নিজেদের নাম নিয়েই চলছে না। গায়ে লেগেছে কর্পোরেট তকমা। একটি ইমামি ইস্টবেঙ্গল, অন্যটি এটিকে মোহনবাগান। এই নাম নিয়েও বিস্তর বিতর্ক। মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে আপাতত ইস্টবেঙ্গল বাণিজ্যিক সাপোর্ট রয়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের মোহনবাগান ক্লাবের নামের আগে এটিকে বসায় প্রবল প্রতিবাদ।
ক্লাব সমর্থকরা ঐতিহ্যবাহী মোহনবাগান নামের আগে কিছু নাম থাক চাইছেন না। হয়তো এবারে সমাধানের পথ খুঁজতে চলেছে ক্লাব ম্যানেজমেন্ট। সেই দায়িত্ব নিয়েছেন স্বয়ং সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। হয়তো এটিকে নাম বদলে মোহনবাগান এসজি হতে চলেছে। তবে এখনই নাম পরিবর্তন নয়, কিছু আইনি জটিলতা কাটিয়ে নাম পরিবর্তন হবে।
নাম ধাম পরের কথা, এখন প্রশ্ন একটাই, এটিকে নিজের নামে দু'বার আইএসএল জিতেছে। কিন্তু এটিকের সঙ্গে মোহনবাগান জুড়ে যাওয়ায় শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের দেরাজে কোনও জাতীয় ট্রফি নেই। যদিও তারা আইএসএল-র মতো বড় টুর্নামেন্টে রানার্স হয়েছে। কিন্তু ট্রফি কোথায়। অন্যদিকে তথৈবচ ইস্টবেঙ্গল। শতাব্দীপ্রাচীন এই ক্লাবেরও আইএসএল পারফরম্যান্স তথৈবচ। কলকাতা ক্লাব ফুটবলের এত দৈন্যদশা এর আগে ১৯৭৯-তে একবার দেখা গিয়েছিল। তারপর বর্তমানে এই অবস্থা। আগের দিনে নামধাম স্পনসর নিয়ে দুই দলের সমর্থকরা মাথা ঘামাতো না। তারা চাইতো ডুরান্ড, রোভার্স, কলকাতা লিগের ট্রফি আসুক ঘরে। কিন্তু সে সব দিন গিয়েছে।
আজকের দর্শকরা বিশ্বকাপ থেকে বিদেশি ফুটবল দেখছে নিয়মিত। জাতীয় বা আন্তর্জাতিক টার্ফে প্রিয় দল বা ক্লাব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এটাই এখন বড় প্রত্যাশা ফুটবলপ্রেমী বাঙালির কাছে। ডুরান্ড কাপ কে পাবে তা নিয়ে ভাবনা নেই সমর্থকদের। কিন্তু অনেকদিন বাদে রবিবারের ডার্বি নিয়ে জল্পনা উত্তেজনা তুঙ্গে। অন্যদিকে টিকিটের জন্যও হাহাকার। যুবভারতীতে ১ লক্ষর বেশি দর্শক প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু আগামীকালের ম্যাচে কিছু টিকিট দেওয়া হচ্ছে দর্শকদের। বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে অনলাইন আর বেশ কিছু ফ্রি টিকিট। এই ভাবেই রবিবারের যুবভারতী জমজমাট হবে বলাইবাহুল্য।