
২০১৪-র টেট পরীক্ষা (TET 2014) দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) এবং শুভেন্দু অধিকারী! শুনতে বিস্ময়কর হলেও এটাই সত্যি। ১১ নভেম্বর ২০১৪ টেট উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (Primary Board)। পাশ প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন "দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারীর" নাম। জেনারেলে ক্যাটাগরিতে নাম আছে শুভেন্দু অধিকারী, সুজন চক্রবর্তীর আর ওবিসি ক্যাটাগরিতে নাম দিলীপ ঘোষ।
সফল প্রার্থীতালিকার সঙ্গে রাজ্যের রাজনীতিবিদদের নাম এভাবে মিলে যাওয়া কি কাকতালীয়? এই নামে অন্য প্রার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁরাই কি ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলার রাজনীতিতে। যদিও এবিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন একদল আইনজীবী।
তবে আইনজীবী তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারির মত, 'পুরোটাই অনুপ্রেরণা এবং জালিয়াতি। মানুষ যখন নকল বা জালিয়াতি করে তখন এভাবেই ভুল করে। কতটা জালিয়াতি আবার প্রমাণিত।' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, 'আমার নামে আর কারও নাম থাকতেই পারে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, এঁরা সবাই নাকি ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের নামটা বাদ গেল কেন। উদোর পিন্ডির ভুঁদোর ঘাড়ে দেওয়া, দুর্নীতিকে স্পষ্ট করা। পথে বসে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ঠিক। এই তালিকার কোনও মূল্য নেই।'
অলীক কুনাট্য রঙ্গে অনেক আগেই লোক মজেছে এই রাঢ় বঙ্গে। যে কোনও বিষয় হলেই তাতে কটূক্তি, পাল্টা কটূক্তিতে সরগরম হয় রাজনৈতিক মঞ্চ, এ আর নতুন কিছু ঘটনা নয়। আর ফের রাজ্যে সেরকমই এক ঘটনা ঘটল বীরভূমের নানুরে। নানুর বিধানসভা (Nanur) এলাকার কিন্নাহারে গোমাই গ্রামে,নানুরের তৃণমূলের (TMC) প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরার বিতর্কিত মন্তব্য এই মুহূর্তে তুমুল ভাইরাল আম জনতার মুখে। ঠিক কী বলেছেন তিনি? যা নিয়ে চলছে এত চর্চা?
এদিন ওই গ্রামে বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে শোনা যায় নানুরের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরাকে। সেখানে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'অনেকে বলছেন কাস্তে গুলো জং পড়ে গেছে জং, সেই কাস্তে গুলোকে বের করে অনেকের শান দিতে বলছেন, শান দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদেরকে মারতে হবে যেভাবে ৩৪ বছর ধরে মেরেছি, ২০১১ এ আমরা ক্ষমতায় এসেছি তাই ওই কাস্তে থেকে আপনাদের হাত ধরে আপনাদের গলায় লাগিয়ে দিয়ে হাতটা টেনে দেবো, কি হবে সেটা পাবলিক দেখবে।'
পাশাপাশি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বিরুদ্ধে তোপ বর্ষণ, 'দিলীপ বলছেন তৃণমূলকে দেখলেই বুকে পা তুলে দেব। গলায় পা তুলে দেব, তারা জানে না আমরা লড়াই করে ক্ষমতায় এসেছি, তাই আপনি যখন বুকে পা দিতে আসবেন পা তোলার আগেই আপনার পা টা আপনার চেহারার মধ্যে আর থাকবে না রাস্তার একপাশে দুটো পা পড়ে থাকবে অন্য পাশে বডিটা পড়ে থাকবে।'
এদিন এই অনুষ্ঠানে এরকম বহু আলটপকা মন্তব্য করলেন নানুরের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক। আর সেই ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। অপরদিকে এবিষয়ে বিজেপির বীরভূম সহ-সভাপতি সুব্রত চট্টরাজ বলেন, 'দিলীপ ঘোষের পা কাটার আগে প্রাক্তন বিধায়ক নিজে ভাবুন, আগামী নির্বাচনের পর উনি কোথায় থাকবেন। উনি তো পরিযায়ী পাখি, আগে উনি বিজেপির দিকে ছিলেন। এই এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াচ্ছেন তিনি। তৃণমূল, সিপিএম মিলে আঁতাত করছে যাতে বিজেপি জিততে না পারে।'
পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapur) বেলদায় প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়ে 'চোর' স্লোগান শুনলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতির উদ্দেশে তৃণমূল (TMC) কর্মী- সমর্থকদের তরফে ধেয়ে আসে গো-ব্যাক স্লোগান। তবে সাতসকালে তৃণমূল কর্মীদের এই আচরণে একটুও বিচলিত হননি দিলীপ ঘোষ। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই এবং মুখে হাসি রেখে তিনি পাল্টা বলেন, 'বুকে পা দেব। সব চোরগুলো আমাদের সামনে। সব ভিতরে যাবে।' বিজেপি নেতা বলেন, 'দেখুন পঞ্চায়েতের টাকা কারা খেয়েছে দেখে নিন।'
পাল্টা তৃণমূলের তরফে অভিযোগ, 'মুল্যবৃদ্ধি কার স্বার্থে জবাব দিন। গো ব্যাক, একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে, কৃষকদের মারছে।' তাঁদের অভিযোগ, 'সাংসদ হিসেবে দিলীপ ঘোষকে চার বছর দেখা যায়নি। এখন ভোট এসেছে আবার এসেছেন। উনি বসন্তের কোকিল?'
এই ঘটনায় বেলদা এলাকায় সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হলে বেলদা থানার বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সাময়িক ভাবে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা বিজেপি সাংসদকে ঘেরাও করে রাখলেও পরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
মঙ্গলবার বিজেপির (BJP) নবান্ন অভিযানে (Nabanna Abhijan) একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। কলেজ স্কোয়ার থেকে এমজি রোড হয়ে এই মিছিল হাওড়া ব্রিজের (Howrah Bridge) মুখে পুলিসের ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। সেখানেই দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) উপস্থিতিতে স্লোগানিং শুরু করেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। তাঁর নেতৃত্বে থাকা মিছিলে ইতি টেনে মেদিনীপুরের সাংসদ জানান, আগেরবার আমাদের এখানে আটকেছিল। এবারেও তাই হল। এটা নিয়ে ঘাবড়াবার কিছু নেই। পুলিস তাঁর কাজ করছে, আমরা শান্তিপূর্ণ, আইন মেনে আন্দোলন করছি। মারামারি করতে আসিনি।
তাঁর মন্তব্য, 'বিজেপি গণতান্ত্রিক ভাবে লড়াই করছে। সেই লড়াই আটকাতে লাঠি, কামান, জল, ব্যারিকেড দিয়ে আটকানোর চেষ্টা। যেভাবে স্থায়ী ব্যারিকেড তৈরি হয়েছে, সেটা ভাঙা যাবে না, আমরা ভাঙবো না। তবে মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছন দরকার এই দুর্নীতিপরায়ণ সরকারের থাকার আর যোগ্যতা নেই।'
কটাক্ষের সুরে তিনি জানান, দিদিমনি পালিয়ে গিয়েছে আমাদের মুখোমুখি হতে চান না। এদিকে, বিজেপির এই মিছিলের কোনও অনুমতি ছিল না। তাই বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা পুলিসি ব্যারিকেডের সামনে এলে লাঠিচার্জ করে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাঁদের প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়।
রাজ্যব্যাপী চিটফান্ড-কাণ্ডে (Chitfund Case) চলছে সিবিআই (CBI) অভিযান। রবিবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা হানা দিয়েছে বীজপুরের বিধায়ক (Bijpur MLA) এবং কাঁচরাপাড়ার পুরপ্রধানের বাড়িতে। এই ঘটনা ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, 'মানুষ যে ১২ বছর ধরে প্রতারিত হয়েছে, তার সুবিচার চাইছে। সিবিআই-ইডি নিজেদের মতো করে চেষ্টা করছে বিচার দেওয়ার। দুর্নীতির শিকড় এত গভীরে সময় লাগছে।' পাল্টা মন্তব্য করেছে তৃণমূলও।
দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'আমরা বিষয়টিতে নজর রেখেছি। যাদের বাড়িতে অভিযান হয়েছে, তাঁদের মন্তব্য আগে আসুক।' এদিকে, সন্মার্গ চিটফান্ড-কাণ্ডে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতে হালিশহরের পুরপ্রধান রাজু সাহানি। এবার এই মামলার তদন্ত আরও বড়সড় তথ্যসূত্র হাতে পেলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। রবিবার সকাল থেকেই বীজপুর বিধানসভা এবং কাঁচরাপাড়া পুরসভা এলাকার ৬ জায়গায় সিবিআই তল্লাশি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অভিযান বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বাড়িতে। পাশাপাশি সুবোধের ভাই তথা কাঁচরাপাড়ার পুরপ্রধান কমল অধিকারীর বাড়িতেও সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ছটি দলে ভাগ হয়ে এই অভিযানে নেমেছে।
রাজু সাহানির বাড়ি এবং রিসোর্টে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা নগদ এবং প্রচুর সম্পত্তি নথি উদ্ধার করেছে সিবিআই। সেই সূত্রে রাজুকে জেরা করে পাওয়া তথ্যসূত্র ধরেই সুবোধ এবং কমল অধিকারীর বাড়িতে সিবিআই অভিযান। সুবোধের পৈতৃক বাড়ি-সহ তাঁদের মঙ্গলদ্বীপ আবাসন ফ্ল্যাট এবং কমল অধিকারীর নিজস্ব ফ্ল্যাটেও চলছে অভিযান। পাশাপাশি হালিশহরের জেঠিয়ার সুবোধ এবং কমল অধিকারীর এক আত্মীয়ের বাড়ি-সহ কনস্ট্রাকশন ব্যবসায়ী গৌতম বিশ্বাসের বাড়িতেও সিবিআই দল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (CM Mamata) বোম্বাগড়ের রাজার সঙ্গে তুলনা করলেন দিলীপ ঘোষ (BJP MP Dilip Ghosh)। বৃহস্পতিবার প্রাতঃভ্রমণ শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ। সেখানেই জোড়াসাঁকো-রেড রোড ইউনেস্কোর (UNESCO) ধন্যবাদজ্ঞাপন মিছিলের প্রসঙ্গ টেনে সুর চড়া করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'কাজকর্মের কথা বলবেন না। সরকারি পয়সায় খান, ফুর্তি করুন। পুজোর ছুটি, ইদের ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আনন্দ-ফুর্তি ধার-দেনা করে যতদিন চলছে চলুক। রাজ্যে মূর্খদের জন্য তৈরি করে বোম্বাগড়ের রাজার মতো উনিই রাজত্ব করবেন।'
তিনি জানান, এটাই মুখ্যমন্ত্রীর রাজনীতি। লুটপাট চললেও, আসুন আনন্দ করুন আমি তো আছি। এভাবেই রাজ্যকে বন্ধ্যা করে দিয়ে উনি চলে যাবেন। এদিকে এদিনের কার্নিভাল প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, 'ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই স্বীকৃতি এসেছে। অনেকে বলেছিল বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না। কিন্তু সরকারি উদ্যোগে প্রায় ৪৩ হাজার পুজো রাজ্য হয়।'তিনি জানান আজ থেকে পুজো শুরু হয়ে গেল।
সিবিআই (CBI Investigation) প্রসঙ্গে দিন দুয়েক আগে আক্রমণাত্মক মন্তব্যের পর একটু হলেও কি সুর নরম দিলীপ ঘোষের? প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও প্রাতঃভ্রমণের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ (Dilip Ghosh)। তখনই সিবিআই তদন্ত নিয়ে কিছুটা সুর নরম তাঁর। এদিন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বলেন, 'ভরসা যখন ভাঙে, তখন প্রশ্ন ওঠে। কোর্ট যখন সিবিআইয়ের উপর ভরসা রেখেছে আমরা আশা করব দুর্নীতি নিয়ে যে চিন্তা তার কিছুটা সুরাহা হবে।'
পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ওঠা হুমকি চিঠির অভিযোগের তদন্ত সিবিআই দিয়ে করাতে চান তৃণমূল নেতা। সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'একটা ধোঁয়াশার তৈরি চেষ্টা চলছে। যেকোনও তদন্তে সিবিআই পাওয়া যায়। এমন একটা ধারণা তৈরির চেষ্টা।' পাশাপাশি এদিন তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি হওয়ার প্রসঙ্গকে খোঁচা দেন। তিনি বলেন, 'আরও অনেকে মিসিং হবেন। আরও অনেকে গায়েব হয়ে যাবেন। সিবিআই যত হাত বাড়াবে, তত পাড়ায় পাড়ায় গায়েব বাড়বে।'
প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও নিউ টাউনে প্রাতঃভ্রমণে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। এদিন উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের সামনে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) জেলযাত্রা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। বুধবার তৃণমূল নেতাকে কোর্টে তোলার আগে বেশ খোশমেজাজে ছিলেন। সে প্রসঙ্গে বিজেপি (BJP) সাংসদ বলেন, 'জানি না ভেতরে কী হয়েছে। উনি হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন এবার বেল হয়ে যাবে। কিংবা কেউ কেউ বলেছেন চিন্তা করবেন না আমরা আছি। আমার মনে হচ্ছে যে ধরনের সম্পত্তি উনার পাওয়া যাচ্ছে এত সহজে উনি ছাড়া পাবেন না। সাজা উনাকে পেতেই হবে। উকিলরা হয়তো বলেছেন হেসে কথা বলুন তাই হয়তো উনি করেছেন।'
অনুব্রত মণ্ডলের জামিন খারিজ প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি জানান, উনি (পড়ুন অনুব্রত) না থেকেই কোর্টের জজকে পর্যন্ত হুমকি দিচ্ছেন। ওখানে সমস্ত কিছু উনার পরিচালনায়। যে ভাবে ব্যবসায়ীরা এখন কথা বলছেন, অন্য লোকেরা যারা মুখ খুলেছেন, উনি যদি ছাড়া পান সমস্ত কিছু চাপা পড়ে যাবে। কেউই আর মুখ খুলবে না। কোনওরকম তদন্তই এগোবে না। কেউ কোনও তথ্য দেবে না। সেজন্য যতক্ষণ না তদন্তে যথেষ্ট পরিমাণ তথ্য আসছে, তাকে নিশ্চয়ই আটকে জেলে রাখা উচিত।
এদিকে, দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বিজেপি সাংসদকে অর্ধ উন্মাদ কটাক্ষ করে বলেছেন, 'বিজেপি দিলীপ ঘোষকে ব্যবহার করে ফেলে দিয়েছে।' পাশাপাশি কামারহাটির বিধায়কের দাবি, জেলে আমিও গিয়েছিলাম। অনুব্রত মণ্ডলকে কোর্টের রায়ে জেলে যেতে হয়েছে। আমাদের পার্টি কখনই বলেনি কোর্ট, আদালত মানব না।
কী বলছেন দিলীপ ঘোষ এবং মদন মিত্র?
দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) ক্লাবপ্রতি ৬০ হাজার টাকা (Puja Donation) সরকারি অনুদান ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জনস্বার্থ মামলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী কাউন্সিল। এই সংগঠনের আইনজীবী পারমিতা দে'র দায়ের করা আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। এই বেঞ্চের অপর বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। বুধবার এই আবেদনের উপর দ্রুত শুনানি চেয়ে আদালতে দরবার করে ওই সংগঠন। জানা গিয়েছে আগামি শুক্রবার এই মামলার শুনানি হতে পারে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার সমালোচনায় সরব বিরোধী দলগুলো। বুধবার প্রাতঃভ্রমণ সেরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'এই যে নেতারা ধরা পড়ছে, এত বড় দুর্নীতি ধরা পড়ছে, এটা চাপা দেওয়ার জন্য এই নাটক। টাকা ঘুষ বাড়িয়ে দিয়েছেন ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার। পুজো করো নাচো, গান গাও ফুর্তি করো আমরা আছি। কোটি কোটি টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে মানুষ ভিখারি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ যেন দুর্নীতির দিকে না তাকায়। এসব নিয়ে যেন ব্যস্ত থাকে তারই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।'
সিবিআইয়ের (CBI) উদ্দেশে করা তাঁর মন্তব্য ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই তপ্ত পরিবেশের মধ্যেও নিজের অবস্থানে অনড় বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। মঙ্গলবার প্রাতঃভ্রমণ সেরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ। সেই সময়েও দিলীপবাবুর মন্তব্য, 'সিবিআই তদন্ত নিয়ে আমি নতুন কিছু বলিনি। কোর্ট নিজেই হতাশা ব্যক্ত করেছে। একজন কর্মী হিসেবে আমি নিজেই হতাশা ব্যক্ত করছি।' পাশাপাশি এদিন কলকাতা (Kolkata) থেকে বিজেপির বিধানসভা এবং লোকসভায় আসন পাওয়া নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি।
তাঁর প্রশ্ন, 'বিজেপি কলকাতায় কবে সিট পেয়েছে? কলকাতার লোক দুর্নীতি নিয়ে ভাবে না। নিজের সুবিধা নিয়েই থাকে। গোটা রাজ্যে প্রতিবাদ চলছে। কলকাতায় প্রতিবাদ কোথায়? তাঁরা নিজেরা নিজেদের নিয়ে থাকেন। আমি যা বলি সত্য বলি। কারও খারাপ লাগলে আমার কিছু করার নেই। কারও যদি দম থাকে, কলকাতায় বিজেপিকে জিতিয়ে দেখাক। এখানকার বাঙালিদের এটাই চরিত্র। কালীঘাটের কাছে থাকি, আনন্দে থাকি। ভিখারি হয়ে থাকি। কিচ্ছু যায় আসে না। পুজোর টাকা পেয়ে খুশি থাকি।' এভাবেই সরব ছিলেন দিলীপ ঘোষ।
পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রীয় অর্থ বন্ধ রাখা নিয়ে ফের সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'দেবে না তো। আমরাই দিতে বারণ করেছি। টাকার হিসেব না দিলে টাকা দেবে না। হিসেব দিন, টাকা নিন।'
যদিও দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'দিলীপবাবু কোনও মানসিক অবসাদে ভুগছেন। কলকাতার মানুষকে অপমান করার কোনও অধিকার নেই দিলীপ ঘোষের। শুধু কলকাতায় নয়, জেলাতেও হারছে বিজেপি। উনি হতাশাগ্রস্ত, বিজেপির মধ্যে থেকেই অপমানিত, অবহেলিত, উপেক্ষিত।'
খানিকটা বিরোধী অভিযোগেই সিলমোহর বসালেন বিজেপি (BJP) সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর গলায় এবার সিবিআইয়ের (CBI) সঙ্গে প্রভাবশালীদের সেটিং তত্ত্ব। ঠিক যেমনটা এযাবৎকাল করে এসেছে বাংলার অন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সাম্প্রতিককালে রাজ্যে চলা একাধিক দুর্নীতি মামলার সিবিআই তদন্তে কোনও প্রভাব দেখতে পাচ্ছে না মানুষ। কেউ ধরা পড়ছে না, কোনও নথি বাজেয়াপ্ত নেই। এর পিছনে থাকতে পারে সেটিং। কিনে নেওয়া হতে পারে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীদের। কারণ সর্ষের মধ্যেই ভূত থাকে, পেট সকলেরই আছে। কেউ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়, কেউ আবার কোটি টাকায়। রবিবার আইসিসিআর-এ (ICCR) এক অনুষ্ঠানে গিয়ে এই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষ।
এখানেই থামেননি তিনি। বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতির আরও মন্তব্য, 'কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে কিছু একটা সেটিং হয়েছে, সরকার বুঝতে পেরেই অর্থ মন্ত্রক ইডিকে পাঠিয়েছে। আর অর্থমন্ত্রীর বিশেষ প্রয়াসেই রাজ্যে ইডি এসেছে। আর যাঁরা সেটিং করছিলেন, তাঁরা এখন প্রশ্ন করছেন, ইডি কেন? ইডিকে সরানোর জন্য কোর্টেও গিয়েছেন তাঁরা। আসলে ওই কুকুরকে পোষ মানানো যাচ্ছে না। কিছু কুকুর আছে কামড়ে দেবে। ওষুধের পরিমাণ কম হয়ে যাচ্ছিল, এবার ডোজ বাড়াতে হবে।'
তিনি জানান, এতো মামলা, এতো দুর্নীতি ৫০-৬০ বছর ধরে চলছে। যে দুর্নীতি দমনের কাজ স্থানীয় পুলিস, প্রশাসন, গোয়েন্দাদের করা উচিৎ। সেই কাজ ওরা করছে না, উলটে দুর্নীতিবাজদের বাঁচাচ্ছে। ফলে সিবিআই-ইডিকে একাহাতে সেই কাজ করতে হচ্ছে। এতে সমস্যা বাড়ছে। তদন্তে শ্লথ গতি, বিচারব্যবস্থায় প্রভাব পড়ছে। ফলে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর প্রতি বিশ্বাস হারাচ্ছে মানুষ।
যদিও বিজেপির সহ-সভাপতির এই মন্তব্যকে পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, 'বিজেপি রাজনৈতিকভাবে এই সংস্থাগুলো ব্যবহার করে ব্র্যান্ডগুলোকে খারাপ করছে। আর দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যে সিবিআইয়ের সম্মানহানি হয়েছে। উনি এই কথাগুলো হতাশা থেকে কাকে বলছেন? প্রধানমন্ত্রীকে বলছেন, অমিত শাহকে বলছেন? আমার মনে হয় দিলীপ ঘোষ ঘুরিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে সিবিআইয়ের সেটিংয়ের প্রসঙ্গ সামনে এনে দিলেন।'
তৃণমূল (TMC) সমালোচকদের চামড়া দিয়ে জুতো বানানো হবে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের (Sougata Ray) সাম্প্রতিক এই মন্তব্যে শোরগোল তুঙ্গে। এই আবহে এবার প্রবীণ সাংসদকে পাল্টা দিলেন বিজেপির (BJP) দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে (Durgapur) এক চা চক্রে বিজেপি সাংসদ বলেন, 'সৌগত রায়কে জুতোপেটা করা উচিৎ। একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধ, যিনি কিনা অধ্যাপক, এটা তাঁর মুখের ভাষা। পিঠের চামড়া দিয়ে জুতো বানাবে! পিছনে কুকুর তাড়া করলে যিনি দৌড়তে গেলে পড়ে যাবেন, তিনি এসব কুকথা বলছেন। আবার আমার সমালোচনা করে বলে দেখ দিলীপ ঘোষ কুকথা বলে। এঁদেরকে কী পুজো করা উচিৎ?'
আজ দুর্গাপুরে প্রাতঃভ্রমণে বেরোন বিজেপির সহ-সভাপতি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। নিউটাউনশিপ থানার অন্তর্গত এমএএমসি টাউনশিপে প্রথম যান তিনি। কথা বলেন
স্থানীয় প্রাতঃভ্রমনকারীদের সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে সেলফি তোলার আবদারও রাখেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর আবেদন, তৃণমূলকে ভোট দেবেন না, এরা বিশ্বাসের মর্যাদা দেয় না। পাশাপাশি আয়জিত চা চক্রে সাম্প্রতিক ইস্যুতে শাসক দলকে তুলোধোনা করলেন বিজেপির মেদিনীপুরের সাংসদ।